পরিচ্ছেদঃ ১৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - অনাবাদী জমিন আবাদ করা ও সেচের পালা

২৯৯৬-[৬] হাসান আল বসরী (রহঃ) সূত্রে সামুরাহ্ ইবনু জুনদুব হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি (মালিকবিহীন) জমিনের চারদিকে দেয়াল ঘেরা দিয়েছে, ঐ জমিন তার মালিকানাধীন। (আবূ দাঊদ)[1]

عَنِ الْحَسَنِ عَنْ سَمُرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَنْ أَحَاطَ حَائِطًا عَلَى الْأَرْضِ فَهُوَ لَهُ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ

عن الحسن عن سمرة عن النبي صلى الله عليه وسلم قال: «من أحاط حائطا على الأرض فهو له» . رواه أبو داود

ব্যাখ্যা: (عَلَى الْأَرْضِ) অর্থাৎ- মৃত ভূখণ্ডের চতুর্দিকে।

(فَهُوَ لَه) তূরিবিশতী বলেনঃ যারা সীমানায় পাথর বা কোনো কিছু রাখার মাধ্যমে মালিকানা সাব্যস্তের মত পোষণ করে থাকে, তারা এ হাদীসের মাধ্যমে প্রমাণ উপস্থাপন করে থাকে। অথচ এর মাধ্যমে কোনো প্রমাণ প্রতিষ্ঠিত হয় না। কেননা কেবল মালিকানা সাব্যস্ত হয় আবাদকরণের মাধ্যমে। পক্ষান্তরে জমিনে পাথর বা কোনো কিছু রাখার মাধ্যমে অথবা দেয়াল দ্বারা বেষ্টনী দেয়ার মাধ্যমে কিছুতেই জমিন আবাদ করা সাব্যস্ত হয় না। তাঁর উক্তিতে (عَلَى الْأَرْضِ) অংশ রয়েছে যা বর্ণনার মুখাপেক্ষী। কেননা প্রত্যেক জমিন আবাদকরণের মাধ্যমে মালিকানা সাব্যস্ত হয় না।

ত্বীবী (রহঃ) বলেনঃ এ ক্ষেত্রে বিশ্লেষণ হিসেবে তার উক্তি (أَحَاطَ)-ই যথেষ্ট। কেননা এটা ঐ কথার উপর প্রমাণ বহন করছে যে, সে প্রতিবন্ধক কোনো প্রাচীর তৈরি করবে, যা ভিতরের বস্তুসমূহকে বেষ্টন করে রাখবে, যেমন ছাগলের খাঁচা স্বরূপ কোনো বেষ্টনী তৈরি করা, অথবা চতুস্পদ জন্তুর খোয়ার স্বরূপ। নববী (রহঃ) বলেনঃ ব্যক্তি যখন চতুস্পদ জন্তুর খোয়ার অথবা ফল শুকাবার খামার অথবা লাকড়ী এবং খড়কুটা জমা রাখার স্থান নিরূপণ করবে, তখন দেয়াল নির্মাণ করা শর্ত, দেয়াল নির্মাণ ছাড়া শুষ্ক খেজুরের ডাল এবং পাথর দাঁড় করানো যথেষ্ট হবে না। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
বর্ণনাকারীঃ হাসান বাসরী (রহঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১২: ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা) (كتاب البيوع) 12. Business Transactions

পরিচ্ছেদঃ ১৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - অনাবাদী জমিন আবাদ করা ও সেচের পালা

২৯৯৭-[৭] আসমা বিনতু আবূ বকর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুবায়র (রাঃ)-কে একটি খেজুর বাগান দান করেছিলেন। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْ أَسْمَاءَ بِنْتِ أَبِي بَكْرٍ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَقْطَعَ لِلزُّبَيْرِ نخيلا. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

وعن أسماء بنت أبي بكر: أن رسول الله صلى الله عليه وسلم أقطع للزبير نخيلا. رواه أبو داود

ব্যাখ্যা: (أَقْطَعَ لِلزُّبَيْرِ نَخِيْلًا) খত্ত্বাবী (রহঃ) বলেনঃ খেজুর বৃক্ষ হলো প্রকাশ্য সম্পদ, প্রকাশ্য উপকারী বস্তু; যেমন প্রকাশ্য খনি। সুতরাং খেজুর বৃক্ষ তার সাথে সাদৃশ্য রাখে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুবায়র-কে এক-পঞ্চমাংশত হতে তা দান করেছেন, যা তার অংশ, আর আল্লাহ সর্বজ্ঞাত। আবূ ইসহক আল মারওয়াযী নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক মুহাজিরদেরকে ঘর-রাড়ী দান করাকে ধার দেয়া অর্থের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করে থাকেন। (‘আওনুল মা‘বূদ ৫ম খন্ড, হাঃ ৩০৬৭)

কাযী বলেনঃ (الْإِقْطَاع) বলতে জমিনের একটি অংশ কাউকে নির্দিষ্ট করে দেয়া। শারহুস্ সুন্নাহ্তে আছে, (الْإِقْطَاع) ক্ষেত্র অনুপাতে তা দু’প্রকারঃ প্রথমতঃ অনাবাদী ভূমি আবাদের মাধ্যমে তার মালিকত্ব অর্জন করা। দ্বিতীয়তঃ দয়াবশত কিছু, যেমন ইমাম কাউকে বাজারের স্থানে বসার জন্য নির্দিষ্ট করে দেয়া যাতে সেখানে বসতে পারে। যুবায়র-কে নির্দিষ্ট করে দেয়া প্রথম প্রকারের আওতাভুক্ত। মুযহির বলেন, খেজুর বৃক্ষ প্রকাশ্য মাল যা খনির সাথে সাদৃশ্য রাখছে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে তা এক-পঞ্চমাংশত হতে দান করেছেন যা তার অংশ। অথবা তা ঐ মৃত ভূখণ্ডের অন্তর্ভুক্ত ইতিপূর্বে কেউ যার মালিকানা অর্জন করেনি, অতঃপর সেই প্রথম তা আবাদের মাধ্যমে তার মালিকত্ব লাভ করে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১২: ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা) (كتاب البيوع) 12. Business Transactions

পরিচ্ছেদঃ ১৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - অনাবাদী জমিন আবাদ করা ও সেচের পালা

২৯৯৮-[৮] ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুবায়র (রাঃ)-কে তাঁর এক ঘোড়ার দৌড়ের সমপরিমাণ জমিন দিতে বললেন। তাই যুবায়র স্বীয় ঘোড়া দৌড়ালেন, পরিশেষে ঘোড়া থেমে গেল। অতঃপর তিনি স্বীয় চাবুক ছুঁড়লেন। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাকে তার চাবুক পৌছার স্থান পর্যন্ত দিয়ে দাও। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَقْطَعَ لِلزُّبَيْرِ حُضْرَ فَرَسِهِ فَأَجْرَى فَرَسَهَ حَتَّى قَامَ ثُمَّ رَمَى بِسَوْطِهِ فَقَالَ: «أَعْطُوهُ مِنْ حَيْثُ بَلَغَ السَّوْطُ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

وعن ابن عمر أن النبي صلى الله عليه وسلم أقطع للزبير حضر فرسه فأجرى فرسه حتى قام ثم رمى بسوطه فقال: «أعطوه من حيث بلغ السوط» . رواه أبو داود

ব্যাখ্যা: অধ্যায়ের হাদীসগুলো ঐ কথার উপর প্রমাণ বহন করছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তার পরবর্তী ইমামদের পক্ষে বৈধ হবে কাউকে বাদ দিয়ে কাউকে কোনো জমি এবং খনি নির্দিষ্ট করে দেয়া। শর্ত হলো- যখন এতে কোনো উপকার থাকবে। (‘আওনুল মা‘বূদ ৫ম খন্ড, হাঃ ৩০৭০)

নববী (রহঃ) বলেনঃ এতে ইমামের জন্য বায়তুল মালের মালিকানাভুক্ত জমি কাউকে নির্দিষ্ট করে দেয়া বৈধ হওয়ার প্রমাণ রয়েছে। ইমাম কর্তৃক নির্দিষ্ট করে দেয়া ছাড়া কেউ তার মালিকানা অর্জন করবে না। অতএব ইমাম কখনো বায়তুল মালের মালিকানাভুক্ত ভূমি কোনো মানুষকে নির্দিষ্ট করে দিবে এবং মানুষ তার মালিকত্ব অর্জন করবে। মূলত এতে কল্যাণজনক হিসেবে যা মনে করে সে কারণে। সুতরাং ইমামের দেয়া দীনার, দিরহাম এবং অন্যান্য জিনিসের যেমন মালিকত্ব অর্জিত হয় তেমনিভাবে এর মালিকত্ব অর্জিত হবে। কখনো ইমাম ব্যক্তিকে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য জমিন হতে উপকার লাভের মালিক বানাবে। অতঃপর নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ব্যক্তি জমি হতে উপকার লাভের অধিকারী হবে। পক্ষান্তরে মৃত ভূখণ্ড আবাদ করা প্রত্যেকের জন্যই বৈধ, এতে ব্যক্তি ইমামের অনুমতির মুখাপেক্ষী হবে না। এটা ইমাম মালিক, শাফি‘ঈ ও জুমহূরের মত। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১২: ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা) (كتاب البيوع) 12. Business Transactions

পরিচ্ছেদঃ ১৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - অনাবাদী জমিন আবাদ করা ও সেচের পালা

২৯৯৯-[৯ ’আলকামাহ্ (রহঃ) তাঁর পিতা ওয়ায়িল ইবনু হুজর হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে (ইয়ামানের) হাযরামাওতে একটি জমিন দান করেছিলেন। তিনি (ওয়ায়িল) বলেন, এজন্য আমার সাথে মু’আবিয়াহ্ (ইবনুল হাকাম)-কে পাঠিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন, তাকে তা বুঝিয়ে দাও। (তিরমিযী ও দারিমী)[1]

وَعَنْ عَلْقَمَةَ بْنِ وَائِلٍ عَنْ أَبِيهِ: أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَقْطَعَهُ أَرْضًا بِحَضْرَمَوْتَ قَالَ: فَأَرْسَلَ مَعِي مُعَاوِيَةَ قَالَ: «أَعْطِهَا إِيَّاه» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ والدارمي

وعن علقمة بن وائل عن أبيه: أن النبي صلى الله عليه وسلم أقطعه أرضا بحضرموت قال: فأرسل معي معاوية قال: «أعطها إياه» . رواه الترمذي والدارمي

ব্যাখ্যা: (بِحَضْرَمَوْتَ) ইয়ামান একটি শহরের নাম, এখানে দু’টি বিশেষ্যকে একটি বিশেষ্যে পরিণত করা হয়েছে।

সুয়ূত্বী বলেনঃ এক বর্ণনাতে বলা হয়েছে, জনৈক সৎব্যক্তির সম্প্রদায় যখন ধ্বংস হয়ে গেল, তখন সৎ ব্যক্তি মু’মিনদের সাথে তার সম্প্রদায়ের কাছে আসলো, অতঃপর যখন সে নিজ সম্প্রদায়ের কাছে পৌঁছলো তখন সে মারা গেল, অতঃপর বলা হলো (حَضَرَمَوْتُ) অর্থাৎ- মৃত্যু উপস্থিত হয়েছে। আর মুবার্রাদ উল্লেখ করেছেন- নিশ্চয় তা ইয়ামানিয়্যার দাদা ‘আমর-এর উপাধি। তিনি যে কোনো যুদ্ধে যেতেন নিহতের সংখ্যা বেশি হত। অতঃপর যে তাকে দেখত তাকে বলত (حَضَرَمَوْتُ) মৃত্যু উপস্থিত হয়েছে। অতঃপর এ কথা যখন আধিক্যতা লাভ করল, তখন তা লকব বা উপাধি হিসেবে স্থির হলো। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আলকামাহ (রহঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১২: ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা) (كتاب البيوع) 12. Business Transactions

পরিচ্ছেদঃ ১৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - অনাবাদী জমিন আবাদ করা ও সেচের পালা

৩০০০-[১০] আব্ইয়ায ইবনু হাম্মাল মা’রিবী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট স্বীয় গোত্রের প্রতিনিধিরূপে আসলেন। তখন তিনি মা’রিব-এ অবস্থিত লবণের কূপটি তাঁর নিকট (দান হিসেবে) চাইলেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁকে তা দান করলেন। যখন তিনি রওয়ানা হলেন, তখন এক ব্যক্তি (আক্রা ইবনু হাবিস) বলল, হে আল্লাহর রসূল! আপনি তাঁকে প্রস্রবণের অফুরন্ত পানি দিয়ে দিলেন। (আক্রা বলেন) অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর নিকট হতে তা ফেরত নিলেন। বর্ণনাকারী বলেন, আব্ইয়ায এটাও জানতে চাইলেন যে, আরাক গাছের কোন্টি রক্ষা করা যায়? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, যা উটের ক্ষুর নাগাল পায় না। (তিরমিযী, ইবনু মাজাহ ও দারিমী)[1]

وَعَن أَبْيَضَ بْنِ حَمَّالِ الْمَأْرِبِيِّ: أَنَّهُ وَفَدَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَسْتَقْطَعَهُ الْمِلْحَ الَّذِي بِمَأْرِبَ فَأَقْطَعُهُ إِيَّاهُ فَلَمَّا وَلَّى قَالَ رَجُلٌ: يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّمَا أَقْطَعْتَ لَهُ الْمَاءَ الْعِدَّ قَالَ: فَرَجَّعَهُ مِنْهُ قَالَ: وَسَأَلَهُ مَاذَا يحمى من الْأَرَاك؟ قَالَ: «مَا لَمْ تَنَلْهُ أَخْفَافُ الْإِبِلِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَابْنُ مَاجَه والدارمي

وعن أبيض بن حمال المأربي: أنه وفد إلى رسول الله صلى الله عليه وسلم فأستقطعه الملح الذي بمأرب فأقطعه إياه فلما ولى قال رجل: يا رسول الله إنما أقطعت له الماء العد قال: فرجعه منه قال: وسأله ماذا يحمى من الأراك؟ قال: «ما لم تنله أخفاف الإبل» . رواه الترمذي وابن ماجه والدارمي

ব্যাখ্যা: (قَالَ رَجُلٌ) ত্বীবীর বর্ণনানুযায়ী লোকটি আকরা বিন হাবিস। একমতে বলা হয়েছে, নিশ্চয় লোকটি ‘আব্বাস বিন মিরদাস (الْمَاءَ الْعِدَّ) অর্থাৎ- এমন অবিরাম পানি যা প্রবাহিত হওয়া থেকে বিচ্ছিন্ন হয় না।

(فَرَجَّعَه مِنْهُ) ‘‘তিনি তার নিকট থেকে তা ফেরত নিলেন’’। কারী বলেন, এ থেকে বুঝা গেল খনিজ সম্পদ দান করা, ঐ সময় বৈধ হবে যখন তা লুকায়িত থাকবে কষ্ট এবং যোগান ছাড়া যার সামান্য অংশ অর্জন হয় না; যেমন- লবণ, পেট্রোল, মূল্যবান পাথর, লাল সোনা ইত্যাদি। আর যা বাহ্যিক শ্রম এবং কর্ম ছাড়াই যা হতে উদ্দেশ্য অর্জন হয় তা কাউকে নির্দিষ্ট করে দেয়া বৈধ না। বরং তাতে সকল মানুষ অংশীদার; যেমন- ঘাস, উপত্যকার পানি ইত্যাদি। আর বিচারক যখন ফায়সালা দিবে, অতঃপর সে ফায়সালার বিপরীতে হক প্রকাশ পাবে, এমতাবস্থায় বিচারক তার ফায়সালাকে ভেঙ্গে দিবে এবং ঐ ফায়সালা হতে ফিরে আসবে।
 

(عما يحمى مِنْ الْأَرَاك) ফাতহুল ওয়াদূদ গ্রন্থকার বলেন, এটা হতে উদ্দেশ্য হলো- লোকটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে ঐ আরাক সম্পর্কে প্রশ্ন করলেন, যা সংরক্ষণ করা যাবে, যেন লোকটি বলেছে, হে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! কোন্ আরাক সংরক্ষণ করা যাবে?

অধ্যায়ের হাদীসগুলো ঐ কথার উপর প্রমাণ বহন করছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তার পরবর্তী ইমামদের জন্য বৈধ হবে কাউকে কোনো খনি নির্দিষ্ট করে দেয়া। আর ‘নির্দিষ্ট করে দেয়া’ উদ্দেশ্য হলো- কোনো মৃত ভূখণ্ড কতক ব্যক্তির সাথে নির্দিষ্ট। চাই তা কোনো খনি হোক অথবা কোনো জমি হোক। তবে তা এ শর্তে যে, ঐ মৃত ভূখণ্ডের সাথে কেউ সম্পৃক্ত থাকতে পারবে না। ইবনুত্ তীন বলেন, কাউকে কোনো কিছু নির্দিষ্ট করে দেয়াকে ঐ সময়ই কেবল إقطاع বলা যাবে, যখন তা ভূসম্পত্তি অথবা স্থাবর সম্পত্তির অন্তর্ভুক্ত হবে। আর কেবল মালে ফাই থেকেই কাউকে কোনো কিছু নির্দিষ্ট করে দেয়া বৈধ। মুসলিম ব্যক্তির অথবা চুক্তিতে আবদ্ধ কোনো অমুসলিম ব্যক্তির অধিকার হতে কাউকে কোনো কিছু নির্দিষ্ট করে দেয়া যাবে না।


أَخْفَافُ الْإِبِلِ অর্থাৎ- চারণভূমি এবং বসতি হতে বিচ্ছিন্ন। এতে ঐ ব্যাপারে দলীল রয়েছে যে, বসতির নিকটবর্তী মৃত ভূখণ্ড নির্দিষ্ট কাউকে আবাদ করতে দেয়া বৈধ না। এটা মূলত শহরবাসীরা তাদের প্রাণীসমূহের চারণভূমি হিসেবে ব্যবহার করবে তার প্রতি মুখাপেক্ষী হওয়ার কারণে। আর তিনি তাঁর (مَا لَمْ تَنَلْهُ أَخْفَافُ الْإِبِلِ) ‘‘উটের পদচারণা যেখানে পৌঁছেনি’’ এ উক্তি দ্বারা ঐদিকে ইঙ্গিত করেছেন। অর্থাৎ জমি আবাদ করা যেন দূরবর্তী স্থানে হয় যেখানে বিচরণকারী উট না পৌঁছে। (মিরকাতুল মাফাতীহ দ্রষ্টব্য; ‘আওনুল মা‘বূদ ৫ম খন্ড, হাঃ ৩০৬২)


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১২: ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা) (كتاب البيوع) 12. Business Transactions

পরিচ্ছেদঃ ১৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - অনাবাদী জমিন আবাদ করা ও সেচের পালা

৩০০১-[১১] ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তিন প্রকার জিনিসে সকল মুসলিম অংশীদার; আর তা হলো পানি, ঘাস ও আগুন। (আবূ দাঊদ ও ইবনু মাজাহ)[1]

وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: الْمُسْلِمُونَ شُرَكَاءُ فِي ثَلَاث: الْمَاءِ وَالْكَلَأِ وَالنَّارِ . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَابْنُ مَاجَه

وعن ابن عباس قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: المسلمون شركاء في ثلاث: الماء والكلأ والنار . رواه أبو داود وابن ماجه

ব্যাখ্যা: (فى الْمَاءِ) অর্থাৎ- ঐ পানি যা কারো অনুসন্ধান এবং প্রচেষ্টার মাধ্যমে অর্জন হয়নি, যেমন খাল এবং কূপের পানি এবং নদী হতে গ্রহণ করে কোনো পাত্রে অথবা পুকুর এবং নালাতে সংরক্ষণ করা হয়নি।

(الْكَلَأِ) ভিজা এবং শুকনা তৃণলতা। খত্ত্বাবী বলেনঃ এর অর্থ হলো ঐ ঘাস যা অনাবাদী ভূখণ্ডে উৎপন্ন হয় এবং জনগণ পশু চড়ায়, তা কাউকে বাদ দিয়ে কারো জন্য নির্দিষ্ট করে দেয়া বৈধ নয়। আর ঘাস যখন কোনো ব্যক্তির সুনির্দিষ্ট মালিকানাভুক্ত জমিতে উৎপন্ন হবে তখন তা ঐ ব্যক্তির জন্য নির্দিষ্ট সম্পদ, তার অনুমতি ছাড়া অন্য কারো তার সম্পদে অংশীদার হওয়ার অধিকার নেই।

(وَالنَّارِ) আগুনে অংশীদার হওয়া থেকে উদ্দেশ্য হলো- সে আগুন হতে প্রদীপ জ্বালাতে, তার আলো দ্বারা আলো গ্রহণ করতে কাউকে নিষেধ করা যাবে না, তবে আগুন প্রজ্জ্বলনকারীর এ অধিকার আছে যে, সে আগুন হতে অগ্নিশিখা গ্রহণ করতে কউকে বাধা দিবে। কেননা তা আগুনকে কমিয়ে দেয় এবং আগুনকে নিভিয়ে দেয়ার পর্যায়ে পৌঁছায়। একমতে বলা হয়েছে, আগুন দ্বারা ঐ পাথর উদ্দেশ্য যা দ্বারা আগুন জ্বালানো হয়। যখন এ পাথর কোনো অনাবাদী ভূখণ্ডে হবে তখন তা হতে কিছু গ্রহণ করতে কাউকে বাধা দেয়া যাবে না।

সিনদী বলেনঃ এক সম্প্রদায় এ হাদীসের বাহ্যিক অর্থ গ্রহণ করেছে। অতঃপর তারা বলেছে যে, এ তিনটি বিষয়ে কারো মালিকানা প্রতিষ্ঠা করা যাবে না এবং সাধারণভাবে এগুলো বিক্রি করাও বৈধ হবে না। বিদ্বানদের মাঝে প্রসিদ্ধ যে, (الْكَلَأِ) তথা ঘাস দ্বারা ঐ বৈধ ঘাস যা কারো সাথে নির্দিষ্ট নয়। আর (الْمَاءِ) তথা পানি দ্বারা আকাশ, ঝর্ণা এবং নদীসমূহের পানি, যার মালিকানা প্রতিষ্ঠা করা যায় না। আর (وَالنَّارِ) তথা আগুন দ্বারা ঐ বৃক্ষ উদ্দেশ্য মানুষ যাকে বৈধভাবে লাকড়ী স্বরূপ গ্রহণ করে, অতঃপর তা দ্বারা আগুন জ্বালায়। আর এ পানি যখন মানুষ তার পাত্রে, তার মালিকানায় সংরক্ষণ করবে তখন তা বিক্রি করা বৈধ হবে না। এভাবে অন্যান্য বস্তু। (‘আওনুল মা‘বূদ ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ৩৪৭৪)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১২: ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা) (كتاب البيوع) 12. Business Transactions

পরিচ্ছেদঃ ১৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - অনাবাদী জমিন আবাদ করা ও সেচের পালা

৩০০২-[১২] আসমার ইবনু মুযাররিস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে (ইসলামে দীক্ষেত হওয়ার) বায়’আত করলাম। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, যে ব্যক্তি কোনো পানির (কূপের) কাছে প্রথমে পৌঁছে, আর ঐ পানির কাছে তার পূর্বে কোনো মুসলিম পৌঁছেনি, তখন সেটা তার (হক)। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْ أَسْمَرَ بْنِ مُضَرِّسٍ قَالَ: أَتَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَبَايَعْتُهُ فَقَالَ: «مَنْ سَبَقَ إِلَى مَاءٍ لَمْ يَسْبِقْهُ إِلَيْهِ مُسْلِمٌ فَهُوَ لَهُ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

وعن أسمر بن مضرس قال: أتيت النبي صلى الله عليه وسلم فبايعته فقال: «من سبق إلى ماء لم يسبقه إليه مسلم فهو له» . رواه أبو داود

ব্যাখ্যা: (مَنْ سَبَقَ إِلٰى مَاءٍ) অর্থাৎ- বৈধ পানি, এভাবে অন্যান্য বৈধ বস্তু; যেমন- ঘাস, লাকড়ী ইত্যাদি। অন্য বর্ণনাতে (إِلٰى مَاءٍ) অর্থাৎ- (لَمْ يَسْبِقْهُ إِلَيْهِ مُسْلِمٌ فَهُوَ لَه) সে যা গ্রহণ করেছে তা তার জন্য মালিকানা যে কোনো কূপের কাছে আসে। যা ঐ স্থানে অবশিষ্ট থাকবে তা নয়, কেননা তাতে তার মালিকানা প্রতিষ্ঠিত নয়। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১২: ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা) (كتاب البيوع) 12. Business Transactions

পরিচ্ছেদঃ ১৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - অনাবাদী জমিন আবাদ করা ও সেচের পালা

৩০০৩-[১৩] ত্বাঊস [ইবনু কায়সার] (রহঃ) মুরসালরূপে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কোনো অনাবাদি জমিন চাষাবাদ করবে, ঐ জমিন তার (হক) হবে। মালিকবিহীন জমিন আল্লাহ ও তাঁর রসূলের, অতঃপর আমার পক্ষ হতে তা তোমাদের। (শাফি’ঈ)[1]

وَعَنْ طَاوُسٍ مُرْسَلًا: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «من أحيى مَوَاتًا مِنَ الْأَرْضِ فَهُوَ لَهُ وَعَادِيُّ الْأَرْضِ لِلَّهِ وَرَسُولِهِ ثُمَّ هِيَ لَكُمْ مِنِّي» . رَوَاهُ الشَّافِعِي

وعن طاوس مرسلا: أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: «من أحيى مواتا من الأرض فهو له وعادي الأرض لله ورسوله ثم هي لكم مني» . رواه الشافعي

ব্যাখ্যা: (وَعَادِىُّ الْأَرْضِ) অর্থাৎ- বিল্ডিং এবং ঐ পুরনো ভূসম্পত্তি যার মালিক জানা যায় না। হূদ  (আঃ)-এর সম্প্রদায় ‘আদ জাতির যুগে তাতে অধিকারে গত হওয়ার কারণে সেদিকে সম্বন্ধ করা হয়েছে।

(لِلّٰهِ وَرَسُوْلِه) অর্থাৎ- অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা মনে করেন এবং সঠিক বলে জানেন, সে অনুপাতে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাতে কর্তৃত্ব করবেন।

(ثُمَّ هِىَ لَكُمْ مِنِّى) তোমরা তা আবাদকরণে আমি তোমাদেরকে তা দান করার মাধ্যমে। কাযী (রহঃ) বলেনঃ এতে বুঝানো হয়েছে যে, আল্লাহর উল্লেখ তাঁর রসূলের উল্লেখের জন্য ভূমিকা স্বরূপ। এটা মূলত তাঁর মহামর্যাদার কারণে। আর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হুকুম আল্লাহর হুকুম। এজন্য তার হতে তাঁর রসূলের দিকে প্রত্যাবর্তন করা হয়েছে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
বর্ণনাকারীঃ তাঊস (রহঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১২: ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা) (كتاب البيوع) 12. Business Transactions

পরিচ্ছেদঃ ১৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - অনাবাদী জমিন আবাদ করা ও সেচের পালা

৩০০৪-[১৪] শারহুস্ সুন্নাহ্’র এক বর্ণনায় আছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ’আব্দুল্লাহ ইবনু মাস্’ঊদ (রাঃ)-কে মদীনায় বসতবাড়ির জায়গা জায়গিররূপে দান করলেন; আর তা ছিল আনসারদের খেজুর বাগান ও বাড়ির ইমারতের মধ্যস্থলে। তখন আনসারীদের বানী ’আব্দ ইবনু যুহরাহ্ গোত্র বলে উঠল, হে আল্লাহর নবী! উম্মু ’আব্দ-এর পুত্রকে আমাদের কাছ থেকে দূরে রাখুন। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাদের উদ্দেশে বললেন, তবে কেন আল্লাহ আমাকে প্রেরণ করেছেন? আল্লাহ ওই জাতিকে পাক-পবিত্র করেন না যাদের মধ্যে দুর্বলের হক প্রতিষ্ঠা করা হয় না।[1]

وَرُوِيَ فِي «شَرْحِ السُّنَّةِ» : أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَقْطَعَ لِعَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ الدُّورَ بِالْمَدِينَةِ وَهِيَ بَيْنَ ظَهْرَانَيْ عِمَارَةِ الْأَنْصَارِ مِنَ الْمَنَازِلِ وَالنَّخْلِ فَقَالَ بَنُو عَبْدِ بن زهرَة: نكتب عَنَّا ابْنَ أُمِّ عَبْدٍ فَقَالَ لَهُمْ رَسُولُ الله: «فَلِمَ ابْتَعَثَنِي اللَّهُ إِذًا؟ إِنَّ اللَّهَ لَا يُقَدِّسُ أُمَّةً لَا يُؤْخَذُ لِلضَّعِيفِ فِيهِمْ حَقُّهُ»

وروي في «شرح السنة» : أن النبي صلى الله عليه وسلم أقطع لعبد الله بن مسعود الدور بالمدينة وهي بين ظهراني عمارة الأنصار من المنازل والنخل فقال بنو عبد بن زهرة: نكتب عنا ابن أم عبد فقال لهم رسول الله: «فلم ابتعثني الله إذا؟ إن الله لا يقدس أمة لا يؤخذ للضعيف فيهم حقه»

ব্যাখ্যা: কাযী বলেনঃ বর্ণনাকারী الدُّورَ দ্বারা এ সকল বাসস্থান এবং আঙ্গিনা উদ্দেশ্য করেছেন, যেখানে ঘর নির্মাণ করার জন্য আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে তা নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন।

(فَلِمَ ابْتَعَثَنِىَ اللّٰهُ إِذًا؟) তবে কেন আল্লাহ আমাকে প্রেরণ করেছেন? অর্থাৎ আল্লাহ আমাকে প্রেরণ করেছেন ন্যায় প্রতিষ্ঠা এবং সবল ও দুর্বলের মাঝে সাম্য প্রতিষ্ঠার জন্য। আমার জাতি যদি দুর্বলকে তার অধিকার থেকে বঞ্চিতই করে তাহলে আমাকে প্রেরণ করার ফায়দা কি? (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১২: ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা) (كتاب البيوع) 12. Business Transactions

পরিচ্ছেদঃ ১৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - অনাবাদী জমিন আবাদ করা ও সেচের পালা

৩০০৫-[১৫] ’আমর ইবনু শু’আয়ব তাঁর পিতার সূত্রে তাঁর দাদা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ’মাহ্যূর’ নামক ময়দানের পানির ব্যাপারে ফায়সালা দিয়েছেন- তা ততক্ষণ পর্যন্ত আটকে রাখা যাবে, যতক্ষণ না তা পায়ের ছোট গিরা পর্যন্ত পৌঁছে। অতঃপর উপরের ব্যক্তি নিচের ব্যক্তির জন্য ছেড়ে দেবে। (আবূ দাঊদ ও ইবনু মাজাহ)[1]

وَعَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَضَى فِي السَّيْلِ الْمَهْزُورِ أَنْ يُمْسَكَ حَتَّى يَبْلُغَ الْكَعْبَيْنِ ثُمَّ يُرْسَلَ الْأَعْلَى عَلَى الْأَسْفَل. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَابْن مَاجَه

وعن عمرو بن شعيب عن أبيه عن جده: أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قضى في السيل المهزور أن يمسك حتى يبلغ الكعبين ثم يرسل الأعلى على الأسفل. رواه أبو داود وابن ماجه

ব্যাখ্যা: (حَتّٰى يَبْلُغَ) অর্থাৎ- পানি। এ হাদীস এবং এর পূর্বে যে হাদীস আছে তাতে আছে উঁচু জমির মালিক তার অপেক্ষা নিম্নবর্তী জমির পূর্বে নিজ জমিকে স্রোত এবং কূপের পানি দ্বারা সিক্ত করার অধিকার রাখে। পানি যতক্ষণ পর্যন্ত টাখনুদ্বয় পর্যন্ত না পৌঁছবে ততক্ষণ পর্যন্ত উঁচু জমির মালিক পানি আটকিয়ে রাখবে।

ইবনুত্ তীন বলেন, যতক্ষণ টাখনুদ্বয় পর্যন্ত পানি না পৌঁছবে ততক্ষণ পর্যন্ত উঁচু জমির মালিক পানি আটকিয়ে রাখবে। জুমহূর ‘উলালামাদের এটাই অভিমত। ইবনু কিনানাহ্ একে খেজুর বাগান ও বৃক্ষের সাথে নির্দিষ্ট করেছেন। তিনি বলেন, পক্ষান্তরে শস্যের ক্ষেত্রে জুতার ফিতা পর্যন্ত।

ত্ববারী বলেনঃ ভূমি বিভিন্ন ধরনের। সুতরাং প্রত্যেক ভূমির জন্য ঐ পরিমাণ পানি জমিয়ে রাখতে হবে যা ঐ জমির জন্য যথেষ্ট হবে। নায়লুল আওত্বারে এভাবেই উল্লেখ আছে। [কানযুল উম্মাল দ্রষ্টব্য] (আওনুল মা‘বূদ ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ৩৬৩৬)


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১২: ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা) (كتاب البيوع) 12. Business Transactions

পরিচ্ছেদঃ ১৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - অনাবাদী জমিন আবাদ করা ও সেচের পালা

৩০০৬-[১৬] সামুরাহ্ ইবনু জুনদুব হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক আনসারী লোকের বাগানে তাঁর কিছু খেজুর গাছ ছিল। আর ঐ আনসারীর সাথে তার পরিবার ছিল। তাই যখন সামুরাহ্ বাগানে প্রবেশ করতেন, তখন আনসারীর তাতে কষ্ট অনুভব হতো। এ কারণে আনসারী নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে বিষয়টি উল্লেখ করলেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সামুরাহ্ (রাঃ)-কে ডেকে তা বিক্রি করে দিতে বললেন, কিন্তু সামুরাহ্ তাতে অসম্মতি প্রকাশ করলেন। অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তার পরিবর্তে অন্য কোথাও গাছ নিয়ে নাও। কিন্তু সামুরাহ্ তাতেও রাজি হলো না। অতঃপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি তাকে তা দান কর, আর তোমার জন্য এতেই কল্যাণ (প্রতিদান) রয়েছে। সর্বোপরি তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাকে উৎসাহমূলক কথা বললেন, কিন্তু এতেও তিনি অস্বীকৃতি জানালেন। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তুমি প্রতিবেশীর পক্ষে অকল্যাণকামী। আর আনসারীকে বললেন, যাও তুমি তার গাছ কেটে ফেল। (আবূ দাঊদ)[1]

জাবির (রাঃ)-এর হাদীস ’যে জমি আবাদ করে’ জবরদখলের অধ্যায়ে সা’ঈদ বিন যায়দ -এর সূত্রে বর্ণনা করা হয়েছে। আর আমরা উল্লেখ করব আবূ সিরমাহ্’-এর হাদীস- ’যে ব্যক্তি অপরকে কষ্ট দেয় আল্লাহ তাকে কষ্ট দেয়’ ’বিচ্ছিন্নতা নিষিদ্ধ’ অধ্যায়ে।

وَعَنْ سَمُرَةَ بْنِ جُنْدُبٍ: أَنَّهُ كَانَتْ لَهُ عضد من نخل فِي حَائِطِ رَجُلٍ مِنَ الْأَنْصَارِ وَمَعَ الرَّجُلِ أَهْلُهُ فَكَانَ سَمُرَةُ يَدْخُلُ عَلَيْهِ فَيَتَأَذَّى بِهِ فَأتى النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم فذكرذلك لَهُ فَطَلَبَ إِلَيْهِ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم ليَبِيعهُ فَأبى فَطلب أَن يناقله فَأَبَى قَالَ: «فَهَبْهُ لَهُ وَلَكَ كَذَا» أَمْرًا رَغْبَةً فِيهِ فَأَبَى فَقَالَ: «أَنْتَ مُضَارٌّ» فَقَالَ لِلْأَنْصَارِيِّ: «اذْهَبْ فَاقْطَعْ نَخْلَهُ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ
وَذكر حَدِيث جَابر: «من أحيي أَرضًا» فِي «بَاب الْغَصْب» بِرِوَايَةِ سَعِيدِ بْنِ زَيْدٍ. وَسَنَذْكُرُ حَدِيثَ أَبِي صِرْمَةَ: «مَنْ ضَارَّ أَضَرَّ اللَّهُ بِهِ» فِي «بَاب مَا يُنْهِي من التهاجر»

وعن سمرة بن جندب: أنه كانت له عضد من نخل في حائط رجل من الأنصار ومع الرجل أهله فكان سمرة يدخل عليه فيتأذى به فأتى النبي صلى الله عليه وسلم فذكرذلك له فطلب إليه النبي صلى الله عليه وسلم ليبيعه فأبى فطلب أن يناقله فأبى قال: «فهبه له ولك كذا» أمرا رغبة فيه فأبى فقال: «أنت مضار» فقال للأنصاري: «اذهب فاقطع نخله» . رواه أبو داود وذكر حديث جابر: «من أحيي أرضا» في «باب الغصب» برواية سعيد بن زيد. وسنذكر حديث أبي صرمة: «من ضار أضر الله به» في «باب ما ينهي من التهاجر»

ব্যাখ্যা: (أَنَّه كَانَتْ لَه عَضْدٌ مِنْ نَّخْلٍ) খত্ত্বাবী বলেনঃ عَضْدٌ এভাবে আবূ দাঊদের বর্ণনাতেও আছে। অর্থাৎ- এমন খেজুর বৃক্ষকে উদ্দেশ্য করছে ইতিপূর্বে যাতে খেজুর আসেনি এবং ফুলও আসেনি। আস্মা‘ঈ বলেন, যখন কোনো খেজুর বৃক্ষের ডাল থাকে এবং গ্রহণকারী তা হতে গ্রহণ করে তখন তাকে ‘আরবীতে (النَّخْلَة الْعَضِيدَة) বলে। এতে তথ্য রয়েছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অংশীদার হতে ক্ষতি প্রতিহত করতে নির্দেশ দিয়েছেন। এ হাদীসে এমন কিছু নেই যে, তিনি তার খেজুর বৃক্ষ উপড়িয়েছেন, বিষয়টি এ ধরনের হওয়ার সাথে সাদৃশ্য রাখছে যে, তিনি কেবল ক্ষতি হতে ব্যক্তিকে পৃথক রাখতেই এ কথা বলেছেন।

সিনদী বলেনঃ (عَضْدٌ مِنْ نَّخْلٍ) এ অংশ দ্বারা খেজুর বৃক্ষের স্তর উদ্দেশ্য করেছেন এবং এ কথাকে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে যে, যদি তার অনেক খেজুর বৃক্ষ থাকত তাহলে আনসারীকে সেগুলো কাটার ব্যাপারে নির্দেশ করতেন না। আনসারীর কাছে পৌঁছার কারণে আনসারীর যে ক্ষতি সাধন হয় তার অপেক্ষা সামুরার বেশি ক্ষতি হওয়ার কারণে। আর يُنَاقِلَه শব্দের সর্বনামও খেজুর বৃক্ষ একটি হওয়ার উপর প্রমাণ বহন করছে। অতএব বিশুদ্ধ কথা হলো عضيد এমন খেজুর বৃক্ষ ব্যক্তি যা হতে হাত দ্বারা গ্রহণ করে।
নিহায়াহ্ গ্রন্থে আছে- তিনি খেজুর বৃক্ষের স্তর উদ্দেশ্য করেছেন। একমতে বলা হয়েছে, সেটা হলো (عَضْدٌ مِنْ نَّخْلٍ) খেজুর বৃক্ষের যখন কোনো ডাল থাকবে তখন ব্যক্তি সেখানে থেকে গ্রহণ করবে আর সেটাই হলো عضيد।

কামূসে আছে, العضد এবং العضيد বলতে খেজুর বৃক্ষের স্তর। তাতে আরও আছে طريقة বলতে দীর্ঘ খেজুর বৃক্ষ। أَنْتَ مُضَارٌّ অর্থাৎ- তুমি মানুষের ক্ষতি চাচ্ছ। আর যে ব্যক্তি মানুষের ক্ষতি চায় তার ক্ষতি প্রতিহত করা বৈধ এবং তোমার ক্ষতি প্রতিহত করা হবে, অর্থাৎ তোমার বৃক্ষ কাটা হবে। [ফাতহুল ওয়াদূদ দ্রষ্টব্য] (‘আওনুল মা‘বূদ ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ৩৬৩৩)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১২: ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা) (كتاب البيوع) 12. Business Transactions
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ১১ পর্যন্ত, সর্বমোট ১১ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে