৩০০০

পরিচ্ছেদঃ ১৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - অনাবাদী জমিন আবাদ করা ও সেচের পালা

৩০০০-[১০] আব্ইয়ায ইবনু হাম্মাল মা’রিবী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট স্বীয় গোত্রের প্রতিনিধিরূপে আসলেন। তখন তিনি মা’রিব-এ অবস্থিত লবণের কূপটি তাঁর নিকট (দান হিসেবে) চাইলেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁকে তা দান করলেন। যখন তিনি রওয়ানা হলেন, তখন এক ব্যক্তি (আক্রা ইবনু হাবিস) বলল, হে আল্লাহর রসূল! আপনি তাঁকে প্রস্রবণের অফুরন্ত পানি দিয়ে দিলেন। (আক্রা বলেন) অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর নিকট হতে তা ফেরত নিলেন। বর্ণনাকারী বলেন, আব্ইয়ায এটাও জানতে চাইলেন যে, আরাক গাছের কোন্টি রক্ষা করা যায়? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, যা উটের ক্ষুর নাগাল পায় না। (তিরমিযী, ইবনু মাজাহ ও দারিমী)[1]

وَعَن أَبْيَضَ بْنِ حَمَّالِ الْمَأْرِبِيِّ: أَنَّهُ وَفَدَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَسْتَقْطَعَهُ الْمِلْحَ الَّذِي بِمَأْرِبَ فَأَقْطَعُهُ إِيَّاهُ فَلَمَّا وَلَّى قَالَ رَجُلٌ: يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّمَا أَقْطَعْتَ لَهُ الْمَاءَ الْعِدَّ قَالَ: فَرَجَّعَهُ مِنْهُ قَالَ: وَسَأَلَهُ مَاذَا يحمى من الْأَرَاك؟ قَالَ: «مَا لَمْ تَنَلْهُ أَخْفَافُ الْإِبِلِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَابْنُ مَاجَه والدارمي

وعن أبيض بن حمال المأربي: أنه وفد إلى رسول الله صلى الله عليه وسلم فأستقطعه الملح الذي بمأرب فأقطعه إياه فلما ولى قال رجل: يا رسول الله إنما أقطعت له الماء العد قال: فرجعه منه قال: وسأله ماذا يحمى من الأراك؟ قال: «ما لم تنله أخفاف الإبل» . رواه الترمذي وابن ماجه والدارمي

ব্যাখ্যা: (قَالَ رَجُلٌ) ত্বীবীর বর্ণনানুযায়ী লোকটি আকরা বিন হাবিস। একমতে বলা হয়েছে, নিশ্চয় লোকটি ‘আব্বাস বিন মিরদাস (الْمَاءَ الْعِدَّ) অর্থাৎ- এমন অবিরাম পানি যা প্রবাহিত হওয়া থেকে বিচ্ছিন্ন হয় না।

(فَرَجَّعَه مِنْهُ) ‘‘তিনি তার নিকট থেকে তা ফেরত নিলেন’’। কারী বলেন, এ থেকে বুঝা গেল খনিজ সম্পদ দান করা, ঐ সময় বৈধ হবে যখন তা লুকায়িত থাকবে কষ্ট এবং যোগান ছাড়া যার সামান্য অংশ অর্জন হয় না; যেমন- লবণ, পেট্রোল, মূল্যবান পাথর, লাল সোনা ইত্যাদি। আর যা বাহ্যিক শ্রম এবং কর্ম ছাড়াই যা হতে উদ্দেশ্য অর্জন হয় তা কাউকে নির্দিষ্ট করে দেয়া বৈধ না। বরং তাতে সকল মানুষ অংশীদার; যেমন- ঘাস, উপত্যকার পানি ইত্যাদি। আর বিচারক যখন ফায়সালা দিবে, অতঃপর সে ফায়সালার বিপরীতে হক প্রকাশ পাবে, এমতাবস্থায় বিচারক তার ফায়সালাকে ভেঙ্গে দিবে এবং ঐ ফায়সালা হতে ফিরে আসবে।
 

(عما يحمى مِنْ الْأَرَاك) ফাতহুল ওয়াদূদ গ্রন্থকার বলেন, এটা হতে উদ্দেশ্য হলো- লোকটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে ঐ আরাক সম্পর্কে প্রশ্ন করলেন, যা সংরক্ষণ করা যাবে, যেন লোকটি বলেছে, হে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! কোন্ আরাক সংরক্ষণ করা যাবে?

অধ্যায়ের হাদীসগুলো ঐ কথার উপর প্রমাণ বহন করছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তার পরবর্তী ইমামদের জন্য বৈধ হবে কাউকে কোনো খনি নির্দিষ্ট করে দেয়া। আর ‘নির্দিষ্ট করে দেয়া’ উদ্দেশ্য হলো- কোনো মৃত ভূখণ্ড কতক ব্যক্তির সাথে নির্দিষ্ট। চাই তা কোনো খনি হোক অথবা কোনো জমি হোক। তবে তা এ শর্তে যে, ঐ মৃত ভূখণ্ডের সাথে কেউ সম্পৃক্ত থাকতে পারবে না। ইবনুত্ তীন বলেন, কাউকে কোনো কিছু নির্দিষ্ট করে দেয়াকে ঐ সময়ই কেবল إقطاع বলা যাবে, যখন তা ভূসম্পত্তি অথবা স্থাবর সম্পত্তির অন্তর্ভুক্ত হবে। আর কেবল মালে ফাই থেকেই কাউকে কোনো কিছু নির্দিষ্ট করে দেয়া বৈধ। মুসলিম ব্যক্তির অথবা চুক্তিতে আবদ্ধ কোনো অমুসলিম ব্যক্তির অধিকার হতে কাউকে কোনো কিছু নির্দিষ্ট করে দেয়া যাবে না।


أَخْفَافُ الْإِبِلِ অর্থাৎ- চারণভূমি এবং বসতি হতে বিচ্ছিন্ন। এতে ঐ ব্যাপারে দলীল রয়েছে যে, বসতির নিকটবর্তী মৃত ভূখণ্ড নির্দিষ্ট কাউকে আবাদ করতে দেয়া বৈধ না। এটা মূলত শহরবাসীরা তাদের প্রাণীসমূহের চারণভূমি হিসেবে ব্যবহার করবে তার প্রতি মুখাপেক্ষী হওয়ার কারণে। আর তিনি তাঁর (مَا لَمْ تَنَلْهُ أَخْفَافُ الْإِبِلِ) ‘‘উটের পদচারণা যেখানে পৌঁছেনি’’ এ উক্তি দ্বারা ঐদিকে ইঙ্গিত করেছেন। অর্থাৎ জমি আবাদ করা যেন দূরবর্তী স্থানে হয় যেখানে বিচরণকারী উট না পৌঁছে। (মিরকাতুল মাফাতীহ দ্রষ্টব্য; ‘আওনুল মা‘বূদ ৫ম খন্ড, হাঃ ৩০৬২)


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১২: ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা) (كتاب البيوع)