পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ

৪৩৬৮-[৬৫] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সম্মুখ দিয়ে যাচ্ছিলাম। সে সময় আমার ইযার ঝুলানো ছিল। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাকে বললেনঃ হে ’আবদুল্লাহ! তোমার ইযার উঠিয়ে নাও। তখনই আমি তা উঠিয়ে নিলাম। অতঃপর বললেনঃ আরো উঠাও। আমি আরো উঠালাম। এরপর হতে আমি সর্বদা তা উপরে বাঁধতে চেষ্টা করতাম। কেউ কেউ জিজ্ঞেস করল, কতটুকু উপরে উঠাতে হবে তিনি বললেন, দু’ পায়ের অর্ধ নলা পর্যন্ত। (মুসলিম)[1]

الْفَصْلُ الثَّالِثُ

عَن ابنِ عمَرِ قَالَ: مَرَرْتُ بِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَفِي إِزَارِي اسْتِرْخَاءٌ فَقَالَ: «يَا عَبْدَ اللَّهِ ارْفَعْ إِزَارَكَ» فَرَفَعْتُهُ ثُمَّ قَالَ: «زِدْ» فَزِدْتُ فَمَا زِلْتُ أَتَحَرَّاهَا بَعْدُ فَقَالَ: بَعْضُ الْقَوْمِ: إِلَى أَيْنَ؟ قَالَ: «إِلَى أَنْصَافِ السَّاقَيْنِ» . رَوَاهُ مُسلم

عن ابن عمر قال: مررت برسول الله صلى الله عليه وسلم وفي إزاري استرخاء فقال: «يا عبد الله ارفع إزارك» فرفعته ثم قال: «زد» فزدت فما زلت أتحراها بعد فقال: بعض القوم: إلى أين؟ قال: «إلى أنصاف الساقين» . رواه مسلم

ব্যাখ্যাঃ পুরুষের জন্য পায়ের টাখনুর নীচে ঝুলিয়ে কাপড় পরিধান করা নিষেধ। আবূ সা‘ঈদ আল খুদরী  বলেন,

إِزْرَةُ الْمُؤْمِنِ إِلٰى أَنْصَافِ سَاقَيْهِ لَا جُنَاحَ عَلَيْهِ مَا بَيْنَهٗ وَبَيْنَ الْكَعْبَيْنِ وَمَا أَسْفَلَ مِنْ الْكَعْبَيْنِ فِي النَّارِ

‘‘মু’মিনের লুঙ্গি বা ইযার হবে তার নলার মাঝামাঝি পর্যন্ত। তবে নলা এবং টাখনুর মাঝে হলেও সমস্যা নেই। এর নীচে হলে পরেই তা জাহান্নামে যাবে।’’ (সুনান ইবনু মাজাহ হাঃ ৩৫৭৩)

এ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় নলার মাঝামাঝি কাপড় পরা পুরুষের জন্য মুস্তাহাব। মধ্য নলা থেকে টাখনু পর্যন্ত কাপড় পরা মাকরূহ হওয়া ছাড়াই জায়িয। টাখনুর নিচে কাপড় নামিয়ে পরা সাধারণভবে নিষিদ্ধতার যদি অহংকারবশত টাখনুর নীচে নামিয়ে পরে তাহলে তা স্পষ্ট হারাম। যে হাদীসগুলোতে বলা হয়েছে যে, টাখনুর নীচের অংশ জাহান্নামে যাবে। সেগুলোর উদ্দেশ্য হলো, অহংকারবশত টাখনুর নীচে কাপড় ঝুলিয়ে পরলে সে অংশটুকু জাহান্নামে যাবে। কাযী বলেনঃ ‘আলিমগণ বলেছেন, সার্বিকভাবে পোশাকের ক্ষেত্রে প্রয়োজন ও প্রচলনের অতিরিক্ত লম্বা ও প্রশস্ত পোশাক পরিধান করা মাকরূহ। (শারহুন নাবাবী ১৪শ খন্ড, হাঃ ২০৮৬/৪৩)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২২: পোশাক-পরিচ্ছদ (كتاب اللباس ) 22. Clothing

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ

৪৩৬৯-[৬৬] উক্ত রাবী [’আবদুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ)] হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি অহংকারবশতঃ কাপড় হেঁচড়িয়ে চলে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা’আলা তার দিকে তাকাবেন না। তখন আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) বললেনঃ হে আল্লাহর রসূল! অসাবধানতাবশতঃ অনেক সময় আমার লুঙ্গি টাখনুর নিচে ঝুলে যায়। তখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে লক্ষ্য করে বললেনঃ যারা অহংকারবশতঃ কাপড় ঝুলায় আপনি তাদের অন্তরভুক্ত নন। (বুখারী)[1]

الْفَصْلُ الثَّالِثُ

وَعَنْهُ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَنْ جَرَّ ثَوْبَهُ خُيَلَاءَ لَمْ يَنْظُرِ اللَّهُ إِلَيْهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ» . فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ: يَا رَسُولَ اللَّهِ إِزَارِي يَسْتَرْخِي إِلَّا أَنْ أَتَعَاهَدَهُ. فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّكَ لَسْتَ مِمَّنْ يَفْعَلُهُ خُيَلَاءَ» . رَوَاهُ البُخَارِيّ

وعنه أن النبي صلى الله عليه وسلم قال: «من جر ثوبه خيلاء لم ينظر الله إليه يوم القيامة» . فقال أبو بكر: يا رسول الله إزاري يسترخي إلا أن أتعاهده. فقال له رسول الله صلى الله عليه وسلم: «إنك لست ممن يفعله خيلاء» . رواه البخاري

ব্যাখ্যাঃ পুরুষের জন্য লুঙ্গি, পায়জামা, প্যান্ট ইত্যাদি টাখনুর নিচে ঝুলিয়ে পরার ব্যাপারে এ হাদীসটি দিয়ে অনেকে দলীল পেশ করেন যে, অহংকারবশতঃ না হলে টাখনুর নিচে কাপড় পরা যাবে। তাই এ বিষয়টি বিস্তারিত বলার প্রয়োজন রয়েছে।

লুঙ্গি, পায়জামা, প্যান্ট ইত্যাদি কাপড় যদি টাখনুর সামান্য নিচে ঝুলিয়ে পরিধান করা হয় এবং তাঁর উদ্দেশ্য হয় অহংকার করা, তবে তাঁর শাস্তি হলো কিয়ামত দিবসে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর দিকে রহমাতের দৃষ্টি দিবেন না, তাঁর সাথে কথা বলবেন না, তাকে পবিত্র করবেন না এবং তাঁর জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। যদিও এ হাদীসে শুধু তাকানোর কথা আছে তবে অন্য হাদীসে বাকীগুলোর কথা এসেছে। আর যদি অহংকারের সাথে নয় বরং সাধারণভাবে কাপড় ঝুলিয়ে পরে, তবে তাঁর শাস্তি হলো, তাঁর টাখনুদ্বয়কে জাহান্নামের আগুনে পোড়ানো হবে। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ

ثَلاَثَةٌ لاَ يُكَلّمُهُمُ اللّٰهُ يَوْمَ الْقِياَمَةِ وَلاَ يَنْظُرُ إلَيْهِمْ وَلاَ يُزَكّيْهِمْ وَلَهُمْ عَذاَبٌ ألِيْم : المُسْبِلُ وَالمَنَّانُ وَالْمُنْفِقُ سِـلْعَتَهٗ بـاِلْحَلِفِ الكـاَذِبِ.

‘‘কিয়ামত দিবসে আল্লাহ‌ তা‘আলা তিন ব্যক্তির সাথে কথা বলবেন না, তাদের দিকে তাকাবেন না, তাদেরকে পবিত্র করবেন না এবং তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। সেই তিনি ব্যক্তি হলো : (১) পায়ের টাখনুর নীচে কাপড় ঝুলিয়ে পরিধানকারী, (২) দান করে খোটাদানকারী এবং (৩) মিথ্যা শপথ করে পণ্য বিক্রয়কারী। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এ হাদীসেই বলেনঃ إلَيْهِ يَوْمَ الْقِياَمَـةِ خُيَلَاءَ لَمْ يَنْظُرِالله مَنْ جَرَّ ثَوْبَهٗ ‘‘যে ব্যক্তি অহংকারবশতঃ কাপড় ঝুলিয়ে পরিধান করবে কিয়ামত দিবসে আল্লাহ‌ তাঁর দিকে রহমাতের দৃষ্টিপাত করবেন না’’ এ বিধান ঐ ব্যক্তির জন্য যে অহংকারবশতঃ কাপড় ঝুলিয়ে পরে।

আর যে ব্যক্তি অহংকারের উদ্দেশ্য ছাড়া কাপড় ঝুলিয়ে পরবে তাঁর ব্যাপারে হাদীসে এসেছে, আবূ হুরায়রা  বর্ণনা করেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ (مَا أَسْفَلَ الْكعبين مِنَ الْإِزَارِ فَفِى النَّارِ) ‘‘যে টাখনুদ্বয়ের নীচে কাপড় ঝুলিয়ে পরা হবে তা আগুনের মধ্যে জ্বলবে’’ এ হাদীসে জাহান্নামের আগুনে টাখনু জ্বলার ব্যাপারে অহঙ্কারের কথা উলে­খ নেই।

আবূ সা‘ঈদ আল খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ

إِزْرَةُ الْمُؤْمِنِ إِلَى نِصْفِ السَّاقِ وَلا حَرَجَ أَوْ لا جُنَاحَ فِيمَا بَيْنَهٗ وَبَيْنَ الْكَعْبَيْنِ ومَا كَانَ أَسْفَلَ مِنَ الْكَعْبَيْنِ فَهُوَ فِي النَّارِ وَمَنْ جَرَّ إِزَارَهُ بَطَرًا لَمْ يَنْظُرِ اللهُ إِلَيْهِ يَوْمَ الْقِياَمَةِ

‘‘মু’মিন ব্যক্তির কাপড় অর্ধ নলা পর্যন্ত, এতে কোন অসুবিধা নেই’’ (হাঁটু থেকে পায়ের তলার মধ্যভাগকে নলা বলা হয়)। অন্য বর্ণনায় তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এরূপ বলেনঃ ‘‘পায়ের টাখনু এবং হাঁটুর মধ্যবর্তী স্থানে কাপড় পরিধান করাতে কোন অসুবিধা নেই যে টাখনুর নীচে কাপড় পরিধান করা হবে তা জাহান্নামে যাবে, আর যে ব্যক্তি অহংকারবশতঃ কাপড় ঝুলিয়ে পরবে, কিয়ামত দিবসে আল্লাহ‌ তাঁর দিকে দৃষ্টিপাত করবেন না।’’

অনেকে কাপড় ঝুলিয়ে পরিধান করে এবং যুক্তি দেখায় যে, আমি তো অহংকারবশতঃ কাপড় টাখনুর নীচে ঝুলিয়ে পরিনি, সুতরাং এতে তেমন অসুবিধা নেই। উল্লেখিত হাদীসগুলো থেকে স্পষ্ট হয়ে গেল যে, এ ব্যক্তির যুক্তি সম্পূর্ণ অসাড়।

অতএব অহংকারের উদ্দেশ্য ব্যতীত এমনিই সাধারণভাবে কাপড় টাখনুর নিচে ঝুলিয়ে পরলেই জাহান্নামের আগুনে জ্বলতে হবে। আর তাঁর সাথে যদি অহংকারযুক্ত হয় তবে তাঁর শাস্তি আরও কঠিন, তা হলো আল্লাহ‌ তাঁর সাথে কথা বলবেন না, তাঁর দিকে তাকাবেন না, তাকে পবিত্র করবেন না এবং তাঁর জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। ইমাম ইবনু ‘আবদুল বার্ (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, অহংকার ছাড়াও টাখনুর নিচে ঝুলিয়ে কাপড় পরা নিন্দনীয়।

ইমাম নাবাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ এটি মাকরূহ। মূল সুন্নাহ্ হলো অর্ধ নলা পর্যন্ত পরা। কিন্তু কেউ যদি চায় তাহলে সে টাখনু পর্যন্ত নামিয়ে পরতে পারে। কিন্তু অহংকার করে হলে পুরুষের জন্য টাখনুর নীচে কাপড় ঝুলিয়ে পরা হারাম। আর অহংকার ছাড়া হলে ইমাম নাবাবী (রহিমাহুল্লাহ)-এর মতে তা মাকরূহ। আবূ বকর  এই নিষেধাজ্ঞা ও শাস্তির হুমকির মধ্যে পড়বেন না। কারণ তিনি ইচ্ছা করে এমনটা করতেন না।

আবূ বকর (রাঃ)-এর হাদীস দ্বারা যারা দলীল পেশ করতে চায় দু’দিক থেকে তাদের যুক্তি খন্ডন : প্রথম কথা : আবূ বকর (রাঃ) বলেছেন, ‘‘আমার কাপড়ের এক পার্শ্ব (অনিচ্ছাকৃত) ঝুলে পড়ে কিন্তু আমি তা বারবার উঠিয়ে নেয়ার চেষ্টা করি।’’ অতএব তিনি তো ইচ্ছাকৃত এ কাজ করতেন না। বরং তাঁর শরীর অধিক ক্ষীণ হওয়ার কারণে অনিচ্ছাকৃত কাপড় ঝুলে যেত। তাছাড়া তিনি তা উঠিয়ে নেয়ার চেষ্টা করতেন। কিন্তু যারা কাপড় ঝুলিয়ে পরে এবং ধারণা করে যে তারা অহংকার করে না, তারা তো ইচ্ছাকৃত এ কাজ করে। অতএব তাদের ক্ষেত্রে আমরা বলব, অহংকারের উদ্দেশ্য ব্যতীত ইচ্ছাকৃত কাপড় ঝুলিয়ে পরলে তার টাখনু জাহান্নামের আগুনে জ্বলবে। যেমনটি আবূ হুরায়রার হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। আর যদি অহংকারবশতঃ হয় তবে তার শাস্তি হচ্ছে, আল্লাহ‌ তাঁর সাথে কথা বলবেন না, তাঁর দিকে তাকাবেন না, তাকে পবিত্র করবেন না এবং তাঁর জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।

দ্বিতীয় কথা : নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেই আবূ বকর (রাঃ)-কে পরিশুদ্ধ করেছেন এবং সাক্ষ্য দিয়েছেন যে, তিনি সেই সকল লোকেদের অন্তর্ভুক্ত নন, যারা অহংকারবশতঃ এ কাজ করে থাকে। অতএব বর্তমানে যারা টাখনুর নিচে ঝুলিয়ে কাপড় পরে তারা কি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পক্ষ থেকে এরূপ সচ্চরিত্রের সানাদ ও তাঁর সাক্ষ্য লাভ করেছে? কিন্তু শয়তান প্রবৃত্তির অনুসারী লোকেদেরকে কুরআন-সুন্নাহ্‌ থেকে সামঞ্জস্যপূর্ণ উক্তিসমূহকে খেয়াল-খুশির উপর ব্যবহার করতে উদ্বুদ্ধ করে। তখন তারা বিভ্রান্ত হয়। আল্লাহ যাকে ইচছা সঠিক পথে পরিচালিত করে থাকেন। মোটকথা কোন অজুহাত ছাড়া কোন পুরুষের জন্য টাখনুর নিচে লুঙ্গি, পায়জামা, প্যান্ট ইত্যাদি পরা বৈধ নয়। [সম্পাদক]


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২২: পোশাক-পরিচ্ছদ (كتاب اللباس ) 22. Clothing

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ

৪৩৭০-[৬৭] ’ইকরিমাহ্ (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন আমি ’আবদুল্লাহ ইবনু ’আব্বাস (রাঃ)-কে এভাবে লুঙ্গি পরিধান করতে দেখেছি যে, তিনি তাঁর লুঙ্গি সম্মুখের অংশ পায়ের পাতার উপর ঝুলিয়ে রেখেছেন এবং পিছনের অংশ উপরে উঠিয়ে রেখেছেন। আমি জিজ্ঞেস করলামঃ আপনি এভাবে লুঙ্গি পরেছেন কেন? তিনি বললেনঃ আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে এভাবে লুঙ্গি পরিধান করতে দেখেছি। (আবূ দাঊদ)[1]

الْفَصْلُ الثَّالِثُ

وَعَن عِكْرِمَة قَالَ: رأيتُ ابنَ عَبَّاس يَأْتَزِرُ فَيَضَعُ حَاشِيَةَ إِزَارِهِ مِنْ مُقَدَّمِهِ عَلَى ظَهْرِ قَدَمِهِ وَيَرْفَعُ مِنْ مُؤَخَّرِهِ قُلْتُ لِمَ تَأْتَزِرُ هَذِهِ الْإِزْرَةَ؟ قَالَ: رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يأتزرها. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

وعن عكرمة قال: رأيت ابن عباس يأتزر فيضع حاشية إزاره من مقدمه على ظهر قدمه ويرفع من مؤخره قلت لم تأتزر هذه الإزرة؟ قال: رأيت رسول الله صلى الله عليه وسلم يأتزرها. رواه أبو داود

ব্যাখ্যাঃ ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-এর ছাত্র ‘ইকরিমাহ্ যখন ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-কে সামনের দিকে ইযার ঝুলানো দেখে এর কারণ জিজ্ঞেস করলেন, তখন ইবনু ‘আব্বাস  বলেছিলেন যে, তুমি আমাকে যেভাবে ইযার পরতে দেখেছো সেভাবেই রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-ও লুঙ্গি পরতেন। আমি তাকে এভাবেই লুঙ্গি পরতে দেখেছি। তিনি যখন লুঙ্গি পরতেন তখন লুঙ্গির সামনের অংশ পায়ের সামনে দিয়ে কিছুটা ঝুলিয়ে দিতেন এবং পেছনের দিকটা উঠিয়ে রাখতেন যাতে তা টাখনুর নিচ পর্যন্ত না যায়। তবে সামনের দিকে এতটা ঝুলিয়ে রাখতেন না যে, টাখনুর নিচে চলে যায়। বরং তিনি এতটুকু ঝুলাতেন যাতে তা টাখনু বরাবর হতো। এ হাদীস দ্বারা বুঝা যায় যে, অত্র হাদীসে বর্ণিত পদ্ধতিতে লুঙ্গি পরা হারামের অন্তর্ভুক্ত হবে না। ইমাম সুয়ূত্বী (রহিমাহুল্লাহ) তাঁর ‘‘আল জামি‘উস্ সগীর’’ গ্রন্থে বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার ইযার সামনের দিক দিয়ে কিছুটা ঝুলিয়ে দিতেন আর পেছনের দিক দিয়ে উঠিয়ে রাখতেন। (‘আওনুল মা‘বূদ ৭ম খন্ড, হাঃ ৪০৯২)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ ইকরিমা (রহঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২২: পোশাক-পরিচ্ছদ (كتاب اللباس ) 22. Clothing

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ

৪৩৭১-[৬৮] ’উবাদাহ্ ইবনুস্ সামিত (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা পাগড়ী বাঁধবে। কেননা তা মালায়িকাহ্’র (ফেরেশতাদের) প্রতীক। আর তা পিছনে (পিঠের উপর) ছেড়ে দাও। (বায়হাক্বী- শু’আবুল ঈমান)[1]

الْفَصْلُ الثَّالِثُ

وَعَنْ عُبَادَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «عَلَيْكُمْ بالعمائم فَإِنَّهَا سيماء الْمَلَائِكَة وأخوها خلف ظهوركم» . رَوَاهُ الْبَيْهَقِيّ

وعن عبادة رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «عليكم بالعمائم فإنها سيماء الملائكة وأخوها خلف ظهوركم» . رواه البيهقي

ব্যাখ্যাঃ পাগড়ী পরা সম্পর্কে অনেক সহীহ হাদীস বর্ণিত হয়েছে। যেহেতু এ হাদীসটি সহীহ নয় সেহেতু এর বেশি ব্যাখ্যা নিঃষ্প্রয়োজন। তবুও এতটুকু করা যেতে পারে যেমনটা কেউ কেউ বলেছেন যে, বদরের যুদ্ধের দিন যে মালায়িকাহ্ রণক্ষেত্রে এসেছিলেন বলে কুরআন ও হাদীসে বর্ণিত হয়েছে তারা হলুদ রঙের পাগড়ী পরেছিলেন। যদিও কুরআনের সূরাহ্ আ-লি ‘ইমরান-এর ১২৫ নং আয়াতে মালায়িকাহ্’র যে বৈশিষ্ট্য বলা হয়েছে তাতে কোন পোশাক বা রঙের কথা বলা হয়নি। শুধু বলা হয়েছে, يُمْدِدْكُمْ رَبُّكُمْ بِخَمْسَةِ آلَافٍ مِنَ الْمَلَائِكَةِ مُسَوِّمِينَ অর্থাৎ ‘‘তবে তোমাদের রব পাঁচ হাজার চিহ্নিত মালাক (ফেরেশতা) দ্বারা তোমদেরকে সাহায্য করবেন’’। এখানে শুধু ‘‘চিহ্নিত’’ বলা হয়েছে। কিন্তু কী দ্বারা চিহ্নিত তা বলা হয়নি। তবে এ আয়াতের তাফসীরে অনেক কথা এসেছে যার মধ্যে একটি হচ্ছে, তারা হলুদ পাগড়ী দ্বারা চিহ্নিত ছিলেন। মোটকথা এ হাদীসের ব্যাখ্যায় কোন কিছুই নিশ্চিত করে কেউ বলেননি। [সম্পাদক]


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২২: পোশাক-পরিচ্ছদ (كتاب اللباس ) 22. Clothing

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ

৪৩৭২-[৬৯] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। একদিন আসমা বিনতু আবূ বকর (রাঃ) পাতলা কাপড় পরিহিত অবস্থায় রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট গেলেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন এবং বললেনঃ হে আসমা! মহিলা যখন বালেগা হয়, তখন তার শরীরের কোন অঙ্গ দৃষ্ট হওয়া উচিত নয়, তবে কেবলমাত্র এটা এবং এটা এ বলে তিনি তাঁর মুখ এবং তাঁর দু’ হাতের তালুর দিকে ইঙ্গিত করলেন। (আবূ দাঊদ)[1]

الْفَصْلُ الثَّالِثُ

وَعَنْ عَائِشَةَ أَنَّ أَسْمَاءَ بِنْتَ أَبِي بَكْرٍ دَخَلْتُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَعَلَيْهَا ثِيَاب رقاق فَأَعْرض عَنهُ وَقَالَ: «يَا أَسْمَاءُ إِنَّ الْمَرْأَةَ إِذَا بَلَغَتِ الْمَحِيضَ لَنْ يَصْلُحَ أَنْ يُرَى مِنْهَا إِلَّا هَذَا وَهَذَا» . وَأَشَارَ إِلَى وَجْهِهِ وَكَفَّيْهِ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

وعن عائشة أن أسماء بنت أبي بكر دخلت على رسول الله صلى الله عليه وسلم وعليها ثياب رقاق فأعرض عنه وقال: «يا أسماء إن المرأة إذا بلغت المحيض لن يصلح أن يرى منها إلا هذا وهذا» . وأشار إلى وجهه وكفيه. رواه أبو داود

ব্যাখ্যাঃ এ হাদীস দ্বারা অনেকে দলীল পেশ করেন যে, নারীর জন্য মাহরাম নন এমন পুরুষের সামনেও নারী তার চেহারা ও দুই হাত খোলা রাখতে পারবে। কিন্তু এ হাদীস সানাদগতভাবে এবং মাতানগতভাবে বিশুদ্ধ নয়। সনদের দিক থেকে সমস্যা হলো : এ সনদে ইনক্বিতা‘ বা বিচ্ছিন্নতা আছে। খালিদ ইবনু দুরায়ক ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর কাছ থেকে শুনেননি। তাছাড়া বর্ণনাকারী সা‘ঈদ ইবনু বাশীর দুর্বল (য‘ঈফ)। এ দুটি ছাড়া আরও সমস্যা আছে। মতনের দিক থেকে সমস্যা হলো : এ বর্ণনায় বলা হচ্ছে. আসমা (রাঃ) প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় পাতলা কাপড় পরে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সামনে এসেছেন। যা কখনোই সম্ভব নয়। এ ঘটনা যখন ঘটেছে তখন আসমা (রাঃ)-এর বয়স সাতাশ-এর উপরো ছিল। কারণ মদীনায় হিজরতের বছর তার বয়স ছিল সাতাশ। তিনি ছিলেন হিজরতের পর মদীনায় জন্মগ্রহণকারী প্রথম শিশু ‘আবদুল্লাহ ইবনুয্ যুবায়র -এর মা। এ বয়সের একজন মুসলিম মহিলা পাতলা কাপড় পরে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সামনে আসবেন যা দেখে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুখ ফিরিয়ে নিবেন তা কি সম্ভব? কখনো নয়। তাই মতনের দিকে গভীরভাবে তাকালেও বুঝা যায় যে, এ বর্ণনাটি গ্রহণযোগ্য নয়। তাই চেহারা ও দুই হাতের কব্জি পর্যন্ত খোলা রাখার যে কথা এ হাদীসে বলা হয়েছে তা ‘আমলযোগ্য নয়।

উল্লেখ্য যে, মাহরাম নন এমন পুরুষের সামনে মুসলিম নারীদের মুখমণ্ডলে ও দুই হাতের কব্জি পর্যন্ত খোলা রাখার ব্যাপারে ইসলামের বিধান কী- তা জানা জরুরী। তাই নিম্নে কুরআন, হাদীস, সাহাবীগণ ও সালফে সলিহীন-এর উক্তির আলোকে নাতিদীর্ঘ আলোচনা উপস্থাপন করা হলো, যাতে করে এ বিষয়ে বিভ্রান্তির অপনোদন ঘটে।

চেহারা পর্দার অংশ নয় মর্মে কিছু বক্তব্য আছে ঠিকই। কিন্তু নানা মত ও যুক্তি পর্যালোচনার পর অগ্রাধিকার প্রাপ্ত মত ও সকল ‘আলিমের সিদ্ধান্ত হলো, হিজাব যেমন অপরিহার্য, ঠিক তেমনি নিকাব তথা মুখ ঢাকাও অত্যাবশ্যক। দু’টিকে পৃথক ভাবার সুযোগ নেই। কারণ শারী‘আতে দু’টো পৃথক কোন বিষয় নয়। যখন হিজাব শব্দটি আসে তখন তার শার‘ঈ অর্থ এটাই বুঝা যায়, নারী মাথা থেকে পা পর্যন্ত ঢেকে রাখবে। কুরআনে মাজীদের সূরাহ্ আল-আহযাবে মুসলিম নারীদেরকে স্পষ্টভাবে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে, ঘর থেকে বাইরে বের হবার সময় যেন তারা নিজেদের শরীরে লম্বা ও প্রশস্ত ঝুলিয়ে নেয়। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন :

يٰاَيُّهَا النَّبِىُّ قُلْ لِأَزْوَاجِكَ وَبَنَاتِكَ وَنِسَاءِ الْمُؤْمِنِينَ يُدْنِينَ عَلَيْهِنَّ مِنْ جَلَابِيبِهِنَّ ذٰلِكَ أَدْنٰى أَنْ يُعْرَفْنَ فَلَا يُؤْذَيْنَ

‘‘হে নবী! তুমি তোমার স্ত্রীগণকে, কন্যাগণকে ও মু’মিনদের নারীগণকে বল, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের ওপর টেনে দেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজতর হবে, ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না।’’ (সূরাহ্ আল আহযাব ৩৩ : ৫৯)

পর্দা বিষয়ে এ আয়াত অত্যন্ত পরিষ্কার ও স্পষ্ট। কারণ, এ আয়াত থেকে জানা যায়, পর্দার নির্দেশের মধ্যে মুখমণ্ডলেও অন্তর্ভুক্ত। তাছাড়া এ আয়াতে রসূলুল্লাহর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পুতঃপবিত্র সহধর্মিণীগণও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কন্যাগণের সঙ্গে মুসলিম মহিলাদেরও সম্বোধন করা হয়েছে। এ আয়াতে ‘জালাবীব’ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে, যা ‘জিলবাব’ শব্দের বহুবচন। ‘আরবী অভিধানের বিখ্যাত গ্রন্থ ‘‘লিসানুল ‘আরাব’’ এ লেখা হয়েছে, ‘জিলবাব’ ঐ চাদরকে বলা হয় যা মহিলারা নিজেদের মাথা থেকে পা পর্যন্ত ঢাকার জন্য ব্যবহার করে। (লিসানুল ‘আরাব ১/২৭৩ পৃঃ)

মুফাসসিরগণের বক্তব্য দেখলেও জানা যায়, ‘জিলবাব’ এমন কাপড়কে বলে যা দ্বারা মহিলারা নিজেদের শরীর ঢাকেন। ‘জিলবাব’ অর্থ বড় চাদর, যা দ্বারা মুখমণ্ডলে ও পূর্ণ দেহ আবৃত করা যায়। (কুরতুবী, আল-জামি‘ লি আহকামিল কুরআন : ১৪/২৪৩)

‘আল্লামা আলূসী (রহিমাহুল্লাহ) ‘আবদুল্লাহ ইবন ‘আব্বাস (রাঃ)-এর বরাত দিয়ে লিখেন, ‘জিলবাব’ সেই চাদরকে বলে যা মহিলারা দেহের ওপর থেকে নীচ পর্যন্ত উড়িয়ে ছেড়ে দেয়। (রুহুল মা‘আনী : ২২/৮৮)

‘আল্লামা ইবন হাযম (রহিমাহুল্লাহ) লিখেন : ‘আরবী ভাষায় ‘জিলবাব’ এমন কাপড়কে বলা হয় যা সারা শরীর আচ্ছাদন করে। যে কাপড় সমস্ত শরীর ঢাকে না, সে কাপড়ের ক্ষেত্রে ‘জিলবাব’ শব্দটির প্রয়োগ সঠিক ও শুদ্ধ নয়। (আল-মুহাল্লা : ৩/২১৭)

তাই শত শত বছর যাবৎ মুসলিম বিশ্বের সর্বত্র যে দীনদার নারীগণ নিকাব ও হিজাব পরিধান করে আসছেন তাঁরা এই জিলবাব ধারণের বিধানই পালন করছেন।

কোন কোন সাহাবী সূত্রে বর্ণিত হয়েছে, তাঁরা পর্দা হিসেবে ‘জিলবাব’ ব্যবহারের নিয়ম-পদ্ধতিও বর্ণনা করেছেন। ‘আবদুল্লাহ ইবন ‘আব্বাস (রাঃ) মুখমন্ডলের উপর ‘জিলবাব’ ফেলার যে পদ্ধতি বর্ণনা করেছেন তা হলো, ‘মুসলিম মহিলারা নিজেদের চাদর দ্বারা নিজ নিজ মাথা ও মুখমণ্ডলে ঢেকে বের হবে। তারা কেবল একটি চোখ খোলা রাখতে পারে’। (শাওকানী, ফাতহুল কদীর : ৭/৩০৭)

সূরাহ্ আল আহযাবের উল্লেখিত আয়াতের তাফসীর করতে গিয়ে সকল মুফাসসির মুখমণ্ডলে ঢাকা হিজাবের অত্যাবশ্যক অংশ গণ্য করেছেন। আবূ বকর আর্ রাযী ও আল জাস্‌সাস আল হানাফী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ এ আয়াত দ্বারা প্রমাণিত হয়, যুবতী মহিলারা ঘর থেকে বাইরে বেরোনোর সময় বেগানা পুরুষের দৃষ্টি থেকে তাদের মুখমণ্ডলে আবশ্যিকভাবে ঢেকে রাখবে, যাতে দুষ্ট প্রকৃতির লোক তাদেরকে বিরক্ত করতে না পারে। (আহকামুল কুরআন : ৩/৩৭১)

ইমাম নাবাবী (রহিমাহুল্লাহ) স্বীয় গ্রন্থ ‘আল মিনহাজ’-এ লিখেছেন, যদি ফিতনার আশঙ্কা থাকে তাহলে কোন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের জন্য কোন প্রাপ্তবয়স্কা নারীর মুখমণ্ডলে ও হাত দেখা জায়িয নেই। ‘আল্লামা রামালী (রহিমাহুল্লাহ) ‘আল মিনহাজ’ গ্রন্থের ব্যাখ্যায় এ মতের উপর ‘আলিমগণের ইজমা’র কথা বর্ণনা করেছেন। তিনি এও লিখেছেন, সঠিক মতানুযায়ী ফিতনার আশঙ্কা না থাকলেও প্রাপ্তবয়স্কা নারীকে দেখা হারাম। এর দ্বারা বুঝা যায়, মুখমণ্ডলে খোলা অবস্থায় মহিলাদের বাইরে বের হওয়া জায়িয নেই। কারণ, সে অবস্থায় পুরুষ তাদেরকে দেখবে এবং দেখার মাধ্যমে ফিতনা সৃষ্টি হবে। (নিহায়াতুল মিনহাজ ইলা শারহিল মিনহাজ : ৬/১৮৮)

শায়খুল ইসলাম ইবনু তায়মিয়াহ্ (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ পরপুরুষ দেখতে পারে এমনভাবে মহিলাদের মুখমণ্ডলে খোলা রাখা জায়িয নেই। স্বামী, পিতা, ভাই প্রমুখের উচিত ‘সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধে’র অংশ হিসেবে তাদেরকে এমন কাজ থেকে বিরত রাখতে সচেষ্ট হওয়া। অধীনস্থ নারীদের পর্দাহীনতা থেকে বিরত না রাখাও দায়িত্বশীল পুরুষদের জবাবদিহিতামূলক অপরাধ। এজন্য তাদেরকে শাস্তিও দেয়া যেতে পারে। (মাজমূ‘ ফাতাওয়া : ২৪/৩৮২)

হাফিয ইবনুল কইয়্যিম (রহিমাহুল্লাহ) লিখেন, স্বাধীন নারী মুখমণ্ডলে ও হাতের কব্জি পর্যন্ত খোলা রেখে সালাত আদায় করতে পারে (এই শর্তে যে, সেখানে কোন বেগানা পুরুষ থাকবে না)। তবে এ অবস্থায় সে বাজারে এবং পুরুষের ভীড়ের মধ্যে যেতে পারবে না। (ই‘লাম আল মুওয়াককিঈন : ২/৮০)

‘আল্লামা সুয়ূত্বী আশ্ শাফিঈ‘ (রহিমাহুল্লাহ) উল্লেখিত আয়াতের তাফসীর করতে গিয়ে লিখেন, হিজাবের আয়াত সব নারীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। মাথা ও মুখমণ্ডলে ঢাকা যে ওয়াজিব তা এ আয়াত দ্বারা প্রমাণিত হয়। (‘আওনুল মা‘বুদ : ১১/১৫৪)

শুধু পবিত্র কুরআনের তাফসীর নয় চেহারা আবৃত রাখার বিধান সহীহ হাদীস দ্বারাও প্রমাণিত। ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার  থেকে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ

وَلَا تَنْتَقِبْ الْمَرْأَةُ الْمُحْرِمَةُ لَا تَلْبَسْ الْقُفَّازَيْنِ

‘‘ইহরাম গ্রহণকারী নারী যেন নিকাব ও হাতমোজা পরিধান না করে।’’ (সহীহুল বুখারী হাঃ ১৮৩৮)

এ হাদীস থেকে বোঝা যায়, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগে মেয়েরা তাদের হাত ও চেহারা ঢাকতেন। এ কারণে ইহরামের সময় নিকাব ও হাত মোজা না পরার আদেশ করতে হয়েছে।

‘আয়িশাহ্ (রাঃ) হজ্জ অবস্থায় মহিলা সাহাবীদের পর্দার যে ব্বিরণ দিয়েছেন তা থেকে অনুমান করা যায় পর্দা রক্ষায় তাঁরা কতটা আন্তরিক ছিলেন। তাঁরা স্বাভাবিক অবস্থায় তো বটেই ইহরাম অবস্থায় যখন মুখ ঢাকতে নিষেধ করা হয়েছে সেখানেও পরপুরুষের সামনে থেকে নিজেদের চেহারা আড়াল করেছেন। ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) বলেন,

كَانَ الرُّكْبَانُ يَمُرُّونَ بِنَا وَنَحْنُ مَعَ رَسُولِ اللهِ -صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ- مُحْرِمَاتٌ فَإِذَا حَاذَوْا بِنَا سَدَلَتْ إِحْدَانَا جِلْبَابَهَا مِنْ رَأْسِهَا إِلٰى وَجْهِهَا فَإِذَا جَاوَزُونَا كَشَفْنَاهُ.

‘‘আমরা ইহরাম অবস্থায় রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে ছিলাম। তখন আরোহীরা আমাদের সঙ্গে পথ চলছিলেন। যখন তারা আমাদের মুখোমুখি হতেন তখন আমাদের সঙ্গীনীরা তাদের বড় চাদর মাথা থেকে চেহারায় ঝুলিয়ে দিতেন। তারা আমাদের অতিক্রম করে চলে যাবার পরই আমরা তা উন্মুক্ত করতাম।’’ (সুনান আবূ দাঊদ হাঃ ৫৩৮১, বায়হাক্বী হাঃ ৩৩)

আসমা’ বিনতু আবী বকর (রাঃ) বলেনঃ আমরা পুরুষদের থেকে আমাদের চেহারা আবৃত রাখতাম। (মুস্তাদরাক হাকিম হাঃ ১৬৬৪)

ফাতিমা বিনতুল মুনযির (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ ‘‘আমরা আসমা বিনতু আবূ বকর (রাঃ)-এর সঙ্গে ইহরাম অবস্থায় থাকাকালে আমাদের চেহারা ঢেকে রাখতাম।’’ (ইমাম মালিক মুওয়াত্ত্বা হাঃ ১/৩২৮, হাকিম মুসতাদরাক : ১/৪৫৪)

এ ব্বিরণ থেকে জানা গেল, মুখমন্ডলের পর্দার বিষয়টি ইজমা’র ভিত্তিতে স্থির হয়েছে। কোন মাযহাবের কোন উল্লেখযোগ্য ‘আলিম এ ব্যাপারে দ্বিমত পোষণ করেননি। শায়খ ইবনু বায (রহিমাহুল্লাহ), শায়খ ইবনু উসায়মীন ও শায়খ ইবনু জিবরীনও একই ফাতাওয়া দিয়েছেন। (দেখুন- রিসালাতুন ফিল-হিজাবি ওয়াস-সুফূর : ১৯; ফাতাওয়া উলামাইল বালাদিল হারাম : ১১৬৯)

মুফতী মুহাম্মদ শাফী ‘উসমানী (রহিমাহুল্লাহ) লিখেছেন, ‘‘ইমাম চতুষ্টয়ের মধ্য থেকে ইমাম মালিক, ইমাম শাফি’ঈ ও ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বাল (রহিমাহুমুল্লাহ) তিনজনই মুখমণ্ডলে ও হাতের কব্জি খোলা রাখার মোটেই অনুমতি দেননি ফিতনার আশঙ্কা থাকুক বা না থাকুক। ইমাম আবূ হানীফাহ্ (রহিমাহুল্লাহ) ফিতনার আশঙ্কা যদি না না থাকলে খোলা রাখার অনুমতি দিয়েছেন। কিন্তু স্বাভাবিকভাবে এই শর্ত পূরণ হবার নয়, তাই হানাফী ফকীহগণ পরপুরুষের সামনে মুখমণ্ডলে ও হাতের কব্জি খোলা রাখার অনুমতি দেননি।’’ (মা‘আরিফুল কুরআন : ৭/২১৪)

তেমনি এটাও সঙ্গত নয় যে, মহিলাদের সারা শরীর ঢাকা থাকবে আর মুখমণ্ডলে থাকবে খোলা। অথচ মানুষের প্রথম দৃষ্টিটিই পড়ে মুখের উপর। তারপর সেখান থেকেই অন্তরে খারাপ বাসনার সৃষ্টি হয়। পবিত্র কুরআনে নারীদের হিজাব এবং তদসংক্রান্ত প্রায় আটটি আয়াত আছে। সেগুলো থেকেও এ কথা জানা যায়, শারী‘আতের দাবী কেবল শরীর ঢাকা নয়, বরং মুখমণ্ডলে ঢাকাও জরুরী।

আধুনিককালের প্রখ্যাত ‘আলিম ও ফকীহগণও একই মত পোষণ করেন। আরব বিশ্বের সমকালীন সকল ‘আলিম ও মুফতীদের মতও এই যে, মহিলাদের জন্য মুখমণ্ডলে ঢাকা একান্ত আবশ্যক। তাদের মধ্যে শায়খ ‘আবদুর রহমান ইবন সা‘দী, মুহাম্মাদ ইবনু ইবরাহীম আল আশ্ শায়খ, মুহাম্মাদ আল আমীন আশ্ শানকীতী, শায়খ ‘আবদুল ‘আযীয বিন ‘আবদুল্লাহ ইবনু বায, শায়খ আবূ বকর জাবির আল জাযায়িরী, শায়খ মুহাম্মাদ ইবনু গুনায়মীন, শায়খ ‘আবদুল্লাহ ইবনু জিবরীন, শায়খ সালিহ আল ফাওযান, শায়খ বকর ইবনু ‘আবদুল্লাহ আবূ যায়দ, মুহাম্মাদ ইবনু আহমাদ ইসমা‘ঈল আল মাকদাম, আবূ ইসহক আল হুওয়ায়তী, মুসতাফা আল ‘আদাবী, মুহাম্মাদ হাসসান ও আরো অনেকের নাম বিশেষ উল্লেখযোগ্য। স্পষ্ট ব্যাখ্যা এবং ফকীহগণের চূড়ান্ত ফাতাওয়াসমূহ থাকার পরও কোন ‘আলিম নিকাবকে অস্বীকার করতে পারেন না।

পরপুরুষের সামনে নারীর মুখমণ্ডলে প্রদর্শন বৈধতার পক্ষের প্রবক্তাগণ প্রমাণের জন্য পূর্বোক্ত সূরাহ্ নূরের ৩১ নং আয়াত তুলে ধরেন। তাদের বক্তব্য, ‘সাধারণত প্রকাশমান সৌন্দর্য’ এর ব্যাখ্যায় ‘আবদুল্লাহ ইবন ‘আব্বাস ও ‘আবদুল্লাহ ইবন মাস্‘ঊদ  থেকে বর্ণনা করা হয় যে, এ দ্বারা করতল ও চেহারা উদ্দেশ্য। অথচ ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস্‘ঊদ -এর ব্যাখ্যা সম্পূর্ণ আলাদা। আর ‘আবদুল্লাহ ইবন ‘আব্বাস (রাঃ)-এর উদ্ধৃত উক্তি আলোচ্য দাবীর ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক। কেননা একাধিক সহীহ সনদে ইবন মাস্‘ঊদ  থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, আয়াতের আলোচ্য অংশ ‘ইল্লা মা যাহারা মিনহা’-এর অর্থ ‘কাপড়’। (দেখুন- ত্ববারী, জামি‘উল বায়ান : ১৭/২৫৬-২৫৮; ইবন আবী শায়বাহ্, আল-মুসান্নাফ : ৯/২৮০)

এ অংশের ব্যাখ্যায় প্রখ্যাত মুফাস্সির ইবন কাসীর (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ ‘আয়াতের অর্থ, পরপুরুষের সামনে নারী তার কোন ধরনের সৌন্দর্য প্রকাশ করবে না। তবে যা আবৃত রাখা সম্ভব নয় তার কথা আলাদা। এর দৃষ্টান্ত দিয়ে ইবনু মাস্‘ঊদ  বলেছেন,

كَالرِّدَاءِ وَالثِّيَابِ يَعْنِي عَلٰى مَا كان يتعاطاه نِسَاءُ الْعَرَبِ مِنَ الْمِقْنَعَةِ الَّتِي تُجَلِّلُ ثِيَابَهَا وَمَا يَبْدُو مِنْ أَسَافِلِ الثِّيَابِ. فَلَا حَرَجَ عليها فيه لأن هذا لا يمكنها إخفاؤ.

আরবের নারীগণ যে বড় চাদরে তাদের পরনের কাপড় ঢেকে বের হতেন এবং কাপড়ের নীচের অংশ, যা চলার সময় চাদরের নীচ দিয়ে প্রকাশিত হয়ে যেত তা যেহেতু ঢেকে রাখা সম্ভব নয় তাই এতে কোন দোষ নেই। (তাফসীরে ইবন কাসীর : ৬/৪১)

‘হাসান বসরী, মুহাম্মাদ ইবনু সীরীন, ইবনুল জাওযী, ইবরাহীম নাখ‘ঈ (রহিমাহুমুল্লাহ) প্রমুখ মনীষীও অনুরূপ ব্যাখ্যা করেছেন।’ (তাফসীরুল কুরআনিল ‘আযীম : ৩/৩১২)

পবিত্র কুরআনের শব্দ ও বাক্য, আলোচ্য বিষয়ের হাদীস ও আসার এবং উসূলে ফিকহের নীতি ও বিধান ইত্যাদি বিবেচনায় ইবন মাস্‘ঊদ (রাঃ)-এর ব্যাখ্যাই অগ্রগণ্য। কারণ সূরাহ্ আল আহযাব-এর ৫৯ নম্বর আয়াতে জিলবাবের একাংশ চেহারার উপর নামিয়ে মুখমণ্ডলে আবৃত রাখার আদেশ করা হয়েছে। তা সূরাহ্ আন্ নূর-এর আলোচ্য আয়াতে ইবনু মাস্‘ঊদ -এর ব্যাখ্যাকেই প্রতিষ্ঠিত করে। তাছাড়া সহীহ হাদীসসমূহে নারীদের চেহারা ঢেকে রাখার যে নির্দেশ ও ব্বিরণ দেখা যায় তাও তাঁর ব্যাখ্যাকে সমর্থন করে।

তদুপরি যারা মুখ খোলার পক্ষে বলেছেন প্রথমত তাদের মতটি অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত মত নয় আর দ্বিতীয়ত তাঁরা সবাই এর জন্য নিরাপদ ও ফিতনামুক্ত হওয়ার শর্ত জুড়ে দিয়েছেন। আর বলাবাহুল্য যে, বর্তমান যুগে ফিতনার বিস্তার সর্বত্র। মানুষের মধ্যে দীনদারী ও আল্লাহভীতি হ্রাস পেয়েছে। লজ্জা ও লজ্জাবনত মানুষের সংখ্যা কমে গেছে। ফিতনার প্রতি আহবানকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। সাজসজ্জার নানা উপায় ও উপকরণ আবিষ্কৃত হওয়ায় ফিতনার মাত্রা আরও বেড়ে গেছে। তাই মুসলিম নারীর উচিত মাহরাম ছাড়া অন্য কারও সামনে চেহারা ও দুই হাত উন্মুক্ত না রাখা। আল্লাহই অধিক জানেন।

(‘ইসলাম হাউজ’ থেকে প্রকাশিত আলী হাসান তৈয়ব লিখিত ও ড. মোহাম্মদ মানজুরে ইলাহী সম্পাদিত ‘‘মুখমণ্ডলে ঢাকা কি হিজাবের অংশ নয়?’’ শীর্ষক প্রবন্ধ দ্রষ্টব্য।)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২২: পোশাক-পরিচ্ছদ (كتاب اللباس ) 22. Clothing

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ

৪৩৭৩-[৭০] আবূ মাত্বর (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন ’আলী (রাঃ) তিন দিরহাম দিয়ে একটি কাপড় কিনলেন। যখন তিনি তা পরিধান করলেন, তখন এ দু’আটি পড়লেন- اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ الَّذِىْ رَزَقَنِىْ مِنَ الْرَيَاشِ مَا اَتَجَمَّلُ بِهٖ فِـىْ النَّاسِ وَاُوَارِىْ بِهٖ عَوْرَتِـىْ। অর্থাৎ- ’’সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি আমাকে পোশাক দান করেছেন, আমি এর দ্বারা লোক সমাজে নিজের সৌন্দর্য প্রকাশ করার প্রয়াস পাব এবং আমার সতর আবৃত করব।’’ অতঃপর তিনি বললেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে এরূপ বলতে শুনেছি। (আহমাদ)[1]

الْفَصْلُ الثَّالِثُ

وَعَنْ أَبِي مَطَرٍ قَالَ: إِنْ عَلِيًّا اشْتَرَى ثَوْبًا بِثَلَاثَةِ دَرَاهِمَ فَلَمَّا لَبِسَهُ قَالَ: «الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي رَزَقَنِي مِنَ الرِّيَاشِ مَا أَتَجَمَّلُ بِهِ فِي الناسِ وأُواري بِهِ عورتي» ثُمَّ قَالَ: هَكَذَا سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُول. رَوَاهُ أَحْمد

وعن أبي مطر قال: إن عليا اشترى ثوبا بثلاثة دراهم فلما لبسه قال: «الحمد لله الذي رزقني من الرياش ما أتجمل به في الناس وأواري به عورتي» ثم قال: هكذا سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول. رواه أحمد

ব্যাখ্যাঃ পোশাক পরিধানের সময় কোন্ দু‘আ পড়তে হবে- সে সম্পর্কে একাধিক হাদীস বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু এ হাদীসটির সানাদ সহীহ না হওয়ায় এটি না পড়ে বরং সহীহ বর্ণনায় যে দু‘আগুলো এসেছে সেগুলো পড়া উচিত। আবূ সা‘ঈদ আল খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন নতুন কাপড় পরতেন, তখন পাগড়ী, জামা কিংবা চাদর তার নাম নিয়ে এ দু‘আ পড়তেন,

اَللّٰهُمَّ لَكَ الْحَمْدُ ، أَنْتَ كَسَوْتَنِيهِ ، أَسْأَلُكَ مِنْ خَيْرِه وَخَيْرِ مَا صُنِعَ لَهٗ ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّه وَشَرِّ مَا صُنِعَ لَهٗ.

‘‘হে আল্লাহ! তোমারই নিমিত্তে সমস্ত প্রশংসা, তুমি আমাকে এই (নতুন কাপড়) পরালে, আমি তোমার নিকট এর কল্যাণ এবং এটি যার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে তার কল্যাণ প্রার্থনা করছি। আর এর অকল্যাণ এবং যার জন্য এটি প্রস্তুত করা হয়েছে তার অকল্যাণ থেকে আমি তোমার নিকট আশ্রয় চাচ্ছি।

[সুনান আবূ দাঊদ হাঃ ৪০২৩, ইমাম ইবনুল কইয়িম (রহিমাহুল্লাহ) তাঁর ‘‘যাদুল মা‘আদ’’ গ্রন্থে এবং শায়খ আলবানী (রহিমাহুল্লাহ) তাঁর সহীহ সুনান আবূ দাঊদ-এ এটিকে সহীহ বলেছেন।]

আর নতুন-পুরাতন যে কোন পোশাক পরিধানের সময় পড়ার দু‘আ হচ্ছে :

الْحَمْدُ لِلّٰهِ الَّذِىْ كَسَانِي هٰذَا الثَّوْبَ وَرَزَقَنِيهِ مِنْ غَيْرِ حَوْلٍ مِنِّي وَلَا قُوَّةٍ

‘‘সকল প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আমাকে এ (কাপড়) পরিধান করিয়েছেন এবং আমার কোন শক্তি ও ক্ষমতা ছাড়াই আমাকে দান করেছেন।’’ (সুনান আবূ দাঊদ হাঃ ৪০২৩; আলবানী : সহীহ)

পোশাক পরিধানের ক্ষেত্রে এ দু’টি দু‘আই গ্রহণযোগ্য সনদে বর্ণিত হয়েছে। এ হাদীসে উল্লেখিত দু‘আটি সহ অন্যান্য দু‘আগুলো গ্রহণযোগ্য সূত্রে বর্ণিত হয়নি বিধায় তা ‘আমলযোগ্য নয়। [সম্পাদক]


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
বর্ণনাকারীঃ আবূ মাত্বর (রহঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২২: পোশাক-পরিচ্ছদ (كتاب اللباس ) 22. Clothing

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ

৪৩৭৪-[৭১] আবূ উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন ’উমার ইবনুল খত্ত্বাব(রাঃ) নতুন কাপড় পরিধান করলেন এবং এ দু’আটি পড়লেন- الْحَمْدُ لِلّٰهِ الَّذِىْ كَسَانِيْ مَا أُوَارِيْ بِه عَوْرَتِيْ وَأَتَجَمَّلُ بِه فِيْ حَيَاتِيْ। অর্থাৎ- ’’সমস্ত প্রশংসা ঐ আল্লাহর জন্য যিনি আমাকে পোশাকটি পরিধান করিয়েছেন, যার দ্বারা আমি সতর আবৃত করতে পারি এবং যা দ্বারা আমি সৌন্দর্য গ্রহণ করতে পারি।’’ অতঃপর তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি নতুন কাপড় পরিধান করে উক্ত দু’আটি পাঠ করে এবং ব্যবহৃত পুরাতন কাপড়খানা সাদাকা করে দেয়, সে জীবনে এবং মরণে (উভয় অবস্থায়) আল্লাহর আশ্রয়ে, আল্লাহর হিফাযাতে এবং আল্লাহর আচ্ছাদনে অবস্থান করবে। (আহমাদ, তিরমিযী ও ইবনু মাজাহ; আর ইমাম তিরমিযী বলেছেনঃ উক্ত হাদীসটি গরীব।)[1]

الْفَصْلُ الثَّالِثُ

وَعَن أبي أُمامةَ قَالَ: لَبِسَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ ثَوْبًا جَدِيدًا فَقَالَ: الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي كَسَانِي مَا أُوَارِي بِهِ عَوْرَتِي وَأَتَجَمَّلُ بِهِ فِي حَيَاتِي ثُمَّ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: مَنْ لَبِسَ ثَوْبًا جَدِيدًا فَقَالَ: الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي كَسَانِي مَا أُوَارِي بِهِ عَوْرَتِي وَأَتَجَمَّلُ بِهِ فِي حَيَاتِي ثُمَّ عَمَدَ إِلَى الثَّوْبِ الَّذِي أَخْلَقَ فَتَصَدَّقَ بِهِ كَانَ فِي كَنَفِ اللَّهِ وَفِي حِفْظِ اللَّهِ وَفِي سِتْرِ اللَّهِ حَيًّا وَمَيِّتًا . رَوَاهُ أَحْمَدُ وَالتِّرْمِذِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ: هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ

وعن أبي أمامة قال: لبس عمر بن الخطاب رضي الله عنه ثوبا جديدا فقال: الحمد لله الذي كساني ما أواري به عورتي وأتجمل به في حياتي ثم قال: سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول: من لبس ثوبا جديدا فقال: الحمد لله الذي كساني ما أواري به عورتي وأتجمل به في حياتي ثم عمد إلى الثوب الذي أخلق فتصدق به كان في كنف الله وفي حفظ الله وفي ستر الله حيا وميتا . رواه أحمد والترمذي وابن ماجه وقال الترمذي: هذا حديث غريب

ব্যাখ্যাঃ অত্র হাদীসে পোশাক পরিধানের দু‘আ সম্পর্কে আলোচনা এসেছে। পোশাক পরিধানের ক্ষেত্রে বর্ণিত গ্রহণযোগ্য দু’টি দু‘আ উপরে উল্লেখ করা হয়েছে। তাই এখানে পুনরুল্লেখ করা হলো না। তাছাড়া এ হাদীসটি য‘ঈফ হওয়ায় এটি ‘আমলযোগ্য নয়। [সম্পাদক]


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২২: পোশাক-পরিচ্ছদ (كتاب اللباس ) 22. Clothing

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ

৪৩৭৫-[৭২] ’আলকামাহ্ ইবনু আবূ ’আলকামাহ্ (রহঃ) তাঁর মাতা হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, একদিন হাফসাহ্ বিনতু ’আবদুর রহমান (রাঃ) একটি খুব পাতলা ওড়না পরিহিত অবস্থায় ’আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর নিকট গেলেন। তখন ’আয়িশাহ্ (রাঃ) উক্ত পাতলা ওড়নাখানা ছিঁড়ে ফেললেন এবং তাকে একটি মোটা ওড়না পরিয়ে দিলেন। (মালিক)[1]

الْفَصْلُ الثَّالِثُ

وَعَنْ عَلْقَمَةَ بْنِ أَبِي عَلْقَمَةَ عَنْ أُمِّهِ قَالَتْ: دَخَلَتْ حَفْصَةُ بِنْتُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَلَى عَائِشَةَ وَعَلَيْهَا خِمَارٌ رَقِيقٌ فَشَقَّتْهُ عَائِشَةُ وَكَسَتْهَا خمارا كثيفا. رَوَاهُ مَالك

وعن علقمة بن أبي علقمة عن أمه قالت: دخلت حفصة بنت عبد الرحمن على عائشة وعليها خمار رقيق فشقته عائشة وكستها خمارا كثيفا. رواه مالك

ব্যাখ্যাঃ (خِمَارٌ) ‘খিমার’ বলা হয় ঐ কাপড়কে যা দ্বারা মহিলারা তাদের মাথা ঢাকে। আমাদের দেশীয় ভাষায় যাকে বলে ওড়না। ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) হাফসাহ্ বিনতু ‘আবদুর রহমান (রাঃ)-এর পাতলা ওড়নাটা ছিঁড়ে ফেললেন এজন্য যে, সে যেন ওটা আর ব্যবহার করতে না পারে। আর তিনি শুধু ছিঁড়েই ফেলেননি উপরন্তু তিনি তাকে একটি মোটা কাপড়ের ওড়না উপহার দিলেন। কারণ মোটা কাপড়ের ওড়না পর্দা করার জন্য বেশি কার্যকর ও উপযোগী। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আলকামাহ (রহঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২২: পোশাক-পরিচ্ছদ (كتاب اللباس ) 22. Clothing

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ

৪৩৭৬-[৭৩] ’আবদুল ওয়াহিদ ইবনু আয়মান (রহঃ) তাঁর পিতা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমি এক সময় ’আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর কাছে গেলাম। দেখলাম, তিনি পাঁচ দিরহাম মূল্যের মোটা সূতার একটি কামীস পরিধান করে আছেন। তিনি বললেনঃ আমার এ দাসীটাকে একটু চোখ তুলে দেখ, বাড়িতেও সে এটা ব্যবহার করতে অস্বীকার করে। অথচ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগে আমার ঐ রকমই একটি কামীস ছিল, মদীনার কোন মেয়েকে যখনই (বিয়ে শাদীতে) সাজানো হত, তখন লোক পাঠিয়ে আমার নিকট হতে তা সাময়িকভাবে নিয়ে যেত। (বুখারী)[1]

الْفَصْلُ الثَّالِثُ

وَعَنْ عَبْدِ الْوَاحِدِ بْنِ أَيْمَنَ عَنْ أَبِيهِ قَالَ: دَخَلَتْ عَلَى عَائِشَةَ وَعَلَيْهَا دِرْعٌ قِطْرِيٌّ ثَمَنُ خَمْسَةِ دَرَاهِمَ فَقَالَتْ: ارْفَعْ بَصَرَكَ إِلَى جَارِيَتِي انْظُرْ إِلَيْهَا فَإِنَّهَا تُزْهَى أَنْ تَلْبَسَهُ فِي البيتِ وَقد كَانَ لِي مِنْهَا دِرْعٌ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَمَا كَانَتِ امْرَأَةٌ تُقَيَّنُ بِالْمَدِينَةِ إِلَّا أَرْسَلَتْ إِلَيَّ تَسْتَعِيرُهُ. رَوَاهُ البُخَارِيّ

وعن عبد الواحد بن أيمن عن أبيه قال: دخلت على عائشة وعليها درع قطري ثمن خمسة دراهم فقالت: ارفع بصرك إلى جاريتي انظر إليها فإنها تزهى أن تلبسه في البيت وقد كان لي منها درع على عهد رسول الله صلى الله عليه وسلم فما كانت امرأة تقين بالمدينة إلا أرسلت إلي تستعيره. رواه البخاري

ব্যাখ্যাঃ এ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, তৎকালে ‘আরবে বিয়ে উপলক্ষ্য এরূপ পোশাক ধার দেয়া-নেয়ার প্রচলন ছিল। ইসলাম এ পদ্ধতিকে নিষেধ করেনি। বিয়ে উপলক্ষ্য কারও কোন বিশেষ পোশাক বা অলংকার ধার দেয়া-নেয়া বৈধ। ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) তার বোন আসমা (রাঃ)-এর নিকট থেকে একটি গলার হার ধার নিয়েছিলেন যে ঘটনা সহীহুল বুখারীতেই উল্লেখিত হয়েছে। এ হাদীস দ্বারা মা ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর উদারতা, বিনয় ও পরোপকারিতা ইত্যাদি গুণাবলীর প্রকাশ ঘটেছে। (ফাতহুল বারী ৫ম খন্ড, হাঃ ২৬২৭-২৬২৮)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২২: পোশাক-পরিচ্ছদ (كتاب اللباس ) 22. Clothing

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ

৪৩৭৭-[৭৪] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদিয়্যাহস্বরূপ প্রাপ্ত একটি রেশমী কাবা (আলখেল্লা) পরিধান করলেন। অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) অতিসত্বর তা খুলে ফেললেন এবং ’উমার (রাঃ)-এর কাছে পাঠিয়ে দিলেন। তখন তাঁকে জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রসূল! আপনি এত দ্রুত তা খুলে ফেললেন? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ (এইমাত্র) জিবরীল (আ.) আমাকে তা পরিধান করতে নিষেধ করেছেন। পরে ’উমার (রাঃ) কাঁদতে কাঁদতে এসে বললেনঃ হে আল্লাহর রসূল! আপনি একটি জিনিস অপছন্দ করলেন আর তা আমাকে প্রদান করলেন। সুতরাং আমার অবস্থা কী হবে? তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ প্রকৃতপক্ষ আমি তা তোমাকে পরিধান করার উদ্দেশে দেইনি; বরং দিয়েছি যাতে তুমি তা বিক্রি করে উপকৃত হও। ’উমার (রাঃ) দু’ হাজার দিরহামের বিনিময়ে তা বিক্রি করলেন। (মুসলিম)[1]

الْفَصْلُ الثَّالِثُ

وَعَنْ جَابِرٍ قَالَ: لَبِسَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمًا قَبَاءَ دِيبَاجٍ أُهْدِيَ لَهُ ثُمَّ أَوْشَكَ أَنْ نَزَعَهُ فَأَرْسَلَ بِهِ إِلَى عُمَرَ فَقِيلَ: قَدْ أَوْشَكَ مَا انْتَزَعْتَهُ يَا رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: «نهاني عَنهُ جبريلُ» فَجَاءَ عُمَرُ يَبْكِي فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ كرهتَ أَمْرًا وَأَعْطَيْتَنِيهِ فَمَا لِي؟ فَقَالَ: «إِنِّي لَمْ أُعْطِكَهُ تَلْبَسُهُ إِنَّمَا أَعْطَيْتُكَهُ تَبِيعُهُ» . فَبَاعَهُ بِأَلْفَيْ دِرْهَم. رَوَاهُ مُسلم

وعن جابر قال: لبس رسول الله صلى الله عليه وسلم يوما قباء ديباج أهدي له ثم أوشك أن نزعه فأرسل به إلى عمر فقيل: قد أوشك ما انتزعته يا رسول الله صلى الله عليه وسلم فقال: «نهاني عنه جبريل» فجاء عمر يبكي فقال: يا رسول الله كرهت أمرا وأعطيتنيه فما لي؟ فقال: «إني لم أعطكه تلبسه إنما أعطيتكه تبيعه» . فباعه بألفي درهم. رواه مسلم

ব্যাখ্যাঃ এ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হলো যে, কোন পোশাক বা বস্তু যদি নির্দিষ্ট কারও জন্য হারাম হয় তাহলে সে তা বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করতে পারবে। এটি জায়িয। এ হাদীসেই দেখা যাচ্ছে যে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘উমার (রাঃ)-কে রেশমের তৈরি জামাটি পরতে না দিয়ে তাকে তা বিক্রি করে দিতে বললেন। যেহেতু রেশমী কাপড় পরা মহিলাদের জন্য জায়িয। মহিলারা চাইলে তা কিনে পরতে পারবে। এ হাদীস দ্বারা আরও প্রমাণ হয় যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইসলামের প্রথমযুগে রেশমী কাপড়ের তৈরি পোশাক পরতেন। তারপর যখন তা হারাম হওয়ার বিধান অবতীর্ণ হলো তখন থেকে তিনি তা পরা বাদ দিয়ে দিলেন। (শারহুন নাবাবী ১৪শ খন্ড, হাঃ ২০৭০/১৬)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২২: পোশাক-পরিচ্ছদ (كتاب اللباس ) 22. Clothing

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ

৪৩৭৮-[৭৫] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শুধু রেশমের তৈরি কাপড় পরতে নিষেধ করেছেন। তবে (চার আঙ্গুল পরিমাণ) রেশমের ঝালর অথবা কাপড়ে নকশা হিসেবে ব্যবহারে কোন দোষ নেই। (আবূ দাঊদ)[1]

الْفَصْلُ الثَّالِثُ

وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ: إِنَّمَا نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ ثَوْبِ الْمُصْمَتِ مِنَ الْحَرِيرِ فَأَمَّا الْعَلَمُ وَسَدَى الثَّوْبِ فَلَا بَأْسَ بِهِ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

وعن ابن عباس رضي الله عنهما قال: إنما نهى رسول الله صلى الله عليه وسلم عن ثوب المصمت من الحرير فأما العلم وسدى الثوب فلا بأس به. رواه أبو داود

ব্যাখ্যাঃ ইবনু রসলান বলেন, (الثَّوْبُ الْمُصْمَتِ مِنَ الْحَرِيرِ) অর্থ হচ্ছে নিরেট রেশমের তৈরি কাপড়। যে কাপড়ে অন্য কোন উপাদান নেই। কিন্তু ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ ‘‘আস্ সাওবুল মুসমাত মিনাল হারীর’’ হলো যে কাপড়ের শুধু লম্বার দিকের ঝালর বা প্রস্তের দিকের ঝালর রেশমী সূতায় তৈরি। মূলকথা হলো লম্বার দিকের ঝালর যদি রেশমের হয় কিন্তু প্রস্তের দিকের ঝালর রেশমী সূতার না হয়ে অন্য কোন সূতা বা পশমের হয় তাহলে কোন সমস্যা নেই। কারণ প্রস্তের দিকের ঝালর ছাড়া কাপড় পূর্ণতা পায় না। এ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, যদি সামান্য কিছু রেশমী ঝালর হিসেবে কাপড়ে ব্যবহার করা হয় তা পুরুষের জন্য হারাম হবে না। এটি সংখ্যাগরিষ্ঠ ‘উলামার মত। তারা চার আঙ্গুল পরিমাণ রেশম ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছেন। তবে সাহাবীগণের মধ্যে কেউ কেউ যেমন ইবনু ‘উমার (রাঃ) আবার তাবি‘ঈদের মধ্য থেকে কেউ কেউ যেমন ইবনু সীরীন প্রমুখ এই সামান্য রেশমী ব্যবহারও পুরুষের জন্য হারাম মনে করেন। তারা দলীল দেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ক্বিস্‌সী কাপড় পরতে নিষেধ করেছেন। কিস্‌সী কাপড় হলো যে কাপড়ের সাথে রেশমীর সংমিশ্রণ রয়েছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা ইতিপূর্বে হয়ে গেছে। (‘আওনুল মা‘বূদ ৭ম খন্ড, হাঃ ৪০৫১)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২২: পোশাক-পরিচ্ছদ (كتاب اللباس ) 22. Clothing

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ

৪৩৭৯-[৭৬] আবূ রজা’ (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন ’ইমরান ইবনু হুসায়ন রেশমী বর্ডারের কাপড় পরিহিত অবস্থায় আমাদের সম্মুখে এলেন এবং বললেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা যাকে কোন নি’আমাত দান করেন, তখন আল্লাহ তা’আলা চান যে, যেন সে নি’আমাতের নিদর্শন বান্দার মধ্যে পরিলক্ষিত হয়। (আহমাদ)[1]

الْفَصْلُ الثَّالِثُ

وَعَنْ أَبِي رَجَاءٍ قَالَ: خَرَجَ عَلَيْنَا عِمْرَانُ بْنُ حُصَيْنٍ وَعَلَيْهِ مِطْرَفٌ مِنْ خَزٍّ وَقَالَ: إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَنْ أَنْعَمَ اللَّهُ عَلَيْهِ نِعْمَةً فَإِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ أَنْ يَرَى أَثَرَ نِعْمَتِهِ عَلَى عَبده» . رَوَاهُ أَحْمد

وعن أبي رجاء قال: خرج علينا عمران بن حصين وعليه مطرف من خز وقال: إن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: «من أنعم الله عليه نعمة فإن الله يحب أن يرى أثر نعمته على عبده» . رواه أحمد

ব্যাখ্যাঃ আল্লাহর প্রদত্ত নি‘আমাতের প্রকাশ অনেকভাবে ঘটানো যায়। যাকে আল্লাহ অর্থ-সম্পদ দিয়েছেন সে তা আল্লাহর রাস্তায়, সৃষ্টির কল্যাণে ও গরীব-মিসকীনদের দান করে তার প্রতি প্রদত্ত নি‘আমাতের প্রকাশ ঘটাবে। কখনই সে তার সম্পদ অপচয় করে তার প্রকাশ ঘটাবে না। আল্লাহ যাকে সুন্দর কাপড় পরার সামর্থ্য দিয়েছেন সে তার সামর্থ অনুযায়ী সুন্দর কাপড় পরবে। সে ইচ্ছা করে ছেঁড়া কাপড় পরে চলাফেরা না না। যার সুন্দর পোশাক পরার সামর্থ্য আছে কিন্তু ছেঁড়া পোশাক পরে তাহলে মনে করা হবে যে সে প্রসিদ্ধি পাওয়ার জন্য এমনটা করছে। তবে তার উদ্দেশ্য যদি ভালো হয়, যেমন- সে এজন্য দরিদ্রদের পোশাক পরেছে যেন সে দরিদ্রদের কষ্ট অনুভব করতে পারে কিংবা তাদের প্রতি সহমর্মিতা জানাতে পারে অথবা অন্তরে যেন অহঙ্কার না আসে সে ব্যবস্থা করতে পারে- এ ধরনের ভালো উদ্দেশ্য হলে সমস্যা নেই। [সম্পাদক]


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২২: পোশাক-পরিচ্ছদ (كتاب اللباس ) 22. Clothing

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ

৪৩৮০-[৭৭] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, মনে যা চায় তা খাও এবং যা ইচ্ছা হয় পরিধান করো, যে পর্যন্ত না তুমি দু’টির মধ্যে পতিত হও- অপব্যয় ও অহংকার। (বুখারী হাদীসটি তাঁর কিতাবের শিরোনামে বর্ণনা করেছেন।)[1]

الْفَصْلُ الثَّالِثُ

وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ: كُلْ مَا شِئْتَ وَالْبَسْ مَا شِئْتَ مَا أَخْطَأَتْكَ اثْنَتَانِ: سَرَفٌ وَمَخِيلَةٌ. رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ فِي تَرْجَمَة بَاب

وعن ابن عباس رضي الله عنهما قال: كل ما شئت والبس ما شئت ما أخطأتك اثنتان: سرف ومخيلة. رواه البخاري في ترجمة باب

ব্যাখ্যাঃ এ মাওকূফ হাদীসে যা ইচ্ছা খাওয়ার ও যা ইচ্ছা পরার যে আদেশ দেয়া হয়েছে তা অনুমতি অর্থে ব্যবহৃত হবে। তবে খাওয়া ও পোশাক পরার ক্ষেত্রে কোন ধরনের অপচয়, অপব্যয় করা বৈধ নয়। ব্যয় করার ক্ষেত্রে অপব্যয় না করার নির্দেশনা দিয়ে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

وَالَّذِينَ إِذَا أَنْفَقُوا لَمْ يُسْرِفُوا وَلَمْ يَقْتُرُوا وَكَانَ بَيْنَ ذٰلِكَ قَوَامًا

‘‘আর তারা যখন ব্যয় করে তখন অপব্যয় করে না এবং কার্পণ্যও করে না। বরং মাঝামাঝি অবস্থানে থাকে।’’ (সূরাহ্ আল ফুরকান ২৫ : ৬৭)

খাওয়া ও পোশাক পরার ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে যেন এসব ক্ষেত্রে অহংকার চলে না আসে। অপচয় ও অহংকার থেকে মুক্ত থেকে প্রয়োজন অনুয়ায়ী খাওয়া ও পোশাক পরা বৈধ এবং জরুরী। তবে ইসলামে খাওয়া ও পরিধানের ক্ষেত্রে কিছু বিধি-বিধান রয়েছে যা কুরআন ও হাদীসের অন্যান্য বর্ণনায় বর্ণিত হয়েছে। প্রত্যেক মুসলিমের জন্য সেগুলো মেনে খাওয়া ও পরিধান করা উচিত। [সম্পাদক]


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২২: পোশাক-পরিচ্ছদ (كتاب اللباس ) 22. Clothing

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ

৪৩৮১-[৭৮] ’আমর ইবনু শু’আয়ব (রহঃ) তাঁর পিতা হতে এবং তিনি তাঁর দাদা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা খাও, পান করো, দান-সাদাকা করো এবং পরিধান করো যে পর্যন্ত না অপব্যয় ও অহংকারে পতিত হও। (আহমাদ, নাসায়ী ও ইবনু মাজাহ)[1]

الْفَصْلُ الثَّالِثُ

وَعَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «كُلُوا وَاشْرَبُوا وَتَصَدَّقُوا وَالْبَسُوا مَا لم يُخالطْ إِسْرَافٌ وَلَا مَخِيلَةٌ» . رَوَاهُ أَحْمَدُ وَالنَّسَائِيُّ وَابْنُ مَاجَه

وعن عمرو بن شعيب عن أبيه عن جده قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «كلوا واشربوا وتصدقوا والبسوا ما لم يخالط إسراف ولا مخيلة» . رواه أحمد والنسائي وابن ماجه

ব্যাখ্যাঃ এ হাদীসে বর্ণিত বিষয়েই আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

وَكُلُوا وَاشْرَبُوا وَلَا تُسْرِفُوا إِنَّه لَا يُحِبُّ الْمُسْرِفِينَ

‘‘আর তোমরা খাও এবং পান করো কিন্তু অপব্যয় করো না। নিশ্চয় তিনি (আল্লাহ) অপব্যয়কারীদের ভালোবাসেন না।’’ (সূরাহ্ আল আ‘রাফ ৭ : ৩১)

‘ইসরাফ’ বলা হয় মূলত যে কোন কাজ বা কথার ক্ষেত্রে নির্ধারিত সীমা অতিক্রম করা। সাধারণত অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে এ পরিভাষাটির ব্যবহার সর্বাধিক। আর ‘মাখীলাহ্’ অর্থ হলো অহংকার।

এ হাদীসটি কোন মানুষের জীবন পরিচালনার জন্য খুবই শিক্ষণীয়। এখানে অপব্যয় থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। কারণ অপব্যয় শারীরিকভাবে ও জীবন উপকরণের ক্ষেত্রে মানুষকে ক্ষতি করে। আর এখানে অহংকার থেকে নিষেধ করা হয়েছে। কারণ অহংকার মানুষের আত্মাকে নষ্ট করে দেয় যদিও অহংকার কিছু সময়ের জন্য ভালো লাগে। এগুলোর মাধ্যমে দুনিয়ায় মানুষের ক্ষক্ষাভের পাত্র হতে হয় আর এগুলো পরকালের জন্য গুনাহের বোঝা ভারি করে। তাই খাওয়া, পান করা, দান করা, পোশাক পরিধান করা- সকল ক্ষেত্রে অপচয়, অপব্যয় ও অহংকার বর্জন আবশ্যক। (ফাতহুল বারী ১০ম খন্ড, ‘লিবাস’ অধ্যায়)


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২২: পোশাক-পরিচ্ছদ (كتاب اللباس ) 22. Clothing

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ

৪৩৮২-[৭৯] আবুদ্ দারদা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যা পরিধান করে তোমরা কবরে এবং মসজিদে আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করবে, তন্মধ্যে সর্বোত্তম হলো সাদা কাপড়। (ইবনু মাজাহ)[1]

الْفَصْلُ الثَّالِثُ

وَعَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ أَحْسَنَ مَا زُرْتُمُ اللَّهَ فِي قُبُورِكُمْ وَمَسَاجِدِكُمُ الْبَيَاضُ» . رَوَاهُ ابْن مَاجَه

وعن أبي الدرداء قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «إن أحسن ما زرتم الله في قبوركم ومساجدكم البياض» . رواه ابن ماجه

ব্যাখ্যাঃ এ বর্ণনাটি বানোয়াট (জাল) হওয়ায় এর কোন ব্যাখ্যা প্রয়োজন নেই। কবরে দাফনের জন্য সাদা কাপড় ব্যবহার করার আদেশ সম্বলিত একাধিক সহীহ হাদীস অন্যত্র বর্ণিত হয়েছে। যেমন,

الْبَسُوا مِنْ ثِيَابِكُمْ الْبَيَاضَ فَإِنَّهَا مِنْ خَيْرِ ثِيَابِكُمْ وَكَفِّنُوا فِيهَا مَوْتَاكُمْ

‘‘তোমরা সাদা কাপড়ের পোশাক পরিধান করো। কারণ তা উত্তম পোশাক এবং তোমরা এ সাদা কাপড়েই মৃতদের কাফন করো।’’ (মুসনাদে আহমাদ হাঃ ২২১৯) [সম্পাদক]


হাদিসের মানঃ জাল (Fake)
বর্ণনাকারীঃ আবুদ দারদা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২২: পোশাক-পরিচ্ছদ (كتاب اللباس ) 22. Clothing
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ১৫ পর্যন্ত, সর্বমোট ১৫ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে