(৭৩২) আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক রাত্রে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এশার নামায অর্ধেক রাত পর্যন্ত পিছিয়ে দিলেন। অতঃপর নামায পড়ার পর আমাদের দিকে মুখ করে বললেন, লোকেরা নামায পড়ে ঘুমিয়ে পড়েছে। আর তোমরা নামাযেই ছিলে; যখন থেকে তার অপেক্ষায় ছিলে।

(৭৩৩) আবু হুরাইরা (রাঃ) প্রমুখাৎ বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি নামাযের অবস্থাতেই থাকে যতক্ষণ নামায তাকে (অন্যান্য কর্ম হতে) আটকে রাখে। তাকে নামায ব্যতীত অন্য কিছু তার পরিবারের নিকট ফিরে যেতে বাধা দেয় না। (বুখারী ৬৫৯, মুসলিম ১৫৪২)

বুখারী শরীফের এক বর্ণনায় এরূপ এসেছে, তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি নামাযেই থাকে যতক্ষণ নামায তাকে আটকে রাখে। (আগামী নামায পড়ার জন্য অপেক্ষা করে মসজিদেই বসে থাকে।) আর সেই সময় ফিরিশতাবর্গ বলতে থাকেন, হে আল্লাহ! ওকে ক্ষমা করে দাও। হে আল্লাহ! ওর প্রতি সদয় হও। (এই দু’আ ততক্ষণ পর্যন্ত চলতে থাকে) যতক্ষণ পর্যন্ত না সে নামাযের স্থান ত্যাগ করেছে অথবা তার ওযু নষ্ট হয়েছে।

(৭৩৪) উক্ত রাবী (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ফিরিশতাবর্গ তোমাদের প্রত্যেকের জন্য দু’আ ক’রে থাকেন, যতক্ষণ সে সেই স্থানে অবস্থান করে, যেখানে সে নামায পড়েছে; যতক্ষণ পর্যন্ত না তার ওযূ নষ্ট হয়েছে; বলেন, হে আল্লাহ! ওকে ক্ষমা করে দাও। হে আল্লাহ! ওর প্রতি সদয় হও।

(৭৩৫) আবু হুরাইরা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, নামাযের পর আর এক নামাযের জন্য অপেক্ষমাণ ব্যক্তি সেই অশ্বারোহীর সমতুল্য, যে তার অশ্বসহ আল্লাহর পথে শত্রুর বিরুদ্ধে বিক্রমের সাথে সদা প্রস্তুত; যে থাকে বৃহৎ প্রতিরক্ষার কাজে।

(৭৩৬) উক্ববাহ বিন আমের (রাঃ) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, নামাযের জন্য বসে প্রতীক্ষারত ব্যক্তি নামাযের দণ্ডায়মান ব্যক্তির মত। তার নাম নামাযে মশগুল ব্যক্তিদের তালিকাভুক্ত থাকে; তার স্বগৃহ থেকে বের হওয়া হতে পুনরায় গৃহে ফিরে যাওয়া পর্যন্ত।

(৭৩৭) আব্দুল্লাহ বিন আমর (রাঃ) বলেন, একদা আমরা মাগরেবের নামায পড়ে এশার নামাযের জন্য অপেক্ষারত ছিলাম। এমন সময় মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা সুসংবাদ গ্রহণ কর। এই যে তোমাদের পালনকর্তা আসমানের দরজাসমূহের একটি দরজা খুলে তাঁর ফিরিশতামণ্ডলীর কাছে তোমাদেরকে নিয়ে গর্ব করছেন; বলছেন, তোমরা আমার বান্দাদের প্রতি লক্ষ্য কর, তারা এক ফরয (নামায) আদায় করেছে এবং অন্য এক ফরয আদায়ের জন্য অপেক্ষা করছে।

(৭৩৮) আবু হুরাইরা (রাঃ) প্রমুখাৎ বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, কোন ব্যক্তি যখন যিকর ও নামাযের জন্য মসজিদে অবস্থান করা শুরু করে, তখনই আল্লাহ তা’আলা তাকে নিয়ে সেইরূপ খুশী হন, যেরূপ প্রবাসী ব্যক্তি ফিরে এলে তাকে নিয়ে তার বাড়ির লোক খুশী হয়।

(৭৩৯) আবু দারদা (রাঃ) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মসজিদ প্রত্যেক পরহেযগার (ধর্মভীরু) ব্যক্তির ঘর।

(৭৪০) আনাস (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মহান আল্লাহ কিয়ামতের দিন ডাক দিয়ে বলবেন, আমার প্রতিবেশীরা কোথায়? আমার প্রতিবেশীরা কোথায়? ফিরিশতাগণ বলবেন, হে আমাদের প্রতিপালক! আপনার প্রতিবেশী হওয়ার যোগ্য কে? তিনি বললেবন, মসজিদ আবাদকারীরা কোথায়?