পরিচ্ছেদঃ ২. প্রথম অনুচ্ছেদ - জ্যোতিষীর গণনা

الكهانة (জ্যোতিষীর গণনা)। كهانة এর ’কাফ’ বর্ণে যবর ও যের যোগে। كهانة দ্বারা এখানে উদ্দেশ্য হলো মানুষের গোপন বিষয় যা ভবিষ্যতে সংঘটিত হবে, সে সম্পর্কে সংবাদ দেয়া। জাহিলী যুগে ’আরবদের মধ্যে এ كهانة প্রচলিত ছিল। তাদের মধ্যে কেউ কেউ দাবী করত যে, তার অনুগত জীন আছে, সে বিভিন্ন সংবাদ তাকে এনে দেয়। আর বর্ণিত আছে যে, শায়ত্বনেরা কথা চুরি করে এতে জ্যোতিষীদের (كهانة) কাছে বলে দিত। আর তাতে তারা প্রয়োজনমত বৃদ্ধি করত। আর তাদের মধ্যে কাফিররা তা গ্রহণ করত। কিন্তু রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে যখন প্রেরণ করা হলো তখন আকাশমণ্ডলীতে পাহারা নিযুক্ত করা হলো এবং كهانة তথা জ্যোতিষীদের বাতিল করা হল।

আর তাদের মধ্যে কেউ কেউ বলত যে, সে কথাবার্তা, কাজকর্ম এবং অবস্থাসমূহ দেখে কিছু অনুমান করে বিভিন্ন জিনিস জানতে পারে। আর এ প্রকারটিকে নির্দিষ্ট (খাস) করা হয়েছে ঐ জ্যোতিষীর জন্য, যে দাবী করে চুরি যাওয়া বস্তু এবং হারিয়ে যাওয়া বস্তু কোথায় আছে তা সে বলে দিতে পারে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


৪৫৯২-[১] মু’আবিয়াহ্ ইবনু হাকাম (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলামঃ হে আল্লাহর রসূল! আমরা জাহিলিয়্যাতের যুগের অন্যান্য কাজের মধ্যে জ্যোতিষীর কাছেও যেতাম। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ তোমরা আর কখনো গণকদের কাছে যাবে না। বর্ণনাকারী বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলামঃ আমরা (কোন কাজের জন্য) অশুভ লক্ষণ মেনে থাকি। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ এটা এমন একটি ব্যাপার যে, (অনিচ্ছাকৃতভাবেই) তোমাদের কারো মনে তার উদ্রেক হয়ে থাকে, তবে তা যেন তোমাদেরকে বিরত না রাখে। রাবী বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলামঃ আমাদের কেউ রেখা টেনে (ভাগ্য পরীক্ষার কাজ করে) থাকে। তিনি বললেনঃ কোন একজন নবী (আল্লাহর হুকুমে) রেখা টানার কাজ করতেন, সুতরাং যার রেখা টানা সে নবীর রেখার সাথে মিলে যায় তা জায়িয আছে। (মুসলিম)[1]

بَابُ الْكِهَانَةِ

عَن مُعَاوِيَة بن الحكم قَالَ: قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ أُمُورًا كُنَّا نَصْنَعُهَا فِي الْجَاهِلِيَّةِ كُنَّا نَأْتِي الْكُهَّانَ قَالَ: «فَلَا تَأْتُوا الْكُهَّانَ» قَالَ: قُلْتُ: كُنَّا نَتَطَيَّرُ قَالَ: «ذَلِكَ شَيْءٌ يَجِدُهُ أَحَدُكُمْ فِي نَفْسِهِ فَلَا يصدَّنَّكم» . قَالَ: قُلْتُ: وَمِنَّا رِجَالٌ يَخُطُّونَ قَالَ: «كَانَ نَبِيٌّ مِنَ الْأَنْبِيَاءِ يَخُطُّ فَمَنْ وَافَقَ خَطَّهُ فَذَاك» . رَوَاهُ مُسلم

عن معاوية بن الحكم قال قلت يا رسول الله امورا كنا نصنعها في الجاهلية كنا ناتي الكهان قال فلا تاتوا الكهان قال قلت كنا نتطير قال ذلك شيء يجده احدكم في نفسه فلا يصدنكم قال قلت ومنا رجال يخطون قال كان نبي من الانبياء يخط فمن وافق خطه فذاك رواه مسلم

ব্যাখ্যাঃ (كُنَّا نَأْتِي الْكُهَّانَ) অর্থাৎ আমরা তাদের নিকট এসে তাদের কাছে বিভিন্ন বিষয় জানতে চাইতাম।


فَلَا تَأْتُوا الْكُهَّانَ অর্থাৎ তারা তোমাদেরকে যে বিষয়ে সংবাদ দেয় তা তোমরা সত্য বলে বিশ্বাস করবে না।

(كُنَّا نَتَطَيَّرُ) অর্থাৎ আমরা পাখি বা এ জাতীয় অন্য কিছুর মাধ্যমে শুভ লক্ষণ-অশুভ লক্ষণ গ্রহণ করি।

(ذٰلِكَ شَيْءٌ) অর্থাৎ মানুষ হওয়ার কারণে জাগ্রত ধারণা হতে (এটা হয়ে থাকে)। (يَجِدُهٗ أَحَدُكُمْ فِي نَفْسِه) অর্থাৎ এতে কোন প্রভাব বা ক্ষতি নেই।

‘আল্লামা ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ এটা দলীলসহ অশুভ লক্ষণকে নিষেধ করেছে। এটা لَا تَطَيَّرُوا ‘‘তোমরা অশুভ লক্ষণ গ্রহণ করো না’’ কথা হতে বেশি পরিপূর্ণ। যেমন তিনি বলেন, فَلَا تَأْتُوا الْكُهَّانَ ‘‘তোমরা জ্যোতিষীর কাছে আসবে না’’। অর্থাৎ তোমরা অশুভ লক্ষণ গ্রহণ করবে না। কেননা অশুভ লক্ষণের কোন আকার অস্তিত্ব নেই, বরং মানুষের অন্তরে তা পাওয়া যায়। এটা মানুষ তার অন্তরে কল্পনা করে থাকে তাতে কোন ক্ষতি থাকে না।

(فَلَا يصدَّنَّكم) অর্থাৎ অশুভ লক্ষণ যেন তোমাদেরকে তোমাদের যাত্রা হতে বিরত না রাখে। আর তোমরা যে উদ্দেশ্য করে রওয়ানা হয়েছ তাতে ক্ষতি হওয়ার ভয়ে যেন বিরত না থাক। ‘আল্লামা ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ এটা দ্বারা মূলত বোঝানো হয়েছে, আমি যেন তোমাকে সেখানে না দেখি। এখানে সে অন্তরে যা অনুভব করে তার জন্য যাত্রা বন্ধ করা হতে নিষেধ করা হয়েছে। এটা বাস্তবিকভাবে যাদের মনে এরূপ উদ্রেক হবে তাদেরকে সম্বোধন করে নিষেধ করা হয়েছে।

(كَانَ نَبِيٌّ مِنَ الْأَنْبِيَاءِ يَخُطُّ) বলা হয়ে থাকে যে, আল্লাহর নবী দান্ইয়াল (আ.) অথবা ইদরীস (আ.) ‘ইল্মে ইলাহী অথবা ‘ইল্মে লাদুন্নী দ্বারা এ কাজ করতেন।

(فَمَنْ وَافَقَ خَطَّهٗ فَذَاك) মোটকথা হলো, বর্তমানে এ কাজ করা হারাম। কারণ এর আসল শিক্ষা বিলুপ্ত হয়ে গেছে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ; ‘আওনুল মা‘বূদ ৭ম খন্ড, হাঃ ৩৯০৫)

ইমাম ইবনু ‘আসীর (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ ইবনু ‘আব্বাস  বলেন, রেখা টানা বলতে অনুমানকারী যে রেখা টানে তাকে বুঝানো হয়েছে এটা এমন জ্ঞান, যা মানুষ ছেড়ে দিয়েছে, সমস্যায় পতিত ব্যক্তি আন্দাজকারীর কাছে এসে তাকে একটা উপহার দিত। তারপর সে তাকে বলত, বস, আমি তোমার জন্য রেখা টানবো। আর অনুমানকারীর সামনে তার একটা ছেলে থাকত, যার সাথে ফলক থাকত। তারপর তারা একটা নরম জায়গায় আসত। এসে চাকা দিয়ে অনেক রেখা চানতো, যেন রেখাগুলো সংখ্যায় আসে। এরপর আবার দু’টা দু’টা করে রেখা মুছতে মুছতে ফিরে আসতো আর তার ছেলেটি শুভ লক্ষণের জন্য বলত, হে বৎস! দেখো এর বর্ণনা আনন্দিত করবে, যদি দু’টি দাগ বাকী থাকত, তবে তা সফলতার চিহ্ন। আর একটি বাকী থাকলে খারাপ চিহ্ন। হারবী বলেন, তারা তিনটি রেখা টানতো। অতঃপর তার উপর যব বা আঠি নিক্ষেপ করতো। আর বলত, অমুক অমুক হবে। এটা ছিল জ্যোতিষীদের একটি গণনার প্রকার। (‘আওনুল মা‘বূদ ৭ম খন্ড, হাঃ ৩৯০৫)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৩: চিকিৎসা ও ঝাড়-ফুঁক (كتاب الطب والرقى) 23. Medicine and Spells

পরিচ্ছেদঃ ২. প্রথম অনুচ্ছেদ - জ্যোতিষীর গণনা

৪৫৯৩-[২] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, কিছু লোক রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জ্যোতিষীদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে বললেনঃ তারা কিছুই নয়। তারা বলল : হে আল্লাহর রসূল! তারা কোন কোন সময় এমন কথা বলে, যা সত্য ও সঠিক হয়ে থাকে। তখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ঐ কথাটি সত্য যা জীন শয়তান (ঊর্ধ্বজগৎ হতে) ত্বরিত শুনে নেয়। অতঃপর মোরগের করকরানোর মতো শব্দ করে তার বন্ধুর কানে তা পৌঁছিয়ে দেয়। এরপর সে গণক ঐ একটি সত্য কথার সাথে শত শত মিথ্যা মিলিয়ে প্রকাশ করতে থাকে। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ الْكِهَانَةِ

وَعَن عَائِشَة قَالَتْ: سَأَلَ أُنَاسٌ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنِ الْكُهَّانِ فَقَالَ لَهُمْ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّهُمْ لَيْسُوا بِشَيْءٍ» قَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ فَإِنَّهُمْ يُحَدِّثُونَ أَحْيَانًا بِالشَّيْءِ يَكُونُ حَقًّا فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «تِلْكَ الْكَلِمَةُ مِنَ الْحَقِّ يَخْطَفُهَا الْجِنِّيُّ فَيَقُرُّهَا فِي أُذُنِ وَلَيِّهِ قَرَّ الدَّجَاجَةِ فَيَخْلِطُونَ فِيهَا أَكْثَرَ مِنْ مِائَةِ كذبة»

وعن عاىشة قالت سال اناس رسول الله صلى الله عليه وسلم عن الكهان فقال لهم رسول الله صلى الله عليه وسلم انهم ليسوا بشيء قالوا يا رسول الله فانهم يحدثون احيانا بالشيء يكون حقا فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم تلك الكلمة من الحق يخطفها الجني فيقرها في اذن وليه قر الدجاجة فيخلطون فيها اكثر من ماىة كذبة

ব্যাখ্যাঃ (لَيْسُوا بِشَيْءٍ) অর্থাৎ নির্ভর করার মতো। অতএব তোমরা তাদের সংবাদের উপর নির্ভর করো না এবং তাদের সংবাদকে বিশ্বাস করো না।

(تِلْكَ الْكَلِمَةُ مِنَ الْحَقِّ) অর্থাৎ বাস্তব বিষয় এবং প্রতিষ্ঠিত সত্য যা তারা সেসব মালায়িকাহ্ (ফেরেশতাদের) থেকে চুরি করে শুনে যারা ওয়াহীর মাধ্যমে সত্য খবর পেয়েছে অথবা তাদের জন্য লাওহে মাহফূযে সংরক্ষেত খবর থেকে উন্মোচিত করা হয়েছিল সেখান থেকে নিয়েছে। অন্য বর্ণনায় এসেছে, তারা জীনদের থেকে শুনেছে অর্থাৎ জীনদের চুরি করা সত্য সংবাদ তারা শুনেছে। আর বাস্তবিক অর্থে এর মধ্যে কোন বৈপরীত্য নেই। তারা শুনেছে জীনদের থেকে আর জিনেরা চুরি করে শুনেছে মালায়িকাহ্’র কাছ থেকে। যেমনটি প্রমাণ করে তাঁর কথা (يَخْطَفُهَا الْجِنِّيُّ) অর্থাৎ খুবই দ্রুত মালায়িকাহ্’র থেকে তারা তা চুরি করে নিয়ে আসে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)।

(فِي أُذُنِ وَلَيِّهِ قَرَّ الدَّجَاجَةِ) ইমাম খত্ত্বাবী (রহিমাহুল্লাহ) ও অন্য একজন বলেনঃ জীন তার জ্যোতিষী বন্ধুর কাছে কথাবার্তা বলে দেয়। ফলে শায়ত্বনেরা তা শুনে ফেলে যেমনিভাবে মুরগী তার কৃত আওয়াজ দিয়ে তাদের বন্ধুদেরকে জাগিয়ে দেয় ফলে তারা তার ডাকে সাড়া দেয়। (শারহুন নাবাবী ১৪শ খন্ড, হাঃ ২২২৮)

(فَيَخْلِطُونَ فِيهَا أَكْثَرَ مِنْ مِائَةِ كذبة) এটি বেশি পরিপূর্ণ তারা একশ’বার মিথ্যা বলে এ কথার চেয়ে। কেননা সে একটি মিথ্যা কথা বার বার বলার কারণে সত্যবাদী হয় এভাবে একশ’বার হয়। যদিও অর্থে একশ’বার নেয়া হয় তবে যথেষ্ট হবে। অথবা বলা হয়, একশ’ মিথ্যা। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৩: চিকিৎসা ও ঝাড়-ফুঁক (كتاب الطب والرقى) 23. Medicine and Spells

পরিচ্ছেদঃ ২. প্রথম অনুচ্ছেদ - জ্যোতিষীর গণনা

৪৫৯৪-[৩] উক্ত রাবী [’আয়িশাহ্ (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি- মালায়িকাহ্’র (ফেরেশতাগণের) একদল মেঘের দেশে (অর্থাৎ- পৃথিবী হতে নিকটতম আকাশমণ্ডলীতে) নেমে আসেন এবং আসমানে যার ফায়সালা হয়েছে পরস্পর তার আলোচনা করেন, সে সময় জীন-শয়তান কান লাগিয়ে রাখে। আর যখনই সে কোন কথা শুনতে পায়, তখনই তা গণকদের কাছে পৌঁছিয়ে দেয় এবং তারা নিজেদের পক্ষ হতে শত শত মিথ্যা তার সাথে মিলিয়ে প্রকাশ করতে থাকে (যার দরুন সত্য-মিথ্যার মিশ্রণ ঘটে)। (বুখারী)[1]

بَابُ الْكِهَانَةِ

وَعَنْهَا قَالَتْ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: إِنَّ الْمَلَائِكَةَ تَنْزِلُ فِي الْعَنَانِ وَهُوَ السَّحَابُ فَتَذْكُرُ الْأَمْرَ قُضِيَ فِي السَّماءِ فتسترق الشياطينُ السمعَ فَتُوحِيهِ إِلَى الْكُهَّانِ فَيَكْذِبُونَ مَعَهَا مِائَةَ كَذْبَةٍ من عِنْد أنفسهم. رَوَاهُ البُخَارِيّ

وعنها قالت سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول ان الملاىكة تنزل في العنان وهو السحاب فتذكر الامر قضي في السماء فتسترق الشياطين السمع فتوحيه الى الكهان فيكذبون معها ماىة كذبة من عند انفسهم رواه البخاري

ব্যাখ্যাঃ (وَهُوَ السَّحَابُ) ‘আল্লামা ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ সম্ভবত এটা বর্ণনাকারীর কথা (عَنَانِ)-এর ব্যাখ্যা হবে। আর سحاب হলো سماء এর মাজায। যেমন سماء এর মাজায سحاب। মহান আল্লাহ বলেন, وَأَنْزَلْنَا مِنَ السَّمَاءِ مَاءً ‘‘আর আমরা আসমান থেকে পানি বর্ষণ করেছি’’- (সূরাহ্ আল মু’মিনূন ২৩ : ১৮)। মালায়িকাহ্ আসমানে অবতরণ করেন।

এখানে উদ্দেশ্য হলো দুনিয়ার আসমান, কারণ মালায়িকাহ্ থেকে জিনদের শ্রবণ করাটা মেঘমালার বেশি নিকটবর্তী হয়। আর এটিই বেশি ঠিক। আর এটি তার কথাকে নিষেধ করে না। আর তার মূল হলো মহান আল্লাহ প্রতিদিন দুনিয়ার ব্যাপারে যে নতুন নতুন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন আসমানে তা মালায়িকাহ্ শোনেন। অতঃপর তাদের কতক কতকের সাথে আলোচনা করেন। সে সময় শয়তান চুরি করে শুনে জ্যোতিষীদের কাছে পৌঁছে দেয়।

আবূ দাঊদ (রহিমাহুল্লাহ) ইবনু মাস্‘ঊদ  হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, যখন মহান আল্লাহ ওয়াহীর মাধ্যমে কথা বলেন, তখন আসমানবাসী শিকলের মতো সারিবদ্ধভাবে সেটা শোনেন। এভাবে তারা আলোচনায় রত থাকেন জিবরীল (আ.) আগমনের পূর্ব পর্যন্ত। যখন জিবরীল (আ.) আগমন করেন তখন তাদের অন্তর কেঁপে উঠে। আর তারা বলতে থাকেন, হে জিবরীল! তোমাদের রব কী বলেছেন? তিনি বলেন, সত্য। (আবূ দাঊদ ৪৭৩৮ : সহীহ)

(مِائَةَ كَذْبَةٍ) অর্থাৎ ‘‘তার নিজের পক্ষ থেকে’’ এর অর্থ হলো কোন সংবাদ সত্য হওয়ার ফলে, তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে সে মিথ্যা কথা বলে প্রচার করে। সেজন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার দ্বারা উপকৃত হতে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেছেন, إِنَّهُمْ لَيْسُوا بِشَيْءٍ ‘‘তারা কিছুই না’’। এটি মিথ্যাবাদীদের সাক্ষ্য দেয়ার মতো এমন, যে মিথ্যুক কখনও সত্য কথাও বলে। মহান আল্লাহ ভালো জানেন। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৩: চিকিৎসা ও ঝাড়-ফুঁক (كتاب الطب والرقى) 23. Medicine and Spells

পরিচ্ছেদঃ ২. প্রথম অনুচ্ছেদ - জ্যোতিষীর গণনা

৪৫৯৫-[৪] হাফসাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি গণকের কাছে যায় এবং (তার কথা সত্য ভেবে) তাকে কোন কথা জিজ্ঞেস করে, তার চল্লিশ দিনের সালাত কবুল হয় না। (মুসলিম)[1]

بَابُ الْكِهَانَةِ

وَعَنْ حَفْصَةَ قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ أَتَى عَرَّافًا فَسَأَلَهُ عَنْ شَيْءٍ لم تقبل صَلَاة أَرْبَعِينَ لَيْلَة» . رَوَاهُ مُسلم

وعن حفصة قالت قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من اتى عرافا فساله عن شيء لم تقبل صلاة اربعين ليلة رواه مسلم

ব্যাখ্যাঃ (مَنْ أَتٰى عَرَّافًا) ‘‘র’’ বর্ণে তাশদীদ যোগে। এটা عارف এর মুবালাগাহ্। জাওহারী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ عراف হলো জ্যোতিষী এবং চিকিৎসক! পশ্চিমারা তাকে জ্যোতির্বিদ বলে। আর সেটাই হলো হাদীসের উদ্দেশ্য যা কতিপয় ব্যাখ্যাকার উল্লেখ করেছেন।

ইমাম নাবাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ জ্যোতিষীর যত প্রকার আছে তন্মেধ্যে عراف-ও একটি।

ইমাম খত্ত্বাবী (রহিমাহুল্লাহ) ও অন্য একজন বলেনঃ عراف বলা হয়, যে চুরি হয়ে যাওয়া জিনিসের স্থান এবং হারানো জিনিসের স্থান ইত্যাদি চিহ্নিত করে দেয়।

(فَسَأَلَهٗ عَنْ شَيْءٍ) অর্থাৎ সত্য বলে বিশ্বাস করার জন্য যদি তাকে কোন কিছু জিজ্ঞেস করে। তবে কেউ ঠাট্টা-বিদ্রূপ করার অথবা মিথ্যা প্রতিপন্ন করার জন্য তাকে জিজ্ঞেস করলে এর বিপরীত হবে। তথা এ হুকুম তার জন্য প্রযোজ্য নয়। মোটকথা যে অন্য কোন প্রয়োজনে তার কাছে আসে সে তার থেকে সতর্ক থাকবে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)

(لم تقبل صَلَاة أَرْبَعِينَ لَيْلَة) তার সালাত কবুল না হওয়ার অর্থ হলো, তাতে তার কোন সাওয়াব হবে না। যদিও তার থেকে ফরয আদায় হয়ে যাবে। তবে উক্ত সালাত পুনরায় তাকে আর আদায় করতে হবে না। এ সালাতের দৃষ্টান্ত হলো ছিনতাইকৃত জমিতে সালাত আদায় করার মতো, যাতে তার ফরয আদায় হয়ে যাবে, কিন্তু তাতে সওয়াব হবে না। আমাদের প্রসিদ্ধ সাথীরা অনুরূপই বলেছেন। তারা বলেছেন, ফরয সালাত এবং অন্যান্য ফরয ‘ইবাদাত, যদি পরিপূর্ণভাবে আদায় করা হয় তবে সেখান থেকে দু’টি অর্জিত হয়। প্রথমটি হলো, ফরযটি পালন হয়ে গেল। আর দ্বিতীয়টি হলো, সাওয়াব অর্জিত হলো।

ছিনতাইকৃত জমিতে ফরয কাজ সম্পন্ন করলে প্রথমটি তথা ফরয আদায় হয়ে যায় তবে দ্বিতীয়টি তথা সাওয়াব হয় না। এ ব্যাখ্যাটি অবশ্যই এ হাদীসের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। কেননা সকল ‘উলামা এ ব্যাপারে একমত যে, যে ব্যক্তি عراف বা গণকের কাছে আসলো তাকে চল্লিশ দিনের সালাত পুনরায় আদায় করা লাগবে না। সুতরাং তার ব্যাখ্যা ওয়াজিব হয়ে গেল। মহান আল্লাহই ভালো জানেন। (শারহুন নাবাবী ১৪শ খন্ড, হাঃ ২৩৩০; মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ হাফসাহ (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৩: চিকিৎসা ও ঝাড়-ফুঁক (كتاب الطب والرقى) 23. Medicine and Spells

পরিচ্ছেদঃ ২. প্রথম অনুচ্ছেদ - জ্যোতিষীর গণনা

৪৫৯৬-[৫] যায়দ ইবনু খালিদ আল জুহানী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হুদায়বিয়ায় রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাত্রের বৃষ্টির পর ভোরে আমাদের ফজরের সালাত আদায় করালেন। সালাত শেষ করে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) লোকেদের (মুক্তাদীদের) দিকে ফিরে বললেনঃ তোমরা কি জানো, তোমাদের রব কি বলেছেন? তারা বলল : আল্লাহ ও তাঁর রসূলই অধিক জানেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, রব্ বলেছেনঃ আমার বান্দাগণ আজ এমন অবস্থায় ভোর করেছে যে, তাদের মধ্যে কেউ কেউ আমার প্রতি ঈমান পোষণকারী এবং কেউ কেউ আমাকে অস্বীকারকারী। যে বলেছে, আল্লাহর রহমত ও করুণায় আমরা বৃষ্টি লাভ করেছি, সে আমার প্রতি ঈমান পোষণকারী এবং তারকা বা নক্ষত্রে অস্বীকারকারী। আর যে বলেছে, অমুক অমুক নক্ষত্রের প্রভাবে আমরা বৃষ্টি লাভ করেছি, সে আমার সাথে কুফরী করেছে এবং নক্ষত্রের প্রতি বিশ্বাস করেছে। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ الْكِهَانَةِ

وَعَنْ زَيْدِ بْنِ خَالِدٍ الْجُهَنِيِّ قَالَ: صَلَّى لَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَلَاةَ الصُّبْحِ بِالْحُدَيْبِيَةِ عَلَى أَثَرِ سَمَاءٍ كَانَتْ مِنَ اللَّيْلِ فَلَمَّا انْصَرَفَ أَقْبَلَ عَلَى النَّاسِ فَقَالَ: «هَلْ تَدْرُونَ مَاذَا قَالَ ربُّكم؟» قَالُوا: الله وَرَسُوله أعلم قَالَ: أَصْبَحَ مِنْ عِبَادِي مُؤْمِنٌ بِي وَكَافِرٌ فَأَمَّا مَنْ قَالَ: مُطِرْنَا بِفَضْلِ اللَّهِ وَرَحْمَتِهِ فَذَلِكَ مُؤْمِنٌ بِي كَافِرٌ بِالْكَوْكَبِ وَأَمَّا مَنْ قَالَ: مُطِرْنَا بِنَوْءِ كَذَا وَكَذَا فَذَلِكَ كَافِرٌ بِي وَمُؤمن بالكوكب

وعن زيد بن خالد الجهني قال صلى لنا رسول الله صلى الله عليه وسلم صلاة الصبح بالحديبية على اثر سماء كانت من الليل فلما انصرف اقبل على الناس فقال هل تدرون ماذا قال ربكم قالوا الله ورسوله اعلم قال اصبح من عبادي مومن بي وكافر فاما من قال مطرنا بفضل الله ورحمته فذلك مومن بي كافر بالكوكب واما من قال مطرنا بنوء كذا وكذا فذلك كافر بي ومومن بالكوكب

ব্যাখ্যাঃ (عَلٰى أَثَرِ سَمَاءٍ) অর্থাৎ বৃষ্টির পরে।

ইমাম নাবাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ এখানে আসমান অর্থ বৃষ্টি।

ইমাম খত্ত্বাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ ‘আরবরা বৃষ্টিকে سَمَاءٍ বা আসমান বলেন, কেননা বৃষ্টি আসমান থেকেই বর্ষিত হয়।

(مُطِرْنَا بِنَوْءِ كَذَا وَكَذَا) অর্থাৎ একটি তারকা ডুবে যাওয়া এবং অন্যটি উদিত হওয়ার কারণে।

ইবনুল ‘আসীর (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ একে نَوْءِ নামে নামকরণ করা হয়েছে, কেননা পশ্চিমে একটি ডুবে যায় আর পূর্বে একটি উদিত হয়।

আবূ ‘উবায়দ (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ আমি এ জায়গায় ব্যতীত نَوْءِ-এর ব্যাপারে ডুবে যাওয়ার কথা শুনিনি। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম نَوْءِ-এর ব্যাপারে কঠোর হয়েছেন, কারণ ‘আরবরা বৃষ্টি হওয়া না হওয়াকে তার সাথে সম্পৃক্ত করত। আর যারা বৃষ্টিকে আল্লাহর সাথে সম্পৃক্ত করত তারা বলত যে, (مُطِرْنَا بِنَوْءِ كَذَا) অর্থাৎ অমুক সময়ে আমরা বৃষ্টি পাব। আর এর লক্ষণ হলো এই। এটা জায়িয রয়েছে। অর্থাৎ মহান আল্লাহ বিধান জারী করেছেন যে, এই এই সময়ে বৃষ্টি হবে।

ইমাম নাবাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ কুফরীর ব্যাপারে তারা মতানৈক্য করেছেন, যারা বলে (مُطِرْنَا بِنَوْءِ كَذَا) ‘‘অমুক অমুক নক্ষত্রের প্রভাবে আমরা বৃষ্টি পেয়েছি’’। তারা দু’ভাবে বিভক্ত হয়েছেন। তাদের একদল বলেন, এটি মহান আল্লাহর সাথে কুফরী। এটি ঈমানকে হরণ করে নেয়। এর দু’টি দিক আছে, প্রথমটি হলো যে মনে করে নক্ষত্র বৃষ্টি দিতে পারে। তার কুফরীর ব্যাপারে কোন সন্দেই নেই। এটি ইমাম শাফি‘ঈ (রহিমাহুল্লাহ) ও জামহূরদের মত।

আর দ্বিতীয় হলো আর যে এ বিশ্বাস রাখে যে, এটি মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে তার অনুগ্রহে আসে। আর نَوْءِ হলো তার একটা চিহ্ন। আর বৃষ্টি নামার একটি ধারণা মাত্র। তবে সে কুফরীর মধ্যে পড়বে না। যেন সে এরূপ কথা বলল যে, مُطِرْنَا فِي وَقْتِ كَذَا আমরা অমুক সময়ে বৃষ্টিপ্রাপ্ত হয়েছি। বাহ্যিকভাবে এটিও মাকরূহ। এটি একটি অস্পষ্ট বাক্য যা ঈমান ও কুফ্রের মাঝামাঝি। এরূপ ব্যক্তির সম্পর্কে খারাপ ধারণা জন্মে। আর এটি হলো জাহিলিয়্যাতের চিহ্ন। আর তাদের দ্বিতীয় দলের কথা হলো, মহান আল্লাহর নি‘আমাত অস্বীকার করা হয়। এর কারণ হলো নক্ষত্রের দিকে বৃষ্টিকে সম্পর্কিত করা। অন্য একটি বর্ণনা এ ব্যাখ্যাটিকে শক্তিশালী করে, তা হলো أَصْبَحَ مِنَ النَّاسِ شَاكِرًا وَكَافِرًا কতিপয় মানুষ সকাল করে শুকরিয়া বা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে করতে ও কুফরী করতে করতে।

অন্য বর্ণনায় এসেছে- مَا أَنْعَمْتُ عَلٰى عِبَادِي مِنْ نِعْمَةٍ إِلَّا أَصْبَحَ فَرِيقٌ بِهَا كَافِرِينَ আর আমি আমার বান্দাদের ওপর যে নি‘আমাত দিয়েছি তা পেয়ে একদল সকাল করে কাফির অবস্থায়।

(‘আওনুল মা‘বূদ ৭ম খন্ড, হাঃ ৩৯০২; মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৩: চিকিৎসা ও ঝাড়-ফুঁক (كتاب الطب والرقى) 23. Medicine and Spells

পরিচ্ছেদঃ ২. প্রথম অনুচ্ছেদ - জ্যোতিষীর গণনা

৪৫৯৭-[৬] আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ যখনই আল্লাহ তা’আলা আসমান হতে কোন বারাকাত নাযিল করেন, তখন তার দ্বারা একদল লোক কাফিরে পরিণত হয়। বৃষ্টি তো আল্লাহ তা’আলাই বর্ষণ করে থাকেন; অথচ একশ্রেণীর লোক বলে যে, অমুক অমুক নক্ষত্রের প্রভাবেই বৃষ্টি হয়েছে। (মুসলিম)[1]

بَابُ الْكِهَانَةِ

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: مَا أَنْزَلَ اللَّهُ مِنَ السَّمَاءِ مِنْ بَرَكَةٍ إِلَّا أَصْبَحَ فَرِيقٌ مِنَ النَّاسِ بِهَا كَافِرِينَ يُنْزِلُ اللَّهُ الْغَيْثَ فَيَقُولُونَ: بِكَوْكَبِ كَذَا وَكَذَا . رَوَاهُ مُسلم

وعن ابي هريرة عن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال ما انزل الله من السماء من بركة الا اصبح فريق من الناس بها كافرين ينزل الله الغيث فيقولون بكوكب كذا وكذا رواه مسلم

ব্যাখ্যাঃ (مَا أَنْزَلَ اللهُ مِنَ السَّمَاءِ مِنْ بَرَكَةٍ) অর্থাৎ বৃষ্টি অথবা অন্য কোন নি‘আমাত। (إِلَّا أَصْبَحَ فَرِيقٌ مِنَ النَّاسِ بِهَا) অর্থাৎ এ নি‘আমাত পাওয়ার কারণে (একদল মানুষ)। (كَافِرِينَ) অস্বীকার করে অথবা কুফরী করে বসে। (بِكَوْكَبِ كَذَا وَكَذَا) অর্থাৎ এটি অমুক তারকা উদিত হওয়ার কারণে অথবা অমুক তারকা ডুবে যাওয়ার কারণে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)

বৃষ্টি মহান আল্লাহর অনুগ্রহ। যাকে ইচ্ছা তাকে তিনি অনুগ্রহ হতে পানি পান করান। কারও ক্ষমতা নেই যে, সে বৃষ্টি বর্ষণ করতে পারে। তাই অনর্থক বিশ্বাস করে ঈমান নষ্ট করা বোকামী বৈ কী। [সম্পাদক]


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৩: চিকিৎসা ও ঝাড়-ফুঁক (كتاب الطب والرقى) 23. Medicine and Spells
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৬ পর্যন্ত, সর্বমোট ৬ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে