পরিচ্ছেদঃ ১০. প্রথম অনুচ্ছেদ - সালাতের নিয়ম-কানুন

صِفَةُ الصَّلَاةِ এর অর্থ সালাতের গুণাগুন, বৈশিষ্ট্য, বিবরণ, বর্ণনা ইত্যাদি। এখানে উদ্দেশ্য হলো সালাতের যাবতীয় বিধি-বিধান। যেমন আরকাম, আহকাম, সুন্নাত, মুসতাহাব, ওয়াজিব ইত্যাদি। ইমাম ইবনু হুমাম এর মতে صِفَةٌ ও وَصْفٌ এর মধ্যে অর্থের কোন ব্যবধান নেই। তবে এখানে وَصْفٌ এর মর্মার্থ হলো সালাতের প্রকৃত কাজ-কর্ম যেমন ক্বিয়াম (কিয়াম), রুকূ’, সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) ইত্যাদি অধ্যায়ে আলোচিত হবে।


৭৯০-[১] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করলো। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন মসজিদের এক কোণে বসা ছিলেন। এরপর লোকটি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে তাঁকে সালাম জানালো। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাকে বললেন, ’’ওয়া ’আলায়কাস্ সালা-ম; যাও, আবার সালাত আদায় কর। তোমার সালাত হয়নি।’’ সে আবার গেল ও সালাত আদায় করলো। আবার এসে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সালাম করলো। তিনি উত্তরে বললেন, ’’ওয়া ’আলায়কাস্ সালা-ম; আবার যাও, পুনরায় সালাত আদায় কর। তোমার সালাত হয়নি।’’ এরপর তৃতীয়বার কিংবা এর পরের বার লোকটি বললো, হে আল্লাহর রসূল! আমাকে শিখিয়ে দিন। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তুমি যখন সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করতে ইচ্ছা করবে (প্রথম) ভালোভাবে উযূ (ওযু/ওজু/অজু) করবে। এরপর ক্বিবলা (কিবলা/কেবলা)র দিকে দাঁড়িয়ে তাকবীর তাহরীমা বলবে। তারপর কুরআন থেকে যা পড়া তোমার পক্ষে সহজ হয় তা পড়বে। তারপর রুকূ’ করবে। রুকূ’তে প্রশান্তির সাথে থাকবে। এরপর মাথা উঠাবে। সোজা হয়ে দাঁড়াবে। অতঃপর সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) করবে। সাজদাতে স্থির থাকবে। তারপর মাথা উঠিয়ে স্থির হয়ে থাকবে। এরপর দ্বিতীয় সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) করবে। সাজদায় স্থির থাকবে। আবার মাথা উঠিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়াবে। এভাবে তুমি তোমার সব সালাত আদায় করবে। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ صِفَةِ الصَّلَوةِ

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: أَنَّ رَجُلًا دَخَلَ الْمَسْجِدَ وَرَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ جَالِسٌ فِي نَاحِيَةِ الْمَسْجِدِ فَصَلَّى ثُمَّ جَاءَ فَسَلَّمَ عَلَيْهِ فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم: «وَعَلَيْك السَّلَام ارْجِعْ فَصَلِّ فَإِنَّكَ لَمْ تُصَلِّ» . فَرَجَعَ فَصَلَّى ثُمَّ جَاءَ فَسَلَّمَ فَقَالَ: «وَعَلَيْكَ السَّلَامُ ارْجِعْ فَصَلِّ فَإِنَّكَ لَمْ تُصَلِّ» فَقَالَ فِي الثَّالِثَةِ أَوْ فِي الَّتِي بَعْدَهَا عَلِّمْنِي يَا رَسُولَ اللَّهِ فَقَالَ: «إِذَا قُمْتَ إِلَى الصَّلَاةِ فَأَسْبِغِ الْوُضُوءَ ثُمَّ اسْتَقْبِلِ الْقِبْلَةَ فَكَبِّرْ ثُمَّ اقْرَأْ بِمَا تَيَسَّرَ مَعَكَ مِنَ الْقُرْآنِ ثُمَّ ارْكَعْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ رَاكِعًا ثُمَّ ارْفَعْ حَتَّى تَسْتَوِّيَ قَائِمًا ثُمَّ اسْجُدْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ سَاجِدًا ثُمَّ ارْفَعْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ جَالِسًا ثُمَّ اسْجُدْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ سَاجِدًا ثُمَّ ارْفَعْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ جَالِسًا» . وَفِي رِوَايَةٍ: «ثُمَّ ارْفَعْ حَتَّى تَسْتَوِيَ قَائِمًا ثمَّ افْعَل ذَلِك فِي صَلَاتك كلهَا»

عن ابي هريرة رضي الله عنه ان رجلا دخل المسجد ورسول الله صلى الله عليه وسلم جالس في ناحية المسجد فصلى ثم جاء فسلم عليه فقال له رسول الله صلى الله عليه وسلم وعليك السلام ارجع فصل فانك لم تصل فرجع فصلى ثم جاء فسلم فقال وعليك السلام ارجع فصل فانك لم تصل فقال في الثالثة او في التي بعدها علمني يا رسول الله فقال اذا قمت الى الصلاة فاسبغ الوضوء ثم استقبل القبلة فكبر ثم اقرا بما تيسر معك من القران ثم اركع حتى تطمىن راكعا ثم ارفع حتى تستوي قاىما ثم اسجد حتى تطمىن ساجدا ثم ارفع حتى تطمىن جالسا ثم اسجد حتى تطمىن ساجدا ثم ارفع حتى تطمىن جالسا وفي رواية ثم ارفع حتى تستوي قاىما ثم افعل ذلك في صلاتك كلها

ব্যাখ্যা: রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যাও সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় কর, কেননা তুমি সালাত আদায় করোনি। অর্থাৎ- প্রশান্তি ও স্থিরতার সাথে সালাত হয়নি। কিংবা সে সালাতের সমস্ত অংশ পূর্ণরূপে আদায় করেনি। এ অর্থও নেয়া যায়। এ হাদীস তার প্রমাণ বহন করে। কেননা বললেন যাও, ‘‘সালাত আদায় করো’’। তাঁর কথায় ‘‘তুমি সালাত আদায় করনি’’ অর্থাৎ- হক আদায় করে সালাত আদায় করা হয়নি।

রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পবিত্র বাণী দ্বারা ‘‘তুমি সালাত আদায় কর। কেননা তোমার সালাত আদায় হয়নি।’’ এ হাদীস স্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছে যে, তা‘দীলে আরকান ছুটে গেলে সালাত ছুটে যাবে। যদি সালাত ছুটে না যেত তাহলে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কথা বলতেন না।

তুমি সালাত আদায় করো, কেননা তোমার সালাত হয়নি। আর এ কথাও এ হাদীস থেকে বুঝা যাচ্ছে যে, খল্লাদ ইবনু রাফি‘ সে প্রসিদ্ধ কোন রুকন পরিত্যাগ করেনি। সে একমাত্র তা‘দীল, ধীরস্থীরতা-কে ছেড়ে দিয়ে ছিলেন। তা‘দীল ও ধীরস্থিরতা ফরয না হলে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দ্বিতীয়বার সালাত আদায়ের নির্দেশ করতেন না। যেমনটি ইবনু আবী শায়বাহ্-এর রিওয়ায়াতে এ ব্যাপারে স্পষ্ট নির্দেশ করছে। তাই প্রতীয়মান হলো যে, রুকনের স্থিরতা, শান্ত হওয়া, দেরী করা পরিত্যাগ করলে সালাত বাতিল হয়ে যাবে। লেখক বলেন, এ দলীল ইমাম আবূ হানীফাহ্ ও মুহাম্মাদ এর মতামতের বিরুদ্ধে স্পষ্ট প্রমাণ। কেননা ইমাম আবূ হানীফাহ্ ও ইমাম মুহাম্মাদ এর প্রসিদ্ধ অভিমত যে, তা‘দীলে আরকান ওয়াজিব ফরয নয়।

এ হাদীসটি দ্বারা প্রমাণিত হচ্ছে যে, রুকূ‘ ও সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) ফরয। আর ক্বওমা ও জলসা সালাতের রুকন। কেননা যদি ক্বওমা, জলসা, রুকন না হতো তাহলে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেটা ত্যাগ করার কারণে সালাত না হওয়ার ঘোষণা দিতেন না।

‘‘সুতরাং যখন তুমি এ রকম করবে তখন তোমার সালাত পূর্ণ হবে। আর যদি এটা হতে কোন কিছু অসম্পূর্ণ থাকে তাহলে তোমার সালাতও অসম্পূর্ণ হবে।’’ এটা তা‘দীলে আরকান ফরয না হওয়ার ইঙ্গিত।

এ হাদীসে প্রমাণ রয়েছে যে, সালাতে ক্বিবলাকে সামনে রাখা ওয়াজিব। এটা সমস্ত মুসলিমের ঐকমত্য সিদ্ধান্ত। তবে যদি ক্বিবলাকে সামনে রাখতে অক্ষম হয় তখন অন্য দিকে ফিরেও সালাত আদায়ের অনুমতি থাকবে বা সংগ্রামের তথা যুদ্ধরত অবস্থায় হামলা আসার আশংকার থাকলে বা নফল সালাতে অন্যদিকে ফিরা বৈধ থাকবে।

তাকবীর তাহরীমা আল্লা-হু আকবার ছাড়া বিশুদ্ধ হবে না। ইমাম আবূ হানীফাহ্ (রহঃ) দ্বিমত পোষণ করেন। তিনি বলেন, যে শব্দে আল্লাহ তা‘আলার মহত্ব বুঝাবে সে শব্দ দিয়ে সালাত শুরুর করা জায়িয হবে। তাই অর্থের দিকে লক্ষ্য করতে হবে। উদ্দেশ্য মহত্ব প্রকাশ করা। যে শব্দ মহত্ব প্রকাশ করবে তা দিয়ে তাকবীর আদায় হয়ে যাবে। ইমাম আহমাদ, মালিক (রহঃ) তাকবীর-এর শব্দ নির্ধারণ করার ক্ষেত্রে বাস্তব যেটা সেটাই অভিমত ব্যক্ত করেছেন। তাই এ শব্দ ছাড়া অন্য কোন শব্দ দ্বারা সালাত শুরু করা যাবে না।

রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সূরাহ্ আল ফাতিহাহ্ পড়ার আদেশ করছেন। এমনিভাবে আর এক বর্ণনায় আছে, ‘‘তুমি সূরাহ্ ফাতিহাহ্ পাঠ কর, অতঃপর তোমার ইচ্ছামত আরেকটি সূরাহ্।’’ এত্থেকে বুঝা যায় সূরাহ্ আল ফাতিহাহ্ পড়ার জন্যে ভিন্ন নির্দেশ এসেছে। مَا تَيَسَّرَ শব্দের مَا শব্দটা ব্যাপক অর্থবোধক, যেটা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উক্তি ‘‘সূরাহ্ ফাতিহাহ্ ছাড়া সালাত হবে না’’ দিয়ে নির্দিষ্ট করা হয়েছে। এটা দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, সূরাহ্ ফাতিহাহ্ ছাড়া সালাত হবে না।

ইমাম আবূ ইউসুফ ও ইমাম শাফি‘ঈ (রহঃ)-এর মতে সালাতে রুকূ‘তে তা‘দীল করা তথা ধীরস্থির অবস্থান করা ফরয। তাদের পক্ষে তারা এ দলীল পেশ করে থাকেন। আর এটা অধিক বিশুদ্ধ।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ১০. প্রথম অনুচ্ছেদ - সালাতের নিয়ম-কানুন

৭৯১-[২] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকবীর ও ক্বিরাআত (কিরআত) ’’আলহামদু লিল্লা-হি রব্বিল ’আ-লামীন’’ দ্বারা সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) শুরু করতেন। তিনি যখন রুকূ’ করতেন মাথা খুব উপরেও করতেন না, আবার বেশী নীচুও করতেন না, মাঝামাঝি রাখতেন। রুকূ’ হতে মাথা উঠিয়ে সোজা হয়ে না দাঁড়িয়ে সাজদায় যেতেন না। আবার সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) হতে মাথা উঠিয়ে সোজা হয়ে না বসে দ্বিতীয় সাজদায় যেতেন না। প্রত্যেক দু’ রাক্’আতের পরই বসে আত্তাহিয়্যাতু পড়তেন। বসার সময় তিনি তাঁর বাম পা বিছিয়ে দিতেন। ডান পা খাড়া রাখতেন। শায়ত্বনের (শয়তানের) মতো কুকুর বসা বসতে নিষেধ করতেন। সাজদায় পশুর মতো মাটিতে দু’ হাত বিছিয়ে দিতেও নিষেধ করতেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) শেষ করতেন সালামের মাধ্যমে। (মুসলিম)[1]

بَابُ صِفَةِ الصَّلَوةِ

وَعَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَسْتَفْتِحُ الصَّلَاةَ بِالتَّكْبِيرِ وَالْقِرَاءَةِ بِ (الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ)
وَكَانَ إِذَا رَكَعَ لَمْ يُشْخِصْ رَأْسَهُ وَلَمْ يُصَوِّبْهُ وَلَكِنْ بَيْنَ ذَلِكَ وَكَانَ إِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ الرُّكُوعِ لَمْ يَسْجُدْ حَتَّى يَسْتَوِيَ قَائِمًا وَكَانَ إِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ السَّجْدَةِ لَمْ يَسْجُدْ حَتَّى يَسْتَوِيَ جَالِسًا وَكَانَ يَقُولُ فِي كُلِّ رَكْعَتَيْنِ التَّحِيَّةَ وَكَانَ يَفْرِشُ رِجْلَهُ الْيُسْرَى وَيَنْصِبُ رِجْلَهُ الْيُمْنَى وَكَانَ يَنْهَى عَنْ عُقْبَةِ الشَّيْطَانِ وَيَنْهَى أَنْ يَفْتَرِشَ الرَّجُلُ ذِرَاعَيْهِ افْتِرَاشَ السَّبُعِ وَكَانَ يخْتم الصَّلَاة بِالتَّسْلِيمِ. رَوَاهُ مُسلم

وعن عاىشة قالت كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يستفتح الصلاة بالتكبير والقراءة ب الحمد لله رب العالمينوكان اذا ركع لم يشخص راسه ولم يصوبه ولكن بين ذلك وكان اذا رفع راسه من الركوع لم يسجد حتى يستوي قاىما وكان اذا رفع راسه من السجدة لم يسجد حتى يستوي جالسا وكان يقول في كل ركعتين التحية وكان يفرش رجله اليسرى وينصب رجله اليمنى وكان ينهى عن عقبة الشيطان وينهى ان يفترش الرجل ذراعيه افتراش السبع وكان يختم الصلاة بالتسليم رواه مسلم

ব্যাখ্যা: ক্বিরাআত (কিরআত) শুরু করবে সূরাহ্ আল ফাতিহাহ্ দ্বারা। তারপর অন্য সূরাহ্ পড়বে। প্রত্যেক কাজ শুরু করার দু‘আ হলো বিসমিল্লা-হ পড়া সেটা পড়া যাবে। বিসমিল্লা-হ ক্বিরাআতের অন্তর্ভুক্ত নয়। এটা প্রমাণিত হয় যে, বিসমিল্লা-হ সূরাহ্ আল ফাতিহার অংশ নয়। তাই সালাতে স্বজোরে বিসমিল্লা-হ পরিত্যাগ করা শার‘ঈ বিধান।

নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রুকূ‘তে মাথা বেশী উঁচু করতেন না এবং বেশী নিচুও করতেন না। বরং উঁচু ও নিচু এর মাঝামাঝি সোজা রাখতেন যাতে পিঠ ও গর্দান সোজা সমান্তরাল রাখতে

তোমরা সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করো যেমনটি তোমরা আমাকে সালাত আদায় করতে দেখছো। এ আদেশসূচক ক্রিয়া দ্বারা ওয়াজিব সাব্যস্ত হবে। দলীল পেশ করা হবে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উক্তি দিয়ে।

শায়ত্বনের (শয়তানের) ন্যায় বসাঃ শায়ত্বনের (শয়তানের) বসা দু’ ধরনের হতে পারেঃ (১) উভয় পা খাড়া করে কটিদেশকে পায়ের গোড়ালির উপর রেখে বসা, (২) নিতম্ব জমিনের উপর রেখে দু’ হাঁটু খাড়া করে দু’ হাত জমিনের উপর রেখে কুকুরের মতো বসা।

সালাতে বসার নিয়মঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সালাতে বসার সাধারণ নিয়ম ছিল। উভয় বৈঠকের মধ্যে বাম পা বিছিয়ে তার পাতার উপর বসতেন এবং ডান পায়ের আঙ্গুলগুলো ক্বিবলামুখী রেখে পায়ের মুড়ি উপরের দিকে খাড়া করে রাখতেন। ইমাম শাফি‘ঈ (রহঃ) বলেন, প্রথম বৈঠকে এরূপ বসবে। কিন্তু যখন সালাত দু’ তিন বা চার রাক্‘আত বিশিষ্ট হয় তখন শেষ বৈঠকে এরূপ বসা সুন্নাত নয়।

রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাম দিয়ে সালাত শেষ করতেন। তাই বুঝা গেল, সালাত থেকে বের হওয়ার একমাত্র পদ্ধতি হলো সালাম দিয়ে বের হওয়া।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ১০. প্রথম অনুচ্ছেদ - সালাতের নিয়ম-কানুন

৭৯২-[৩] আবূ হুমায়দ আস্ সা’ইদী (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর একদল সাহাবীর মধ্যে বললেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আপনাদের চেয়ে বেশি আমি মনে রেখেছি। আমি তাঁকে দেখেছি, তিনি তাকবীরে তাহরীমা বলার সময় দু্’ হাত দু’ কাঁধ বরাবর উঠাতেন। রুকূ’ করার সময় পিঠ নুইয়ে রেখে দু’ হাত দিয়ে দু’ হাঁটু শক্ত করে ধরতেন। আর মাথা উঠিয়ে ঠিক সোজা হয়ে দাঁড়াতেন। এতে প্রতিটি গ্রন্থি স্ব-স্ব স্থানে চলে যেত। তারপর তিনি সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) করতেন। এ সময় হাত দু’টি মাটির সাথে বিছিয়েও রাখতেন না, আবার পাঁজরের সাথে মিশাতেনও না এবং দু’ পায়ের আঙ্গুলগুলোর মাথা ক্বিবলা (কিবলা/কেবলা)মুখী করে রাখতেন। এরপর দু’ রাক্’আতের পরে যখন বসতেন বাম পায়ের উপরে বসতেন ডান পা খাড়া রাখতেন। সর্বশেষ রাক্’আতে বাম পা বাড়িয়ে দিয়ে আর অপর পা খাড়া রেখে নিতম্বের উপর (ভর করে) বসতেন। (বুখারী)[1]

بَابُ صِفَةِ الصَّلَوةِ

وَعَن أبي حميد السَّاعِدِيّ قَالَ: فِي نَفَرٍ مِنْ أَصْحَابِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَنَا أَحْفَظُكُمْ لِصَلَاةِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَأَيْتُهُ إِذَا كَبَّرَ جَعَلَ يَدَيْهِ حِذَاءَ مَنْكِبَيْهِ وَإِذَا رَكَعَ أَمْكَنَ يَدَيْهِ مِنْ رُكْبَتَيْهِ ثُمَّ هَصَرَ ظَهْرَهُ فَإِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ اسْتَوَى حَتَّى يَعُودَ كُلُّ فَقَارٍ مَكَانَهُ فَإِذَا سَجَدَ وَضَعَ يَدَيْهِ غَيْرَ مُفْتَرِشٍ وَلَا قَابِضِهِمَا وَاسْتَقْبَلَ بِأَطْرَافِ أَصَابِعِ رِجْلَيْهِ الْقِبْلَةَ فَإِذَا جَلَسَ فِي الرَّكْعَتَيْنِ جَلَسَ على رجله الْيُسْرَى وَنصب الْيُمْنَى وَإِذا جَلَسَ فِي الرَّكْعَةِ الْآخِرَةِ قَدَّمَ رِجْلَهُ الْيُسْرَى وَنَصَبَ الْأُخْرَى وَقَعَدَ عَلَى مَقْعَدَتِهِ. رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ

وعن ابي حميد الساعدي قال في نفر من اصحاب رسول الله صلى الله عليه وسلم انا احفظكم لصلاة رسول الله صلى الله عليه وسلم رايته اذا كبر جعل يديه حذاء منكبيه واذا ركع امكن يديه من ركبتيه ثم هصر ظهره فاذا رفع راسه استوى حتى يعود كل فقار مكانه فاذا سجد وضع يديه غير مفترش ولا قابضهما واستقبل باطراف اصابع رجليه القبلة فاذا جلس في الركعتين جلس على رجله اليسرى ونصب اليمنى واذا جلس في الركعة الاخرة قدم رجله اليسرى ونصب الاخرى وقعد على مقعدته رواه البخاري

ব্যাখ্যা: এ হাদীসাংশে প্রমাণ রয়েছে যে, তাকবীর এর আগে হাত উঠানো। অর্থাৎ- হাত আগে উঠবে পরক্ষণে সাথে সাথে তাকবীর ও চলবে।

রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কান বরাবর হাত উঠাতেন ঐ সময় যখন সালাত শুরু করতেন। বুঝা গেল তাকবীর চলাকালীন অবস্থায় হাত উঠাতেন। বিবেকও ঐ দিকে ধাবিত হয় যে, তাকবীরের সাথে হাত উঠানো আর এক বর্ণনায় আছে, তিনি হাত উঠাতেন ঐ সময়ের মধ্যে যখন তাকবীর দিতেন।

ইমাম শাফি‘ঈ, মালিক, আহমাদ-এর মতে তাকবীর তাহরীমার সময় কাঁধ বরাবর হাত উঠাতে হবে। তারা এ হাদীস দিয়ে প্রমাণ পেশ করেন।

ইমাম শাফি‘ঈ (রহঃ) উভয় হাদীসের মাঝে সমঝোতা করেছেন, তিনি বলেনঃ রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাঁধ বরাবর হাত উঠালেন এমনকি তার হাতের আঙ্গুলের মাথাসমূহ তার কানের শাখা-প্রশাখার বরাবর হয়ে যেত অর্থাৎ- তার কানের চতুর্থ দিকে আঙ্গুলের মাথার কিনারা বরাবর হতো। বৃদ্ধা আঙ্গুল কানের লতির বরাবর এবং হাতের তালু কাঁধ বরাবর রেখে হাত উঠাতে হবে যাতে বৃদ্ধা আঙ্গুলের মাথা কান বরাবর হয় আর হাতের তালু কাঁধ বরাবর হয়ে যায়। তাতে উভয় হাদীসের উপর একসাথে ‘আমল করা সম্ভব হবে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ১০. প্রথম অনুচ্ছেদ - সালাতের নিয়ম-কানুন

৭৯৩-[৪] ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) শুরু করার সময় দু’ হাত কাঁধ পর্যন্ত উঠাতেন। আবার রুকূ’তে যাবার তাকবীরে ও রুকূ’ হতে উঠার সময় ’’সামি’আল্লা-হু লিমান হামিদাহ, রব্বানা- ওয়ালাকাল হামদু’’ বলেও দু’ হাত একইভাবে উঠাতেন। কিন্তু সাজদার সময় এরূপ করতেন না। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ صِفَةِ الصَّلَوةِ

وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَرْفَعُ يَدَيْهِ حَذْوَ مَنْكِبَيْهِ إِذَا افْتَتَحَ الصَّلَاةَ وَإِذَا كَبَّرَ لِلرُّكُوعِ وَإِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ الرُّكُوعِ رَفَعَهُمَا كَذَلِكَ وَقَالَ: سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ وَكَانَ لَا يَفْعَلُ ذَلِكَ فِي السُّجُودِ

وعن ابن عمر ان رسول الله صلى الله عليه وسلم كان يرفع يديه حذو منكبيه اذا افتتح الصلاة واذا كبر للركوع واذا رفع راسه من الركوع رفعهما كذلك وقال سمع الله لمن حمده ربنا لك الحمد وكان لا يفعل ذلك في السجود

ব্যাখ্যা: এ হাদীসটি স্পষ্ট দলীল যে, উল্লিখিত তিন স্থানে দু’ হাত উঠানো সুন্নাত। আর এটা সত্য ও বেশী সঠিক ইমাম বুখারী (রহঃ) বর্ণনা করেন, মুসলিম জাতির ওপর হক (ওয়াজিব) যে, যখন সে রুকূ‘তে যাবে তখন দু’ হাত কাঁধ পর্যন্ত উঠাবে এবং যখন রুকূ‘ থেকে উঠবে তখনও দু’ হাত কাঁধ পর্যন্ত উঠাবে। বুখারী (রহঃ) আরো কিছু বাড়তি কথা বলেন যে, ইবনু ‘উমার (রাঃ) সে যুগে সবচেয়ে বেশী বিজ্ঞ ছিলেন। তিনি যখন দু’ স্থানে হাত উঠালেন তখন সমস্ত মুসলিম জাতির ওপর বিষয়টা কর্তব্য হয়ে থাকবে। এ মতামত সাহাবীগণের থেকে শুরু করে সাধারণত সমস্ত ‘ইলমওয়ালাদের থেকে পাওয়া যায়। তাবি‘ঈন ও তাদের পরবর্তী সকলেই এ রফ্‘উল ইয়াদায়নসহ সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করেছেন। মুহাম্মাদ ইবনু নাসর আল মারুযী বলেন, একমাত্র কুফাবাসী ছাড়া সকল শহরের ‘উলামাগণ রফ্‘উল ইয়াদায়ন শার‘ঈ বিধান হওয়ার ব্যাপারে ঐকমত্য ব্যক্ত করেছেন। বুখারী (রহঃ) আরো বলেন। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সমস্ত সাহাবীগণ সালাতে হাত উঠাতেন।

এমন কোন সহীহ হাদীস নেই যাতে বলা হয়েছে যে, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রুকূ‘তে যাওয়ার সময় হাত উঠাননি কিংবা রুকূ‘ থেকে মাথা উঠানোর সময় হাত উঠাননি। হানাফীদের মাঝেও হাত না উঠানোর চেয়ে হাত উঠানোর রিওয়ায়াত রয়েছে বলে প্রমাণ মেলে অনেক বেশী। অন্তত ৫০ জন সাহাবী থেকে হাত উঠানোর রিওয়ায়াত বর্ণিত হয়েছে। তার মধ্যে ছয়টি হাদীস মুতাওয়াতীর যা থেকে মুখ ফেরানোর সুযোগ নেই।

শাহ ওয়ালীউল্লাহ দেহলভী (রহঃ) বলেন, আমার কাছে সত্য ও বাস্তব হলো সবটাই সুন্নাত। তবে হাত উঠানোর হাদীস বেশী ও সবচেয়ে শক্তিশালী।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ১০. প্রথম অনুচ্ছেদ - সালাতের নিয়ম-কানুন

৭৯৪-[৫] নাফি’ (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ’আবদুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় শুরু করতে তাকবীরে তাহরীমা বলতেন এবং দু’ হাত উপরে উঠাতেন। রুকূ’ হতে উঠার সময় ’’সামি’আল্লা-হু লিমান হামিদাহ’’ বলার সময়ও দুই হাত উঠাতেন। এরপর দু’ রাক্’আত আদায় করে দাঁড়াবার সময়ও দু’ হাত উপরে উঠাতেন। ইবনু ’উমার (রাঃ) এসব কাজ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম করেছেন বলে জানিয়েছেন। (বুখারী)[1]

بَابُ صِفَةِ الصَّلَوةِ

وَعَنْ نَافِعٍ: أَنَّ ابْنَ عُمَرَ كَانَ إِذَا دَخَلَ فِي الصَّلَاةِ كَبَّرَ وَرَفَعَ يَدَيْهِ وَإِذَا رَكَعَ رَفَعَ يَدَيْهِ وَإِذَا قَالَ سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ رَفَعَ يَدَيْهِ وَإِذَا قَامَ مِنَ الرَّكْعَتَيْنِ رَفَعَ يَدَيْهِ وَرَفَعَ ذَلِكَ ابْنُ عُمَرَ إِلَى نَبِيِّ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ

وعن نافع ان ابن عمر كان اذا دخل في الصلاة كبر ورفع يديه واذا ركع رفع يديه واذا قال سمع الله لمن حمده رفع يديه واذا قام من الركعتين رفع يديه ورفع ذلك ابن عمر الى نبي الله صلى الله عليه وسلم رواه البخاري

ব্যাখ্যা: (وَإِذَا قَامَ مِنْ الرَّكْعَتَيْنِ رَفَعَ يَدَيْهِ) ‘‘দু’ রাক্‘আত আদায় করে দাঁড়াবার সময়ও ইবনু ‘উমার (রাঃ) তার দু’হাত উপরে উঠাতেন।’’ অর্থাৎ- প্রথম দু’ রাক্‘আত আদায় করে তাশাহুদ পাঠ করার পর যখন তৃতীয় রাক্‘আতের জন্য দাঁড়াতেন তখন তিনি তার দু’হাত উত্তোলন করতেন। এটি সালাতে দু’হাত উত্তোলনের চতুর্থ স্থান।

(وَرَفَعَ ذلِكَ ابْنُ عُمَرَ إِلَى النَبِيِّ ﷺ) ‘‘ইবনু ‘উমার (রাঃ) এসব কাজ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম করেছেন বলে জানিয়েছেন’’। অর্থাৎ- এ কাজগুলো ইবনু ‘উমার (রাঃ)-এর নিজস্ব মতামতের ভিত্তিতে করেননি। বরং রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অত্র হাদীসে বর্ণিত স্থানসমূহে স্বীয় হস্ত উত্তোলন করেছেন বিধায় ইবনু ‘উমার (রাঃ) এ স্থানসমূহে স্বীয় হাত উত্তোলন করেছেন। অতএব সালাতে উক্ত চার স্থানে হাত উত্তোলন করা সুন্নাত।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ১০. প্রথম অনুচ্ছেদ - সালাতের নিয়ম-কানুন

৭৯৫-[৬] মালিক ইবনু হুওয়াইরিস (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকবীরে তাহরীমা বলার সময় তাঁর দু’ হাত তাঁর দু’ কান পর্যন্ত উপরে উঠাতেন। আর রুকূ’ হতে মাথা উঠাবার সময় ’’সামি’আল্লা-হু লিমান হামিদাহ’’ বলেও এরূপ করতেন। আর এক বর্ণনায় আছে, এমনকি তাঁর দু’ হাত তাঁর দু’ কানের লতি পর্যন্ত উঠাতেন। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ صِفَةِ الصَّلَوةِ

وَعَن مَالك بن الْحُوَيْرِث قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا كَبَّرَ رَفَعَ يَدَيْهِ حَتَّى يُحَاذِيَ بِهِمَا أُذُنَيْهِ وَإِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ الرُّكُوعِ فَقَالَ: سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ فَعَلَ مِثْلَ ذَلِك. وَفِي رِوَايَة: حَتَّى يُحَاذِي بهما فروع أُذُنَيْهِ

وعن مالك بن الحويرث قال كان رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا كبر رفع يديه حتى يحاذي بهما اذنيه واذا رفع راسه من الركوع فقال سمع الله لمن حمده فعل مثل ذلك وفي رواية حتى يحاذي بهما فروع اذنيه

ব্যাখ্যা : এ হাদীসটির ব্যাখ্যা পূর্বে বর্ণিত হয়েছে, তাছাড়া মালিক ইবনু হুওয়াইরিস (রাঃ) রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জীবদ্দশায় শেষ দিকের সাহাবী। তার এ বর্ণনা দ্বারা এটা প্রমাণিত হয় যে, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইন্তিকালের পূর্ব পর্যন্ত এভাবেই সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করে গেছেন।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ১০. প্রথম অনুচ্ছেদ - সালাতের নিয়ম-কানুন

৭৯৬-[৭] উক্ত রাবী [মালিক ইবনু হুওয়াইরিস (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করতে দেখেছেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বেজোড় রাক্’আতে সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) হতে উঠে দাঁড়াবার আগে কিছুক্ষণ সোজা হয়ে বসতেন। (বুখারী)[1]

بَابُ صِفَةِ الصَّلَوةِ

وَعَنْهُ أَنَّهُ رَأَى النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي فَإِذَا كَانَ فِي وِتْرٍ مِنْ صَلَاتِهِ لَمْ يَنْهَضْ حَتَّى يَسْتَوِيَ قَاعِدًا. رَوَاهُ البُخَارِيّ

وعنه انه راى النبي صلى الله عليه وسلم يصلي فاذا كان في وتر من صلاته لم ينهض حتى يستوي قاعدا رواه البخاري

ব্যাখ্যা: নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তৃতীয় রাক্‘আত আদায়ের পর আরামের জন্যে একটু বসতেন তারপর দাঁড়াতেন। জলসায়ে ইস্তিরাহাত শার‘ঈ বিধান ও সুন্নাত হওয়ার স্পষ্ট দলীল। ইমাম খল্লাদ তাঁর কিতাব শারহে কাবীর-এর মধ্যে ইমাম আহমাদ (রহঃ) জলসায়ে ইস্তিরাহাতের ক্ষেত্রে এ হাদীসকে গ্রহণ করেছে- এ কথাটি স্পষ্ট বলেছেন। ইমাম আহমাদ-এর দু’ উক্তির শেষটি হলো যে, তিনি জলসায়ে ইস্তিরাহাত করেছেন। ইমাম আবূ হানীফাহ্, ইমাম মালিক, সুফ্ইয়ান সাওরী, আওয়াবী, ইসহাক ও অন্যান্য হানাফী বিশেষজ্ঞগণ বলেন জলসায়ে ইস্তিরাহাত সুন্নাত নয়। ইমাম আহমাদ-এর দ্বিতীয় রিওয়ায়াত মতে জলসায়ে ইস্তিরাহাত না করাই উচিত। তাদের দলীলঃ তিরমিযীর এক রিওয়ায়াতে বর্ণিত আছে যে, আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) বলেন, মহানাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বেজোড় রাক্‘আতের পর সোজাসুজি পায়ের মুড়ির উপর দাঁড়িয়ে যেতেন। অর্থাৎ- সাজদার পর বসতেন না। ইমাম ত্বহাবী বলেছেন, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন বিশেষ ওযরের দরুন বসেছেন। যেমন- তিনি হয়ত শারীরিক ক্লান্তি অনুভব করেছেন অথবা বার্ধক্যজনিত দুর্বলতার দরুন কখনো কখনো বসতেন। মুসান্নাফে আবূ শায়বাতে বর্ণিত আছে যে, ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস্‘ঊদ (রাঃ) না বসে সরাসরি দাঁড়িয়ে যেতেন। ইমাম শা‘বী বলেন, ‘উমার (রাঃ) ও ‘আলী  (রাঃ) এবং অন্যান্য প্রথম সারীর প্রবীণ সাহাবীগণও না বসে সরাসরি দাঁড়িয়ে যেতেন।

প্রথম ও তৃতীয় রাক্‘আতে দ্বিতীয় সাজদার পর দাঁড়াবার পূর্বে খানিকটা বসাকে জলসায়ে ইসতিরাহাত বলে। ইমাম শাফি‘ঈর মতে এবং ইমাম আহমাদের এক রিওয়ায়াতের মধ্যে এ সময় খানিকটা বসা সুন্নাত। আহলে হাদীসগণও এরূপ ‘আমল করে থাকেন। তারা অত্র হাদীস মতেই দলীল গ্রহণ করেন। এমনকি যদি কোন শাফি‘ঈ হানাফীদের ন্যায় না বসে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) সম্পাদন করে তাহলে শাফি‘ঈ ‘উলামাগণ এটা আপত্তিকর মনে করেন না। এরূপে হানাফীরাও যদি তাদের ন্যায় জলসা করে সালাত সম্পাদন করে তাহলে হানাফী ‘উলামাগণ এটা আপত্তিকর মনে করেন না।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ১০. প্রথম অনুচ্ছেদ - সালাতের নিয়ম-কানুন

৭৯৭-[৮] ওয়ায়িল ইবনু হূজর (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে দেখেছেন যে, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) শুরু করার সময় দু’ হাত উঠিয়ে তাকবীর বললেন। এরপর হাত কাপড়ের ভিতরে ঢেকে নিলেন এবং ডান হাত বাম হাতের উপর রাখলেন। তারপর রুকূ’তে যাবার সময় দু’ হাত বের করে উপরের দিকে উঠালেন ও তাকবীর বলে রুকূ’তে গেলেন। রুকূ’ হতে উঠার সময় ’’সামি’আল্লা-হু লিমান হামিদাহ’’ বলে আবার দু’ হাত উপরে উঠালেন। তারপর দু’ হাতের মাঝে মাথা রেখে সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) করলেন। (মুসলিম)[1]

بَابُ صِفَةِ الصَّلَوةِ

وَعَن وَائِل بن حجرأنه رأى النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم رفع يَدَيْهِ حِينَ دَخَلَ فِي الصَّلَاةِ كَبَّرَ ثُمَّ الْتَحَفَ بِثَوْبِهِ ثُمَّ وَضَعَ يَدَهُ الْيُمْنَى عَلَى الْيُسْرَى فَلَمَّا أَرَادَ أَنْ يَرْكَعَ أَخْرَجَ يَدَيْهِ من الثَّوْب ثمَّ رفعهما ثمَّ كبر فَرَكَعَ فَلَمَّا قَالَ سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ رَفَعَ يَدَيْهِ فَلَمَّا سَجَدَ سَجَدَ بَيْنَ كَفَّيْهِ. رَوَاهُ مُسلم

وعن واىل بن حجرانه راى النبي صلى الله عليه وسلم رفع يديه حين دخل في الصلاة كبر ثم التحف بثوبه ثم وضع يده اليمنى على اليسرى فلما اراد ان يركع اخرج يديه من الثوب ثم رفعهما ثم كبر فركع فلما قال سمع الله لمن حمده رفع يديه فلما سجد سجد بين كفيه رواه مسلم

ব্যাখ্যা: ইবনু খুযায়মার সহীহ কিতাবের মধ্যে আছে তিনি তার ডান হাতকে সিনার উপরে রাখলেন। কাপড়ের ভেতর ঢেকে নেয়ার কারণ এমন হতে পারে যে, সময়টা শীতকাল ছিল এবং ঠাণ্ডা হতে রক্ষার জন্য হাত ভেতরে নেয়া হয়েছে। অন্য হাদীসে এর সমর্থন মেলে।

এ হাদীস থেকে প্রমাণ যে, হাত উঠানোর সময় দু’হাত খোলা রাখা মুস্তাহাব।

ইবনুল মালিক বলেন, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সাজদায় গিয়ে দু’হাতের তালুর বরাবর মাথা রাখলেন। আর এক রিওয়ায়াত আছে, তার মাথা ও কপাল বরাবর দু’হাত রাখলেন।

আর রাবী সালাতের বাইরে থেকে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ‘আমল প্রত্যক্ষ করছিলেন। ডান হাতকে বাম হাতের উপর রাখার ব্যাপারে সকল ইমাম একমত।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ১০. প্রথম অনুচ্ছেদ - সালাতের নিয়ম-কানুন

৭৯৮-[৯] সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, মানুষদেরকে হুকুম দেয়া হতো সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায়কারী যেন সালাতে তার ডান হাত বাম যিরা-এর উপর রাখে। (বুখারী)[1]

بَابُ صِفَةِ الصَّلَوةِ

وَعَن سهل بن سعد قَالَ: كَانَ النَّاسُ يُؤْمَرُونَ أَنْ يَضَعَ الرَّجُلُ الْيَدَ الْيُمْنَى عَلَى ذِرَاعِهِ الْيُسْرَى فِي الصَّلَاةِ. رَوَاهُ البُخَارِيّ

وعن سهل بن سعد قال كان الناس يومرون ان يضع الرجل اليد اليمنى على ذراعه اليسرى في الصلاة رواه البخاري

ব্যাখ্যা: (রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ডান হাতকে বাম হাতের উপর রাখলেন) অর্থাৎ- হাতের কনুই’র কিনারা হাতের মধ্যমা আঙ্গুলের কিনারা বরাবর রাখতেন। ‘আল্লামা শাওকানী (রহঃ) বলেন, আবূ দাঊদ, নাসায়ী, আহমাদ গ্রন্থে ওয়ায়িল-এর হাদীসের বর্ণনায়। অতঃপর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ডান হাতকে তার বাম হাতের তালুর পিঠ, কব্জি বাজুর উপর রাখলেন। এর মর্মার্থ তিনি ডান হাতকে এভাবে রাখতেন যে, ডান হাতের তালুর মাঝখান কব্জির উপর থাকতো, ডান হাতের কিছু অংশ বাম হাতের তালুর উপর থাকা আবশ্যক হয়ে যেত। কিছু অংশ বাম হাতের বাজুর উপরে থাকতো। কেউ কেউ বলেন, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক হাত অন্য হাতের উপর রাখতেন। আবার কেউ কেউ বলেন, হাত বাজুর উপর রাখতেন।

ওয়ায়িল-এর হাদীসঃ রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সালাতে দাঁড়াতেন তখন ডান হাতকে বাম হাতের উপর ধারণ করতেন। কাবীসাহ্ ইবনু হাল্লাব-এর হাদীস তিনি বলেনঃ ‘‘রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের ইমামতি করতেন, অতঃপর তিনি বাম হাতকে ডান হাত দিয়ে ধারণ করতেন।

ওয়ায়িল-এর হাদীসঃ রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ডান হাতকে বাম তালুর কব্জির ও বাজুর উপর রাখতেন। অর্থাৎ- নিশ্চয়ই তিনি এক হাত অন্য হাতের উপরে রাখতেন ও বাজুর উপরে রাখতেন। তবে ক্বওমা অর্থাৎ- রুকূ‘ থেকে মাথা উঠানোর পর হাত বাধা কোন সহীহ হাদীসে বর্ণিত হয়নি।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ১০. প্রথম অনুচ্ছেদ - সালাতের নিয়ম-কানুন

৭৯৯-[১০] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করার সময় দাঁড়িয়ে তাকবীরে তাহরীমা বলতেন। আবার রুকূ’তে যাবার সময় তাকবীর বলতেন। রুকূ’ হতে তাঁর পিঠ উঠাবার সময় ’’সামি’আল্লা-হু লিমান হামিদাহ’’ এবং দাঁড়ানো অবস্থায় ’’রব্বানা- লাকাল হামদ’’ বলতেন। তারপর সাজদায় যাবার সময় আবার তাকবীর বলতেন। সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) হতে মাথা উঠাবার সময় তাকবীর বলতেন। পুনরায় দ্বিতীয় সাজদায় যেতে তাকবীর বলতেন, আবার সিজদা্ থেকে মাথা তোলার সময় তাকবীর বলতেন। সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) শেষ হওয়া পর্যন্ত গোটা সালাতে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এরূপ করতেন। যখন দু’ রাক্’আত আদায় করার পর বসা হতে উঠতেন তাকবীর বলতেন। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ صِفَةِ الصَّلَوةِ

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا قَامَ إِلَى الصَّلَاةِ يُكَبِّرُ حِينَ يَقُومُ ثُمَّ يُكَبِّرُ حِينَ يَرْكَعُ ثُمَّ يَقُولُ: «سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ» حِينَ يَرْفَعُ صُلْبَهُ مِنَ الرَّكْعَةِ ثُمَّ يَقُولُ وَهُوَ قَائِمٌ: «رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ» ثُمَّ يُكَبِّرُ حِينَ يَهْوِي ثُمَّ يُكَبِّرُ حِينَ يسْجد ثمَّ يكبر حِين يرفع رَأسه يَفْعَلُ ذَلِكَ فِي الصَّلَاةِ كُلِّهَا حَتَّى يَقْضِيَهَا وَيُكَبِّرُ حِينَ يَقُومُ مِنَ الثِّنْتَيْنِ بَعْدَ الْجُلُوسِ

وعن ابي هريرة قال كان رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا قام الى الصلاة يكبر حين يقوم ثم يكبر حين يركع ثم يقول سمع الله لمن حمده حين يرفع صلبه من الركعة ثم يقول وهو قاىم ربنا لك الحمد ثم يكبر حين يهوي ثم يكبر حين يسجد ثم يكبر حين يرفع راسه يفعل ذلك في الصلاة كلها حتى يقضيها ويكبر حين يقوم من الثنتين بعد الجلوس

ব্যাখ্যা: তাকবীরাতে ইন্তিকালী- সালাতের মধ্যে এক অবস্থা থেকে অন্য অবস্থায় যাওয়ার জন্য যে তাকবীর দেয়া হয় তাকে তাকবীরে ইন্তিকালী বা অবস্থা পরিবর্তনের তাকবীর বলে। এসব তাকবীর বলা সুন্নাত।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ১০. প্রথম অনুচ্ছেদ - সালাতের নিয়ম-কানুন

৮০০-[১১] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সর্বোত্তম সালাত হলো দীর্ঘ ক্বিয়াম (কিয়াম) (দাঁড়ানো) সম্বলিত সালাত (সালাত/নামায/নামাজ)। (মুসলিম)[1]

بَابُ صِفَةِ الصَّلَوةِ

وَعَنْ جَابِرٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَفْضَلُ الصَّلَاةِ طُولُ الْقُنُوتِ» . رَوَاهُ مُسلم

وعن جابر قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم افضل الصلاة طول القنوت رواه مسلم

ব্যাখ্যা: সালাতের উত্তম রুকন হলো ক্বিয়ামকে লম্বা করা। সর্বোত্তম সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) হলো ঐ সালাত যে সালাতে অধিক সময় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ক্বিরাআত (কিরআত) পড়া হয়। এর অর্থ বশ্যতা, বিনয়ী, দু‘আ, মৌনতা ইত্যাদি সামগ্রিকভাবে সালাতে প্রয়োগ হওয়া। কারণ এসবগুলো গুণের সমাবেশ যে সালাতে তাই উত্তম সালাত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতের সালাতে দীর্ঘ সময় ক্বিয়াম (কিয়াম) করতেন। অপর এক হাদীসে আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মানুষ তার রবের সবচেয়ে বেশী নিকটবর্তী হয়ে যায় সাজদায় থাকার সময়।

সহীহুল বুখারীতে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর রাত্রির সালাতের যে বর্ণনা মা ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) দিয়েছেন তাতে প্রতীয়মান হয় যে, তাঁর ক্বিয়াম (কিয়াম), রুকূ‘ এবং সাজদার দীর্ঘতা অভিন্ন ছিল, কমবেশি ছিল না, ফলে তা’ ছিল পূর্ণতা ও সৌন্দর্যের দিক থেকে অনুপম ও তুলনাহীন।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ১১ পর্যন্ত, সর্বমোট ১১ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে