মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত) পর্ব-১৪: গোলাম মুক্তিকরণ (كتاب العتق)

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ

মিরকাতুল মাফাতীহে বর্ণিত, মরোক্কার পরিভাষায় الْعِتْقِ শব্দটি ব্যবহৃত দাসত্ব হতে বের হয়ে আসা। যেমন বলা হয়أُعْتِقَ الْعَبْدُ عِتْقًا দাস স্বাধীন হয়েছে।

الْعِتْقِ বা العتاق এ শব্দদ্বয়ের আভিধানিক অর্থ হলো শক্তি বা প্রাবল্য। এ কারণে খানায়ে কা’বাকে বলা হয় ’’বায়তুল আতীক’’। কেননা তা নিজস্ব শক্তির বদৌলতে তার অনিষ্টকারী কিংবা ধ্বংসকারীকে প্রতিহত করে দেয়। তথা সমকালীন অনিষ্ট কোনো বাদশার ধ্বংস হতে (যেমন আবরাহা বাদশার অনিষ্ট হতে প্রতিহত করেছে)।

আবার পুরনো বস্তুকেও ’আতীক বলা হয়, কেননা কোনো জিনিস পূর্বে সংঘটিত হলেও তাতে গুণগত হিসেবে এক ধরনের শক্তি অর্জিত হয়ে থাকে। এ জন্য আবূ বকর সিদ্দীক -এর উপাধি ছিল ’’আতীক’’। কেননা পূর্ব হতেই তিনি একাধিক গুণের অধিকারী ছিলেন, আবার কেউ বলেছিল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ভাষায় জাহান্নামের আগুন হতে মুক্তি লাভ করেছিল বলে মর্যাদার উঁচুমানের হওয়াতে, আবার কারও মতে মা যখন তাকে প্রসব করেন তখন বলেন, عَتِيقُكَ مِنَ الْمَوْتِ তোমার স্বাধীনতা মৃত্যু হতে অর্থাৎ তোমার মুক্তি মৃত্যুতে, কেননা তার কোনো সন্তানই বেঁচে থাকত না। তবে এখানে কোনো ক্রীতদাস তার মালিক হতে মুক্তি লাভ করার অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।

বস্তুত মানুষ জনমগতভাবে আযাদ বা স্বাধীন করেও করতলগত হওয়াটা তার মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী। দাসত্ব অবস্থায় সে নিজের স্বভাবগত চাহিদা কিংবা দীন ঈমানের দাবীতে ধর্মীয় কার্যকলাপ যথাযথভাবে সম্পন্ন করতে পারে না। এমতাবস্থায় সে একজন অসহায় ও অক্ষম, তার সেই দাসত্বের শৃঙ্খল হতে মুক্তি লাভ করাটাই শক্তি। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


৩৩৮২-[১] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোনো মুসলিম গোলামকে মুক্ত করবে আল্লাহ তা’আলা তার প্রতিটি অঙ্গের বিনিময়ে তার প্রতিটি অঙ্গকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি দিবেন। এমনকি ঐ ব্যক্তির গুপ্তাঙ্গও তার গুপ্তাঙ্গের বিনিময়ে মুক্তি দিবেন। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ أَعْتَقَ رَقَبَةً مُسْلِمَةً أَعْتَقَ اللَّهُ بِكُلِّ عُضْوٍ مِنْهُ عُضْوًا مِنَ النَّارِ حَتَّى فَرْجَهُ بِفَرْجِهِ»

عن أبي هريرة قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «من أعتق رقبة مسلمة أعتق الله بكل عضو منه عضوا من النار حتى فرجه بفرجه»

ব্যাখ্যা: আল্লাহ তা‘আলার বাণী: أَوْ تَحْرِير رَقَبَة ‘দাস আযাদ করা’ ইঙ্গিত করে সাধারণত কসমের জরিমানা স্বরূপ। (أَيُّ الرِّقَابِ أَزْكٰى) কোন্ দাস মুক্ত করা বেশী উত্তম তা আবূ যার (রাঃ)-এর হাদীস প্রমাণ করে যা ইতিপূর্বে গেছে। (عَنْ أَبِي ذَرٍّ وَفِيهِ قُلْتُ فَأَيُّ الرِّقَابِ أَفْضَلُ قَالَ أَغْلَاهَا ثَمَنًا وَأَنْفَسُهَا عِنْدَ أَهْلِهَا) যে গোলামের মূল্য বেশী এটা তার মালিকের নিকট বেশী পছন্দ। (ফাতহুল বারী ১১শ খন্ড, হাঃ ৩৭১৫)

(مَنْ أَعْتَقَ رَقَبَةً أَعْتَقَ اللّٰهُ بِكُلِّ عُضْوٍ مِنْهَا عُضْوًا مِنْ أَعْضَائِه مِنَ النَّارِ حَتّٰى فَرْجَه بِفَرْجِه) যে ব্যক্তি কোনো মুসলিম দাসকে দাসত্ব হতে মুক্তি করবে (আযাদকৃত দাসের) প্রত্যেকটি অঙ্গের বিনিময়ে আল্লাহ তার (মুক্তি দানকারীর) প্রত্যেক অঙ্গকে জাহান্নামের আগুন হতে মুক্তি দান করবেন। এমনকি ঐ ব্যক্তির (ক্রীতদাসের) লজ্জাস্থানের বিনিময়ে এ ব্যক্তির (মুক্তিদানকারীর) লজ্জাস্থানও আগুন হতে মুক্তি পাবে।

অন্য বর্ণনায় এসেছ, (مَنْ أَعْتَقَ رَقَبَةً مُؤْمِنَةً أَعْتَقَ اللّٰهُ بِكُلِّ إِرْبٍ مِنْهَا إِرْبًا مِنْهُ مِنَ النَّارِ) যে ব্যক্তি কোনো মু’মিন দাসকে দাসত্ব হতে মুক্ত করবে (আযাদকৃত দাসের) প্রত্যেকটি অঙ্গের বিনিময়ে আল্লাহ তার (মুক্তিদানকারীর) প্রত্যেক অঙ্গকে জাহান্নামের আগুন হতে মুক্তি করবেন।
হাদীসে দাসমুক্ত করার বর্ণনা এবং এটা উত্তম ‘আমল যা দ্বারা জাহান্নামের আগুন হতে মুক্ত হওয়া এবং জান্নাতে প্রবেশ প্রমাণিত হয়। আরও প্রমাণিত হয় অঙ্গবিহীন দাসের চেয়ে নিখুঁত দাস আযাদ করা উত্তম।

আর এ হাদীস দলীল হিসেবে প্রমাণিত যে, দাসী মুক্ত করার চেয়ে দাস মুক্ত করা উত্তম। কাযী ‘আয়ায বলেনঃ ‘উলামারা এ ব্যাপারে মতানৈক্য করেছেন- পুরুষ দাস আযাদ করা উত্তম, না মহিলা দাস? অনেকে বলেন, মহিলা দাস মুক্ত করা উত্তম, কেননা মহিলাকে যখন আযাদ করা হবে তখন তার সন্তানেরাও মুক্ত হবে, চাই তাকে স্বাধীন পুরুষ বিবাহ করুক বা দাস।

আবার অন্য ‘উলামাহ্ দল বলেন, পুরুষকে আযাদ করা উত্তম। সামগ্রিকভাবে পুরুষে যে উপকার আসে মহিলাতে তা আসে না, যেমন- সাক্ষ্যদানে, বিচারক হিসেবে এবং জিহাদের ময়দানে যুদ্ধ করতে প্রভূত বিষয়ে যা বিশেষ পুরুষের সাথেই সংশ্লিষ্ট। আর বিশেষ করে মু’মিন মহিলা/দাসকে খাছ করা হয়েছে, কেননা এতে বিশেষ মর্যাদা রয়েছে। অবশ্য মু’মিনাহ্ মহিলা ব্যতিরেকে কাফির দাসকে মুক্ত করাও মর্যাদা রয়েছে। তবে তা মু’মিনাহ্ দাসী মহিলার চেয়ে দাস মর্যাদা। এজন্য সকল ‘উলামাহ্ ঐকমত্য হয়েছিল যে, হত্যার জরিমানায় মু’মিনাহ্ দাসীর আযাদের কথা বলা হয়েছে।

কাযী ‘ইয়ায মালিক হতে বর্ণনা করেন যে, সবচেয়ে উত্তম দাসী গোলামকে আযাদ করা যদিও সে কাফির হয়। তবে তার অন্য সাথীরা বিরোধিতা করেছেন। আল্লাহই ভালো জানেন। (শারহে মুসলিম ১০ম খন্ড, হাঃ ১৫০৯)

মিরকাতুল মাফাতীহে বর্ণিত, (حَتّٰى فَرْجَه بِفَرْجِه) লজ্জাস্থানের বিনিময়ে এই ব্যক্তির লজ্জাস্থানও চাই তা পুরুষের হোক বা মহিলার হোক। আশরাফ (বাহেমা) বলেনঃ লজ্জাস্থানকে খাস করে উল্লেখ করার কারণ হলো, শির্কের পরে বড় গুনাহের করার স্থান হলো লজ্জাস্থান তথা যিনা। (যিনার ব্যয় মারাত্মক ধরনের কবীরা গুনাহে লিপ্ত হলেও দাস মুক্ত করার দরুন সে জাহান্নামের আগুন হতে মুক্তি লাভ করবে)

মুযহির বলেনঃ নিকৃষ্টতম অঙ্গ বুঝানো হয়েছে। তবে অধিকতর স্পষ্ট হলো আধিক্য অর্থে বুঝানো হয়েছে। (ফাতহুল বারী ১১শ খন্ড, হাঃ ৩৭১৫)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৪: গোলাম মুক্তিকরণ (كتاب العتق) 14. Emancipation

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ

৩৩৮৩-[২] আবূ যার গিফারী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করলাম, কোন্ কাজ সর্বোত্তম? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, আল্লাহ তা’আলার প্রতি ঈমান আনা এবং তাঁর পথে জিহাদ করা। তিনি (আবূ যার) বলেন, আমি পুনরায় জিজ্ঞেস করলাম, কোন্ গোলাম মুক্ত করা উত্তম? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, যার মূল্যায়ন সর্বত্র এবং যে তার মালিকের নিকট অধিক পছন্দনীয়। আমি জিজ্ঞেস করলাম, আমি যদি এমনটি করতে অক্ষম হই। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তাহলে কোনো কর্মরত শ্রমিককে সাহায্য করবে অথবা কোনো অদক্ষ বা অনভিজ্ঞ ব্যক্তিকে কাজ করে দেবে। আমি পুনরায় জিজ্ঞেস করলাম, (এতেও) যদি আমি সক্ষম না হই। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তুমি মানুষের কোনো প্রকার ক্ষতিসাধন হতে বিরত থাকবে। কেননা এটাও সাদাকা, যা তুমি নিজের জন্য করতে পার। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

وَعَنْ أَبِي ذَرٍّ قَالَ: سَأَلْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَيُّ الْعَمَلِ أَفْضَلُ؟ قَالَ: «إِيمَانٌ بِاللَّهِ وَجِهَادٌ فِي سَبِيلِهِ» قَالَ: قُلْتُ: فَأَيُّ الرِّقَابِ أَفْضَلُ؟ قَالَ: «أَغْلَاهَا ثَمَنًا وَأَنْفَسُهَا عِنْدَ أَهْلِهَا» . قُلْتُ: فَإِنْ لَمْ أَفْعَلْ؟ قَالَ: «تُعِينُ صَانِعًا أَوْ تَصْنَعُ لِأَخْرَقَ» . قُلْتُ: فَإِنْ لَمْ أَفْعَلْ؟ قَالَ: «تَدَعُ النَّاسَ مِنَ الشَّرِّ فَإِنَّهَا صَدَقَةٌ تَصَدَّقُ بهَا على نَفسك»

وعن أبي ذر قال: سألت النبي صلى الله عليه وسلم: أي العمل أفضل؟ قال: «إيمان بالله وجهاد في سبيله» قال: قلت: فأي الرقاب أفضل؟ قال: «أغلاها ثمنا وأنفسها عند أهلها» . قلت: فإن لم أفعل؟ قال: «تعين صانعا أو تصنع لأخرق» . قلت: فإن لم أفعل؟ قال: «تدع الناس من الشر فإنها صدقة تصدق بها على نفسك»

ব্যাখ্যা: (أَنْفَسُهَا عِنْدَ أَهْلِهَا) ‘‘তার প্রভুর নিকট অধিক প্রিয়’’ তাদের নিকট খুবই আনন্দের বিষয় সে দাসকে নিয়ে। তাকে তারা মুক্ত করে একান্ত খালেস নিয়্যাতে। যেমন আল্লাহর তা‘আলার উক্তি: لَنْ تَنَالُوا الْبِرَّ حَتّٰى تُنْفِقُوا مِمَّا تُحِبُّونَ ‘‘তোমরা তোমাদের প্রিয়বস্তু খরচ না করা পর্যন্ত কক্ষনো পুণ্য লাভ করবে না’’- (সূরা আ-লি ‘ইমরান ৩ : ৯২) দ্বারা উদ্দেশ্য দরিদ্রের কষাঘাতে জর্জরিত অভাবী ব্যক্তি।

(تَدَعُ النَّاسَ مِنَ الشَّرِّ) ‘‘মানুষের ক্ষতি করা হতে বিরত থাকা প্রমাণ করে’’ খারাপ হতে বিরত থাকাটাও মানুষের কর্মের অন্তর্ভুক্ত ও তার উপার্জনের জন্য সে প্রতিদানপ্রাপ্ত হবে অথবা শাস্তিপ্রাপ্ত হবে প্রতিদান অর্জিত হতে, কেবল তা আল্লাহর সন্তুষ্টির অর্জনের মাধ্যমে।
হাদীসে আরও সাব্যস্ত হয় যে, ‘আমল ঈমানের পরে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা উত্তম। কেউ কেউ বলেছেন, জিহাদের সাথে একত্রিত করা প্রমাণ করে সে সময় উত্তম ‘আমল হয় জিহাদ।

কুরতুবী (রহঃ) বলেনঃ জিহাদের মর্যাদা নির্দিষ্ট সময়ের প্রেক্ষিতে আর পিতা-মাতার সাথে সদাচারণের মর্যাদা ঐ ব্যক্তির জন্য যার পিতা-মাতা রয়েছে তার জন্য জিহাদের অনুমোদন নেই তাদের অনুমতি ব্যতিরেকে।

মূল কথা হলো, প্রশ্নকারীর অবস্থার প্রেক্ষিতে জওয়াব দেয়া হয়েছে।

ইবনু মুনীর বলেনঃ হাদীস ইঙ্গিত বহন করে যে, কর্মহীন ব্যক্তিকে সাহায্য করার চেয়ে কর্মজীবি ব্যক্তিকে সাহায্য করা উত্তম, কেননা কর্মহীন ব্যক্তিকে তার কর্মহীনতার জন্য সবাই তাকে সাহায্য করে কিন্তু কর্মহীন ব্যক্তিকে তার কর্মের কারণে সাহায্য করা হতে বিরত থাকে আর তাকে সাহায্য করা গোপন সাদাকার সমতুল্য। (ফাতহুল বারী ৫ম খন্ড, হাঃ ২৫১৮)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৪: গোলাম মুক্তিকরণ (كتاب العتق) 14. Emancipation

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ

৩৩৮৪-[৩] বারা ইবনু ’আযিব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন এক গ্রাম্য লোক নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে বলল, আমাকে এমন একটি ’আমল বলে দিন যে ’আমলের দরুন আমি জান্নাতে যেতে পারি। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, যদিও তুমি অল্প কথায় বলে ফেললে, কিন্তু তুমি ব্যাপক বিষয় জানতে চাচ্ছ। তুমি একটি প্রাণী মুক্ত কর এবং গোলাম মুক্ত কর। সে বলল, এ কাজ দু’টি কি একই নয়? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, (অবশ্যই) না। কেননা প্রাণী মুক্ত করার অর্থ হলো তুমি একাকী একটি প্রাণ মুক্ত করা, আর গোলাম মুক্ত করার অর্থ হলো তার মুক্তিপণের মাধ্যমে সাহায্য করা। অধিক দুগ্ধদানকারী প্রাণী দান করা এবং অত্যাচারী আত্মীয়-স্বজনের প্রতি দয়াপ্রবণ হওয়া। যদি তুমি এসব কাজ করতে সক্ষম না হও, তাহলে ক্ষুধার্তকে খাদ্য খাওয়াও এবং তৃষ্ণার্তকে পান করাও। সৎকর্মের আদেশ দাও এবং মন্দ কাজে বাধা দাও। আর যদি তুমি এ কাজ করতেও অক্ষম হও, তাহলে উত্তম কথোপকথন ছাড়া তোমার জিহবাকে সংযত রাখ। (বায়হাক্বী- শু’আবুল ঈমান)[1]

عَن الْبَراء بن عَازِب قَالَ: جَاءَ أَعْرَابِيٌّ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: عَلِّمْنِي عَمَلًا يُدْخِلُنِي الْجَنَّةَ قَالَ: «لَئِنْ كُنْتَ أَقْصَرْتَ الْخُطْبَةَ لَقَدْ أَعْرَضْتَ الْمَسْأَلَةَ أَعْتِقِ النَّسَمَةَ وَفك الرَّقَبَة» . قَالَ: أَو ليسَا وَاحِدًا؟ قَالَ: لَا عِتْقُ النَّسَمَةِ: أَنْ تَفَرَّدَ بِعِتْقِهَا وَفَكُّ الرَّقَبَةِ: أَنْ تُعِينَ فِي ثَمَنِهَا وَالْمِنْحَةَ: الْوَكُوفَ وَالْفَيْءَ عَلَى ذِي الرَّحِمِ الظَّالِمِ فَإِنْ لَمْ تُطِقْ ذَلِكَ فَأَطْعِمِ الْجَائِعَ وَاسْقِ الظَّمْآنَ وَأْمُرْ بِالْمَعْرُوفِ وَانْهَ عَنِ الْمُنْكَرِ فَإِنْ لم تطق فَكُفَّ لِسَانَكَ إِلَّا مِنْ خَيْرٍ . رَوَاهُ الْبَيْهَقِيُّ فِي شعب الْإِيمَان

عن البراء بن عازب قال: جاء أعرابي إلى النبي صلى الله عليه وسلم فقال: علمني عملا يدخلني الجنة قال: «لئن كنت أقصرت الخطبة لقد أعرضت المسألة أعتق النسمة وفك الرقبة» . قال: أو ليسا واحدا؟ قال: لا عتق النسمة: أن تفرد بعتقها وفك الرقبة: أن تعين في ثمنها والمنحة: الوكوف والفيء على ذي الرحم الظالم فإن لم تطق ذلك فأطعم الجائع واسق الظمآن وأمر بالمعروف وانه عن المنكر فإن لم تطق فكف لسانك إلا من خير . رواه البيهقي في شعب الإيمان

ব্যাখ্যা: মিরকাতুল মাফাতীহে বর্ণিত, (عِتْقُ النَّسَمَةَ) এবং (فُكَّ الرَّقَبَةَ) হাদীসের এ দু’টি শব্দের মধ্যে পার্থক্যের ব্যাপারে। ‘আল্লামা ত্বীবী (রহঃ) বলেনঃ (عِتْقُ) অর্থ হলো তার ওপর দাসত্বের শৃঙ্খল হতে তুলে নেয়া। ফলে এ কাজ কোনো এক ব্যক্তির একক মালিকানাধীন হওয়া ছাড়া সম্ভব নয়।

আর (فُكَّ) অর্থ হলো দাস মুক্তিতে চেষ্টা বা সহযোগিতা করা এবং এতে অন্য লোকও শরীক থাকতে পারে, যেমন কোনো এক গোলাম তার প্রভুর সাথে চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছে যে, নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা পরিশোধ করতে পারলে সে দাসত্ব হতে মুক্তি পাবে এবং তা কমের কিস্তিতে পরিশোধ করতে পারবে। হাদীসের পরিভাষায় এ জাতীয় গোলামকে বলা হয় ‘‘মুকাতাব’’। সুতরাং এ ধরনের গোলামকে কিছু আর্থিক সাহায্য করাকেও (فُكَّ الرَّقَبَةَ) বলা হয়।

(وَالْمِنْحَةَ) দ্বারা এমন উটনী ও ছাগলকে বুঝানো হয় যা তার মালিককে দুধ দেয় যা দ্বারা তার মালিক উপকৃত হয়। (وَكُوْفَ) দ্বারা উদ্দেশ্য প্রচুর দুধ প্রদানকারী জানোয়ার।

(فَإِنْ لَمْ تَطِقْ فَكُفَّ لِسَانَكَ إِلَّا مِنْ خَيْرٍ) আর যদি তোমার দ্বারা এ কাজ করাও সম্ভব না হয় তবে কল্যাণমূলক কথা ব্যতীত তোমার জিহবাকে বন্ধ রাখ। এটা অন্য হাদীসেরই প্রতিধ্বনি যা বুখারীতে এসেছে «مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللّٰهِ وَالْيَوْمِ الْاٰخِرِ فَلْيَقُلْ خَيْرًا أَوْ لِيَصْمُتْ» যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং আখিরাতের উপর ঈমান আনে যে যেন ভালো বলে অথবা চুপ থাকে। কারও মতে خَيْرً দ্বারা উদ্দেশ্য যার উপর প্রতিদান চালু হয়। সুতরাং মুবাহ তথা বৈধ বা অনুমোদিত خَيْرً নয়। তবে خَيْرً দ্বারা এখানে সুস্পষ্ট উদ্দেশ্য খারাপ বা অন্যায়ের সরাসরি বিপরীত। আর ইচ্ছা ঈঙ্গিত করে যে, এটা ঈমানের সর্বনিম্ন বস্তুর আর তার অবস্থার বাস্তব চিত্র হলো আমাদের যুগ। এজন্য বলা হয়, আমাদের এখানে সময় চুপ থাকার সময় এবং বাড়ীকে আঁকড়িয়ে ধরা ও খাদ্য নিয়ে তুষ্ট থাকা মৃত্যু আসা পর্যন্ত। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৪: গোলাম মুক্তিকরণ (كتاب العتق) 14. Emancipation

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ

৩৩৮৫-[৪] ’আমর ইবনু ’আবাসাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহ তা’আলার জিকির-আয্কারের (তথা সালাত, কুরআন তিলাওয়াত, খুৎবা ইত্যাদি) উদ্দেশে মসজিদ নির্মাণ করল। তার জন্য জান্নাতে একটি (বৃহদাকার) গৃহ নির্মিত হবে। আর যে ব্যক্তি কোনো মুসলিম গোলাম মুক্ত করবে, তার বিনিময় তার জন্য জাহান্নাম হতে মুক্তিপণ হিসেবে পরিগণিত হবে। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে (জিহাদ, ’ইলম অর্জন, দা’ওয়াত-তাবলীগে ব্যস্ততায়) বয়োপ্রাপ্ত হয়েছে, তার বিনিময় তার জন্য কিয়ামত দিবসে জ্যোতি হবে। (শারহুস্ সুন্নাহ্)[1]

وَعَن عَمْرو بن عبسة أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَنْ بَنَى مَسْجِدًا لِيُذْكَرَ اللَّهُ فِيهِ بُنِيَ لَهُ بَيْتٌ فِي الْجَنَّةِ وَمَنْ أَعْتَقَ نَفْسًا مُسْلِمَةً كَانَتْ فِدْيَتَهُ مِنْ جَهَنَّمَ. وَمَنْ شَابَ شَيْبَةً فِي سَبِيلِ اللَّهِ كَانَتْ لَهُ نُورًا يَوْم الْقِيَامَة» . رَوَاهُ فِي شرح السّنة

وعن عمرو بن عبسة أن النبي صلى الله عليه وسلم قال: «من بنى مسجدا ليذكر الله فيه بني له بيت في الجنة ومن أعتق نفسا مسلمة كانت فديته من جهنم. ومن شاب شيبة في سبيل الله كانت له نورا يوم القيامة» . رواه في شرح السنة

ব্যাখ্যা: মিরকাতুল মাফাতীহে আছে, (بُنِىَ لَه بَيْتٌ فِى الْجَنَّةِ) জান্নাতের মধ্যে একখানা ঘর তৈরি করা হবে তথা জান্নাতে মসজিদের স্থানের পরিমাপের চেয়ে অনেক বড় ঘর বানানো হবে।

(وَمَنْ شَابَ شَيْبَةً فِىْ سَبِيلِ اللّٰهِ) ‘‘যে বার্ধক্য হবে আল্লাহর পথে’’ যুদ্ধের ময়দানে অথবা হজে/হজ্জে অথবা ‘ইলম অর্জনের অথবা ইসলামে বা অন্য বর্ণনা দ্বারা প্রমাণিত।

আর অন্য বর্ণনায়, ‘আলী হতে আহমাদ, বুখারী, মুসলিম ও তিরমিযী হতে এ শব্দে «مَنْ بَنٰى مَسْجِدًا يَبْتَغِي بِه وَجْهَ اللّٰهِ بَنَى اللّٰهُ لَه مِثْلَه فِي الْجَنَّةِ» যে ব্যক্তি মসজিদে বানালো শুধু যা দ্বারা আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করে আল্লাহ অনুরূপ জাহান্নামে তার জন্য ঘর বানাবেন।

আর ‘আব্বাস (রাঃ)-এর বর্ণনায় এসেছে, مَنْ بَنٰى لِلّٰهِ مَسْجِدًا وَلَوْ كَمِفْحَصِ قَطَاةٍ لِبَيْضِهَا بَنَى اللّٰهُ لَه بَيْتًا فِي الْجَنَّةِ যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য মসজিদ বানায় যদি তা ডিম পড়ার মতো স্থান হয় আল্লাহ তা‘আলা তার জন্য জান্নাতে ঘর বানাবেন। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আমর ইবন আবাসা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৪: গোলাম মুক্তিকরণ (كتاب العتق) 14. Emancipation

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ

৩৩৮৬-[৫] গরীফ ইবনু ’আইয়্যাশ আদ্ দায়লামী (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন আমরা ওয়াসিলাহ্ ইবনুল আসক্বা’ (রাঃ)-এর নিকট এসে বললাম, আমাদেরকে এমন একটি হাদীস বর্ণনা করুন যার মধ্যে কমবেশির পার্থক্য যেন না হয়। (এ কথা শুনে) তিনি ভীষণ রাগস্বরে বললেন, তোমরা (নিয়মিত) কুরআন মাজীদ তিলাওয়াত কর, আর এ কুরআন মাজীদ তোমাদের ঘরেই (নখদর্পণে) ঝুলন্ত অবস্থায় বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও (অনিচ্ছাকৃতভাবে) কমবেশি হয়ে যায়। আমরা বললাম, আমাদের এ কথা বলা উদ্দেশ্য হলো এই যে, আপনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে যে হাদীস সরাসরি শুনেছেন (তা হুবহু আমাদেরকে বর্ণনা করুন)। তখন তিনি বললেন, (একদা) আমরা আমাদের এমন এক সাথীর ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট আসলাম, যে অন্য এক লোককে হত্যা করে নিজের জন্য জাহান্নাম অবধারিত করে ফেলেছিল। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদেরকে আদেশ করলেন, ঐ ব্যক্তির পক্ষ হতে একটি গোলাম মুক্ত করে দাও। আল্লাহ তা’আলা গোলামের প্রতিটি অঙ্গের বিনিময়ে তার (হত্যাকারীর) প্রতিটি অঙ্গকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করবেন। (আবূ দাঊদ, নাসায়ী)[1]

عَن الغريف بن عَيَّاش الديلمي قَالَ: أَتَيْنَا وَاثِلَة بن الْأَسْقَع فَقُلْنَا: حَدِّثْنَا حَدِيثًا لَيْسَ فِيهِ زِيَادَةٌ وَلَا نُقْصَانٌ فَغَضِبَ وَقَالَ: إِنَّ أَحَدَكُمْ لَيَقْرَأُ وَمُصْحَفُهُ مُعَلَّقٌ فِي بَيْتِهِ فَيَزِيدُ وَيَنْقُصُ فَقُلْنَا: إِنَّمَا أَرَدْنَا حَدِيثًا سَمِعْتَهُ مِنَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم فَقَالَ: أَتَيْنَا رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي صَاحِبٍ لَنَا أَوْجَبَ يَعْنِي النَّارَ بِالْقَتْلِ فَقَالَ: «أعتقوا عَنهُ بِعِتْق الله بِكُل عُضْو مِنْهُ عُضْو أَمنه من النَّار» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَالنَّسَائِيّ

عن الغريف بن عياش الديلمي قال: أتينا واثلة بن الأسقع فقلنا: حدثنا حديثا ليس فيه زيادة ولا نقصان فغضب وقال: إن أحدكم ليقرأ ومصحفه معلق في بيته فيزيد وينقص فقلنا: إنما أردنا حديثا سمعته من النبي صلى الله عليه وسلم فقال: أتينا رسول الله صلى الله عليه وسلم في صاحب لنا أوجب يعني النار بالقتل فقال: «أعتقوا عنه بعتق الله بكل عضو منه عضو أمنه من النار» . رواه أبو داود والنسائي

ব্যাখ্যা: (فَيَزِيدُ وَيَنْقُصُ) ‘আল্লামা ত্বীবী (রহঃ) বলেনঃ আধিক্য অর্থে বুঝানো হয়েছে কুরআন পঠনে কম-বেশী করা যাবে না। তবে হাদীস বর্ণনার ক্ষেত্রে অর্থের দিক লক্ষ্য রেখে শব্দ কম বেশী করা যেতে পারে।

(بِكُلِّ عُضْوٍ مِنْهُ) তথা আযাদকৃত গোলামের প্রতিটি অঙ্গের বিনিময়ে। (عُضْوٍ مِنْهُ) হত্যাকারীর অঙ্গকে। (مِنَ النَّارِ) আগুন হতে মুক্ত করবে। সম্ভবত নিহত লোকটি ছিল معاهد (মুআহিদ) বা নিরাপত্তাপ্রাপ্ত এবং তাকে ভুলবশতঃ হত্যা করা হয়েছিল। আর তার ওয়ালী ওয়ারিসরা এই ধারণা করেছিল যে, নিরাপত্তাপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে ভুলবশতঃ হত্যা করলে জাহান্নাম অবধারিত। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৪: গোলাম মুক্তিকরণ (كتاب العتق) 14. Emancipation

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ

৩৩৮৭-[৬] সামুরাহ্ ইবনু জুনদুব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ এমন শাফা’আত (সুপারিশ) করা সর্বোত্তম সাদাকা, যে শাফা’আতের দরুন কোনো লোক গোলামী হতে মুক্তি লাভ করতে পারে। (বায়হাক্বী- শু’আবুল ঈমান)[1]

وَعَن سَمُرَةَ بْنِ جُنْدُبٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَفْضَلُ الصَّدَقَةِ الشَّفَاعَةُ بِهَا تُفَكُّ الرَّقَبَة» . رَوَاهُ الْبَيْهَقِيّ فِي «شعب الْإِيمَان»

وعن سمرة بن جندب قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «أفضل الصدقة الشفاعة بها تفك الرقبة» . رواه البيهقي في «شعب الإيمان»

ব্যাখ্যা: (تُفَكُّ الرَّقَبَةُ) দাসত্ব হতে মুক্তি লাভ বন্দিত্ব হতে অথবা আটক হতে মুক্তি লাভ সুপারিশ করাটাও এক পর্যায়ের সাদাকা। বায়হাক্বীর বর্ণনায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ «أَفْضَلُ الصَّدَقَةِ الشَّفَاعَةُ تَفُكُّ بِهَا الْأَسِيرَ، وَتَحْقِنُ بِهَا الدَّمَ، وَتَجُرُّ بِهَا الْمَعْرُوفَ وَالْإِحْسَانَ إِلٰى أَخِيكَ، وَتَدْفَعُ عَنْهُ الْكَرِيهَةَ» সর্বোত্তম সাদাকা হলো সুপারিশ যা দ্বারা বন্দী মুক্তি করা হয় এবং রক্তাক্ত পরিবেশ বন্ধ করা হয় এবং সৎকাজ চালু করা হয় আর তোমরা ভাইয়ের প্রতি ইহসান করা এবং তার ঘৃণ্য বস্তু দূরীভূত করা। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৪: গোলাম মুক্তিকরণ (كتاب العتق) 14. Emancipation

পরিচ্ছেদঃ ১. প্রথম অনুচ্ছেদ - অংশীদারী গোলাম মুক্তি করা ও নিকটাত্মীয়কে ক্রয় করা এবং অসুস্থাবস্থায় গোলাম মুক্তি করা

৩৩৮৮-[১] ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কোনো অংশীদারী মালিকানাধীন গোলামের মধ্যে স্বীয় অংশ মুক্ত করল, (তার পক্ষে এটাই সর্বোত্তম) যদি তার নিকট কোনো ন্যায়পরায়ণ লোকের নিরূপিত মূল্য অনুযায়ী গোলামটির সমপরিমাণ মূল্য থাকে, তখন সে অপর অংশীদারদেরকে তাদের অংশের মূল্য পরিশোধ করে গোলামটি (তার পক্ষ থেকে) মুক্ত করে দিবে। অন্যথায় সে যতটুকু অংশ মুক্ত করেছে ততটুকু অংশই মুক্ত বলে পরিগণিত হবে। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ إِعْتَاقِ الْعَبْدِ الْمُشْتَرَكِ وَشِرَاءِ الْقَرِيْبِ وَالْعِتْقِ فِى الْمَرَضِ

عَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ أَعْتَقَ شِرْكًا لَهُ فِي عَبْدٍ وَكَانَ لَهُ مَالٌ يَبْلُغُ ثَمَنَ الْعَبْدِ قُوِّمَ الْعَبْدُ قِيمَةَ عَدْلٍ فَأُعْطِيَ شُرَكَاؤُهُ حِصَصَهُمْ وَعَتَقَ عَلَيْهِ الْعَبْدُ وَإِلَّا فَقَدْ عَتَقَ مِنْهُ مَا عَتَقَ»

عن ابن عمر رضي الله عنهما قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «من أعتق شركا له في عبد وكان له مال يبلغ ثمن العبد قوم العبد قيمة عدل فأعطي شركاؤه حصصهم وعتق عليه العبد وإلا فقد عتق منه ما عتق»

ব্যাখ্যা: (فَأُعْطِىَ شُرَكَاؤُه) যদি অংশীদার থাকে তাহলে সকল অংশীদারকে তাদের স্ব স্ব অংশ মূল্য পরিশোধ করবে। (ফাতহুল বারী ৫ম খন্ড, হাঃ ২৫২২)

ইমাম নববী (রহঃ) বলেনঃ যৌথ মালিকানাধীন ক্রীতদাসের কোনো একজন অংশীদার তার নিজের অংশ আযাদ করে দিলে ক্রীতদাসকে পুরোপুরি মুক্তি দানকারীও ঐ ব্যক্তির ওপর দায়িত্ব হয়ে দাঁড়ায় যদি তার জন্য সহজ হয়, চাই ক্রীতদাসটি মুসলিম হোক বা কাফির হোক আর অংশীদাররাও মুসলিম হোক বা কাফির হোক। কারও কোনো স্বাধীনতা থাকবে না, চাই অংশীদার হোক বা দাস হোক বা আযাদকারী হোক, এক্ষেত্রে বরং আযাদ করাটাই সাব্যস্ত হবে যদিও সবাই তা অপছন্দ করে স্বাধীনতা হওয়ার সৃষ্টিতে আল্লাহর অধিকারের প্রতি দৃষ্টি রাখে।

ইবনু হুমাম বলেনঃ যখন কোনো ক্রীতদাস দু’জন যৌথ মালিকানাধীনের অধীনে থাকবে তাদের দু’জনের একজন যদি তার অংশকে আযাদ করে দেয় তাহলে ক্রীতদাসের দাসত্বের শৃঙ্খলা মুছে যাবে। আর যদি আযাদকারীর শরীক কোনো এক শারীকানা মালিক সামর্থ্যবান হন তাহলে অপর অংশীদারের স্বাধীনতা রয়েছে সেও তার অংশ আযাদ করে দিবে অথবা ক্রীতদাসকে শ্রমে খাটিয়ে তার অংশের মূল্য পরিমাণ উসূল করে নিবে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৪: গোলাম মুক্তিকরণ (كتاب العتق) 14. Emancipation

পরিচ্ছেদঃ ১. প্রথম অনুচ্ছেদ - অংশীদারী গোলাম মুক্তি করা ও নিকটাত্মীয়কে ক্রয় করা এবং অসুস্থাবস্থায় গোলাম মুক্তি করা

৩৩৮৯-[২] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি অংশীদারী মালিকানাধীন গোলামের মধ্যে স্বীয় অংশ মুক্ত করে দেয়। আর তার নিকট যদি (অপর অংশীদারদের অংশের মূল্য পরিশোধের) সম্পদ থাকে, তাহলে তার পক্ষ থেকে গোলামটি সম্পূর্ণরূপে মুক্ত হয়ে যাবে। আর যদি তার নিকট ধন-সম্পদ না থাকে, সেক্ষেত্রে গোলামটিকে তার সামর্থ্যানুযায়ী শ্রমে খাটানো (কাজে) লাগানো হবে, বিনিময়ে পরিশোধসাপেক্ষে মুক্ত হয়ে যাবে। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ إِعْتَاقِ الْعَبْدِ الْمُشْتَرَكِ وَشِرَاءِ الْقَرِيْبِ وَالْعِتْقِ فِى الْمَرَضِ

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَنْ أَعْتَقَ شِقْصًا فِي عَبْدٍ أُعْتِقَ كُلُّهُ إِنْ كَانَ لَهُ مَالٌ فَإِنْ لَمْ يَكُنْ لَهُ مَالٌ اسْتَسْعَى الْبعد غير مشقوق عَلَيْهِ»

وعن أبي هريرة أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: «من أعتق شقصا في عبد أعتق كله إن كان له مال فإن لم يكن له مال استسعى البعد غير مشقوق عليه»

ব্যাখ্যা: ‘উলামারা হাদীসে (اسْتَسْعٰى) এর অর্থ বলেছেন যে, দাসকে অর্থ উপার্জনের সুযোগ দেয়া হবে যে দৈহিক পরিশ্রম করে অপর অংশীদারের অংশের মূল্য পরিমাণে উসূল করে নিজকে আযাদ করে নিবে। আবার কেউ বলেছেন, খিদমাত নেয়া তথা অংশের মূল্য পরিমাণ মালিকের খিদমাত বা পরিচর্যা করলে দেনা পরিশোধ হবে।
যৌথ মালিকাধীন ক্রীতদাসের কোনো একজন হয় অংশীদার নিজের অংশ আযাদ করে দেয় আর সে যদি সামর্থ্যবান হয় তাহলে ‘উলামারা এর হুকুমের ব্যাপারে মতানৈক্য করেছেন।

প্রথমতঃ এটা সহীহ শাফি‘ঈর মাযহাব। এ মতে ইবনু শুব্রম্নমাহ্, আওযা‘ঈ, ইবনু আবূ লায়লা, আবূ ইউসুফ, মুহাম্মাদ বিন হাসান এবং আহমাদ বিন হাম্বল ও কিছু মালিকীরা গেছেন যে, আযাদকারী অংশীদার অন্যান্য অংশীদারকে তাদের স্ব স্ব অংশ পরিমাণ মূল্য পরিশোধ করে গোলামটিকে সম্পূর্ণরূপে মুক্ত করে দিবে।

দ্বিতীয়তঃ মূল্য পরিশোধ না করে আযাদ করা যাবে না, এটা প্রসিদ্ধ মালিকী মাযহাব

তৃতীয়তঃ অংশীদারের ইচ্ছাধীন রয়েছে যে, ক্রীতদাসটিকে শ্রমে খাটিয়ে অংশের মূল্য পরিমাণে উসুল করে নিবে অথবা আর তার অংশটাও আযাদ করে দিবে। এটা আবূ হানীফাহ্-এর আভিমত।

চতুর্থতঃ সরকারী কোষাগার বাকী মূল্য পরিশোধ করবে- ইবনু সীরীন-এর মত। (শারহে মুসলিম ১০ম খন্ড, হাঃ ১৫০২)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৪: গোলাম মুক্তিকরণ (كتاب العتق) 14. Emancipation

পরিচ্ছেদঃ ১. প্রথম অনুচ্ছেদ - অংশীদারী গোলাম মুক্তি করা ও নিকটাত্মীয়কে ক্রয় করা এবং অসুস্থাবস্থায় গোলাম মুক্তি করা

৩৩৯০-[৩] ’ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক ব্যক্তি প্রাণ-ওষ্ঠাগত অবস্থায় তার ছয়টি গোলামকে মুক্ত করে দেয়। অথচ এ ছাড়া তার অন্য কোনো সহায়-সম্পদ ছিল না। এমতাবস্থায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সে গোলামদেরকে ডেকে পাঠালেন এবং তিন ভাগে বিভক্ত করলেন। অতঃপর লটারীর মাধ্যমে তাদের দু’জনকে মুক্ত করে দিলেন এবং চারজনকে গোলামরূপেই রেখে দিলেন। পরে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মুক্তিদানকারী ব্যক্তিকে কঠোর বাক্য বললেন। (মুসলিম)[1]

আর ইমাম নাসায়ী (রহঃ) উক্ত বর্ণনাকারী হতে বর্ণনা করেন যে, ’’কঠোর বাক্য’’ বলার স্থানে ’’আমার ইচ্ছা হয়েছিল যে, আমি তার জানাযার সালাত আদায় করব না’’ উল্লেখ করেছেন। আর আবূ দাঊদ-এর রিওয়ায়াতে আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ’’আমি যদি তার দাফন করার পূর্বে সেখানে থাকতাম, তাহলে তাকে মুসলিমদের কবরস্থানে দাফনকার্য করা হতো না।’’

بَابُ إِعْتَاقِ الْعَبْدِ الْمُشْتَرَكِ وَشِرَاءِ الْقَرِيْبِ وَالْعِتْقِ فِى الْمَرَضِ

وَعَن عمرَان بن حُصَيْن: أَنَّ رَجُلًا أَعْتَقَ سِتَّةَ مَمْلُوكِينَ لَهُ عِنْدَ مَوْتِهِ لَمْ يَكُنْ لَهُ مَالٌ غَيْرُهُمْ فَدَعَا بهم رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَجَزَّأَهُمْ أَثْلَاثًا ثُمَّ أَقْرَعَ بَيْنَهُمْ فَأَعْتَقَ اثْنَيْنِ وَأَرَقَّ أَرْبَعَةً وَقَالَ لَهُ قَوْلًا شَدِيدًا. رَوَاهُ مُسْلِمٌ وَرَوَاهُ النَّسَائِيُّ عَنْهُ وَذَكَرَ: «لَقَدْ هَمَمْتُ أَنْ لَا أُصَلِّيَ عَلَيْهِ» بَدَلَ: وَقَالَ لَهُ قَوْلًا شَدِيدًا وَفِي رِوَايَةِ أَبِي دَاوُدَ: قَالَ: «لَوْ شَهِدْتُهُ قَبْلَ أَنْ يُدْفَنَ لَمْ يُدْفَنْ فِي مَقَابِر الْمُسلمين»

وعن عمران بن حصين: أن رجلا أعتق ستة مملوكين له عند موته لم يكن له مال غيرهم فدعا بهم رسول الله صلى الله عليه وسلم فجزأهم أثلاثا ثم أقرع بينهم فأعتق اثنين وأرق أربعة وقال له قولا شديدا. رواه مسلم ورواه النسائي عنه وذكر: «لقد هممت أن لا أصلي عليه» بدل: وقال له قولا شديدا وفي رواية أبي داود: قال: «لو شهدته قبل أن يدفن لم يدفن في مقابر المسلمين»

ব্যাখ্যা: (قَوْلًا شَدِيدًا) কঠোর বাক্য ভৎর্সনা করলেন তার কাজটিকে অপছন্দ মনে করে এবং তার ওপর কঠোর হওয়ার জন্য। এ হাদীসের ব্যাখ্যা বর্ণনায় এভাবে এসেছে, (لَوْ عَلِمْنَا مَا صَلَّيْنَا عَلَيْهِ) আমরা যদি জানতাম তাহলে জানাযা আদায় করতাম না।

(لَا أُصَلِّىَ عَلَيْهِ) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উদ্দেশ্য হলো, তিনি একাই তার ওপর জানাযার সালাত আদায় করবেন না ধার্মিক স্বরূপ অন্যদের ওপর যে এরূপ করবে। (শারহে মুসলিম ১১শ খন্ড, হাঃ ১৬৬৮)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৪: গোলাম মুক্তিকরণ (كتاب العتق) 14. Emancipation

পরিচ্ছেদঃ ১. প্রথম অনুচ্ছেদ - অংশীদারী গোলাম মুক্তি করা ও নিকটাত্মীয়কে ক্রয় করা এবং অসুস্থাবস্থায় গোলাম মুক্তি করা

৩৩৯১-[৪] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোনো সন্তানই তার পিতার প্রতিদান (ঋণ পরিশোধ করতে) দিতে পারবে না। তবে হ্যাঁ, তার পিতা যদি কারো গোলামরূপে থাকে এবং সে ক্রয় করে মুক্ত করে দেয়। (মুসলিম)[1]

بَابُ إِعْتَاقِ الْعَبْدِ الْمُشْتَرَكِ وَشِرَاءِ الْقَرِيْبِ وَالْعِتْقِ فِى الْمَرَضِ

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا يَجْزِي وَلَدٌ وَالِده إِلَّا أَن يجده مَمْلُوكا فيشتر بِهِ فيعتقه» . رَوَاهُ مُسلم

وعن أبي هريرة قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «لا يجزي ولد والده إلا أن يجده مملوكا فيشتر به فيعتقه» . رواه مسلم

ব্যাখ্যা: সন্তানের ওপর পিতা-মাতার অধিকার বা ইহসান অপরিসীম আর তা কেবলমাত্র তাদেরকে আযাদ বা মুক্ত করার মাধ্যমে আদায় হয়। আর মতানৈক্য রয়েছে নিকটাত্মীয় মুক্তির ব্যাপারে যখন মালিকানা হলেই মুক্ত হবে না, চাই পিতা হোক বা সন্তান হোক বা অন্য কোনো নিকটত্মীয় হোক, বরং অবশ্যই মুক্ত করার সূচনা বা পরিবেশ করতে হবে। তারা উপরোক্ত হাদীসের ভাষ্যকে দলীল হিসেবে গ্রহণ করেছে।

আর জুমহূর ‘উলামাদের মতে, মালিকানা হলেই মুক্ত বলে বিবোচিত হবে। বাবা, মা, দাদা, দাদী যতই উপরে হোক এবং ছেলে, মেয়ে ও তাদের সন্তান ছেলে হোক মেয়ে হোক যতই নীচের স্তরে থাক না কেন চাই তারা মুসলিম হোক কাফির হোক নিকটস্থ হোক আর দুরস্থ হোক। (শারহে মুসলিম ১০ম খন্ড, হাঃ ১৫১০)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৪: গোলাম মুক্তিকরণ (كتاب العتق) 14. Emancipation

পরিচ্ছেদঃ ১. প্রথম অনুচ্ছেদ - অংশীদারী গোলাম মুক্তি করা ও নিকটাত্মীয়কে ক্রয় করা এবং অসুস্থাবস্থায় গোলাম মুক্তি করা

৩৩৯২-[৫] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক আনসারী সাহাবী তার একটি গোলামকে ’মুদাববার’ (মৃত্যুর পরে মুক্ত) করলেন। অথচ তার (একটি গোলাম ছাড়া) আর কোনো অর্থ-সম্পদ ছিল না। এমতাবস্থায় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট সংবাদ পৌঁছলে তিনি বললেন, কে আমার নিকট হতে এ গোলামটি ক্রয় করবে? তখন নু’আয়ম ইবনুন্ নাহহাম আটশত দিরহামের বিনিময়ে তাকে ক্রয় করলেন। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ إِعْتَاقِ الْعَبْدِ الْمُشْتَرَكِ وَشِرَاءِ الْقَرِيْبِ وَالْعِتْقِ فِى الْمَرَضِ

وَعَنْ جَابِرٍ: أَنَّ رَجُلًا مِنَ الْأَنْصَارِ دَبَّرَ مَمْلُوكًا وَلَمْ يَكُنْ لَهُ مَالٌ غَيْرُهُ فَبَلَغَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: «مَنْ يَشْتَرِيهِ مني؟» فَاشْتَرَاهُ نعيم بن النَّحَّامِ بِثَمَانِمِائَةِ دِرْهَمٍ. مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ. وَفِي رِوَايَةٍ لِمُسْلِمٍ: فَاشْتَرَاهُ نُعَيْمُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الْعَدَوِيُّ بثمانمائة دِرْهَم فجَاء بِهَا إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَدَفَعَهَا إِلَيْهِ ثُمَّ قَالَ: «ابْدَأْ بِنَفْسِكَ فَتَصَدَّقْ عَلَيْهَا فَإِنْ فَضَلَ شَيْءٌ فَلِأَهْلِكَ فَإِنْ فَضَلَ عَنْ أَهْلِكَ شَيْءٌ فَلِذِي قَرَابَتِكَ فَإِنْ فَضَلَ عَنْ ذِي قَرَابَتِكَ شَيْءٌ فَهَكَذَا وَهَكَذَا» يَقُولُ: فَبين يَديك وَعَن يَمِينك وَعَن شمالك

وعن جابر: أن رجلا من الأنصار دبر مملوكا ولم يكن له مال غيره فبلغ النبي صلى الله عليه وسلم فقال: «من يشتريه مني؟» فاشتراه نعيم بن النحام بثمانمائة درهم. متفق عليه. وفي رواية لمسلم: فاشتراه نعيم بن عبد الله العدوي بثمانمائة درهم فجاء بها إلى النبي صلى الله عليه وسلم فدفعها إليه ثم قال: «ابدأ بنفسك فتصدق عليها فإن فضل شيء فلأهلك فإن فضل عن أهلك شيء فلذي قرابتك فإن فضل عن ذي قرابتك شيء فهكذا وهكذا» يقول: فبين يديك وعن يمينك وعن شمالك

ব্যাখ্যা: تَدْبِيْرُ (তাদবীর) সংজ্ঞায় ইবনু হুমাম বলেনঃ কার্যাবলীর শেষ সময় পর্যন্ত ঢিল দেয়া। পারিভাষিক অর্থে মৃত্যুর পরে দাস মুক্ত হওয়া শর্ত জুড়ে দেয়া ‘আম্ভাবে মৃত্যুর পরেই মুক্ত।

হিদায়াহ্ প্রণেতা বলেন, যেমন মুনীর বলেনঃ (إِذَا مُتُّ فَأَنْتَ حُرٌّ) আমি মারা গেলে তুমি স্বাধীন, (أَوْ أَنْتَ حُرٌّ عَنْ دُبُرٍ) তুমি স্বাধীন আমার মৃত্যুর পরে। (أَوْ أَنْتَ مُدَبَّرٌ) তুমি মুদবির।

এ হাদীসের আলোকে শাফি‘ঈ মাযহাবের মতে মুনীবের মৃত্যুর পূর্বে মুদাববার গোলাম বিক্রয় বৈধ।

ইমাম আবূ হানীফাহ্, মালিক, জুমহূর ‘উলামায়ে এবং হিজাযী সালাফিয়া বলেন, মুদাববার গোলামকে বিক্রি করা বৈধ নয়। আর অত্র হাদীসে বিক্রি বিষয়টি মূলত নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিক্রি করেছিল মুদাববারকে তার মালিক ঋণগ্রস্ত ছিল। নাসায়ী ও দারাকুত্বনীতে এসেছে, أَنَّ النَّبِيَّ - عَلَيْهِ الصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ - قَالَ : (اقْضِ دَيْنَكَ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তুমি তোমার ঋণ পরিশোধ কর। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৪: গোলাম মুক্তিকরণ (كتاب العتق) 14. Emancipation

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - অংশীদারী গোলাম মুক্তি করা ও নিকটাত্মীয়কে ক্রয় করা এবং অসুস্থাবস্থায় গোলাম মুক্তি করা

৩৩৯৩-[৬] হাসান বসরী (রহঃ) সামুরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি তার কোনো নিকটাত্মীয়ের (ক্রয়, দান, ওয়াসিয়্যাত বা ওয়ারিস সূত্রে) মালিক হয়, তখন সাথে সাথেই সে মুক্ত হয়ে যাবে। (তিরমিযী, আবূ দাঊদ ও ইবনু মাজাহ)[1]

عَن الْحسن عَن سَمُرَة عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «من ملك ذَا رحم محرم فَهُوَ حُرٌّ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ وَابْنُ مَاجَه

عن الحسن عن سمرة عن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: «من ملك ذا رحم محرم فهو حر» . رواه الترمذي وأبو داود وابن ماجه

ব্যাখ্যা: (رِحْمٍ) মূলত সন্তান হওয়ার স্থান, এরপরে শব্দটি ব্যবহার হয়েছে নিকটস্থের জন্য। অতঃপর প্রয়োগ হয় তোমার এবং তার মাঝে এমন সম্পর্ক স্থাপন হয় যাতে বিবাহ হারাম হওয়া অপরিহার্য হয়। (مَحْرَمٍ) নিকটস্থের মধ্যে যার সাথে বিবাহ হারাম হয়, যেমন- পিতা, মাতা, ভাই, চাচা। (তুহফাতুল আহ্ওয়াযী ৪র্থ খন্ড, হাঃ ১৩৬৫)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ হাসান বাসরী (রহঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৪: গোলাম মুক্তিকরণ (كتاب العتق) 14. Emancipation

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - অংশীদারী গোলাম মুক্তি করা ও নিকটাত্মীয়কে ক্রয় করা এবং অসুস্থাবস্থায় গোলাম মুক্তি করা

৩৩৯৪-[৭] ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তির ঔরসে তার দাসী সন্তান প্রসব করে, সে ব্যক্তির মৃত্যুর পর অথবা পরে উক্ত দাসী মুক্ত হয়ে যাবে। (দারিমী)[1]

وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِذَا وَلَدَتْ أَمَةُ الرَّجُلِ مِنْهُ فَهِيَ مُعْتَقَةٌ عَنْ دُبُرٍ مِنْهُ أَوْ بَعْدَهُ» . رَوَاهُ الدَّارِمِيُّ

وعن ابن عباس عن النبي صلى الله عليه وسلم قال: «إذا ولدت أمة الرجل منه فهي معتقة عن دبر منه أو بعده» . رواه الدارمي

ব্যাখ্যা: মালিকের ঔরসে যে দাসীর গর্ভ হতে সন্তান জন্মলাভ করে ইসলামী পরিভাষায় তাকে উম্মুল ওয়ালাদ বলে। (عَنْ دُبُرٍ مِنْهُ) মৃত্যুর পরে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৪: গোলাম মুক্তিকরণ (كتاب العتق) 14. Emancipation

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - অংশীদারী গোলাম মুক্তি করা ও নিকটাত্মীয়কে ক্রয় করা এবং অসুস্থাবস্থায় গোলাম মুক্তি করা

৩৩৯৫-[৮] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আবূ বকর (রাঃ)-এর সময়ে উম্মুল আওলাদ (তথা মুনীবের সন্তানের মাকে) ক্রয়-বিক্রয় করেছি। কিন্তু ’উমার (রাঃ)-এর খিলাফাত সময়ে তিনি আমাদেরকে তা করা হতে নিষেধ করেন। অতঃপর আমরা তা থেকে বিরত রয়েছি। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْ جَابِرٍ قَالَ: بِعْنَا أُمَّهَاتِ الْأَوْلَادِ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَبِي بَكْرٍ فَلَمَّا كَانَ عُمَرُ نَهَانَا عَنْهُ فَانْتَهَيْنَا. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

وعن جابر قال: بعنا أمهات الأولاد على عهد رسول الله صلى الله عليه وسلم وأبي بكر فلما كان عمر نهانا عنه فانتهينا. رواه أبو داود

ব্যাখ্যা: মুনযিরী (রহঃ) বলেনঃ ইবনু মাজাহ্ ও নাসায়ীতে বর্ণিত, আবুয্ যুবায়র হতে, তিনি বলেন, আমরা উম্মুল ওয়ালাদ ক্রয় বিক্রয় করতাম তখন নাবী জীবিত ছিলেন, অথচ তিনি কোনো কিছু মনে করতেন না।

পূর্বের হাদীসে বলা হয়েছে, উম্মুল ওয়ালাদ ক্রয় বিক্রয় জায়িয নেই আর এ হাদীসগুলো তার বিপরীত। নিরসনে সম্ভবতঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যামানায় তাদের পক্ষ হতে হয়েছে, কিন্তু রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর গোচরে আসেনি। কেননা বিষয়টি খুবই স্বল্প সংখ্যক ছিল। অথবা উম্মুল আওলাদের ক্রয়-বিক্রয়ের বিষয়টি অন্যান্য গোলামের মতো যে যাদের ওপর মালিকানার আদান প্রদান হত এবং ব্যাপকহারে বেচাকেনা হত। সুতরাং বিষয়টি সুস্পষ্ট ছিল না, কোনটি খাস এবং ‘আম্।

অথবা এও সম্ভাবনা রয়েছে, প্রথম যুগে তা বৈধ ছিল, পরে তা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করেন আর বিষয়টি আবূ বাকর জানতে পারেননি, হতে পারে এর তাঁর স্বল্প সময়ের শাসনামলে এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি অথবা দীনের কাছে ও ধর্মচ্যুতদের যুদ্ধের কারণে। অতঃপর এটা হতে ‘উমার নিষেধ করলেন যখন এ ধরনের সংবাদ পৌঁছল আর তিনি নিষেধাজ্ঞার সংবাদ রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে পেয়েছেন, ফলে জনগণ এ থেকে বিরত হলো। (‘আওনুল মা‘বূদ ৭ম খন্ড, হাঃ ৩৯৪৯)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৪: গোলাম মুক্তিকরণ (كتاب العتق) 14. Emancipation

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - অংশীদারী গোলাম মুক্তি করা ও নিকটাত্মীয়কে ক্রয় করা এবং অসুস্থাবস্থায় গোলাম মুক্তি করা

৩৩৯৬-[৯] ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি তার গোলামকে মুক্ত করে এবং সেই গোলামের যদি অর্থ-সম্পদ থাকে তাহলে মালিক তার ঐ সম্পদের অধিকারী হবে। তবে মালিক যদি ভিন্ন কোনো শর্ত করে। (আবূ দাঊদ, ইবনু মাজাহ)[1]

وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ أَعْتَقَ عَبْدًا وَلَهُ مَالٌ فَمَالُ الْعَبْدِ لَهُ إِلَّا أَنْ يَشْتَرِطَ السَّيِّدُ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَابْنُ مَاجَهْ

وعن ابن عمر قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «من أعتق عبدا وله مال فمال العبد له إلا أن يشترط السيد» . رواه أبو داود وابن ماجه

ব্যাখ্যা: (فَمَالُ الْعَبْدِ) কাযী ‘ইয়ায বলেনঃ সম্পদকে দাসের দিকে সম্বন্ধযুক্ত ইখতেসাস তথা নির্দিষ্টের সম্বোধনযুক্ত মালিকানা সম্বোধনের ভিত্তিতে না। আর লাম্‘আতে রয়েছে, মালের সম্বন্ধ দাসের দিকে মালিকানার ভিত্তিতে নয়, বরং আয়ত্ত্বের দৃষ্টিতে। (لَه) তার জন্য সর্বনাম কোনদিকে গেছে, এ ব্যাপারে মতভেদ রয়েছে। কারও মতে দাসের দিকে, তবে অধিকাংশের মত হলো দাসকে মুক্তকারী।

(إِلَّا أَنْ يَشْتَرِطَ) তথা দাসের জন্য। আর ইবনু মাজার শব্দ (إِلَّا أَنْ يَشْتَرِط السَّيِّد مَاله فَيَكُون لَه) তবে যদি মুক্তি দানকারী প্রভু সে মাল গোলাম পাবে বলে শর্ত জুড়ে দেয় তাহলে তা তার জন্য। সিনদী (রহঃ) বলেনঃ (إِلَّا أَنْ يَشْتَرِط السَّيِّد) তথা গোলামের জন্য তা হবে মুক্তিদানকারী প্রভুর পক্ষ হতে অনুদান।

ইমাম মালিক ও দাঊদ এ হাদীস দ্বারা দলীল গ্রহণ দাসের মালিকানা অর্জিত হয় মুনীবের মালিকানা অর্পণের মাধ্যমে- এ মতে শাফি‘ঈ-এর পুরাতন মত।

অধিকাংশের মতে মুনীবের মালিকানা অর্পণের মাধ্যমে দাসের মালিকানা অর্জিত হয় না- শাফি‘ঈ-এর নতুন মত। এটাই সহীহ, যেমন হাদীসে এসেছে, (مَنْ اِبْتَاعَ عَبْدًا وَلَه مَال فَمَاله لِلْبَائِعِ إِلَّا أَنْ يَشْتَرِط الْمُبْتَاع) যে দাস ক্রয় করে আর যদি তার মাল থাকে সে মাল বিক্রেতার তথা মুনীবের তবে যদি ক্রেতা শর্ত করে।

খত্ত্বাবী বলেনঃ হামদান বিন সাহল ইবরাহীম নাখ‘ঈ হতে বর্ণনা করেন, যে মুনীব দাসমুক্ত করবে সম্পদ দাসেরই- এ হাদীস প্রমাণিত, তবে এর জওয়াব দেয়া হয়েছে দু’ ভাবে। প্রথমতঃ (فَمَال الْعَبْد لَه) সর্বনামটি কোনদিকে ব্যবহৃত হয়েছে। ব্যবহৃত হয়েছে মুক্তিদানকারীর দিকে আর তার শর্তটি দাসের জন্য অনুদান স্বরূপ।

দ্বিতীয়তঃ ‘উলামাদের ঐকমত্য হলো (لَا يَرِثهُ وَلَا يَمْلِكه) দাসকে উত্তরাধিকারী বানানো যাবে না এবং মালিকানাও করা যাবে না। (‘আওনুল মা‘বূদ ৭ম খন্ড, হাঃ ৩৯৫৭)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৪: গোলাম মুক্তিকরণ (كتاب العتق) 14. Emancipation

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - অংশীদারী গোলাম মুক্তি করা ও নিকটাত্মীয়কে ক্রয় করা এবং অসুস্থাবস্থায় গোলাম মুক্তি করা

৩৩৯৭-[১০] আবুল মালীহ (রহঃ) তাঁর পিতা হতে বর্ণনা করেন। একদিন জনৈক ব্যক্তি তার এক গোলামের কিয়দংশ মুক্ত করে দেয়। অতঃপর এতদসম্পর্কে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জানানো হলে তিনি বললেন, আল্লাহ তা’আলার কোনো শরীক নেই। এরপর গোলামটি পরিপূর্ণরূপে মুক্ত করার নির্দেশ করলেন। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَن الْمَلِيحِ عَنْ أَبِيهِ: أَنَّ رَجُلًا أَعْتَقَ شِقْصًا مِنْ غُلَامٍ فَذَكَرَ ذَلِكَ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: «لَيْسَ لِلَّهِ شَرِيكٌ» فَأَجَازَ عتقه. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

وعن المليح عن أبيه: أن رجلا أعتق شقصا من غلام فذكر ذلك للنبي صلى الله عليه وسلم فقال: «ليس لله شريك» فأجاز عتقه. رواه أبو داود

ব্যাখ্যা: (لَيْسَ لِلّٰهِ شَرِيكٌ) ‘‘আল্লাহর কোনো অংশীদার নেই’’ তাৎপর্য হলো দাস মুক্ত করা কেবলমাত্র আল্লাহরই জন্য। সুতরাং উচিত হবে সম্পূর্ণ গোলামটাকেই আযাদ করা এবং তাকে নিজের জন্য শরীক করবে না তথা কিছু অংশ মুক্ত করার পর অবশিষ্ট অংশটি গোলাম হিসেবে নিজের জন্য রেখে দিবে এমনটি করবে না। ত্বীবী (রহঃ) বলেনঃ মুনীব এবং দাস সৃষ্টিগতভাবে সবাই সমান, তবে আল্লাহ একে অপরের ওপর প্রাধান্য দিয়েছেন। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৪: গোলাম মুক্তিকরণ (كتاب العتق) 14. Emancipation

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - অংশীদারী গোলাম মুক্তি করা ও নিকটাত্মীয়কে ক্রয় করা এবং অসুস্থাবস্থায় গোলাম মুক্তি করা

৩৩৯৮-[১১] সাফীনাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি উম্মু সালামাহ্ (রাঃ)-এর গোলাম ছিলাম। (একদিন) তিনি আমাকে বললেন, আমি তোমাকে এ শর্তে মুক্তি দিতে চাই যে, তুমি যতদিন জীবিত থাকবে ততদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খিদমাত করবে। তখন আমি বললাম, আপনি এ শর্তারোপ না করলেও আমি যতদিন বেঁচে থাকব ততদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খিদমাত হতে দূরে থাকব না। অতঃপর তিনি আমাকে মুক্ত করে দিলেন এবং আমার ওপর উক্ত শর্তারোপ করলেন। (আবূ দাঊদ ও ইবনু মাজাহ)[1]

وَعَن سفينة قَالَ: كُنْتُ مَمْلُوكًا لِأُمِّ سَلَمَةَ فَقَالَتْ: أُعْتِقُكَ وَأَشْتَرِطُ عَلَيْكَ أَنْ تَخْدُمَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا عِشْتَ فَقُلْتُ: إِنْ لَمْ تَشْتَرِطِي عَلَيَّ مَا فَارَقْتُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا عِشْتُ فَأَعْتَقَتْنِي وَاشْتَرَطَتْ عَلَيَّ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَابْنُ مَاجَهْ

وعن سفينة قال: كنت مملوكا لأم سلمة فقالت: أعتقك وأشترط عليك أن تخدم رسول الله صلى الله عليه وسلم ما عشت فقلت: إن لم تشترطي علي ما فارقت رسول الله صلى الله عليه وسلم ما عشت فأعتقتني واشترطت علي. رواه أبو داود وابن ماجه

ব্যাখ্যা: নায়লুল আওত্বারে এসেছে, ‘আল্লামা শাওকানী এ হাদীস দ্বারা দালীল গ্রহণ করেছেন যে, শর্ত জুড়ে দিয়ে গোলাম আযাদ করা বৈধ। ইবনু রুশ্দ বলেনঃ মতানৈক্য হয়নি যখন মুনীব তার দাসকে আযাদ করে এ শর্তের ভিত্তিতে সে যেন কয়েক বছর তার খিদমাত করে আযাদ করা পরিপূর্ণ হবে না তার খিদমাত ব্যতিরেকে। শারহুস্ সুন্নাতে ইবনু রাসলান বলেনঃ এ ব্যাপারে মতানৈক্য রয়েছে ইবনু সিরীন অনুরূপ শর্তকে সাব্যস্ত করেছেন। (‘আওনুল মা‘বূদ ৭ম খন্ড, হাঃ ৩৯২৭)


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
বর্ণনাকারীঃ সাফীনাহ্ (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৪: গোলাম মুক্তিকরণ (كتاب العتق) 14. Emancipation

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - অংশীদারী গোলাম মুক্তি করা ও নিকটাত্মীয়কে ক্রয় করা এবং অসুস্থাবস্থায় গোলাম মুক্তি করা

৩৩৯৯-[১২] ’আমর ইবনু শু’আয়ব তাঁর পিতার মাধ্যমে দাদা হতে বর্ণনা করেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুকাতাব (বিনিময়কৃত চুক্তিবদ্ধ গোলাম) সেই পর্যন্ত গোলাম থাকবে, যে পর্যন্ত তার ওপর শর্তকৃত একটি দিরহামও অবশিষ্ট থাকবে। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «الْمُكَاتَبُ عَبْدٌ مَا بَقِيَ عَلَيْهِ مِنْ مُكَاتبَته دِرْهَم» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

وعن عمرو بن شعيب عن أبيه عن جده عن النبي صلى الله عليه وسلم قال: «المكاتب عبد ما بقي عليه من مكاتبته درهم» . رواه أبو داود

ব্যাখ্যা: ইবনুত্ তীন বলেনঃ মুকাতাবাহ্ ইসলামের পূর্বকাল হতে পরিচিত ছিল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিষয়টিকে অটুট রেখেছেন (আর মুকাতাবাহ্ হলো যেই ক্রীতদাস একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে নিজের মুক্তির জন্য তার প্রভুর সঙ্গে চুক্তিতে আবদ্ধ হয় এমন ক্রীতদাসকে ইসলামী পরিভাষায় বলা হয় মুকাতাব)। ইবনু ‘উমার বলেন, মুকাতাবাহ্ হলো এমন দাস যার ওপর লিখিত চুক্তির অংশ এখনও অবশিষ্ট হয়। অনুরূপ সংজ্ঞা ইবনুয্ যুবায়র ও সুলায়মান ইবনু ইয়াসার দিয়েছেন।

عَنْ سُلَيْمَان بْن يَسَار قَالَ اِسْتَأْذَنَتْ عَلٰى عَائِشَة فَعَرَفَتْ صَوْتِي فَقَالَتْ سُلَيْمَان فَقُلْت سُلَيْمَان فَقَالَتْ أَدَّيْت مَا بَقِيَ عَلَيْك مِنْ كِتَابَتك قُلْت نَعَمْ إِلَّا شَيْئًا يَسِيرًا

সুলায়মান ইবনু ইয়াসার বলেনঃ আমি অনুমতি চাইলাম ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর নিকট তিনি আমার আওয়াজ চিনতে পেরে বললেন, সুলায়মান? আমি বললাম, হ্যাঁ, আমি সুলায়মান। অতঃপর তিনি বললেন, তোমার চুক্তির কোনো অবশিষ্ট আছে কি? আমি বললাম, হ্যাঁ, সামান্য কিছু। তিনি বললেন, তুমি প্রবেশ কর কেননা তুমি এখনও দাস চুক্তিতে আবদ্ধ অংশ অবশিষ্ট রয়েছে। শাফি‘ঈ এবং সা‘ঈদ ইবনু মানসূর যায়দ বিন সাবিত হতে বর্ণিত, মুকাতাব হলো এমন দাস যার ওপর দিরহাম অবশিষ্ট রয়েছে।

খত্ত্বাবী বলেনঃ এ হাদীসটি জোরালো দলীল যারা মনে করেন মুকাতাব বিক্রি করা বৈধ।

কেননা যখন কেউ দাস হিসেবে থাকে সে মূলত দাসত্বের শৃঙ্খলে আবদ্ধ আর যখন প্রভুর মালিকানায় অবশিষ্ট রয়েছে তখন অন্যের জন্য মালিকানা হতে পারে না। হাদীসে দলীল হিসেবে সাব্যস্ত হয় মুকাতাব যদি মারা যায় তার পূর্ণ অংশ আদায়ের পূর্বে তাহলে সে মুক্তির আওতায় আসবে না তথা ক্রীতদাসের হুকুমেই থাকবে। কেননা সে মৃত্যুবরণ করেছে দাস অবস্থায় মৃতের পরে সে স্বাধীন হবে না এবং তার সম্পদ তার মুনীব গ্রহণ করবে। আর তার সন্তানেরা তার মুনীবেরই দাস হিসেবে থাকবে। (‘আওনুল মা‘বূদ ৭ম খন্ড, হাঃ ৩৯২১)


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৪: গোলাম মুক্তিকরণ (كتاب العتق) 14. Emancipation

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - অংশীদারী গোলাম মুক্তি করা ও নিকটাত্মীয়কে ক্রয় করা এবং অসুস্থাবস্থায় গোলাম মুক্তি করা

৩৪০০-[১৩] উম্মু সালামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে যদি কারো মুকাতাব গোলামের নিকট চুক্তিবদ্ধ আদায়যোগ্য অর্থ-সম্পদ থাকে, তখন অবশ্যই তার থেকে পর্দা করবে। (তিরমিযী, আবূ দাঊদ ও ইবনু মাজাহ)[1]

وَعَنْ أُمِّ سَلَمَةَ قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا كَانَ عِنْدَ مكَاتب إحداكن وَفَاء فلنحتجب مِنْهُ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ وَابْنُ مَاجَهْ

وعن أم سلمة قالت: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «إذا كان عند مكاتب إحداكن وفاء فلنحتجب منه» . رواه الترمذي وأبو داود وابن ماجه

ব্যাখ্যা : হাদীস প্রমাণ করে দু’টি মাসআলার উপর, প্রথম মুকাতাবের নিকট যদি পরিশোধ পরিমাণ সম্পদ থাকে তাহলে সে স্বাধীন হওয়ার হুকুমে চলে আসবে, ফলে তার সাথে তা মুনীব মহিলা পর্দা করবে যদিও মূল্য পরিশোধ করে না থাকে তবে এটা ‘আমর ইবনু শু‘আয়ব-এর হাদীসের বিরোধী। সমাধান নিরসনে ঈমাম শাফি‘ঈ বলেনঃ এটি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য খাস।

দ্বিতীয় ভাষ্যমতে দাসের জন্য তার মহিলা মুনীবের দিকে তাকানো বৈধ যতক্ষণ না মুকাতাব হবে আর যেটি কুরআনের বক্তব্য  أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ ‘‘স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাদী’’।

আরও দলীল প্রমাণ করে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বাণী :

لِفَاطِمَة رَضِيَ اللّٰه عَنْهَا لَمَّا تَقَنَّعَتْ بِثَوْبٍ وَكَانَتْ إِذَا قَنَّعَتْ رَأْسهَا لَمْ يَبْلُغ رِجْلَيْهَا وَإِذَا غَطَّتْ رِجْلَيْهَا لَمْ يَبْلُغ رَأْسهَا فَقَالَ النَّبِيّ ﷺ «لَيْسَ عَلَيْك بَأْس إِنَّمَا هُوَ أَبُوك وَغُلَامك

যখন ফাতিমা (রাঃ) এক কাপড় দিয়ে ঢাকছিলেন যখন মাথা ঢাকছিলেন কাপড় তার পা পর্যন্ত পৌঁছে না, আবার পা ঢাকছিলেন মাথা পর্যন্ত পৌঁছে না। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সমস্যা নেই তোমার সামনে তোমার পিতা এবং তোমার গোলাম।

এ মতের দিকে অধিকাংশ সালাফী ‘উলামারা গেছেন এবং ইমাম শাফি‘ঈ। তবে আবূ হানীফাহ্ (রহঃ)-এর মতে দাস বেগানা বা অপরিচিতের মতো। (‘আওনুল মা‘বূদ ৭ম খন্ড, হাঃ ৩৪২৩)


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
বর্ণনাকারীঃ উম্মু সালামাহ (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৪: গোলাম মুক্তিকরণ (كتاب العتق) 14. Emancipation

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - অংশীদারী গোলাম মুক্তি করা ও নিকটাত্মীয়কে ক্রয় করা এবং অসুস্থাবস্থায় গোলাম মুক্তি করা

৩৪০১-[১৪] ’আমর ইবনু শু’আয়ব তাঁর পিতার মাধ্যমে দাদা থেকে হতে বর্ণনা করেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি তার গোলামের সাথে একশত উকিয়্যাহ্’র (চল্লিশ দিরহামে এক উকিয়্যাহ্) বিনিময়ে মুক্তিপণ করেছে। কিন্তু দশ উকিয়্যাহ্ অথবা দশ দীনার বাকি রেখে পরিশোধে অক্ষম হয়ে গেল, তাহলে সে গোলামই থেকে গেল। (তিরমিযী, আবূ দাঊদ ও ইবনু মাজাহ)[1]

وَعَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: مَنْ كَاتَبَ عَبْدَهُ عَلَى مِائَةِ أُوقِيَّةٍ فَأَدَّاهَا إِلَّا عَشْرَ أَوَاقٍ أَوْ قَالَ: عَشْرَةَ دَنَانِيرَ ثُمَّ عَجَزَ فَهُوَ رَقِيقٌ . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ وَأَبُو دَاوُد وَابْن مَاجَه

وعن عمرو بن شعيب عن أبيه عن جده أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: من كاتب عبده على مائة أوقية فأداها إلا عشر أواق أو قال: عشرة دنانير ثم عجز فهو رقيق . رواه الترمذي وأبو داود وابن ماجه

ব্যাখ্যা: أوقية শব্দটি একবচন, বহুবচন أواقى। এক পূর্ব যুগ হতে পরিচিত এক উক্বিয়্যাহ্ সমান চল্লিশ দিরহাম। হাদীস দলীল হিসেবে প্রমাণ করে মুকাতাব বেচাকেনা বৈধ, কেননা সে দাস হিসেবেই সাব্যস্ত আর প্রত্যেক দাসই ক্রয়-বিক্রয় বৈধ। অধিকাংশেরই এটাই অভিমত। তবে ‘আলী, ইবনু ‘আব্বাস এবং ইবনু মাস্‘ঊদ (রাঃ) এর বিরোধিতা করেছেন। (‘আওনুল মা‘বূদ ৭ম খন্ড, হাঃ ৩৯২২)


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৪: গোলাম মুক্তিকরণ (كتاب العتق) 14. Emancipation
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ২০ পর্যন্ত, সর্বমোট ২৪ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে পাতা নাম্বারঃ 1 2 পরের পাতা »