পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - এ উম্মতের [উম্মতে মুহাম্মাদী (সা.)-এর] সাওয়াবের বিবরণ

৬২৮৭-[৫] জা’ফার তাঁর পিতার মাধ্যমে তাঁর দাদা হতে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) (সাহাবীগণকে লক্ষ্য করে) বলেছেন, সুসংবাদ গ্রহণ কর, সুসংবাদ গ্রহণ কর! আমার উম্মতের উপমা হলো মুষলধারে বৃষ্টির মতো। যার সম্পর্কে বলা যায় না, তার প্রথমাংশ শ্রেয় নাকি শেষাংশ? অথবা ঐ উদ্যানের মতো, একদল লোক এক বছর তা হতে ভোগ করল, অতঃপর আরেক দল লোক পরবর্তী বছর তা হতে ভোগ করল। এমনও তো হতে পারে, শেষে যারা ঐ বাগান হতে উপকৃত হয়েছে তারা বেশি প্রসার ও প্রভাব লাভ করবে, গুণাবলিতেও অধিক হবে। সে উম্মত কিভাবে ধ্বংস হতে পারে, যাদের প্রথমে রয়েছি আমি? মাঝে ইমাম মাহদী এবং শেষে মাসীহ ’ঈসা (আঃ)। অবশ্য তার মধ্যবর্তী সময়ে এমন বক্র দল প্রকাশ পাবে, আমার সাথে যাদের কোন সম্পর্ক নেই এবং আমিও তাদের সাথে সম্পর্কিত নই। (রযীন)

اَلْفصْلُ الثَّالِثُ (بَاب ثَوَاب هَذِه)

عَنْ جَعْفَرٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَبْشِرُوا إِنَّمَا مَثَلُ أُمَّتِي مَثَلُ الْغَيْثِ لَا يُدْرَى آخِرُهُ خَيْرٌ أَمْ أَوَّلُهُ؟ أَوْ كَحَدِيقَةٍ أُطْعِمَ مِنْهَا فَوْجٌ عَامًا لَعَلَّ آخِرَهَا فَوْجًا أَنْ يكون أعرَضَها عرضا وَأَعْمَقَهَا عُمْقًا وَأَحْسَنَهَا حُسْنًا كَيْفَ تَهْلِكُ أُمَّةٌ أَنَا أَوَّلُهَا وَالْمَهْدِيُّ وَسَطُهَا وَالْمَسِيحُ آخِرُهَا وَلَكِنْ بَين ذَلِك فَيْجٌ أَعْوَج لَيْسُوا وَلَا أَنا مِنْهُم» رَوَاهُ رزين

لم اجدہ ، رواہ رزین (لم اجدہ) و انظر الحدیث المقدم (3340) * و للحدیث شاھد منکر فی تاریخ دمشق (50 / 365 ، 5 / 380) سندہ مظلم (انظر الضعیفۃ للالبانی : 2349) ۔
(ضَعِيف)

عن جعفر عن ابيه عن جده قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم ابشروا انما مثل امتي مثل الغيث لا يدرى اخره خير ام اوله او كحديقة اطعم منها فوج عاما لعل اخرها فوجا ان يكون اعرضها عرضا واعمقها عمقا واحسنها حسنا كيف تهلك امة انا اولها والمهدي وسطها والمسيح اخرها ولكن بين ذلك فيج اعوج ليسوا ولا انا منهم رواه رزينلم اجدہ رواہ رزین لم اجدہ و انظر الحدیث المقدم 3340 و للحدیث شاھد منکر فی تاریخ دمشق 50 365 5 380 سندہ مظلم انظر الضعیفۃ للالبانی 2349 ۔ضعيف

ব্যাখ্যা: (لَا يُدْرَى آخِرُهُ خَيْرٌ أَمْ أَوَّلُهُ؟) এ হাদীসের প্রকাশ্য অর্থে বুঝা যায়, এতে এ সংশয় ও অনিশ্চয়তা আছে যে, প্রথম উম্মতেরা উত্তম না শেষ উম্মতেরা উত্তম। মূলত এখানে সমস্ত উম্মত উত্তম। যেমন সব বৃষ্টি উপকারী ও উত্তম হয়। কল্যাণ ও উপকারে সব সমান।
প্রথম দিকের উম্মতেরা নবী (সা.) -এর সান্নিধ্য লাভ করে ইসলামের প্রতি তাঁর আহ্বানে এবং দিক নির্দেশনায় তাঁর অনুসরণ করেছে। তাঁর দীনের মূলনীতিকে ভিত্তি হিসেবে গ্রহণ করেছে এবং নবী (সা.) -কে সাহায্য করেছে। আর পরবর্তীরা সে নীতিকে সমর্থন করে রক্ষা করেছে। তার কাঠামোকে পূর্ণতা দান করে তার রুকনগুলোকে প্রতিষ্ঠা করেছে। এর মশালকে উন্নত করে তার আলোকে ছড়িয়েছে এবং এর নিশানকে প্রকাশ করেছে।
(لَيْسُوامِنِّيْ) তারা আমার পথের পথিক নয়। (وَلَا أَنا مِنْهُم) আর আমি তাদের অন্তর্ভুক্ত নয়। অর্থাৎ আমি তাদের প্রতি সন্তুষ্ট নই, না আমি তাদের সাহায্য করব। বরং আমি তাদের যুলম পাপাচারিতার কারণে তাদের প্রতি নারাজ ও অসন্তুষ্ট। (মিশকাতুল মাসাবীহ - মুম্বাই ছাপা, ৫ম খণ্ড, পৃ. ২৯৯-৩০০)।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - এ উম্মতের [উম্মতে মুহাম্মাদী (সা.)-এর] সাওয়াবের বিবরণ

৬২৮৮-[৬] ’আমর ইবনু শু’আয়ব (রহিমাহুল্লাহ) তাঁর পিতা হতে, তিনি তাঁর দাদা হতে বর্ণনা করেন, একদিন রাসূলুল্লাহ (সা.) সাহাবায়ে কিরামকে প্রশ্ন করলেন, আল্লাহর সৃষ্টিকুলের মাঝে ঈমানের দিক দিয়ে কাকে তোমরা অধিক পছন্দ কর? তারা বললেন, মালায়িকা (ফেরেশতাদের)-কে। নবী (সা.) বললেন, তাঁরা ঈমান আনবে না কেন, তারা তো তাঁদের প্রভুর কাছেই আছেন। এবার সাহাবীগণ বললেন, তবে নবীগণ। তিনি (সা.) বললেন, তারা ঈমানদার হবে না কেন, তাঁদের ওপর তো ওয়াহী অবতীর্ণ হয়ে থাকে। এবার তারা বললেন, তবে আমরা। তিনি (সা.) বললেন, তোমরা ঈমান আনয়ন করবে না কেন, অথচ আমি তোমাদের মাঝে বিদ্যমান আছি। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, আমার কাছে ঈমানের দিক দিয়ে সবচেয়ে পছন্দনীয় ঐ সম্প্রদায়, যারা আমার পরে জন্মগ্রহণ করবে। যারা সহীফাহ্ (কুরআন) পাবে, এতে আল্লাহর যে সকল বিধাসমূহ লিপিবদ্ধ রয়েছে, তার ওপর তারা ঈমান আনবে।

اَلْفصْلُ الثَّالِثُ (بَاب ثَوَاب هَذِه)

وَعَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَيُّ الْخَلْقِ أَعْجَبُ إِلَيْكُمْ إِيمَانًا؟» قَالُوا: فالنبيون قَالَ: «ومالهم لَا يُؤْمِنُونَ وَالْوَحْيُ يَنْزِلُ عَلَيْهِمْ؟» قَالُوا: فَنَحْنُ. قَالَ: «ومالكم لَا تُؤْمِنُونَ وَأَنَا بَيْنَ أَظْهُرِكُمْ؟» قَالَ: فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِن أَعْجَبَ الْخَلْقِ إِلَيَّ إِيمَانًا لَقَوْمٌ يَكُونُونَ مِنْ بَعْدِي يَجِدُونَ صُحُفًا فِيهَا كِتَابٌ يُؤْمِنُونَ بِمَا فِيهَا»

اسنادہ ضعیف ، رواہ البیھقی فی دلائل النبوۃ (6 / 548) * و المغیرۃ بن قیس : ذکرہ ابن حبان فی الثقات (9 / 168) وقال ابو حاتم الرازی :’’ منکر الحدیث ‘‘ (الجرح و التعدیل 8 / 228) و الجرح فیہ مقد

وعن عمرو بن شعيب عن ابيه عن جده قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم اي الخلق اعجب اليكم ايمانا قالوا فالنبيون قال ومالهم لا يومنون والوحي ينزل عليهم قالوا فنحن قال ومالكم لا تومنون وانا بين اظهركم قال فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم ان اعجب الخلق الي ايمانا لقوم يكونون من بعدي يجدون صحفا فيها كتاب يومنون بما فيهااسنادہ ضعیف رواہ البیھقی فی دلاىل النبوۃ 6 548 و المغیرۃ بن قیس ذکرہ ابن حبان فی الثقات 9 168 وقال ابو حاتم الرازی منکر الحدیث الجرح و التعدیل 8 228 و الجرح فیہ مقد

ব্যাখ্যা: (أَيُّ الْخَلْقِ أَعْجَبُ) সৃষ্টিজীবের মধ্যে থেকে কাদের ঈমান অধিক উত্তম ও মজবুত উত্তরে সাহাবীগণ বললেন, মালাকের (ফেরেশতার) ঈমান। রাসূল (সা.) বলেন, কিভাবে তা হয় অথচ তারা আল্লাহ তা'আলার নিকটে অবস্থান করে তার বিস্ময়কর ও আশ্চর্যজনক বস্তু দেখেছে ও ঈমান এনেছে?
(قَالُوا: فالنبيون) তারা বললেন, রাসূল (সা.) বলেন, কিভাবে? তাদের ওপর ওয়াহী নাযিল হয়, তাঁদের নিকট রুহুল আমীন মালাক (ফেরেশতা) আগমন করেন। তাদের নিকটে বিনা মাধ্যমে আল্লাহর পয়গাম এসেছে। আল্লাহ তা'আলার প্রত্যক্ষ ও চাক্ষুষ ক্ষমতা দর্শন করেছেন।
(قَالُوا: فَنَحْنُ) তারা বললেন, আমাদের ঈমান। রাসূল (সা.) বলেন, তোমাদের মজবুত ঈমানের কি শান রয়েছে? অথচ তোমরা নুবুওয়্যাতের নিদর্শনাবলী এবং ঈমান ও ওয়াহীর প্রভাবকে একেবারে প্রত্যক্ষ করেছ।
(لَقَوْمٌ يَكُونُونَ مِنْ بَعْدِي) আমার পরে অর্থাৎ আমার মৃত্যুর পরে কিয়ামত পর্যন্ত আমার আনুগত্যকারীরা।
(يَجِدُونَ صُحُفًا) তারা পাবে কুরআন ও হাদীস যাতে দীনের বিধি-বিধান লিপিবদ্ধ রয়েছে।
(يُؤْمِنُونَ بِمَا فِيهَا) রসূলের মুখের হাদীসের খবর এবং কুরআনের বিভিন্ন অদৃশ্য সংবাদ শুনে দেখে না দেখে অদৃশ্য বস্তুর প্রতি ঈমান নিয়ে আসে। (মিশকাতুল মাসাবীহ - মুম্বাই ছাপা, ৫ম খণ্ড, পৃ. ৩০০)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - এ উম্মতের [উম্মতে মুহাম্মাদী (সা.)-এর] সাওয়াবের বিবরণ

৬২৮৯-[৭] ’আবদুর রহমান ইবনু ’আলা আল হাযরামী (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাকে এমন এক লোক বর্ণনা করেছেন, যিনি নবী (সা.) -কে বলতে শুনেছেন, তিনি (সা.) বলেছেন: অদূর ভবিষ্যতে এ উম্মতের শেষলগ্নে এমন এক সম্প্রদায়ের আগমন ঘটবে, যাঁদের ভালো ’আমলের সাওয়াব তাদের প্রথম যুগের লোকেদের বরাবর হবে। তাঁরা মানুষদেরকে ভালো কাজ করতে আদেশ করবেন এবং মন্দকাজ হতে বারণ করবেন। আর ফিতনাবাজদের সাথে যুদ্ধ করবেন। [উক্ত হাদীস দু’টি ইমাম বায়হাক্বী (রহিমাহুল্লাহ) “দালায়িলুন নুবুওয়্যাহ্” গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন]

اَلْفصْلُ الثَّالِثُ (بَاب ثَوَاب هَذِه)

وَعَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْعَلَاءِ الْحَضْرَمِيِّ قَالَ: حَدَّثَنِي مَنْ سَمِعَ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «إِنَّهُ سَيَكُونُ فِي آخِرِ هَذِهِ الْأُمَّةِ قَوْمٌ لَهُمْ مِثْلُ أَجْرِ أَوَّلِهِمْ يَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِ وَيُقَاتِلُونَ أَهْلَ الْفِتَنِ» رَوَاهُمَا الْبَيْهَقِيّ فِي دَلَائِل النُّبُوَّة

اسنادہ ضعیف ، رواہ البیھقی فی دلائل النبوۃ (6 / 513) * السند حسن الی عبد الرحمن بن العلاء الحضرمی و ذکرہ ابن حبان فی الثقات (5 / 100) وحدہ فھو مجھول الحال ۔
(ضَعِيف)

وعن عبد الرحمن بن العلاء الحضرمي قال حدثني من سمع النبي صلى الله عليه وسلم يقول انه سيكون في اخر هذه الامة قوم لهم مثل اجر اولهم يامرون بالمعروف وينهون عن المنكر ويقاتلون اهل الفتن رواهما البيهقي في دلاىل النبوةاسنادہ ضعیف رواہ البیھقی فی دلاىل النبوۃ 6 513 السند حسن الی عبد الرحمن بن العلاء الحضرمی و ذکرہ ابن حبان فی الثقات 5 100 وحدہ فھو مجھول الحال ۔ضعيف

ব্যাখ্যা: (مِثْلُ أَجْرِ أَوَّلِهِمْ) অর্থাৎ সাহাবীদের এবং নেকীর ন্যায়।
(وَيُقَاتِلُونَ أَهْلَ الْفِتَنِ) ফিতনাবাজদের সাথে যবান দিয়ে ও হাত দ্বারা যুদ্ধ করবে। ফিতনাবাজ থেকে উদ্দেশ্য হলো অত্যাচারী খারিজী, রাফিজী ও অন্যান্য বিদ'আতী লোক। (মিশকাতুল মাসাবীহ - মুম্বাই ছাপা, ৫ম খণ্ড, পৃ. ৩০১)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - এ উম্মতের [উম্মতে মুহাম্মাদী (সা.)-এর] সাওয়াবের বিবরণ

৬২৯০-[৮] আবূ উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: তাঁদের জন্য সুসংবাদ যাঁরা আমাকে দেখেছে (এবং ঈমান এনেছে) এবং সাতবার সুসংবাদ ঐ সকল লোকের জন্য, যারা আমাকে না দেখে আমার ওপর বিশ্বাস স্থাপন করেছে। (আহমাদ)।

নোটঃ وَطُوبَى سَبْعَ مَرَّاتٍ অর্থাৎ সাতবার সুসংবাদ এই অংশটুকু আমরা আমাদের নেয়া মুল আরবীতে পাইনি – হাদিসবিডি এডমিন

اَلْفصْلُ الثَّالِثُ (بَاب ثَوَاب هَذِه)

وَعَنْ أَبِي أُمَامَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «طُوبَى لِمَنْ رَآنِي [وَآمَنَ بِي] وَطُوبَى لِمَنْ لَمْ يَرَنِي وَآمَنَ بِي» . رَوَاهُ أَحْمد

سندہ ضعیف ، احمد (5 / 248 ح 22490 ، 5 / 257) * فیہ قتادۃ مدلس و عنعن عن ایمن بن مالک الاشعری ولہ طریق آخر ضعیف عند ابن حبان (الموارد : 2303) و حدیث ابن حبان (الموارد : 2302) بلفظ :’’ طوبی لمن رانی و آمن بی و طوبی ثم طوبی لمن آمن بی ولم یرنی ‘‘ و سندہ حسن فھو یغنی عنہ

وعن ابي امامة ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال طوبى لمن راني وامن بي وطوبى لمن لم يرني وامن بي رواه احمدسندہ ضعیف احمد 5 248 ح 22490 5 257 فیہ قتادۃ مدلس و عنعن عن ایمن بن مالک الاشعری ولہ طریق اخر ضعیف عند ابن حبان الموارد 2303 و حدیث ابن حبان الموارد 2302 بلفظ طوبی لمن رانی و امن بی و طوبی ثم طوبی لمن امن بی ولم یرنی و سندہ حسن فھو یغنی عنہ

ব্যাখ্যা: (وَطُوبَى سَبْعَ مَرَّاتٍ) এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো অধিক বুঝানো, সীমাবদ্ধকরণ নয়। এ হাদীসে নির্ধারিত সাত সংখ্যাকে শারী'আত প্রণেতা রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর জ্ঞানের উপর সোপর্দ করতে হবে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - এ উম্মতের [উম্মতে মুহাম্মাদী (সা.)-এর] সাওয়াবের বিবরণ

৬২৯১-[৯] আবূ মুহায়রীয (রহিমাহুল্লাহ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন আমি আবূ জুমু’আহ্ (রাঃ) নামক এক সাহাবীকে বললাম, আমাকে এমন একটি হাদীস বলুন, যা আপনি রাসূলুল্লাহ (সা.) হতে শুনেছেন। তিনি বললেন, হ্যাঁ, আমি তোমাকে খুবই চমৎকার একটি হাদীস বর্ণনা করব। একদিন আমরা রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর সাথে সকালের খানা খাচ্ছিলাম। আবূ উবায়দাহ্ ইবনুল জাররাহ (রাঃ)-ও আমাদের সাথে ছিলেন। তখন আবূ উবায়দাহ্ জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের চেয়েও কোন উত্তম লোক আছে কি? কেননা আমরা আপনার প্রতি ঈমান এনেছি এবং আপনার সঙ্গে থেকে জিহাদ করেছি। উত্তরে তিনি (সা.) বললেন, হ্যাঁ, তারা এমন এক কওম, যারা তোমাদের পরে দুনিয়াতে আসবে। আমার ওপর ঈমান আনবে, অথচ আমাকে তারা দেখেনি। [আহমাদ ও দারিমী, আর রযীন আবূ উবায়দাহ্ হতে (يَا رَسُولَ اللَّهِ. أَحَدٌ خَيْرٌ) হতে শেষ পর্যন্ত কথাটি বর্ণনা করেছেন]

اَلْفصْلُ الثَّالِثُ (بَاب ثَوَاب هَذِه)

وَعَن أبي مُحَيْرِيزٍ قَالَ: قُلْتُ لِأَبِي جُمُعَةَ رَجُلٌ مِنَ الصَّحَابَةِ: حَدِّثْنَا حَدِيثًا سَمِعْتُهُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. قَالَ: نَعَمْ أُحَدِّثُكُمْ حَدِيثًا جَيِّدًا تَغَدَّيْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَمَعَنَا أَبُو عُبَيْدَةَ بْنُ الْجَرَّاحِ فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ. أَحَدٌ خَيْرٌ منَّا؟ أسلمْنا وَجَاهَدْنَا مَعَكَ. قَالَ: «نَعَمْ قَوْمٌ يَكُونُونَ مِنْ بَعْدِكُمْ يُؤْمِنُونَ بِي وَلَمْ يَرَوْنِي» . رَوَاهُ أَحْمَدُ وَالدَّارِمِيُّ وَرَوَى رَزِينٌ عَنْ أَبِي عُبَيْدَةَ مِنْ قَوْلِهِ: قَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ. أَحَدٌ خَيْرٌ مِنَّا إِلى آخِره

حسن ، رواہ احمد (4 / 106 ح 17102) و الدارمی (2 / 308 ح 2747) و رزین (لم اجدہ) [و صححہ الحاکم (4 / 85) و وافقہ الذھبی و سندہ حسن] ۔
(صَحِيح)

وعن ابي محيريز قال قلت لابي جمعة رجل من الصحابة حدثنا حديثا سمعته من رسول الله صلى الله عليه وسلم قال نعم احدثكم حديثا جيدا تغدينا مع رسول الله صلى الله عليه وسلم ومعنا ابو عبيدة بن الجراح فقال يا رسول الله احد خير منا اسلمنا وجاهدنا معك قال نعم قوم يكونون من بعدكم يومنون بي ولم يروني رواه احمد والدارمي وروى رزين عن ابي عبيدة من قوله قال يا رسول الله احد خير منا الى اخرهحسن رواہ احمد 4 106 ح 17102 و الدارمی 2 308 ح 2747 و رزین لم اجدہ و صححہ الحاکم 4 85 و وافقہ الذھبی و سندہ حسن ۔صحيح

ব্যাখ্যা: (وَمَعَنَا أَبُو عُبَيْدَةَ بْنُ الْجَرَّاحِ) আবূ ‘উবায়দাহ্ ইবনু জাররাহ হলেন আশারায়ে মুবাশশারাহ এর অন্যতম একজন।
(أَحَدٌ خَيْرٌ منَّا؟) আমাদের সাথে যারা মিলিত হবে অথবা আমাদের পূর্ববর্তীদের মধ্য থেকে কিংবা পরবর্তীতে আসা লোকেরা আমাদের চাইতে উত্তম? যারা আপনার হাতে ইসলাম গ্রহণ করেছে এবং সংগ্রাম করেছে তাদের চাইতে। রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, তোমাদের পরবর্তী দল তোমাদের চাইতে উত্তম হবে, কারণ তারা আমাকে না দেখে ঈমান আনয়ন করবে। এ দৃষ্টিকোণ থেকে তারা তোমাদের চাইতে শ্রেষ্ঠ হবে। যদিও তোমরা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়, নিজ চোখে দেখাতে ও সংগ্রামে তাদের চাইতে তোমরাই উত্তম। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - এ উম্মতের [উম্মতে মুহাম্মাদী (সা.)-এর] সাওয়াবের বিবরণ

৬২৯২-[১০] মু’আবিয়াহ্ ইবনু কুররাহ্ (রাঃ) তাঁর পিতা হতে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: সিরিয়াবাসীগণ যখন ধ্বংস হয়ে যাবে, তখন আর তোমাদের মাঝে কোন কল্যাণ থাকবে না। আর আমার উম্মতের একদল লোক সর্বদা কিয়ামত অবধি শত্রুদের ওপর বিজয়ী থাকবে। যারা তাদের সাহায্য করবে না। তারা তাদের কোন ক্ষতি সাধন করতে পারবে না। ইবনুল মাদানী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, এঁরা হলেন মুহাদ্দিসীনের দল। ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং তিনি বলেছেন, হাদীসটি হাসান ও সহীহ

اَلْفصْلُ الثَّالِثُ (بَاب ثَوَاب هَذِه)

وَعَنْ مُعَاوِيَةَ بْنِ قُرَّةَ عَنْ أَبِيهِ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا فَسَدَ أَهْلُ الشَّامِ فَلَا خَيْرَ فِيكُمْ وَلَا يَزَالُ طَائِفَةٌ مِنْ أُمَّتِي مَنْصُورِينَ لَا يَضُرُّهُمْ مَنْ خَذَلَهُمْ حَتَّى تَقُومَ السَّاعَةُ» قَالَ ابْنُ الْمَدِينِيِّ: هُمْ أَصْحَابُ الْحَدِيثَ. رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ

اسنادہ صحیح ، رواہ الترمذی (2192) ۔
(صَحِيح)

وعن معاوية بن قرة عن ابيه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا فسد اهل الشام فلا خير فيكم ولا يزال طاىفة من امتي منصورين لا يضرهم من خذلهم حتى تقوم الساعة قال ابن المديني هم اصحاب الحديث رواه الترمذي وقال هذا حديث حسن صحيحاسنادہ صحیح رواہ الترمذی 2192 ۔صحيح

ব্যাখ্যা: (إِذَا فَسَدَ أَهْلُ الشَّامِ فَلَا خَيْرَ فِيكُمْ) অর্থাৎ, সেখানে বসে অবস্থান করাতে অথবা সে অভিমুখে যাত্রা করাতে কোন কল্যাণ নেই।
(طَائِفَةٌ) কুরতুবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, (الُ طَائِفَةٌ) বলতে একটি নির্দিষ্ট দলকে বুঝানো হয়েছে। নিহায়ায় বর্ণিত হয়েছে, (الُ طَائِفَةٌ مَنْصُورِينَ) হলো মানুষের একটি দল। এটি একজন ব্যক্তির ক্ষেত্রেও ব্যবহার হয়। যেন এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো খোদ এক শ্রেণি। (مَنْصُورِينَ) অর্থাৎ দীনের শত্রুদের ওপর বিজয়ী। (لَا يَضُرُّهُمْ مَنْ خَذَلَهُمْ) তাদেরকে সাহায্য সহযোগিতা না করাতে তাদের কোন ক্ষতি হবে না। কিয়ামত সংগঠিত হওয়া বলতে ইমাম নাবাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, কিয়ামত সন্নিকটে আসা পর্যন্ত। আর তা হলো (خريج الريح) তথা মৃদু হাওয়া বয়ে যাওয়া।
কুসত্বলানী (রহিমাহুল্লাহ) বুখারীর ব্যাখ্যায় বলেন, এ হাদীসটি মুসলিমে বর্ণিত আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ)-এর হাদীসের সাথে সাংঘর্ষিক বা পরস্পর বিরোধী। এর উত্তরে বলা যায় যে, সহীহ মুসলিমে বর্ণিত হাদীসে বলা হয়েছে, নিকৃষ্ট মানুষের ওপর কিয়ামত প্রতিষ্ঠিত হবে। এখানে (شرارالناس) থেকে উদ্দেশ্য হলো, তারা এমন মানুষ যারা একটি নির্দিষ্ট স্থানে অবস্থান করবে। অপর স্থানে থাকবে একদল যারা হকের পথে যুদ্ধ করবে। তবারানীতে আবূ উমামাহ্-এর হাদীসে আছে, জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রাসূল! তারা কোথায় থাকবে। উত্তরে তিনি (সা.) বললেন, তারা বায়তুল মাক্বদিসে থাকবে। যাদেরকে দাজ্জাল বের হয়ে ঘিরে ফেলবে। অতঃপর ‘ঈসা আলায়হিস সালাম নেমে আসবেন এবং দাজ্জালকে হত্যা করবেন। হতে পারে এটা হবে দাজ্জাল বের হওয়ার সময় অথবা ‘ঈসা আলায়হিস সালাম-এর মৃত্যুর পর যার পূর্বে এক হাওয়া বয়ে যাবে। যে হাওয়াতে যাদের মধ্যে বিন্দুমাত্র ঈমান রয়েছে তাদের কেউ অবশিষ্ট থাকবে না। প্রত্যেকে মৃত্যুবরণ করবে। শুধুমাত্র থাকবে পৃথিবীর নিকৃষ্ট মানুষেরা। তাদের ওপর কিয়ামত সংঘটিত হবে। এভাবেই মুসলিমমুক্ত পৃথিবী নিশ্চিত হবে। অধিকন্ত এ সম্মানিত দল থেকে তো বটেই। এভাবেই ফাতহুল বারীতে দুই হাদীসের মাঝে সমন্বয় সাধন করা হয়, যা গ্রহণে নির্ভরযোগ্য।
(أَضحَابُ الْحَدِيثَ) ইমাম বুখারী তাঁর সহীহ গ্রন্থে বলেন, তারা হলো (اهل العلم) অর্থাৎ ‘আলিম উলামা।
‘আল্লামাহ্ হাফিয (রহিমাহুল্লাহ) তাঁর (الفتح) গ্রন্থে বলেন, হাকাম ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বাল (রহিমাহুল্লাহ) থেকে সহীহ সনদে উলূমুল হাদীসে বলেন, (إِنْ لَمْ يَكُونُواأَهْلَ الْحَدِيثِ فَلَا أَدُرِي مَنْ هُمْ) অর্থাৎ এ দল যদি আহলে হাদীস না হয়, তাহলে আমার জানা নেই তারা কারা।
কাযী ইয়ায (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, মূলত ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বাল (রহিমাহুল্লাহ)-এর দ্বারা আহলে হাদীস আদর্শের অনুসারী বা তাদের আক্বীদায় বিশ্বাসীদেরকে এবং আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামা'আতকে বুঝাতে চেয়েছেন। ইমাম নবাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, হতে পারে এরা মু'মিনদের বিভিন্ন দল। যাদের মধ্যে বীর যোদ্ধা, ফাক্বীহ, মুহাদ্দিস, দুনিয়াত্যাগী সৎকাজের নির্দেশ দাতা ও মন্দ কাজের নিষেধকারী রয়েছে। আরো বিভিন্ন প্রকার কল্যাণকামী দল তাদের একত্রিত থাকা আবশ্যক নয়। বরং তারা পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্ত থাকবে। (তুহফাতুল আহওয়াযী - “জামিউল কিতাবিত তিস্'আহ” এ্যাপ, হা, ২১৯২)
(حَتَّى تَقُومَ السَّاعَةُ) কিয়ামত সংগঠিত হওয়া পর্যন্ত। অর্থাৎ কিয়ামত নিকটে চলে আসবে। আসহাবুল হাদীস অর্থাৎ হাদীসের অনুসারীদের একটি দল কিয়ামত পর্যন্ত কুরআন ও হাদীসের পথে কায়িম থাকবে, মানুষেরা তাদের প্রতি শত্রুতা পোষণ করবে। কিন্তু তাদের শত্রুতায় কোনই ক্ষতি হবে না। কিয়ামত পর্যন্ত এ দল কায়িম থাকবে এমনকি ইমাম মাহদীর সাথে মিলিত হবে। (মিশকাতুল মাসাবীহ - মুম্বাই ছাপা, ৫ম খণ্ড, পৃ. ৩০২)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - এ উম্মতের [উম্মতে মুহাম্মাদী (সা.)-এর] সাওয়াবের বিবরণ

৬২৯৩-[১১] ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: আল্লাহ তা’আলা আমার উম্মতের ভুল-ভ্রান্তিসমূহ ক্ষমা করে দিয়েছেন এবং সে কাজটিও ক্ষমা করে দিয়েছেন, যে কাজটি তাদের দ্বারা জোরপূর্বক করানো হয়। (ইবনু মাজাহ ও বায়হাক্বী)

اَلْفصْلُ الثَّالِثُ (بَاب ثَوَاب هَذِه)

وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِنَّ اللَّهَ تَجَاوَزَ عَنْ أُمَّتِي الْخَطَأَ وَالنِّسْيَانَ وَمَا اسْتُكْرِهُوا عَلَيْهِ» . رَوَاهُ ابْن مَاجَه وَالْبَيْهَقِيّ

صحیح ، رواہ ابن ماجہ (2043) و البیھقی فی السنن الکبری (7 / 356) ۔
(صَحِيح لطرقه)

وعن ابن عباس ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال ان الله تجاوز عن امتي الخطا والنسيان وما استكرهوا عليه رواه ابن ماجه والبيهقيصحیح رواہ ابن ماجہ 2043 و البیھقی فی السنن الکبری 7 356 ۔صحيح لطرقه

ব্যাখ্যা: ইবনু মাজাহ এ হাদীসের উপর বাধ্য ও ভুলকারী ব্যক্তির ত্বলাক্ব শিরোনামে অধ্যায় রচনা করেছেন। তিনি বলেন, (باب طلاق المكره والناسى) অতঃপর এ হাদীসকে উল্লেখ করেন। এ হাদীস থেকে বুঝা গেল যে, বাধ্য ও ভুলকারী ব্যক্তিকে আল্লাহ তা'আলা ক্ষমা করেন। দুনিয়াবী ক্ষেত্রেও তা ক্ষমার্হ। ভুলক্রমে তালাক দিলে অথবা বাধ্য হয়ে ত্বলাক্ব দিলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না। অনুরূপভাবে ভুলক্রমে ঘটে গেলেও। যেমন, মুখে আলহামদুলিল্লা-হ বলার ইচ্ছা করেছে, কিন্তু বের হয়েছে (انتطالق) এক্ষেত্রেও তালাক হবে না। যারা ভুল-ক্রটিকেও ত্বলাক পড়ার পক্ষে মতামত দেন, তাদের সিদ্ধান্ত এ হাদীসের আলোকে সঠিক নয়। (মিশকাতুল মাসাবীহ - মুম্বাই ছাপা, ৫ম খণ্ড, পৃ. ৩০২)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - এ উম্মতের [উম্মতে মুহাম্মাদী (সা.)-এর] সাওয়াবের বিবরণ

৬২৯৪-[১২] বাহয ইবনু হাকীম (রহিমাহুল্লাহ) তাঁর পিতা হতে, তিনি তাঁর দাদা হতে বর্ণনা করেছেন, তিনি রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছেন যে, তিনি আল্লাহর কালাম (كُنْتُمْ خير أُمَّةٍ أًّخرجت للنَّاس) “তোমরাই সর্বোত্তম উম্মত, মানবজাতির (সর্বাত্মক কল্যাণের জন্য তোমাদের আবির্ভাব হয়েছে...”- (সূরাহ আ-লি ইমরান ৩: ১১০); এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেছেন, তোমরাই সত্তরতম উম্মতকে পরিপূর্ণ করলে। তোমরাই সকল উম্মতের মাঝে আল্লাহ তা’আলার দৃষ্টিতে সর্বোত্তম ও মর্যাদাবান উম্মত। [তিরমিযী, ইবনু মাজাহ ও দারিমী এবং ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, হাদীসটি হাসান]

اَلْفصْلُ الثَّالِثُ (بَاب ثَوَاب هَذِه)

وَعَنْ بَهْزِ بْنِ حَكِيمٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ فِي قَوْلِهِ تَعَالَى: [كُنْتُمْ خير أُمَّةٍ أًّخرجت للنَّاس] قَالَ: «أَنْتُمْ تُتِمُّونَ سَبْعِينَ أُمَّةً أَنْتُمْ خَيْرُهَا وَأَكْرَمُهَا عَلَى اللَّهِ تَعَالَى» رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَالدَّارِمِيُّ وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ: هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ

اسنادہ حسن ، رواہ الترمذی (3001) و ابن ماجہ (4288) و الدارمی (2 / 313 ح 2763) ۔
(حسن)

وعن بهز بن حكيم عن ابيه عن جده انه سمع رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول في قوله تعالى كنتم خير امة اخرجت للناس قال انتم تتمون سبعين امة انتم خيرها واكرمها على الله تعالى رواه الترمذي وابن ماجه والدارمي وقال الترمذي هذا حديث حسناسنادہ حسن رواہ الترمذی 3001 و ابن ماجہ 4288 و الدارمی 2 313 ح 2763 ۔حسن

ব্যাখ্যা: (تُتِمُّونَ سَبْعِينَ أُمَّةً) অর্থাৎ তোমাদের দ্বারা সত্তর সংখ্যা পূর্ণ হবে। মানাবী বলেন, এর দ্বারা আধিক্যতা বুঝানো হয়েছে। ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, সত্তর সংখ্যা থেকে উদ্দেশ্য হলো অধিক সংখ্যক। সীমিত অর্থে নয়। কারণ, (الْخَيْرِ) শব্দটিকে (نكره مفرد) তথা অনির্দিষ্ট এককের প্রতি (إِضَافَةَ) (সম্বন্ধ) করা হয়েছে। যেহেতু সীমাবদ্ধ সংখ্যার দিক থেকে বাকী থাকা উম্মত হিসেবে তারা এর পুরোপুরি অন্তর্ভুক্ত। এর অর্থ হলো যখন পূর্ববর্তী উম্মত কম হয়েছে তখন তোমরা হয়েছ (শ্রেষ্ঠ উম্মত)। আর শ্রেষ্ঠত্বের কারণকে তোমরাই পূর্ণ করেছ। কারণ এ থেকে উদ্দেশ্য হলো সর্বশেষ আগমন করা যেমন তোমাদের নবী হলেন সর্বশেষ নবী। তেমনিভাবে তোমরা হলে সর্বশেষ উম্মত। আল্লাহ তা'আলার বাণী (کُنۡتُمۡ خَیۡرَ اُمَّۃٍ) থেকে উদ্দেশ্য হাদীস থেকে বুঝা গেল তারা হলো নবী (সা.) -এর সমস্ত উম্মত।
হাফিয ইবনু কাসীর (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, এ উম্মতে মুহাম্মাদী সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, তারাই শ্রেষ্ঠ উম্মত। মহান আল্লাহ বলেন, (کُنۡتُمۡ خَیۡرَ اُمَّۃٍ اُخۡرِجَتۡ لِلنَّاسِ) অর্থাৎ “তোমরাই শ্রেষ্ঠ উম্মত যাদের উত্থান ঘটেছে মানব জাতির জন্য...”- (সূরাহ্ আলি ‘ইমরান ৩: ১১০)।
ইমাম বুখারী (রহিমাহুল্লাহ) এ আয়াতের ব্যাখ্যায় আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)-এর হাদীস বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, মানব জাতির নিকটে তোমরা উত্তম জাতি। তোমরা তাদেরকে দলে দলে দাওয়াত দিয়ে নিয়ে এসেছ। তাই তারা ইসলামের ছায়ায় দাখিল হয়েছে। অনুরূপভাবে ইবনু আব্বাস, মুজাহিদ, ‘আতিয়্যাহ্ আল আওফী, ইকরিমাহ্, ‘আত্বা, রবী ইবনু আনাস প্রমুখ সাহাবীগণ এ আয়াতে ব্যাখ্যায় বলেন, তারা হলো শ্রেষ্ঠ জাতি এবং মানুষের মধ্যে সর্বাধিক উপকারী। কারণ, আল্লাহ বলেন, (تَاۡمُرُوۡنَ بِالۡمَعۡرُوۡفِ وَ تَنۡهَوۡنَ عَنِ الۡمُنۡکَرِ وَ تُؤۡمِنُوۡنَ بِاللّٰهِ) “...তোমরা সৎকাজের আদেশ দাও এবং অসৎকাজ হতে নিষেধ কর ও আল্লাহর প্রতি ঈমান রক্ষা করে চল..."- (সূরাহ আ-লি ইমরান ৩:১১০)।
আহমাদ (রহিমাহুল্লাহ) তাঁর মুসনাদে, নাসায়ী (রহিমাহুল্লাহ) তাঁর সুনানে, হাকিম তার ‘মুসতাদরাকে এই আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, এ থেকে উদ্দেশ্য হলো, যারা রাসূল (সা.) -এর সাথে মক্কাহ্ থেকে মদীনায় হিজরত করেছে। তবে সঠিক কথা হলো, সাধারণত এ আয়াত প্রত্যেক যুগের সব উম্মতের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। তন্মধ্যে শ্রেষ্ঠ যুগ হলো, যাদের মাঝে রাসূল (সা.) প্রেরিত হয়েছেন। অতঃপর পরের যুগ, তার পরবর্তী যুগ। যেমন অন্যত্র আল্লাহ তা'আলা বলেন, (وَ کَذٰلِکَ جَعَلۡنٰکُمۡ اُمَّۃً وَّسَطًا) “আর এভাবে আমি তোমাদেরকে মধ্যপন্থী উম্মত করেছি...”- (সূরা আল বাক্বারাহ ২: ১৪৩); অর্থাৎ- শ্রেষ্ঠত্ব।
মূলত এ উম্মত তাঁদের নবী (সা.) -এর মাধ্যমে কল্যাণের দিকে অগ্রবর্তীতা অর্জন করেছে। কারণ, তিনি আল্লাহর সেরা সৃষ্টি এবং আল্লাহর নিকটে সর্বাধিক সম্মানিত রাসূল। তাঁকে আল্লাহ মহান পূর্ণ শারী'আত দিয়ে পাঠিয়েছেন। যা পূর্বের কোন নবী বা রাসূল-কে দেননি। তাঁর পথ ও পদ্ধতির উপর আমল কম সংখ্যকরা করেছে। যে স্থানে অন্যদের ‘আমল বেশি ছিল না। ইবনু কাসীর-এর আলোচনা সংক্ষেপে এ পর্যন্তই। (তুহফাতুল আহওয়াযী হা. ৩০০১, “জামি'উল কিতাবিস্ তিস্'আহ” এ্যাপ)


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৮ পর্যন্ত, সর্বমোট ৮ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে