পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - উমার ফারূক (রাঃ)-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য

৬০৫০-[১৭] আনাস এবং ইবনু উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। “উমার (রাঃ) বলেছেন, তিনটি বিষয়ে আমার সিদ্ধান্ত আমার প্রভুর সিদ্ধান্তের অনুরূপ হয়েছে-
১. আমি বলেছিলাম, হে আল্লাহর রাসূল! ইবরাহীম আলায়হিস সালাম-এর স্থানটিকে আমরা যদি সালাতের জন্য নির্ধারণ করে নিতাম। তখন অবতীর্ণ হলো (وَ اتَّخِذُوۡا مِنۡ مَّقَامِ اِبۡرٰهٖمَ مُصَلًّی) “সালাত আদায় করার জন্য ইব্রাহীম-এর দাঁড়ানোর স্থানটিকে তোমরা সালাতের জন্য নির্ধারণ করে নাও” (সূরা আল বাক্বারাহ ২: ১২৫)।
২. আমি বলেছিলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আপনার স্ত্রীদের ঘরে নেককার ও বদকার হরেক রকমের লোক আসে। তাই আপনি যদি তাদেরকে পর্দা করার আদেশ করতেন। এর পর পরই পর্দার আয়াত নাযিল হলো।
৩. একবার নবী (সা.) -এর স্ত্রীগণ আত্মাবশানবশত এক জোট হয়েছিলেন। তখন আমি বললাম, তোমরা নিজ আচরণ বর্জন কর, অন্যথায় যদি নবী (সা.) তোমাদেরকে তালাক দিয়ে দেন, তবে শীঘ্রই তাঁর প্রভু তোমাদের পরিবর্তে তোমাদের চেয়েও উত্তম স্ত্রী তাঁকে প্রদান করতে পারেন। তার পর পরই অনুরূপ আয়াত অবতীর্ণ হলো।”

اَلْفصْلُ الثَّالِثُ ( بَاب مَنَاقِب عمر)

عَن أنس وَابْن عمر أَن عمر قَالَ: وَافَقْتُ رَبِّي فِي ثَلَاثٍ: قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ لَوِ اتَّخَذْنَا مِنْ مَقَامِ إِبْرَاهِيمَ مُصَلًّى؟ فَنَزَلَتْ [وَاتَّخِذُوا مِنْ مَقَامِ إِبْرَاهِيمَ مُصَلًّى] . وَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ يَدْخُلُ عَلَى نِسَائِكَ الْبَرُّ وَالْفَاجِرُ فَلَوْ أَمَرْتَهُنَّ يَحْتَجِبْنَ؟ فَنَزَلَتْ آيَةُ الْحِجَابِ وَاجْتَمَعَ نِسَاءُ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الْغَيْرَةِ فَقُلْتُ [عَسَى رَبُّهُ إِنْ طلَّقكنَّ أَن يُبدلهُ أَزْوَاجًا خيرا منكنَّ] فَنزلت كَذَلِك

رواہ البخاری (402 ، 4483) [و احمد (1 / 23)] ۔
(مُتَّفق عَلَيْهِ)

عن أنس وابن عمر أن عمر قال: وافقت ربي في ثلاث: قلت: يا رسول الله لو اتخذنا من مقام إبراهيم مصلى؟ فنزلت [واتخذوا من مقام إبراهيم مصلى] . وقلت: يا رسول الله يدخل على نسائك البر والفاجر فلو أمرتهن يحتجبن؟ فنزلت آية الحجاب واجتمع نساء النبي صلى الله عليه وسلم في الغيرة فقلت [عسى ربه إن طلقكن أن يبدله أزواجا خيرا منكن] فنزلت كذلك

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - উমার ফারূক (রাঃ)-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য

৬০৫১-[১৮] ইবনু উমার (রাঃ)-এর এক বর্ণনাতে আছে, প্রভুর সাথে ঐকমত্য হয়েছি- ১. মাকামে ইবরাহীম-এর ব্যাপারে। ২. পর্দার ব্যাপারে। ৩. বদরের কয়েদিদের ব্যাপারে। (বুখারী ও মুসলিম)

اَلْفصْلُ الثَّالِثُ ( بَاب مَنَاقِب عمر)

وَفِي رِوَايَةٍ لِابْنِ عُمَرَ قَالَ: قَالَ عُمَرُ: وَافَقْتُ رَبِّي فِي ثَلَاثٍ: فِي مَقَامِ إِبْرَاهِيمَ وَفِي الْحِجَابِ وَفِي أُسَارَى بَدْرٍ. مُتَّفق عَلَيْهِ

متفق علیہ ، رواہ البخاری (لم اجدہ) و مسلم (24 / 2399)، (6206) ۔
(مُتَّفق عَلَيْهِ)

وفي رواية لابن عمر قال: قال عمر: وافقت ربي في ثلاث: في مقام إبراهيم وفي الحجاب وفي أسارى بدر. متفق عليه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - উমার ফারূক (রাঃ)-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য

৬০৫২-[১৯] ইবনু মাস্’ঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, চারটি বিশেষ কারণে ’উমার ইবনুল খত্ত্বাব সকল মানুষের ওপর সম্মানপ্রাপ্ত হয়েছেন।
১. বদর যুদ্ধের বন্দীদের আলোচনা প্রসঙ্গে তাদের তিনি হত্যা করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। এরপর এ আয়াত অবতীর্ণ হলো (আয়াতের অনুবাদ) যদি আগে থেকে আল্লাহর কাছে তা লেখা না থাকত, তাহলে যে বিনিময় গ্রহণ করেছ, তজ্জন্য তোমরা কঠিন ’আযাবে লিপ্ত হতে।
২. পর্দার ব্যাপারে তিনি নবী (সা.) -এর বিবিগণকে পরামর্শ দিয়েছিলেন, তারা যেন পর্দা মেনে চলে। তা শুনে নবী (সা.) পত্নী যায়নাব (রাঃ) বলে উঠলেন, হে খত্ত্বাব-এর পুত্র! তুমি আমাদের ওপর পর্দার আদেশ জারি করছ, অথচ আমাদের ঘরেই ওয়াহী অবতীর্ণ হয়। অতঃপর আল্লাহ তা’আলা অবতীর্ণ করলেন (আয়াতের অনুবাদ) “হে মানুষ! তোমরা যখন নবীর স্ত্রীদের নিকট হতে কোন জিনিস চাবে, তখন আড়ালে থেকে চাবে।
৩. ’উমার -এর জন্য নবী (সা.) দু’আ করেন, হে আল্লাহ! ’উমার-এর দ্বারা ইসলামকে শক্তিশালী কর।
৪. আবূ বকর (রাঃ)-এর খিলাফত সম্পর্কে তাঁর (’উমার-এর) অভিমত এবং তিনিই সর্বপ্রথম লোক, যিনি তাঁর হাতে বায়’আত গ্রহণ করেছেন। (আহমাদ)

اَلْفصْلُ الثَّالِثُ ( بَاب مَنَاقِب عمر)

وَعَن ابْن مَسْعُود قَالَ: فُضِّلَ النَّاسَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ بِأَرْبَعٍ: بِذِكْرِ الْأُسَارَى يَوْمَ بَدْرٍ أَمَرَ بِقَتْلِهِمْ فَأَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَى [لَوْلَا كِتَابٌ مِنَ اللَّهِ سَبَقَ لَمَسَّكُمْ فِيمَا أَخَذْتُم عَذَاب عَظِيم] وَبِذِكْرِهِ الْحِجَابَ أَمَرَ نِسَاءَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ يَحْتَجِبْنَ فَقَالَتْ لَهُ زَيْنَبُ: وَإِنَّكَ عَلَيْنَا يَا ابْنَ الْخَطَّابِ وَالْوَحْيُ يَنْزِلُ فِي بُيُوتِنَا؟ فَأَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَى [وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعا فَاسْأَلُوهُنَّ من وَرَاء حجاب] وَبِدَعْوَةِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «اللَّهُمَّ أَيِّدِ الْإِسْلَامَ بِعُمَرَ» وَبِرَأْيِهِ فِي أَبِي بَكْرٍ كَانَ أول نَاس بَايعه. رَوَاهُ أَحْمد

اسنادہ ضعیف ، رواہ احمد (1 / 456 ح 3662) * فیہ ابو نھشل : مجھول و ابو النضر ھاشم بن القاسم سمع من المسعودی بعد اختلاطہ ۔
(ضَعِيف)

وعن ابن مسعود قال: فضل الناس عمر بن الخطاب بأربع: بذكر الأسارى يوم بدر أمر بقتلهم فأنزل الله تعالى [لولا كتاب من الله سبق لمسكم فيما أخذتم عذاب عظيم] وبذكره الحجاب أمر نساء النبي صلى الله عليه وسلم أن يحتجبن فقالت له زينب: وإنك علينا يا ابن الخطاب والوحي ينزل في بيوتنا؟ فأنزل الله تعالى [وإذا سألتموهن متاعا فاسألوهن من وراء حجاب] وبدعوة النبي صلى الله عليه وسلم: «اللهم أيد الإسلام بعمر» وبرأيه في أبي بكر كان أول ناس بايعه. رواه أحمد

হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - উমার ফারূক (রাঃ)-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য

৬০৫৩-[১৯] আবূ সাঈদ আল খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: জান্নাতের মাঝে ঐ লোকের মর্যাদাই হবে আমার উম্মতের সকলের ওপরে। আবূ সাঈদ (রাঃ) বলেন, আল্লাহর শপথ! ঐ ব্যক্তি দ্বারা আমরা ’উমার ইবনুল খাত্তাব ছাড়া অন্য কাউকেও ধারণা করতাম না। এমনকি তাঁর মৃত্যু অবধি আমাদের (সাহাবীদের) মাঝে এ ধারণা বিদ্যমান ছিল। (ইবনু মাজাহ)

اَلْفصْلُ الثَّالِثُ ( بَاب مَنَاقِب عمر)

وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «ذَاكَ الرَّجُلُ أَرْفَعُ أُمَّتِي دَرَجَةً فِي الْجَنَّةِ» . قَالَ أَبُو سَعِيدٍ: وَاللَّهِ مَا كُنَّا نُرَى ذَلِكَ الرَّجُلَ إِلَّا عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ حَتَّى مَضَى لِسَبِيلِهِ. رَوَاهُ ابْن مَاجَه

اسنادہ ضعیف ، رواہ ابن ماجہ (4077 ب) * فیہ عطیۃ العوفی ضعیف و مدلس و عبید اللہ بن الولید الوصافی : ضعیف ۔
(واه)

وعن أبي سعيد قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «ذاك الرجل أرفع أمتي درجة في الجنة» . قال أبو سعيد: والله ما كنا نرى ذلك الرجل إلا عمر بن الخطاب حتى مضى لسبيله. رواه ابن ماجه

হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - উমার ফারূক (রাঃ)-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য

৬০৫৪-[২০] আসলাম (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইবনু উমার (রাঃ) আমাকে তার অর্থাৎ ’উমার (রাঃ)-এর গুণাগুণ সম্পর্কে প্রশ্ন করলেন, তখন আমি তাকে বললাম, রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর মৃত্যুর পর আমি ’উমার (রাঃ) তুলনায় দীনের কাজে অধিক দৃঢ় ও সঠিক কর্মপরায়ণ আর কোন লোককে দেখিনি। তিনি তাঁর শেষ বয়স অবধি একই অবস্থায় প্রতিষ্ঠিত রয়েছেন। (বুখারী)

اَلْفصْلُ الثَّالِثُ ( بَاب مَنَاقِب عمر)

وَعَن أسلم قَالَ: سَأَلَنِي ابْنُ عُمَرَ بَعْضَ شَأْنِهِ - يَعْنِي عُمَرَ - فَأَخْبَرْتُهُ فَقَالَ: مَا رَأَيْتُ أَحَدًا قَطُّ بَعْدَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ حِينِ قُبِضَ كَانَ أَجَدَّ وَأَجْوَدَ حَتَّى انْتهى من عمر. رَوَاهُ البُخَارِيّ

رواہ البخاری (3687) ۔
(صَحِيح)

وعن أسلم قال: سألني ابن عمر بعض شأنه - يعني عمر - فأخبرته فقال: ما رأيت أحدا قط بعد رسول الله صلى الله عليه وسلم من حين قبض كان أجد وأجود حتى انتهى من عمر. رواه البخاري

ব্যাখ্যা: (عَن أسلم) আসলাম হলেন ‘উমার (রাঃ)-এর দাস, তার উপনাম আবূ খালিদ, তিনি হাবশী গোলাম ছিলেন। কেউ কেউ বলেন, তিনি ইয়ামানী গোলাম ছিলেন, হজ্জ পালনের জন্য আবূ বাকর (রাঃ) তাকে হজ্জের নেতা বানিয়ে পাঠান। যখন খলীফাহ্ মারওয়ান মৃত্যুবরণ করেন তখন তার বয়স ছিল ১১৪ বছর।
(سَأَلَنِي ابْنُ عُمَرَ بَعْضَ شَأْنِهِ - يَعْنِي عُمَرَ) সম্ভবত এখানে ঐ সকল গুণাগুণ উদ্দেশ্য যেগুলো মানুষের জানা নেই এবং পার্থিব ঐ সকল বৈশিষ্ট্য যা আল্লাহ ও তার মাঝে বন্ধন সৃষ্টি করেছিল ইখলাসের ভিত্তিতে।
(مَا رَأَيْتُ أَحَدًا قَطُّ بَعْدَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ) ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, এখানে দুটি সম্ভাবনা রয়েছে: ১. রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর মৃত্যুর পর, ২. অথবা রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর পর।
(حَتَّى انْتهى من عمر) ইমাম সুয়ূত্বী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, উপরোক্ত উক্তি ‘উমার (রাঃ)-এর খিলাফতকালে। এ কথা দ্বারা আবূ বাকর (রাঃ) বের হয়ে গেলেন।
(أَجَدَّ وَأَجْوَدَ) দীন পালনে অধিক প্রচেষ্টা থাকা। (أَجَدَّ) অধিক দানশীল। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ, ফাতহুল বারী হা. ৩৬৮৭)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আসলাম (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - উমার ফারূক (রাঃ)-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য

৬০৫৫-[২১] মিসওয়ার ইবনু মাখারামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, (যুদ্ধে) উমার (রাঃ) আক্রান্ত হন, তখন তিনি তার ব্যথা ভোগ করতে থাকেন, এ সময় ইবনু আব্বাস (রাঃ) যেন তার অস্থিরতা চলমান করার সুরে তাকে বললেন, হে আমীরুল মু’মিনীন! আপনি এত বেশি অস্থির হবেন না। কেননা আপনি রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর সাহচর্য লাভ করেছেন এবং তাঁর সাহচর্যের অধিকার উত্তমরূপে পালন করেছেন। অতঃপর তিনি আপনার কাছ থেকে এমতাবস্থায় বিচ্ছিন্ন হয়েছেন যে, তিনি আপনার প্রতি সন্তুষ্ট ছিলেন। তারপর আপনি আবূ বকর (রাঃ)-এর সাহচর্য লাভ করেন এবং তাঁর সাহচর্যের অধিকারও উত্তমরূপে আদায় করেছেন। আর তিনি আপনার কাছ হতে এমতাবস্থায় বিচ্ছিন্ন হলেন যে, তিনিও আপনার প্রতি পূর্ণ সন্তুষ্ট ছিলেন। অতঃপর আপনি মুসলিমদের সাথে জীবন অতিবাহিত করেছেন এবং তাদের সাথে সহ-অবস্থানের হকও উত্তমরূপে আদায় করেছেন। আর এ মুহূর্তে যদি আপনি তাদের কাছ হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে যান, তবে নিশ্চিতভাবে আপনি তাদের নিকট হতে এমতাবস্থায় বিচ্ছিন্ন হবেন যে, তারা আপনার প্রতি সন্তুষ্ট থাকবে।
এ সকল কথা শুনার পর ’উমার (রাঃ) বললেন, তুমি যে রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর সাহচর্য ও তাঁর সন্তুষ্টির কথা উল্লেখ করেছ, তা তো ছিল আল্লাহ তা’আলার বিশেষ একটি দয়া, যা তিনি আমার ওপর করেছেন। আর আবূ বকর (রাঃ)-এর সাহচর্য ও সন্তুষ্টি সম্পর্কে যা তুমি উল্লেখ করলে তাও শুধুমাত্র আল্লাহর বিশেষ একটি অনুগ্রহ, যা তিনি আমার ওপর করেছেন, কিন্তু আমার মাঝে এখন যে অস্থিরতা তুমি লক্ষ্য করছ, তা তোমার জন্য এবং তোমার সাথিদের জন্য।
অর্থাৎ আবার তোমরা ফিতনায় পড়ে যাবে। আল্লাহর শপথ! যদি আমার কাছে দুনিয়াপূর্ণ স্বর্ণ থাকত, তবে আল্লাহর শাস্তি (স্বচক্ষে) অবলোকন করার পূর্বেই তা হতে রক্ষা পাওয়ার জন্য আমি তার বিনিময় হিসেবে দান করে দিতাম। (বুখারী)

اَلْفصْلُ الثَّالِثُ ( بَاب مَنَاقِب عمر)

وَعَن المِسور بن مَخْرَمةَ قَالَ: لَمَّا طُعِنَ عُمَرُ جَعَلَ يَأْلَمُ فَقَالَ لَهُ ابْنُ عَبَّاسٍ وَكَأَنَّهُ يُجَزِّعُهُ: يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ وَلَا كُلُّ ذَلِكَ لَقَدْ صَحِبْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَحْسَنْتَ صُحْبَتَهُ ثُمَّ فَارَقَكَ وَهُوَ عَنْكَ رَاضٍ ثُمَّ صَحِبْتَ أَبَا بَكْرٍ فَأَحْسَنْتَ صُحْبَتَهُ ثُمَّ فَارَقَكَ وَهُوَ عَنْكَ رَاضٍ ثُمَّ صَحِبْتَ الْمُسْلِمِينَ فَأَحْسَنْتَ صُحْبَتَهُمْ وَلَئِنْ فَارَقْتَهُمْ لَتُفَارِقَنَّهُمْ وَهُمْ عَنْكَ رَاضُونَ. قَالَ: أَمَّا مَا ذَكَرْتَ مِنْ صُحْبَةِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عَلَيْهِ وَسلم وَرضَاهُ فَإِنَّمَا ذَاك مَنٌّ مِنَ اللَّهِ مَنَّ بِهِ عَلَيَّ وَأَمَّا مَا ذَكَرْتَ مِنْ صُحْبَةِ أَبِي بَكْرٍ وَرِضَاهُ فَإِنَّمَا ذَلِك من من الله جلّ ذكره مَنَّ بِهِ عَلَيَّ. وَأَمَّا مَا تَرَى مِنْ جزعي فَهُوَ من أَجلك وَأجل أَصْحَابِكَ وَاللَّهِ لَوْ أَنَّ لِي طِلَاعَ الْأَرْضِ ذَهَبا لافتديت بِهِ من عَذَاب الله عز وَجل قبل أَن أرَاهُ. رَوَاهُ البُخَارِيّ

رواہ البخاری (3692) ۔
(صَحِيح)

وعن المسور بن مخرمة قال: لما طعن عمر جعل يألم فقال له ابن عباس وكأنه يجزعه: يا أمير المؤمنين ولا كل ذلك لقد صحبت رسول الله صلى الله عليه وسلم فأحسنت صحبته ثم فارقك وهو عنك راض ثم صحبت أبا بكر فأحسنت صحبته ثم فارقك وهو عنك راض ثم صحبت المسلمين فأحسنت صحبتهم ولئن فارقتهم لتفارقنهم وهم عنك راضون. قال: أما ما ذكرت من صحبة رسول الله صلى الله عليه وسلم ورضاه فإنما ذاك من من الله من به علي وأما ما ذكرت من صحبة أبي بكر ورضاه فإنما ذلك من من الله جل ذكره من به علي. وأما ما ترى من جزعي فهو من أجلك وأجل أصحابك والله لو أن لي طلاع الأرض ذهبا لافتديت به من عذاب الله عز وجل قبل أن أراه. رواه البخاري

ব্যাখ্যা: (قَالَ: لَمَّا طُعِنَ عُمَرُ) উমার (রাঃ)-কে আহত করে মদীনায় মুগীরাহ্ ইবনু শুবাহ্-এর গোলাম আবূ লুলুআহ্ মঙ্গলবারে ২৩ হিজরীতে।
(جَعَل عُمَرُ يَأْلَمُ) উমার (রাঃ)-এর কান্নার মাধ্যমে যন্ত্রণা পাওয়ার প্রভাব প্রকাশ পেল।
(يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ وَلَا كُلُّ ذَلِكَ) শায়খ মায়রক এবং কুশমিহানী (রহিমাহুমাল্লাহ) বলেন, আলোচ্য বাক্যের অর্থ হলো আপনি যা ভয় পাচ্ছেন তা ঘটবে না অথবা ঐ আঘাতে মৃত্যু ঘটবে না।
(لَوْ أَنَّ لِي طِلَاعَ الْأَرْضِ ذَهَبا) জমিন ভর্তি স্বর্ণ থাকত।
(لافتديت بِهِ من عَذَاب الله عز وَجل قبل أَن أرَاهُ) ‘আল্লামাহ্ ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘উমার (রাঃ) যেন আশার তুলনায় ভয়ের দিকটা বেশি প্রধান্য দিলেন। তারপরে রাসূল (সা.) -এর সাথিদের মাঝে যে ফিতনাহ্ পতিত হবে সেটা উপলব্ধি করতে পেরে তিনি তাদের ওপর খুব উৎকণ্ঠিত হলেন ও আল্লাহর অনুগ্রহ কামনা করলেন আর আল্লাহ বিশ্বাসী হতে মুখাপেক্ষীহীন। যেমন ‘ঈসা আলায়হিস সালাম বলেন, যদি আপনি তাদের শাস্তি দেন তাহলে তারা তো আপনার বান্দা। (সূরাহ্ আল মায়িদাহ্ ৫ : ১১৮)

এখানেও ‘ঈসা আলায়হিস সালাম আর ভয়ের দিকটা বেশি ছিল আশার চেয়ে। (ফাতহুল বারী ৭/৩৬৯২)
লেখক মুল্লা আলী ক্বারী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, “উমার (রাঃ)-কে দাফন দেয়া হয় রবিবার মুহাররম মাসের দশ তারিখে ২৪ হিজরীতে তখন তার বয়স ছিল ৬৩ বছর। তার জানাযা আদায় করান সুহায়ব (রাঃ)। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৬ পর্যন্ত, সর্বমোট ৬ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে