পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - তাওয়াক্কুল (আল্লাহর ওপর ভরসা) ও সবর (ধৈর্যধারণ) প্রসঙ্গে

৫৩০৪-[১০] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। একবার তিনি নাজদ অভিমুখে এক যুদ্ধ অভিযানে নাবী (সা.) - এর সঙ্গে ছিলেন। যখন রাসূলুল্লাহ (সা.) প্রত্যাবর্তন করলেন, তখন তিনিও তাঁর সঙ্গে প্রত্যাবর্তন করেন। (এ সময়ে) সাহাবীগণ দ্বিপ্রহরের সময় কাঁটাযুক্ত বৃক্ষরাজিতে ঢাকা একটি উপত্যকায় পৌছেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) ও সেখানে অবতরণ করেন। লোকজন ছায়ার জন্য বিভিন্ন গাছের নিচে ছড়িয়ে পড়ল। রাসুলুল্লাহ (সা.) একটি বাবলা গাছের নিচে অবতরণ করে তাতে নিজের তরবারিখানা ঝুলিয়ে রাখলেন। এদিকে আমরাও একটু শুয়ে পড়লাম। হঠাৎ রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাদেরকে ডাকতে লাগলেন। আমরা গিয়ে দেখলাম তাঁর নিকট এক বেদুঈন উপস্থিত রয়েছে। নাবী (সা.)- বললেন, আমি নিদ্রিত ছিলাম, এ লোকটি সেই সুযোগে আমার ওপরে আমার তরবারিখানাই উত্তোলন করেছিল। আমি জাগ্রত হয়ে দেখলাম, তার হাতে কোষমুক্ত তরবারি রয়েছে এবং সে বলল, বল দেখি, আমার হাত হতে তোমাকে কে রক্ষা করবে? আমি বললাম, আল্লাহ তিনবার। এরপর তিনি (সা.) তাকে কোন শাস্তি দেননি এবং উঠে বসলেন। (বুখারী ও মুসলিম)

اَلْفصْلُ الثَّالِثُ (بَاب التَّوَكُّل وَالصَّبْر)

عَن جَابر أَنَّهُ غَزَا مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قبل نجد فَلَمَّا قَفَلَ مَعَهُ فَأَدْرَكَتْهُمُ الْقَائِلَةُ فِي وَادٍ كَثِيرِ الْعِضَاهِ فَنَزَلَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَتَفَرَّقَ النَّاسُ يَسْتَظِلُّونَ بِالشَّجَرِ فَنَزَلَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَحْتَ سَمُرَةٍ فَعَلَّقَ بِهَا سَيْفَهُ وَنِمْنَا نَوْمَةً فَإِذَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَدْعُونَا وَإِذَا عِنْدَهُ أَعْرَابِيٌّ فَقَالَ: إِنَّ هَذَا اخْتَرَطَ عَلَيَّ سَيْفِي وَأَنَا نَائِمٌ فَاسْتَيْقَظْتُ وَهُوَ فِي يَدِهِ صَلتا. قَالَ: مَا يَمْنَعُكَ مِنِّي؟ فَقُلْتُ: اللَّهُ ثَلَاثًا وَلَمْ يُعَاقِبْهُ وَجلسَ. مُتَّفق عَلَيْهِ

متفق علیہ ، رواہ البخاری (2910) و مسلم (311 / 843)، (1949) ۔
(مُتَّفق عَلَيْهِ)

عن جابر أنه غزا مع النبي صلى الله عليه وسلم قبل نجد فلما قفل معه فأدركتهم القائلة في واد كثير العضاه فنزل رسول الله صلى الله عليه وسلم وتفرق الناس يستظلون بالشجر فنزل رسول الله صلى الله عليه وسلم تحت سمرة فعلق بها سيفه ونمنا نومة فإذا رسول الله صلى الله عليه وسلم يدعونا وإذا عنده أعرابي فقال: إن هذا اخترط علي سيفي وأنا نائم فاستيقظت وهو في يده صلتا. قال: ما يمنعك مني؟ فقلت: الله ثلاثا ولم يعاقبه وجلس. متفق عليه

ব্যাখ্যা : (قِبَلَ نَجْدٍ) নাজদের দিক থেকে। নাজদ বলা হয় ভূপৃষ্ঠ থেকে উঁচুতে অবস্থিত জমিনকে।
(قَفَلَ مَعَهُ) অর্থাৎ জাবির (রাঃ) নাবী (সা.) -এর সাথে প্রত্যাবর্তন করলেন।
(فَأَدْرَكَتْهُمُ الْقَائِلَةُ) সাহাবীগণ তথা মুজাহিদগণ দ্বিপ্রহরের সময় তথা কায়লুলার সময়ে উপনীত হলেন।
(فِي وَادٍ كَثِيرِ الْعِضَاهِ) ঘন কাটা বিশিষ্ট একটি উপত্যকায়।
(فَنَزَلَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَحْتَ سَمُرَةٍ) অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সা.) অবতরণ করার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন অথবা সবাইকে অবতরণের নির্দেশ দিলেন একটি বড় গাছের নিচে।
(فَعَلَّقَ بِهَا سَيْفَهُ) অতঃপর তিনি উক্ত গাছের ডালে তরবারি ঝুলিয়ে রাখলেন
(اخْتَرَطَ عَلَيَّ سَيْفِي) গাছের ডালে লটকানো আমার তলোয়ারটি নিয়ে কোষমুক্ত করল।
(مَا يَمْنَعُكَ مِنِّي؟) তোমাকে আমার হাত থেকে কে রক্ষা করবে?
(فَقُلْتُ: اللَّهُ ثَلَاثًا) অতঃপর আমি উত্তর দিলাম, প্রকৃতপক্ষে আল্লাহই আমাকে রক্ষা করবেন অথবা আল্লাহ তা'আলার হিফাযতের প্রতিশ্রুতির প্রতি লক্ষ্য রেখে বলেছি, আল্লাহ! যেহেতু তিনি ঘোষণা করেছেন,
(وَ اللّٰهُ یَعۡصِمُکَ مِنَ النَّاسِ) “মানুষের অনিষ্ট হতে আল্লাহই তোমাকে রক্ষা করবেন”- (সূরাহ্ আল মায়িদাহ্ ৫ : ৬৭)। তিনি আল্লাহ শব্দটি তিনবার উচ্চারণ করেছেন। এখান থেকে প্রতীয়মান হয় যে, বিপদের মুহূর্তে আল্লাহর সাহায্য অথবা আশ্রয় প্রার্থনা করার সময় আল্লাহর নাম তিনবার বলা মুস্তাহাব। (ফাতহুল বারী ২৯১৩, মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৬: মন-গলানো উপদেশমালা (كتاب الرقَاق)

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - তাওয়াক্কুল (আল্লাহর ওপর ভরসা) ও সবর (ধৈর্যধারণ) প্রসঙ্গে

৫৩০৫-[১১] আর আবূ বকর আল ইসমাঈলী তাঁর ’সহীহ’ গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন, যখন বেদুঈন লোকটি তরবারি হাতে নবী (সা.)-কে লক্ষ্য করে বলল, বল দেখি, আমার হাত হতে কে তোমাকে রক্ষা করবে? তখন তিনি বললেন, আল্লাহ। এতে তার হাত হতে তরবারিটি নীচে পড়ে গেল! তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) এই তরবারি নিজ হাতে তুলে বললেন, কে তোমাকে আমার হাত হতে রক্ষা করবে? সে বলল, (আশা করি) আপনি উত্তম তরবারি ধারণাকারী হবেন অর্থাৎ ক্ষমা করে দেবেন। তখন নবী (সা.) বললেন, “তুমি এ সাক্ষ্য দাও যে, আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন উপাস্য নেই, আর আমি নিশ্চয় আল্লাহর রসূল।” উত্তরে সে বলল, আমি এটা বলব না, তবে আপনার সাথে এ অঙ্গীকার করছি যে, আমি কখনো আপনার সাথে যুদ্ধ করব না এবং ঐ সমস্ত লোকেদের সঙ্গেও থাকব না যারা আপনার সাথে যুদ্ধ করবে। এরপর নবী (সা.) তাকে ছেড়ে দিলেন। সে আপন সঙ্গীদের কাছে এসে বলল, ’আমি মানব জাতির শ্রেষ্ঠ ব্যক্তির নিকট হতে তোমাদের কাছে ফিরে এসেছি।’ এই বর্ধিত অংশটি হুমায়দী তাঁর গ্রন্থে এবং ইমাম নববী ’রিয়াযুস সালিহীন’ কিতাবে বর্ণনা করেছেন।

اَلْفصْلُ الثَّالِثُ (بَاب التَّوَكُّل وَالصَّبْر)

وَفِي رِوَايَةِ أَبِي بَكْرٍ الْإِسْمَاعِيلِيِّ فِي «صَحِيحِهِ» فَقَالَ: مَنْ يَمْنَعُكَ مِنِّي؟ قَالَ: «اللَّهُ» فَسَقَطَ السيفُ من يَده فَأخذ السَّيْفَ فَقَالَ: «مَنْ يَمْنَعُكَ مِنِّي؟» فَقَالَ: كُنْ خَيْرَ آخِذٍ. فَقَالَ: «تَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَنِّي رَسُولُ اللَّهِ» . قَالَ: لَا وَلَكِنِّي أُعَاهِدُكَ عَلَى أَنْ لَا أُقَاتِلَكَ وَلَا أَكُونَ مَعَ قَوْمٍ يُقَاتِلُونَكَ فَخَلَّى سَبِيلَهُ فَأَتَى أَصْحَابَهُ فَقَالَ: جِئْتُكُمْ مِنْ عِنْدِ خَيْرِ النَّاسِ. هَكَذَا فِي «كتاب الْحميدِي» و «الرياض»

اسنادہ صحیح ، ذکرہ النووی فی ریاض الصالحین (78 بتحقیقی) و رواہ البیھقی فی دلائل النبوۃ (3 / 375 ۔ 376 من طریق الاسماعیلی بہ و لعلہ اسلم بعد کما یظھر من کلامہ و من اجلہ ذکر فی الصحابۃ) ۔
(صَحِيح)

وفي رواية أبي بكر الإسماعيلي في «صحيحه» فقال: من يمنعك مني؟ قال: «الله» فسقط السيف من يده فأخذ السيف فقال: «من يمنعك مني؟» فقال: كن خير آخذ. فقال: «تشهد أن لا إله إلا الله وأني رسول الله» . قال: لا ولكني أعاهدك على أن لا أقاتلك ولا أكون مع قوم يقاتلونك فخلى سبيله فأتى أصحابه فقال: جئتكم من عند خير الناس. هكذا في «كتاب الحميدي» و «الرياض»

ব্যাখ্যা: (فَقَالَ: كُنْ خَيْرَ آخِذٍ) অতঃপর সে রূপকভাবে ক্ষমার অনুরোধ করে বলল, আপনি তরবারির উত্তম ধারণকারী হোন তথা আমাকে শাস্তি থেকে অব্যাহতি দান করুন।
(فَخَلَّى سَبِيلَهُ) অতঃপর তিনি তাকে ছেড়ে দিলেন।
(فَأَتَى أَصْحَابَهُ) এরপর সে তার সঙ্গীদের নিকট তথা গোত্রের নিকট চলে এসে বলল, আমি তোমাদের নিকট একজন উত্তম, সম্মানিত ও সহিষ্ণু ব্যক্তির কাছ থেকে ফিরে আসলাম। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৬: মন-গলানো উপদেশমালা (كتاب الرقَاق)

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - তাওয়াক্কুল (আল্লাহর ওপর ভরসা) ও সবর (ধৈর্যধারণ) প্রসঙ্গে

৫৩০৬-[১২] আবূ যার (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: কুরআনের এমন একটি আয়াত আমি জানি, যদি লোকেরা তার প্রতি আমল করত, তবে তাই তাদের জন্য যথেষ্ট হত। তা হলো, (..وَ مَنۡ یَّتَّقِ اللّٰهَ یَجۡعَلۡ لَّهٗ مَخۡرَجًا ۙ﴿۲﴾  وَّ یَرۡزُقۡهُ مِنۡ حَیۡثُ لَا یَحۡتَسِبُ ؕ..) “...যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করে চলে তিনি তার মুক্তির রাস্তা তৈরি করে দেন এবং তাকে এমন জায়গা হতে রিযক দান করেন, যা সে ধারণাও করতে পারে না...”- (সূরাহ্ আত্ব ত্বলাক ৬৫: ২-৩)। (আহমাদ, ইবনু মাজাহ ও দারিমী)

اَلْفصْلُ الثَّالِثُ (بَاب التَّوَكُّل وَالصَّبْر)

وَعَنْ أَبِي ذَرٍّ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: إِنِّي لَأَعْلَمُ آيَةً لَو أخَذ النَّاسُ بهَا لكفتهم: (من يتق الله يَجْعَل لَهُ مخرجاويرزقه من حيثُ لَا يحتسبُ) رَوَاهُ أَحْمد وَابْن مَاجَه والدارمي

اسنادہ ضعیف ، رواہ احمد (5 / 178 ح 21884) و ابن ماجہ (4220) و الدارمی (2 / 303 ح 2728) * اعلہ البوصیری بالانقطاع لان ابا السلیل لم یدرک ابا ذر رضی اللہ عنہ کما فی التھذیب وغیرہ ۔
(ضَعِيف)

وعن أبي ذر أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: إني لأعلم آية لو أخذ الناس بها لكفتهم: (من يتق الله يجعل له مخرجاويرزقه من حيث لا يحتسب) رواه أحمد وابن ماجه والدارمي

ব্যাখ্যা: (إِنِّي لَأَعْلَمُ آيَةً لَو أخَذ النَّاسُ بهَا لكفتهم) আমি এমন একটি আয়াত জানি যদি প্রত্যেক ব্যক্তি তার প্রতি ‘আমল করত তাহলে তাদের জন্য যথেষ্ট হয়ে যেত। আর তা হচ্ছে : (..وَ مَنۡ یَّتَّقِ اللّٰهَ یَجۡعَلۡ لَّهٗ مَخۡرَجًا ۙ﴿۲﴾ وَّ یَرۡزُقۡهُ مِنۡ حَیۡثُ لَا یَحۡتَسِبُ..)
- “যে আল্লাহকে ভয় করে চলবে তিনি তাকে সকল প্রকার বিপদাপদ থেকে উদ্ধার করবেন এবং এমন জায়গা থেকে রিযক প্রদান করবেন যা সে কল্পনাও করতে পারবে না”- (সূরা আত্ব ত্বলাক ৬৫: ২-৩)। অত্র আয়াতে ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, আল্লাহ তা'আলা দুনিয়া ও আখিরাতের যাবতীয় অকল্যাণ থেকে বান্দাকে রক্ষাকারী হিসেবে যথেষ্ট। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৬: মন-গলানো উপদেশমালা (كتاب الرقَاق)

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - তাওয়াক্কুল (আল্লাহর ওপর ভরসা) ও সবর (ধৈর্যধারণ) প্রসঙ্গে

৫৩০৭-[১৩] ইবনু মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাকে এ আয়াতটি এভাবে শিক্ষা দিয়েছেন- (إِنِّي أَنَا الرَّزَّاقُ ذُو الْقُوَّةِ الْمَتِينُ) অর্থাৎ “আমিই রিযকদাতা, ক্ষমতার আধার”। [তিরমিযী ও আবূ দাউদ; ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেন : হাদীসটি হাসান সহীহ

اَلْفصْلُ الثَّالِثُ (بَاب التَّوَكُّل وَالصَّبْر)

وَعَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ قَالَ: أَقْرَأَنِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: (إِنِّي أَنَا الرَّزَّاقُ ذُو الْقُوَّةِ الْمَتِينُ) رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَالتِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ حسن صَحِيح

صحیح ، رواہ ابوداؤد (3993) و الترمذی (2940) ۔
(صَحِيح)

وعن ابن مسعود قال: أقرأني رسول الله صلى الله عليه وسلم: (إني أنا الرزاق ذو القوة المتين) رواه أبو داود والترمذي وقال: هذا حديث حسن صحيح

ব্যাখ্যা : (أَقْرَأَنِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ) রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাকে এভাবে পড়তে শিখিয়েছেন : (إِنِّي أَنَا الرَّزَّاقُ ذُو الْقُوَّةِ الْمَتِينُ)
‘আল্লামাহ্ ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, উক্ত কিরাআতটি রসূল (সা.) থেকে শায বা কম প্রচলিত কিরাআত।
প্রসিদ্ধ কিরাআত হচ্ছে : (اِنَّ اللّٰهَ هُوَ الرَّزَّاقُ ذُو الۡقُوَّۃِ الۡمَتِیۡنُ ﴿۵۸﴾) “নিশ্চয় আল্লাহই হচ্ছেন রিযকদাতা প্রবল শক্তির অধিকারী”- (সূরাহ্ আয যারিয়াত: ৫১: ৫৮)। অর্থাৎ তিনি সবকিছুর করার ক্ষমতা রাখেন। অতএব তার ওপরই ভরসা করা এবং সকল বিষয় তার ওপর ন্যস্ত করা উচিত। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৬: মন-গলানো উপদেশমালা (كتاب الرقَاق)

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - তাওয়াক্কুল (আল্লাহর ওপর ভরসা) ও সবর (ধৈর্যধারণ) প্রসঙ্গে

৫৩০৮-[১৪] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর যামানায় এমন দুই ভাই ছিল তাদের একজন নবী (সা.) -এর সেবায় আসত এবং অপর ভাই রুযী-রোজগার করত। একদিন এ পেশাদার ভাই নবী (সা.) -এর কাছে ঐ ভাইয়ের সম্পর্কে অভিযোগ করে (যে, সে কাম-কাজ না করে আমার ওপর ভরসায় থাকে, তখন তিনি (সা.) বললেন, হতে পার যে, তোমার সেই ভাইয়ের ওয়াসীলায় তোমাকে রিযক প্রদান করা হচ্ছে। (তিরমিযী; তিনি বলেছেন, হাদীসটি সহীহ গরীব)

اَلْفصْلُ الثَّالِثُ (بَاب التَّوَكُّل وَالصَّبْر)

وَعَن أنسٍ قَالَ: كَانَ أَخَوَانِ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَكَانَ أَحَدُهُمَا يَأْتِي النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَالْآخَرُ يَحْتَرِفُ فَشَكا المحترف أَخَاهُ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: «لَعَلَّكَ تُرْزَقُ بِهِ» رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيث صَحِيح غَرِيب

اسنادہ حسن ، رواہ الترمذی (2345) ۔
(إِسْنَاده جيد)

وعن أنس قال: كان أخوان على عهد رسول الله صلى الله عليه وسلم فكان أحدهما يأتي النبي صلى الله عليه وسلم والآخر يحترف فشكا المحترف أخاه إلى النبي صلى الله عليه وسلم فقال: «لعلك ترزق به» رواه الترمذي وقال: هذا حديث صحيح غريب

ব্যাখ্যা : (كَانَ أَحَدُهُمَا يَأْتِي النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّ) নবী (সা.) -এর যুগে দুই ভাই ছিল। এক ভাই নবী (সা.) -এর নিকট জ্ঞান শিক্ষার জন্য আসত আর অপর ভাই জীবিকা অর্জনের জন্য কাজ করত। সম্ভবত তারা উভয়েই একসাথে খেতেন।
(فَشَكا المحترف) কর্মজীবি ভাই নবী (সা.) -এর নিকট তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ করল যে, সে তার ভাইকে সাংসারিক কাজে এবং জীবিকা অর্জনের কাজে সহযোগিতা করে না।
(فَقَالَ: «لَعَلَّكَ تُرْزَقُ بِهِ») অতঃপর নবী (সা.) বললেন, আমার মনে হয় তুমি তার ‘ইলম শিক্ষার বরকতে রিযকপ্রাপ্ত হচ্ছ। শুধু তোমার পেশাগত কাজের জন্য রিযকপ্রাপ্ত হচ্ছ না। অতএব তুমি তার প্রতি তোমার কাজের খোটা দিও না।
এ হাদীস থেকে এই শিক্ষা পাওয়া যায় যে, দুনিয়াবী কাজ-কর্ম পরিত্যাগ করে পরকালের পাথেয় হিসেবে “ইলম শিক্ষা ও তার ‘আমল করা বৈধ। (তুহফাতুল আহ্ওয়াযী ৭/২৯৪০, মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৬: মন-গলানো উপদেশমালা (كتاب الرقَاق)

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - তাওয়াক্কুল (আল্লাহর ওপর ভরসা) ও সবর (ধৈর্যধারণ) প্রসঙ্গে

৫৩০৯-[১৫] ’আমর ইবনুল আস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: প্রত্যেক উপত্যকায় মানুষের অন্তরের ঘাঁটি রয়েছে। অতএব যে ব্যক্তি তার অন্তরকে উক্ত প্রত্যেক ঘাটির দিকে ধাবিত করে, আল্লাহ তা’আলা তাকে তার যে কোন ঘাঁটিতে ধ্বংস করতে পরোয়া করেন না। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি একমাত্র আল্লাহর ওপর ভরসা করে তিনি তার ঘাঁটিসমূহের জন্য যথেষ্ট হয়ে যান। (ইবনু মাজাহ)

اَلْفصْلُ الثَّالِثُ (بَاب التَّوَكُّل وَالصَّبْر)

وَعَنْ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ قَلْبَ ابْنِ آدَمَ بِكُلِّ وَادٍ شُعْبَةٌ فَمَنْ أَتْبَعَ قَلْبَهُ الشُّعَبَ كُلَّهَا لَمْ يُبَالِ اللَّهُ بِأَيِّ وَادٍ أَهْلَكَهُ وَمَنْ تَوَكَّلَ عَلَى اللَّهِ كَفَاهُ الشّعب» . رَوَاهُ ابْن مَاجَه

اسنادہ ضعیف ، رواہ ابن ماجہ (4166) * فیہ صالح بن رزین : مجھول وقال الذھبی :’’ حدیثہ منکر ‘‘ و السند ضعفہ البوصیری من اجل صالح ھذا ۔
(ضَعِيف)

وعن عمرو بن العاص قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «إن قلب ابن آدم بكل واد شعبة فمن أتبع قلبه الشعب كلها لم يبال الله بأي واد أهلكه ومن توكل على الله كفاه الشعب» . رواه ابن ماجه

ব্যাখ্যা : (إِنَّ قَلْبَ ابْنِ آدَمَ بِكُلِّ وَادٍ شُعْبَةٌ) আদম সন্তানের অন্তরের এক অংশ প্রত্যেক উপত্যকায় ধাবিত হয়। যেহেতু মানুষের মধ্যে একটি মাত্র অন্তর থাকে আর চিন্তাভাবনার উপত্যকা অনেক, তাই অন্তরের একাংশ ঘোরাফেরা করে সম্পূর্ণ অংশ নয়।
(فَمَنْ أَتْبَعَ قَلْبَهُ الشُّعَبَ كُلَّهَا) অতএব যার অন্তর চিন্তা-ভাবনার সকল শাখার অনুসরণ করে সে যে কোন উপত্যকায় ধ্বংস হলে আল্লাহকে উদ্ধারকারী হিসেবে পাবে না। আর যারা আল্লাহর ওপর সর্বদা ভরসা করে তাদের বিক্ষিপ্ত প্রয়োজনগুলো মেটানোর জন্য আল্লাহই যথেষ্ট হয়ে যান। আর এই অর্থেই নবী (সা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, যারা তাদের সমস্ত চিন্তাভাবনাকে দীনের একক চিন্তায় রূপান্তর করে চলে আল্লাহ তাদের দুনিয়া ও আখিরাতের জন্য যথেষ্ট হয়ে যান। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
বর্ণনাকারীঃ আমর ইবনুল আস (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৬: মন-গলানো উপদেশমালা (كتاب الرقَاق)

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - তাওয়াক্কুল (আল্লাহর ওপর ভরসা) ও সবর (ধৈর্যধারণ) প্রসঙ্গে

৫৩১০-[১৬] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। নাবী (সা.) বলেছেন: তোমাদের মহাপরাক্রমশালী পরোয়ারদিগার বলেন, যদি আমার বান্দাগণ আমার আনুগত্য করত, তাহলে আমি তাদেরকে রাত্রে বৃষ্টি বর্ষণ করতাম এবং দিনের বেলায় সূর্যের কিরণ ছড়িয়ে দিতাম, আর মেঘের গর্জন, বিদ্যুতের শব্দ তাদেরকে শুনাতাম না। (আহমাদ)

اَلْفصْلُ الثَّالِثُ (بَاب التَّوَكُّل وَالصَّبْر)

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: قَالَ رَبُّكُمْ عَزَّ وَجَلَّ: لَوْ أَنَّ عَبِيدِي أَطَاعُونِي لَأَسْقَيْتُهُمُ الْمَطَرَ بِاللَّيْلِ وَأَطْلَعْتُ عَلَيْهِمُ الشَّمْسَ بِالنَّهَارِ وَلَمْ أُسْمِعْهُمْ صَوْتَ الرَّعدِ . رَوَاهُ أَحْمد

اسنادہ ضعیف ، رواہ احمد (2 / 359 ح 8693) [و الحاکم (4 / 256)] * صدقۃ بن موسی الدقیقی السلمی ضعیف ضعفہ المجھور ۔
(ضَعِيف)

وعن أبي هريرة أن النبي صلى الله عليه وسلم قال: قال ربكم عز وجل: لو أن عبيدي أطاعوني لأسقيتهم المطر بالليل وأطلعت عليهم الشمس بالنهار ولم أسمعهم صوت الرعد . رواه أحمد

ব্যাখ্যা : (لَوْ أَنَّ عَبِيدِي أَطَاعُونِي) যদি আমার বান্দারা আমার সকল আদেশ নিষেধের আনুগত্য করত তাহলে রাতে আরামে ঘুমন্ত অবস্থায় তাদের ওপর আমি বৃষ্টি বর্ষণ করতাম। আর দিনের বেলায় তাদের কর্মক্ষেত্রে কর্মরত অবস্থায় সূর্য উদিত করে দিতাম।
আর তাদেরকে রাতে অথবা দিনে কখনো বজ্রের আওয়াজ শুনাতাম না, যাতে তারা ভয় না পায় এবং ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৬: মন-গলানো উপদেশমালা (كتاب الرقَاق)

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - তাওয়াক্কুল (আল্লাহর ওপর ভরসা) ও সবর (ধৈর্যধারণ) প্রসঙ্গে

৫৩১১-[১৭] উক্ত রাবী [আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন এক ব্যক্তি তার পরিবার-পরিজনের নিকট এসে দেখল তারা ক্ষুধা ও উপবাসে পড়ে আছে, তখন সে (দিশেহারা হয়ে) ময়দানের দিকে বের হয়ে গেল। অতঃপর তার স্ত্রী যখন দেখল তার স্বামী খাদ্যের সন্ধানে বাইরে চলে গেছে। তখন সে আটা পেষার চাক্কির কাছে গেল এবং চাক্কির এক পাট আরেক পাটের উপর রাখল, অতঃপর চুলার কাছে গিয়ে তাতে আগুন জ্বালাল। এরপর দু’আ করল, হে আল্লাহ! তুমি আমাদের রিযক দান কর। এরপর সে চাক্কির নীচের তাগারীটির (বিরাট পাত্র) প্রতি লক্ষ্য করে দেখল তা ভর্তি হয়ে রয়েছে। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর সে রুটি তৈরি করার জন্য চুলার কাছে গিয়ে দেখে যে, সেখানে পাত্রটি রুটির দ্বারা পরিপূর্ণ হয়ে আছে। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর স্বামী ঘরে ফিরে (স্ত্রীকে) জিজ্ঞেস করল, আমার চলে যাওয়ার পর তোমরা কি কারো নিকট হতে কিছু পেয়েছ? স্ত্রী বলল, হ্যাঁ পেয়েছি। আমরা আমাদের রবের নিকট হতে পেয়েছি। অতঃপর সে (লোকটি) চাক্কির নিকট গিয়ে তার পাটটি খুলে রাখল এবং নবী (সা.) -এর নিকট ঘটনাটি বর্ণনা করা হলে তিনি বললেন, যদি সে চাক্কির পাটটি না সরাত, তাহলে কিয়ামত পর্যন্ত তা ঘুরতে থাকত (এবং তা হতে আটা বের হতে থাকত)। (আহমাদ)

اَلْفصْلُ الثَّالِثُ (بَاب التَّوَكُّل وَالصَّبْر)

وَعَنْهُ قَالَ: دَخَلَ رَجُلٌ عَلَى أَهْلِهِ فَلَمَّا رَأَى مَا بِهِمْ مِنَ الْحَاجَةِ خَرَجَ إِلَى الْبَرِيَّةِ فَلَمَّا رَأَتِ امْرَأَتُهُ قَامَتْ إِلَى الرَّحَى فَوَضَعَتْهَا وَإِلَى التَّنُّورِ فَسَجَرَتْهُ ثُمَّ قَالَتْ: اللَّهُمَّ ارْزُقْنَا فَنَظَرَتْ فَإِذَا الْجَفْنَةُ قَدِ امْتَلَأَتْ. قَالَ: وَذَهَبَتْ إِلَى التَّنُّورِ فَوَجَدَتْهُ مُمْتَلِئًا. قَالَ: فَرَجَعَ الزَّوْجُ قَالَ: أَصَبْتُمْ بَعْدِي شَيْئًا؟ قَالَتِ امْرَأَتُهُ: نَعَمْ مِنْ رَبِّنَا وَقَامَ إِلَى الرَّحَى فَذُكِرَ ذَلِكَ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: «أَمَا إِنَّهُ لَوْ لَمْ يَرْفَعْهَا لَمْ تَزَلْ تَدور إِلَى يَوْم الْقِيَامَة» . رَوَاهُ أَحْمد

اسنادہ ضعیف ، رواہ احمد (2 / 513 ح 10667) [و الطبرانی فی الاوسط (5584)] * ھشام بن حسان مدلس و عنعن عن محمد بن سرین الخ ۔
(ضَعِيف)

وعنه قال: دخل رجل على أهله فلما رأى ما بهم من الحاجة خرج إلى البرية فلما رأت امرأته قامت إلى الرحى فوضعتها وإلى التنور فسجرته ثم قالت: اللهم ارزقنا فنظرت فإذا الجفنة قد امتلأت. قال: وذهبت إلى التنور فوجدته ممتلئا. قال: فرجع الزوج قال: أصبتم بعدي شيئا؟ قالت امرأته: نعم من ربنا وقام إلى الرحى فذكر ذلك إلى النبي صلى الله عليه وسلم فقال: «أما إنه لو لم يرفعها لم تزل تدور إلى يوم القيامة» . رواه أحمد

ব্যাখ্যা : (دَخَلَ رَجُلٌ عَلَى أَهْلِهِ) এক ব্যক্তি তার পরিবার-পরিজনের নিকট প্রয়োজনীয় সামগ্রীর খোঁজখবর নেয়ার জন্য গৃহে প্রবেশ করল, যখন সে দেখল সবাই ক্ষুধায় দারিদ্রে জর্জরিত তখন সে জমিনে কাজের উদ্দেশে বেরিয়ে পড়ল। যখন তার স্ত্রী দেখল তার স্বামী লজ্জা-শরম ফেলে দিয়ে বাড়ী থেকে বেরিয়ে গেছে তখন সে আটা ভাঙানো জাঁতাকল পরিষ্কার করে এক অংশ আরেক অংশের উপর রাখল এবং চুলায় আগুন জ্বালিয়ে গরম করল। এরপর আল্লাহর দরবারে দু'আ করতে শুরু করল; হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে আপনার পক্ষ থেকে রিযক প্রদান করুন, কেননা আমাদের খাদ্য শেষ হয়ে গেছে। আমরা শুধু আপনার কল্যাণেরই আশা করছি।
(فَنَظَرَتْ فَإِذَا الْجَفْنَةُ قَدِ امْتَلَأَتْ) অতঃপর স্ত্রী পেষণ যন্ত্রের দিকে তাকিয়ে দেখল যে, একটি বড় পাত্র আটায় পরিপূর্ণ হয়ে রয়েছে। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর সে চুলার কাছে গিয়ে দেখল তা রুটিতে পরিপূর্ণ হয়ে রয়েছে।

(قَالَ: فَرَجَعَ الزَّوْجُ) বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর তার স্বামী বাড়িতে ফিরে এসে জিজ্ঞেস করল, তোমরা কি কিছু খেয়েছ? অথবা খাওয়ার কিছু পেয়েছ? তখন তার স্ত্রী বলল : হ্যা, আমাদের রবের পক্ষ থেকে পেয়েছি। স্বামী আশ্চর্য হয়ে পেষণ যন্ত্রের দিকে গেল এবং তা উঠিয়ে ভালো করে লক্ষ্য করতে লাগল।
(فَذُكِرَ ذَلِكَ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ) অতঃপর নবী (সা.) -এর নিকট গিয়ে তা বর্ণনা করল। নবী (সা.) সব ঘটনা শুনে বললেন, হায়! যদি সে পেষণ যন্ত্রটি না উঠাত তাহলে তা কিয়ামাত পর্যন্ত ঘুরতে থাকত এবং তা হতে আটা বের হতে থাকত।
এ হাদীস থেকে জানা যায় যে, বান্দা যদি সাধ্যানুযায়ী হালাল কাজে আত্মনিয়োগ করে আল্লাহর দরবারে দুআ করে তাহলে আল্লাহ তার রিকের ব্যবস্থা করে দেন। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৬: মন-গলানো উপদেশমালা (كتاب الرقَاق)

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - তাওয়াক্কুল (আল্লাহর ওপর ভরসা) ও সবর (ধৈর্যধারণ) প্রসঙ্গে

৫৩১২-[১৮] আবুদ দারদা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন : বান্দার রিযক তাকে এভাবে খুঁজে বেড়ায় যেমন তার মৃত্যুকাল তাকে খোঁজ করে। (আবূ নু’আয়ম তাঁর “হিলইয়াহ” গ্রন্থে)

اَلْفصْلُ الثَّالِثُ (بَاب التَّوَكُّل وَالصَّبْر)

وَعَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ الرِّزْقَ لَيَطْلُبُ الْعَبْدَ كَمَا يَطْلُبُهُ أَجَلُهُ» . رَوَاهُ أَبُو نُعَيْمٍ فِي «الْحِلْية»

اسنادہ ضعیف ، رواہ ابو نعیم فی حلیۃ الاولیاء (6 / 86) * الولید بن مسلم کان یدلس تدلیس التسویۃ ولم یصرح بالسماع المسلسل و للحدیث شاھدان ضعیفان فی الحلیۃ (7 / 90 ، 246) و الکامل لابن عدی وغیرھما ۔

وعن أبي الدرداء قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «إن الرزق ليطلب العبد كما يطلبه أجله» . رواه أبو نعيم في «الحلية»

ব্যাখ্যা : (إِنَّ الرِّزْقَ لَيَطْلُبُ الْعَبْدَ) বান্দার রিযক তাকে এমনভাবে খুঁজে বেড়ায় যেমনভাবে মৃত্যুকাল তাকে খোঁজ করে। কেননা রিযক ফুরিয়ে গেলেই কেবল মৃত্যুর সময় চলে আসে।
আল্লাহ তা'আলা বলেন, (للّٰهُ الَّذِیۡ خَلَقَکُمۡ ثُمَّ رَزَقَکُمۡ ثُمَّ یُمِیۡتُکُمۡ ثُمَّ یُحۡیِیۡکُمۡ ؕ)
“আল্লাহই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তোমাদেরকে রিযক দিয়েছেন, অতঃপর তিনি তোমাদের মৃত্যু ঘটাবেন, অতঃপর তোমাদেরকে জীবিত করবেন...”- (সূরাহ্ আর রূম ৩০: ৪০)। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবুদ দারদা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৬: মন-গলানো উপদেশমালা (كتاب الرقَاق)

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - তাওয়াক্কুল (আল্লাহর ওপর ভরসা) ও সবর (ধৈর্যধারণ) প্রসঙ্গে

৫৩১৩-[১৯] ইবনু মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি যেন এখনও রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর দিকে তাকাচ্ছি যখন তিনি কোন একজন এমন নবীর ঘটনা বর্ণনা করছিলেন, যাকে তার আপন কওমের লোকেরা প্রহার করে রক্তাক্ত করেছিল, আর তিনি নিজের চেহারা হতে রক্ত মুচ্ছিলেন, আর বলছিলেন, হে আল্লাহ! তুমি আমার কওমের কৃত অপরাধ ক্ষমা করে দাও। কেননা তারা অজ্ঞ। (বুখারী ও মুসলিম)

اَلْفصْلُ الثَّالِثُ (بَاب التَّوَكُّل وَالصَّبْر)

وَعَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ قَالَ: كَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَحْكِي نَبِيًّا مِنَ الْأَنْبِيَاءِ ضَرَبَهُ قَوْمُهُ فَأَدْمَوْهُ وَهُوَ يَمْسَحُ الدَّمَ عَنْ وَجْهِهِ وَيَقُولُ: «اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِقَوْمِي فَإِنَّهُمْ لَا يَعْلَمُونَ» . مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ

متفق علیہ ، رواہ البخاری (3477) و مسلم (105 / 1792)، (4646) ۔
(مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

وعن ابن مسعود قال: كأني أنظر إلى رسول الله صلى الله عليه وسلم يحكي نبيا من الأنبياء ضربه قومه فأدموه وهو يمسح الدم عن وجهه ويقول: «اللهم اغفر لقومي فإنهم لا يعلمون» . متفق عليه

ব্যাখ্যা : (كَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ) জাবির (রাঃ) বলেন, আমি যেন নবী (সা.) -কে প্রত্যক্ষভাবে ঘটনা বর্ণনা করতে দেখেছি। তিনি (সা.) পূর্ববর্তী কোন এক নবী প্রসঙ্গে বলেন, সম্প্রদায়ের লোকেরা তার মাথায় এমনভাবে আঘাত করে যে, মাথা ফেটে রক্ত চোখ মুখ দিয়ে গড়িয়ে পড়ছিল আর তিনি মুখ থেকে রক্ত মুচ্ছিলেন এবং বলছিলেন, হে আল্লাহ! আমার সম্প্রদায়কে ক্ষমা করে দিন অর্থাৎ তাদের এ কাজের জন্য দুনিয়াতেই শাস্তি দিয়ে ধ্বংস করে দিবেন না। অথবা, না বুঝে কাজ করার জন্য তাদের তাওবার দরজা বন্ধ করে দিবেন না। এ রকম অর্থ করার কারণ হলো কাফিরদের শিরকী ও কুফরী করা সত্ত্বেও তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা বৈধ নয়।
তার এভাবে দু'আ করার মধ্যে পূর্ণ সহনশীলতা এবং উত্তম চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। যেহেতু সম্প্রদায়ের অপরাধের কারণে তিনি রবের নিকট তাদের কৃতকর্মের জন্য অজ্ঞতাবশত, না জেনে করার ক্ষেত্রে ওর পেশ করেছেন যে, তারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলকে বুঝতে পারেনি।
এর দ্বারা বুঝা যায় যে, অজ্ঞতাবশত কোন অপরাধ করলে তা জেনে বুঝে করার চেয়ে অপরাধ তুলনামূলক কম। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ, ফাতহুল বারী ৬/৩৪৭৭)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৬: মন-গলানো উপদেশমালা (كتاب الرقَاق)
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ১০ পর্যন্ত, সর্বমোট ১০ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে