পরিচ্ছেদঃ ৬. প্রথম অনুচ্ছেদ - হাঁচি দেয়া এবং হাই তোলা

৪৭৩২-[১] আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেন, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা হাঁচিকে পছন্দ করেন এবং হাই তোলাকে অপছন্দ করেন। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যখন কোন ব্যক্তি হাঁচি দেয় এবং ’’আলহামদুলিল্লা-হ’’ বলে আল্লাহর প্রশংসা করে, তখন এমন প্রত্যেক মুসলিমের প্রতি ’’ইয়ারহামুকাল্ল-হ’’ বলা অপরিহার্য হয়ে পড়ে, যে হাঁচিদাতার ’’আলহামদুলিল্লা-হ’’ শুনতে পায়। আর হাই তোলা শয়তানের কাজ। অতএব তোমাদের কারো যখন হাই আসে, তখন যথাসম্ভব তা প্রতিরোধ করা উচিত। কারণ যখন কোন ব্যক্তি হাই তোলে, তখন শয়তান তা দেখে হাসতে থাকে। (বুখারী)[1]

মুসলিম-এর এক বর্ণনায় রয়েছে যে, তোমাদের কেউ যখন হাই তোলার সময় ’হা’ করে, তখন শয়তান তা দেখে হাসতে থাকে।

بَابُ الْعُطَاسِ وَالتَّثَاؤُبِ

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْعُطَاسَ وَيَكْرَهُ التَّثَاؤُبَ فَإِذَا عَطَسَ أَحَدُكُمْ وَحَمِدَ اللَّهَ كَانَ حَقًّا عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ سَمِعَهُ أَنْ يَقُولَ: يَرْحَمُكَ اللَّهُ. فَأَمَّا التَّثَاؤُبُ فَإِنَّمَا هُوَ مِنَ الشَّيْطَان فَإِذا تثاءب أحدكُم فليرده مااستطاع فَإِنَّ أَحَدَكُمْ إِذَا تَثَاءَبَ ضَحِكَ مِنْهُ الشَّيْطَانُ . رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ
وَفِي رِوَايَةٍ لِمُسْلِمٍ: فَإِنَّ أَحَدَكُمْ إِذا قَالَ: هَا ضحك الشَّيْطَان مِنْهُ

عن ابي هريرة عن النبي صلى الله عليه وسلم قال ان الله يحب العطاس ويكره التثاوب فاذا عطس احدكم وحمد الله كان حقا على كل مسلم سمعه ان يقول يرحمك الله فاما التثاوب فانما هو من الشيطان فاذا تثاءب احدكم فليرده مااستطاع فان احدكم اذا تثاءب ضحك منه الشيطان رواه البخاريوفي رواية لمسلم فان احدكم اذا قال ها ضحك الشيطان منه

ব্যাখ্যাঃ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উক্তি (إِنَّ اللهَ يُحِبُّ الْعُطَاسَ وَيَكْرَهُ التَّثَاؤُبَ) অর্থাৎ- আল্লাহ তা‘আলা হাঁচিকে ভালোবাসেন আর হাই তোলাকে অপছন্দ করেন। এর কারণ হচ্ছে : হাঁচির দ্বারা অনেক উপকার রয়েছে। যথা : ১. হাঁচি দ্বারা মস্তিষ্কের নিষ্ক্রিয়তা ও ক্লেশ দূর হয়। ২. মন সতেজ ও তরতাজা হয়। ৩. মস্তিষ্ক হতে ময়লা বের হয়ে আসে। ৪. অনুভূতি শক্তি প্রখর হয়। ৫. মানুষের মনের অলসতা কেটে প্রফুল্লতা ফিরে আসে। ৬. এটা আল্লাহর বিশেষ এক নি‘আমাত। ৭. এর ফলে ‘ইবাদাতে, কাজে-কর্মে, উৎসাহ ও অনুপ্রেরণার সৃষ্টি হয়। কাজে হাঁচি আসাতে আল্লাহর প্রশংসা করা উচিত। এজন্য আল্লাহ তা‘আলা হাঁচিকে ভালোবাসেন। আল্লাহ তাআলা হাই তোলাকে অপছন্দ করেন। এরূপ অপছন্দের কিছু কারণ রয়েছে নিম্নে তা বর্ণনা করা হলো :

১. হাই তোলা শয়তানের কাজ। ২. হাই সাধারণত চরম ক্লান্তি ও অলস্যের নিদর্শন। ৩. এটা ‘ইবাদাতে ও কাজ-কর্মে সর্বদা বিঘ্ন ঘটায়। ৪. হাই মস্তিষ্কে জড়তা সৃষ্টি করে এবং অনুভূতি ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। ফলে ব্যক্তি অকর্মণ্য হয়ে পড়ে। ৫. হাই তোলার সাথে সাথে শরীর নিস্তেজ হয়ে আসে। ফলে প্রয়োজনীয় কর্তব্য ও আবশ্যকীয় কাজ রেখেই মানুষ কখনো কখনো ঘুমিয়ে পড়ে এবং তা দেখে শয়তান খুশি হয়। এ সকল কারণেই আল্লাহ তা‘আলা হাই তোলাকে অপছন্দ করেন।

হাঁচির জবাব : কেউ কেউ বলেছেন, হাঁচির জবাবে ‘আলহাম্দুলিল্লা-হ’ বললে তার জবাবে ‘ইয়ারহামুকাল্ল-হ’ বলা ফরযে ‘আইন। আবার কেউ কেউ বলেছেন, ফরযে কিফায়াহ্ এই মত অধিকাংশ ‘আলিমগণ পোষণ করেছেন। ইমাম শাফি‘ঈ (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেনঃ হাঁচির জবাব দেয়া সুন্নাত।

হাদীসের অংশ (ضَحِكَ مِنْهُ الشَّيْطَانُ) এর বিশ্লেষণ : রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, হাই তোলার কারণে শয়তান হাসে। কেননা, উদরপূর্তিজনিত শারীরিক ক্লান্তি হতেই হাইয়ের উৎপত্তি। আর হাই ‘ইবাদাত ও আনুগত্যের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। যা শয়তানের একান্ত কামনা। সুতরাং কেউ হাই তুললে শয়তান অত্যন্ত খুশি হয়। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)

আবূ সা‘ঈদ আল খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত, যখন তোমাদের কারো হাই আসে সে তার হাত মুখে রাখবে কেননা শয়তান তার মুখের ভিতর প্রবেশ করে। (আল জামি‘উস্ সগীর ১/৩৮, হাঃ ৫১৬)

আবূ হুরায়রা  হতে বর্ণিত, যখন তোমাদের কেউ হাঁচি দেয় সে যেন হাতের তালু চেহারায় রাখে এবং আওয়াজ হালকা, আস্তে করে। (হাকিম ৪/২৬৪, বায়হাক্বী)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৫: শিষ্টাচার (كتاب الآداب)

পরিচ্ছেদঃ ৬. প্রথম অনুচ্ছেদ - হাঁচি দেয়া এবং হাই তোলা

৪৭৩৩-[২] উক্ত রাবী [আবূ হুরায়রা (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন তোমাদের কারো হাঁচি আসে, তখন সে যেন ’’আলহামদুলিল্লা-হ’’ বলে এবং তার কোন মুসলিম ভাই অথবা বন্ধু তার উত্তরে ’’ইয়ারহামুকাল্ল-হ’’ বলে। আর যখন হাঁচিদাতার উত্তরে শ্রোতা ব্যক্তি ’’ইয়ারহামুকাল্ল-হ’’ বলে, তখন হাঁচিদাতা ঐ ব্যক্তির উত্তরের উত্তরে ’’ইয়াহদীকুমুল্ল-হু ওয়া ইউসলিহু বা-লাকুম’’ অর্থাৎ- ’’আল্লাহ তা’আলা তোমাদেরকে সঠিক পথে পরিচালিত করুন এবং তোমাদের আধ্যাত্মিক অবস্থা কল্যাণময় করুন’’ বলবে। (বুখারী)[1]

بَابُ الْعُطَاسِ وَالتَّثَاؤُبِ

وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم: إِذا عطسَ أحدُكم فلْيقلِ: الحمدُ لِلَّهِ وَلْيَقُلْ لَهُ أَخُوهُ - أَوْ صَاحِبُهُ - يَرْحَمُكَ اللَّهُ. فإِذا قَالَ لَهُ يَرْحَمك الله قليقل: يهديكم الله وَيصْلح بالكم رَوَاهُ البُخَارِيّ

وعنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا عطس احدكم فليقل الحمد لله وليقل له اخوه او صاحبه يرحمك الله فاذا قال له يرحمك الله قليقل يهديكم الله ويصلح بالكم رواه البخاري

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৫: শিষ্টাচার (كتاب الآداب)

পরিচ্ছেদঃ ৬. প্রথম অনুচ্ছেদ - হাঁচি দেয়া এবং হাই তোলা

৪৭৩৪-[৩] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, দু’ ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে হাঁচি দিলো। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এক ব্যক্তির হাঁচির জবাব দিলেন, অপর ব্যক্তির জবাব দিলেন না। লোকটি বলল : হে আল্লাহর রসূল! আপনি এ ব্যক্তির জবাব দিলেন; কিন্তু আমার জবাব দিলেন না। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এ ব্যক্তি ’’আলহামদুলিল্লা-হ’’ বলেছিল, আর তুমি ’’আলহামদুলিল্লা-হ’’ বলনি। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ الْعُطَاسِ وَالتَّثَاؤُبِ

وَعَن أنسٍ قَالَ: عَطَسَ رَجُلَانِ عِنْدَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَشَمَّتَ أَحَدَهُمَا وَلَمْ يُشَمِّتِ الْآخَرَ. فَقَالَ الرَّجُلُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ شَمَّتَّ هَذَا وَلَمْ تُشَمِّتْنِي قَالَ: «إِنَّ هَذَا حَمِدَ اللَّهَ وَلم تحمَدِ الله» . مُتَّفق عَلَيْهِ

وعن انس قال عطس رجلان عند النبي صلى الله عليه وسلم فشمت احدهما ولم يشمت الاخر فقال الرجل يا رسول الله شمت هذا ولم تشمتني قال ان هذا حمد الله ولم تحمد الله متفق عليه

ব্যাখ্যাঃ আলোচ্য হাদীস হতে জানা যায় যে, হাঁচি আসলে হাঁচিদাতার ‘‘আলহামদুলিল্লা-হ’’ বলতে হবে। এর হিকমাত হলো, হাঁচি আল্লাহ তা‘আলার এক বিশেষ নি‘আমাত। কেননা হাঁচি দ্বারা মস্তিষ্কের নিস্ক্রিয়তা দূরীভূত হয় এবং শারীরিক জড়তা কেটে যায়। ফলে কাজ কর্মে ও ‘ইবাদাতে উৎসাহ, আগ্রহ সৃষ্টি হয় এবং মনে প্রফুল্লতা আসে। তাই আল্লাহর নি‘আমাতের কৃতজ্ঞাতাস্বরূপ হাঁচিদাতাকে ‘‘আলহামদুলিল্লা-হ’’ বলতে হয়।

রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বাণী : ‘‘ইয়াহদীকুমুল্ল-হু ওয়া ইউসলিহু বা-লাকুম’’ বলার গুরুত্ব : হাঁচিদাতা ‘আলহামদুলিল্লা-হ’ বলার পর শ্রোতা যখন ‘‘ইয়ারহামুকাল্ল-হ’’ বলে দু‘আ করল তখন হাঁচি প্রদানকারীর কর্তব্য হলো তার চেয়ে আরো উত্তম দু‘আর মাধ্যমে শ্রোতার কল্যাণ কামনা করবে আর মানুষের সবচেয়ে বড় কল্যাণ হলো হিদায়াতপ্রাপ্ত হওয়া। কেননা হিদায়াতই পরকালীন মুক্তির একমাত্র পথ। হাঁচিদাতার জবাব দেয়া প্রসঙ্গে ‘উলামাদের মাঝে মতভেদ রয়েছে। কেউ কেউ বলেছেন, ‘‘ইয়াহদীকুমুল্ল-হু ওয়া ইউস্লিহু বা-লাকুম’’। আবার কেউ বলেছেন, ‘‘ইয়াগফিরুল্ল-হু লানা- ওয়ালাকুম’’।

ইমাম শাফি‘ঈ ও ইমাম মালিক (রহিমাহুমাল্লাহ) বলেছেনঃ হাঁচির জবাব দেয়া ফরযে কিফায়াহ্। কেউ কেউ বলেছেন সুন্নাহ, ওয়াজিব নয়। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৫: শিষ্টাচার (كتاب الآداب)

পরিচ্ছেদঃ ৬. প্রথম অনুচ্ছেদ - হাঁচি দেয়া এবং হাই তোলা

৪৭৩৫-[৪] আবূ মূসা আল আশ্’আরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি যে, তোমাদের কেউ যদি হাঁচি দেয় এবং আল্লাহর প্রশংসা করে, তবে তোমরা তার জবাবে ’’ইয়ারহামুকাল্ল-হ’’ বলবে। আর যদি সে আল্লাহর প্রশংসা না করে, তবে তোমরা ’’ইয়ারহামুকাল্ল-হ’’ বলে জবাব দেবে না। (মুসলিম)[1]

بَابُ الْعُطَاسِ وَالتَّثَاؤُبِ

وَعَنْ أَبِي مُوسَى قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «إِذَا عَطَسَ أَحَدُكُمْ فَحَمِدَ اللَّهَ فَشَمِّتُوهُ وَإِنْ لَمْ يَحْمَدِ اللَّهَ فَلَا تُشَمِّتُوهُ» . رَوَاهُ مُسلم

وعن ابي موسى قال سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول اذا عطس احدكم فحمد الله فشمتوه وان لم يحمد الله فلا تشمتوه رواه مسلم

ব্যাখ্যাঃ উল্লেখিত হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, কোন ব্যক্তি যদি হাঁচি প্রদান করে আলহাম্দুলিল্লা-হ বলে তা যদি কেউ শ্রবণ করে তাহলে তার জবাবে ইয়ারহামুকাল্ল-হ বলবে, অন্যথায় যদি সে আলহামদুলিল্লা-হ না বলে তাহলে তাকে ইয়ারহামুকাল্ল-হ বলতে হবে না। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৫: শিষ্টাচার (كتاب الآداب)

পরিচ্ছেদঃ ৬. প্রথম অনুচ্ছেদ - হাঁচি দেয়া এবং হাই তোলা

৪৭৩৬-[৫] সালামাহ্ ইবনুল আকওয়া (রাঃ) হতে বর্ণিত। জনৈক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকটে হাঁচি দিলো, তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তার জবাবে ’’ইয়ারহামুকাল্ল-হ’’ বললেন। অতঃপর লোকটি দ্বিতীয়বার হাঁচি দিলো। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ লোকটি কফ-সর্দিতে আক্রান্ত হয়েছে। (মুসলিম)[1]

তিরমিযী’র এক বর্ণনায় আছে, লোকটির তৃতীয়বার হাঁচির সময় রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ লোকটি কফ-সর্দিতে আক্রান্ত হয়েছে।

بَابُ الْعُطَاسِ وَالتَّثَاؤُبِ

وَعَن سلمةَ بن الْأَكْوَع أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَعَطَسَ رَجُلٌ عِنْدَهُ فَقَالَ لَهُ: «يَرْحَمُكَ اللَّهُ» ثُمَّ عَطَسَ أُخْرَى فَقَالَ: «الرَّجُلُ مَزْكُومٌ» . رَوَاهُ مُسلم وَفِي رِوَايَة التِّرْمِذِيّ أَنَّهُ قَالَ لَهُ فِي الثَّالِثَةِ: «إِنَّهُ مَزْكُومٌ»

وعن سلمة بن الاكوع انه سمع النبي صلى الله عليه وسلم وعطس رجل عنده فقال له يرحمك الله ثم عطس اخرى فقال الرجل مزكوم رواه مسلم وفي رواية الترمذي انه قال له في الثالثة انه مزكوم

ব্যাখ্যাঃ অত্র হাদীস সম্পর্কে বিভিন্ন মনীষীগণের উক্তি রয়েছে। কাযী ‘ইয়ায (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ হাঁচিদাতা যদি ‘‘আলহামদুলিল্লা-হ’’ বলে তবুও সে দু‘আ পাওয়ার দাবিদার। মাকহূল (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ একদিন আমি আমীরুল মু’মিনীন ‘উমার ইবনুল খত্ত্বাব (রাঃ)-এর নিকটে ছিলাম। এ সময়ে মসজিদের এক পাশে কোন এক ব্যক্তি হাঁচি দিল। তখন ‘উমার (রাঃ) বলেন, ‘‘ইয়ারহামুকাল্ল-হ’’ আল্লাহ তা‘আলা তোমার প্রতি অনুগ্রহ দান করুক। কেননা তুমি আল্লাহর প্রশংসা করেছ। ইমাম শা‘বী (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, যদি কোন ব্যক্তি দেয়ালের পিছন থেকে হাঁচি দিয়ে ‘‘আলহামদুলিল্লা-হ’’ বলে আর তুমি তা শুনতে পাও তবে তুমি ‘‘ইয়ারহামুকাল্ল-হ’’ বলবে। ইবরাহীম নাখ‘ঈ (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেনঃ তুমি যদি হাঁচি দিয়ে ‘‘আলহামদুলিল্লা-হ’’ বল। কিন্তু তোমার কাছে অন্য কেউ না থাকে তখন তুমি বলবে ‘‘ইয়াগফিরুল্ল-হু লানা- ওয়ালাকুম’’। তোমার হাঁচির জবাবে মালাক (ফেরেশতা) ‘‘ইয়ারহামুকাল্ল-হ’’ বলেছেন, কারণ মালায়িকাহ্ (ফেরেশতাগণ) সব সময় মানুষের সাথে আছেন। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৫: শিষ্টাচার (كتاب الآداب)

পরিচ্ছেদঃ ৬. প্রথম অনুচ্ছেদ - হাঁচি দেয়া এবং হাই তোলা

৪৭৩৭-[৬] আবূ সা’ঈদ আল খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন তোমাদের কারো হাই আসে, সে যেন নিজের হাত মুখের উপর রাখে। কেননা শয়তান মুখে প্রবেশ করে। (মুসলিম)[1]

بَابُ الْعُطَاسِ وَالتَّثَاؤُبِ

وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيُّ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ
: «إِذَا تَثَاءَبَ أَحَدُكُمْ فَلْيَمْسِكْ بِيَدِهِ عَلَى فَمه فإِنَّ الشيطانَ يدخلُ» . رَوَاهُ مُسلم

وعن ابي سعيد الخدري ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال اذا تثاءب احدكم فليمسك بيده على فمه فان الشيطان يدخل رواه مسلم

ব্যাখ্যাঃ অত্র হাদীসে উল্লেখিত একটি বাক্য (فإِنَّ الشيطانَ يدخلُ) এর উদ্দেশ্য এটাও হতে পারে যে, শয়তান প্রকৃতভাবেই মানুষের মুখে প্রবেশ করে। কেননা শয়তান আল্লাহ তা‘আলার নিকট অনুমিত নিয়েছে যে, আদম সন্তানের শিরা উপশিরায় চলাচলের ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৫: শিষ্টাচার (كتاب الآداب)
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৬ পর্যন্ত, সর্বমোট ৬ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে