পরিচ্ছেদঃ ১৭. প্রথম অনুচ্ছেদ - স্ত্রীর খোরপোষ ও দাস-দাসীর অধিকার

৩৩৪২-[১] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। হিন্দা বিনতু ’উতবাহ্ (আবূ সুফ্ইয়ান-এর স্ত্রী ও মু’আবিয়াহ্ (রাঃ)-এর মা) বলেন, হে আল্লাহর রসূল! আবূ সুফ্ইয়ান একজন কৃপণ মানুষ। আমার এবং আমার সন্তান-সন্ততির জন্য প্রয়োজনানুযায়ী খাদ্য নির্বাহ করে না, ফলে আমি তার অগোচরে কিছু ব্যবস্থা করি। উত্তরে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তোমার এবং তোমার সন্তান-সন্ততির জন্য প্রয়োজনানুপাতে ন্যায়সঙ্গতভাবে গ্রহণ কর। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ النَّفَقَاتِ وَحَقِّ الْمَمْلُوْكِ

عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْ: إِنَّ هندا بنت عتبَة قَالَت: يَا رَسُول الله إِن أَبَا سُفْيَان رجل شحيح وَلَيْسَ يعطيني مَا يَكْفِينِي وَوَلَدي إِلَّا مَا أخذت مِنْهُ وَهُوَ يعلم فَقَالَ: «خذي مَا يَكْفِيك وولدك بِالْمَعْرُوفِ»

عن عاىشة رضي الله عنها قالت ان هندا بنت عتبة قالت يا رسول الله ان ابا سفيان رجل شحيح وليس يعطيني ما يكفيني وولدي الا ما اخذت منه وهو يعلم فقال خذي ما يكفيك وولدك بالمعروف

ব্যাখ্যা: (إِنَّ أَبَا سُفْيَانَ رَجُلٌ شَحِيْحٌ) অর্থাৎ আবূ সুফ্ইয়ান একজন কৃপণ ব্যক্তি। আবূ সুফ্ইয়ান -এর স্ত্রী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তথা বিচারকের সামনে তার সমস্যার বাস্তব অবস্থা তুলে ধরেছেন। তাই এটা হারাম গীবাতের অন্তর্ভুক্ত নয়। ফাতহুল বারীতে লিখেন, কুরতুবী বলেনঃ এখানে আবূ সুফ্ইয়ান-এর স্ত্রী তার সব সময়ের অবস্থা কৃপণতা বলছেন না, আর তার কথায় এটা জরুরীও হয় না। কেননা তিনি বলছেন, সে আমার ও আমার বাচ্চার খরচ দিতে কৃপণ। আর এমন অনেক মানুষ রয়েছেন যারা অপরিচিতদের জন্য অনায়াসে খরচ করলেও পরিবারের জন্য খরচ করতে অনেকটা সঙ্কীর্ণতা করেন।

(إِلَّا مَا أَخَذْتُ مِنْهُ وَهُوَ لَا يَعْلَمُ) তবে আমি যা নেই তার থেকে অথচ সে জানে না। অর্থাৎ সে খরচে কৃপণতা করায় যা দেয় তাতে আমার ও বাচ্চার হয় না, বরং আমি তাকে না জানিয়ে কিছু নিলে তখন আমাদের জন্য যথেষ্ট হয়।

ইমাম শাফি‘ঈ এ হাদীসের বর্ণনায় এই অংশটুকু বৃদ্ধি করেন : (سرا، فهل على في ذلك من شيء) অর্থাৎ আমি গোপনে কিছু নিয়ে নেই, এতে কি আমার কোনো অসুবিধা আছে?

ইমাম যুহরীর বর্ণনায় : (فهل على حرج أن اطعم من الذي في له عيالنا) অর্থাৎ আমাদের পরিবারে তার যে সন্তান রয়েছে আমি তাকে খাওয়ালে আমার কোনো সমস্যা আছে কি?

(خُذِىْ مَا يَكْفِيْكَ وَوَلَدِكِ بِالْمَعْرُوْفِ) আবূ সুফ্ইয়ান -এর স্ত্রীর কথার উত্তরে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি স্বাভাবিক নিয়ম মোতাবেক তোমার ও তোমার সন্তানের খরচ নিয়ে নিতে পার। অর্থাৎ প্রয়োজনের অতিরিক্ত নিবে না। সামাজিকভাবে যতটুকুতে তোমার ও সন্তানের প্রয়োজন বুঝায় এবং যা শারী‘আত কর্তৃক স্বামীর ওপর অর্পিত হয়, সেই পরিমাণ নিবে।

কোনো কোনো বর্ণনায় : (لاحرج عليكِ أن تطعميهم بالمعروف) অর্থাৎ স্বাভাবিক নিয়ম মোতাবেক তাদেরকে খাওয়ালে কোনো সমস্যা নেই। (ফাতহুল বারী ৯ম খন্ড, হাঃ ৫৩৬৪)

এ হাদীস থেকে আমরা বুঝতে পারি যে, স্ত্রী ও সন্তানের প্রয়োজনীয় খরচ স্বামীর ওপর ওয়াজিব। কুরআনেও এর বিবরণ রয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেনঃ
‘‘বিত্তশালী ব্যক্তি তার বিত্ত অনুযায়ী ব্যয় করবে। যে ব্যক্তি সীমিত পরিমাণে রিযকপ্রাপ্ত, সে আল্লাহ যা দিয়েছেন, তা থেকে ব্যয় করবে।’’ (সূরা আত্ব তালাক ৬৫ : ৭)
বর্ণিত হাদীস থেকে ‘উলামায়ে কিরাম বিভিন্ন মাস্আলাহ্ উদঘাটন করেন। ইমাম নববী বলেনঃ এ হাদীস থেকে যে বিষয়গুলো জানা যায়:

•    স্ত্রীর খরচ স্বামীর ওপর ওয়াজিব।

•    ছোট দরিদ্র সন্তানের খরচ পিতার ওপর ওয়াজিব।

•    খরচের পরিমাণ নির্ধারিত নয় বরং যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু।

•    ফতোয়া বা ফায়সালা দেয়ার সময় বে-গানা নারীর কথা শুনা বৈধ।

•    ফতোয়া জিজ্ঞাসার জন্য এমন কথা বলা যায় যা শুনলে যার সম্পর্কে কথা হচ্ছে সে অপছন্দ করবে।

•    কারো কাছে যার পাওনা অধিকার রয়েছে এবং এই অধিকার আদায়ে সে অক্ষম, তবে তার জন্য সেই ব্যক্তির সম্পদ থেকে তার অনুমোদন ছাড়া নেয়া বৈধ আছে। তবে ইমাম মালিক ও আবূ হানীফাহ্ (রহঃ) তা নিষেধ করেন।

•    সন্তানের লালন পালনের দায়িত্ব আদায়ে মায়ের জন্য তাদের পিতার সম্পদ থেকে খরচের অধিকার রয়েছে।

•    যে বিষয়ে শারী‘আতে কোনো পরিমাণ নির্ধারিত নেই সেখানে সামাজিক রীতির উপর নির্ভর করা জায়িয।

•    স্বামীর অনুমতি বা তার বাধা না থাকলে স্ত্রীর জন্য প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হওয়া জায়িয আছে। (মিরকাতুল মাফাতীহ; শারহে মুসলিম ১১/১২ খন্ড, হাঃ ১৭১৪)

কেউ কেউ এ হাদীস থেকে ব্যক্তির অনুপস্থিতে তার ওপর বিচারের ফায়সালা কার্যকর জায়িযের ফতোয়া দেন। কিন্তু এ হাদীস থেকে অনুপস্থিত ব্যক্তির ওপর বিচারের ফায়সালা বৈধ প্রমাণ হয় না। কেননা এটা আবূ সুফ্ইয়ান-এর ওপর কোনো ফায়সালা কার্যকর নয়। বরং তার স্ত্রীর জিজ্ঞাসিত মাসআলার ফতোয়া প্রদান করেছেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।

শারহুস্ সুন্নাহ্ কিতাবে রয়েছে, এই হাদীস থেকে এটাও বুঝা যায় যে, কাযী তার জানা মোতাবেক কোনো কিছুর ফায়সালা দিতে পারেন; কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ সুফ্ইয়ান-এর স্ত্রীকে দলীল পেশ করতে বাধ্য করেননি।

ব্যক্তির ওপর তার পিতা-মাতা ও সন্তানাদির ভরণ-পোষণ জরুরী। কেননা যখন তার ওপর সন্তানের ভরণ পোষণ জরুরী তখন পিতা-মাতার ভরণ-পোষণ জরুরী হওয়া অধিক বাঞ্ছনীয় পিতা-মাতার সম্মানের কারণে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৩: বিবাহ (كتاب النكاح) 13. Marriage

পরিচ্ছেদঃ ১৭. প্রথম অনুচ্ছেদ - স্ত্রীর খোরপোষ ও দাস-দাসীর অধিকার

৩৩৪৩-[২] জাবির ইবনু সামুরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা যখন তোমাদের কাউকে ধন-সম্পদ দান করেন, তখন তা যেন সর্বাগ্রে নিজের ও পরিবার-পরিজনের প্রয়োজন পূরণ করে। (মুসলিম)[1]

بَابُ النَّفَقَاتِ وَحَقِّ الْمَمْلُوْكِ

وَعَنْ جَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم: «إِذا أعْطى الله أحدكُم خيرا فليبدأ بِنَفسِهِ وَأهل بَيته» . رَوَاهُ مُسلم

وعن جابر بن سمرة قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا اعطى الله احدكم خيرا فليبدا بنفسه واهل بيته رواه مسلم

ব্যাখ্যা: একজন মানুষের সম্পদ থেকে খরচ পাওয়ার কে বেশি অগ্রাধিকার রাখে সে কথাই এই হাদীসে তুলে ধরেছেন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। অর্থাৎ প্রথমে ব্যক্তি তার নিজের জন্য খরচ করবে। অর্থাৎ নিজের সম্পদের উপর তার নিজের অধিকার সবার আগে। এরপর তার পরিবারের অধিকার। পরিবার অর্থাৎ তার স্ত্রী, সন্তান।
জাবির থেকে বর্ণিত একটি হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ

ابْدَأْ بِنَفْسِكَ فَتَصَدَّقْ عَلَيْهَا فَإِنْ فَضَلَ شَيْءٌ فَلِأَهْلِكَ فَإِنْ فَضَلَ عَنْ أَهْلِكَ شَيْءٌ فَلِذِي قَرَابَتِكَ فَإِنْ فَضَلَ عَنْ ذِي قَرَابَتِكَ شَيْءٌ فَهَكَذَا وَهَكَذَا يَقُولُ فَبَيْنَ يَدَيْكَ وَعَنْ يَمِينِكَ وَعَنْ شِمَالِكَ

‘‘তুমি তোমার নিজেকে দিয়ে শুরু কর, অতএব নিজের জন্য খরচ কর। যদি এখান থেকে অতিরিক্ত থাকে তবে তোমার পরিবারের জন্য। পরিবারের খরচের পর বাঁচলে আত্মীয়-স্বজনের জন্য। আত্মীয়-স্বজনকে দেয়ার পর বাঁচলে এভাবে পর্যায়ক্রমে তোমার সামনে, ডানে, বামে খরচ করবে।’’ (সহীহ মুসলিম- অধ্যায় : যাকাত, অনুচ্ছেদ : প্রথমে নিজের জন্য খরচ, তারপর পরিবার.., হাঃ ১৬৬৩)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৩: বিবাহ (كتاب النكاح) 13. Marriage

পরিচ্ছেদঃ ১৭. প্রথম অনুচ্ছেদ - স্ত্রীর খোরপোষ ও দাস-দাসীর অধিকার

৩৩৪৪-[৩] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (প্রাপ্যাধিকার) দাস-দাসীকে খাদ্যদ্রব্য ও পোশাক-পরিচ্ছদ (মালিকের কর্তব্য পালনার্থে) প্রদান করতে হবে এবং তাদের ওপর চাপপ্রয়োগ করে সাধ্যাতীত কাজ করানো যাবে না। (মুসলিম)[1]

بَابُ النَّفَقَاتِ وَحَقِّ الْمَمْلُوْكِ

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عَلَيْهِ وَسلم: «للمملوك طَعَامه وَكسوته وَلَا يُكَلف من الْعَمَل إِلَّا مَا يُطيق» . رَوَاهُ مُسلم

وعن ابي هريرة قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم للمملوك طعامه وكسوته ولا يكلف من العمل الا ما يطيق رواه مسلم

ব্যাখ্যা: বর্ণিত হাদীসে দাসের অধিকার ও তার ব্যয়ভারের আলোচনা করা হয়েছে। দাসের অন্ন বস্ত্রের দায়িত্ব তার মালিকের ওপর। সামাজিক রীতিনুযায়ী তাদের যে খাবার রয়েছে বা পরিধেয় বস্ত্র রয়েছে তা মালিককে বহন করতে হবে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)

হাদীসে দাসের যে অধিকারের কথা বলা হয়েছে তা হলো তার ওপর তার সাধ্যের বাহিরে কোনো কাজ না চাপানো। এ হাদীসসহ পরবর্তী কয়েকটি হাদীসে দাসের অধিকার সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। অর্থাৎ কেউ কারো দাস হলেই তাকে মানবিক মূল্যায়ন না করে তার সাথে পশুসুলভ আচরণ ইসলাম সমর্থন করে না। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর মৃত্যু পূর্ব ওয়াসিয়্যাতটিতেও দাসদের প্রতি খেয়াল রাখার কথা বলেছেন। (সম্পাদক)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৩: বিবাহ (كتاب النكاح) 13. Marriage

পরিচ্ছেদঃ ১৭. প্রথম অনুচ্ছেদ - স্ত্রীর খোরপোষ ও দাস-দাসীর অধিকার

৩৩৪৫-[৪] আবূ যার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তারা (দাসগণ) তোমাদের ভাই, আল্লাহ তাদেরকে তোমাদের অধীনন্থ করে দিয়েছেন। অতঃপর আল্লাহ যখন তার কোনো ভাইকে অধীন করে দেন, সে যেন নিজে যা খায়, তাকেও তাই খাওয়ায়; নিজে যা পরিধান করে, তাকেও তা পরিধান করায়। তাদের সাধ্যাতীত কাজের জন্য যেন চাপপ্রয়োগ না করে। আর একান্তই যদি সাধ্যাতীত কাজে বাধ্য করে, তবে নিজেও যেন তাকে সর্বাত্মকভাবে সাহায্য করে। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ النَّفَقَاتِ وَحَقِّ الْمَمْلُوْكِ

وَعَنْ أَبِي ذَرٍّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِخْوَانُكُمْ جَعَلَهُمُ اللَّهُ تَحْتَ أَيْدِيكُمْ فَمَنْ جَعَلَ اللَّهُ أَخَاهُ تَحْتَ يَدَيْهِ فَلْيُطْعِمْهُ مِمَّا يَأْكُلُ وَلْيُلْبِسْهُ مِمَّا يَلْبَسُ وَلَا يُكَلِّفْهُ مِنَ الْعَمَلِ مَا يَغْلِبُهُ فَإِنْ كَلَّفَهُ مَا يَغْلِبُهُ فَلْيُعِنْهُ عَلَيْهِ»

وعن ابي ذر قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم اخوانكم جعلهم الله تحت ايديكم فمن جعل الله اخاه تحت يديه فليطعمه مما ياكل وليلبسه مما يلبس ولا يكلفه من العمل ما يغلبه فان كلفه ما يغلبه فليعنه عليه

ব্যাখ্যা: إِخْوَانُكُمْ جَعَلَهُمُ اللّٰهُ تَحْتَ)) বাক্যের মুবতাদা বা উদ্দেশ্য উহ্য রয়েছে। অর্থাৎ যারা তোমাদের গোলাম তারা তোমাদের ভাই। কেননা তোমরা সবাই এক আদামের সন্তান। তোমাদের সকলেরই মূল এক। পার্থক্য এই যে, আল্লাহ তাদেরকে তোমাদের অধিনস্থ করেছেন। অধিনস্থ হওয়ার কারণে ভ্রাতৃত্ব সম্পর্ক থেকে সে বেরিয়ে যায়নি। তাই তার সাথে ভ্রাতৃত্বসুলভ আচরণ করতে হবে।

(فَلْيُطْعِمْهُ مِمَّا يَأْكُلُ وَلْيُلْبِسْهُ مِمَّا يَلْبَسُ) সে যা খায় গোলামকে তা খাওয়াবে এবং যা পরিধান করে গোলামকে তা পরাবে।

মালিক যা খাবে গোলাম সেই মানের খাবার দেয়া, মালিক যা পরিধান করবে গোলামকে সেই মানের বস্ত্র পরিধান করতে দেয়ার নির্দেশটি মুস্তাহাব পর্যায়ের। ওয়াজিব বা জরুরী হিসেবে নয়। ‘উলামারা এই কথার উপর একমত। তবে আবূ যার গিফারী নিজে যে খাবার খেতেন তার গোলামকে হুবহু সেই খাবার দিতেন, তিনি যে বস্ত্র পরিধান করতেন হুবহু সেই মানের বস্ত্র গোলামকে দেয়ার ‘আমলটি মুস্তাহাব ‘আমল ছিল। তবে মালিকের ওপর ওয়াজিব হলো যে শহরে যে খাবার প্রচলিত এবং ব্যক্তি হিসেবে যে পরিধেয় বস্ত্র প্রচলিত সেই এলাকার সামাজিক রীতি অনুযায়ী গোলামকে অন্ন ও বস্ত্র দেয়া। চাই তার মান মালিকের খাবার ও পরিধেয় বস্ত্রর সমান হোক বা কম বেশ হোক। এমনকি মালিক যদি কোনো কারণবশত স্বেচ্ছায় তার নিজের অন্ন ও বস্ত্রের মাঝে সংকোচ করে গোলামের জন্য সংকোচ বা কমতি করা জায়িয হবে না। বরং গোলামকে সেই এলাকার প্রচলন অনুযায়ী খাবার ও বস্ত্র দিতে হবে।

(وَلَا يُكَلِّفْهُ مِنَ الْعَمَلِ مَا يَغْلِبُه فَإِنْ كَلَّفَه مَا يَغْلِبُه فَلْيُعِنْهُ عَلَيْهِ) গোলামকে তার সাধ্যের উপর কাজ চাপাবে না। যদি চাপায় তবে সে তাকে সহযোগিতা করবে।

‘উলামায়ে কিরাম এই মাসআলার উপরও একমত যে, গোলামকে এমন কাজ দেয়া যাবে না যা তার সাধ্য বা সামর্থ্যের বাহিরে। অর্থাৎ অতিরিক্ত কষ্টদায়ক কাজ যা সাধারণত করতে অপারগ এমন কোনো কাজ গোলামের কাঁধে চাপাবে না। যদি এমন কাজ দিয়েই দেয় তবে নিজে গোলামকে সাহায্য করবে অথবা তার সাহায্যের জন্য লোক নিয়োগ করবে যাতে উভয়ের সহযোগিতায় কাজটি সহজসাধ্য হয়। সহজসাধ্য করা ছাড়া গোলামের উপর অতিরিক্ত ভারী কোনো কাজের দায়িত্ব দিবে না। (শারহে মুসলিম ১১/১২ খন্ড, হাঃ ১৬৬১)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৩: বিবাহ (كتاب النكاح) 13. Marriage

পরিচ্ছেদঃ ১৭. প্রথম অনুচ্ছেদ - স্ত্রীর খোরপোষ ও দাস-দাসীর অধিকার

৩৩৪৬-[৫] ’আব্দুল্লাহ ইবনু ’আমর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন তার কর্মচারী তার নিকট উপস্থিত হলে তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি আমার অধীনস্থ দাসদেরকে তাদের পারিশ্রমিক দিয়েছ? সে বলল, না। তিনি বললেন, যাও এক্ষুণি তাদের খোরাকি আদায় কর। কেননা, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোনো মানুষের গুনাহের জন্য এটাই যথেষ্ট যে, অধীনস্থ দাসকে তার প্রাপ্যাধিকার থেকে বঞ্চিত করা।

অন্য বর্ণনায় রয়েছে, কোনো মানুষের গুনাহের জন্য এটাই যথেষ্ট যে, পাওনাদারের প্রাপ্য হক নষ্ট করা। (মুসলিম)[1]

بَابُ النَّفَقَاتِ وَحَقِّ الْمَمْلُوْكِ

وَعَن عبد الله بن عَمْرو جَاءَهُ قَهْرَمَانٌ لَهُ فَقَالَ لَهُ: أَعْطَيْتَ الرَّقِيقَ قُوتَهُمْ؟ قَالَ: لَا قَالَ: فَانْطَلِقْ فَأَعْطِهِمْ فَإِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «كَفَى بِالرَّجُلِ إِثْمًا أَنْ يَحْبِسَ عَمَّنْ يَمْلِكُ قُوتَهُ» . وَفِي رِوَايَةٍ: «كَفَى بِالْمَرْءِ إِثْمًا أَنْ يُضَيِّعَ مَنْ يَقُوتُ» . رَوَاهُ مُسلم

وعن عبد الله بن عمرو جاءه قهرمان له فقال له اعطيت الرقيق قوتهم قال لا قال فانطلق فاعطهم فان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال كفى بالرجل اثما ان يحبس عمن يملك قوته وفي رواية كفى بالمرء اثما ان يضيع من يقوت رواه مسلم

ব্যাখ্যা: (قَهْرَمَانٌ) শব্দটি ‘কাফ’ হরফে যবর, ‘হা’ হরফে সাকিন এবং ‘রা’ অক্ষরে যবর দিয়ে। পারস্য শব্দ। যার অর্থ হলো : মানুষের প্রয়োজন দেখাশুনার জন্য দায়িত্বশীল খাজাঞ্চি। ওয়াকীল অর্থেও শব্দটি ব্যবহৃত হয়। (শারহে মুসলিম ৭/৮ খন্ড, হাঃ ৯৯৬)
হাদীসের দু’টি বর্ণনা উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রথম বর্ণনাটি হলো: (كَفٰى بِالرَّجُلِ إِثْمًا أَنْ يَحْبِسَ عَمَّنْ يَمْلِكُ قُوتَه) যার অর্থ লোক গুনাহগার হওয়ার জন্য এইটুকু যথেষ্ট যে, সে যার খাবারের মালিক তথা দায়িত্বশীল তার খাবার আটকে রাখা।

দ্বিতীয় বর্ণনা: (كَفٰى بِالْمَرْءِ إِثْمًا أَنْ يُضَيِّعَ مَنْ يَقُوتُ) মানুষ গুনাহগার হওয়ার জন্য এইটুকু যথেষ্ট যে, পরিবারের যার খাবার দায়িত্ব তার ওপর তাকে ধ্বংস করা। উভয় বর্ণনার মর্ম এক। অর্থাৎ খাবারের দায়িত্ব যার ওপর রয়েছে তিনি খাবার আটকে রেখে অধীনস্থকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেয়া। তাই পরিবারের দায়িত্বশীল ব্যক্তির জন্য যার ভরণ-পোষণ তার ওপর রয়েছে তাদের খাবার আটকে রেখে বিপদের দিকে ফেলা বৈধ নয়। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৩: বিবাহ (كتاب النكاح) 13. Marriage

পরিচ্ছেদঃ ১৭. প্রথম অনুচ্ছেদ - স্ত্রীর খোরপোষ ও দাস-দাসীর অধিকার

৩৩৪৭-[৬] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের খাদিম যখন তোমাদের জন্য খাদ্য প্রস্তুত করে নিয়ে আসে, আর সে-ই খাদ্য প্রস্তুতকালে তাপ ও ধোঁয়ার কষ্ট সহ্য করে, তবে তাকে যেন নিজের সাথে বসিয়ে খাওয়ায়। নিতান্তই যদি খাদ্যের পরিমাণ কম হয়, তবে তা হতে এক-দুই লোকমা যেন তার হাতে তুলে দেয়। (মুসলিম)[1]

بَابُ النَّفَقَاتِ وَحَقِّ الْمَمْلُوْكِ

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا صَنَعَ لِأَحَدِكُمْ خَادِمُهُ طَعَامَهُ ثُمَّ جَاءَهُ بِهِ وَقَدْ وَلِيَ حره ودخانه فليقعده مَعَه فَليَأْكُل وَإِن كَانَ الطَّعَامُ مَشْفُوهًا قَلِيلًا فَلْيَضَعْ فِي يَدِهِ مِنْهُ أَكلَة أَو أكلتين» . رَوَاهُ مُسلم

وعن ابي هريرة قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا صنع لاحدكم خادمه طعامه ثم جاءه به وقد ولي حره ودخانه فليقعده معه فلياكل وان كان الطعام مشفوها قليلا فليضع في يده منه اكلة او اكلتين رواه مسلم

ব্যাখ্যা: (مَشْفُوْهًا قَلِيْلًا) প্রথম ও দ্বিতীয় শব্দের একই অর্থ। সম্ভবত তাকিদ হিসেবে দ্বিতীয় শব্দটি নিয়ে আসা হয়েছে। অর্থাৎ মানুষ হিসেবে খাবার যদি তুলনামূলক একেবারেই কম হয় তবুও এই খাবারের জন্য যে শ্রম দিয়েছে প্রথমেই তার হাতে এক দুই লোকমা তুলে দেয়া।

হাদীসটিতে সামাজিক উত্তম শিষ্টাচারের প্রতি, খাবারের ক্ষেত্রে পরস্পর সহমর্মিতার প্রতি উৎসাহ দেয়া হয়েছে। বিশেষ করে যে খাবারের ব্যবস্থাপনা করে সে যখন এর জন্য অনেক কষ্ট করেছে, রান্না করতে আগুনের তাপ ও ধোঁয়া সহ্য করেছে, খাবারের সাথে নিজেকে লাগিয়েছে, খাবারের গন্ধ শুকেছে তাকে প্রথমে এই খাবার থেকে দেয়া ইসলামিক শিষ্টাচারের অংশ এবং মানবিক বিবেক, যা শিক্ষা দিলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তবে হাদীসের এ সমস্ত নির্দেশ মুস্তাহাব পর্যায়ের। (শারহে মুসলিম ১১/১২ খন্ড, হাঃ ১৬৬৩)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৩: বিবাহ (كتاب النكاح) 13. Marriage

পরিচ্ছেদঃ ১৭. প্রথম অনুচ্ছেদ - স্ত্রীর খোরপোষ ও দাস-দাসীর অধিকার

৩৩৪৮-[৭] ’আব্দুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোনো দাস যখন স্বীয় মালিকের কল্যাণকামী হয় ও উত্তমরূপে আল্লাহ তা’আলার ’ইবাদাত (সৎকর্ম) করে, তখন তাকে দ্বিগুণ সাওয়াব প্রদান করা হয়। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ النَّفَقَاتِ وَحَقِّ الْمَمْلُوْكِ

وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِنَّ الْعَبْدَ إِذَا نَصَحَ لِسَيِّدِهِ وَأَحْسَنَ عِبَادَةَ اللَّهِ فَلَهُ أَجْرُهُ مرَّتَيْنِ»

وعن عبد الله بن عمر رضي الله عنهما ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال ان العبد اذا نصح لسيده واحسن عبادة الله فله اجره مرتين

ব্যাখ্যা: ইতোপূর্বে বর্ণিত হাদীসগুলোতে দাসের প্রতি মালিকের আচরণের কথা বলা হয়েছে বলে আমরা দেখতে পেয়েছি। দাসের প্রতি মালিকের যেমন কিছু করণীয় রয়েছে, দাসের ওপরও মালিকের প্রতি কিছু করণীয় রয়েছে, আর তা হলো মালিকের সেবা সঠিভাবে আঞ্জাম দেয়া। যে দাস তার মালিকের প্রতি অনুগত এবং আল্লাহ তা‘আলার প্রতিও অনুগত, এমন দাসের মর্যাদার কথা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ হাদীসে বলেছেন।

(إِنَّ الْعَبْدَ إِذَا نَصَحَ لِسَيِّدِه) ‘আরবীতে নাসীহাত শব্দটি ব্যাপক অর্থবোধক। যার সার কথা হলো, যে কোনো পন্থায় কারো কল্যাণ কামনা করা। দাস তার মুনীবের কল্যাণ কামনা বলতে : মুনীবের সেবায় নিরেটভাবে নিয়োজিত থাকা, মুনীবের জন্য কল্যাণ কামনা করা, সুপরামর্শ দেয়া ইত্যাদি।

(فَلَه أَجْرُه مَرَّتَيْنِ) তবে সে দ্বিগুণ প্রতিদান পাবে। কেননা প্রতিদানের বিষয়টি কষ্টের উপর নির্ভর করে। কোনো কাজ করতে যাকে যত বেশি বেগ পেতে হয় তার প্রতিদান তত বেশি থাকে। দাস এখানে দু’টি আনুগত্য একত্রে পালন করছে। এক তার প্রভুর আনুগত্য। দুই তার মালিকের আনুগত্য। মালিকের আনুগত্যের সাথে সাথে প্রভুর আনুগত্য করার দরুন তার ওপর অতিরিক্ত চাপ রয়েছে যা স্বাধীন ব্যক্তির ওপর নেই। তাই স্বাধীন ব্যক্তির তুলনায় সে দ্বিগুণ প্রতিদান পাবে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৩: বিবাহ (كتاب النكاح) 13. Marriage

পরিচ্ছেদঃ ১৭. প্রথম অনুচ্ছেদ - স্ত্রীর খোরপোষ ও দাস-দাসীর অধিকার

৩৩৪৯-[৮] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ঐ দাসের জন্য কতই না সৌভাগ্য, যে উত্তমরূপে আল্লাহ তা’আলার ’ইবাদাত করে এবং স্বীয় মালিকের পূর্ণ আনুগত্যের মধ্যে মৃত্যুবরণ করে। সে কতই না ভাগ্যবান! (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ النَّفَقَاتِ وَحَقِّ الْمَمْلُوْكِ

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «نِعِمَّا لِلْمَمْلُوكِ أَنْ يَتَوَفَّاهُ اللَّهُ بِحُسْنِ عِبَادَةِ رَبِّهِ وَطَاعَة سَيّده نعما لَهُ»

وعن ابي هريرة قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم نعما للمملوك ان يتوفاه الله بحسن عبادة ربه وطاعة سيده نعما له

ব্যাখ্যা: (نِعِمَّا) শব্দটি কয়েকভাবে উচ্চরণ করা যায়। প্রথম অক্ষর ‘নূনে’ যবর অথবা যের সহ ‘আইন’ হরফে যের এবং ‘মীম’ হরফে তাশদীদ দিয়ে। যেমন ‘না‘ইম্মা’ বা ‘নি‘ইম্মা’। আবার মাঝের হরফ ‘আইনে’ সাকিন দিয়ে আরো দুইভাবে যেমনঃ ‘না‘মা’ বা নি‘মা’। (ফাতহুল বারী ৫ম খন্ড, হাঃ ২৫৪৯)

‘আরবীতে একে প্রশংসার ক্রিয়া বলা হয়। কারো কাজ প্রশংসনীয় হলে মুগ্ধ হয়ে এই সব ক্রিয়া ব্যবহার করা হয়। অতএব যে দাস বা গোলাম তাঁর প্রতিপালক ও মুনীব উভয়ের আনুগত্য করবে এবং এই অবস্থায় সে মারা যাবে তার প্রশংসা করে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘কতই না ভালো সেই গোলাম যে তার প্রতিপালকের ‘ইবাদাত এবং মালিকের আনুগত্য করা অবস্থায় আল্লাহ তা‘আলা তার মৃত্যু দেন।

আমরা দেখছি যে, প্রশংসামূলক ক্রিয়াটি হাদীসে দুইবার ব্যবহার করা হয়েছে। এ থেকে এমন গোলামের মর্যাদা সহজেই অনুমেয়।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৩: বিবাহ (كتاب النكاح) 13. Marriage

পরিচ্ছেদঃ ১৭. প্রথম অনুচ্ছেদ - স্ত্রীর খোরপোষ ও দাস-দাসীর অধিকার

৩৩৫০-[৯] জারীর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে দাস পালিয়ে যায়, তার সালাত গৃহীত হয় না।

অপর বর্ণনায় আছে, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ পলাতক দাসের ওপর (ইসলামের) কোনো দায়ভার নেই। অপর বর্ণনায় আছে যে, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ যে গোলাম স্বীয় মালিক হতে পালিয়ে যায়, সে অবশ্যই কুফরী করে যতক্ষণ পর্যন্ত না মালিকের নিকট ফিরে আসে। (মুসলিম)[1]

بَابُ النَّفَقَاتِ وَحَقِّ الْمَمْلُوْكِ

وَعَنْ جَرِيرٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا أَبَقَ الْعَبْدُ لَمْ تُقْبَلْ لَهُ صَلَاةٌ» . وَفِي رِوَايَةٍ عَنْهُ قَالَ: «أَيّمَا عبد أبق فقد بَرِئت مِنْهُ الذِّمَّةُ» . وَفِي رِوَايَةٍ عَنْهُ قَالَ: «أَيُّمَا عَبْدٍ أَبَقَ مِنْ مَوَالِيهِ فَقَدْ كَفَرَ حَتَّى يَرْجِعَ إِلَيْهِم» . رَوَاهُ مُسلم

وعن جرير قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا ابق العبد لم تقبل له صلاة وفي رواية عنه قال ايما عبد ابق فقد برىت منه الذمة وفي رواية عنه قال ايما عبد ابق من مواليه فقد كفر حتى يرجع اليهم رواه مسلم

ব্যাখ্যা: গোলামের জন্য মুনীবের আনুগত্য করা জরুরী এবং মুনীবের কাছ থেকে পালিয়ে যাওয়া হারাম। আনুগত্যের মাঝে যেমন তার মর্যাদা রয়েছে, তদ্রূপ এর বিপরীত পলায়নের মাঝে তার জন্য অনেক ধমকি রয়েছে। গোলামের পলায়ন কোন্ ধরনের অপরাধ, তা এ হাদীসে উল্লেখ করা হয়েছে। পলায়নের অপরাধ সংক্রান্ত তিনটি বর্ণনা এখানে একত্র করা হয়েছে। এক হাদীসে বলা হয়েছে, ‘‘যখন গোলাম পলায়ন করে তার কোনো সালাত কবুল হয় না’’। সালাত কবুল হয় না অর্থাৎ সে এই সালাতের কোনো সাওয়াব পায় না। যদিও সালাতের সমস্ত শর্ত এবং রুকন পাওয়ার কারণে তার সালাত শুদ্ধ হয়ে যাবে এবং সে ফরয আদায় করেছে বলা যাবে। কিন্তু এর দ্বারা সে কোনো সাওয়াব পাবে না। তাই হাদীস ‘সালাত শুদ্ধ হবে না’ এ কথা বলা হয়নি, বরং বলা হয়েছে সালাত কবুল হবে না।

আরেক বর্ণনায় এসেছে, (فقد برئت منه الذمة) অর্থাৎ তার ওপর থেকে যিম্মাহ্ উঠে যাবে, অর্থাৎ তার কোনো যিম্মাহ্ নেই। যিম্মাহ্ অর্থ নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি। অর্থাৎ নিরাপত্তার যে প্রতিশ্রুতি সে পেয়েছিল তা নষ্ট হয়ে যাবে। যেমন কোনো কোনো বর্ণনায় এসেছে, (ذمة الله تعالى وذمة رسول الله ﷺ) অর্থাৎ আল্লাহ এবং রসূলের যিম্মাহ্। এভাবে গোলাম তার মুনীবের আওতায় থাকলেও মুনীবের শাস্তি থেকে সে রক্ষেত ছিল। অর্থাৎ তাকে শাস্তি দেয়ার অধিকার মুনীবের ছিল না। পলায়নের কারণে তার এ অধিকার নষ্ট হয়ে গেছে। (শারহে মুসলিম ১/২ খন্ড, হাঃ ৭০; ১১/১২ খন্ড, হাঃ ৬৯)

সর্বশেষ বর্ণনায় পলায়নের সবচেয়ে বড় অপরাধের কথা বলা হয়েছে। অর্থাৎ যে পলায়ন করলো সে কুফরী করলো। কুরআন হাদীসের আলোকে আহলুস্ সুন্নাহ্ ওয়াল জামা‘আতের ‘আকীদা মতে কেউ কবীরা গুনাহ করলেই কাফির হয়ে যায় না। তাই কুফরী করলো বলতে, কুফরীর নিকবর্তী হয়ে গেল অথবা তার কাফির হয়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে অথবা সে এমন কাজ করেছে যা মূলত কাফিরের কাজ। ঈমান পরিত্যাগ না করলে সে কাফির হয়ে গেছে, এ কথা বলা যাবে না। তবে সে যদি পলায়নকে বৈধ মনে করে তখন প্রকৃতপক্ষেই কাফির হয়ে যাবে। কেননা হারামকে হালাল বিশ্বাস করা কুফরী কর্ম। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৩: বিবাহ (كتاب النكاح) 13. Marriage

পরিচ্ছেদঃ ১৭. প্রথম অনুচ্ছেদ - স্ত্রীর খোরপোষ ও দাস-দাসীর অধিকার

৩৩৫১-[১০] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আবুল কাসিম (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি স্বীয় দাসের ওপর (ব্যভিচারের) মিথ্যারোপ করে অথচ সে তা হতে মুক্ত; তাকে (মালিককে) কিয়ামতের দিন কোড়া লাগানো বা চাবুক মারা হবে অবশ্য গোলাম যদি তার অপবাদ অনুযায়ী হয় (তবে মালিককে বেত্রাঘাত করা হবে না)। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ النَّفَقَاتِ وَحَقِّ الْمَمْلُوْكِ

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: سَمِعْتُ أَبَا الْقَاسِمِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «مَنْ قَذَفَ مَمْلُوكَهُ وَهُوَ بَرِيءٌ مِمَّا قَالَ جُلِدَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِلَّا أَنْ يَكُونَ كَمَا قَالَ»

وعن ابي هريرة قال سمعت ابا القاسم صلى الله عليه وسلم يقول من قذف مملوكه وهو بريء مما قال جلد يوم القيامة الا ان يكون كما قال

ব্যাখ্যা: নাসায়ীর বর্ণনায় রয়েছে, (أقام عليه الحد يوم القيامة) অর্থাৎ কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা‘আলা তার ওপর দণ্ডবিধি কায়িম করবেন। উভয় বর্ণনার আলোকে বুঝা যায় যে, মুনীব তার গোলামের ওপর অপবাদ দিলে দণ্ডবিধির শাস্তি দুনিয়ায় কায়িম করা হবে না। দুনিয়ায় কায়িম হয়নি বলেই আল্লাহ তা‘আলা কিয়ামত দিবসে তার দণ্ডবিধি কায়িম করে তার প্রতি অবিচারের বিচার করবেন। দুনিয়ায় দণ্ড কায়িমের নিয়ম থাকলে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুনিয়ার কথাও বলে দিতেন যেমন আখিরাতের কথা বলে দিয়েছেন। এটাকেই ‘আলিমদের সর্বসম্মত মত বলে উল্লেখ করা হয়। (ফাতহুল বারী ১২শ খন্ড, হাঃ ৬৮৫৮)

ইমাম নববী বলেনঃ হাদীসে ইঙ্গিত রয়েছে যে, গোলামের ওপর অপবাদ দেয়া হলে দণ্ডবিধি কায়িম হবে না। এটা সর্বসম্মত মত। তবে অপবাদ যে দিবে তাকে তা‘যীর বা উপযুক্ত কিছু শাস্তি অবশ্যই দিবে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৩: বিবাহ (كتاب النكاح) 13. Marriage

পরিচ্ছেদঃ ১৭. প্রথম অনুচ্ছেদ - স্ত্রীর খোরপোষ ও দাস-দাসীর অধিকার

৩৩৫২-[১১] ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি স্বীয় দাসের ওপর বিনা দোষে ’হাদ্দ’ (শাস্তি) প্রয়োগ করে অথবা থাপ্পড় মারে, তবে তার কাফফারা হলো তাকে মুক্ত করা। (মুসলিম)[1]

بَابُ النَّفَقَاتِ وَحَقِّ الْمَمْلُوْكِ

وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «مَنْ ضَرَبَ غُلَامًا لَهُ حَدًّا لَمْ يَأْتِهِ أَوْ لَطَمَهُ فَإِن كَفَّارَته أَن يعتقهُ» . رَوَاهُ مُسلم

وعن ابن عمر قال سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول من ضرب غلاما له حدا لم ياته او لطمه فان كفارته ان يعتقه رواه مسلم

ব্যাখ্যা: হাদীসের মর্ম হলো বিনা অপরাধে বা বিনা কারণে গোলামকে প্রহার করলে এ অপরাধের কাফফারা তথা এ থেকে মুক্ত হওয়ার উপায় হলো, উক্ত গোলামকে আযাদ করে দেয়া। তবে সবার মতে এই কাফ্ফারার নির্দেশটি ওয়াজিব হিসেবে নয় বরং মুস্তাহাব হিসেবে দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ যে এমন অপরাধ করবে সে তার গুনাহের কাফ্ফারার আশায় উক্ত গোলামকে ‘আযাব বা মুক্ত করে দিবে। হাদীসে কাফফারার হুকুমটি ওয়াজিব না হওয়ার দলীল হিসেবে সুওয়াই বিন মুকাররিন থেকে বর্ণিত সহীহ মুসলিমের হাদীসটি উল্লেখযোগ্য। হাদীসে রয়েছে, রসূলের সময়ে তাদের কেউ তাদের গোলামকে থাপ্পড় মারলে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই গোলামকে আযাদ করে দেয়ার নির্দেশ দেন। সাহাবীরা বললেন, তাদের এছাড়া আর কোনো গোলাম নেই। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তারা যেন এরই সেবা নেয়, তবে যখন দরকার থাকবে না তখন যেন একে আযাদ করে দেয়।

‘উলামাগণ এ কথার উপর একমত যে, মুনীব যদি তার দাসকে অতি সাধারণ হালকা শাস্তি দেয় তবে তার জন্য গোলামকে আযাদ করতে হবে না। কিন্তু যদি কঠিন প্রহার করে, যেমন প্রহার করে তার একটি অঙ্গ নষ্ট করে দিলো, এ ক্ষেত্রে ইমাম মালিক ও তার ছাত্ররা এবং ইমাম লায়স-এর মতে গোলামকে আযাদ করে দেয়া ওয়াজিব। অন্যান্য ‘আলিমদের মতে আযাদ করা ওয়াজিব নয়, তবে বাদশাহ এর বিচার স্বরূপ মুনীবকে শাস্তি দিবে। (শারহে মুসলিম ১১/১২ খন্ড, হাঃ ১৬৫৭)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৩: বিবাহ (كتاب النكاح) 13. Marriage

পরিচ্ছেদঃ ১৭. প্রথম অনুচ্ছেদ - স্ত্রীর খোরপোষ ও দাস-দাসীর অধিকার

৩৩৫৩-[১২] আবূ মাস্’ঊদ আল আনসারী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি স্বীয় দাসকে প্রহাররত অবস্থায় আমার পেছন হতে উচ্চস্বরে একটি আওয়াজ শুনলাম, হে আবূ মাস্’ঊদ! সাবধান! তুমি তোমার দাসের ওপর যতটুকু ক্ষমতা রাখ আল্লাহ তদপেক্ষা তোমার ওপর অধিক ক্ষমতার অধিকারী। অতঃপর আমি পিছন ফিরে দেখি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (এ কথাটি) বলছেন। আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! তাকে আল্লাহর ওয়াস্তে মুক্ত করে দিলাম। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তুমি যদি এটা না করতে তবে জাহান্নামের আগুন তোমাকে ঝলসিয়ে দিত। (মুসলিম)[1]

بَابُ النَّفَقَاتِ وَحَقِّ الْمَمْلُوْكِ

وَعَنْ أَبِي مَسْعُودٍ الْأَنْصَارِيِّ قَالَ: كُنْتُ أَضْرِبُ غُلَامًا لِي فَسَمِعْتُ مِنْ خَلْفِي صَوْتًا: «اعْلَمْ أَبَا مَسْعُودٍ لَلَّهُ أَقْدَرُ عَلَيْكَ مِنْكَ عَلَيْهِ» فَالْتَفَتُّ فَإِذَا هُوَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ هُوَ حُرٌّ لِوَجْهِ اللَّهِ فَقَالَ: «أَمَا لَوْ لَمْ تَفْعَلْ لَلَفَحَتْكَ النَّارُ أَوْ لَمَسَّتْكَ النَّارُ» . رَوَاهُ مُسلم

وعن ابي مسعود الانصاري قال كنت اضرب غلاما لي فسمعت من خلفي صوتا اعلم ابا مسعود لله اقدر عليك منك عليه فالتفت فاذا هو رسول الله صلى الله عليه وسلم فقلت يا رسول الله هو حر لوجه الله فقال اما لو لم تفعل للفحتك النار او لمستك النار رواه مسلم

ব্যাখ্যা: اَللّٰهُ أَقْدَرُ عَلَيْكَ مِنْكَ عَلَيْهِ)) অর্থাৎ তুমি তার ওপর যতটুকু ক্ষমতাবান আল্লাহ তোমার ওপর তার চেয়ে অধিক ক্ষমতাবান। মর্ম হলো, আজ তার ক্ষমতা না থাকায় তোমার অবিচারের পাল্টা প্রতিশোধ নিতে পারেনি। কিন্তু একদিন সবাইকে আল্লাহর সম্মুখীন হতে হবে যার ক্ষমতা সবার ওপর। সেদিন সব জুলুমের বিচার করা হবে। কেউ তা প্রতিরোধ করতে পারবে না।

(أَمَا لَوْ لَمْ تَفْعَلْ لَلَفَحَتْكَ النَّارُ أَوْ لَمَسَّتْكَ النَّارُ) অর্থাৎ তুমি তাকে আযাদ না করে দিলে জাহান্নামের আগুন তোমাকে ঝলসিয়ে দিত অথবা জাহান্নামের আগুন তোমায় স্পর্শ করত।

এখানে গোলামকে অন্যায়ভাবে মারার শাস্তির কথা বলা হয়েছে। এই শাস্তি থেকে মুক্তি পাওয়ার রাস্তা হলো তাকে আযাদ করে দেয়া। ইমাম নববী বলেনঃ মুসলিমরা একমত যে, এ কারণে গোলামকে আযাদ করা ওয়াজিব নয়, তবে তা মুস্তাহাব। আযাদ করে দিলে মুস্থাহাবের সাথে সাথে তার গুনাহের কাফফারা হয়ে যাবে এবং যে অন্যায় অবিচার করা হয়েছিল এই গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৩: বিবাহ (كتاب النكاح) 13. Marriage
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ১২ পর্যন্ত, সর্বমোট ১২ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে