পরিচ্ছেদঃ ২০. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ওয়াসিয়্যাত (অন্তিম উপদেশ বা নির্দেশ)

৩০৭২-[৩] সা’দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রোগাগ্রস্ত হয়ে পড়লে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে দেখতে এসে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি ওয়াসিয়্যাত করার ইচ্ছা করেছ? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, কি পরিমাণ? আমি বললাম, আমার সমস্ত ধন-সম্পদ আল্লাহর পথে দিতে ইচ্ছা পোষণ করেছি। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তোমার সন্তানের জন্য কি রাখতে চাও? আমি বললাম, তারা বহু সম্পদের অধিকারী। তিনি বললেন, তারপরও তুমি এক-দশমাংশ ওয়াসিয়্যাত কর! তিনি (সা’দ) বলেন, আমি সর্বদা তাঁকে ’এটা কম হয়, এটা কম হয়’ বলতে থাকলাম। পরিশেষে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তবে এক-তৃতীয়াংশ ওয়াসিয়্যাত করতে পার, আর এক-তৃতীয়াংশও অধিক। (তিরমিযী)[1]

عَن سَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ قَالَ: عَادَنِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَنَا مَرِيضٌ فَقَالَ: «أَوْصَيْتَ؟» قُلْتُ: نَعَمْ قَالَ: «بِكَمْ؟» قُلْتُ: بِمَالِي كُلِّهِ فِي سَبِيلِ اللَّهِ. قَالَ: «فَمَا تَرَكْتَ لِوَلَدِكَ؟» قُلْتُ: هُمْ أَغْنِيَاءُ بِخَيْرٍ. فَقَالَ: «أوص بالعشر» فَمَا زَالَت أُنَاقِصُهُ حَتَّى قَالَ: «أَوْصِ بِالثُّلُثِ وَالثُّلُثُ كَثِيرٌ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

عن سعد بن ابي وقاص قال عادني رسول الله صلى الله عليه وسلم وانا مريض فقال اوصيت قلت نعم قال بكم قلت بمالي كله في سبيل الله قال فما تركت لولدك قلت هم اغنياء بخير فقال اوص بالعشر فما زالت اناقصه حتى قال اوص بالثلث والثلث كثير رواه الترمذي

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১২: ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা) (كتاب البيوع) 12. Business Transactions

পরিচ্ছেদঃ ২০. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ওয়াসিয়্যাত (অন্তিম উপদেশ বা নির্দেশ)

৩০৭৩-[৪] আবূ উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বিদায় হজে/হজ্জের খুৎবায় বলতে শুনেছি, আল্লাহ প্রত্যেক হকদারকে তার হক দিয়ে দিয়েছেন। সুতরাং কোনো ওয়ারিসের জন্যই কোনো ওয়াসিয়্যাত নেই। (আবূ দাঊদ ও ইবনু মাজাহ)[1]

ইমাম তিরমিযী অতিরিক্ত বলেছেন, [তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এটাও বলেছেনঃ] সন্তান বিছানার মালিকের; আর ব্যভিচারীর জন্য রয়েছে পাথর। আর পরকালে তাদের হিসাব আল্লাহর হাতে।

وَعَنْ أَبِي أُمَامَةَ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ فِي خُطْبَتِهِ عَامَ حَجَّةِ الْوَدَاعِ: «إِنِ اللَّهَ قَدْ أَعْطَى كُلَّ ذِي حَقٍّ حَقَّهُ فَلَا وَصِيَّةَ لِوَارِثٍ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَابْنُ مَاجَهْ وَزَادَ التِّرْمِذِيُّ: «الْوَلَدُ لِلْفَرَاشِ وَلِلْعَاهِرِ الْحَجَرُ وَحِسَابُهُمْ عَلَى اللَّهِ»

وعن ابي امامة قال سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول في خطبته عام حجة الوداع ان الله قد اعطى كل ذي حق حقه فلا وصية لوارث رواه ابو داود وابن ماجه وزاد الترمذي الولد للفراش وللعاهر الحجر وحسابهم على الله

ব্যাখ্যা: উক্ত হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বিদায় হজে/হজ্জের খুৎবা কিয়দাংশ আলোচিত হয়েছে। তিনি বলেন- নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা প্রত্যেক অধিকারীর অধিকার বা অংশ নির্ধারণ করে দিয়েছেন। অর্থাৎ- সুস্পষ্টরূপে বর্ণনা করে দিয়েছেন। সুতরাং কোনো ওয়ারিসের জন্যে ওয়াসিয়্যাত করা বৈধ হবে না। কেননা ওয়ারিসদের জন্য আল্লাহ তা‘আলা তাদের প্রাপ্ত অংশকে সু-নির্ধারিত করেছেন। তাই ওয়ারিসদের মীরাসের আয়াত নাযিল হওয়ার পূর্বে ওয়ারিসদের জন্য ওয়াসিয়্যাত ফরয ছিল, মীরাসের আয়াত নাযিল হলে তা বাতিল হয়ে যায়। তবু কেউ যদি করে ফেলে তাবে ওয়ারিসদের অনুমতিক্রমে তা বৈধ হবে। তিনি আরো বলেন, সন্তান তারই হবে যার অধীনে সন্তানের মা রয়েছে এবং যিনাকারীর জন্য রয়েছে পাথর তথা শারী‘আত কর্তৃক শাস্তি। উক্ত শাস্তি পৃথিবীতে যিনাকারীদের কার্যকর করা হবে এবং তাদের যাবতীয় হিসাব আল্লাহর ওপর। ইচ্ছা করলে তিনি তাকে পরকালে শাস্তি দিবেন, আর যদি ইচ্ছা করেন তাহলে তাকে ক্ষমা করবেন। বলা হয় যে, যদি কারো ওপর শারী‘আতের হাদ্দ কার্যকর করা হয় তাকে পরকালে শাস্তি দেয়া হবে না। কেননা আল্লাহ তা‘আলা পরম ক্ষমাশীল। (‘আওনুল মা‘বূদ ৫ম খন্ড, হাঃ ২৮৭; তুহফাতুল আহওয়াযী ৫ম খন্ড, হাঃ ২১২০; মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১২: ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা) (كتاب البيوع) 12. Business Transactions

পরিচ্ছেদঃ ২০. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ওয়াসিয়্যাত (অন্তিম উপদেশ বা নির্দেশ)

৩০৭৪-[৫] ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ওয়ারিসের জন্য ওয়াসিয়্যাত নেই, তবে যদি ওয়ারিসরা অনুমতি দেয়। মাসাবীহ-এর এ শব্দ কর্তিত হয়েছে; আর দারাকুত্বনীর বর্ণনায় রয়েছে, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ ওয়ারিসের জন্য ওয়াসিয়্যাত জায়িয নেই, তবে ওয়ারিসরা অনুমতি দিলে।[1]

وَيُرْوَى عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَا وَصِيَّةَ لِوَارِثٍ إِلَّا أَنْ يَشَاءَ الْوَرَثَةُ» مُنْقَطِعٌ هَذَا لَفْظُ الْمَصَابِيحِ. وَفِي رِوَايَةِ الدَّارَقُطْنِيِّ: قَالَ: «لَا تَجُوزُ وَصِيَّةٌ لِوَارِثٍ إِلَّا أَنْ يَشَاء الْوَرَثَة»

ويروى عن ابن عباس رضي الله عنهما عن النبي صلى الله عليه وسلم قال لا وصية لوارث الا ان يشاء الورثة منقطع هذا لفظ المصابيح وفي رواية الدارقطني قال لا تجوز وصية لوارث الا ان يشاء الورثة

হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১২: ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা) (كتاب البيوع) 12. Business Transactions

পরিচ্ছেদঃ ২০. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ওয়াসিয়্যাত (অন্তিম উপদেশ বা নির্দেশ)

৩০৭৫-[৬] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোনো পুরুষ বা নারী ষাট বছর যাবৎ আল্লাহর ’ইবাদাত করে, অতঃপর তাদের নিকট যখন মৃত্যু এসে পৌঁছে, আর তখন তারা ওয়াসিয়্যাত দ্বারা ওয়ারিসের ক্ষতি করে, যাতে তাদের জন্য জাহান্নাম অবধারিত হয়ে যায়। অতঃপর আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) এ আয়াত পাঠ করলেনঃ مِنْۢ بَعْدِ وَصِيَّةٍ يُوْصِىْ بِهَا أَوْ دَيْنٍ ’’ওয়াসিয়্যাতের পর যা ওয়াসিয়্যাত করা হয় এবং ঋণ পরিশোধের পর যদি ওয়াসিয়্যাতকারী ক্ষতি না করে- এটাই বড় সাফল্য’’ আল্লাহ তা’আলার এ বাণী পর্যন্ত। (আহমাদ, তিরমিযী, আবূ দাঊদ ও ইবনু মাজাহ)[1]

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِنَّ الرَّجُلَ لَيَعْمَلُ وَالْمَرْأَةَ بِطَاعَةِ اللَّهِ سِتِّينَ سَنَةً ثُمَّ يَحْضُرُهُمَا الْمَوْتُ فَيُضَارَّانِ فِي الْوَصِيَّةِ فَتَجِبُ لَهُمَا النَّارُ» ثُمَّ قَرَأَ أَبُو هُرَيْرَةَ (مِنْ بَعْدِ وَصِيَّةٍ يُوصَى بِهَا أَوْ دَيْنٍ غير مضار)
إِلَى قَوْله (وَذَلِكَ الْفَوْز الْعَظِيم)
رَوَاهُ أَحْمَدُ وَالتِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ وَابْنُ مَاجَهْ

وعن ابي هريرة عن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال ان الرجل ليعمل والمراة بطاعة الله ستين سنة ثم يحضرهما الموت فيضاران في الوصية فتجب لهما النار ثم قرا ابو هريرة من بعد وصية يوصى بها او دين غير مضارالى قوله وذلك الفوز العظيمرواه احمد والترمذي وابو داود وابن ماجه

ব্যাখ্যা: আলোচ্য হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওয়াসিয়্যাত করার মাধ্যমে ওয়ারিসের অধিকার নষ্টকারীকে জাহান্নামের সংবাদ দিয়েছেন। তিনি বলেন- যদি কোনো পুরুষ বা স্ত্রীলোক ষাট বছর পর্যন্ত আল্লাহর আনুগত্যে জীবন অতিবাহিত করে। অতঃপর যখন তাদের দু’জনের মৃত্যুর সময় নিকটবর্তী হয়। তখন তারা ওয়াসিয়্যাতের মাধ্যমে উত্তরাধিকারীর ক্ষতি করে। তথা কোনো অপরিচিত ব্যক্তির জন্য এক-তৃতীয়াংশের বেশি ওয়াসিয়্যাত করে বা সমুদয় সম্পদ যে কোনো এক ওয়ারিসকে দান করে দেয় যাতে অন্যান্য ওয়ারিসরা তার সম্পদ থেকে কোনো অংশ না পায়। এমতাবস্থায় তাদের উভয়ের জন্য জাহান্নামের আগুন অবধারিত হয়ে যায়। কেননা এতে আল্লাহর বিধানকে অবজ্ঞা করা হয়।

এ সময় আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) নিমেণাক্ত আয়াতটি তিলাওয়াত করেন- অর্থাৎ- ‘‘ওয়াসিয়্যাতের পর যা ওয়াসিয়্যাত করা হয় এবং ঋণ পরিশোধের পর যদি ওয়াসিয়্যাতকারী ক্ষতি না করে- এটাই বড় সাফল্য’’ (‘আওনুল মা‘বূদ ৫ম খন্ড, হাঃ ২৮৬৪; তুহফাতুল আহওয়াযী ৫ম খন্ড, হাঃ ২১১৭; মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১২: ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা) (كتاب البيوع) 12. Business Transactions
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৪ পর্যন্ত, সর্বমোট ৪ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে