পরিচ্ছেদঃ ৪১. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সফরের সালাত

১৩৪৭-[১৫] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিনায় (চার রাক্’আত বিশিষ্ট সালাত) দু’ রাক্’আত সালাত আদায় করেছেন। তাঁরপর আবূ বকরও দু’ রাক্’আত সালাত আদায় করেছেন। অতঃপর ’উমার (রাঃ)ও দু’ রাক্’আত সালাত আদায় করেছেন। ’উসমান (রাঃ) তার খিলাফাতকালের প্রথম দিকে দু’ রাক্’আতই সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করতেন। কিন্তু পরে তিনি চার রাক্’আত আদায় করতে শুরু করেন।

ইবনু ’উমার (রাঃ)-এর ব্যাপারে বর্ণিত আছে যে, তিনি যখন ইমামের (’উসমান (রাঃ)-এর) সাথে সালাত আদায় করতেন, তখন চার রাক্’আত আদায় করতেন। আর একাকী হলে (সফরে) দু’ রাক্’আত আদায় করতেন। (বুখারী, মুসলিম)[1]

عَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: صَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بمنى رَكْعَتَيْنِ وَأَبُو بَكْرٍ بَعْدَهُ وَعُمَرُ بَعْدَ أَبِي بَكْرٍ وَعُثْمَانُ صَدَرًا مِنْ خِلَافَتِهِ ثُمَّ إِنَّ عُثْمَانَ صَلَّى بَعْدُ أَرْبَعًا فَكَانَ ابْنُ عُمَرَ إِذَا صَلَّى مَعَ الْإِمَامِ صَلَّى أَرْبَعًا وَإِذَا صلاهَا وَحده صلى رَكْعَتَيْنِ

عن ابن عمر قال صلى رسول الله صلى الله عليه وسلم بمنى ركعتين وابو بكر بعده وعمر بعد ابي بكر وعثمان صدرا من خلافته ثم ان عثمان صلى بعد اربعا فكان ابن عمر اذا صلى مع الامام صلى اربعا واذا صلاها وحده صلى ركعتين

ব্যাখ্যা: ইমাম নাবাবী (রহঃ) বলেন যে, ‘উসমান (রাঃ) তাঁর খিলাফাতের ছয় বছর পর মিনায় পূর্ণ সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করেছেন এটাই প্রসিদ্ধ।

এখানে ‘উসমান (রাঃ)-এর মিনায় সালাত পূর্ণ করে আদায়ের কারণ সম্পর্কে মতপার্থক্য রয়েছে।

প্রথম মতঃ কারণ ‘উসমান (রাঃ) মক্কায় অবস্থান করছিলেন। আহমাদের (১ম খন্ড, পৃঃ ৬২) রয়েছে যে, ‘উসমান (রাঃ) মিনায় চার রাক্‘আত সালাত আদায় করলেন, লোকজন তা অপছন্দ করলে তিনি বললেনঃ হে লোক সকল! আমি মক্কায় আসা থেকে এখানে অবস্থান করছি, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, যে কোন নগরীতে অবস্থান করবে সে যেন মুক্বীমের সালাত আদায় করে। (তবে হাদীসটির সানাদ য‘ঈফ)

দ্বিতীয় মতঃ ‘উসমান (রাঃ)-এর সালাত ক্বসর করা ও পূর্ণ করা উভয় জায়িয মনে করতেন আর তিনি জায়িয দু’টি বিষয়ে একটি গ্রহণ করেছেন এবং কঠিন হওয়ায় তিনি পূর্ণ সালাতকেই প্রাধান্য দিয়েছেন।

তৃতীয় মতঃ তিনি মনে করতেন যে, সালাত ক্বসর করাটা সফর অবস্থায় চলমান ব্যক্তির জন্য খাস। আর যে ব্যক্তি তার পূর্ণ সফর কোন স্থানে অবস্থান করবে তার জন্য মুক্বীম ব্যক্তির হুকুম প্রযোজ্য। এ ব্যাপারে আহমাদে ‘আব্বাদ ইবনু ‘আবদুল্লাহ ইবনুয্ যুবায়র (রাঃ) হতে হাসান সানাদে বর্ণিত রয়েছে যে, তিনি (‘আব্বাদ) বলেন, মু‘আবিয়াহ্ (রাঃ) মক্কায় হাজ্জে এসে আমাদের সাথে যুহরের সালাত দু’ রাক্‘আত আদায়ের পর দারুন্ নাদ্ওয়াহ্-এ ফিরে গেলেন, সেখানে মারওয়ান ও ‘আমর ইবনু ‘উসমান (রাঃ) ‘উসমান (রাঃ)-এর সালাত পূর্ণ করা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। জবাবে মু‘আবিয়াহ্ (রাঃ) বললেনঃ ..... যখন ‘উসমান (রাঃ) হাজ্জ (হজ/হজ্জ) শেষ করতেন এবং মিনায় অবস্থান করতেন তখন তিনি সালাত পূর্ণ করতেন। (হাজ্জের (হজ্জের/হজের) সফরে মিনায় ও ‘আরাফায় ক্বসর করতেন)।

হাফিয আসক্বালানী (রহঃ) বলেন, এ পন্থাই উত্তম।

চতুর্থ মতঃ ‘উসমান (রাঃ) মিনায় চার রাক্‘আত সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করতেন, কারণ সে বছরে আরবীগণ অনেক বেশী ছিল বিধায় তিনি তাদেরকে মৌলিক সালাত চার রাক্‘আত শিক্ষা দেয়াই বেশী পছন্দ করলেন বিধায় তিনি চার রাক্‘আত আদায় করেছেন।

ইবনু হাজার (রহঃ) বলেন, এ পন্থাগুলো একে অপরকে শক্তিশালী এবং কোন মত অন্য মতকে সালাত পূর্ণ আদায়ের ক্ষেত্রে নিষেধ করছে না বরং একে অপরকে শক্তিশালী করছে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৪১. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সফরের সালাত

১৩৪৮-[১৬] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, (ইসলামের প্রথম দিকে) দু’ রাক্’আতই সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) ফরয ছিল। এরপর রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হিজরত করলে মুক্বীমের জন্য চার রাক্’আত সালাত নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে। আর সফর অবস্থায় প্রথম থেকেই দু’ রাক্’আত ফরয ছিল। ইমাম যুহরী (রহঃ) বলেন, আমি ’উরওয়ার নিকট আরয করলাম, ’আয়িশার কি হলো যে, তিনি সফর অবস্থায়ও পুরো চার রাক্’আত সালাত আদায় করেন। (উত্তরে) তিনি বললেন, তিনিও ’উসমান (রাঃ)-এর মতো ব্যাখ্যা করেন। (বুখারী, মুসলিম)[1]

وَعَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: فُرِضَتِ الصَّلَاةُ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ هَاجَرَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَفُرِضَتْ أَرْبَعًا وَتُرِكَتْ صَلَاةُ السَّفَرِ عَلَى الْفَرِيضَةِ الْأُولَى. قَالَ الزُّهْرِيُّ: قُلْتُ لِعُرْوَةَ: مَا بَال عَائِشَة تتمّ؟ قَالَ: تأولت كَمَا تَأَول عُثْمَان

وعن عاىشة قالت فرضت الصلاة ركعتين ثم هاجر رسول الله صلى الله عليه وسلم ففرضت اربعا وتركت صلاة السفر على الفريضة الاولى قال الزهري قلت لعروة ما بال عاىشة تتم قال تاولت كما تاول عثمان

ব্যাখ্যা: (فُرِضَتِ الصَّلَاةُ) অর্থাৎ মি‘রাজের রাত্রিতে মক্কায় দু’ রাক্‘আত সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) ফরয করা হয়েছে। অপর বর্ণনায় (رَكْعَتَيْنِ، رَكْعَتَيْنِ) এখানে দ্বিবচনে অধিক উপকারিতার জন্য শব্দটি বার বার উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থাৎ মুক্বীম ও মুসাফিরের জন্য দু’ রাক্‘আত সালাত ফরয করা হয়েছে, তবে আহমাদ (রহঃ) মুসনাদে বৃদ্ধি করেছেন যে, ‘মাগরিব ব্যতীত, কেননা তা তিন রাক্‘আত’। অতঃপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদীনায় হিজরত করলে মুক্বীম অবস্থায় ফাজ্‌র (ফজর) (ও মাগরিব) ব্যতীত সকল সালাত চার রাক্‘আত ফরয করা হলো।

আদ্ দাওলাবী (রহঃ) বলেন যে, মুক্বীম অবস্থায় যুহরের সালাত পূর্ণ আদায়ের বিধান অবতীর্ণ হয়েছে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মদীনায় হিজরাতের পরবর্তী মাসে, অর্থাৎ রবিউস্ সানী মাসের ১৭/১৮ তারিখ মঙ্গলবার। ‘আয়নী (রহঃ) অনুরূপ কথা বলেছেন। সুহায়লী (রহঃ) বলেন যে, হিজরাতের এক বছর পর মুক্বীমের সালাত বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং সফরের সালাত প্রথম ফারযিয়্যাতের উপর দু’ রাক্‘আতই অবশিষ্ট রয়েছে, তবে বুখারীর বর্ণনায় (الْفَرِيْضَةِ) শব্দটি নেই। সহীহ মুসলিমে জননী ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর বর্ণনায় রয়েছে যে, আল্লাহ তা‘আলা যখন সালাত ফরয করেছেন তখন দু’ রাক্‘আত ফরয করেছেন। অতঃপর তা মুক্বীমের ক্ষেত্রে (চার রাক্‘আতে) পূর্ণ করেছেন এবং সফরের সালাত পূর্ব ফারযের (ফরযের/ফরজের) উপরই রেখেছেন, (অর্থাৎ দু’ রাক্‘আত)।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৪১. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সফরের সালাত

১৩৪৯-[১৭] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহ তা’আলা তোমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জবানিতে মুক্বীম অবস্থায় চার রাক্’আত আর সফরকালে দু’ রাক্’আত সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) ফরয করেছেন। (মুসলিম)[1]

وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: فَرَضَ اللَّهُ الصَّلَاةَ عَلَى لِسَانِ نَبِيِّكُمْ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الْحَضَرِ أَرْبَعًا وَفِي السَّفَرِ رَكْعَتَيْنِ وَفِي الْخَوْف رَكْعَة. رَوَاهُ مُسلم

وعن ابن عباس قال فرض الله الصلاة على لسان نبيكم صلى الله عليه وسلم في الحضر اربعا وفي السفر ركعتين وفي الخوف ركعة رواه مسلم

ব্যাখ্যা: ভয়ের ক্ষেত্রে আল্লাহ তা‘আলা এক রাক্‘আত সালাত ফরয করেছেন। এখানে দলীল হলো ভয়ের সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) এক রাক্‘আত আবশ্যক, যদি একের উপরই সংক্ষেপ করা হয়, অর্থাৎ শুধু এক রাক্‘আত আদায় করলেই বৈধ হবে। ইমাম নাবাবী (রহঃ) বলেন যে, এ হাদীসের প্রতি একদল সালফ্ সালিহীনগণ ‘আমল করেছেন। তাদের মধ্য হাসান বসরী, জিহাক, ইসহাক্ব, ‘আত্বা, ত্বাউস, মুজাহিদ, হাকাম ইবনু ‘উত্বাহ্, ক্বাতাদাহ্, সাওরী প্রমুখ তাবি‘ঈনগণ এবং সাহাবীগণের মধ্য থেকে ইবনু ‘আব্বাস, আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ), আবূ মূসা আল আশ্‘আরী (রাঃ) প্রমুখগণ।

অপরদিকে ইমাম শাফি‘ঈ, মালিক (রহঃ) ও জমহূর ‘উলামাগণ, [তাদের মধ্য ইমাম আবূ হানীফাহ্ ও আহমাদ (রহঃ)] বলেন যে, নিশ্চয় ভয়ের সালাত রাক্‘আত সংখ্যার ক্ষেত্রে নিরাপদ সালাতের মতই। কারণ যদি মুক্বীমের সালাত চার রাক্‘আত ওয়াজিব হয় এবং সফরে দু’ রাক্‘আত ওয়াজিব হয় তবে ভয়ের সালাত কোন অবস্থাতেই এক রাক্‘আতের উপর সংক্ষিপ্ত করা (এক রাক্‘আত আদায় করা) বৈধ নয়। তারা ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-এর বর্ণিত আলোচ্য হাদীসের ব্যাখ্যায় বলেছেন যে, এখানে এক রাক্‘আত দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, ইমামের সাথে এক রাক্‘আত আদায় করতে হবে, আর অন্য এক রাক্‘আত একাকী আদায় করে নিতে হবে। (আল্লাহ তা‘আলাই ভাল জানেন)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৪১. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সফরের সালাত

১৩৫০-[১৮] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’আব্বাস (রাঃ)ও ’আবদুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তাঁরা বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সফরের অবস্থায় সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) দু’ রাক্’আত নির্ধারিত করে দিয়েছেন। আর এ দু’ রাক্’আতই হলো (সফরের) পূর্ণ সালাত, ক্বসর নয়। আর সফরে বিতরের সালাত আদায় করা সুন্নাত। (ইবনু মাজাহ)[1]

وَعَن ابْن عَبَّاس وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَا: سَنَّ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَلَاةَ السَّفَرِ رَكْعَتَيْنِ وَهُمَا تَمَامٌ غَيْرُ قَصْرٍ وَالْوِتْرُ فِي السَّفَرِ سنة. رَوَاهُ ابْن مَاجَه

وعن ابن عباس وعن ابن عمر قالا سن رسول الله صلى الله عليه وسلم صلاة السفر ركعتين وهما تمام غير قصر والوتر في السفر سنة رواه ابن ماجه

ব্যাখ্যা: ‘‘সাওয়াবের ক্ষেত্রে তা পরিপূর্ণ হয়।’’ অথবা উদ্দেশ্য হলোঃ নিশ্চয় দু’ রাক্‘আত সালাতই সফরের জন্য শারী‘আত কর্তৃক নির্ধারিত। আল্লামা মুল্লা ‘আলী ক্বারী (রহঃ) বলেন যে, তা পূর্ণ ফারযিয়্যাত এবং মৌলিক ফরয থেকে অসম্পূর্ণ নয়। কাজেই আয়াতে কারীমায় فَلَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ أَنْ تَقْصُرُوا مِنَ الصَّلَاةِ إِنْ خِفْتُمْ أَنْ يَفْتِنَكُمُ الَّذِينَ كَفَرُوا  উল্লেখিত মুত্বলাক্ব ক্বসরটি মাজায বা রূপক অর্থে।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৪১. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সফরের সালাত

১৩৫১-[১৯] ইমাম মালিক (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি শুনেছেন যে, ’আবদুল্লাহ ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) মক্কা ও ত্বায়িফ, মক্কা ও ’উসফান, মক্কা ও জিদ্দার দূরত্বের মাঝে ক্বসরের সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করতেন। ইমাম মালিক (রহঃ) বলেন, এসবের দূরত্ব ছিল চার বারীদ অর্থাৎ আটচল্লিশ মাইল। (মুয়াত্ত্বা)[1]

وَعَن مَالك بَلَغَهُ أَنَّ ابْنَ عَبَّاسٍ كَانَ يَقْصُرُ فِي الصَّلَاة فِي مثل مَا يكون بَين مَكَّة والطائف وَفِي مثل مَا يكون بَيْنَ مَكَّةَ وَعُسْفَانَ وَفَى مِثْلِ مَا بَيْنَ مَكَّةَ وَجُدَّةَ قَالَ مَالِكٌ: وَذَلِكَ أَرْبَعَةُ بُرُدٍ. رَوَاهُ فِي الْمُوَطَّأ

وعن مالك بلغه ان ابن عباس كان يقصر في الصلاة في مثل ما يكون بين مكة والطاىف وفي مثل ما يكون بين مكة وعسفان وفى مثل ما بين مكة وجدة قال مالك وذلك اربعة برد رواه في الموطا

ব্যাখ্যা: (أَرْبَعَةُ بُرُدٍ) এখানে بُرُدٍ শব্দটি بَرِيْدٌ-এর বহুবচন। আর প্রত্যেক بَرِيْدٌ সমান চার ফারসাখ। আর প্রত্যেক ফারসাখ সমান তিন মাইল, অর্থাৎ ৪৮ মাইল। ইমাম মালিক (রহঃ) বলেন, এটাই সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) ক্বসর করার ক্ষেত্রে আমার নিকট অধিক পছন্দনীয় মত। এ ব্যাপারে ‘উলামাগণের মত-পার্থক্যসহ আলোচনা পূর্বে অতিবাহিত হয়েছে এবং প্রাধান্যযোগ্য মতও নির্দেশ করা হয়েছে।

ইমাম মালিক (রহঃ) হতে বর্ণিত রয়েছে যে, ইবনু ‘উমার (রাঃ) মদীনায় জাতুন নাসাবে গমন করে সালাত ক্বসর করলেন।

ইমাম মালিক (রহঃ) বলেন, মদীনাহ্ ও জাতুন নাসাব-এর দূরত্ব চার বারীদ বা ৪৮ মাইল। (মহান আল্লাহ তা‘আলাই ভাল জানেন)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৪১. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সফরের সালাত

১৩৫২-[২০] বারা (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে আঠারোটি সফরে তাঁর সফর সঙ্গী ছিলাম, এ সময় আমি তাঁকে সূর্য ঢলে পড়ার পরে আর যুহরের সালাতের আগে দু’ রাক্’আত সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করা ছেড়ে দিতে কখনো দেখেনি। (আবূ দাঊদ, তিরমিযী; ইমাম তিরমিযী বলেন, এ হাদীসটি গরীব।)[1]

وَعَن الْبَراء قَالَ: صَحِبْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثَمَانِيَةَ عَشَرَ سَفَرًا فَمَا رَأَيْتُهُ تَرَكَ رَكْعَتَيْنِ إِذَا زَاغَتِ الشَّمْسُ قَبْلَ الظُّهْرِ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَالتِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ

وعن البراء قال صحبت رسول الله صلى الله عليه وسلم ثمانية عشر سفرا فما رايته ترك ركعتين اذا زاغت الشمس قبل الظهر رواه ابو داود والترمذي وقال هذا حديث غريب

ব্যাখ্যা: আলোচ্য হাদীসটি তাদের জন্য দলীল, যারা সফরেও নিয়মিত সুন্নাত বৈধ মনে করেন। এ ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা পূর্বে অতিবাহিত হয়েছে।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৪১. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সফরের সালাত

১৩৫৩-[২১] নাফি’ (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ’আবদুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) তাঁর পুত্র ’উবায়দুল্লাহ কে সফর অবস্থায় নফল সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করতে দেখেছেন। তিনি তাঁকে তা করতে নিষেধ করতেন না। (মালিক)[1]

وَعَنْ نَافِعٍ قَالَ: إِنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ كَانَ يَرَى ابْنَهُ عُبَيْدَ اللَّهِ يَتَنَفَّلُ فِي السَّفَرِ فَلَا يُنْكِرُ عَلَيْهِ. رَوَاهُ مَالِكٌ

وعن نافع قال ان عبد الله بن عمر كان يرى ابنه عبيد الله يتنفل في السفر فلا ينكر عليه رواه مالك

ব্যাখ্যা: আলোচ্য হাদীসে স্পষ্টত জটিলতা পরিলক্ষিত হচ্ছে যে, পূর্বে হাফস্ ইবনু ‘আসিম (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, সফরে ইবনু ‘উমার (রাঃ)-এর নফল সালাতের প্রতি অনীহা সংক্রান্ত হাদীস অতিবাহিত হয়েছে।

সমাধানে বলা যায় যে, ইবনু ‘উমার (রাঃ)-এর মতে নিয়মিত সুন্নাত (দৈনিক ১২ রাক্‘আত সুন্নাত) ও মুত্বলাক্ব বা সাধারণ নফল যেমন তাহাজ্জুদ, বিতর এবং সালাতুয্ যুহা ইত্যাদির মাঝে পার্থক্য রয়েছে। সুতরাং পূর্বে আলোচিত হাদীসে তার অনীহা দ্বারা প্রথমটি (নিয়মিত সুন্নাত) উদ্দেশ্য এবং এ হাদীসে তার নীরবতা দ্বারা দ্বিতীয়টি (অর্থাৎ তাহাজ্জুদ, বিতর, যুহা ও অন্যান্য সালাত) উদ্দেশ্য। অতএব সম্ভবত ইবনু ‘উমার (রাঃ) তার পুত্র ‘উবায়দুল্লাহ (রাঃ) নিয়মিত দৈনিক ১২ রাক্‘আত সুন্নাত ব্যতীত অন্যান্য নফল সালাত আদায় করতে দেখেছেন বিধায় তিনি নীরব ছিলেন। (আল্লাহ তা‘আলাই ভাল জানেন)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৭ পর্যন্ত, সর্বমোট ৭ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে