পরিচ্ছেদঃ ৪১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সফরের সালাত

১৩৪১-[৯] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, সফরকালে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সব রকমই করেছেন। তিনি (সফর অবস্থায়) ক্বসরও আদায় করতেন, আবার পূর্ণ সালাত (সালাত/নামায/নামাজ)ও আদায় করতেন। (শারহুস্ সুন্নাহ্)[1]

وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْ: كَانَ ذَلِكَ قَدْ فَعَلَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَصَرَ الصَّلَاةَ وَأَتَمَّ. رَوَاهُ فِي شرح السّنة

وعن عائشة رضي الله عنها قالت: كان ذلك قد فعل رسول الله صلى الله عليه وسلم قصر الصلاة وأتم. رواه في شرح السنة

ব্যাখ্যা: নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সফরে চার রাক্‘আত বিশিষ্ট সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) ক্বসর করতেন এবং পূর্ণও করতেন। এ হাদীস দ্বারা এক শ্রেণীর কথকগণ দলীল পেশ করছেন যে, সফরে ক্বসর করা আবশ্যক নয়। কিন্তু হাদীসটি নিতান্তই য‘ঈফ কারণ এ হাদীসের সানাদে ত্বলহাহ্ ইবনু ‘আমর ইবনু ‘উসমান আল হাজরামী আল মাক্কী রয়েছেন তিনি মাতরূক (বর্জিত রাবী) ইবনু ক্বইয়্যূম (রহঃ) আল হাদী গ্রন্থের ১ম খন্ডের ১২১ পৃষ্ঠায় এ হাদীস উল্লেখ করার পর বলেন যে, আমি শায়খুল ইসলাম ইবনু তায়মিয়্যাহ্ (রহঃ)-এর নিকট শুনেছি, তিনি বলেন যে, সেটা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর মিথ্যারোপ করা। আর তারা আরো দলীল পেশ করেছেন নাসায়ী, দারাকুত্বনী ও বায়হাক্বীতে ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর হাদীস দ্বারা। ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) বলেন, আমি রমাযানে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে ‘উমরাহ্ করতে বের হয়েছিলাম..... তিনি সালাত ক্বসরও করেছেন এবং পূর্ণ সালাতও আদায় করেছেন। এর জবাবে বলা যায় যে, উল্লেখিত হাদীস দ্বারা দলীল গ্রহণ বিশুদ্ধ নয়। দারাকুত্বনী তাঁর ‘‘আল বাদরুল মুনীর’’-এ বলেন যে, আলোচ্য হাদীসের মাতানে অস্বীকৃতি রয়েছে আর তা হলো ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে ‘উমরাহ্ করতে রমাযানে বের হওয়া। কারণ সর্বপ্রসিদ্ধ কথা হলো নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চারবারের বেশী ‘উমরাহ্ করেননি এবং প্রতিটি ‘উমরাহ্ ছিল যিলক্বদ-যিলহাজ্জ এর মধ্য অর্থাৎ ইহরাম বাঁধতেন যিলক্বদে আর হাজ্জ (হজ/হজ্জ) সমাধা করতেন যিলহাজ্জে এবং এটাই বুখারী ও মুসলিমের বর্ণনায় সুপ্রসিদ্ধ।

ইবনুল ক্বইয়্যূম (রহঃ) আল হাদী গ্রন্থের (১ম খন্ড, পৃঃ ১৩৩) এ হাদীস উল্লেখ করার পর বলেন যে, আমি শায়খুল ইসলাম ইবনু তায়মিয়্যাহ্ (রহঃ)-এর নিকট শুনেছি যে, এটা ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর উপর মিথ্যারোপ করা ছাড়া কিছুই নয়। কারণ ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সকল সাহাবায়ে কিরামগণের বিপরীত কোন ‘আমল করতে পারেন না।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৪১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সফরের সালাত

১৩৪২-[১০] ’ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে অনেক যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলাম। মক্কা বিজয়ের সময়ও তাঁর সাথে ছিলাম। এ সময়ে তিনি আঠার দিন মক্কায় অবস্থানরত ছিলেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) চার রাক্’আতবিশিষ্ট সালাত দু’ রাক্’আত আদায় করছিলেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, হে শহরবাসীরা! তোমরা চার রাক্’আত করেই সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় কর। আমি মুসাফির (তাই দু’ রাক্’আত আদায় করছি)। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ قَالَ: غَزَوْتُ مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَشَهِدْتُ مَعَهُ الْفَتْحَ فَأَقَامَ بِمَكَّةَ ثَمَانِيَ عَشْرَةَ لَيْلَةً لَا يُصَلِّي إِلَّا رَكْعَتَيْنِ يَقُولُ: «يَا أَهْلَ الْبَلَدِ صَلُّوا أَرْبَعًا فَإِنَّا سَفْرٌ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ

وعن عمران بن حصين قال: غزوت مع النبي صلى الله عليه وسلم وشهدت معه الفتح فأقام بمكة ثماني عشرة ليلة لا يصلي إلا ركعتين يقول: «يا أهل البلد صلوا أربعا فإنا سفر» . رواه أبو داود

ব্যাখ্যা: আলোচ্য হাদীসে দলীল হলো যে, মুসাফির ব্যক্তি যখন মুক্বীমদের ইমাম হবে এবং চার রাক্‘আত বিশিষ্ট সালাতে দু’ রাক্‘আত পড়ে সালাম ফিরবে তখন মুক্বীমরা মক্কাবাসীদের ন্যায় সালাত পূর্ণ করবে এবং এ ব্যাপারে ইজমা রয়েছে। আর সালাম ফেরার পর মুক্তাদীদের উদ্দেশে।

‘‘তোমরা সালাত পূর্ণ করো’’ এমন কথা বলা মুস্তাহাব। ইবনু ‘আবদুল বার (রহঃ) বলেন যে, মুসাফির যখন মুক্বীমদের সাথে সালাত আদায় করবে এবং দু’ রাক্‘আত শেষে সালাম ফিরবে তখন মুক্তাদীগণ সালাত পূর্ণ করবে, এ ব্যাপারে কোন ইখতিলাফ নেই।

আল্লামা শাওকানী (রহঃ) বলেন, মুসাফিরদের সাথে মুক্বীমদের সালাত পূর্ণ করা বৈধ এ ব্যাপারে ইজমা রয়েছে। তবে এর বিপরীতে মত-পার্থক্য রয়েছে। অর্থাৎ মুক্বীম ইমামের মুসাফির ব্যক্তি সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করলে তার জন্য ক্বসর করা সঠিক হবে কি-না। এ ব্যাপারে তাউস, দাঊদ, শা‘বী এবং অন্যান্যদের মতে তা সঠিক হবে না। কারণ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের ইমামের বিপরীত করো না। তবে হানাফী ও শাফি‘ঈ মাযহাবীদের নিকট তা সঠিক। কারণ মুসাফিরের জামা‘আতে সালাতের দলীল জোরালো নয়।

তবে মুসাফির ব্যক্তির মুক্বীমদের সাথে জামা‘আতবদ্ধভাবে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করার প্রমাণ রয়েছে, ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত,

ما بال المسافر يصلي ركعتين إذا انفرد وأربعا إذا ائتم بمقيم؟ فقال: تلك السنة

অর্থাৎ তাকে জিজ্ঞেস করা হলো যে, তারা এককভাবে দু’ রাক্‘আত আদায় করে এবং মুক্বীমের সাথে পূর্ণ সালাত চার রাক্‘আত আদায় করে কেন? তিনি বললেনঃ তা সুন্নাত।

অন্য শব্দে রয়েছে যে, মূসা ইবনু সালামাহ্ (রাঃ) তাকে বললেন, যখন আমরা আপনাদের সাথে সালাত আদায় করি তখন চার রাক্‘আত আদায় করি, আর যখন আমরা ফিরে যাই (একাকী আদায় করি) তখন দু’ রাক্‘আত সালাত আদায় করি। তিনি বললেন, সেটা আবুল ক্বাসিম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সুন্নাত।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৪১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সফরের সালাত

১৩৪৩-[১১] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নবীকারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে সফরে দু’ রাক্’আত যুহর এবং এরপর দু’ রাক্’আত (সুন্নাত) আদায় করেছি। আর এক বর্ণনায় আছে, ’আবদুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) বলেন, আবাসে ও সফরে আমি নবীকারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করেছি। আবাসে তাঁর সাথে যুহর সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) চার রাক্’আত আদায় করেছি এবং সফরে দু’ রাক্’আত ও ’আসর দু’ রাক্’আত আদায় করেছি। এরপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আর কোন সালাত আদায় করেননি। মাগরিবের সালাত আদায় করেছেন আবাসে ও সফরে সমানভাবে তিন রাক্’আত। আবাসে ও সফরে কোন অবস্থাতেই মাগরিবের বেশ কম হয় না। এটা হলো দিনের বিতরের সালাত। এরপর তিনি আদায় করেছেন দু’ রাক্’আত (সুন্নাত)। (তিরমিযী)[1]

وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: صَلَّيْتُ مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الظُّهْرَ فِي السَّفَرِ رَكْعَتَيْنِ وَبَعْدَهَا رَكْعَتَيْنِ وَفِي رِوَايَةٍ قَالَ: صَلَّيْتُ مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الْحَضَرِ وَالسَّفَرِ فَصَلَّيْتُ مَعَهُ فِي الْحَضَرِ الظُّهْرَ أَرْبَعًا وَبَعْدَهَا رَكْعَتَيْنِ وَصَلَّيْتُ مَعَهُ فِي السَّفَرِ الظُّهْرَ رَكْعَتَيْنِ وَبَعْدَهَا رَكْعَتَيْنِ وَالْعَصْرَ رَكْعَتَيْنِ وَلَمْ يُصَلِّ بَعْدَهَا شَيْئًا وَالْمَغْرِبُ فِي الْحَضَرِ وَالسَّفَرِ سَوَاءٌ ثَلَاثُ رَكَعَاتٍ وَلَا يَنْقُصُ فِي حَضَرٍ وَلَا سَفَرٍ وَهِيَ وِتْرُ النَّهَارِ وَبَعْدَهَا رَكْعَتَيْنِ. رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

وعن ابن عمر قال: صليت مع النبي صلى الله عليه وسلم الظهر في السفر ركعتين وبعدها ركعتين وفي رواية قال: صليت مع النبي صلى الله عليه وسلم في الحضر والسفر فصليت معه في الحضر الظهر أربعا وبعدها ركعتين وصليت معه في السفر الظهر ركعتين وبعدها ركعتين والعصر ركعتين ولم يصل بعدها شيئا والمغرب في الحضر والسفر سواء ثلاث ركعات ولا ينقص في حضر ولا سفر وهي وتر النهار وبعدها ركعتين. رواه الترمذي

ব্যাখ্যা: নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সফর কিংবা মুক্বীম অবস্থায় মাগরিবের সালাতের বেশ-কম করতেন না। কারণ ক্বসর শুধু চার রাক্‘আত বিশিষ্ট সালাতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। যা হোক, আলোচ্য বর্ণনা দু’টি প্রমাণ করে যে, সফরে নিয়মিত সুন্নাত (দৈনিক ১২ রাক্‘আত সুন্নাত) পড়া জায়িয। এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা অতিবাহিত হয়েছে।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৪১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সফরের সালাত

১৩৪৪-[১২] মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাবূকের যুদ্ধ চলাকালে যুহরের সময় সূর্য ঢলে গেলে যুহর ও ’আসরের সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) দেরী করতেন এবং ’আসরের সালাতের জন্য মঞ্জীলে নামতেন। অর্থাৎ যুহর ও ’আসরের সালাত একসাথে আদায় করতেন। মাগরিবের সালাতের সময়ও তিনি এরূপ করতেন। সূর্য তাঁর ফিরে আসার আগে ডুবে গেলে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মাগরিব ও ’ইশার সালাত একত্রে আদায় করতেন। আর সূর্য অস্ত যাবার আগে চলে এলে তিনি মাগরিবের সালাতে দেরী করতেন। ’ইশার সালাতের জন্য নামতেন, তখন দু’সালাতকে একত্রে আদায় করতেন। (আবূ দাঊদ, তিরমিযী)[1]

وَعَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ قَالَ: كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي غَزْوَةِ تَبُوكَ: إِذَا زَاغَتِ الشَّمْسُ قَبْلَ أَنْ يَرْتَحِلَ جَمَعَ بَيْنَ الظُّهْرِ وَالْعَصْرِ وَإِنِ ارْتَحَلَ قَبْلَ أَنْ تَزِيغَ الشَّمْسُ أَخَّرَ الظُّهْرَ حَتَّى يَنْزِلَ لِلْعَصْرِ وَفِي الْمَغْرِبِ مِثْلَ ذَلِكَ إِذَا غَابَتِ الشَّمْسُ قَبْلَ أَنْ يَرْتَحِلَ جَمَعَ بَيْنَ الْمَغْرِبِ وَالْعِشَاءِ وَإِنِ ارْتَحَلَ قَبْلَ أَنْ تَغِيبَ الشَّمْسُ أَخَّرَ الْمَغْرِبَ حَتَّى يَنْزِلَ لِلْعِشَاءِ ثُمَّ يَجْمَعُ بَيْنَهُمَا. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَالتِّرْمِذِيّ

وعن معاذ بن جبل قال: كان النبي صلى الله عليه وسلم في غزوة تبوك: إذا زاغت الشمس قبل أن يرتحل جمع بين الظهر والعصر وإن ارتحل قبل أن تزيغ الشمس أخر الظهر حتى ينزل للعصر وفي المغرب مثل ذلك إذا غابت الشمس قبل أن يرتحل جمع بين المغرب والعشاء وإن ارتحل قبل أن تغيب الشمس أخر المغرب حتى ينزل للعشاء ثم يجمع بينهما. رواه أبو داود والترمذي

ব্যাখ্যা: আলোচ্য হাদীস ইমাম শাফি‘ঈ ও অন্যান্যদের মতেরই দলীল, তাদের মত হলো মৌলিকভাবে সালাত পূর্ব বা পরের ওয়াক্তের সাথে (পূর্বের সালাত পরের সালাতের সময়ে ও পরের সালাত পূর্বের সালাতের সময়ে) একত্রিত করে আদায় করা বৈধ। ইবনু হাজার আসক্বালানী (রহঃ) বলেন, নিশ্চয় হাদীসটি বিশুদ্ধ এবং এটি সমষ্টিগত হাদীসগুলোর একটি যা পূর্ণাঙ্গ একটি বক্তব্য এবং যা পূর্ব এবং পরের ওয়াক্তের সালাত এগিয়ে নিয়ে বা বিলম্ব করে দু’ সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) একত্রিত করে আদায় করা বৈধতার ক্ষেত্রে কোন রকমের সংশয়ের সম্ভাবনা রাখে না।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৪১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সফরের সালাত

১৩৪৫-[১৩] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সফরে (অর্থাৎ শহরের বাইরে) যেতেন (মুসাফির অবস্থায় হোক অথবা মুক্বীম), নফল সালাত আদায় করতে চাইতেন, তখন উটের মুখ ক্বিবলা (কিবলা/কেবলা)র দিকে করে নিতেন এবং তাকবীরে তাহরীমাহ্ বলে যেদিকে সওয়ারীর মুখ করতেন সেদিকে মুখ করে তিনি সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করতেন। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا سَافَرَ وَأَرَادَ أَنْ يَتَطَوَّعَ اسْتَقْبَلَ الْقِبْلَةَ بِنَاقَتِهِ فَكَبَّرَ ثُمَّ صَلَّى حَيْثُ وَجهه ركابه. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

وعن أنس قال: كان رسول الله صلى الله عليه وسلم إذا سافر وأراد أن يتطوع استقبل القبلة بناقته فكبر ثم صلى حيث وجهه ركابه. رواه أبو داود

ব্যাখ্যা: আলোচ্য হাদীসে শার‘ঈ দলীল হলো সফরে সওয়ারীর উপর সালাতের শুরুতে তাকবীরের সময় ক্বিবলামুখী হওয়া আবশ্যক। এ বিষয়ে আলোচনা পূর্বে হয়েছে। ইবনুল ক্বইয়্যূম (রহঃ) এ হাদীস উল্লেখ করার পর বলেন, এ হাদীসে যাচাইয়ের প্রয়োজন রয়েছে। কারণ যারা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সওয়ারীর উপর আদায়কৃত সালাতের বর্ণনা দিয়েছেন তারা সকলেই মুত্বলাক্বভাবে বর্ণনা করেছেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সওয়ারীর যে কোন দিক থাকা অবস্থায় সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করেছেন, তাতে তাকবীরে তাহরীমা ও অন্য বিষয়ের কোনটি তারা আলাদাভাবে উল্লেখ করেননি বা আলাদা হুকুম বর্ণনা করেনি। যেমন- ‘আমির ইবনু রবী‘আহ্, ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার ও জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ এবং তাদের বর্ণিত হাদীসগুলো আনাস (রাঃ)-এর হাদীসের তুলনায় অধিক বিশুদ্ধ।

আমি (মির্‘আত প্রণেতা) বলব, আনাস (রাঃ) বর্ণিত হাদীসটি সওয়ারীর উপর নফল সালাত তাকবীরে তাহরীমার সময় ক্বিবলামুখী হওয়া ওয়াজিবের দলীল নয়, বরং তা বৈধতা বা উত্তম হওয়ার দলীল।


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৪১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সফরের সালাত

১৩৪৬-[১৪] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর কোন প্রয়োজনে আমাকে পাঠালেন। আমি প্রত্যাবর্তন করে এসে দেখি তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর বাহনের উপর পূর্ব দিকে মুখ ফিরে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) ক্বায়িম করছেন। তবে তিনি রুকূ’ হতে সাজদায় একটু বেশী নীচু হতেন। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْ جَابِرٍ قَالَ: بَعَثَنِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي حَاجَةٍ فَجِئْتُ وَهُوَ يُصَلِّي عَلَى رَاحِلَتِهِ نَحْوَ الْمَشْرِقِ وَيَجْعَلُ السُّجُودَ أَخفض من الرُّكُوع. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

وعن جابر قال: بعثني رسول الله صلى الله عليه وسلم في حاجة فجئت وهو يصلي على راحلته نحو المشرق ويجعل السجود أخفض من الركوع. رواه أبو داود

ব্যাখ্যা: (وَهُوَ يُصَلِّي) বাক্যটি অবস্থাবাচক, (نَحْوَ الْمَشْرِقِ) এটি স্থানবাচক, অর্থাৎ তিনি পূর্বের প্রান্তের দিকে (কোনাকোনিভাবে) সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করলেন। অথবা এটি অবস্থাবাচকও হতে পারে, অর্থাৎ পূর্বদিকে মুখ করে কিংবা পূর্বের এক প্রান্তের দিকে মুখ ফিরানো অবস্থায় সালাত আদায় করলেন। হাফিয আসক্বালানী (রহঃ) ফাতহুল বারীতে মাগাযী অধ্যায়ে বর্ণনা করেন যে, এটি আন্মার যুদ্ধের ঘটনা, আর তাদের ভূখন্ডটি ছিল পূর্বদিকে, যারা মদীনাহ্ থেকে (মদীনাহ্ শহর) বের হবেন ক্বিবলাহ্ (কিবলাহ/কিবলা) তাদের বাম প্রান্তে পড়বে।

(أَخْفَضَ مِنَ الرُّكُوْعِ) অর্থাৎ সাজদার ইশারাটা রুকূ‘র ইশারা হতে অনেক নিচু। আলোচ্য হাদীসে শার‘ঈ দলীল হলো যে, সফরে সওয়ারীর উপর নফল সালাত আদায় করা, সওয়ারীর উপর রুকূ'-সাজদার ইশারা করা এবং সাজদার ইশারাটা রুকূ' হতে অধিক নিচু হওয়া (যাতে রুকূ'-সাজদার মাঝে পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়) শারী‘আত সম্মত, আর এটাই জমহূর ‘উলামাগণের কথা।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৬ পর্যন্ত, সর্বমোট ৬ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে