পরিচ্ছেদঃ ১৮. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সালাতের পর যিকর-আযকার

৯৭২-[১৪] আযরাক্ব ইবনু ক্বায়স (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাদের ইমাম, যার উপনাম ছিল আবূ রিমসাহ্ (রাঃ), তিনি আমাদেরকে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করালেন। সালাতের শেষে তিনি বললেন, আমি এ সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) অথবা এ সালাতের মতো সালাত রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে আদায় করেছি। আবূ রিমসাহ্ বলেন, আবূ বকর ও ’উমার (রাঃ) প্রথম কাতারে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ডানপাশে দাঁড়ালেন। এক লোক এসে সালাতের প্রথম তাকবীরে উপস্থিত হলো। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত আদায় করালেন। অতঃপর তিনি তার ডানে ও বামে সালাম ফিরালেন এমনকি আমরা তাঁর দুই গালের শুভ্রতা দেখতে পেলাম। তারপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ফিরলেন, যেভাবে রিমসাহ্ ফিরছেন। যে ব্যক্তি প্রথম তাকবীর পেয়েছিল, সে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করতে লাগল। ’উমার (রাঃ) তার দিকে চড়াও হলেন এবং তার দু’ কাঁধ ধরে ধাক্কা দিয়ে বললেন, বসে যাও। কারণ আহলে কিতাবরা ধ্বংস হয়েছে এজন্য যে, তারা দু’ সালাতের মাঝে কোন পার্থক্য করত না। ’উমার (রাঃ)-এর এ কথা শুনে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চোখ তুলে তাকিয়ে বললেন, হে খাত্ত্বাবের ছেলে! আল্লাহ তোমাকে সঠিক পথে পৌঁছিয়ে দিয়েছেন। (আবূ দাঊদ)[1]

عَنِ الْأَزْرَقِ بْنِ قَيْسٍ قَالَ: صَلَّى بِنَا إِمَامٌ لَنَا يُكْنَى أَبَا رِمْثَةَ قَالَ صَلَّيْتُ هَذِهِ الصَّلَاةَ أَوْ مِثْلَ هَذِهِ الصَّلَاةِ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: وَكَانَ أَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ يَقُومَانِ فِي الصَّفِّ الْمُقَدَّمِ عَنْ يَمِينِهِ وَكَانَ رَجُلٌ قَدْ شَهِدَ التَّكْبِيرَةَ الْأُولَى مِنَ الصَّلَاةِ فَصَلَّى نَبِيُّ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثُمَّ سَلَّمَ عَنْ يَمِينِهِ وَعَنْ يَسَارِهِ حَتَّى رَأَيْنَا بَيَاضَ خَدَّيْهِ ثُمَّ انْفَتَلَ كَانْفِتَالِ أَبِي رِمْثَةَ يَعْنِي نَفْسَهُ فَقَامَ الرَّجُلُ الَّذِي أَدْرَكَ مَعَهُ التَّكْبِيرَةَ الْأُولَى مِنَ الصَّلَاةِ يَشْفَعُ فَوَثَبَ إِلَيْهِ عُمَرُ فَأَخَذَ بمنكبه فَهَزَّهُ ثُمَّ قَالَ اجْلِسْ فَإِنَّهُ لَمْ يُهْلِكْ أَهْلَ الْكِتَابِ إِلَّا أَنَّهُ لَمْ يَكُنْ بَيْنَ صلواتهم فَصْلٌ. فَرَفَعَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَصَره فَقَالَ: «أصَاب الله بك يَا ابْن الْخطاب» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

عن الازرق بن قيس قال صلى بنا امام لنا يكنى ابا رمثة قال صليت هذه الصلاة او مثل هذه الصلاة مع رسول الله صلى الله عليه وسلم قال وكان ابو بكر وعمر يقومان في الصف المقدم عن يمينه وكان رجل قد شهد التكبيرة الاولى من الصلاة فصلى نبي الله صلى الله عليه وسلم ثم سلم عن يمينه وعن يساره حتى راينا بياض خديه ثم انفتل كانفتال ابي رمثة يعني نفسه فقام الرجل الذي ادرك معه التكبيرة الاولى من الصلاة يشفع فوثب اليه عمر فاخذ بمنكبه فهزه ثم قال اجلس فانه لم يهلك اهل الكتاب الا انه لم يكن بين صلواتهم فصل فرفع النبي صلى الله عليه وسلم بصره فقال اصاب الله بك يا ابن الخطاب رواه ابو داود

ব্যাখ্যা: অত্র হাদীসে জামা‘আতের প্রথম কাতারে শামিল হওয়াকে উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে। অনুরূপভাবে ইমামের ডান দিকে দাঁড়ানোর ব্যাপারে উৎসাহ দেয়া হয়েছে কেননা এটিই উত্তম।

(شَهِدَ التَّكْبِيرَةَ الْأُولى) দ্বারা তাকবীরে তাহরীমা উদ্দেশ্য। আর এটিই প্রকৃতপক্ষে প্রথম তকবীর। এখানে فَصَلّى উল্লেখ করার কারণ এ কথা স্মরণ করিয়ে দেয়া যে, তাকবীরে তাহরীমাতে শামিল ব্যক্তি তার সালাত শেষে যে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করতে দাঁড়িয়েছিল তা ছিল সুন্নাত সালাত। মাসবূক হওয়ার কারণে তার এমন কোন সালাত বাকী ছিল না যা তিনি এ সময় আদায় করছিলেন।

(لَمْ يَكُنْ بَيْنَ صَلواتِهِمْ فَصْلٌ) তাদের সালাতের মাঝে কোন ব্যবধান ছিল না। এখানে فَصْلٌ তথা ব্যবধান দ্বারা উদ্দেশ্য হল দুই সালাতের মধ্যে সময়ের ব্যবধান ছিল না। সালাতের কাতার থেকে আগে বা পিছে সরে আসা উদ্দেশ্য নয়। কেননা ‘উমার (রাঃ) সেই ব্যক্তিকে বলেছিলেন যিনি সালামের পরে পরেই উঠে দাঁড়িয়ে সালাত শুরু করেছিলেন। তিনি তাকে বলেননি যে, সামনে যাও বা পিছনে যাও।

এ অধ্যায়ে মুসান্নিফ (লেখক) এ হাদীসটি উল্লেখ করে এ কথা বুঝাতে চেয়েছেন যে, দুই সালাতের মধ্যে ব্যবধান করেননি অর্থাৎ সালাতের পরে যিকরও করেননি। সালাত আদায়কারীর উচিত সালাতের পরে হাদীসে বর্ণিত দু‘আগুলো পাঠ করা, তারপর সুনানে রাতিবা (নির্ধারিত সুন্নাত) আদায় করা। এতে এটাও বুঝা যায় যে, ফরয সালাতের সাথে নফল সালাত মিলিয়ে আদায় করা যাবে না।

(أصَابَ اللهُ بِكَ) অর্থাৎ আল্লাহ তোমাকে সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছিয়েছেন। ত্বীবী (রহঃ) বলেন, এর অর্থ হলো তুমি যা করেছ ঠিক করেছ। আল্লাহ তোমাকে সঠিক কাজ করার তাওফীক দান করেছেন।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ১৮. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সালাতের পর যিকর-আযকার

৯৭৩-[১৫] যায়দ ইবনু সাবিত (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাদেরকে নির্দেশ করা হয়েছে, প্রতি সালাতের শেষে ’সুবহা-নাল্ল-হ’ তেত্রিশবার, ’আলহামদু লিল্লা-হ’ তেত্রিশবার ও ’আল্ল-হু আকবার’ চৌত্রিশবার পাঠ করতে। একজন আনসারী স্বপ্নে দেখতে পেল যে, তাকে জিজ্ঞেস করা হলো, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি তোমাদেরকে প্রতি সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) শেষে এতো এতো বার তাসবীহ পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন? আনসারী স্বপ্নের মধ্যে বলল, হ্যাঁ। মালাক (ফেরেশতা) বললেন, এ তিনটি কালিমাকে পঁচিশবার করে পাঠ করার জন্য নির্ধারিত করবে। এবং এর সাথে ’লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ’ পাঠ করে নিবে। সকালে ঐ আনসারী রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দরবারে উপস্থিত হয়ে তার স্বপ্ন সম্পর্কে তাঁকে অবহিত করলেন। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যা বলা হয়েছে তাই করো। (আহমাদ, নাসায়ী, দারিমী)[1]

وَعَن زيد بن ثَابت قَالَ: أُمِرْنَا أَنْ نُسَبِّحَ فِي دُبُرِ كُلِّ صَلَاةٍ ثَلَاثًا وَثَلَاثِينَ وَنَحْمَدَ ثَلَاثًا وَثَلَاثِينَ وَنُكَبِّرَ أَرْبَعًا وَثَلَاثِينَ فَأُتِيَ رَجُلٌ فِي الْمَنَامِ مِنَ الْأَنْصَارِ فَقِيلَ لَهُ أَمَرَكُمْ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسلم أَن تسبحوا فِي دبر كُلِّ صَلَاةٍ كَذَا وَكَذَا قَالَ الْأَنْصَارِيُّ فِي مَنَامِهِ نَعَمْ قَالَ فَاجْعَلُوهَا خَمْسًا وَعِشْرِينَ خَمْسًا وَعِشْرِينَ وَاجْعَلُوا فِيهَا التَّهْلِيلَ فَلَمَّا أَصْبَحَ غَدَا عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَخْبَرَهُ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «فافعلوا» . رَوَاهُ أَحْمد وَالنَّسَائِيّ والدارمي

وعن زيد بن ثابت قال امرنا ان نسبح في دبر كل صلاة ثلاثا وثلاثين ونحمد ثلاثا وثلاثين ونكبر اربعا وثلاثين فاتي رجل في المنام من الانصار فقيل له امركم رسول الله صلى الله عليه وسلم ان تسبحوا في دبر كل صلاة كذا وكذا قال الانصاري في منامه نعم قال فاجعلوها خمسا وعشرين خمسا وعشرين واجعلوا فيها التهليل فلما اصبح غدا على النبي صلى الله عليه وسلم فاخبره فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم فافعلوا رواه احمد والنساىي والدارمي

ব্যাখ্যা: (فَافْعَلُوْا) তবে তাই কর। অর্থাৎ স্বপ্নের অনুকূলে ‘আমল কর। ইবনু হাজার (রহঃ) বলেন, তাসবীহ, তাকবীরে তাহমীদ ও তাহলীল প্রতিটি ২৫ বার করে সর্বমোট একশত বার পাঠ করাও সুন্নাত। এর প্রমাণ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বাণী (فَافْعَلُوْا) ‘‘তোমরা তাই কর’’ আর এতে আনসারী কর্তৃক দেখা স্বপ্নে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্বীকৃতি রয়েছে। কেননা এটি একটি ভাল স্বপ্ন। আর ভাল আল্লাহর পক্ষ থেকেই হয়ে থাকে। আর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্বীকৃতি দ্বারা এটি একটি যিকিরের (জিকিরের) পদ্ধতিতে পরিণত হয়েছে। যদি এতে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্বীকৃতি না থাকতো তবে তা দলীল হিসেবে গ্রাহ্য হতো না।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ১৮. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সালাতের পর যিকর-আযকার

৯৭৪-[১৬] ’আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে এ মিম্বারের কাঠের উপর বসে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি প্রতি সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) শেষে আয়াতুল কুরসী পড়বে তাকে মৃত্যু ব্যতীত আর কোন বিষয় জান্নাতে প্রবেশে বাধা দিতে পারে না। আর যে ব্যক্তি ঘুমাবার সময় আয়াতুল কুরসী পড়বে, আল্লাহ তা’আলা তার ঘর, প্রতিবেশীদের ঘর ও তার চারপাশের ঘর-বাড়ীর নিরাপত্তা দিবেন। এ হাদীসটি বায়হাক্বী শু’আবুল ঈমান গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন এবং বলেছেন, এর সূত্র দুর্বল।[1]

وَعَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى أَعْوَاد الْمِنْبَرِ يَقُولُ: «مَنْ قَرَأَ آيَةَ الْكُرْسِيِّ فِي دبر كل صَلَاة لم يمنعهُ من دُخُولَ الْجَنَّةِ إِلَّا الْمَوْتُ وَمَنْ قَرَأَهَا حِينَ يَأْخُذُ مَضْجَعَهُ آمَنَهُ اللَّهُ عَلَى دَارِهِ وَدَارِ جَارِهِ وَأَهْلِ دُوَيْرَاتٍ حَوْلَهُ» . رَوَاهُ الْبَيْهَقِيُّ فِي شعب الْإِيمَان وَقَالَ إِسْنَاده ضَعِيف

وعن علي رضي الله عنه قال سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم على اعواد المنبر يقول من قرا اية الكرسي في دبر كل صلاة لم يمنعه من دخول الجنة الا الموت ومن قراها حين ياخذ مضجعه امنه الله على داره ودار جاره واهل دويرات حوله رواه البيهقي في شعب الايمان وقال اسناده ضعيف

ব্যাখ্যা: বায়হাক্বী বর্ণিত এ বর্ণনাটি দুর্বল। তবে হাদীসটির প্রথম অংশের শক্তিশালী শাহিদ রয়েছে নাসায়ী, ইবনু হিব্বান এবং ত্ববারানীতে। তাতে আছে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি প্রত্যেক (ফরয) সালাতের পর আয়াতুল কুরসী পাঠ করবে তার জান্নাতে প্রবেশে কোন বাধা নেই মৃত্যু ব্যতীত। অর্থাৎ মৃত্যুবরণ করা মাত্রই সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।


হাদিসের মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ১৮. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সালাতের পর যিকর-আযকার

৯৭৫-[১৭] ’আবদুর রহমান ইবনু গানম (রাঃ)থেকে বর্ণিত। তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করছেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি ফাজর (ফজর) ও মাগরিবের সালাতের শেষে জায়গা হতে উঠার ও পা ঘুরানোর আগে এ দু’আ দশবার পড়েঃ

’’লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়াহদাহূ লা- শারীকা লাহূ লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু বিয়াদিহিল খায়রু, ইউহয়ী ওয়া ইউমীতু, ওয়াওহুয়া ’আলা- কুল্লি শাইয়্যিন ক্বদীর’’

(অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোন ইলাহ নেই, তাঁর কোন শরীক নেই, রাজত্ব একমাত্র তাঁরই, সমস্ত প্রশংসা তাঁরই, তাঁর হাতেই সমস্ত কল্যাণ রয়েছে, তিনি জীবন ও মৃত্যু দান করেন, তিনি সমস্ত কিছুর উপর ক্ষমতাবান।)।

তাহলে প্রতিবারের বিনিময়ে তার জন্য দশ নেকী লিখা হয়। তার দশটি গুনাহ মিটিয়ে দেয়া হয়। তাকে দশটি মর্যাদার স্তরে উন্নীত করা হয়। আর এ দু’আ তাকে সমস্ত অপছন্দনীয় ও বিতাড়িত শায়ত্বন (শয়তান) থেকে দূরে সরিয়ে রাখে। শির্ক ছাড়া অন্য কোন গুনাহের কারণে তাকে ধর-পাকড় করা হালাল হবে না। ’আমলের দিক দিয়ে এ লোক হবে অন্য লোকের চেয়ে উত্তম, তবে সে ব্যক্তি ব্যতীত যে এর চেয়েও অতি উত্তম ’আমল করবে। (আহমাদ)[1]

وَعَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ غَنْمٍ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ قَالَ: «مَنْ قَالَ قَبْلَ أَنْ يَنْصَرِفَ وَيَثْنِيَ رِجْلَيْهِ مِنْ صَلَاةِ الْمَغْرِبِ وَالصُّبْحِ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ بِيَدِهِ الْخَيْرُ يُحْيِي وَيُمِيتُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ عَشْرَ مَرَّاتٍ كُتِبَ لَهُ بِكُلِّ وَاحِدَةٍ عَشْرُ حَسَنَاتٍ وَمُحِيَتْ عَنْهُ عَشْرُ سَيِّئَاتٍ وَرُفِعَ لَهُ عَشْرُ دَرَجَاتٍ وَكَانَت حِرْزًا مِنْ كُلِّ مَكْرُوهٍ وَحِرْزًا مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيم وَلم يحل لذنب يُدْرِكَهُ إِلَّا الشِّرْكُ وَكَانَ مِنْ أَفْضَلِ النَّاسِ عَمَلًا إِلَّا رَجُلًا يَفْضُلُهُ يَقُولُ أَفْضَلَ مِمَّا قَالَ» . رَوَاهُ أَحْمد

وعن عبد الرحمن بن غنم عن النبي صلى الله عليه وسلم انه قال من قال قبل ان ينصرف ويثني رجليه من صلاة المغرب والصبح لا اله الا الله وحده لا شريك له له الملك وله الحمد بيده الخير يحيي ويميت وهو على كل شيء قدير عشر مرات كتب له بكل واحدة عشر حسنات ومحيت عنه عشر سيىات ورفع له عشر درجات وكانت حرزا من كل مكروه وحرزا من الشيطان الرجيم ولم يحل لذنب يدركه الا الشرك وكان من افضل الناس عملا الا رجلا يفضله يقول افضل مما قال رواه احمد

ব্যাখ্যা: (وَلَمْ يَحِلَّ لِذَنْبٍ أَنْ يُدْرِكْه إِلَّا الشِّرْك) ‘‘শির্ক এর গুনাহ ব্যতীত অন্য কোন গুনাহের কারণে তার ‘আমল বিনষ্ট হবে না।’’ ত্বীবী বলেন, কোন দু‘আকারী যখন তাওহীদের কালিমার দু‘আ করে তখন সে নিজেকে নিরাপদ জায়গায় প্রবেশ করায়। ফলে কোন গুনাহের পক্ষেই এটা সম্ভব না যে উক্ত দু‘আকারীকে আক্রমণ করে ধ্বংস করে ফেলবে। তবে শির্ক গুনাহ সকল ‘আমলই বিনষ্ট করে।

(أَفْضَلَ مِمَّا قَالَ) অর্থাৎ যে ব্যক্তি উক্ত দু‘আ আরো অধিক সংখ্যক বার পাঠ করবে এবং অন্যান্য দু‘আ অথবা ক্বিরাআত (কিরআত) পাঠ করবে সে অধিক মর্যাদার অধিকারী হবে।


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ১৮. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সালাতের পর যিকর-আযকার

৯৭৬-[১৮] এ বর্ণনাটি ইমাম তিরমিযী আবূ যার (রাঃ)-এর সূত্রে إِلَّا الشِّرْكَ ’’ইল্লাশ্ শির্কা’’ পর্যন্ত হুবহু বর্ণনা করেছেন। সে তার বর্ণনায় صَلَاةَ الْمَغْرِبِ ’’সলা-তাল মাগরিব’’ ও بِيَدِهِ الْخَيْرُ ’’বিয়াদিহিল খয়র’’ শব্দ উল্লেখ করেনি। (তিনি [তিরমিযী] বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ গরীব।)[1]

وَرَوَى التِّرْمِذِيُّ نَحْوَهُ عَنْ أَبِي ذَرٍّ إِلَى قَوْلِهِ: «إِلَّا الشِّرْكَ» وَلَمْ يَذْكُرْ: «صَلَاةَ الْمَغْرِبِ وَلَا بِيَدِهِ الْخَيْرُ» وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيح غَرِيب

وروى الترمذي نحوه عن ابي ذر الى قوله الا الشرك ولم يذكر صلاة المغرب ولا بيده الخير وقال هذا حديث حسن صحيح غريب

হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ১৮. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সালাতের পর যিকর-আযকার

৯৭৭-[১৯] ’উমার ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক সৈন্য বাহিনী নাজদ-এর দিকে প্রেরণ করলেন। তারা অনেক গানীমাতের মাল প্রাপ্ত হলেন এবং দ্রুত মদীনায় ফিরে এলেন। আমাদের মাঝে এক লোক যে ঐ বাহিনীর সাথে বের হয়নি, সে বলল, আমরা এমন কোন বাহিনী দেখিনি এত স্বল্প সময়ের মধ্যে এত উত্তম গানীমাতের মাল নিয়ে ফেরত আসতে। এটা শুনে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি কি তোমাদেরকে এমন একটি দলের নির্দেশনা দেব না যারা গানীমাতের মালেও দ্রুত ফিরে আসার ব্যাপারে এদের চেয়েও উত্তম? তিনি বললেন, যারা ফাজ্‌রের (ফজরের) সালাতে হাযির হয়, তারপর সূর্য উঠা পর্যন্ত বসে বসে আল্লাহর যিকর করে। এরাই দ্রুত ফিরে আসা ও উত্তম গানীমাতের মাল আনার লোকদের চেয়েও বেশী উত্তম। (তিরমিযী; তিনি বলেন, হাদিসটি গরীব। আর এর একজন বর্ণনাকারী হাম্মাদ ইবনু আবূ হুমায়দ হাদীস শাস্ত্রে দুর্বল।)[1]

وَعَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَعَثَ بَعْثًا قِبَلَ نَجْدٍ فَغَنِمُوا غَنَائِمَ كَثِيرَةً وَأَسْرَعُوا الرَّجْعَةَ فَقَالَ رَجُلٌ مِنَّا لَمْ يَخْرُجْ مَا رَأَيْنَا بَعْثًا أَسْرَعَ رَجْعَةً وَلَا أَفْضَلَ غَنِيمَةً مِنْ هَذَا الْبَعْثِ فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَلَا أَدُلُّكُمْ عَلَى قَوْمٍ أَفْضَلَ غَنِيمَةً وَأَفْضَلَ رَجْعَةً؟ قَوْمًا شَهِدُوا صَلَاةَ الصُّبْحِ ثمَّ جَلَسُوا يذكرُونَ الله حَتَّى طلعت عَلَيْهِم الشَّمْس أُولَئِكَ أسْرع رَجْعَة وَأَفْضَلَ غَنِيمَةً» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لَا نَعْرِفُهُ إِلَّا مِنْ هَذَا الْوَجْهِ وَحَمَّاد بن أبي حميد هُوَ الضَّعِيف فِي الحَدِيث

وعن عمر بن الخطاب رضي الله عنه ان النبي صلى الله عليه وسلم بعث بعثا قبل نجد فغنموا غناىم كثيرة واسرعوا الرجعة فقال رجل منا لم يخرج ما راينا بعثا اسرع رجعة ولا افضل غنيمة من هذا البعث فقال النبي صلى الله عليه وسلم الا ادلكم على قوم افضل غنيمة وافضل رجعة قوما شهدوا صلاة الصبح ثم جلسوا يذكرون الله حتى طلعت عليهم الشمس اولىك اسرع رجعة وافضل غنيمة رواه الترمذي وقال هذا حديث غريب لا نعرفه الا من هذا الوجه وحماد بن ابي حميد هو الضعيف في الحديث

হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৬ পর্যন্ত, সর্বমোট ৬ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে