৯৭২

পরিচ্ছেদঃ ১৮. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সালাতের পর যিকর-আযকার

৯৭২-[১৪] আযরাক্ব ইবনু ক্বায়স (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাদের ইমাম, যার উপনাম ছিল আবূ রিমসাহ্ (রাঃ), তিনি আমাদেরকে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করালেন। সালাতের শেষে তিনি বললেন, আমি এ সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) অথবা এ সালাতের মতো সালাত রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে আদায় করেছি। আবূ রিমসাহ্ বলেন, আবূ বকর ও ’উমার (রাঃ) প্রথম কাতারে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ডানপাশে দাঁড়ালেন। এক লোক এসে সালাতের প্রথম তাকবীরে উপস্থিত হলো। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত আদায় করালেন। অতঃপর তিনি তার ডানে ও বামে সালাম ফিরালেন এমনকি আমরা তাঁর দুই গালের শুভ্রতা দেখতে পেলাম। তারপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ফিরলেন, যেভাবে রিমসাহ্ ফিরছেন। যে ব্যক্তি প্রথম তাকবীর পেয়েছিল, সে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করতে লাগল। ’উমার (রাঃ) তার দিকে চড়াও হলেন এবং তার দু’ কাঁধ ধরে ধাক্কা দিয়ে বললেন, বসে যাও। কারণ আহলে কিতাবরা ধ্বংস হয়েছে এজন্য যে, তারা দু’ সালাতের মাঝে কোন পার্থক্য করত না। ’উমার (রাঃ)-এর এ কথা শুনে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চোখ তুলে তাকিয়ে বললেন, হে খাত্ত্বাবের ছেলে! আল্লাহ তোমাকে সঠিক পথে পৌঁছিয়ে দিয়েছেন। (আবূ দাঊদ)[1]

عَنِ الْأَزْرَقِ بْنِ قَيْسٍ قَالَ: صَلَّى بِنَا إِمَامٌ لَنَا يُكْنَى أَبَا رِمْثَةَ قَالَ صَلَّيْتُ هَذِهِ الصَّلَاةَ أَوْ مِثْلَ هَذِهِ الصَّلَاةِ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: وَكَانَ أَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ يَقُومَانِ فِي الصَّفِّ الْمُقَدَّمِ عَنْ يَمِينِهِ وَكَانَ رَجُلٌ قَدْ شَهِدَ التَّكْبِيرَةَ الْأُولَى مِنَ الصَّلَاةِ فَصَلَّى نَبِيُّ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثُمَّ سَلَّمَ عَنْ يَمِينِهِ وَعَنْ يَسَارِهِ حَتَّى رَأَيْنَا بَيَاضَ خَدَّيْهِ ثُمَّ انْفَتَلَ كَانْفِتَالِ أَبِي رِمْثَةَ يَعْنِي نَفْسَهُ فَقَامَ الرَّجُلُ الَّذِي أَدْرَكَ مَعَهُ التَّكْبِيرَةَ الْأُولَى مِنَ الصَّلَاةِ يَشْفَعُ فَوَثَبَ إِلَيْهِ عُمَرُ فَأَخَذَ بمنكبه فَهَزَّهُ ثُمَّ قَالَ اجْلِسْ فَإِنَّهُ لَمْ يُهْلِكْ أَهْلَ الْكِتَابِ إِلَّا أَنَّهُ لَمْ يَكُنْ بَيْنَ صلواتهم فَصْلٌ. فَرَفَعَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَصَره فَقَالَ: «أصَاب الله بك يَا ابْن الْخطاب» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

عن الازرق بن قيس قال صلى بنا امام لنا يكنى ابا رمثة قال صليت هذه الصلاة او مثل هذه الصلاة مع رسول الله صلى الله عليه وسلم قال وكان ابو بكر وعمر يقومان في الصف المقدم عن يمينه وكان رجل قد شهد التكبيرة الاولى من الصلاة فصلى نبي الله صلى الله عليه وسلم ثم سلم عن يمينه وعن يساره حتى راينا بياض خديه ثم انفتل كانفتال ابي رمثة يعني نفسه فقام الرجل الذي ادرك معه التكبيرة الاولى من الصلاة يشفع فوثب اليه عمر فاخذ بمنكبه فهزه ثم قال اجلس فانه لم يهلك اهل الكتاب الا انه لم يكن بين صلواتهم فصل فرفع النبي صلى الله عليه وسلم بصره فقال اصاب الله بك يا ابن الخطاب رواه ابو داود

ব্যাখ্যা: অত্র হাদীসে জামা‘আতের প্রথম কাতারে শামিল হওয়াকে উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে। অনুরূপভাবে ইমামের ডান দিকে দাঁড়ানোর ব্যাপারে উৎসাহ দেয়া হয়েছে কেননা এটিই উত্তম।

(شَهِدَ التَّكْبِيرَةَ الْأُولى) দ্বারা তাকবীরে তাহরীমা উদ্দেশ্য। আর এটিই প্রকৃতপক্ষে প্রথম তকবীর। এখানে فَصَلّى উল্লেখ করার কারণ এ কথা স্মরণ করিয়ে দেয়া যে, তাকবীরে তাহরীমাতে শামিল ব্যক্তি তার সালাত শেষে যে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করতে দাঁড়িয়েছিল তা ছিল সুন্নাত সালাত। মাসবূক হওয়ার কারণে তার এমন কোন সালাত বাকী ছিল না যা তিনি এ সময় আদায় করছিলেন।

(لَمْ يَكُنْ بَيْنَ صَلواتِهِمْ فَصْلٌ) তাদের সালাতের মাঝে কোন ব্যবধান ছিল না। এখানে فَصْلٌ তথা ব্যবধান দ্বারা উদ্দেশ্য হল দুই সালাতের মধ্যে সময়ের ব্যবধান ছিল না। সালাতের কাতার থেকে আগে বা পিছে সরে আসা উদ্দেশ্য নয়। কেননা ‘উমার (রাঃ) সেই ব্যক্তিকে বলেছিলেন যিনি সালামের পরে পরেই উঠে দাঁড়িয়ে সালাত শুরু করেছিলেন। তিনি তাকে বলেননি যে, সামনে যাও বা পিছনে যাও।

এ অধ্যায়ে মুসান্নিফ (লেখক) এ হাদীসটি উল্লেখ করে এ কথা বুঝাতে চেয়েছেন যে, দুই সালাতের মধ্যে ব্যবধান করেননি অর্থাৎ সালাতের পরে যিকরও করেননি। সালাত আদায়কারীর উচিত সালাতের পরে হাদীসে বর্ণিত দু‘আগুলো পাঠ করা, তারপর সুনানে রাতিবা (নির্ধারিত সুন্নাত) আদায় করা। এতে এটাও বুঝা যায় যে, ফরয সালাতের সাথে নফল সালাত মিলিয়ে আদায় করা যাবে না।

(أصَابَ اللهُ بِكَ) অর্থাৎ আল্লাহ তোমাকে সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছিয়েছেন। ত্বীবী (রহঃ) বলেন, এর অর্থ হলো তুমি যা করেছ ঠিক করেছ। আল্লাহ তোমাকে সঠিক কাজ করার তাওফীক দান করেছেন।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة)