পরিচ্ছেদঃ ৭. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - মাসজিদ ও সালাতের স্থান

৭৪২-[৫৪] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছিঃ যে আমার এই মসজিদে আসে এবং শুধু ভালো কাজের উদ্দেশেই আসে, হয় সে ’ইলম শিক্ষা দেয় অথবা নিজে শিখে, সে আল্লাহর পথে জিহাদে অংশগ্রহণকারীর সমতুল্য। আর যে ব্যক্তি এ ছাড়া অন্য কোন উদ্দেশে আসে সে হলো ঐ ব্যক্তির মতো যে অন্যের জিনিসকে হিংসার চোখে দেখে (কিন্তু ভোগ করতে পারে না)। (ইবনু মাজাহ্ ও বায়হাক্বী- শু’আবুল ঈমান)[1]

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «مَنْ جَاءَ مَسْجِدي هَذَا لم يَأْته إِلَّا لِخَيْرٍ يَتَعَلَّمُهُ أَوْ يُعَلِّمُهُ فَهُوَ بِمَنْزِلَةِ الْمُجَاهِدِ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَمَنْ جَاءَ لِغَيْرِ ذَلِكَ فَهُوَ بِمَنْزِلَةِ الرَّجُلِ يَنْظُرُ إِلَى مَتَاعِ غَيْرِهِ» . رَوَاهُ ابْنُ مَاجَهْ وَالْبَيْهَقِيُّ فِي شُعَبِ الْإِيمَانِ

عن أبي هريرة قال: سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول: «من جاء مسجدي هذا لم يأته إلا لخير يتعلمه أو يعلمه فهو بمنزلة المجاهد في سبيل الله ومن جاء لغير ذلك فهو بمنزلة الرجل ينظر إلى متاع غيره» . رواه ابن ماجه والبيهقي في شعب الإيمان

ব্যাখ্যা: এখানে আমার এ মাসজিদ বলতে সকল মাসজিদকেই বুঝিয়েছেন। অবশ্য মদীনার মাসজিদ মাসজিদুল হারামের পর পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম মাসজিদ।

যে ব্যক্তি মসজিদে কেবল ভালো কাজ, অর্থাৎ- জ্ঞান অথবা ‘আমল বা কর্মের শিক্ষা নিতে বা শিক্ষা দিতে অথবা এই শ্রেণীভুক্ত কোন কাজে আসে। মুসনাদে আহমাদের বর্ণনায় আছে, যে ব্যক্তি আমাদের এ মসজিদে কোন কল্যাণ শিখতে অথবা শিক্ষা দিতে প্রবেশ করে। হাদীসে বর্ণিত সাওয়াব শুধুমাত্র নির্দিষ্ট আনুগত্যমূলক কাজ করে পাওয়া যাবে। অন্য কাজে নয়। তাছাড়া এখানে জ্ঞান শিক্ষা করার ও শিক্ষা দেয়ার মর্যাদার উচ্চ প্রশংসা করা হয়েছে। কারণ এটা এমন কল্যাণকর কাজ মর্যাদায় যার সমপর্যায়ের আর কিছু হতে পারে না। তবে কল্যাণকর সকল বিষয় শেখা ও শিখানো এর অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। এ হাদীসের মধ্যে এই নির্দেশনা রয়েছে যে, মসজিদে শিক্ষা প্রদান ও গ্রহণ পৃথিবীর অন্য যে কোন স্থানের চেয়ে উত্তম।

এরূপ ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় জিহাদে রত ব্যক্তির সমতুল্য। কারণ তারা দু’জনেই আল্লাহর বাণীকে সর্বোচ্চ স্থানে উন্নীত করতে চায় অথবা এর কারণ এটাও হতে পারে যে, জ্ঞান এবং জিহাদ এমন ইবাদাত যার দ্বারা সমস্ত মুসলিমের উপকার সাধিত হয়।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৭. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - মাসজিদ ও সালাতের স্থান

৭৪৩-[৫৫] হাসান বসরী (রহঃ) হতে এ হাদীসটি মুরসাল হিসেবে বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ অচিরেই এমন এক সময় আসবে যখন মানুষ মসজিদে বসে নিজেদের দুনিয়াদারীর কথাবার্তা বলবে। অতএব তোমরা এসব লোকদের গল্প-গুজবে বসবে না। আল্লাহ তা’আলার এমন লোকের প্রয়োজন নেই। (বায়হাক্বী- শু’আবুল ঈমান)[1]

وَعَنِ الْحَسَنِ مُرْسَلًا قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يَأْتِي عَلَى النَّاسِ زَمَانٌ يَكُونُ حَدِيثُهُمْ فِي مَسَاجِدِهِمْ فِي أَمْرِ دُنْيَاهُمْ. فَلَا تُجَالِسُوهُمْ فَلَيْسَ لِلَّهِ فِيهِمْ حَاجَةٌ» . رَوَاهُ الْبَيْهَقِيّ فِي شعب الْإِيمَان

وعن الحسن مرسلا قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «يأتي على الناس زمان يكون حديثهم في مساجدهم في أمر دنياهم. فلا تجالسوهم فليس لله فيهم حاجة» . رواه البيهقي في شعب الإيمان

ব্যাখ্যা: বর্তমানে অধিকাংশ মসজিদের যে অবস্থা চোখে পড়ে তাতে বর্ণিত হাদীসের বাস্তবতা পূর্ণ উপলব্ধি করা যায়। এমন অনেক মাসজিদ দেখা যায় যা চাকচিক্যময় ও জাঁকজমকপূর্ণ করে নির্মাণ করা হয়েছে; এখানে আগত মুসল্লীর সংখ্যাও এমন হয় যে, স্থান সংকুলান হয় না। কিন্তু মসজিদের আদাব বলতে যা রয়েছে তার প্রতি মোটেই ভ্রূক্ষেপ করা হয় না। বরং এমন দেখা যায় যে, এটা বাড়ির বৈঠকখানা। আমাদের এ থেকে পরহেয থাকা উচিত।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৭. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - মাসজিদ ও সালাতের স্থান

৭৪৪-[৫৬] সায়িব ইবনু ইয়াযীদ (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমি মসজিদে শুয়ে আছি, এমন সময় আমাকে একজন লোক কংকর মারলো। আমি জেগে উঠে দেখি তিনি ’উমার ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ)। তিনি আমাকে বললেন, যাও- ঐ দু ব্যক্তিকে আমার নিকট নিয়ে আসো। আমি তাদেরকে নিয়ে আসলাম। তিনি তাদের জিজ্ঞেস করলেন, তোমরা কোন গোত্রের বা কোথাকার লোক? তারা বলল, আমরা ত্বায়িফের লোক। ’উমার (রাঃ) বললেন, যদি তোমরা মদীনার লোক হতে তাহলে আমি তোমাদেরকে নিশ্চয় কঠিন শাস্তি দিতাম। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মসজিদে তোমরা উচ্চস্বরে কথা বলছো। (বুখারী)[1]

وَعَنِ السَّائِبِ بْنِ يَزِيدَ قَالَ: كُنْتُ نَائِمًا فِي الْمَسْجِد فحصبني رجل فَنَظَرت فَإِذا عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ فَقَالَ اذْهَبْ فَأْتِنِي بِهَذَيْنِ فَجِئْتُهُ بِهِمَا فَقَالَ: مِمَّنْ أَنْتُمَا أَوْ مِنْ أَيْنَ أَنْتُمَا قَالَا: مِنْ أَهْلِ الطَّائِفِ. قَالَ: لَوْ كُنْتُمَا مِنْ أَهْلِ الْمَدِينَةِ لَأَوْجَعْتُكُمَا تَرْفَعَانِ أَصْوَاتَكُمَا فِي مَسْجِدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. رَوَاهُ البُخَارِيّ

وعن السائب بن يزيد قال: كنت نائما في المسجد فحصبني رجل فنظرت فإذا عمر بن الخطاب فقال اذهب فأتني بهذين فجئته بهما فقال: ممن أنتما أو من أين أنتما قالا: من أهل الطائف. قال: لو كنتما من أهل المدينة لأوجعتكما ترفعان أصواتكما في مسجد رسول الله صلى الله عليه وسلم. رواه البخاري

ব্যাখ্যা: সাহাবী সায়িব ইবনু ইয়াযীদ বলেন, আমি মসজিদে ঘুমিয়ে ছিলাম অন্য বর্ণনা মতে শুয়ে ছিলাম। এমন সময় এক ব্যক্তি আমাকে লক্ষ্য করে ছোট পাথর বা কঙ্কর নিক্ষেপ করলে জেগে উঠে দেখি কঙ্কর নিক্ষেপকারী হলেন ‘উমার ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ)। অতঃপর তিনি সায়িবকে লক্ষ্য করে বললেন, যাও, এই দুই ব্যক্তিকে আমার নিকট নিয়ে আসো। সায়িব তাদেরকে ‘উমার (রাঃ)-এর নিকট নিয়ে আসলে তিনি তাদেরকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমরা কোন্ গোত্রের কোন্ দলের? অথবা তোমরা কোন শহর থেকে এসেছো? তারা বলল ‘‘আমরা ত্বায়িফের অধিবাসী’’ এ কথা শুনে তিনি বললেন, যদি তোমরা মদীনার অধিবাসী হতে তাহলে আমি তোমাদেরকে নিশ্চয় কঠোর শাস্তি দিতাম। আর তখন তোমাদের কোন অজুহাত গ্রহণযোগ্য হতো না। এর দ্বারা প্রমাণ হয় যে, কোন বিধান সম্পর্কে অজ্ঞতা বা জানা না থাকা একটি গ্রহণযোগ্য অজুহাত।

ইমাম ত্বীবী বলেন, মদীনাবাসী রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মসজিদের সম্মান বা মর্যাদা সম্পর্কে অন্যদের থেকে অধিকতর অবহিত ছিল। তাই বিদেশীদের প্রতি যেভাবে ক্ষমা বা উদারতা, সহিষ্ণুতা প্রদর্শন করা হবে না। এখানে উহ্য প্রশ্ন ‘‘কেন আপনি আমাদের শাস্তি দিবেন?’’ এর উত্তরে ‘উমার (রাঃ) বলেন, কারণ তোমরা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মসজিদে তোমাদের আওয়াজকে উচ্চ করছো। এ মসজিদের মর্যাদা বেশি হওয়ার কারণ হলো তাঁর ঘর এর সাথেই সংযুক্ত ছিল। মসজিদে উচ্চৈঃস্বরে কথা বৈধতা ও অবৈধতার ব্যাপারে দুই পক্ষেরই হাদীস পাওয়ার প্রেক্ষিতে কেউ কেউ বলেছেন যে, মসজিদে উচ্চৈঃস্বরে কথা বলা নিষিদ্ধ হওয়ার হাদীসসমূহ দ্বারা উচ্চৈঃস্বরে অশ্লীল কথা বলা বুঝানো হচ্ছে। আর বৈধতার হাদীস দ্বারা অশ্লীল নয় এমন কথা উচ্চৈঃস্বরে বলা বুঝানো হয়েছে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৭. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - মাসজিদ ও সালাতের স্থান

৭৪৫-[৫৭] ইমাম মালিক (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ’উমার (রাঃ) মসজিদে নাবাবীর পাশে একটি বড় চত্বর বানিয়েছিলেন, এর নাম রাখা হয়েছিল ’বুত্বায়হা’। তিনি লোকেদেরকে বলে রেখেছিলেন, যে ব্যক্তি বাজে কথা বলবে অথবা কবিতা আবৃত্তি করবে অথবা উঁচু কণ্ঠে কথা বলতে চায় সে যেন সেই চত্বরে চলে যায়। (মুয়াত্ত্বা)[1]

وَعَن مَالك قَالَ: بَنَى عُمَرُ رَحَبَةً فِي نَاحِيَةِ الْمَسْجِدِ تُسَمَّى الْبُطَيْحَاءَ وَقَالَ مَنْ كَانَ يُرِيدُ أَنَّ يَلْغَطَ أَوْ يُنْشِدَ شِعْرًا أَوْ يَرْفَعَ صَوْتَهُ فَلْيَخْرُجْ إِلَى هَذِهِ الرَّحَبَةِ. رَوَاهُ فِي الْمُوَطَّأِ

وعن مالك قال: بنى عمر رحبة في ناحية المسجد تسمى البطيحاء وقال من كان يريد أن يلغط أو ينشد شعرا أو يرفع صوته فليخرج إلى هذه الرحبة. رواه في الموطأ

ব্যাখ্যা: মসজিদে সালাত, যিকিরে ইলাহী এবং দীনী কর্মকান্ড সম্পাদনের স্থান। এখানে কবিতা আবৃত্তি কিংবা উচ্চকণ্ঠে কথাবার্তা বলা অভিপ্রেত নয়। এটি আল্লাহ এবং রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর শানেরও বিরোধী। এরপরেও মুসলিম সমাজে এমন লোক থাকে, তারা এর আদাব রক্ষা করতে পারে না। তাই এদের প্রয়োজনে মাসজিদ সংলগ্ন স্থান রাখা যেতে পারে। ‘উমার (রাঃ) হতে এই সুন্নাত গ্রহণ করা যায়।


হাদিসের মানঃ তাহকীক অপেক্ষমাণ
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৭. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - মাসজিদ ও সালাতের স্থান

৭৪৬-[৫৮] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ক্বিবলা (কিবলা/কেবলা)র দিকে থুথু পতিত হতে দেখলেন। এতে তিনি ভীষণ রাগ করলেন। তাঁর চেহারায় এ রাগ প্রকাশ পেল। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) উঠে গিয়ে নিজের হাতে তা খুঁচিয়ে তুলে ফেলে দিলেন। তারপর বললেন, তোমাদের কেউ যখন সালাতে দাঁড়ায় তার ’রবের’ সাথে একান্ত আলাপে রত থাকে। আর তখন তার ’রব’ থাকেন তার ও ক্বিবলা (কিবলা/কেবলা)র মাঝে। অতএব কেউ যেন তার ক্বিবলা (কিবলা/কেবলা)র দিকে থুথু না ফেলে, বরং বাম দিকে অথবা পায়ের নীচে ফেলে। এরপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের চাদরের এক পাশ ধরলেন, এতে থুথু ফেললেন, তারপর চাদরের একাংশকে অপরাংশ দ্বারা মলে দিলেন এবং বললেনঃ সে যেন এভাবে থুথু নিঃশেষ করে দেয়। (বুখারী)[1]

وَعَن أنس: رَأَى النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نُخَامَةً فِي الْقِبْلَةِ فَشَقَّ ذَلِكَ عَلَيْهِ حَتَّى رُئِيَ فِي وَجهه فَقَامَ فحكه بِيَدِهِ فَقَالَ: «إِنَّ أَحَدَكُمْ إِذَا قَامَ فِي صلَاته فَإِنَّمَا يُنَاجِي ربه أَو إِن رَبَّهُ بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْقِبْلَةِ فَلَا يَبْزُقَنَّ أَحَدُكُمْ قِبَلَ قِبْلَتِهِ وَلَكِنْ عَنْ يَسَارِهِ أَوْ تَحْتَ قَدَمِهِ» ثُمَّ أَخَذَ طَرَفَ رِدَائِهِ فَبَصَقَ فِيهِ ثُمَّ رَدَّ بَعْضَهُ عَلَى بَعْضٍ فَقَالَ: «أَوْ يفعل هَكَذَا» . رَوَاهُ البُخَارِيّ

وعن أنس: رأى النبي صلى الله عليه وسلم نخامة في القبلة فشق ذلك عليه حتى رئي في وجهه فقام فحكه بيده فقال: «إن أحدكم إذا قام في صلاته فإنما يناجي ربه أو إن ربه بينه وبين القبلة فلا يبزقن أحدكم قبل قبلته ولكن عن يساره أو تحت قدمه» ثم أخذ طرف ردائه فبصق فيه ثم رد بعضه على بعض فقال: «أو يفعل هكذا» . رواه البخاري

ব্যাখ্যা: সালাতরত অবস্থায় মুসল্লী ও সুতরার মাঝে আল্লাহ তা‘আলাকে অনুভব করাকে ইহসান বলে। এ অবস্থায় ক্বিবলার দিকে থুথু বা নাকের ময়লা ফেলা অপছন্দনীয়। এ অবস্থায় কী করণীয় তা’ এ হাদীস হতে জানা যায়।

ইবনু খুযায়মাহ্ ও ইবনু হিব্বান (রহঃ) মারফূ‘ সূত্রে বর্ণনা রয়েছে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি ক্বিবলার দিকে থুথু ফেলল, সে ক্বিয়ামাতের (কিয়ামতের) দিন তার দু' চোখের মাঝে ঐ থুথু নিয়ে উপস্থিত হবে। কিন্তু যদি তাকে থুথু ফেলতেই হয় তাহলে সে যেন তা তার বাম দিকে ফেলে, যদি বামে জায়গা খালি না থাকে। তবে ডানে ফেলবে না, কেননা তার ডানে সৎকর্মসমূহের লেখক (মালাক) থাকে। যেমনটা ইবনু আবী শায়বাহ্ সহীহ সানাদে বর্ণনা করেছেন। অথবা বাম পায়ের নিচে ফেলবে, যখন বাম পাশে জায়গা খালি না থাকে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৭. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - মাসজিদ ও সালাতের স্থান

৭৪৭-[৫৯] সায়িব ইবনু খল্লাদ (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাহাবীগণের মধ্যে একজন বলেন, এক লোক কিছু লোকের ইমামাত করছিল। সে ক্বিবলা (কিবলা/কেবলা)র দিকে থুথু ফেলল। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা দেখলেন এবং ঐ লোকগুলোকে বললেন, এ ব্যক্তি যেন আর তোমাদের সালাত আদায় না করায়। পরে এই লোক তাদের সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করাতে চাইলে লোকেরা তাকে সালাত আদায় করতে নিষেধ করলো এবং রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নির্দেশ তাকে জানিয়ে দিল। সে বিষয়টি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জানালে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হ্যাঁ (ঘটনা ঠিক)। রাবী (বর্ণনাকারী) বলেন, আমার মনে হয় রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে এ কথাও বলেছেন, তুমি আল্লাহ ও তাঁর রসূল কে কষ্ট দিয়েছ। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَن السَّائِب بن خَلاد - وَهُوَ رَجُلٍ مِنْ أَصْحَابِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنْ رَجُلًا أَمَّ قَوْمًا فَبَصَقَ فِي الْقِبْلَةِ وَرَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَنْظُرُ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حِينَ فَرَغَ: «لَا يُصَلِّي لَكُمْ» . فَأَرَادَ بَعْدَ ذَلِك أَن يُصَلِّي لَهُم فمنعوه وَأَخْبرُوهُ بِقَوْلِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَذَكَرَ ذَلِكَ لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: نَعَمْ وَحَسِبْتُ أَنَّهُ قَالَ: «إِنَّكَ آذيت الله وَرَسُوله» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

وعن السائب بن خلاد - وهو رجل من أصحاب رسول الله صلى الله عليه وسلم إن رجلا أم قوما فبصق في القبلة ورسول الله صلى الله عليه وسلم ينظر فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم حين فرغ: «لا يصلي لكم» . فأراد بعد ذلك أن يصلي لهم فمنعوه وأخبروه بقول رسول الله صلى الله عليه وسلم فذكر ذلك لرسول الله صلى الله عليه وسلم فقال: نعم وحسبت أنه قال: «إنك آذيت الله ورسوله» . رواه أبو داود

ব্যাখ্যা: এ হাদীসে সালাতে ইমামাতকারীর একটি বিশেষ প্রয়োজনীয় গুণ বা বৈশিষ্ট্য সম্বন্ধে জানা যায়। আপাতঃদৃষ্টে ক্বিবলার দিকে থুথু ফেলা তেমন গুরুতর মনে না-ও হতে পারে। কিন্তু যেহেতু ইমাম কেবল সালাতেরই ইমাম নন, বরং তার কার্যকলাপও মুসল্লীদের জন্য শিক্ষণীয়। তাই এমন লোক হতে হবে যিনি মসজিদের আদাবের ব্যাপারে মনোযোগী ও আন্তরিক হবেন। এক্ষেত্রে ব্যত্যয় ঘটলে তা’ নিফাক্বের দৃষ্টান্তও হতে পারে। ক্বিবলার দিকে থুথু ফেলা আল্লাহকে কষ্ট দেয়ার শামিল।

এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘‘নিশ্চয় যারা আল্লাহ এবং তাঁর রসূলকে কষ্ট দেয়, দুনিয়া ও আখিরাতে তাদের ওপর আল্লাহ অভিশাপ দেন এবং তাদের জন্য তিনি অপমানকর শাস্তি তৈরি করে রেখেছেন’’- (সূরাহ্ আল আহযা্ব ৩৩ : ৫৭)। কিন্তু ব্যক্তিটি অজ্ঞতা বা ভুলবশত করে থাকলে বিধায় তা কুফরী হিসেবে গণ্য হবে না। কারো মতে, হতে পারে ঐ ব্যক্তিটি মুনাফিক্ব ছিল। আর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার নিফাক্বী কপটতা সম্পর্কে জানতেন বিধায় তাকে ইমামতি থেকে নিষেধ করেছিলেন।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৭. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - মাসজিদ ও সালাতের স্থান

৭৪৮-[৬০] মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (নিত্য দিনের অভ্যাসের বিপরীত) ফজরের (ফজরের) সালাতে আসতে এতটা দেরী করলেন যে, সূর্য প্রায় উঠে উঠে। এর মধ্যে তাড়াহুড়া করে তিনি আসলেন। সাথে সাথে সালাতের ইক্বামাত(ইকামত/একামত) দেয়া হলো। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সংক্ষিপ্ত করে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করলেন। সালাম দেবার পর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) উচ্চকণ্ঠে আমাদের উদ্দেশ্য করে বললেন, তোমরা সালাতের কাতারে যে যেভাবে আছো সেভাবে থাকো। এরপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদের দিকে ফিরলেন ও বললেন, শুন! আজ ভোরে তোমাদের কাছে আসতে যে কারণ আমার কাছে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল তা হলো, আমি রাতে ঘুম থেকে উঠলাম। উযূ (ওযু/ওজু/অজু) করলাম। পরে আমার পক্ষে যা সম্ভব হলো সালাত আদায় করলাম। সালাতে আমার তন্দ্রা ধরল, ঘুমে অসাড় হয়ে পড়লাম। এ সময় দেখি, আমি আমার ’প্রতিপালক’ তাবারাকা ওয়া তা’আলার কাছে উপস্থিত। তিনি খুবই উত্তম অবস্থায় আছেন। তিনি আমাকে ডাকলেন, হে মুহাম্মাদ! আমি উত্তর দিলাম, হে আমার ’রব’, আমি উপস্থিত। তিনি বললেন, ’’মালা-উল আ’লা-’’ অর্থাৎ- শীর্ষস্থানীয় মালায়িকাহ্ কী নিয়ে বিতর্ক করছে? আমি উত্তরে বললাম, আমি তো কিছু জানি না, হে আমার ’রব’! এভাবে তিনি আমাকে তিনবার জিজ্ঞেস করলেন।

তারপর দেখি, তিনি আমার দু’ কাঁধের মাঝখানে তাঁর হাত রেখে দিয়েছেন। এতে আমি আমার সিনায় তাঁর আঙ্গুলের শীতলতা অনুভব করতে লাগলাম। আমার নিকট তখন সব জিনিস প্রকাশ হয়ে পড়ল। আমি সকল ব্যাপার বুঝে গেলাম। তারপর তিনি আবার আমাকে ডাকলেন, হে মুহাম্মাদ! আমি বললাম, আমি উপস্থিত হে পরওয়ারদিগার। এখন বলো দেখি ’’মালা-উল আ’লা-’’ কী নিয়ে তর্ক-বিতর্ক করছে। আমি বললাম, গুনাহ মিটিয়ে দেবার ব্যাপারসমূহ নিয়ে। আল্লাহ তা’আলা বললেন, সে সব জিনিস কী? আমি বললাম, সালাতের জন্য মসজিদে যাওয়া, সালাতের পরে দু’আ ইত্যাদির জন্য মসজিদে বসা এবং শীতের বা অন্য কারণে উযূ করা কষ্টকর হলেও তা উপেক্ষা করে উযূ করা। আবার আল্লাহ তা’আলা জিজ্ঞেস করলেন, আর কী ব্যাপারে তারা বিতর্ক করছে? আমি বললাম, দারাজাত অর্থাৎ- মর্যাদার ব্যাপারে। তিনি বললেন, সে সব কী? আমি বললাম, গরীব-মিসকীনদের খাবার দেয়া, ভদ্রভাবে কথা বলা, রাতে মানুষ যখন ঘুমায় সে সময় উঠে (তাহাজ্জুদের) সালাত আদায় করা।

তারপর আবার আল্লাহ তা’আলা বললেন, আচ্ছা ঠিক আছে। এখন তোমার যা চাওয়ার তা নিবেদন কর। তাই আমি দু’আ করলামঃ ’’হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে নেক কাজ করার, খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকার, মিসকীনের বন্ধুত্ব, তোমার ক্ষমা ও রহমত চাই। আর যখন তুমি কোন জাতির মধ্যে গুমরাহী ছড়াতে চাও, তার আগে আমাকে গুমরাহী ছাড়া উঠিয়ে নিও। আমি তোমার কাছে তোমার ভালোবাসা আর ঐ ব্যক্তির ভালোবাসা চাই, যে তোমাকে ভালোবাসে, আর আমি এমন ’আমলকে ভালোবাসতে চাই যে ’আমল আমাকে তোমার ভালোবাসার নিকটবর্তী করবে’’। তারপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এ স্বপ্ন ষোলআনা সত্য। তাই তোমরা এ কথা স্মরণ রাখবে, আর লোকেদেরকে শিখাবে। (আহমাদ ও তিরমিযী;[1]

ইমাম তিরমিযী আরো বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ। আমি এ হাদীসটি সম্পর্কে মুহাম্মাদ ইবনু ইসমা’ঈল বুখারী জিজ্ঞেস করেছি; তিনিও বলেছেন এ হাদীসটি সহীহ।)

وَعَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ قَالَ: احْتَبَسَ عَنَّا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ذَاتَ غَدَاة عَن صَلَاة الصُّبْح حَتَّى كدنا نتراءى عين الشَّمْس فَخرج سَرِيعا فثوب بِالصَّلَاةِ فَصَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَتَجَوَّزَ فِي صَلَاتِهِ فَلَمَّا سَلَّمَ دَعَا بِصَوْتِهِ فَقَالَ لَنَا عَلَى مَصَافِّكُمْ كَمَا أَنْتُمْ ثُمَّ انْفَتَلَ إِلَيْنَا ثُمَّ قَالَ أَمَا إِنِّي سَأُحَدِّثُكُمْ مَا حَبَسَنِي عَنْكُمُ الْغَدَاةَ إِنِّي قُمْتُ مِنَ اللَّيْلِ فَتَوَضَّأْتُ وَصَلَّيْتُ مَا قُدِّرَ لِي فَنَعَسْتُ فِي صَلَاتِي حَتَّى اسْتَثْقَلْتُ فَإِذَا أَنَا بِرَبِّي تَبَارَكَ وَتَعَالَى فِي أَحْسَنِ صُورَةٍ فَقَالَ يَا مُحَمَّدُ قُلْتُ لَبَّيْكَ رَبِّ قَالَ فِيمَ يخْتَصم الْمَلأ الْأَعْلَى قلت لَا أَدْرِي رب قَالَهَا ثَلَاثًا قَالَ فَرَأَيْتُهُ وَضَعَ كَفَّهُ بَيْنَ كَتِفَيَّ حَتَّى وَجَدْتُ بَرْدَ أَنَامِلِهِ بَيْنَ ثَدْيَيَّ فَتَجَلَّى لِي كُلُّ شَيْءٍ وَعَرَفْتُ فَقَالَ يَا مُحَمَّدُ قُلْتُ لَبَّيْكَ رَبِّ قَالَ فِيمَ يَخْتَصِمُ الْمَلأ الْأَعْلَى قلت فِي الْكَفَّارَات قَالَ مَا هُنَّ قُلْتُ مَشْيُ الْأَقْدَامِ إِلَى الْجَمَاعَاتِ وَالْجُلُوسُ فِي الْمَسَاجِد بَعْدَ الصَّلَوَاتِ وَإِسْبَاغُ الْوَضُوءِ حِينَ الْكَرِيهَاتِ قَالَ ثُمَّ فِيمَ؟ قُلْتُ: فِي الدَّرَجَاتِ. قَالَ: وَمَا هن؟ إطْعَام الطَّعَام ولين الْكَلَام وَالصَّلَاة وَالنَّاس نيام. ثمَّ قَالَ: سل قل اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ فِعْلَ الْخَيْرَاتِ وَتَرْكَ الْمُنْكَرَاتِ وَحُبَّ الْمَسَاكِينِ وَأَنْ تَغْفِرَ لِي وَتَرْحَمَنِي وَإِذَا أَرَدْتَ فِتْنَةً قوم فتوفني غير مفتون أَسأَلك حَبَّكَ وَحُبَّ مَنْ يَحْبُكُ وَحُبَّ عَمَلٍ يُقَرِّبُنِي إِلَى حبك . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّهَا حَقٌّ فَادْرُسُوهَا ثُمَّ تَعَلَّمُوهَا» . رَوَاهُ أَحْمَدُ وَالتِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ وَسَأَلْتُ مُحَمَّد ابْن إِسْمَاعِيل عَن هَذَا الحَدِيث فَقَالَ: هَذَا حَدِيث صَحِيح

وعن معاذ بن جبل قال: احتبس عنا رسول الله صلى الله عليه وسلم ذات غداة عن صلاة الصبح حتى كدنا نتراءى عين الشمس فخرج سريعا فثوب بالصلاة فصلى رسول الله صلى الله عليه وسلم وتجوز في صلاته فلما سلم دعا بصوته فقال لنا على مصافكم كما أنتم ثم انفتل إلينا ثم قال أما إني سأحدثكم ما حبسني عنكم الغداة إني قمت من الليل فتوضأت وصليت ما قدر لي فنعست في صلاتي حتى استثقلت فإذا أنا بربي تبارك وتعالى في أحسن صورة فقال يا محمد قلت لبيك رب قال فيم يختصم الملأ الأعلى قلت لا أدري رب قالها ثلاثا قال فرأيته وضع كفه بين كتفي حتى وجدت برد أنامله بين ثديي فتجلى لي كل شيء وعرفت فقال يا محمد قلت لبيك رب قال فيم يختصم الملأ الأعلى قلت في الكفارات قال ما هن قلت مشي الأقدام إلى الجماعات والجلوس في المساجد بعد الصلوات وإسباغ الوضوء حين الكريهات قال ثم فيم؟ قلت: في الدرجات. قال: وما هن؟ إطعام الطعام ولين الكلام والصلاة والناس نيام. ثم قال: سل قل اللهم إني أسألك فعل الخيرات وترك المنكرات وحب المساكين وأن تغفر لي وترحمني وإذا أردت فتنة قوم فتوفني غير مفتون أسألك حبك وحب من يحبك وحب عمل يقربني إلى حبك . فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «إنها حق فادرسوها ثم تعلموها» . رواه أحمد والترمذي وقال: هذا حديث حسن صحيح وسألت محمد ابن إسماعيل عن هذا الحديث فقال: هذا حديث صحيح

ব্যাখ্যা: হাদীসটি স্বব্যাখ্যাত। রাত্রির সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) শেষে কিংবা সালাতরত অবস্থায় নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর গভীর নিদ্রা চলে আসে। সে অবস্থায় তিনি যা কিছু দেখেন তা’ কোন চর্মচক্ষুর দর্শন ছিল না। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্বপ্নও ওয়াহী, তাই এখানে যা কিছু তিনি দেখেছেন এবং তাঁর রবের সাথে তার যা কিছু কথোপকথন হয়েছে তা’ যেভাবে বর্ণনায় এসেছে, আমাদেরকে কোনরূপ পরিবর্তন, পরিবর্ধন, সংযোজন কিংবা বিয়োজন ছাড়া সেভাবেই বিশ্বাস ও গ্রহণ করতে হবে। কেবল হাদীসের শেষদিকে যে দু‘আ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ তা‘আলার হুকুমে করেছেন, সেগুলোর অর্থ পরিষ্কার ও স্পষ্ট বিধায় আমরাও এরূপ দু‘আ করতে পারি।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৭. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - মাসজিদ ও সালাতের স্থান

৭৪৯-[৬১] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’আমর ইবনুল ’আস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে প্রবেশ করার সময় বলতেন, আমি আশ্রয় চাচ্ছি মহান আল্লাহর মর্যাদাপূর্ণ চেহারার ও তাঁর অফুরন্ত ক্ষমতায় বিতাড়িত শায়ত্বন (শয়তান) হতে। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, কেউ এ দু’আ পাঠ করলে শায়ত্বন (শয়তান) বলে, আমার নিকট হতে সে সারা দিনের জন্য রক্ষা পেয়ে গেল। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ إِذا دخل الْمَسْجِد قَالَ: «أَعُوذُ بِاللَّهِ الْعَظِيمِ وَبِوَجْهِهِ الْكَرِيمِ وَسُلْطَانِهِ الْقَدِيمِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ» قَالَ: «فَإِذَا قَالَ ذَلِكَ قَالَ الشَّيْطَان حفظ مني سَائِر الْيَوْم» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

وعن عبد الله بن عمرو بن العاص قال: كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول إذا دخل المسجد قال: «أعوذ بالله العظيم وبوجهه الكريم وسلطانه القديم من الشيطان الرجيم» قال: «فإذا قال ذلك قال الشيطان حفظ مني سائر اليوم» . رواه أبو داود

ব্যাখ্যা: রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে প্রবেশের জন্য এর দরজায় পৌঁছলে এ দু‘আ পড়তেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আরো বলেন, যখন কোন মু‘মিন এই দু‘আ পড়ে তখন শায়ত্বন (শয়তান) বলে, এই দু‘আকারী আমার বিভ্রান্তি বা পথভ্রষ্টতা থেকে দিনের বাকী সময় বা সারা দিন-রাত রক্ষা পেল।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৭. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - মাসজিদ ও সালাতের স্থান

৭৫০-[৬২] ’আত্বা ইবনু ইয়াসার (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ দু’আ করলেনঃ ’’হে আল্লাহ! তুমি আমার কবরকে ভূত বানিও না যা লোকেরা পূজা করবে। আল্লাহর কঠিন রোষাণলে পতিত হবে সেই জাতি যারা তাদের নবীর কবরকে মসজিদে পরিণত করেছে।’’ ইমাম মালিক মুরসাল হিসেবে।[1]

وَعَن عَطاء بْنِ يَسَارٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم: «اللَّهُمَّ لَا تجْعَل قَبْرِي وثنا يعبد اشْتَدَّ غَضَبُ اللَّهِ عَلَى قَوْمٍ اتَّخَذُوا قُبُورَ أَنْبِيَائهمْ مَسَاجِد» . رَوَاهُ مَالك مُرْسلا

وعن عطاء بن يسار قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «اللهم لا تجعل قبري وثنا يعبد اشتد غضب الله على قوم اتخذوا قبور أنبيائهم مساجد» . رواه مالك مرسلا

ব্যাখ্যা: এ দু‘আয় (وَثَنًا) ‘‘ওয়াসানান’’ শব্দের ব্যবহার ঘটেছে। ‘ওয়াসানান’ বলা হয় ঐ প্রত্যেক দেহ বা শরীরকে যা মণি-মানিক্য, কাঠ বা পাথর দ্বারা গঠন করা হয়। যাকে মানুষ সম্মান করে, বারবার যিয়ারত করে। যেমনটা আমরা বর্তমানে বিভিন্ন মাযার ও দর্শনীয় স্থানের ক্ষেত্রে দেখি এবং শুনি।

রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে যেন জিজ্ঞেস করা হলো যে, তিনি কেন এ দু‘আ করেছেন? এর উত্তরে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, ইয়াহূদী-খ্রিষ্টানদের ওপর গযব পতিত হয়েছে এজন্য যে, তারা তাদের নাবীদের কবরকে মাসজিদ হিসেবে গ্রহণ করেছিল। তিনি এ কথাগুলো এজন্য বলছেন যে, তিনি তার উম্মাতের প্রতি দয়াশীল ও দরদী। এর মাধ্যমে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তার পূর্ববর্তী জাতিসমূহের মধ্যে যে শির্ক আপতিত হয়েছিল তার থেকে উম্মাতকে সতর্ক করছেন। এই উম্মাতের মধ্যে থেকেও যে ব্যক্তি এরূপ করবে তার ওপর আল্লাহর গযব পতিত হবে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৭. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - মাসজিদ ও সালাতের স্থান

৭৫১-[৬৩] মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ) হতে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ’হীত্বা-ন’-এ সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করতে ভালোবাসতেন। বর্ণনাকারীদের কেউ কেউ বলেছেন, ’হীত্বা-ন’ অর্থ বাগান।[1]

ইমাম তিরমিযী বলেছেন, হাদীসটি গরীব। তিনি আরো বলেছেন, আমরা এ হাদীসটি হাসান ইবনু আবূ জা’ফার ছাড়া অন্য কারো নিকট হতে অবগত নই। আর হাসানকে ইয়াহ্ইয়া ইবনু সা’ঈদ প্রমুখ য’ঈফ বলেছেন।

(وَعَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ قَالَ: كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَسْتَحِبُّ الصَّلَاةَ فِي الْحِيطَانِ. قَالَ بَعْضُ رُوَاتِهِ يَعْنِي الْبَسَاتِينَ رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لَا نَعْرِفُهُ إِلَّا مِنْ حَدِيثِ الْحَسَنِ بن أبي جَعْفَر وَقد ضعفه يحيى ابْن سعيد وَغَيره

(وعن معاذ بن جبل قال: كان النبي صلى الله عليه وسلم يستحب الصلاة في الحيطان. قال بعض رواته يعني البساتين رواه الترمذي وقال: هذا حديث غريب لا نعرفه إلا من حديث الحسن بن أبي جعفر وقد ضعفه يحيى ابن سعيد وغيره

ব্যাখ্যা: বাগানে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায়কে পছন্দ করার কয়েকটি কারণ হতে পারে। এক- বাগানে একাকিত্ব লাভ করা যায়। দুই- সালাতের কারণে বাগানের ফলে বারাকাত আসতে পারে।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৭. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - মাসজিদ ও সালাতের স্থান

৭৫২-[৬৪] আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কেউ যদি তার ঘরে সালাত আদায় করে, তাহলে তার এ সালাত এক সালাতের সমান। আর যদি সে এলাকার পাঞ্জেগানা মসজিদে সালাত আদায় করে তাহলে তার এই সালাত পঁচিশ সালাতের সমান। আর সে যদি জুমু’আহ্ মসজিদে সালাত আদায় করে তাহলে তার সালাত পাঁচশত সালাতের সমান। সে যদি মসজিদে আক্বসা (আকসা) অর্থাৎ- বায়তুল মাক্বদিসে সালাত আদায় করে, তার এ সালাত পঞ্চাশ হাজার সালাতের সমান। আর যদি আমার মসজিদে (মসজিদে নাবাবী) সালাত আদায় করে তার এ সালাত পঞ্চাশ হাজার সালাতের সমান। আর সে যদি মাসজিদুল হারামে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করে তবে তার সালাত এক লাখ সালাতের সমান। (ইবনু মাজাহ্)[1]

وَعَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «صَلَاةُ الرَّجُلِ فِي بَيْتِهِ بِصَلَاةٍ وَصَلَاتُهُ فِي مَسْجِدِ الْقَبَائِلِ بِخَمْسٍ وَعِشْرِينَ صَلَاةً وَصَلَاتُهُ فِي الْمَسْجِدِ الَّذِي يجمع فِيهِ بخسمائة صَلَاةٍ وَصَلَاتُهُ فِي الْمَسْجِدِ الْأَقْصَى بِخَمْسِينَ أَلْفِ صَلَاةٍ وَصَلَاتُهُ فِي مَسْجِدِي بِخَمْسِينَ أَلْفِ صَلَاةٍ وَصلَاته فِي الْمَسْجِد الْحَرَام بِمِائَة ألف صَلَاة» . رَوَاهُ ابْن مَاجَه

وعن أنس بن مالك قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «صلاة الرجل في بيته بصلاة وصلاته في مسجد القبائل بخمس وعشرين صلاة وصلاته في المسجد الذي يجمع فيه بخسمائة صلاة وصلاته في المسجد الأقصى بخمسين ألف صلاة وصلاته في مسجدي بخمسين ألف صلاة وصلاته في المسجد الحرام بمائة ألف صلاة» . رواه ابن ماجه

ব্যাখ্যা: এখানে সালাতের ছ’টি স্থানগত স্তর এবং তার মর্যাদা বর্ণনা করা হয়েছে। এর শুরু ঘরে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) দিয়ে এবং শেষ মাসজিদুল হারামে আদায়কৃত সালাতের মর্যাদা দিয়ে। এখানে ঘরের সালাতে এক সালাতের মসজিদের সালাতে পঁচিশ সালাত, জুমু‘আহ্ মসজিদে পাঁচশত গুণ, বায়তুল মুকাদ্দাসের সালাতে পঞ্চাশ হাজার গুণ, মসজিদে নাবাবীতে মসজিদে আক্বসার চেয়ে পঞ্চাশ হাজার গুণ এবং মসজিদে নাবাবীর তুলনায় কা‘বায় মসজিদে এক লক্ষ গুণ বেশি সাওয়াবের কথা বলা হয়েছে। এ হাদীসের উদ্দেশ্য হলো, মুসলিম যাতে তার সালাতের মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে উচ্চতর সাওয়াব অর্জনের চেষ্টায় রত থাকে।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৭. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - মাসজিদ ও সালাতের স্থান

৭৫৩-[৬৫] আবূ যার গিফারী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রসূল! দুনিয়াতে সর্বপ্রথম কোন্ মাসজিদ নির্মিত হয়েছে? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, ’মাসজিদুল হারাম’। আমি বললাম, তারপর কোনটি? তিনি বললেন, ’মাসজিদুল আক্বসা (আকসা)’। আমি বললাম, এ উভয় মাসজিদ তৈরির মধ্যে সময়ের পার্থক্য কত? তিনি বললেন, চল্লিশ বছরের পার্থক্য। তারপর দুনিয়ার সব জায়গায়ই তোমার জন্য মাসজিদ, সালাতের সময় যেখানেই হবে সেখানেই সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করে নিবে। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

وَعَنْ أَبِي ذَرٍّ قَالَ: قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ أَيُّ مَسْجِدٍ وُضِعَ فِي الْأَرْضِ أَوَّلُ؟ قَالَ: «الْمَسْجِدُ الْحَرَامُ» قَالَ: قُلْتُ: ثُمَّ أَيْ؟ قَالَ: «ثُمَّ الْمَسْجِدُ الْأَقْصَى» . قُلْتُ: كَمْ بَيْنَهُمَا؟ قَالَ: «أَرْبَعُونَ عَامًا ثُمَّ الْأَرْضُ لَكَ مَسْجِدٌ فَحَيْثُمَا أَدْرَكَتْكَ الصَّلَاةُ فصل»

وعن أبي ذر قال: قلت: يا رسول الله أي مسجد وضع في الأرض أول؟ قال: «المسجد الحرام» قال: قلت: ثم أي؟ قال: «ثم المسجد الأقصى» . قلت: كم بينهما؟ قال: «أربعون عاما ثم الأرض لك مسجد فحيثما أدركتك الصلاة فصل»

ব্যাখ্য : ঐতিহাসিক তথ্যপঞ্জি অনুসারে ইবরাহীম (আঃ) ও সুলায়মান (আঃ)-এর সময়কালের পার্থক্য এক হাজার বছরেরও বেশি। অথচ হাদীসে মাসজিদুল হারাম ও মাসজিদুল আক্বসা (আকসা) নির্মাণের মধ্যকার পার্থক্য মাত্র চল্লিশ বছর। এতে একটি তথ্যবিভ্রাটের সৃষ্টি হচ্ছে। প্রকৃত সত্য হলো, দু’টি মাসজিদই আমাদের পিতা আদম (আঃ) নির্মাণ করেছিলেন এবং তাঁর দ্বারা দু’টি মাসজিদ নির্মাণের মধ্যকার ব্যবধান ছিল চল্লিশ বছর। পরবর্তীতে এই দু’ ‘ইবাদাতসহ পুনর্নির্মাণ বা সংস্কারের প্রয়োজন দেখা দেয়। মাসজিদুল হারাম সংস্কার করে পুনঃনির্মাণ করেন ইবরাহীম (আঃ) এবং মাসজিদুল আক্বসা (আকসা) পুনঃনির্মিত হয় সুলায়মান (আঃ)-এর সময় এবং তিনি জিনদের দ্বারা এ নির্মাণ কাজ করিয়েছিলেন এবং ঐ কাজের তদারকি করা অবস্থায় লাঠিতে ভর দিয়েই তিনি ইন্তিকাল করেন। ইব্রাহীম ও সুলায়মান (আঃ) মাসজিদ দু’টির সংস্কারক বা পুনঃনির্মাণকারী ছিলেন। প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন না।

এরপর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, অতঃপর পৃথিবীর যে কয়টি স্থানে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় নিষিদ্ধ হওয়ার কথা বর্ণিত আছে তা ব্যতীত সমস্ত পৃথিবীই বা ভূ-পৃষ্ঠতেই সালাত আদায় বৈধ। যেখানে সালাতের সময় উপস্থিত হবে সেখানেই সালাত আদায় করবে। সালাত প্রথম ওয়াক্তে আদায় করার প্রতি এখানে ইঙ্গিত করা হয়েছে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ১২ পর্যন্ত, সর্বমোট ১২ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে