পরিচ্ছেদঃ
৩৩. ’আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ওয়াহীর সূচনা হয় ঘুমের মধ্যে সত্য স্বপ্ন দেখার মাধ্যমে। তিনি যে স্বপ্নই দেখতেন তা ভোরের আলোর মত উদ্ভাসিত হতো। অতঃপর তাঁর নিকট একাকিত্বকে প্রিয় করে দেয়া হল। ফলে তিনি হেরা গুহায় গিয়ে সেখানে বেশ কয়েক রাত ’ইবাদাতে কাটিয়ে দিতেন এবং এজন্য খাদ্য দ্রব্যও সঙ্গে নিয়ে যেতেন। এরপর খাদীজাহ (রাঃ)-এর কাছে ফিরে আসতেন এবং তিনি তাকে এরূপ খাদ্য দ্রব্য তৈরি করে দিতেন। শেষে তাঁর কাছে সত্যের বাণী (ওয়াহী) আসল। আর এ সময় তিনি হেরা গুহায় ছিলেন।
সেখানে ফেরেশতা এসে তাঁকে বলল, আপনি পড়ুন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমি বললামঃ আমি তো আমি পাঠক নই। তখন তিনি আমাকে জড়িয়ে ধরে শক্ত করে চাপ দিলেন। এমনকি এতে আমার খুব কষ্ট হল। তারপর তিনি আমাকে ছেড়ে দিলেন এবং বললেন, আপনি পড়ুন। আমি বললাম, আমি পাঠক নই। তিনি দ্বিতীয়বার আমাকে শক্ত করে চেপে ধরলেন। এবারেও এতে আমার খুব কষ্ট হল। অতঃপর তিনি আমাকে ছেড়ে দিয়ে বললেন, আপনি পড়ুন। আমি বললাম, আমি তো পাঠক নই। এরপর তিনি তৃতীয়বার আমাকে শক্ত করে এমন চেপে ধরলেন যে, এবারেও এতে আমার খুব কষ্ট হল। তারপর তিনি আমাকে ছেড়ে দিয়ে বললেন, পাঠ করুন, আপনার প্রতিপালকের নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন......যা সে জানত না (সূরাহ আল-আলাক ৯৬/১-৫) এ আয়াত পর্যন্ত।
এরপর তিনি তা নিয়ে খাদীজাহ (রাঃ)-এর কাছে কম্পিত হৃদয়ে ফিরে এলেন। আর বললেন, আমাকে কম্বল দিয়ে ঢেকে দাও। আমাকে কম্বল দিয়ে ঢেকে দাও। ফলে তাঁরা তাঁকে কম্বল দিয়ে ঢেকে দিলেন। অবশেষে তাঁর থেকে ভীতি দূর হয়ে গেল। এরপর তিনি বললেন, হে খাদীজাহ! আমার কী হল? এবং তাকে সমস্ত ঘটনা জানালেন। আর বললেনঃ আমি আমার জীবন সম্পর্কে শঙ্কাবোধ করছি। খাদীজাহ (রাঃ) তাকে বললেন, কক্ষনো না। আপনি সুসংবাদ গ্রহণ করুন। আল্লাহর কসম, আল্লাহ্ আপনাকে কখনই লাঞ্ছিত করবেন না। কেননা, আপনি তো আত্মীয়তার বন্ধন জুড়ে রাখেন, সত্যকথা বলেন, অনাথ অক্ষমদের বোঝা বহন করেন, মেহমানদের মেহমানদারী করেন এবং হকের পথে আগত যাবতীয় বিপদে সাহায্য করেন। অতপর খাদীজাহ (রাঃ) তাঁকে নিয়ে চললেন। অতঃপর তাঁকে নিয়ে ওরাকা ইবনু নাওফল-এর কাছে এলেন। আর তিনি খাজীদাহ (রাঃ)-এর চাচার পুত্র (চাচাত ভাই) ছিলেন। তিনি জাহিলীয়াতের যুগে খৃষ্ট ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। তিনি আরবী কিতাব লিখতেন। তাই সে ইন্জীল আরবীতে অনুবাদ করতেন- যতখানি লেখা আল্লাহর মনযুর হত। তিনি ছিলেন অতি বৃদ্ধ, দৃষ্টিশক্তিহীন লোক। খাদীজাহ (রাঃ) তাকে বললেন, হে আমার চাচাতো ভাই! তোমার ভাতিজার কথা শুন। তখন ওরাকা বললেন, হে ভাতিজা! তুমি কী দেখেছ?
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা কিছু দেখেছিলেন তা তাকে জানালেন। তখন ওরাকা বললেন, এতো আল্লাহর সেই নামুস (জীবরীল আঃ) যাঁকে মূসা (আঃ)-এর কাছে প্রেরণ করা হয়েছিল। হায় আফসোস! যদি সেদিন আমি জীবিত থাকতাম যেদিন তোমার কাওম তোমাকে বের করে দেবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: তারা কি আমাকে বের করে দেবে? ওরাকা বললেন, হ্যাঁ তুমি যা নিয়ে এসেছ, এমন বস্তু নিয়ে যে-ই এসেছে, তার সঙ্গেই শত্রুতা করা হয়েছে এবং কষ্ট দেয়া হয়েছে। যদি তোমার জীবনকাল আমাকে পায়, তাহলে আমি সর্বতোভাবে তোমাকে সাহায্য করব। এরপর কিছু দিনের মধ্যেই ওরাকার মৃত্যু হয়। আর কিছু দিনের জন্য ওয়াহীও বন্ধ থাকে। এমনকি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ অবস্থার কারণে অত্যন্ত চিন্তিত হয়ে পড়লেন। এমনকি আমরা এ সম্পর্কে তার থেকে জানতে পেরেছি যে, তিনি পর্বতের চূড়া থেকে নিচে পড়ে যাবার জন্য একাধিকবার দ্রুত সেখানে চলে গেছেন। যখনই নিজেকে ফেলে দেয়ার জন্য পর্বতের চূড়ায় পৌঁছতেন, তখনই জিবরীল (আঃ) তাঁর সামনে আত্মপ্রকাশ করে বলতেন, হে মুহাম্মাদ! নিঃসন্দেহে আপনি আল্লাহর সত্য রাসূল। এতে তাঁর অস্থিরতা দূর হত এবং নিজ মনে শান্তিবোধ করতেন। তাই সেখান থেকে ফিরে আসতেন। ওয়াহী বন্ধ অবস্থা যখন তাঁর উপর দীর্ঘ হত তখনই তিনি ঐরূপ উদ্দেশে দ্রুত চলে যেতেন। যখনই তিনি পর্বতের চূড়ায় পৌঁছতেন, তখনই জিবরীল (আঃ) তাঁর সামনে আত্মপ্রকাশ করে আগের মত বলতেন।[1]
আরনাউত্ব: সহীহ।
তাখরীজ: বুখারী, ৩, ৪৯৫৬; মুসলিম ১৬০ (২৫৩) ; আহমাদ ৬/২৩২-২৩৩।
أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْحَسَنِ بْنِ قُتَيْبَةَ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي السَّرِيِّ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ عَنِ الزُّهْرِيِّ أَخْبَرَنِي عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ:
(أول ما بُدىء برسول الله صلى الله عليه وسلم من الْوَحْيِ الرُّؤْيَا الصَّادِقَةُ يَرَاهَا فِي النَّوْمِ فَكَانَ لَا يَرَى رُؤْيَا إِلَّا جَاءَتْ مِثْلَ فَلَقِ الصُّبْحِ ثُمَّ حُبِّبَ لَهُ الْخَلَاءُ فَكَانَ يَأْتِي حِرَاءَ فيتحنَّث فِيهِ - وَهُوَ التَّعَبُّدُ - اللَّيَالِيَ ذَوَاتِ الْعِدَّةِ وَيَتَزَوَّدُ لِذَلِكَ ثُمَّ يَرْجِعُ إِلَى خَدِيجَةَ فَتُزَوِّدُهُ لِمِثْلِهَا حَتَّى فَجِئَهُ الْحَقُّ وَهُوَ فِي غَارِ حِرَاءَ فَجَاءَهُ الْمَلَكُ فِيهِ فَقَالَ: اقْرَأْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ:
فَقُلْتُ: مَا أَنَا بِقَارِئٍ قَالَ: فَأَخَذَنِي فَغَطَّنِي حَتَّى بَلَغَ مِنِّي الْجَهْدَ ثُمَّ أَرْسَلَنِي فَقَالَ لِي: اقْرَأْ فَقُلْتُ: مَا أَنَا بِقَارِئٍ فَأَخَذَنِي فَغَطَّنِي الثَّانِيَةَ حَتَّى بَلَغَ مِنِّي الْجَهْدَ ثُمَّ أَرْسَلَنِي فَقَالَ: اقْرَأْ فَقُلْتُ: مَا أَنَا بِقَارِئٍ فَأَخَذَنِي فَغَطَّنِي الثَّالِثَةَ حَتَّى بَلَغَ مِنِّي الْجَهْدَ ثُمَّ أَرْسَلَنِي فَقَالَ: {اقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِي خَلَقَ} [العلق: 1] , حَتَّى بَلَغَ: {مَا لَمْ يَعْلَمْ} [العلق: 5] قَالَ: فَرَجَعَ بِهَا تَرْجُفُ بَوَادِرُهُ حَتَّى دَخَلَ عَلَى خَدِيجَةَ فَقَالَ:
زَمِّلُونِي زَمِّلُونِي فَزَمَّلُوهُ حَتَّى ذَهَبَ عَنْهُ الرَّوْعُ ثُمَّ قَالَ:
يَا خَدِيجَةُ مَا لِي؟ وَأَخْبَرَهَا الْخَبَرَ وَقَالَ:
قَدْ خَشِيتُهُ عَلَيَّ فَقَالَتْ: كَلَّا أَبْشِرْ فَوَاللَّهِ لَا يُخْزِيكَ اللَّهُ أَبَدًا [ص: 164] إِنَّكَ لَتَصِلُ الرَّحِمَ وَتَصْدُقُ الْحَدِيثَ وَتَحْمِلُ الْكَلَّ وَتَقْرِي الضَّيْفَ وَتُعِينُ عَلَى نَوَائِبِ الْحَقِّ ثُمَّ انْطَلَقَتْ بِهِ خَدِيجَةُ حَتَّى أَتَتْ بِهِ وَرَقَةَ بْنَ نَوْفَلٍ وَكَانَ أَخَا أبيها وكان أمرءاً تنصَّر فِي الْجَاهِلِيَّةِ وَكَانَ يَكْتُبُ الْكِتَابَ الْعَرَبِيَّ فَيَكْتُبُ بِالْعَرَبِيَّةِ مِنَ الْإِنْجِيلِ مَا شَاءَ أَنْ يَكْتُبَ وَكَانَ شَيْخًا كَبِيرًا قَدْ عَمِيَ فَقَالَتْ لَهُ خَدِيجَةُ: أَيْ عَمِّ اسْمَعْ مِنِ ابْنِ أَخِيكَ فَقَالَ وَرَقَةُ: ابْنَ أَخِي مَا تَرَى؟ فَأَخْبَرَهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا رَأَى فَقَالَ وَرَقَةُ: هَذَا النَّامُوسُ الَّذِي أُنزل عَلَى مُوسَى يَا لَيْتَنِي أَكُونُ فِيهَا جَذَعًا أَكُونُ حَيًّا حِينَ يُخْرِجُكَ قَوْمُكَ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ:
أمخرجيَّ هُمْ؟! قَالَ: نَعَمْ لَمْ يَأْتِ أَحَدٌ قَطُّ يما جِئْتَ بِهِ إِلَّا عُودِيَ وَأُوذِيَ وَإِنْ يُدْرِكْنِي يَوْمُكَ أَنْصُرْكَ نَصْرًا مُؤَزَّرًا ثُمَّ لَمْ يَنْشَبْ وَرَقَةُ أَنْ تُوُفِّيَ وَفَتَرَ الْوَحْيُ فَتْرَةً حَتَّى حَزِنَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ـ فِيمَا بَلَغَنَا ـ حُزْنًا غَدَا مِنْهُ مِرَارًا لِكَيْ يتردى من رؤوس شَوَاهِقِ الْجِبَالِ فَكُلَّمَا أَوْفَى بِذِرْوَةِ جَبَلٍ كَيْ يُلْقِيَ نَفْسَهُ مِنْهَا تَبَدَّى لَهُ جِبْرِيلُ فَقَالَ لَهُ: يَا مُحَمَّدُ إِنَّكَ رَسُولُ اللَّهِ حَقًّا فَيَسْكُنُ لِذَلِكَ جَأْشُهُ وتقرُّ نَفْسُهُ فَيَرْجِعُ فَإِذَا طَالَ عَلَيْهِ فَتْرَةُ الْوَحْيِ غَدَا لِمِثْلِ ذَلِكَ فَإِذَا أَوْفَى بِذِرْوَةِ الْجَبَلِ تبدَّى لَهُ جِبْرِيلُ فيقول له مثل ذلك.
= [1: 3]
[تعليق الشيخ الألباني]
صحيح دون جملة التردي ـ ((مختصر البخاري)) (رقم 3) ولم يذكرها (م) (1)، [ص: 165] ((فقه السيرة)).
(1) خلافاً لما توهمه المعلق على الحديث في طبعة ((مؤسسة الرسالة)) (1/ 219)، فقد عزاهُ لجمعٍ ليست هذه الزيادة الواهية عند بعضهم ـ أحدهم مسلم ـ! ولم يتنبه لها الشيخ أحمد شاكر، فلم يستدركها؛ فأوهم صحتها.
الحديث: 33 ¦ الجزء: 1 ¦ الصفحة: 163
পরিচ্ছেদঃ
ذِكْرُ خَبَرٍ أَوْهَمَ مَنْ لَمْ يُحكِم صِنَاعَةَ الْحَدِيثِ أَنَّهُ يُضَادُّ خَبَرَ عَائِشَةَ الَّذِي تَقَدَّمَ ذِكْرُنَا لَهُ
হাদীসের বিষয়ে খুব দক্ষ নয়,এমন ব্যক্তি যে হাদীসটির কারণে ভ্রান্তিতে পড়ে পূর্বে আমাদের বর্ণিত আয়িশা (রাঃ) এর হাদীসের বিরোধিতা করতে পারেন- তেমনি একটি বর্ণনা:
৩৪. ইয়াহ্ইয়াহ ইবনু কাসীর (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আবূ সালামাহ (রহ.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, কুরআনের কোন্ আয়াতটি প্রথম অবতীর্ণ হয়েছিল? তিনি বললেন, يٓاأَيُّهَا الْمُدَّثِّرُ প্রথম অবতীর্ণ হয়েছিল। আমি বললাম, আমাকে বলা হয়েছে اقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِيْ خَلَقَ প্রথম অবতীর্ণ হয়েছিল। এ কথা শুনে আবূ সালামাহ (রহ.) বললেন, কুরআনের কোন্ আয়াতটি প্রথম অবতীর্ণ হয়েছিল, এ সম্পর্কে আমি জাবির (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করার পর তিনি বলেছেন يٓاأيُّهَا الْمُدَّثِّرُ প্রথম অবতীর্ণ হয়েছিল। তখন আমি বললাম, আমাকে বলা হয়েছে যে اقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِيْ خَلَقَ প্রথম অবতীর্ণ হয়েছিল। তখন তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা বলেছেন, আমি তোমাকে তা ব্যতীত অন্য কিছু বলছি না।
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমি হেরা গুহায় অবস্থান করেছিলাম। সেখানে অবস্থান করা শেষ হলে আমি সেখান থেকে নেমে উপত্যকার মাঝামাঝি পৌঁছলে আমাকে ডাকা হল। আমি তখন সামনে, পেছনে, ডানে ও বামে তাকালাম। তথায় কাউকেই দেখতে পেলাম না। অতঃপর পুনরায় আমাকে ডাকা হল। অতঃপর আমি আমার উর্ধ্বাকাশে তাকিয়ে দেখলাম, সে আসমান ও যমীনের মধ্যস্থলে রক্ষিত একটি আসনে উপবিষ্ট আছে। তখন আমি তাকে খুব ভয় পেয়ে গেলাম। এরপর আমি খাদীজা (রাঃ)-এর কাছে এসে বললাম, আমাকে বস্ত্রাচ্ছাদিত কর, আমাকে বস্ত্রাচ্ছাদিত কর এবং আমার শরীরে ঠান্ডা পানি ঢাল। তখন আমার প্রতি অবতীর্ণ করা হলঃ ’’হে বস্ত্রাচ্ছাদিত! সতর্কবাণী প্রচার কর এবং তোমার প্রতিপালকের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা কর।’’[1]
قَالَ أَبُو حَاتِمٍ فِي خَبَرِ جَابِرٍ هَذَا: إِنَّ أَوَّلَ مَا أُنْزِلَ مِنَ الْقُرْآنِ: {يَا أيها المدثر} وَفِي خَبَرِ عَائِشَةَ: {اقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ} وَلَيْسَ بَيْنَ هَذَيْنِ الْخَبَرَيْنِ تَضَادٌّ إِذِ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ أَنْزَلَ عَلَى رَسُولِهِ صَلَّى اللَّهُ عليه وسلم: {اقرأ باسم ربك} وَهُوَ فِي الْغَارِ بِحِرَاءَ فَلَمَّا رَجَعَ إِلَى بَيْتِهِ دَثَّرَتْهُ خَدِيجَةُ وَصَبَّتْ عَلَيْهِ الْمَاءَ الْبَارِدَ وأُنْزِلَ عَلَيْهِ فِي بَيْتِ خَدِيجَةَ: {يَا أَيُّهَا المدثر * قم ... } مِنْ غَيْرِ أَنْ يَكُونَ بَيْنَ الْخَبَرَيْنِ تَهَاتُرٌ أو تضاد
আবূ হাতিম (ইবনু হিব্বান) সম্পর্কে বলেন, জাবির (রাঃ) বর্ণিত এ হাদীস অনুযায়ী কুরআনের প্রথম অবতীর্ণ আয়াত: {يَا أيها المدثر} এবং আয়িশা (রাঃ) বর্ণিত হাদীস অনুযায়ী {اقرأ باسم ربك}। এ উভয় বর্ণনার মাঝে কোন ভুল বোঝার অবকাশ নেই। কেননা, আল্লাহ আযযা ও জাল্লা তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর {اقرأ باسم ربك} আয়াতটি অবতীর্ণ করেন যখন তিনি গারে হেরায় অবস্থান করছিলেন। আর যখন গারে হেরা থেকে বাড়ি ফিরে আসলেন এবং খাদিজা (রাঃ) তাকে কাপড় বস্ত্র দ্বারা আচ্ছাদিত করেন এবং তাঁর উপর ঠান্ডা পানি ঢাললেন, তখন খাদিজার বাড়িতে আর {يَا أيها المدثر} আয়াতটি এটি নাযিল হয়েছিল। ফলে এ দুই হাদীসের মাঝে কোন বৈপরীত্য কিংবা ভুল বুঝাবুঝির অবকাশ নেই।
আরনাউত্ব: বুখারী মুসলিমের শর্তানুযায়ী সহীহ।
তাখরীজ: বুখারী, ৪৯২৩-৪৯২৪; মুসলিম ১৬১ (২৫৭) (২৫৮) ; আহমাদ ৩/৩০৬, ৩৯২।
এটি জাবির (রাঃ) হতেও বর্ণিত আছে। দেখুন, বুখারী ৪, মুসলিম ১৬১ (২৫৫),(২৫৬)।
أَخْبَرَنَا أَحْمَدُ بْنُ عَلِيِّ بْنِ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا هُدْبَةُ بْنُ خَالِدٍ حَدَّثَنَا أَبَانُ بْنُ يَزِيدَ الْعَطَّارُ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ أَبِي كَثِيرٍ قَالَ:
سَأَلْتُ أَبَا سَلَمَةَ: أَيُّ الْقُرْآنِ أُنزل أَوَّلَ؟ قال: {يا أيها المدثر} قُلْتُ: إِنِّي نُبئت أَنَّ أَوَّلَ سُورَةٍ أُنْزِلَتْ مِنَ الْقُرْآنِ: {اقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِي خَلَقَ} [العلق: 1] قَالَ أَبُو سَلَمَةَ: سَأَلْتُ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ: أَيُّ الْقُرْآنِ أُنزل أَوَّلَ؟ قال: {يا أيها المدثر} فَقُلْتُ لَهُ: إِنِّي نُبئت أَنَّ أَوَّلَ سُورَةٍ نَزَلَتْ مِنَ الْقُرْآنِ: {اقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ} قَالَ جَابِرٌ: لَا أحدِّثُكَ إِلَّا مَا حَدَّثَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قال:
جَاوَرْتُ فِي حِرَاءَ فَلَمَّا قَضَيْتُ جِوَارِي نَزَلْتُ فَاسْتَبْطَنْتُ الْوَادِيَ فَنُودِيتُ فَنَظَرْتُ أَمَامِي وَخَلْفِي وَعَنْ يَمِينِي وَعَنْ شِمَالِي فَلَمْ أَرَ شَيْئًا فَنُودِيتُ فَنَظَرْتُ فَوْقِي فَإِذَا أَنَا بِهِ قَاعِدٌ عَلَى عَرْشٍ بَيْنَ السَّمَاءِ وَالْأَرْضِ فَجُئِثْتُ مِنْهُ فَانْطَلَقْتُ إِلَى خَدِيجَةَ فَقُلْتُ دَثِّرُونِي دَثِّرُونِي وَصَبُّوا عَلَيَّ مَاءً بَارِدًا فَأُنْزِلَتْ عَلَيَّ {يَا أَيُّهَا الْمُدَّثِّرُ * قم فأنذر * وربك فكبر} [المدثر: 1 ـ3].
= [1: 3]
[تعليق الشيخ الألباني]
صحيح - ((تخريج فقه السيرة)) (90): ق.
[ص: 166]
পরিচ্ছেদঃ
ذِكْرُ الْقَدْرِ الَّذِي جَاوَرَ الْمُصْطَفَى صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِحِرَاءَ عِنْدَ نُزُولِ الْوَحْيِ عَلَيْهِ
ওহী অবতীর্ণ হওয়ার সময় নাবী মুস্তফা সাল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়াসাল্লাম গারে হেরায় কত সময় অবস্থান করেছিলেন, - এ সম্পর্কিত বর্ণনা:
৩৫. ইয়াহ্ইয়াহ ইবনু কাসীর (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আবূ সালামাহ (রহ.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, কুরআনের কোন্ আয়াতটি প্রথম অবতীর্ণ হয়েছিল? তিনি বললেন, يٓاأَيُّهَا الْمُدَّثِّرُ প্রথম অবতীর্ণ হয়েছিল। আমি বললাম, আমাকে বলা হয়েছে اقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِيْ خَلَقَ প্রথম অবতীর্ণ হয়েছিল। এ কথা শুনে আবূ সালামাহ (রহ.) বললেন, কুরআনের কোন্ আয়াতটি প্রথম অবতীর্ণ হয়েছিল, এ সম্পর্কে আমি জাবির (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করার পর তিনি বলেছেন يٓاأيُّهَا الْمُدَّثِّرُ প্রথম অবতীর্ণ হয়েছিল। তখন আমি বললাম, আমাকে বলা হয়েছে যে اقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِيْ خَلَقَ প্রথম অবতীর্ণ হয়েছিল। তখন তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা বলেছেন, আমি তোমাকে তা ব্যতীত অন্য কিছু বলছি না।
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমি হেরা গুহায় একমাস অবস্থান করেছিলাম। সেখানে অবস্থান করা শেষ হলে আমি সেখান থেকে নেমে উপত্যকার মাঝামাঝি পৌঁছলে আমাকে ডাকা হল। আমি তখন সামনে, পেছনে, ডানে ও বামে তাকালাম। তথায় কাউকেই দেখতে পেলাম না। অতঃপর পুনরায় আমাকে ডাকা হল। অতঃপর আমি আমার উর্ধ্বাকাশে তাকিয়ে দেখলাম, সে আসমান ও যমীনের মধ্যস্থলে শুণ্যে ভাসমান একটি আসনে উপবিষ্ট আছে। তখন আমি খুব ভয় পেয়ে গেলাম। এরপর আমি খাদীজা (রাঃ)-এর কাছে এসে নির্দেশ দিলে আমাকে বস্ত্রাচ্ছাদিত করল এবং আমার শরীরে ঠান্ডা পানি ঢেলে দিল। তখন আমার প্রতি অবতীর্ণ করা হলঃ ’’হে বস্ত্রাচ্ছাদিত! সতর্কবাণী প্রচার কর এবং তোমার প্রতিপালকের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা কর এবং তোমার পোশাক পবিত্র কর।”[1]
أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ سَلْمٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ إِبْرَاهِيمَ حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ حَدَّثَنَا الْأَوْزَاعِيُّ حَدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ أَبِي كَثِيرٍ قَالَ:
سَأَلْتُ أَبَا سَلَمَةَ: أَيُّ الْقُرْآنِ أُنزل أَوَّلَ؟ قَالَ: {يَا أَيُّهَا الْمُدَّثِّرُ} قلت: أوِ {اقرأ} فَقَالَ: أَبُو سَلَمَةَ: سَأَلْتُ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ عَنْ ذَلِكَ فَقَالَ: {يَا أَيُّهَا الْمُدَّثِّرُ} فقلت: أوِ {اقرأ} فَقَالَ: إِنِّي أُحَدِّثُكُمْ مَا حَدَّثَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ:
جَاوَرْتُ بِحِرَاءَ شَهْرًا فَلَمَّا قَضَيْتُ جِوَارِي نَزَلْتُ فَاسْتَبْطَنْتُ الْوَادِيَ فَنُودِيتُ فَنَظَرْتُ أَمَامِي وَخَلْفِي وَعَنْ يَمِينِي وَعَنْ شِمَالِي فَلَمْ أَرَ أَحَدًا ثُمَّ نُودِيتُ فَنَظَرْتُ إِلَى السَّمَاءِ فَإِذَا هُوَ عَلَى الْعَرْشِ فِي الْهَوَاءِ فَأَخَذَتْنِي رَجْفَةٌ شَدِيدَةٌ فَأَتَيْتُ خَدِيجَةَ فَأَمَرْتُهُمْ فَدَثَّرُونِي ثُمَّ صَبُّوا عليَّ الْمَاءَ وَأَنْزَلَ اللَّهُ عليَّ {يَا أَيُّهَا الْمُدَّثِّرُ * قُمْ فَأَنْذِرْ * وَرَبَّكَ فكبر * وثيابك فطهر} [المدثر: 1 ـ 4].
= [1: 3]
[تعليق الشيخ الألباني]
صحيح - وهو مكرر الذي قبله.
الحديث: 35 ¦ الجزء: 1 ¦ الصفحة: 166
পরিচ্ছেদঃ
৩৬. আবূ হুরাইরাহ (রাঃ)-থেকে বর্ণিত, তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেনঃ আল্লাহ্ তা’আলা যখন আকাশে ফায়সালা করেন তখন মালায়িকাহ আল্লাহর নির্দেশের প্রতি (আনুগত্যস্বরূপ) অতি নম্রভাবে তাদের ডানা ঝাড়তে থাকে; যেন মসৃণ পাথরের উপর শিকলের আওয়াজ। যখন তাদের মনের ভয়-ভীতি দূর হয় তারা (একে অপরকে) জিজ্ঞেস করে, তোমাদের প্রতিপালক কী বলেছেন? তারা বলেন, তিনি যা বলেছেন, সত্যই বলেছেন। তিনি সর্বশ্রোতা, মহান জ্ঞানী। যে সময়ে লুকোচুরিকারী (শায়ত্বন) তা শোনে, আর লুকোচুরিকারী এরূপ একের ওপর এক। সুফ্ইয়ান তাঁর হাত উপরে উঠিয়ে আঙ্গুলগুলো ফাঁক করে দেখান।
তারপর শায়ত্বন কথাগুলো শুনে নেয় এবং প্রথমজন তার নিচের জনকে এবং সে তার নিচের জনকে জানিয়ে দেয়। এমনিভাবে এ খবর দুনিয়াতে পৌঁছে দেয়। এরপ তা কাফির ও জাদুকর (জ্যোতিষ)-এর মুখে নিক্ষেপ করা হয়। কোন কোন সময় কথা পৌঁছানোর আগে তার উপর অগ্নিশিখা নিক্ষিপ্ত হয়। আবার অগ্নিশিখা নিক্ষিপ্ত হওয়ার আগে সে কথা পৌঁছিয়ে দেয় এবং এর সাথে শত মিথ্যা মিশিয়ে বলে, অথচ একথাকে সত্য বলে মেনে নেয়া হয়। লোকেরা বলাবলি করে, ’সে কি অমুক দিন অমুক অমুক কথা আমাদের বলেনি, এমন এমন কথা? ফলে সে সত্য কথাই বলেছে।’[1]
আরনাউত্ব: সহীহ।
তাখরীজ: হুমাইদী ১১৫১; বুখারী, ৪৮০০-৪৮০১; আবূ দাউদ৩৯৮৯; তিরমিযী ৩২২৩;ইবনু মাজাহ ১৯৪।
أَخْبَرَنَا أَبُو خَلِيفَةَ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ بَشَّارٍ حدثنا سفيان عن عمرو بن دينار عن عِكْرِمَةَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ يَبْلُغُ بِهِ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ:
(إِذَا قَضَى اللَّهُ الْأَمْرَ فِي السَّمَاءِ ضَرَبَتِ الْمَلَائِكَةُ بِأَجْنِحَتِهَا خُضْعَانًا لِقَوْلِهِ كَأَنَّهُ سِلْسِلَةٌ عَلَى صَفْوَانٍ حَتَّى إِذَا فُزِّعَ عَنْ قُلُوبِهِمْ قَالُوا: مَاذَا قَالَ رَبُّكُمْ؟ فَيَقُولُونَ: قَالَ الْحَقَّ وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ فَيَسْتَمِعُهَا مُسْتَرِقُ السَّمْعِ فَرُبَّمَا أَدْرَكَهُ الشِّهَابُ قَبْلَ أَنْ يَرْمِيَ بِهَا إِلَى الَّذِي هُوَ أَسْفَلُ مِنْهُ وَرُبَّمَا لَمْ يُدْرِكْهُ الشِّهَابُ حَتَّى يَرْمِيَ بِهَا إِلَى الَّذِي هُوَ أَسْفَلُ مِنْهُ قَالَ: وَهُمْ هَكَذَا بَعْضُهُمْ أَسْفَلُ مِنْ بَعْضٍ – وَوَصَفَ ذَلِكَ سُفْيَانُ بِيَدِهِ – فَيَرْمِي بِهَا هَذَا إِلَى هَذَا وَهَذَا إِلَى هَذَا حَتَّى تَصِلَ إِلَى الْأَرْضِ فتُلقى عَلَى فَمِ الْكَافِرِ وَالسَّاحِرِ فَيَكْذِبُ معها مئة كِذْبَةٍ فيُصَدَّقُ وَيُقَالُ: أَلَيْسَ قَدْ قَالَ فِي يوم كذا وكذا ـ كذا وكذا فصدق)
= [1: 3]
[تعليق الشيخ الألباني]
صحيح – ((الصحيحة)) (1293): خ.
الحديث: 36 ¦ الجزء: 1 ¦ الصفحة: 167
পরিচ্ছেদঃ
ذِكْرُ وَصْفِ أَهْلِ السَّمَاوَاتِ عِنْدَ نُزُولِ الْوَحْيِ
ওহী নাযিলের সময় আসমানবাসীদের অবস্থার বর্ণনা:
৩৭. আব্দুল্লাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন মহান আল্লাহ ওহীর বাক্য বলেন, তখন আকাশের অধিবাসীগণ পাথরের উপর দিয়ে শিকল টানা শব্দের মতই আকাশ থেকে গর্জনের শব্দ শুনতে পান। আর আওয়াজ শুনে তারা বেহুশ হয়ে যায় এবং জিবরীল (আঃ) তাদের নিকট উপস্থিত হলে তাদের অন্তর থেকে ভয় বিদূরীত হয়ে তারা হুশ ফিরে পায়। অতঃপর তারা বলে, হে জিবরীল! আপনার রব কি বলেছেন? তিনি বলেন, যা সত্য তাই বলেছেন। তখন তারা ঘোষণা দিয়ে বলে, সত্যই বলেছেন, সত্যই বলেছেন।[1]
আরনাউত্ব: সহীহ।
তাখরীজ: আবূ দাউদ ৪৭৩৮; ইবনু খুজাইমাহ, আত তাওহীদ পৃ.১৪৫; বাইহাকী, আসমা ওয়াস সিফাত পৃ-২০১; খতীব, তারীখ ১১/৩৯২; বুখারী, তালিক (সনদবিহীন) হিসেবে মাওকুফরূপে বর্ননা করেছেন।
أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ بْنِ إِسْحَاقَ حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ الْحُسَيْنِ بْنِ إِشْكَابٍ حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ عَنِ الْأَعْمَشِ عَنْ مُسْلِمٍ عَنْ مَسْرُوقٍ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ:
(إِنَّ اللَّهَ إِذَا تَكَلَّمَ بِالْوَحْيِ سَمِعَ أَهْلُ السَّمَاءِ لِلسَّمَاءِ صَلْصَلَةً كَجَرِّ السِّلْسِلَةِ عَلَى الصَّفَا فيُصعقون فَلَا يَزَالُونَ كَذَلِكَ حَتَّى يَأْتِيَهُمْ جِبْرِيلُ فَإِذَا [ص: 168] جَاءَهُمْ فُزِّعَ عَنْ قُلُوبِهِمْ فَيَقُولُونَ: يَا جِبْرِيلُ مَاذَا قَالَ ربك؟ فيقول: الحق فينادون: الحق الحق)
= [1: 3]
[تعليق الشيخ الألباني]
صحيح – ((الصحيحة)) ـ أيضاً ـ: خ معلقاً موقوفاً.
الحديث: 37 ¦ الجزء: 1 ¦ الصفحة: 167
পরিচ্ছেদঃ
ذِكْرُ وَصْفِ نُزُولِ الْوَحْيِ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি ওহী নাযিলের অবস্থার বর্ণনা:
৩৮. উম্মুল মু’মিনীন ’আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। হারিস ইবনু হিশাম (রাঃ) আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে জিজ্ঞেস করলেন, ’হে আল্লাহর রাসূল! আপনার নিকট ওয়াহী কিরূপে আসে?’ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ কোন কোন সময় তা ঘণ্টা বাজার মত আমার নিকট আসে। আর এটি-ই আমার উপর সবচেয়ে বেদনাদায়ক হয় এবং তা শেষ হতেই মালাক (ফেরেশতা) যা বলেন আমি তা মুখস্থ করে নেই, আবার কখনো মালাক মানুষের রূপ ধারণ করে আমার সাথে কথা বলেন। তিনি যা বলেন আমি তা মুখস্থ করে নেই।
’আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, আমি তীব্র শীতের সময় ওয়াহী নাযিলরত অবস্থায় তাঁকে দেখেছি। ওয়াহী শেষ হলেই তাঁর ললাট হতে ঘাম ঝরে পড়ত।[1]
আরনাউত্ব: বুখারী মুসলিমের শর্তানুযায়ী সহীহ।
তাখরীজ: মুয়াত্বা ১/২০২-২০৩; আহমাদ ৬/২৫৭; বুখারী, ২, ৩২১৫; মুসলিম ২৩৩৩; নাসাঈ ২/১৪৬-১৪৭; তিরমিযী ৩৬৩৮।
أَخْبَرَنَا عُمَرُ بْنُ سَعِيدِ بْنِ سِنَانٍ أَخْبَرَنَا أحمد بن أبي بكر عن مالك عن هشام بن عروة عن أبيه عن عائشة:
أَنَّ الْحَارِثَ بْنَ هِشَامٍ سَأَلَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فقال: يا رسول اللَّهِ كَيْفَ يَأْتِيكَ الْوَحْيُ؟ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ:
أَحْيَانًا يَأْتِينِي فِي مِثْلِ صَلْصَلَةِ الْجَرَسِ وَهُوَ أَشَدُّهُ عَلَيَّ فَيَنْفَصِمُ عَنِّي وَقَدْ وَعَيْتُ مَا قَالَ وَأَحْيَانًا يَتَمَثَّلُ لِيَ الْمَلَكُ رَجُلًا فَيُكَلِّمُنِي فَأَعِي مَا يَقُولُ قَالَتْ عَائِشَةُ: وَلَقَدْ رَأَيْتُهُ يَنْزِلُ عَلَيْهِ فِي الْيَوْمِ الشَّاتي الشَّدِيدِ الْبَرْدِ فَيَنْفَصِمُ عَنْهُ وَإِنَّ جبينه ليتفصَّد عرقاً
= [1: 3]
[تعليق الشيخ الألباني]
صحيح – ((تخريج فقه السيرة)) (91)، ((الصحيحة)) (5958): ق.
الحديث: 38 ¦ الجزء: 1 ¦ الصفحة: 168
পরিচ্ছেদঃ
ذِكْرُ اسْتِعْجَالِ الْمُصْطَفَى صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي تَلَقُّفِ الْوَحْيِ عِنْدَ نُزُولِهِ عَلَيْهِ
ওহী নাযিলের সময় তা ধরে রাখার (মুখস্ত রাখার) জন্য নাবী মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের তাড়াহুড়া করার বর্ণনা:
৩৯. ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। আল্লাহর বাণীঃ ’’কুরআনের কারণে আপনার জিহ্বা দ্রুত নাড়াচাড়া করবেন না’, এ আয়াত প্রসঙ্গে বলেন, ওয়াহী নাযিল হওয়া শুরু হলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুবই চেষ্টা করতেন ওহী (মুখস্ত রাখা)-এর ব্যাপারে। তিনি তার ঠোঁট দুটি নাড়াতেন। বর্ণনাকারী বলেন, ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) বললেন, আমি ঠোঁট দু’টি সেভাবে নাড়ছি, যেভাবে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সে দু’টো নেড়েছিলেন। এ অবস্থায় আল্লাহ্ নাযিল করলেনঃ ’’তাড়াতাড়ি ওয়াহী আয়ত্ত করার জন্য তুমি তোমার জিহবা দ্রুততার সঙ্গে চালিত করো না, এর সংরক্ষণ ও পাঠ করাবার দায়িত্ব আমারই’’- (সূরাহ আল-ক্বিয়ামহ ৭৫/১৬-১৭)।
তিনি বলেন, جَمْعُهُ – (সংরক্ষণ করা) -এর অর্থ আপনার বুকে সংরক্ষণ করা, যেন পরে তা পড়তে সক্ষম হন। “সুতরাং আমরা যখন তা পাঠ করি, তুমি সে পাঠের অনুসরণ কর”- (সূরাহ আল-ক্বিয়ামাহ ৭৫/১৮)। তিনি বলেন: এর অর্থ হচ্ছে আপনি তা শুনুন এবং চুপ থাকুন। (“এরপর এর বর্ণনা করার দায়িত্ব আমাদের উপর।”) অর্থাৎ আপনার কুরআন পাঠের দায়িত্ব আমাদের উপর। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর যখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে জিব্রীল (আঃ) আসতেন, তিনি তখন মনোযোগ সহকারে তা শুনতেন। এরপর জিব্রীল (আঃ) যখন চলে যেতেন, তখন তিনি ঠিক তেমনি তা পাঠ করতেন, যেমনি তিনি তাঁকে পাঠ করিয়েছিলেন।[1]
আরনাউত্ব: বুখারী মুসলিমের শর্তানুযায়ী সহীহ।
তাখরীজ: আহমাদ ১/৩৪৩; বুখারী, ৭৫২৪; মুসলিম ৪৪৮; নাসাঈ ২/১৪৭।
أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْجُنَيْدِ حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ عَنْ مُوسَى بْنِ أَبِي عَائِشَةَ عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ فِي قَوْلِهِ: {لَا تُحَرِّكْ بِهِ لِسَانَكَ لِتَعْجَلَ بِهِ} [القيامة: 16] قَالَ: [ص: 169]
كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُعَالِجُ مِنَ التَّنْزِيلِ شِدَّةً كَانَ يُحَرِّكُ شَفَتَيْهِ فَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ: أَنَا أُحَرِّكُهُمَا كَمَا كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يحركهم فَأَنْزَلَ اللَّهُ: {لَا تُحَرِّكْ بِهِ لِسَانَكَ لِتَعْجَلَ بِهِ * إِنَّ عَلَيْنَا جَمَعَهُ وَقُرْآنَهُ} [القيامة: 16 ـ 17] قَالَ: جمعه في صدرك ثم تقرأه {فَإِذَا قَرَأْنَاهُ فَاتَّبِعْ قُرْآنَهُ} [القيامة: 18] قَالَ: فَاسْتَمِعْ لَهُ وَأَنْصِتْ {ثُمَّ إِنَّ عَلَيْنَا بَيَانَهُ} [القيامة: 19] ثُمَّ إِنَّ عَلَيْنَا أَنْ تَقْرَأَهُ قَالَ: فَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إذا أَتَاهُ جِبْرِيلُ اسْتَمَعَ فَإِذَا انْطَلَقَ جِبْرِيلُ قَرَأَهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَمَا كَانَ أقرأه
= [1: 3]
[تعليق الشيخ الألباني]
صحيح: ق.
পরিচ্ছেদঃ
ذكر الخبر المدحض قول من زعم أن اللَّهَ جَلَّ وَعَلَا لَمْ يُنْزِلْ آيَةً وَاحِدَةً إلا بكمالها
সেই সকল লোক যারা ধারণা করে যে, আল্লাহ জাল্লা ও আলা পূর্ণ আয়াত ব্যতীত কখনো (খণ্ড) আয়াত নাযিল করেন নি’- তাদের এ বক্তব্য বাতিল হওয়ার বর্ণনা:
৪০. বারাআ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, لَايَسْتَوِي الْقَاعِدُوْنَ مِنَ الْمُؤْمِنِيْنَ .... আয়াতটি অবতীর্ণ হলে নবী সাল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যায়দকে আমার কাছে ডেকে আন এবং তাকে বল সে যেন কাষ্ঠখন্ড এবং দোয়াত অথবা কাঁধের হাড় এবং দোয়াত নিয়ে আসে। এরপর তিনি বললেন, লিখ: {لَا يَسْتَوِي الْقَاعِدُونَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ} {وَالْمُجَاهِدُونَ فِي سَبِيلِ الله} [النساء: 95]
এ সময় অন্ধ সাহাবী আমর ইবনু উম্মু মাকতূম (রাঃ) নবী সাল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পেছনে বসা ছিলেন। তিনি বললেন, আমি তো অন্ধ, আমার ব্যাপারে আপনার কী নির্দেশ? বারা (রাঃ) বলেন: এ কথার প্রেক্ষিতে পূর্বোক্ত আয়াতের স্থলে অবতীর্ণ হলঃ ’’সমান নয় সেসব মু’মিন যারা বিনা ওজরে ঘরে বসে থাকে এবং ঐসব মু’মিন যারা আল্লাহর পথে নিজেদের জানমাল দিয়ে জিহাদ করে’’- (সূরাহ আন-নিসা ৪/৯৫)।[1]
আরনাউত্ব: সহীহ।
তাখরীজ: আহমাদ ৪/২৯০-২৯৯; বুখারী, ৪৯৯০; নাসাঈ ৬/১০;
যায়দ ইবনু সাবিত হতে বুখারী, ২৮৩২, ৪৫৯২; তিরমিযী, ৩০৩৩; নাসাঈ ৬/৯-১০।
أَخْبَرَنَا النَّضْرُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ الْمُبَارَكِ الْهَرَوِيُّ قَالَ: حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عُثْمَانَ الْعِجْلِيُّ قَالَ: حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُوسَى عَنْ إِسْرَائِيلَ عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ عَنِ الْبَرَاءِ قَالَ:
لَمَّا نَزَلَتْ {لَا يَسْتَوِي الْقَاعِدُونَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ} [النساء: 95] قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ:
ادْعُ لِي زَيْدًا وَيَجِيءُ مَعَهُ بِاللَّوْحِ وَالدَّوَاةِ ـ أَوْ بِالْكَتِفِ وَالدَّوَاةِ ـ ثُمَّ قَالَ:
اكْتُبْ {لَا يَسْتَوِي الْقَاعِدُونَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ} {وَالْمُجَاهِدُونَ فِي سَبِيلِ الله} [النساء: 95] قَالَ: وَخَلْفَ ظَهْرِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَمْرُو بْنُ أُمِّ مَكْتُومٍ الْأَعْمَى [ص: 170] قَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ فَمَا تَأْمُرُنِي فَإِنِّي رَجُلٌ ضَرِيرُ الْبَصَرِ؟ قَالَ الْبَرَاءُ: فأُنزلت مَكَانَهَا {غَيْرَ أولي الضرر} [النساء: 95].
= [24: 4]
[تعليق الشيخ الألباني]
صحيح: خ.
পরিচ্ছেদঃ
৪১. বারাআ ইবনু আযিব (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা আমার জন্য কাধের হাড় অথবা তক্তা আন। তিনি তাতে এই আয়াত লিখালেনঃ “মুমিনদের মধ্যে যেসব লোক ঘরে বসে থাকে তারা সমকক্ষ হতে পারে না”। (সুরাঃ নিসা-৯৫) আমর ইবনু উম্মি মাকতুম (রাঃ) তার পিছনে বসা ছিলেন। তিনি বললেন, আমার জন্য (ঘরে বসে থাকার) অনুমতি আছে কি? তখন অবতীর্ণ হলঃ “ক্ষতিগ্রস্থ মানুষ ব্যতীত”।[1]
আরনাউত্ব: বুখারী মুসলিমের শর্তানুযায়ী সহীহ।
তাখরীজ: তিরমিযী, ১৬৭০;নাসাঈ ৬/১০; তাবারী ৫/২২৮।
أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عُمَرَ بْنِ يُوسُفَ بِنَسَا قَالَ: حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ الْجَهْضَمِيُّ قَالَ: خبَّرنا مُعْتَمِرُ بْنُ سُلَيْمَانَ عَنْ أَبِيهِ عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ أَنَّ رَسُولَ الله صلى الله عليه وسلم قال:
ائتوني بِالْكَتِفِ أَوِ اللَّوْحِ فَكَتَبَ: {لَا يَسْتَوِي الْقَاعِدُونَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ} [النساء: 95] وَعَمْرُو بْنُ أُمِّ مَكْتُومٍ خَلْفَ ظَهْرِهِ فَقَالَ: هَلْ لِي مِنْ رُخْصَةٍ؟ فنزلت: {غير أولي الضرر} [النساء: 95].
= [24: 4]
[تعليق الشيخ الألباني]
صحيح - وهو مختصر ما قبله.
পরিচ্ছেদঃ
ذكر الخبر المدحض قول من زعم أن أَبَا إِسْحَاقَ السَّبِيعِيَّ لَمْ يَسْمَعْ هَذَا الْخَبَرَ مِنَ الْبَرَاءِ
সেই সকল লোক যারা ধারণা করে যে, আবূ ইসহাক সাবিঈ এ হাদীস বারা (রাঃ) থেকে শোনেন নি, তাদের এ বক্তব্য বাতিল হওয়ার বর্ণনা:
৪২. আবূ ইসহাক বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি বারা’ (রাঃ) কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, لَا يَسْتَوِي الْقَاعِدُوْنَ مِنَ الْمُؤْمِنِيْن আয়াতটি নাযিল হলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যায়দ (রাঃ)-কে ডেকে আনলেন। তিনি একটি কাঁধের হাড় নিয়ে আসেন এবং তাতে উক্ত আয়াতটি লিখে রাখেন। ইবনু উম্মু মাকতুম জিহাদে শরীক হওয়ার ব্যাপারে তাঁর অক্ষমতা প্রকাশ করলে غَيْرُ أُولِي الضَّرَرِ আয়াতটি নাযিল হল।[1]
আরনাউত্ব: সহীহ।
তাখরীজ: আহমাদ ৪/২৮২, ২৮৪, ২৯৯; বুখারী, ২৮৩১; মুসলিম ১৮৯৮; দারেমী ২/২০৯।
أَخْبَرَنَا أَبُو خَلِيفَةَ قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو الْوَلِيدِ قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو إِسْحَاقَ قَالَ: سَمِعْتُ الْبَرَاءَ يَقُولُ:
لَمَّا نَزَلَتْ هَذِهِ الْآيَةُ: {لَا يَسْتَوِي الْقَاعِدُونَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ} [النساء: 95] دَعَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ زَيْدًا فَجَاءَ بكتفٍ فَكَتَبَهَا فِيهِ فَشَكَا ابْنُ أُمِّ مَكْتُومٍ ضَرَارَتَهُ فَنَزَلَتْ: {غَيْرَ أُولِي الضَّرَرِ} [النساء: 95].
= [24: 4]
[تعليق الشيخ الألباني]
[ص: 171]
صحيح: ق.
পরিচ্ছেদঃ
ذِكْرُ مَا كَانَ يَأْمُرُ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِكَتَبَةِ الْقُرْآنِ عِنْدَ نُزُولِ الْآيَةِ بعد الآية
কুরআন লেখানোর সময় কোন আয়াত কোন্ আয়াতের পর লিখতে হবে এ সম্পর্কে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে নির্দেশনা দিতেন-তার বর্ণনা:
৪৩. ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ’উসমান ইবনু আফ্ফান (রাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলাম, আপনারা কিভাবে সূরাহ বারাআতকে সূরাহ আল-আনফালের অন্তর্ভুক্ত করে আল-কুরআনের সাব’উল মাসানী (সাতটি দীর্ঘ সূরাহ)-এর মধ্যে গণ্য করেন? অথচ সূরাহ্ বারাআত মিআতাইন (তথা ১০০-এর অধিক আয়াত সম্বলিত সূরাহ্)-এর অন্তর্ভুক্ত (কারণ সূরাহ্ বারাআতে ১২৯টি আয়াত আছে)। পক্ষান্তরে সূরাহ আল-আনফাল মাসানীর অন্তর্ভুক্ত (কারণ তাতে আয়াতের সংখ্যা ১০০-এর কম অর্থাৎ ৭৫ টি)।
’উসমান (রাঃ) বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর কুরআনের কোন আয়াত অবতীর্ণ হওয়া মাত্রই তিনি ওয়াহী লিখক সাহাবীদের ডেকে বলতেনঃ এই আয়াত অমুক সূরার অমুক স্থানে সন্নিবেশিত কর যেখানে এই এই বিষয় আলোচিত হয়েছে।
সূরা আল-আনফাল ছিল মদীনায় অবতীর্ণ (প্রাথমিক) সূরাসমূহের অন্তর্ভুক্ত। আর বারাআত ছিল মদীনায় (নাযিলের দিক হতে) কুরআনের শেষ দিকের সূরা। এদিকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মৃত্যুবরণ করেন। অথচ তিনি আমাদের স্পষ্ট করে বলে যাননি যে, এ সূরা (বারাআত) আনফালের অন্তর্ভুক্ত কি না। সূরা বারাআতের আলোচ্য বিষয় সূরা আল-আনফালের আলোচ্য বিষয়ের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ ছিল। (ফলে আমার ধারণা হল, বারাআত তার অন্তর্ভুক্ত।) তাই আমি উভয় সূরাকে একত্রে মিলিয়ে দিয়েছি এবং সূরা দুটোর মাঝখানে বিসমিল্লাহির রাহমাননির রাহীম বাক্যও লিখিনি, আর এটিকে সপ্ত দীর্ঘ সূরাসমূহের অন্তর্ভুক্ত করেছি।[1]
আরনাউত্ব: (আহমাদ শাকুর রাহি. এর কথা: এর কোন ভিত্তি নেই”- একথার উল্লেখপূর্বক তাঁর গুণগান করেছেন)।
তাখরীজ: আহমাদ ১/৫৭, ৬৯; আবূ দাউদ ৭৮৬, ৭৮৭; নাসাঈ, ফাযাইলুল কুরআন ৩২; তিরমিযী ৩০৮৬; হাকিম ২/২২১, ৩৩০। হাকিম ও যাহাবী সহীহ বললেও এক্ষেত্রে আরনাউত্ব এর প্রতিবাদ করে বলেন: এটি কিভাবে সহীহ হতে পারে, যেখানে এর বর্ণনাকারী ইয়াযীদ অজ্ঞাত পরিচয়?
أَخْبَرَنَا أَبُو خَلِيفَةَ حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ الْهَيْثَمِ الْمُؤَذِّنُ حَدَّثَنَا عَوْفُ بْنُ أَبِي جَمِيلَةَ عَنْ يَزِيدَ الْفَارِسِيِّ قَالَ: قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ:
قُلت لِعُثْمَانَ بْنِ عَفَّانَ: مَا حَمَلَكُمْ عَلَى أَنْ قرنتم بين الأنفال و {براءة} [التوبة: 1] و {براءة} مِنَ الْمِئِينَ وَالْأَنْفَالُ مِنَ الْمَثَانِي فَقَرَنْتُمْ بَيْنَهُمَا؟! فَقَالَ عُثْمَانُ: كَانَ إِذَا نَزَلَتْ مِنَ الْقُرْآنِ الْآيَةُ دَعَا النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَعْضَ مَنْ يَكْتُبُ فَيَقُولُ لَهُ: ضَعْهُ فِي السُّورَةِ الَّتِي يُذكر فِيهَا كَذَا وَأُنْزِلَتِ الْأَنْفَالُ بالمدينة و {براءة} بِالْمَدِينَةِ مِنْ آخِرِ الْقُرْآنِ فَتُوُفِّيَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَلَمْ يُخْبِرْنَا أَيْنَ نَضَعُهَا فوجدتُ قِصَّتَهَا شَبِيهًا بِقِصَّةِ الْأَنْفَالِ فَقَرَنْتُ بَيْنَهُمَا وَلَمْ نَكْتُبْ بَيْنَهُمَا سَطْرَ: {بِسْمِ اللَّهِ الرحمن الرحيم} [الفاتحة: 1] فوضعتُها في السبع الطُّوَلِ
= [1: 3]
[تعليق الشيخ الألباني]
منكر ـ ((ضعيف أبي داود)) (140).
পরিচ্ছেদঃ
ذِكْرُ الْبَيَانِ بِأَنَّ الْوَحْيِ لَمْ يَنْقَطِعْ عَنْ صَفِيِّ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى أَنْ أَخْرَجَهُ اللَّهُ مِنَ الدُّنْيَا إِلَى جَنَّتِهِ
আল্লাহর বন্ধু সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুনিয়া হতে বিদায় গ্রহণ করে জান্নাতের দিকে চলে যাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত ওহী নাযিল হওয়া সমাপ্তি ঘটেনি- এ সম্পর্কে বর্ণনা:
৪৪. আব্দুর রহমান ইবনু ইসহাক যুহরী রাহি. হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, তাঁর নিকট এক লোক এসে তাঁকে প্রশ্ন করছিল, আর আমি তাদের কথা শুনছিলাম। লোকটি বলল: হে আবূ বকর (যুহরী)! নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মৃত্যুর পূর্বে কিভাবে তাঁর থেকে ওহীর সমাপ্তি ঘটল? আমি যখন থেকে আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) হতে এটি মুখস্ত করেছি, তখন থেকে কেউ কখনো একথাটি আমাকে জিজ্ঞাসা করেনি।
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) বলেন: তিনি যখন ইহলোক ত্যাগ করেন, তখন তাঁর প্রতি পূর্বের চেয়ে অধিক হারে ওহী নাযিল হচ্ছিল।[1]
আরনাউত্ব: সহীহ।
তাখরীজ: আহমাদ ৩/২৩৬; বুখারী, ৪৯৮২; মুসলিম ৩০১৬ তে অন্য সনদে ভিন্ন শব্দে এটি বর্ণিত।
حَدَّثَنَا أَبُو يَعْلَى حَدَّثَنَا وَهْبُ بْنُ بَقِيَّةَ أَخْبَرَنَا خالدٌ (1) عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ [ص: 172] بْنِ إِسْحَاقَ عَنِ الزُّهْرِيِّ قَالَ:
أَتَاهُ رَجُلٌ وَأَنَا أَسْمَعُ فَقَالَ: يَا أَبَا بَكْرٍ كَمِ انْقَطَعَ الْوَحْيُ عَنْ نَبِيِّ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قبل موته؟ فقال: ماسألني عَنْ هَذَا أَحَدٌ مُذْ وَعَيْتُهَا مِنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ: لَقَدْ قُبِضَ مِنَ الدُّنْيَا وَهُوَ (2) أَكْثَرُ مِمَّا كَانَ.
= [48: 5]
[تعليق الشيخ الألباني]
حسن صحيح: ق نحوه، أتم منه دون سؤال السائل، وقول الزهري. [ص: 173]
(1) هو خالد بن عبد الله الطحان الواسطي، ثقة من رجال الشيخين.
وعبد الرحمن بن إسحاق: هو القرشي: صدوق فيه كلامٌ يسير، احتج به مسلمٌ.
والزهريُّ: هو محمد بن مسلم بن عبيد الله بن عبد الله الزهريُّ أبو بكر، الثقة الفقيه الجليل، احتج به الجميع.
والسندُ جيدٌ.
وقد تابع ابن إسحاق: صالح بن كيسان عن ابن شهابٍ ..... بأتم منه: رواه البخاري (4982)، ومسلم (8/ 238).
(2) يعني: الوحي.
الحديث: 44 ¦ الجزء: 1 ¦ الصفحة: 171