৩৩

পরিচ্ছেদঃ

৩৩. ’আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ওয়াহীর সূচনা হয় ঘুমের মধ্যে সত্য স্বপ্ন দেখার মাধ্যমে। তিনি যে স্বপ্নই দেখতেন তা ভোরের আলোর মত উদ্ভাসিত হতো। অতঃপর তাঁর নিকট একাকিত্বকে প্রিয় করে দেয়া হল। ফলে তিনি হেরা গুহায় গিয়ে সেখানে বেশ কয়েক রাত ’ইবাদাতে কাটিয়ে দিতেন এবং এজন্য খাদ্য দ্রব্যও সঙ্গে নিয়ে যেতেন। এরপর খাদীজাহ (রাঃ)-এর কাছে ফিরে আসতেন এবং তিনি তাকে এরূপ খাদ্য দ্রব্য তৈরি করে দিতেন। শেষে তাঁর কাছে সত্যের বাণী (ওয়াহী) আসল। আর এ সময় তিনি হেরা গুহায় ছিলেন।

সেখানে ফেরেশতা এসে তাঁকে বলল, আপনি পড়ুন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমি বললামঃ আমি তো আমি পাঠক নই। তখন তিনি আমাকে জড়িয়ে ধরে শক্ত করে চাপ দিলেন। এমনকি এতে আমার খুব কষ্ট হল। তারপর তিনি আমাকে ছেড়ে দিলেন এবং বললেন, আপনি পড়ুন। আমি বললাম, আমি পাঠক নই। তিনি দ্বিতীয়বার আমাকে শক্ত করে চেপে ধরলেন। এবারেও এতে আমার খুব কষ্ট হল। অতঃপর তিনি আমাকে ছেড়ে দিয়ে বললেন, আপনি পড়ুন। আমি বললাম, আমি তো পাঠক নই। এরপর তিনি তৃতীয়বার আমাকে শক্ত করে এমন চেপে ধরলেন যে, এবারেও এতে আমার খুব কষ্ট হল। তারপর তিনি আমাকে ছেড়ে দিয়ে বললেন, পাঠ করুন, আপনার প্রতিপালকের নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন......যা সে জানত না (সূরাহ আল-আলাক ৯৬/১-৫) এ আয়াত পর্যন্ত।

এরপর তিনি তা নিয়ে খাদীজাহ (রাঃ)-এর কাছে কম্পিত হৃদয়ে ফিরে এলেন। আর বললেন, আমাকে কম্বল দিয়ে ঢেকে দাও। আমাকে কম্বল দিয়ে ঢেকে দাও। ফলে তাঁরা তাঁকে কম্বল দিয়ে ঢেকে দিলেন। অবশেষে তাঁর থেকে ভীতি দূর হয়ে গেল। এরপর তিনি বললেন, হে খাদীজাহ! আমার কী হল? এবং তাকে সমস্ত ঘটনা জানালেন। আর বললেনঃ আমি আমার জীবন সম্পর্কে শঙ্কাবোধ করছি। খাদীজাহ (রাঃ) তাকে বললেন, কক্ষনো না। আপনি সুসংবাদ গ্রহণ করুন। আল্লাহর কসম, আল্লাহ্ আপনাকে কখনই লাঞ্ছিত করবেন না। কেননা, আপনি তো আত্মীয়তার বন্ধন জুড়ে রাখেন, সত্যকথা বলেন, অনাথ অক্ষমদের বোঝা বহন করেন, মেহমানদের মেহমানদারী করেন এবং হকের পথে আগত যাবতীয় বিপদে সাহায্য করেন। অতপর খাদীজাহ (রাঃ) তাঁকে নিয়ে চললেন। অতঃপর তাঁকে নিয়ে ওরাকা ইবনু নাওফল-এর কাছে এলেন। আর তিনি খাজীদাহ (রাঃ)-এর চাচার পুত্র (চাচাত ভাই) ছিলেন। তিনি জাহিলীয়াতের যুগে খৃষ্ট ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। তিনি আরবী কিতাব লিখতেন। তাই সে ইন্জীল আরবীতে অনুবাদ করতেন- যতখানি লেখা আল্লাহর মনযুর হত। তিনি ছিলেন অতি বৃদ্ধ, দৃষ্টিশক্তিহীন লোক। খাদীজাহ (রাঃ) তাকে বললেন, হে আমার চাচাতো ভাই! তোমার ভাতিজার কথা শুন। তখন ওরাকা বললেন, হে ভাতিজা! তুমি কী দেখেছ?

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা কিছু দেখেছিলেন তা তাকে জানালেন। তখন ওরাকা বললেন, এতো আল্লাহর সেই নামুস (জীবরীল আঃ) যাঁকে মূসা (আঃ)-এর কাছে প্রেরণ করা হয়েছিল। হায় আফসোস! যদি সেদিন আমি জীবিত থাকতাম যেদিন তোমার কাওম তোমাকে বের করে দেবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: তারা কি আমাকে বের করে দেবে? ওরাকা বললেন, হ্যাঁ তুমি যা নিয়ে এসেছ, এমন বস্তু নিয়ে যে-ই এসেছে, তার সঙ্গেই শত্রুতা করা হয়েছে এবং কষ্ট  দেয়া হয়েছে। যদি তোমার জীবনকাল আমাকে পায়, তাহলে আমি সর্বতোভাবে তোমাকে সাহায্য করব। এরপর কিছু দিনের মধ্যেই ওরাকার মৃত্যু হয়। আর কিছু দিনের জন্য ওয়াহীও বন্ধ থাকে। এমনকি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ অবস্থার কারণে অত্যন্ত চিন্তিত হয়ে পড়লেন। এমনকি আমরা এ সম্পর্কে তার থেকে জানতে পেরেছি যে, তিনি পর্বতের চূড়া থেকে নিচে পড়ে যাবার জন্য একাধিকবার দ্রুত সেখানে চলে গেছেন। যখনই নিজেকে ফেলে দেয়ার জন্য পর্বতের চূড়ায় পৌঁছতেন, তখনই জিবরীল (আঃ) তাঁর সামনে আত্মপ্রকাশ করে বলতেন, হে মুহাম্মাদ! নিঃসন্দেহে আপনি আল্লাহর সত্য রাসূল। এতে তাঁর অস্থিরতা দূর হত এবং নিজ মনে শান্তিবোধ করতেন। তাই সেখান থেকে ফিরে আসতেন। ওয়াহী বন্ধ অবস্থা যখন তাঁর উপর দীর্ঘ হত তখনই তিনি ঐরূপ উদ্দেশে দ্রুত চলে যেতেন। যখনই তিনি পর্বতের চূড়ায় পৌঁছতেন, তখনই জিবরীল (আঃ) তাঁর সামনে আত্মপ্রকাশ করে আগের মত বলতেন।[1]

أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْحَسَنِ بْنِ قُتَيْبَةَ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي السَّرِيِّ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ عَنِ الزُّهْرِيِّ أَخْبَرَنِي عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ:
(أول ما بُدىء برسول الله صلى الله عليه وسلم من الْوَحْيِ الرُّؤْيَا الصَّادِقَةُ يَرَاهَا فِي النَّوْمِ فَكَانَ لَا يَرَى رُؤْيَا إِلَّا جَاءَتْ مِثْلَ فَلَقِ الصُّبْحِ ثُمَّ حُبِّبَ لَهُ الْخَلَاءُ فَكَانَ يَأْتِي حِرَاءَ فيتحنَّث فِيهِ - وَهُوَ التَّعَبُّدُ - اللَّيَالِيَ ذَوَاتِ الْعِدَّةِ وَيَتَزَوَّدُ لِذَلِكَ ثُمَّ يَرْجِعُ إِلَى خَدِيجَةَ فَتُزَوِّدُهُ لِمِثْلِهَا حَتَّى فَجِئَهُ الْحَقُّ وَهُوَ فِي غَارِ حِرَاءَ فَجَاءَهُ الْمَلَكُ فِيهِ فَقَالَ: اقْرَأْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ:
فَقُلْتُ: مَا أَنَا بِقَارِئٍ قَالَ: فَأَخَذَنِي فَغَطَّنِي حَتَّى بَلَغَ مِنِّي الْجَهْدَ ثُمَّ أَرْسَلَنِي فَقَالَ لِي: اقْرَأْ فَقُلْتُ: مَا أَنَا بِقَارِئٍ فَأَخَذَنِي فَغَطَّنِي الثَّانِيَةَ حَتَّى بَلَغَ مِنِّي الْجَهْدَ ثُمَّ أَرْسَلَنِي فَقَالَ: اقْرَأْ فَقُلْتُ: مَا أَنَا بِقَارِئٍ فَأَخَذَنِي فَغَطَّنِي الثَّالِثَةَ حَتَّى بَلَغَ مِنِّي الْجَهْدَ ثُمَّ أَرْسَلَنِي فَقَالَ: {اقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِي خَلَقَ} [العلق: 1] , حَتَّى بَلَغَ: {مَا لَمْ يَعْلَمْ} [العلق: 5] قَالَ: فَرَجَعَ بِهَا تَرْجُفُ بَوَادِرُهُ حَتَّى دَخَلَ عَلَى خَدِيجَةَ فَقَالَ:
زَمِّلُونِي زَمِّلُونِي فَزَمَّلُوهُ حَتَّى ذَهَبَ عَنْهُ الرَّوْعُ ثُمَّ قَالَ:
يَا خَدِيجَةُ مَا لِي؟ وَأَخْبَرَهَا الْخَبَرَ وَقَالَ:
قَدْ خَشِيتُهُ عَلَيَّ فَقَالَتْ: كَلَّا أَبْشِرْ فَوَاللَّهِ لَا يُخْزِيكَ اللَّهُ أَبَدًا [ص: 164] إِنَّكَ لَتَصِلُ الرَّحِمَ وَتَصْدُقُ الْحَدِيثَ وَتَحْمِلُ الْكَلَّ وَتَقْرِي الضَّيْفَ وَتُعِينُ عَلَى نَوَائِبِ الْحَقِّ ثُمَّ انْطَلَقَتْ بِهِ خَدِيجَةُ حَتَّى أَتَتْ بِهِ وَرَقَةَ بْنَ نَوْفَلٍ وَكَانَ أَخَا أبيها وكان أمرءاً تنصَّر فِي الْجَاهِلِيَّةِ وَكَانَ يَكْتُبُ الْكِتَابَ الْعَرَبِيَّ فَيَكْتُبُ بِالْعَرَبِيَّةِ مِنَ الْإِنْجِيلِ مَا شَاءَ أَنْ يَكْتُبَ وَكَانَ شَيْخًا كَبِيرًا قَدْ عَمِيَ فَقَالَتْ لَهُ خَدِيجَةُ: أَيْ عَمِّ اسْمَعْ مِنِ ابْنِ أَخِيكَ فَقَالَ وَرَقَةُ: ابْنَ أَخِي مَا تَرَى؟ فَأَخْبَرَهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا رَأَى فَقَالَ وَرَقَةُ: هَذَا النَّامُوسُ الَّذِي أُنزل عَلَى مُوسَى يَا لَيْتَنِي أَكُونُ فِيهَا جَذَعًا أَكُونُ حَيًّا حِينَ يُخْرِجُكَ قَوْمُكَ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ:
أمخرجيَّ هُمْ؟! قَالَ: نَعَمْ لَمْ يَأْتِ أَحَدٌ قَطُّ يما جِئْتَ بِهِ إِلَّا عُودِيَ وَأُوذِيَ وَإِنْ يُدْرِكْنِي يَوْمُكَ أَنْصُرْكَ نَصْرًا مُؤَزَّرًا ثُمَّ لَمْ يَنْشَبْ وَرَقَةُ أَنْ تُوُفِّيَ وَفَتَرَ الْوَحْيُ فَتْرَةً حَتَّى حَزِنَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ـ فِيمَا بَلَغَنَا ـ حُزْنًا غَدَا مِنْهُ مِرَارًا لِكَيْ يتردى من رؤوس شَوَاهِقِ الْجِبَالِ فَكُلَّمَا أَوْفَى بِذِرْوَةِ جَبَلٍ كَيْ يُلْقِيَ نَفْسَهُ مِنْهَا تَبَدَّى لَهُ جِبْرِيلُ فَقَالَ لَهُ: يَا مُحَمَّدُ إِنَّكَ رَسُولُ اللَّهِ حَقًّا فَيَسْكُنُ لِذَلِكَ جَأْشُهُ وتقرُّ نَفْسُهُ فَيَرْجِعُ فَإِذَا طَالَ عَلَيْهِ فَتْرَةُ الْوَحْيِ غَدَا لِمِثْلِ ذَلِكَ فَإِذَا أَوْفَى بِذِرْوَةِ الْجَبَلِ تبدَّى لَهُ جِبْرِيلُ فيقول له مثل ذلك.
= [1: 3]

[تعليق الشيخ الألباني]
صحيح دون جملة التردي ـ ((مختصر البخاري)) (رقم 3) ولم يذكرها (م) (1)، [ص: 165] ((فقه السيرة)).

(1) خلافاً لما توهمه المعلق على الحديث في طبعة ((مؤسسة الرسالة)) (1/ 219)، فقد عزاهُ لجمعٍ ليست هذه الزيادة الواهية عند بعضهم ـ أحدهم مسلم ـ! ولم يتنبه لها الشيخ أحمد شاكر، فلم يستدركها؛ فأوهم صحتها.

الحديث: 33 ¦ الجزء: 1 ¦ الصفحة: 163

اخبرنا محمد بن الحسن بن قتيبة حدثنا ابن ابي السري حدثنا عبد الرزاق اخبرنا معمر عن الزهري اخبرني عروة بن الزبير عن عاىشة قالتاول ما بدىء برسول الله صلى الله عليه وسلم من الوحي الرويا الصادقة يراها في النوم فكان لا يرى رويا الا جاءت مثل فلق الصبح ثم حبب له الخلاء فكان ياتي حراء فيتحنث فيه وهو التعبد الليالي ذوات العدة ويتزود لذلك ثم يرجع الى خديجة فتزوده لمثلها حتى فجىه الحق وهو في غار حراء فجاءه الملك فيه فقال اقرا قال رسول الله صلى الله عليه وسلمفقلت ما انا بقارى قال فاخذني فغطني حتى بلغ مني الجهد ثم ارسلني فقال لي اقرا فقلت ما انا بقارى فاخذني فغطني الثانية حتى بلغ مني الجهد ثم ارسلني فقال اقرا فقلت ما انا بقارى فاخذني فغطني الثالثة حتى بلغ مني الجهد ثم ارسلني فقال اقرا باسم ربك الذي خلق العلق 1 حتى بلغ ما لم يعلم العلق 5 قال فرجع بها ترجف بوادره حتى دخل على خديجة فقالزملوني زملوني فزملوه حتى ذهب عنه الروع ثم قاليا خديجة ما لي واخبرها الخبر وقالقد خشيته علي فقالت كلا ابشر فوالله لا يخزيك الله ابدا ص 164 انك لتصل الرحم وتصدق الحديث وتحمل الكل وتقري الضيف وتعين على نواىب الحق ثم انطلقت به خديجة حتى اتت به ورقة بن نوفل وكان اخا ابيها وكان امرءا تنصر في الجاهلية وكان يكتب الكتاب العربي فيكتب بالعربية من الانجيل ما شاء ان يكتب وكان شيخا كبيرا قد عمي فقالت له خديجة اي عم اسمع من ابن اخيك فقال ورقة ابن اخي ما ترى فاخبره رسول الله صلى الله عليه وسلم ما راى فقال ورقة هذا الناموس الذي انزل على موسى يا ليتني اكون فيها جذعا اكون حيا حين يخرجك قومك فقال رسول الله صلى الله عليه وسلمامخرجي هم قال نعم لم يات احد قط يما جىت به الا عودي واوذي وان يدركني يومك انصرك نصرا موزرا ثم لم ينشب ورقة ان توفي وفتر الوحي فترة حتى حزن رسول الله صلى الله عليه وسلم فيما بلغنا حزنا غدا منه مرارا لكي يتردى من رووس شواهق الجبال فكلما اوفى بذروة جبل كي يلقي نفسه منها تبدى له جبريل فقال له يا محمد انك رسول الله حقا فيسكن لذلك جاشه وتقر نفسه فيرجع فاذا طال عليه فترة الوحي غدا لمثل ذلك فاذا اوفى بذروة الجبل تبدى له جبريل فيقول له مثل ذلك 1 3تعليق الشيخ الالبانيصحيح دون جملة التردي مختصر البخاري رقم 3 ولم يذكرها م 1 ص 165 فقه السيرة1 خلافا لما توهمه المعلق على الحديث في طبعة موسسة الرسالة 1 219 فقد عزاه لجمع ليست هذه الزيادة الواهية عند بعضهم احدهم مسلم ولم يتنبه لها الشيخ احمد شاكر فلم يستدركها فاوهم صحتها الحديث 33 الجزء 1 الصفحة 163

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
সহীহ ইবনু হিব্বান (হাদিসবিডি)
২. কিতাবুল ওহী (كتاب الوحي)