আর হতভাগাই তা এড়িয়ে যায়। আল-বায়ান
আর তা উপেক্ষা করবে যে চরম হতভাগা। তাইসিরুল
আর ওটা উপেক্ষা করবে সে, যে নিতান্ত হতভাগা। মুজিবুর রহমান
But the wretched one will avoid it - Sahih International
১১. আর তা উপেক্ষা করবে যে নিতান্ত হতভাগ্য,
-
তাফসীরে জাকারিয়া১১। আর নিতান্ত হতভাগ্য তা উপেক্ষা করবে। [1]
[1] অর্থাৎ, সেই উপদেশ দ্বারা তারা উপকৃত হবে না। কেননা, কুফরীতে অবিচলতা ও আল্লাহর অবাধ্যাচরণ তাদের মাঝে অব্যাহত থাকে।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানযে ভয়াবহ আগুনে প্রবেশ করবে। আল-বায়ান
যে ভয়াবহ আগুনে প্রবেশ করবে। তাইসিরুল
সে ভয়াবহ অগ্নিকুন্ডে প্রবেশ করবে। মুজিবুর রহমান
[He] who will [enter and] burn in the greatest Fire, Sahih International
১২. যে ভয়াবহ আগুনে দগ্ধ হবে,
-
তাফসীরে জাকারিয়া১২। সে মহা অগ্নিতে প্রবেশ করবে।
-
তাফসীরে আহসানুল বায়ানতারপর সে সেখানে মরবেও না এবং বাঁচবেও না। আল-বায়ান
অতঃপর সেখানে সে না (মরার মত) মরবে, আর না (বাঁচার মত) বাঁচবে। তাইসিরুল
অতঃপর সে সেখানে মরবেও না, বাঁচবেও না। মুজিবুর রহমান
Neither dying therein nor living. Sahih International
১৩. তারপর সেখানে সে মরবেও না বাঁচবেও না।(১)
(১) অর্থাৎ তার মৃত্যু হবে না। যার ফলে আযাব থেকে রেহাই পাবে না। আবার বাঁচার মতো বাঁচাবেও না। যার ফলে জীবনের কোন স্বাদ-আহলাদও পাবে না। [ইবন কাসীর] হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “আর যারা জাহান্নামী; তারা সেখানে মরবেও না, বাঁচবেও না। তবে এমন কিছু লোক হবে যারা গোনাহ করেছিল (কিন্তু মুমিন ছিল) তারা সেখানে মরে যাবে। তারপর যখন তারা কয়লায় পরিণত হবে তখন তাদের জন্য সুপারিশের অনুমতি দেয়া হবে; ফলে তাদেরকে টুকরা টুকরা অবস্থায় নিয়ে এসে জান্নাতের নালাসমূহে প্রসারিত করে রাখা হবে। তারপর বলা হবে, হে জান্নাতীরা তোমরা এদেরকে সিক্ত কর। এতে তারা বন্যায় ভেসে আসা বীজের ন্যায় আবার উৎপন্ন হবে।” [মুসলিম: ১৮৫]
এ হাদীস থেকে বোঝা গেল যে, আলোচ্য আয়াতে শুধু কাফের মুশরিকদের ক্ষেত্রেই বলা হয়েছে যে, তারা বাঁচবেও না আবার মরবেও না। অর্থাৎ তারা আরামের বাঁচা বাঁচবে না আবার মৃত্যুও হবে না যে, তারা আযাব থেকে মুক্তি পেয়ে যাবে। পক্ষান্তরে ঈমানদারদের ব্যাপারটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। তারা জাহান্নামে গেলে সেখানে তাদের গোনাহ পরিমাণ শাস্তি ভোগ করার পর মৃত্যু প্রাপ্ত হবে, ফলে তারা অতিরিক্ত শাস্তি ভোগ থেকে মুক্তি পাবে। এরপর সুপারিশের মাধ্যমে সেখান থেকে বেরিয়ে আসবে।
তাফসীরে জাকারিয়া১৩। অতঃপর সে সেখানে মরবেও না, [1] বাঁচবেও না।
[1] এর বিপরীতে এক শ্রেণীর (তওহীদবাদী) জাহান্নামী এমনও হবে, যারা শুধু নিজেদের কৃতপাপের শাস্তি ভোগার জন্য কিছুকাল সাময়িকভাবে জাহান্নামে অবস্থান করবে। অতঃপর আল্লাহ তাআলা তাদেরকে এক প্রকার মৃত্যু দেবেন। এমনকি তারা আগুনে পুড়ে কয়লা হয়ে যাবে। তারপর মহান আল্লাহ নবীগণের সুপারিশে তাদেরকে একদল একদল করে বের করা হবে। অতঃপর তাদেরকে জান্নাতের (হায়াত) নহরে নিক্ষেপ করা হবে। জান্নাতীগণও তাদের উপর পানি ঢালবেন। তখন তারা এতে এমন সজীব হয়ে উঠবে যেমন শস্যদানা স্রোতবাহিত আবর্জনার উপর অঙ্কুরিত হয়ে উদগত হয়। (সহীহ মুসলিম ঈমান অধ্যায়, শাফাআত প্রমাণ এবং জাহান্নাম থেকে একত্ববাদীদের বের হওয়া পরিচ্ছেদ।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানঅবশ্যই সাফল্য লাভ করবে যে আত্মশুদ্ধি করবে, আল-বায়ান
সাফল্য লাভ করবে সে যে নিজেকে পরিশুদ্ধ করে, তাইসিরুল
নিশ্চয়ই সে সাফল্য লাভ করবে যে পবিত্রতা অর্জন করে। মুজিবুর রহমান
He has certainly succeeded who purifies himself Sahih International
১৪. অবশ্যই সাফল্য লাভ করবে যে পরিশুদ্ধ হয়।(১)
(১) এখানে পরিশুদ্ধ বা পবিত্রতার অর্থ কুফর ও শির্ক ত্যাগ করে ঈমান আনা, অসৎ আচার-আচরণ ত্যাগ করে সদাচার অবলম্বন করা এবং অসৎকাজ ত্যাগ করে সৎকাজ করা। আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে যা নাযিল হয়েছে তার অনুসরণ করা। আয়াতের আরেক অর্থ, ধনসম্পদের যাকাত প্ৰদান করা। তবে যাকাতকেও এ কারণে যাকাত বলা হয় যে, তা ধন-সম্পদকে পরিশুদ্ধ করে। এখানে تَزَكَّىٰ শব্দের অর্থ ব্যাপক হতে পারে। ফলে ঈমানগত ও চরিত্রগত পরিশুদ্ধি এবং আর্থিক যাকাত প্ৰদান সবই এই আয়াতের অন্তর্ভুক্ত বলে বিবেচিত হবে। [দেখুন: ফাতহুল কাদীর]
তাফসীরে জাকারিয়া১৪। নিশ্চয় সে সাফল্য লাভ করে, যে নিজেকে পরিশুদ্ধ করে।[1]
[1] অর্থাৎ, যে নিজের আত্মাকে নোংরা আচরণ থেকে এবং অন্তরকে শিরক ও পাপাচারের পঙ্কিলতা থেকে পবিত্র করে।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানআর তার রবের নাম স্মরণ করবে, অতঃপর সালাত আদায় করবে। আল-বায়ান
আর তার প্রতিপালকের নাম স্মরণ করে ও নামায কায়েম করে। তাইসিরুল
এবং স্বীয় রবের নাম স্মরণ করে ও সালাত আদায় করে। মুজিবুর রহমান
And mentions the name of his Lord and prays. Sahih International
১৫. এবং তার রবের নাম স্মরণ করে ও সালাত কায়েম করে।(১)
(১) কেউ কেউ অর্থ করেছেন, তারা তাদের রবের নাম স্মরণ করে এবং সালাত আদায় করে। বাহ্যতঃ এতে ফরয ও নফল সবরকম সালাত অন্তর্ভুক্ত। কেউ কেউ ঈদের সালাত দ্বারা এর তাফসীর করে বলেছেন যে, যে যাকাতুল ফিতর এবং ঈদের সালাত আদায় করে। কোন কোন মুফাসসির বলেন, “নাম স্মরণ করা’ বলতে আল্লাহকে মনে মনে স্মরণ করা এবং মুখে তা উচ্চারণ করাও উদ্দেশ্য হতে পারে। অর্থাৎ আল্লাহকে মনে মনে বা মুখে উচ্চারণ করে স্মরণ করেছে, তারপর সালাত আদায় করেছে। সে শুধু আল্লাহর স্মরণ করেই ক্ষান্ত থাকেনি বরং নিয়মিত সালাত আদায়ে ব্যাপৃত ছিল। মূলত: এ সবই আয়াতের অর্থ হতে কোন বাধা নেই। [ফাতহুল কাদীর]
তাফসীরে জাকারিয়া১৫। এবং নিজ প্রতিপালকের নাম স্মরণ করে ও নামায আদায় করে।
-
তাফসীরে আহসানুল বায়ানবরং তোমরা দুনিয়ার জীবনকে প্রাধান্য দিচ্ছ। আল-বায়ান
কিন্তু তোমরা তো দুনিয়ার জীবনকেই প্রাধান্য দাও, তাইসিরুল
কিন্তু তোমরা পার্থিব জীবনকে পছন্দ করে থাক, মুজিবুর রহমান
But you prefer the worldly life, Sahih International
১৬. কিন্তু তোমরা দুনিয়ার জীবনকে প্রাধান্য দাও,
-
তাফসীরে জাকারিয়া১৬। বরং তোমরা পার্থিব জীবনকে প্রাধান্য দিয়ে থাক।
-
তাফসীরে আহসানুল বায়ানঅথচ আখিরাত সর্বোত্তম ও স্থায়ী। আল-বায়ান
অথচ আখিরাতই অধিক উৎকৃষ্ট ও স্থায়ী। তাইসিরুল
অথচ আখিরাতের জীবনই উত্তম ও অবিনশ্বর। মুজিবুর রহমান
While the Hereafter is better and more enduring. Sahih International
১৭. অথচ আখিরাতই উৎকৃষ্ট(১) ও স্থায়ী।(২)
(১) হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “আখেরাতের তুলনায় দুনিয়া তো শুধু এমন যেন তোমাদের কেউ সমূদ্রে তার আঙ্গুল ডুবিয়েছে। তারপর সে যেন দেখে নেয় সে আঙ্গুল কি নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে?” [মুসলিম: ২৮৫৮]
(২) অর্থাৎ আখেরাত দু'দিক দিয়ে দুনিয়ার মোকাবিলায় অগ্ৰাধিকার পাওয়ার যোগ্য। প্রথমত তার সুখ, স্বাচ্ছন্দ, আরাম-আয়েশ দুনিয়ার সমস্ত নিয়ামতের চাইতে আনেক বেশী ও অনেক উচ্চ পর্যায়ের। দ্বিতীয়ত দুনিয়া ধ্বংসশীল এবং আখেরাত চিরস্থায়ী। [ইবন কাসীর]
তাফসীরে জাকারিয়া১৭। অথচ পরকালের জীবনই উত্তম ও চিরস্থায়ী। [1]
[1] কেননা, পৃথিবী এবং তার সমস্ত বস্তু ধ্বংসশীল। পক্ষান্তরে পরকালের জীবনই হল চিরস্থায়ী জীবন। বলা বাহুল্য, জ্ঞানী ব্যক্তি কোন দিন চিরস্থায়ী বস্তুর উপর ধ্বংসশীল ক্ষণস্থায়ী বস্তুকে অগ্রাধিকার দেয় না।
তাফসীরে আহসানুল বায়াননিশ্চয় এটা আছে পূর্ববর্তী সহীফাসমূহে। আল-বায়ান
আগের কিতাবগুলোতে এ কথা (লিপিবদ্ধ) আছে, তাইসিরুল
নিশ্চয়ই এটা পূর্ববর্তী গ্রন্থসমূহে (বিদ্যমান) আছে। মুজিবুর রহমান
Indeed, this is in the former scriptures, Sahih International
১৮. নিশ্চয় এটা আছে পূর্ববর্তী সহীফাসমূহে—
-
তাফসীরে জাকারিয়া১৮। নিশ্চয়ই এটা পূর্ববর্তী গ্রন্থসমূহে (বিদ্যমান) আছে।
-
তাফসীরে আহসানুল বায়ানইবরাহীম ও মূসার সহীফাসমূহে। আল-বায়ান
ইবরাহীম ও মূসার কিতাবে। তাইসিরুল
(বিশেষতঃ) ইবরাহীম ও মূসার গ্রন্থসমূহে। মুজিবুর রহমান
The scriptures of Abraham and Moses. Sahih International
১৯. ইবরাহীম ও মূসার সহীফাসমূহে।(১)
(১) অর্থাৎ এই সূরার সব বিষয়বস্তু অথবা সর্বশেষ বিষয়বস্তু (আখেরাত উৎকৃষ্ট ও চিরস্থায়ী হওয়া) পূর্ববর্তী ইবরাহীম ও মূসা আলাইহিস সালাম-এর সহীফাসমূহে লিখিত আছে। [ইবন কাসীর]
তাফসীরে জাকারিয়া১৯। ইব্রাহীম ও মূসার গ্রন্থসমূহে।
-
তাফসীরে আহসানুল বায়ান