৫২০২

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ

৫২০২-[৪৮] আবূ উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। একদিন সুফফার অধিবাসীদের মধ্য থেকে জনৈক লোক এক দীনার রেখে মৃত্যুবরণ করল। তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন: এটা একটি পোড়া দাগ। বর্ণনাকারী বলেন, কিছুদিন পর আরেক লোক দু’টি দীনার রেখে মৃত্যুবরণ করল। তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) এই বললেন: এ যেন দুটি পোড়া দাগ। (আহমাদ ও বায়হাকী’র শুআবুল ঈমান)

اَلْفصْلُ الثَّالِثُ

وَعَنْ أَبِي أُمَامَةَ أَنَّ رَجُلًا مِنْ أَهْلِ الصُّفَّةِ تُوُفِّيَ وَتَرَكَ دِينَارًا فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «كَيَّةٌ» قَالَ: ثُمَّ تُوُفِّيَ آخَرُ فَتَرَكَ دِينَارَيْنِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «كَيَّتَانِ» رَوَاهُ أَحْمَدُ والبيهقيُّ فِي «شعب الإِيمان»

صحیح ، رواہ احمد (5 / 253 ح 22533) و البیھقی فی شعب الایمان (6963) * و للحدیث شواھد صحیحۃ عند احمد (5 / 253 ، 258) و ابن حبان (الموارد : 2481 سندہ حسن ) وغیرھما وھوبھا صحیح ۔
(صَحِيح)

وعن ابي امامة ان رجلا من اهل الصفة توفي وترك دينارا فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «كية» قال: ثم توفي اخر فترك دينارين فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «كيتان» رواه احمد والبيهقي في «شعب الايمان» صحیح ، رواہ احمد (5 / 253 ح 22533) و البیھقی فی شعب الایمان (6963) * و للحدیث شواھد صحیحۃ عند احمد (5 / 253 ، 258) و ابن حبان (الموارد : 2481 سندہ حسن ) وغیرھما وھوبھا صحیح ۔ (صحيح)

ব্যাখ্যা : আহলে সুফফা হলো কতিপয় গরীব মুহাজির সাহাবী যাদের কোন বাড়ী-ঘর ছিল না। তারা মসজিদে নববীর বারান্দায় থাকত। 

‘আল্লামাহ ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, দু’জন সুফফার অধিবাসীর ওপর এরূপ শাস্তির কারণ বা ইল্লত জানিয়ে দেয়াই এখানে উদ্দেশ্যে কারণ তারা ছিলেন দুনিয়াবিমুখ ফকীর। কেউ কিছু দিলে খেতেন অন্যথায় উপোস থাকতেন অথচ মৃত্যুর সময় দীনার (স্বর্ণ মুদ্রা) রেখে গেলেন তাহলে তাদের দুনিয়াবিমুখ ও দরিদ্রতার দাবীটি ছিল মিথ্যা। তাই বলে অর্থ সম্পদের অধিকারী হওয়া নিন্দনীয় নয়। সাহাবীদের মধ্যে অনেকেই সম্পদশালী ছিলেন। যেমন- আবু বাকর, ‘উসমান, আবদুর রহমান ইবনু আওফ, ত্বলহাহ্ ইবনু উবায়দুল্লাহ (রাঃ) প্রমুখ, এরা কেউই সম্পদশালী হয়ে ফিতনায় পড়েননি। সম্পদশালী হওয়া যুহদ ফি দুনিয়া’র পরিপন্থী নয়, বরং এটা মুবাহ বা বৈধ। কেউ এটা পরিহার করে চলতে পারলে সেটা হবে তার জন্য উত্তম। আরবীতে (كَيَّةٌ) বিভিন্নভাবে পড়ার রীতি রয়েছে, শব্দের অর্থ আগুনে কোন কিছুকে তাপ দিয়ে তা দ্বারা দাগ বা সেক দেয়া। যেমন আল্লাহ বলেন, 

یَّوۡمَ یُحۡمٰی عَلَیۡهَا فِیۡ نَارِ جَهَنَّمَ فَتُکۡوٰی بِهَا جِبَاهُهُمۡ

“সেদিন জাহান্নামের অগ্নিতে ঐ (স্বর্ণ-চাদি)-গুলো উত্তপ্ত করা হবে, অতঃপর সেগুলো দিয়ে তাদের ললাট, পার্শ্বদেশ এবং পৃষ্ঠদেশসমূহে দাগ দেয়া হবে।” (সূরাহ্ আত্ তাওবাহ্ ৯ : ৩৫) 

কেউ কেউ এভাবেও ব্যাখ্যা করেছেন যে, তারা যেহেতু ফকীরের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন, যাদের লোকেরা সদাক্বাহ্ দিত, তারা তো চরম অভাবী ও ক্ষুধার্ত ছিলেন, তারা প্রকারান্তে সওয়ালকারীর মতই ছিলেন, চাই তা কথায় হোক বা বাস্তব অবস্থার কারণে হোক। অথচ যার কাছে একদিনের খাদ্য রয়েছে তার জন্য সওয়াল করা হারাম। 

অতএব তাদের নিকট দীনার থাকার কারণে অন্যের নিকট চাওয়া হারাম হওয়া সত্ত্বেও পরোক্ষভাবে চাওয়ার জন্য তাদের ঐ মুদ্রা হবে তাদের শরীরের দাগ বা সেক। (মিরকাতুল মাফাতীহ ৩৯৭, শাহু বুলুগুল মারাম দারস্ নং ২৩১, শামিলাহ্ : ১৪৫০)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৬: মন-গলানো উপদেশমালা (كتاب الرقَاق)