পরিচ্ছেদঃ
১৩২৫। জান্নাতকে বছরের প্রথম থেকে শুরু করে অন্য বছরের শুরু পর্যন্ত রমাযানের জন্য চাকচিক্য করা হতে থাকে। এরপর যখন রমাযানের প্রথম রাতের আগমন ঘটে তখন আরশের নিচ হতে বায়ু প্রবাহিত হয় আর জান্নাতী বৃক্ষের পাতাগুলো হুরঈনদের উদ্দেশ্যে তালু দিতে (দৌলতে) থাকে। অতঃপর তারা বলেঃ হে প্রতিপালক! তোমার বান্দাদের মধ্য থেকে আমাদের স্বামী নির্ধারণ করে দাও, তাদের দ্বারা আমাদের চক্ষুগুলো শীতল হবে আর আমাদের দ্বারা তাদের চক্ষু শীতল হবে।
হাদীসটি মুনকার।
হাদীসটি ত্ববারানী "আল-মুজামুল কাবীর" গ্রন্থে (নং ৬৯৪৩), তাম্মাম “আল-ফাওয়াইদ” গ্রন্থে (১/৩৪) ও ইবনু আসাকির "ফাযলু রমযান" গ্রন্থে (কাফ/২-১৭১) ওয়ালীদ ইবনুল ওয়ালীদ হতে, তিনি ইবনু সাওবান হতে, তিনি আমর ইবনু দীনার হতে, তিনি ইবনু উমার (রাঃ) হতে, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ...।
ইমাম ত্ববারানী বলেনঃ ইবনু সাওবান হতে ওয়ালীদ ছাড়া অন্য কেউ হাদীসটি বর্ণনা করেননি।
আমি (আলবানী) বলছিঃ তিনি হচ্ছেন কালানেসী, তিনি দুর্বল। হাফিয যাহাবী "আল-মীযান" গ্রন্থে বলেনঃ আবু হাতিম বলেছেনঃ তিনি সত্যবাদী। দারাকুতনী প্রমুখ বলেনঃ তিনি মাতরূক। নাসর আল-মাকদেসী তার "আরবাউন" গ্রন্থে তার একটি মুনকার হাদীস বর্ণনা করে বলেছেনঃ তাকে মুহাদ্দিসগণ পরিত্যাগ করেছেন।
আমি (আলবানী) বলছিঃ এটিই সে হাদিসটি।
হাফিয যাহাবী হাদীসটি “তাযকিরাতুল হুফফায” গ্রন্থে (৩/৮৮) এ সূত্রেই বর্ণনা করে বলেছেনঃ নাসর আল-মাকদেসী বলেনঃ ওয়ালীদ ইবনুল ওয়ালীদ কালানেসী এককভাবে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। আর তাকে মুহাদ্দিসগণ পরিত্যাগ করেছেন। আমি বলছিঃ দারাকুতনী তাকে দুর্বল আখ্যা দিয়েছেন আর আবু হাতিম তাকে শক্তিশালী আখ্যা দিয়েছেন।
তার সূত্রেই ইবনুল জাওযী হাদীসটিকে "আল-ওয়াহিয়াত" গ্রন্থে (২/৪৬) দারাকুতনী কর্তৃক "আল-আফরাদ" গ্রন্থের বর্ণনা হতে উল্লেখ করেছেন। দারাকুতনী বলেছেনঃ তিনি (ওয়ালীদ) এককভাবে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন তিনি মুনকারুল হাদীস।
হাদীসটিকে ইবনু খুযায়মাহ তার "সহীহ" গ্রন্থে (১৮৮৬), আসবাহানী “আততারগীব” গ্রন্থে (কাফ ২/১৭৯) জারীর ইবনু আইউব বাজালীর হাদীস হতে, তিনি শা’বী হতে, তিনি নাফে ইবনু বুরদাহ হতে, তিনি আবু মাসউদ গিফারী (রাঃ) হতে মারফূ’ হিসেবে কিছু বাড়তি ভাষায় বর্ণনা করেছেনঃ তিনি বলেনঃ যে বান্দা রমাযানের একদিন সওম পালন করবে হুর’ঈনদের মধ্য থেকে একজনের সাথে তার বিয়ে দিয়ে দেয়া হবে এমন এক মতির তাঁবুর মধ্যে, আল্লাহ্ তা’আলা যার বর্ণনা দিয়েছেনঃ "হুররা রয়েছে তাঁবূতে অপেক্ষমান অবস্থায়" (সূরা আররহমান : ৭২), সেসব প্রত্যেক নারীর জন্য সত্তরটি করে অলঙ্কার থাকবে যেগুলোর কোনটিই অন্যটির রঙের হবে না। তাকে সত্তর প্রকারের সুগন্ধি প্রদান করা হবে, সেগুলোর কোনটিই অন্যটির গন্ধের ন্যায় হবে না। তাদের প্রত্যেক নারীর সত্তর হাজার করে গুণাবলী থাকবে ...।
এ ধরণের মাত্রাতিরিক্ত বাড়তি কথায় হাদীসটি মুনকার এবং বানোয়াট হওয়ার ইঙ্গিত বহন করছে। এ কারণেই ইবনু খুযায়মাহ-ও হাদীসটিকে মেনে নিতে পারেননি। কারণ তিনি বলেছেনঃ যদি হাদীসটি সহীহ হয় ...।
হাফিয মুনযেরী বলেনঃ জারীর ইবনু আইউব বাজালী দুর্বল। বানোয়াটের আলামত তার উপরেই বর্তাবে।
আমি (আলবানী) বলছিঃ হাদীসটিকে ইবনুল জাওযী “আল-মওযুয়াত” গ্রন্থে (২/১৮৮-১৮৯) উল্লেখ করে বলেছেনঃ এ হাদীসটি রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপরে জাল করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে মিথ্যা বর্ণনা করার দোষে দোষী হচ্ছে জারীর ইবনু আইউব। ইয়াহইয়া বলেনঃ তিনি কিছুই না। ফাযল ইবনু দুকাইন বলেনঃ তিনি হাদীস জালকারী। নাসাঈ ও দারাকুতনী বলেনঃ তিনি মাতরূক। (আরো বিস্তারিত জানতে দেখুন মূল গ্রন্থ)।
إن الجنة لتزخرف لرمضان من رأس الحول إلى الحول، فإذا كان أول ليلة من رمضان هبت ريح من تحت العرش فصفقت ورق الجنة عن الحور العين، فقلن يا رب اجعل لنا من عبادك أزواجا تقر بهم أعيننا، وتقر أعينهم بنا
منكر
-
أخرجه الطبراني في " المعجم الأوسط " (رقم 6943) وتمام في " الفوائد " (ج1رقم 34) وابن عساكر في " فضل رمضان " (ق /171 - 2) من طريق الوليد بن الوليد: نا ابن ثوبان عن عمرو بن دينار عن ابن عمر أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: فذكره وقال الطبراني: " لم يروه عن ابن ثوبان إلا الوليد
قلت: وهو القلانسي واه. قال الذهبي في " الميزان ": " قال أبو حاتم: صدوق. وقال الدارقطني وغيره: متروك. وروى له نصر المقدسي في " أربعينه " حديثا منكرا، وقال: تركوه
قلت: يعني هذا الحديث، فقد رواه الذهبي في " تذكرة الحفاظ " من هذا الوجه ثم قال (3/88) : قال نصر المقدسي: تفرد به الوليد بن الوليد القلانسي، وقد تركوه. قلت
وهاه الدارقطني وقواه أبو حاتم
ومن طريقه أورده ابن الجوزي في " الواهيات " (2/46) من رواية الدارقطني في
الأفراد وقال الدارقطني
إنه تفرد به وهو منكر الحديث
وأخرجه ابن خزيمة في " صحيحه " (1886) والأصبهاني في " الترغيب " (ق 179/2)
من حديث جرير بن أيوب البجلي عن الشعبي عن نافع بن بردة عن أبي مسعود الغفاري
مرفوعا به وزاد
" قال: فما من عبد يصوم يوما في رمضان إلا زوج زوجة من الجور العين، في خيمة
من درة مما نعت الله " حور مقصورات في الخيام " على كل امرأة سبعون حلة ليس
منها حلة على لون الأخرى، تعطي سبعين لونا من الطيب، ليس منه لون على ريح
الآخر، لكل امرأة منهن سبعون ألف وصيفة لحاجتها.. " إلخ الحديث
وفيه من مثل هذه المبالغات ما يدل على نكارته ووضعه ولذلك لم يسلم به ابن
خزيمة فإنه قال: " إن صح الخبر، فإن في القلب من جرير بن أيوب البجلي
وعقب عليه الحافظ المنذري بقوله (2/72) : " جرير بن أيوب البجلي واه، ولوائح الوضع عليه. والله أعلم
قلت: ومع هذا الحكم الصريح بالوضع على هذا الحديث فقد صدره بصيغة (عن)
المشعرة عنده بأنه فوق الضعيف كما نص عليه في المقدمة، وهذا من تناقضه الذي
أوضحته في مقدمة كتابي " صحيح الترغيب والترهيب " فراجعها فإنها مهمة جدا
وهذا الحديث أورده ابن الجوزي في " الموضوعات " (2/188 - 189) وقال: " هذا حديث موضوع على رسول الله صلى الله عليه وسلم، والمتهم به جرير بن أيوب. قال يحيى: ليس بشيء، وقال الفضل بن دكين: يضع الحديث. وقال النسائي والدارقطني: متروك
وعقب عليه السيوطي في " اللآلىء " (2/100) بما لا طائل تحته. وذهل عنه ابن عراق فلم يورده في " تنزيه الشريعة " لا في الفصل الأول، ولا في الفصل الثاني. والقول فيه قول ابن الجوزي والمنذري
ثم إن من الممكن ربط علة الحديث بنافع بن بردة؛ فإني لم أجد له ترجمة فيما عندي من المصادر. وشيخه أبو مسعود الغفاري أورده في " الإصابة " في (الكنى) وقال يأتي في (المبهمات) وليس عنده (المبهمات) ، ووقع في " الموضوعات
عبد الله بن مسعود وفي " ترغيب الأصبهاني " و" اللآلىء ": ابن مسعود، وهذا لا ينافي أنه الغفاري لأنه أبو مسعود بن مسعود الغفاري كما في " الإصابة ". والله أعلم