৩৯৪০

পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - যুদ্ধাভিযানে হত্যার বর্ণনা

৩৯৪০-[৪] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখনই কোনো যুদ্ধাভিযানে বের হতেন তখন উম্মু সুলায়ম (রাঃ) (আনাস (রাঃ)-এর মা) এবং অন্যান্য আনসারী মহিলাগণ জিহাদে শামিল থাকতেন। যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে এ সমস্ত মহিলাগণ সৈন্যদেরকে পানি পান করাতেন এবং আহতদের সেবা-শুশ্রূষা করতেন। (মুসলিম)[1]

بَابُ الْقِتَالِ فِى الْجِهَادِ

وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَغْزُو بِأُمِّ سُلَيْمٍ وَنِسْوَةٍ مِنَ الْأَنْصَارِ مَعَهُ إِذَا غَزَا يَسْقِينَ الْمَاءَ وَيُدَاوِينَ الْجَرْحَى. رَوَاهُ مُسلم

وعن انس قال كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يغزو بام سليم ونسوة من الانصار معه اذا غزا يسقين الماء ويداوين الجرحى رواه مسلم

ব্যাখ্যা: নববী (রহঃ) বলেনঃ উপরোক্ত হাদীসে সেবা-শুশ্রুষা তাদের মাহরাম ও তাদের স্বামীদের জন্য ছিল। আর যে চিকিৎসা তারা ছাড়া অন্যদের জন্য ছিল তাতে ক্ষতস্থান ছাড়া অন্যস্থানে হাতের স্পর্শ হতো না। ইবনুল হুমাম বলেন, চিকিৎসা এবং পানি পান করানোর জন্য যুদ্ধে বৃদ্ধ মহিলাদের নিয়ে যাওয়া উত্তম। আর যদি সহবাসের প্রয়োজন থাকে, তাহলে স্বাধীনা নারীকে না নিয়ে দাসীদের নিয়ে যাওয়া উত্তম। তারা সরাসরি যুদ্ধে জড়াবে না, কেননা এতে মুসলিমদের দুর্বলতা প্রকাশ পায়। তবে একান্ত প্রয়োজন হলে ভিন্ন কথা। যেমন উম্মু সুলায়ম (রাঃ) হুনায়নের যুদ্ধের দিন যুদ্ধ করেছিলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার এ যুদ্ধকে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন। যেমন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, «لَمُقَامُهَا خَيْرٌ مِنْ مُقَامِ فُلَانٍ» অর্থাৎ- ‘‘তার অবস্থান অমুকের অবস্থান অপেক্ষা উত্তম।’’ কতক পরাজিতদেরকে উদ্দেশ্য করছেন। (মিরকাতুল মাফাতীহ)

‘আওনুল মা‘বূদে অত্র হাদীসের ব্যাখ্যায় খত্ত্বাবী বলেন, এ হাদীসে দয়া ও খিদমাত গ্রহণ স্বরূপ মহিলাদের নিয়ে যুদ্ধে বেরিয়ে যাওয়া বৈধ হওয়ার ব্যাপারে প্রমাণ রয়েছে। (‘আওনুল মা‘বূদে ৫ম খন্ড, হাঃ ২৫২৮)

 অত্র হাদীসের ব্যাখ্যায় তুফহাতুল আহওয়াযীতে আছে, আমরা সম্প্রদায়কে পানি পান করাতাম, তাদের সেবা করতাম, নিহত ও আহতদেরকে মদীনাতে ফিরিয়ে আনতাম। আহমাদ, মুসলিম এবং ইবনু মাজাতে উম্মু ‘আতিয়্যার হাদীসে এসেছে, উম্মু ‘আতিয়্যাহ্ বলেন, আমি আল্লাহর রসূলের সাথে সাতটি যুদ্ধে উপস্থিত ছিলাম, আমি যোদ্ধাদের পেছনে তাদের মাল-পত্রের কাছে থাকতাম, তাদের জন্য খাদ্য তৈরি করতাম, আহতদের চিকিৎসা করতাম, পক্ষাঘাত ব্যক্তিদের পরিচালনা করতাম। এ সকল হাদীসে ঐ ব্যাপারে প্রমাণ রয়েছে যে, এ সকল কল্যাণকর কাজের জন্য মহিলাদের যুদ্ধে নিয়ে যাওয়া বৈধ, জিহাদ মহিলাদের ওপর আবশ্যক নয়। আহমাদ ও বুখারীতে ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর হাদীস এ ব্যাপারে প্রমাণ বহন করছে। ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আমরা দেখতে পাচ্ছি জিহাদ সর্বোত্তম ‘আমল। এখন আমরা কি জিহাদ করবো না? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ তোমাদের জন্য সর্বোত্তম জিহাদ হলো কবুল হজ্জ/হজ।

ইবনু বাত্ত্বল বলেন, ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর হাদীস ঐ কথার উপর প্রমাণ বহন করছে যে, নারীদের ওপর জিহাদ ফরয নয়, তবে «أَفْضَلُ الْجِهَادِ حَجٌّ مَبْرُورٌ» ‘‘সর্বোত্তম জিহাদ কবুল হজ্জ/হজ’’ তাঁর এ উক্তিতে তা নেই। বুখারীর এক বর্ণনাতে এসেছে (جِهَادُكُنَّ الْحَجُّ) ‘তোমাদের জিহাদ হজ্জ/হজ’, তবে তা প্রমাণ করছে না যে, জিহাদে তাদের স্বেচ্ছাসেবক হওয়ার অধিকার নেই। জিহাদ তাদের জন্য এ কারণে আবশ্যক নয় যে, এতে তাদের পর্দা বিনষ্ট হয়, পর পুরুষদের সংস্পর্শতা লাভ হয়। এ কারণে জিহাদ অপেক্ষা হজ্জ/হজ তাদের জন্য উত্তম। (তুহফাতুল আহওয়াযী ৪র্থ খন্ড, হাঃ ১৫৭৫)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৯: জিহাদ (كتاب الجهاد)