৩৯৩৯

পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - যুদ্ধাভিযানে হত্যার বর্ণনা

৩৯৩৯-[৩] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যুদ্ধ হলো ছল-কৌশল। (বুখারী, মুসলিম)[1]

بَابُ الْقِتَالِ فِى الْجِهَادِ

وَعَنْ جَابِرٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم: «الْحَرْب خدعة»

وعن جابر قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم الحرب خدعة

ব্যাখ্যা: (خَدْعَةٌ) ‘‘খা’’ বর্ণে, যবর অথবা পেশ দিয়ে আর উভয় ক্ষেত্রে ‘‘দাল’’ বর্ণে সাকিন দিয়ে অথবা ‘‘খা’’ অক্ষরকে পেশ আর ‘‘দাল’’ অক্ষরকে যবর দিয়ে পড়া যায়।

নববী (রহঃ) বলেনঃ ‘আরবী ভাষাবিদগণ এ কথার উপর একমত হয়েছে যে, প্রথম উচ্চারণটি সর্বাধিক স্পষ্ট, এমনকি সা‘লাব বলেন, আমাদের কাছে সংবাদ পৌঁছেছে যে, এটা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ভাষা। এ ব্যাপারে আবূ যার হারবী এবং কায়যায দৃঢ়তা প্রকাশ করেছেন, আর দ্বিতীয় উচ্চারণটিকে সংরক্ষণ করা হয়েছে (অধিক প্রসিদ্ধ) এভাবে আসীলী এর বর্ণনাতে আছে। এক কথায় শব্দটির বিভিন্ন উচ্চারণ আছে। মুনযিরী অন্য একটি উচ্চারণ বর্ণনা করেছেন তা হলো خَدْعَةٌ শব্দটি خادع এর বহুবচন তখন এর অর্থ হবে যোদ্ধারা ধোঁকার গুণে গুণান্বিত। যেন তিনি বলেছেন, যোদ্ধারা ধোঁকায় পতিত।

নববী (রহঃ) বলেনঃ যুদ্ধে কাফিরদেরকে ধোঁকা দেয়া বৈধ হওয়ার ব্যাপারে সকলে একমত যেভাবেই তা সম্ভব হোক। তবে এতে অঙ্গীকার অথবা নিরাপত্তা ভঙ্গের কারণ থাকলে তা বৈধ হবে না।

ইবনুল ‘আরবী বলেনঃ যুদ্ধে ধোঁকা প্রদান ইঙ্গিত করা ও ওঁৎ পেতে থাকার মাধ্যমে এবং অনুরূপ কিছুর মাধ্যমে সংঘটিত হয়।

ইবনুল মুনীর বলেনঃ যুদ্ধের অর্থ হলো ধোঁকা দেয়া অর্থাৎ উত্তম যুদ্ধ হলো ধোঁকা দেয়া, কেননা এতে পরস্পর অভিমুখী হওয়ার বিপদ ছাড়াই অর্থাৎ লোক ক্ষয় না করে বিজয় অর্জিত হয়।

ওয়াকিদী উল্লেখ করেনঃ (اَلْحَرْبَ خَدْعَةٌ) ‘যুদ্ধ ধোঁকা দান’ এ কথাটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বপ্রথম খন্দাকের যুদ্ধে বলেছেন। (ফাতহুল বারী ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ৩০৩০)

মিরকাতুল মাফাতীহে অত্র হাদীসের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে- ধোঁকা দান দ্বারা উদ্দেশ্য হলো- যুদ্ধের বিষয় একটি ধোঁকা দানের মাধ্যমে শেষ হয়, যুদ্ধের দ্বারা ধোঁকায় পতিত ব্যক্তিকে ধোঁকা দেয়া হয়, অতঃপর তার পা পিচ্ছিল খায়, এমতাবস্থায় সে এর কোনো সংশোধনী পায় না এবং অব্যাহতির সুযোগ পায় না। হাদীস দ্বারা যেন ব্যক্তিকে এ ব্যাপারে সতর্ক করা হলো।

শারহে মুসলিমে আছে, হাদীসে তিনটি বিষয়ে মিথ্যা বলার বৈধতা বিশুদ্ধভাবে সাব্যস্ত হয়েছে, তিনটির একটি হলো- যুদ্ধে মিথ্যা বলা। ত্ববারী বলেনঃ যুদ্ধে মিথ্যা বলা বৈধ বলতে দু’ ধরনের অর্থের সম্ভাবনা রাখে, এমন কথা বলা যা প্রকৃত মিথ্যা নয়, কেননা প্রকৃত মিথ্যা অবৈধ। প্রকৃত মিথ্যা বলা বৈধ, তবে ইঙ্গিতের উপর সীমাবদ্ধ থাকা উত্তম। আর আল্লাহ সর্বজ্ঞাত। (শারহে মুসলিম ১২শ খন্ড, হাঃ ১৭৩৯)

দ্রঃ ‘আওনুল মা‘বূদ [৫ম খন্ড, হাঃ ২৬৩৪] এবং তুহফাতুল আহওয়াযী [৫ম খন্ড, হাঃ ১৬৭৫]।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৯: জিহাদ (كتاب الجهاد)