৩৮৪৯

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ

৩৮৪৯-[৬২] আবূ উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে এক যুদ্ধাভিযানে বের হই, তখন জনৈক ব্যক্তি এক সংকীর্ণ পথ অতিক্রমকালে সেখানে এক পানির কূপ ও টাটকা শাক-সবজি দেখতে পেয়ে লোকটির মনে একান্ত আকাঙ্ক্ষা হলো যে, যদি আমি দুনিয়ার মোহ-মায়া জলাঞ্জলি দিয়ে তথায় অবস্থান করতে পারতাম, তা কতই না উত্তম হতো! তাই এতদসম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট অনুমতি চাইলে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, শোন! আমি ইয়াহূদী বা খৃষ্টান ধর্মের ন্যায় (বৈরাগ্যবাদের বিধান নিয়ে) আবির্ভূত হইনি; বরং আমাকে সহজ সরল দীন (একত্ববাদের বিধান) দিয়ে পাঠানো হয়েছে। সেই মহান আল্লাহর শপথ, যার হাতে আমার প্রাণ! আল্লাহর পথে একটি সকাল বা একটি সন্ধ্যা নিজেকে নিয়োজিত রাখা দুনিয়া ও তার সমদুয় ধন-সম্পদ হতে উত্তম। আর নিশ্চয় যুদ্ধের মাঠে কাতারবন্দী হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ষাট বছর সালাত আদায়ের চেয়ে উত্তম। (আহমাদ)[1]

اَلْفَصْلُ الثَّانِىْ

عَن أبي أُمامةَ قَالَ: خَرَجْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي سَرِيَّةٍ فَمَرَّ رَجُلٌ بِغَارٍ فِيهِ شَيْءٌ مِنْ مَاءٍ وَبَقْلٍ فَحَدَّثَ نَفْسَهُ بِأَنْ يُقِيمَ فِيهِ وَيَتَخَلَّى مِنَ الدُّنْيَا فَاسْتَأْذَنَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي ذَلِكَ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنِّي لَمْ أُبْعَثْ بِالْيَهُودِيَّةِ وَلَا بِالنَّصْرَانِيَّةِ وَلَكَنِّي بُعِثْتُ بِالْحَنِيفِيَّةِ السَّمْحَةِ وَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ لَغَدْوَةٌ أَوْ رَوْحَةٌ فِي سَبِيلِ اللَّهِ خَيْرٌ مِنَ الدُّنْيَا وَمَا فِيهَا وَلَمَقَامُ أَحَدِكُمْ فِي الصَّفِّ خَيْرٌ مِنْ صَلَاتِهِ سِتِّينَ سَنَةً» . رَوَاهُ أَحْمد

عن ابي امامة قال خرجنا مع رسول الله صلى الله عليه وسلم في سرية فمر رجل بغار فيه شيء من ماء وبقل فحدث نفسه بان يقيم فيه ويتخلى من الدنيا فاستاذن رسول الله صلى الله عليه وسلم في ذلك فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم اني لم ابعث باليهودية ولا بالنصرانية ولكني بعثت بالحنيفية السمحة والذي نفس محمد بيده لغدوة او روحة في سبيل الله خير من الدنيا وما فيها ولمقام احدكم في الصف خير من صلاته ستين سنة رواه احمد

ব্যাখ্যা: আলোচ্য হাদীসেও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাস্তায় জিহাদের ফযীলত বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছেন যে, এক সকাল এবং এক সন্ধ্যা আল্লাহর জিহাদের কাজে ব্যয় করা এ পৃথিবী এবং তার মাঝে যা কিছু আছে সব কিছু অপেক্ষা উত্তম।

হাদীসে বর্ণিত শব্দ سَرِيَّةٍ (সারিয়্যাহ্) বলতে এমন সৈন্যদলকে বুঝায়, যাদের সংখ্যা সর্বোচ্চ ৪০০ জন পর্যন্ত পৌঁছে। অন্য বর্ণনা মতে, নয়জন বা তার চেয়ে কম সংখ্যক সৈন্য হলে তাকে সারিয়্যাহ্ বলে, আর তিন থেকে চারজন হলে তাকে طليعة (ত্বলী‘আহ্) বলা হয়।

আবার অন্য একটি বর্ণনা সূত্রে জানা যায়, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনায়স -কে একাই সারিয়্যাহ্ হিসেবে প্রেরণ করেছিলেন, যা এই মতের বিরোধী।

গয্ওয়া ও সারিয়্যাহ্ এর পার্থক্য আলোচনা করতে গিয়ে রওযাতুল আহবার নামক গ্রন্থে সাইয়্যিদ জামালুদ্দীন (রহঃ) বলেনঃ মুহাদ্দিসগণের পরিভাষায় غزوة (গয্ওয়া) বলা হয় ঐ যুদ্ধকে, যাতে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বশরীরে উপস্থিত ছিলেন, আর যেটিতে স্বশরীরে উপস্থিত ছিলেন না তাকে سرية (সারিয়্যাহ্) ও بعث (বি‘স) বলে।

তবে উপরোল্লিখিত হাদীসে এ মতেরও বিরোধিতা লক্ষ্য করা যায়, যেখানে আবূ উমামাহ্ বলেন, ‘‘আমরা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে সারিয়াতে বের হয়েছিলাম’’। মোটকথা ছোট যুদ্ধদলকে আক্ষরিক অর্থে সারিয়্যাহ্ বলা হয়, আর বড় সৈন্যদল হলে তাকেই গয্ওয়া বলা হয়।

(وَلَكَنِّىْ بُعِثْتُ بِالْحَنِيفِيَّةِ السَّمْحَةِ) এ বাক্যে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলছেন যে, ‘‘আমি প্রেরিত হয়েছি একনিষ্ঠ সরল ও সঠিক পথ নিয়ে’’। এখানে الحنيفية (হানিফিয়্যাহ্) বলতে বুঝানো হয়েছে বক্রতামুক্ত সহজ সরল তাওহীদের পথকে। আর السمحة (আস্‌ সাম্হাহ্) বলতে বুঝায় এমন সহজ ও সরল পথকে যাতে কোনো সংকীর্ণতা বা কাঠিন্যতা নেই। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৯: জিহাদ (كتاب الجهاد)