১৭৯৬

পরিচ্ছেদঃ ১. প্রথম অনুচ্ছেদ - যেসব জিনিসের যাকাত দিতে হয়

১৭৯৬-[৩] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবূ বকর সিদ্দীক্ব (রাঃ)যখন তাঁকে বাহরাইনের শাসনকর্তা নিয়োগ দিয়ে পাঠান তখন এ নির্দেশনামাটি লিখে দিয়েছিলেন, বিস্‌মিল্লা-হির রহমা-নির রহীম। এ চিঠি ফরয সদাক্বাহ্ (সাদাকা) অর্থাৎ যাকাত সম্পর্কে। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এটি মুসলিমদের ওপর ফরয করেছেন এবং এটিকে জারী করার জন্য আল্লাহ তা’আলা তাঁর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে নির্দেশ দিয়েছেন। এ প্রেক্ষিতে মুসলিম কোন ব্যক্তির কাছে নিয়মানুযায়ী যাকাত চাওয়া হলে সে যেন তা আদায় করে। আর কোন ব্যক্তির নিকট নিয়ম ভেঙে বেশী যাকাত চাওয়া হলে সে যেন (বেশী যাকাত) না দেয়। চব্বিশ ও চব্বিশের কম উটের যাকাত হবে বকরী। প্রতি পাঁচ উটে একটি বকরী দিতে হবে। (পাঁচটি উটের কম হলে যাকাত দিতে হবে না)। পাঁচ থেকে নয় পর্যন্ত উটে একটি বকরী। দশ থেকে চৌদ্দটি হলে দু’টি বকরী। পনের হতে ঊনিশে তিনটি বকরী। আর বিশ থেকে চব্বিশ পর্যন্ত চারটি বকরী। উটের সংখ্যা পঁচিশ থেকে পঁয়ত্রিশ পর্যন্ত এক বছরের একটি মাদি উট (বিনতে মাখায) যাকাত দিতে হবে। উটের সংখ্যা ছত্রিশ থেকে পঁয়তাল্লিশ হলে একটি দু’ বছরের মাদি উট (বিনতু লাবুন) যাকাত দিতে হবে। ছেচল্লিশ থেকে ষাট পর্যন্ত উটে নরের সাথে মিলনের যোগ্য একটি তিন বছরের মাদী উট (হিক্কাহ) দিতে হবে। উটের সংখ্যা একষট্টি থেকে পঁচাত্তর পর্যন্ত পৌঁছালে চার পেরিয়ে পাঁচ বছরে পা দিয়েছে এমন একটি মাদী উট (জাযা’আহ্) দিতে হবে। উটের সংখ্যা ছিয়াত্তর থেকে নব্বই পর্যন্ত পৌঁছে গেলে দু’টি দু’ বছরের উটনী (বিনতু লাবুন) যাকাত লাগবে। একানব্বই হতে একশত বিশ পর্যন্ত উটে তিন বছর বয়সী নরের সাথে মিলনের যোগ্য দু’টি উট (হিক্কাতানে)। একশ’ বিশ ছাড়ালে প্রতি চল্লিশ উটে দু’ বছরের একটি মাদি উট (বিনতু লাবুন) ও পঞ্চাশটি করে বাড়লে পুরা তিন বছর বয়সী উট যাকাত দিতে হবে। যার নিকট শুধু চারটি উট আছে তার যাকাত লাগবে না। অবশ্য মালিক চাইলে, নফল সদাক্বাহ্ (সাদাকা) কিছু দিতে পারে।

উটের সংখ্যা পাঁচ হলে একটি বকরী যাকাত দিতে হবে। আর চার বছরের মাদী উট নিসাবে পৌঁছে গেলে (৬১-৭৫) এবং তা তার নিকট না থাকলে, তিন বছর বয়সী উট (অর্থাৎ একষট্টি থেকে পঁচাত্তর পর্যন্ত উটের সংখ্যার যাকাত) দিতে হবে। এর সাথে বাড়তি দু’টি বকরী দিবে যদি সহজসাধ্য হয়। অথবা বিশ দিরহাম দিয়ে দিবে। চার বছর পার হয়ে ও পাঁচ বছরে পদার্পণ করা উটের যাকাত দিতে হবে। কিন্তু তার তিন বছর বয়সী মাদী উট থাকলে সেটাই যাকাত হিসেবে গ্রহণ করা হবে। কিন্তু যাকাত গ্রহণকারী প্রদানকারীকে বিশ দিরহাম অথবা দু’টি বকরী ফেরত দিবে। কোন ব্যক্তির নিকট দু’ বছরের উট থাকলে তার যাকাত দিতে হবে। যদি তার কাছে না থেকে এক বছরের উট থাকে। তবে তা থেকে এক বছরের উটই যাকাত হিসেবে গ্রহণ করা হবে। যাকাত আদায়কারী এর সাথে আরো বিশ দিরহাম অথবা দু’টি বকরী আদায় করবে। যে ব্যক্তির যাকাত হিসেবে একটি এক বছরের উট ওয়াজিব কিন্তু তার কাছে তা’ নেই। বরং দু’ বছরের উট আছে। তাহলে তার থেকে দু’ বছরের বকরীই যাকাত হিসেবে নিতে হবে। কিন্তু যাকাত উসূলকারী তাকে দু’টি বকরী অথবা বিশ দিরহাম ফেরত দেবেন। যাকাত দেবার জন্য এক বছরের পরিবর্তে দু’বছরের উট (ইবনু লাবুন) থাকে, তার থেকে তাই গ্রহণ করতে হবে। তবে এ অবস্থায় অন্য কিছু ওয়াজিব হবে না।

আর পালিত বকরীর ক্ষেত্রে বকরীর সংখ্যা চল্লিশ হতে শুরু করে একশত বিশ পর্যন্ত হলে একটি বকরী যাকাত দিতে হবে। একশ’ বিশ হতে দু’শ পর্যন্ত দু’টি বকরী। আর দু’শ হতে তিনশ’ বকরীর জন্য তিনটি বকরী। তিনশ’র বেশী হলে, প্রত্যেক একশ’টির জন্য একটি বকরী যাকাত দিতে হবে। যার নিকট পালিত বকরী চল্লিশ থেকে একটিও কম হবে। তার উপর যাকাত ওয়াজিব নয়। তবে মালিক ইচ্ছা করলে নফল সদাক্বাহ্ (সাদাকা) হিসেবে কিছু দিতে পারে। যাকাতের মাল যেন (উট, গরু, ছাগল) অতি বৃদ্ধ, ত্রুটিযুক্ত না হয়। যাকাত উসূলকারী গ্রহণ করতে চাইলে জায়িয। বিভিন্ন পশুকে এক জায়গায় একত্র না করা উচিত। যাকাত দেবার ভয়ে পশুকে পৃথক পৃথক করে রাখাও ঠিক নয়। যদি যাকাতের নিসাবে দু’ ব্যক্তি যৌথভাবে শরীক হয়, তাহলে সমানভাবে ভাগ করে নেয়া উচিত। আর রূপার ক্ষেত্রে চল্লিশ ভাগের একভাগ যাকাত ওয়াজিব। কোন ব্যক্তি একশত নব্বই দিরহামের মালিক হলে (যা নিসাব হিসেবে গণ্য নয়) তার উপর কিছু ফরয হবে না। তবে নফল সদাক্বাহ্ (সাদাকা) হিসেবে কিছু দিতে পারে। (বুখারী)[1]

بَابُ مَا يَجِبُ فِيْهِ الزَّكَاةُ

وَعَن أنس بن مَالك: أَن أَبَا بكر رَضِي الله عَنهُ كَتَبَ لَهُ هَذَا الْكِتَابَ لَمَّا وَجَّهَهُ إِلَى الْبَحْرِينِ: بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ هَذِهِ فَرِيضَةُ الصَّدَقَةِ الَّتِي فَرَضَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى الْمُسْلِمِينَ وَالَّتِي أَمَرَ اللَّهُ عز وَجل بهَا رَسُوله فَمن سَأَلَهَا مِنَ الْمُسْلِمِينَ عَلَى وَجْهِهَا فَلْيُعْطِهَا وَمَنْ سُئِلَ فَوْقَهَا فَلَا يُعْطِ: فِي أَرْبَعٍ وَعِشْرِينَ مِنَ الْإِبِل فَمَا دونهَا خَمْسٍ شَاةٌ. فَإِذَا بَلَغَتْ خَمْسًا وَعِشْرِينَ إِلَى خَمْسٍ وَثَلَاثِينَ فَفِيهَا بِنْتُ مَخَاضٍ أُنْثَى فَإِذَا بلغت سِتا وَثَلَاثِينَ فَفِيهَا بنت لبون أُنْثَى. فَإِذا بلغت سِتَّة وَأَرْبَعين إِلَى سِتِّينَ فَفِيهَا حِقَّةٌ طَرُوقَةُ الْجَمَلِ فَإِذَا بَلَغَتْ وَاحِدَةً وَسِتِّينَ فَفِيهَا جَذَعَة. فَإِذا بلغت سِتا وَسبعين فَفِيهَا بِنْتَا لَبُونٍ. فَإِذَا بَلَغَتْ إِحْدَى وَتِسْعِينَ إِلَى عِشْرِينَ وَمِائَةٍ فَفِيهَا حِقَّتَانِ طَرُوقَتَا الْجَمَلِ. فَإِذَا زَادَتْ عَلَى عِشْرِينَ وَمِائَةٍ فَفِي كُلِّ أَرْبَعِينَ بِنْتُ لَبُونٍ وَفِي كُلِّ خَمْسِينَ حِقَّةٌ. وَمَنْ لَمْ يَكُنْ مَعَهُ إِلَّا أَرْبَعٌ مِنَ الْإِبِلِ فَلَيْسَ فِيهَا صَدَقَةٌ إِلَّا أَنْ يَشَاءَ رَبُّهَا. فَإِذَا بَلَغَتْ خَمْسًا فَفِيهَا شَاةٌ وَمَنْ بَلَغَتْ عِنْدَهُ مِنَ الْإِبِلِ صَدَقَةَ الْجَذَعَةِ وَلَيْسَتْ عِنْده جَذَعَة وَعِنْده حقة فَإِنَّهَا تقبل مِنْهُ الْحِقَّةُ وَيُجْعَلُ مَعَهَا شَاتَيْنِ إِنِ اسْتَيْسَرَتَا لَهُ أَوْ عِشْرِينَ دِرْهَمًا. وَمَنْ بَلَغَتْ عِنْدَهُ صَدَقَةَ الْحِقَّةِ وَلَيْسَتْ عِنْدَهُ الْحِقَّةُ وَعِنْدَهُ الْجَذَعَةُ فَإِنَّهَا تُقْبَلُ مِنْهُ الْجَذَعَةُ وَيُعْطِيهِ الْمُصَدِّقُ عِشْرِينَ دِرْهَمًا أَوْ شَاتَيْنِ. وَمَنْ بَلَغَتْ عِنْدَهُ صَدَقَةَ الْحِقَّةِ وَلَيْسَت إِلَّا عِنْده بِنْتُ لَبُونٍ فَإِنَّهَا تُقْبَلُ مِنْهُ بِنْتُ لَبُونٍ وَيُعْطِي مَعهَا شَاتَيْنِ أَوْ عِشْرِينَ دِرْهَمًا. وَمَنْ بَلَغَتْ صَدَقَتُهُ بنت لبون وَعِنْده حقة فَإِنَّهَا تقبل مِنْهُ الْحِقَّةُ وَيُعْطِيهِ الْمُصَدِّقُ عِشْرِينَ دِرْهَمًا أَوْ شَاتَيْنِ. وَمَنْ بَلَغَتْ صَدَقَتُهُ بَنْتَ لِبَوْنٍ وَلَيْسَتْ عِنْدَهُ وَعِنْدَهُ بِنْتُ مَخَاضٍ فَإِنَّهَا تُقْبَلُ مِنْهُ بِنْتُ مَخَاضٍ وَيُعْطَى مَعَهَا عِشْرِينَ دِرْهَمًا أَوْ شَاتَيْنِ. وَمَنْ بَلَغَتْ صَدَقَتُهُ بَنْتَ مَخَاضٍ وَلَيْسَتْ عِنْدَهُ وَعِنْدَهُ بِنْتُ لَبُونٍ فَإِنَّهَا تُقْبَلُ مِنْهُ وَيُعْطِيهِ الْمُصَدِّقُ عِشْرِينَ دِرْهَمًا أَوْ شَاتَيْنِ. فَإِنْ لَمْ تَكُنْ عِنْدَهُ بِنْتُ مَخَاضٍ عَلَى وَجْهِهَا وَعِنْدَهُ ابْن لَبُونٍ فَإِنَّهُ يُقْبَلُ مِنْهُ وَلَيْسَ مَعَهُ شَيْءٌ. وَفِي صَدَقَةِ الْغَنَمِ فِي سَائِمَتِهَا إِذَا كَانَتْ أَرْبَعِينَ فَفِيهَا شَاة إِلَى عشْرين وَمِائَة شَاة فَإِن زَادَتْ عَلَى عِشْرِينَ وَمِائَةٍ إِلَى مِائَتَيْنِ فَفِيهَا شَاتَان. فَإِن زَادَتْ عَلَى مِائَتَيْنِ إِلَى ثَلَاثِمِائَةٍ فَفِيهَا ثَلَاثُ شِيَاهٍ. فَإِذَا زَادَتْ عَلَى ثَلَاثِمِائَةٍ فَفِي كُلِّ مِائَةٍ شَاةٌ. فَإِذَا كَانَتْ سَائِمَةُ الرَّجُلِ نَاقِصَةً مِنْ أَرْبَعِينَ شَاةً وَاحِدَةً فَلَيْسَ فِيهَا صَدَقَةٌ إِلَّا أَنْ يَشَاءَ رَبُّهَا. وَلَا تُخْرَجَ فِي الصَّدَقَة هرمة وَلَا ذَات عور وَلَا تَيْسٌ إِلَّا مَا شَاءَ الْمُصَدِّقُ. وَلَا يجمع بَين متفرق وَلَا يفرق بَين مُجْتَمع خَشْيَةَ الصَّدَقَةِ وَمَا كَانَ مِنْ خَلِيطَيْنِ فَإِنَّهُمَا يَتَرَاجَعَانِ بَيْنَهُمَا بِالسَّوِيَّةِ. وَفِي الرِّقَةِ رُبُعُ الْعُشْرِ فَإِنْ لَمْ تَكُنْ إِلَّا تِسْعِينَ وَمِائَةً فَلَيْسَ فِيهَا شَيْءٌ إِلَّا أَنْ يَشَاءَ رَبُّهَا. رَوَاهُ البُخَارِيّ

وعن انس بن مالك ان ابا بكر رضي الله عنه كتب له هذا الكتاب لما وجهه الى البحرين بسم الله الرحمن الرحيم هذه فريضة الصدقة التي فرض رسول الله صلى الله عليه وسلم على المسلمين والتي امر الله عز وجل بها رسوله فمن سالها من المسلمين على وجهها فليعطها ومن سىل فوقها فلا يعط في اربع وعشرين من الابل فما دونها خمس شاة فاذا بلغت خمسا وعشرين الى خمس وثلاثين ففيها بنت مخاض انثى فاذا بلغت ستا وثلاثين ففيها بنت لبون انثى فاذا بلغت ستة واربعين الى ستين ففيها حقة طروقة الجمل فاذا بلغت واحدة وستين ففيها جذعة فاذا بلغت ستا وسبعين ففيها بنتا لبون فاذا بلغت احدى وتسعين الى عشرين وماىة ففيها حقتان طروقتا الجمل فاذا زادت على عشرين وماىة ففي كل اربعين بنت لبون وفي كل خمسين حقة ومن لم يكن معه الا اربع من الابل فليس فيها صدقة الا ان يشاء ربها فاذا بلغت خمسا ففيها شاة ومن بلغت عنده من الابل صدقة الجذعة وليست عنده جذعة وعنده حقة فانها تقبل منه الحقة ويجعل معها شاتين ان استيسرتا له او عشرين درهما ومن بلغت عنده صدقة الحقة وليست عنده الحقة وعنده الجذعة فانها تقبل منه الجذعة ويعطيه المصدق عشرين درهما او شاتين ومن بلغت عنده صدقة الحقة وليست الا عنده بنت لبون فانها تقبل منه بنت لبون ويعطي معها شاتين او عشرين درهما ومن بلغت صدقته بنت لبون وعنده حقة فانها تقبل منه الحقة ويعطيه المصدق عشرين درهما او شاتين ومن بلغت صدقته بنت لبون وليست عنده وعنده بنت مخاض فانها تقبل منه بنت مخاض ويعطى معها عشرين درهما او شاتين ومن بلغت صدقته بنت مخاض وليست عنده وعنده بنت لبون فانها تقبل منه ويعطيه المصدق عشرين درهما او شاتين فان لم تكن عنده بنت مخاض على وجهها وعنده ابن لبون فانه يقبل منه وليس معه شيء وفي صدقة الغنم في ساىمتها اذا كانت اربعين ففيها شاة الى عشرين وماىة شاة فان زادت على عشرين وماىة الى ماىتين ففيها شاتان فان زادت على ماىتين الى ثلاثماىة ففيها ثلاث شياه فاذا زادت على ثلاثماىة ففي كل ماىة شاة فاذا كانت ساىمة الرجل ناقصة من اربعين شاة واحدة فليس فيها صدقة الا ان يشاء ربها ولا تخرج في الصدقة هرمة ولا ذات عور ولا تيس الا ما شاء المصدق ولا يجمع بين متفرق ولا يفرق بين مجتمع خشية الصدقة وما كان من خليطين فانهما يتراجعان بينهما بالسوية وفي الرقة ربع العشر فان لم تكن الا تسعين وماىة فليس فيها شيء الا ان يشاء ربها رواه البخاري

ব্যাখ্যা: আবূ বাকর (রহঃ) বাহরাইনে পত্র পাঠান। যার মধ্যে যাকাতের বর্ণনা ছিল। যার মধ্যে ছিল ২৪টি উট বা তার কমে থাকলে প্রত্যেক একটি উটে একটি করে ছাগল যাকাত আদায় করতে হবে। আর ২৫টি উট হলে ৩৫টি পর্যন্ত পূর্ণ এক বৎসরের একটি মেয়ে উট যাকাত দিবে। আর ৩৬ হতে ৪৫ পর্যন্ত ২ বৎসরের একটি মেয়ে উট আদায় করবে। আর ৪৬টি উট হতে ৬০ পর্যন্ত- এর মধ্যে ৩ বৎসরের একটি উট প্রদান করবে। আর ৬১ হতে ৭৫ পর্যন্ত চার বৎসরের একটি উট প্রদান করবে। আর ৭৬ হতে ৯০ পর্যন্ত দু’ বৎসরের দু’টি মেয়ে উট প্রদান করবে। আর প্রত্যেক ৫০টি ৩ বৎসরের একটি উট প্রদান করবে। আর যার চারটি মাত্র উট আছে তার মধ্যে যাকাত নেই।

প্রকাশ থাকে যে, যাকাতের মধ্যে বুড়া বা কানা অথবা ত্রুটিযুক্ত পশু দেয়া জায়িয নয়। আর যাকাতের ভয়ে শারীকী দু’জনের পশু পৃথক করা যাবে না অথবা দু’জনের আলাদা করা পশুকে এক স্থানে জমা করা যাবে না।

অত্র হাদীসে উটের ক্ষেত্রে কতগুলো পরিভাষা ব্যবহৃত হয়েছে। যথাঃ

১. بِنْتُ مَخَاضٍ (বিনতু মাখায) বলা হয় সেই উটশাবককে যেটির বয়স এক বছর পূর্ণ হয়ে দ্বিতীয় বছরে পদার্পণ করেছে।

২. بِنْتَ لَبُوْنٍ (বিনতু লাবুন) সে উষ্ট্রিকে বলা হয় যেটির বয়স দুই বছর পূর্ণ হয়ে তিন বছরে পদার্পণ করেছে।

৩. حِقَّةٌ (হিক্কাহ্) সেই উষ্ট্রিকে বলা হয় যেটির বয়স তিন বছর পূর্ণ হয়ে চার বছরে পদার্পণ করেছে এবং গর্ভধারণের উপযোগী হয়েছে।

৪. جَذَعَةُ (জাযা‘আহ্) বলা হয় সেই উষ্ট্রিকে যেটির বয়স চার বছর পূর্ণ হয়ে পঞ্চম বছরে পদার্পণ করেছে।

* উট, গরু এবং ছাগলের যাকাতের ক্ষেত্রে শর্ত হল বছর অধিকাংশ সময় চারণভূমিতে চারণশীল হতে হবে। অতএব গৃহপালিত এবং কাজের জন্য পালিত পশুতে কোন যাকাত নেই যেমনটি ইবনু কুদামাহ (রহঃ) বলেছেন, এবং এটিই অধিকাংশ ‘উলামাদের অভিমত। যদিও কেউ কেউ ভিন্নমত পোষণ করেছেন।

* রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উক্তি যাকাতের ভয়ে পৃথক প্রাণীকে একত্রিত বা একত্রিত প্রাণীকে পৃথক করা যাবে না এর অর্থ প্রতিটি পশুর মালিক এবং যাকাত আদায়কারী উভয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।

মালিকের ক্ষেত্রে এর রূপটি হল এক ব্যক্তির চল্লিশটি ছাগল রয়েছে। যখন যাকাত আদায়কারী আসল তখন সে তার প্রাণীগুলোকে অপর এক ব্যক্তির চল্লিশটি ছাগলের সাথে মিশ্রিত করে ফেলল, যাতে উভয়ের পশুতে একটি ছাগল যাকাত লাগে এবং একটি থেকে যায়। যেহেতু আলাদা আলাদা থাকলে একটি করে উভয়ের দু’টি ছাগল যাকাত লাগত। তাই এ থেকে নিষেধ করা হয়েছে। এটি পৃথককে একত্রিত করার ক্ষেত্রে। মালিকের একত্রিত প্রাণীকে পৃথক করার রূপটি হল, দুই ব্যক্তির একত্রে চল্লিশটি ছাগল রয়েছে উভয়ের বিশটি করে। যখন যাকাত আদায়কারী আসলো তখন তারা উভয়ের প্রাণীগুলোকে আলাদা আলাদা করে নিল যাতে নিসাব পরিমাণ না হয় তাতে যাকাত না লাগে। তাই এরূপ করতে নিষেধ করা হয়েছে।

আর যাকাত আদায়কারীর ক্ষেত্রে পৃথক প্রাণীকে একত্রিত করার রূপটি হল, দুই ব্যক্তির পৃথকভাবে ২০ টি করে চল্লিশটি ছাগল রয়েছে। অতঃপর যাকাত আদায়কারী এসে তাদের উভয়ে প্রাণীগুলোকে একত্রিত করল যাতে তা নিসাব পরিমাণ হয়ে যায় এবং একটি ছাগল গ্রহণ করতে পারে। ফলে এ থেকে তাকে নিষেধ করা হয়েছে। আবার একত্রিত প্রাণীকে পৃথক করার রূপটি হল, তিন ব্যক্তির ৪০ টি করে একত্রে একশত বিশটি প্রাণী রয়েছে যাতে মাত্র একটি ছাগল যাকাত লাগে। অতঃপর যাকাত আদায়কারী এসে তাদের প্রাণীগুলোকে পৃথক করে ছাগল আলাদা করে ফেলল যাতে করে তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে একটি করে ছাগল আদায় করা যায়। তাই এই কাজ থেকে নিষেধ করা হয়েছে।

* চতুষ্পদ জন্তুর যাকাতের ক্ষেত্রে দুই বা ততোধিক ব্যক্তির প্রাণীর মিশ্রণ প্রভাব ফেলে যা অন্য কোন ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে না। অর্থাৎ দুই ব্যক্তি বিশটি করে মোট ৪০ টি ছাগল একত্রে মিশ্রিত থাকলে তাতে একটি ছাগল যাকাত লাগে যদিও পৃথকভাবে তাদের প্রাণীর সংখ্যা নিসাবে পৌঁছেনি কিন্তু যেহেতু মিশ্রিত রয়েছে তাই তাতে যাকাত ফরয হচ্ছে। কিন্তু এই মিশ্রণটি চতুষ্পদ জন্তুর প্রাণী ব্যতীত অন্য কোন যাকাতের ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলবে না যতক্ষণ না প্রত্যেক ব্যক্তির সম্পদ পৃথকভাবে নিসাব পরিমাণ না হবে। আর চতুষ্পদ প্রাণীর মিশ্রণের ক্ষেত্রে প্রত্যেক অংশীদারের প্রাণী সংখ্যানুপাতে সমানভাবে যাকাতের হিসাবটি নিজেদের মাঝে করে নিবে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৬: যাকাত (كتاب الزكاة)