১০৪৩

পরিচ্ছেদঃ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উম্মাতকে কিয়ামতের দিন চেনা যাবে, দুনিয়াতে ওযূর কারণে হাত-পায়ের উজ্জ্বলতার মাধ্যমে

১০৪৩. আবূ হুরাইরা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একবার গোরস্থানে গিয়ে বলেন, السَّلَامُ عَلَيْكُمْ دَارَ قَوْمٍ مُؤْمِنِينَ وَإِنَّا إِنْ شَاءَ اللَّهُ بِكُمْ لَاحِقُونَ (আপনাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক, মু‘মিনদের আবাস, আর নিশ্চয়ই আমরা তোমাদের সাথে যুক্ত হবো।)” আমি আশা করি আমার ভাইদের দেখবো।” সাহাবীগণ বললেন, “হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আমরা কি আপনার ভাই না?” জবাবে তিনি বলেন, “তোমরা বরং আমার সাথী। আর আমার ভাই তারা যারা এখনও আসেনি। আমি হাওযে কাউসারে আগেই উপস্থিত হব।” সাহাবীগণ বললেন, “হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আপনার উম্মাতের যারা এখনও আসেনি, তাদেরকে আপনি কিভাবে চিনবেন?” জবাবে তিনি বলেন, “তোমাদের কী অভিমত, যদি এক পাল কালো ঘোড়ার মাঝে কোন ব্যক্তির উজ্জ্বল হাত-পা-মুখ বিশিষ্ট্য একটি ঘোড়া থাকে, তবে সে কি চিনতে পারবে না?” তাঁরা জবাবে বললেন, “হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, অবশ্যই চিনতে পারবে।” রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “নিশ্চয়ই তারা (উম্মত) কিয়ামতের দিন ওযূর কারণে হাত-পা-মুখ ‍উজ্জ্বল হয়ে আসবে, আর আমি হাওযে কাওসারে আগেও উপস্থিত হবো। অতঃপর কিছু লোককে আমার হাওযে কাওসার থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হবে, যেভাবে হারানো উটকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। আমি তাদেরকে ডাকবো, “এই, তোমরা এদিকে আসো, এই তোমরা এদিকে আসো।” তখন বলা হবে, “তারা আপনার পর দ্বীনে পরিবর্তন সাধন করেছিল।” অতঃপর আমি বলবো, “তবে দূর হও, তবে দূর হও, তবে দূর হও!”[1]


আবূ হাতিম ইবনু হিব্বান রহিমাহুল্লাহ বলেন, “ভবিষ্যত বিষয়ে ইনশাআল্লাহ বলা যায়, অতীত কালে ইনশাআল্লাহ বলা অসম্ভব বিষয়। বস্তুত ইনশাআল্লাহ ভবিষ্যতের বিষয়ে বলা জায়েয। ঈমানের বিষয়ে ইনশাআল্লাহ বলার ক্ষেত্রে মানুষ দুই প্রকার। এক প্রকার বৈধ আরেক প্রকার ইনশাআল্লাহ বললে মানুষ কাফের হয়ে যাবে। যেই প্রকার ইনশাআল্লাহ বলা জায়েয নেই, সেটা হলো কোন ব্যক্তিকে বলা হয়, “তুমি কি আল্লাহ, তাঁর ফেরেস্তা, তাঁর কিতাব, তাঁর রাসূলগণ, জান্নাত, জাহান্নাম, পুনঃরুত্থান, মীযান বা এই জাতীয় জিনিসের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করো?” এক্ষেত্রে তার জন্য ওয়াজিব হলো জবাবে এমন বলা যে, “আমি নিশ্চিতভাবেই আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস করি, এসব বিষয়ে আমি প্রকৃতপক্ষেই বিশ্বাস স্থাপন করি। এসব বিষয়ে ইনশাআল্লাহ বলা যায় না। কাজেই যখন সে এই সব ব্যাপারে ইনশাআল্লাহ বলবে, সে কাফের হয়ে যাবে।

দ্বিতীয় প্রকার: যখন কোন ব্যক্তিকে জিজ্ঞেস করা হয়, “আপনি কি সেসব মু‘মিনদের অন্তর্ভূক্ত যারা সালাত আদায় করে, বিনীতভাবে যাকাত প্রদান করে ও প্রয়োজনীয় কথা-কাজ থেকে বিমুখ থাকে?” অতঃপর সে জবাবে বলে, “ইনশাআল্লাহ আমি আশাবাদী যে, আমি তাদের অন্তর্ভূক্ত হবো।” অথবা তাকে বলা হলো, “তুমি জান্নাতের অধিবাসী?” অতঃপর সে বলে, “ইনশাআল্লাহ আমি তাদের অন্তর্ভূক্ত হবো।” এই দলীল অত্র হাদীসের মধ্যে পাওয়া যায়, যেখানে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, وَإِنَّا إِنْ شَاءَ اللَّهُ بِكُمْ لَاحِقُونَ (আর নিশ্চয়ই আমরা তোমাদের সাথে যুক্ত হবো ইনশাআল্লাহ।) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কিছু সাহাবাসহ বাকীউল গারকাদ গোরস্থানে গিয়েছিলেন, তাদের মাঝে মু‘মিন সাহাবী ছিলেন আবার কিছু মুনাফিকও ছিল, অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, (আর নিশ্চয়ই আমরা তোমাদের সাথে যুক্ত হবো ইনশাআল্লাহ।) তিনি এখানে মুনাফিকদের ইনশাআল্লাহ বলেছেন যে, যদি আল্লাহ চান, তারা ইসলাম গ্রহণ করবে অতঃপর তারা তোমাদের সাথে যুক্ত হবে। বস্তুত ভাষা ভবিষ্যত বিষয়ে ইনশাআল্লাহ বলার অনুমোদন করে, যদিও কাজটি ভবিষ্যতে সংঘটিত হওয়ার ব্যাপারে কোন সন্দেহ না থাকে। কেননা মহান আল্লাহ তা‘আলা বলেন, لَتَدْخُلُنَّ الْمَسْجِدَ الْحَرَامَ إِنْ شَاءَ اللَّهُ آمِنَيْنِ (ইনশাআল্লাহ, অবশ্যই তোমরা মসজিদুল হারামে নিরাপদে প্রবেশ করবে।) (সূরা ফাতহ: ২৭।)

ذِكْرُ الْبَيَانِ بِأَنَّ أُمَّةَ الْمُصْطَفَى صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تُعرف فِي الْقِيَامَةِ بِالتَّحْجِيلِ بِوُضُوئِهِمْ كَانَ فِي الدُّنْيَا

1043 - أخبرنا الفضل بن الحباب الجمجي حَدَّثَنَا الْقَعْنَبِيُّ عَنْ مَالِكٍ عَنِ الْعَلَاءِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ أَبِيهِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ دَخَلَ الْمَقْبَرَةَ فَقَالَ: (السَّلَامُ عَلَيْكُمْ دَارَ قَوْمٍ مُؤْمِنِينَ وَإِنَّا إِنْ شَاءَ اللَّهُ بِكُمْ لَاحِقُونَ وَدِدْتُ أَنِّي قَدْ رَأَيْتُ إِخْوَانَنَا) قَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ أَلَسْنَا إِخْوَانَكَ؟ قَالَ: (بَلْ أَصْحَابِي وَإِخْوَانُنَا الَّذِينَ لَمْ يَأْتُوا بَعْدُ وَأَنَا فَرَطُكُمْ عَلَى الْحَوْضِ) قَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ كَيْفَ تَعْرِفُ مَنْ يَأْتِي بَعْدَكَ مِنْ أُمَّتِكَ؟ فَقَالَ: (أَرَأَيْتَ لَوْ كَانَتْ لِرَجُلٍ خَيْلٌ غُرٌّ مُحَجَّلَةٌ فِي خَيْلٍ دُهْمٍ بُهْمٍ أَلَا يَعْرِفُ خَيْلَهُ)؟ قَالُوا: بَلَى يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ: (فَإِنَّهُمْ يَأْتُونَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ غُرًّا مُحجلين مِنَ الْوُضُوءِ وَأَنَا فَرَطُهُمْ عَلَى الْحَوْضِ فَلَيُذَادَنَّ رِجَالٌ عَنْ حَوْضِي كَمَا يُذاد الْبَعِيرُ الضَّالُّ أُنَادِيهِمْ: أَلَا هَلُمَّ أَلَا هَلُمَّ فَيُقَالُ: إِنَّهُمْ قَدْ بَدَّلُوا بعدك فأقول: فسُحقاً فسُحقاً فسُحقاً) الراوي : أَبُو هُرَيْرَةَ | المحدث : العلامة ناصر الدين الألباني | المصدر : التعليقات الحسان على صحيح ابن حبان الصفحة أو الرقم: 1043 | خلاصة حكم المحدث: صحيح. قال أبو حاتم: الاستثناء في المستقبل من الأشياء يَسْتَحِيلُ فِي الشَّيْءِ الْمَاضِي وَإِنَّمَا يَجُوزُ الِاسْتِثْنَاءُ فِي الْمُسْتَقْبَلِ مِنَ الْأَشْيَاءِ وَحَالُ الْإِنْسَانِ فِي الِاسْتِثْنَاءِ عَلَى ضَرْبَيْنِ: إِذَا اسْتَثْنَى فِي إِيمَانِهِ: فضربٌ مِنْهُ يُطلق مُبَاحٌ لَهُ ذَلِكَ وَضَرْبٌ آخَرُ إِذَا اسْتَثْنَى فِيهِ الْإِنْسَانُ كَفَرَ وَأَمَّا الضَّرْبُ الَّذِي لَا يَجُوزُ ذَلِكَ فَهُوَ أَنْ يُقال لِلرَّجُلِ: أَنْتَ مُؤْمِنٌ بِاللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ وَالْجَنَّةِ وَالنَّارِ وَالْبَعْثِ وَالْمِيزَانِ وَمَا يُشْبِهُ هَذِهِ الْحَالَةَ؟ فَالْوَاجِبُ عَلَيْهِ أَنْ يَقُولَ: أَنَا مُؤْمِنٌ بِاللَّهِ حَقًّا وَمُؤْمِنٌ بِهَذِهِ الْأَشْيَاءِ حَقًّا فهي ما استثنى فَمَتَى مَا اسْتَثْنَى فِي هَذَا كَفَرَ. وَالضَّرْبُ الثَّانِي: إِذَا سُئل الرَّجُلُ: إِنَّكَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ الذين يُقِيمُونَ الصَّلَاةَ وَيُؤْتُونَ الزَّكَاةَ وَهُمْ فِيهَا خَاشِعُونَ وعن اللغو معرضون؟ فيقول: أرجو أن أَكُونَ مِنْهُمْ إِنْ شَاءَ اللَّهُ أَوْ يُقَالُ لَهُ: أَنْتَ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ؟ فَيَسْتَثْنِي أَنْ يَكُونَ مِنْهُمْ وَالْفَائِدَةُ فِي الْخَبَرِ حَيْثُ قَالَ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: (وَإِنَّا إِنْ شَاءَ اللَّهُ بِكُمْ لَاحِقُونَ) أَنَّهُ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ دَخَلَ بَقِيعَ الْغَرْقَدِ فِي نَاسٍ مِنْ أَصْحَابِهِ فِيهِمْ مُؤْمِنُونَ وَمُنَافِقُونَ فَقَالَ: (إِنَّا - إِنْ شَاءَ اللَّهُ - بِكُمْ لَاحِقُونَ) وَاسْتَثْنَى الْمُنَافِقِينَ أَنَّهُمْ - إِنْ شَاءَ اللَّهُ - يُسْلِمُون فَيَلْحَقُونَ بِكُمْ عَلَى أَنَّ اللُّغَةَ تُسَوِّغُ إِبَاحَةَ الِاسْتِثْنَاءِ فِي الشَّيْءِ الْمُسْتَقْبَلِ وَإِنْ لَمْ يَشُكَّ فِي كَوْنِهِ لِقَوْلِهِ عَزَّ وَجَلَّ: {لَتَدْخُلُنَّ الْمَسْجِدَ الْحَرَامَ إِنْ شَاءَ اللَّهُ آمِنَيْنِ} [الفتح: 27]