৫১৯৮

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ

৫১৯৮-[৪৪] আবু যার (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা.) তাঁকে বলেছেন: তুমি লাল বর্ণ বা কালো বর্ণ বিশিষ্ট হলেই উত্তম হবে না; বরং আল্লাহভীতি দ্বারাই তাদের হতে তুমি শ্রেষ্ঠ হবে। (আহমাদ)

اَلْفصْلُ الثَّالِثُ

عَنْ أَبِي ذَرٍّ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَهُ: «إِنَّكَ لَسْتَ بِخَيْرٍ مِنْ أَحْمَرَ وَلَا أَسْوَدَ إِلَّا أَنْ تفضلَه بتقوى» . رَوَاهُ أَحْمد سندہ ضعیف ، رواہ احمد (5 / 158 ح 21736) * قال المنذری :’’ رجالہ ثقات الا ان بکر بن عبداللہ المزنی لم یسمع من ابی ذر فالسند منقطع ‘‘ و حدیث احمد (5 / 411 ، مجمع الزوائد 8 / 84 و سندہ صحیح) یغنی عنہ ۔

ব্যাখ্যা : শারীরিকভাবে কোন মানুষ লাল-কালো অন্য কোন বর্ণের হওয়াতে আল্লাহর নিকট তার কোন মর্যাদা বা কল্যাণ নেই। আল্লাহর নিকট কল্যাণ ও মর্যাদার একমাত্র মাপকাঠি হলো তাক্বওয়া। লাল-কালো দুটি রঙের কথা বলা হয়েছে এজন্য যে, অধিকাংশ মানুষ কালো কিংবা লাল বা সাদা হয়ে থাকে। কেউ কেউ বলেছেন, লাল কালো দ্বারা সাইয়্যিদ এবং দাসকে বুঝানো হয়েছে, যেমন বিভিন্ন যুগে কালোরা ফর্সাদের হাতে দাসরূপে ব্যবহৃত হয়েছে। আমেরিকা ও ইউরোপের সাদা লোকেরা আফ্রিকার কালোদের শতাব্দীর পর শতাব্দী দাসরূপে ব্যবহার করেছে। ইসলাম এই প্রভুত্ব ও দাসত্বের মহাপ্রাচীর ভেঙ্গে দিয়ে তাক্বওয়া তথা আল্লাহভীতিকে মর্যাদার মাপকাঠি নির্ণয় করেছে। 

‘আল্লামাহ্ ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) অবশ্য এ ব্যাখ্যা গ্রহণ না করে লালকে অনারব এবং কালোকে ‘আরবজাতি বুঝিয়েছেন অর্থাৎ ‘আরবী কিংবা আযমী হওয়ার মধ্যে কোন মর্যাদা ও কল্যাণ নেই বরং তাক্বওয়ার মাধ্যমেই মর্যাদা ও কল্যাণ নিহীত। 

আল্লাহ তা'আলা বলেন, “তবে ঐ ব্যক্তি উত্তম যে ব্যক্তি স্বীয় ইমারতের ভিত্তি আল্লাহভীতির ওপর স্থাপন করেছে।” এ আয়াতে কারীমার তাৎপর্য হলো- বাহ্যিক আকৃতি এবং চাকচিক্যের ভিত্তিতে কোন মর্যাদা নির্ণয় হয় না বরং তাকওয়ার ভিত্তিতে মানুষের মর্যাদা নির্ণয় হয়। 

যেমন আল্লাহ তা'আলা বলেন, “হে মানবমণ্ডলী! আমি তোমাদেরকে একজন নারী ও পুরুষ থেকে সৃষ্টি করেছি .... নিশ্চয় তোমাদের মধ্য হতে ঐ ব্যক্তিই আল্লাহর কাছে অধিক সম্মানিত যে তোমাদের মধ্যে অধিক তাক্বওয়াবান।” (সূরাহ্ আল হুজুরাত ৪৯ : ১৩) 

‘আল্লামাহ ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, হাদীসের বাক্য (إِلَّا أَنْ تفضلَه) এর "ه" যমীরটি (أحمر) এবং (أسود) উভয়ের দিকেই প্রত্যাবর্তিত হয়েছে, আর ইস্তিসনাটি ইস্তিসনায়ে মুফাররাগ হয়েছে। এতে প্রকৃত অর্থ দাঁড়িয়েছে, “তুমি তাক্বওয়া ব্যতীত কোন বস্তু দ্বারাই উত্তম হতে পারবে না।” 

দ্বিতীয় আরেকটি অর্থ এভাবে নেয়া যায় যে, “তুমি কোন অস্থাতেই আল্লাহর কাছে উত্তম হতে পারবে যতক্ষণ না তোমাদের দুজনের মধ্য হতে কারো মধ্যে অধিক হারে তাক্বওয়া অর্জিত হবে।” এ তাক্বওয়ার কয়েকটি স্তর রয়েছে, সর্বনিম্ন স্তর হলো শিরকে জলী বা স্পষ্ট শির্ক থেকে আত্মরক্ষা করা। এর মধ্যম স্তর হলো গুনাহ, নিষিদ্ধ খেল-তামাশা এবং শিরকে খফী থেকে আত্মরক্ষা করা। আর তাক্বওয়ার সর্বোচ্চ স্তর হলো সর্বদা আল্লাহর সন্নিধানে হাযির থাকা। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ, শারহুল মিশকাত লিত্ব ত্বীবী ১০ম খণ্ড, ৩২৯৬ পৃষ্ঠা)