৫১৯৭

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ

৫১৯৭-[৪৩] ইবনু মাসউদ (রাঃ) নাবী (সা.) হতে বর্ণনা করেন। তিনি (সা.) বলেছেন : কিয়ামতের দিন আদম সন্তানের পদদ্বয় একটু নড়তে পারবে না যতক্ষণ পর্যন্ত তাকে পাঁচটি বিষয় সম্পর্কে প্রশ্ন করা হবে। ১. তার বয়স সম্পর্কে, সে তা কী কাজে ব্যয় করেছে? ২. তার যৌবন সম্পর্কে, সে তা কী কাজে ক্ষয় করেছে? ৩. তার ধন-সম্পদ সম্পর্কে, সে তা কোথা হতে অর্জন করেছে? ৪. আর তা কোথায় ব্যয় করেছে? এবং ৫. যে জ্ঞানার্জন করেছিল, সে অনুযায়ী কী ’আমাল করেছে? ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং তিনি বলেছেন : হাদীসটি গরীব

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ

وَعَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: لَا تَزُولُ قَدَمَا ابْنِ آدَمَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ حَتَّى يُسْأَلَ عَنْ خَمْسٍ: عَنْ عُمُرِهِ فِيمَا أَفْنَاهُ وَعَنْ شَبَابِهِ فِيمَا أَبْلَاهُ وَعَنْ مَالِهِ مِنْ أَيْنَ اكْتَسَبَهُ وَفِيمَا أَنْفَقَهُ وَمَاذَا عَمِلَ فِيمَا عَلِمَ؟ . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ

سندہ ضعیف ، رواہ الترمذی (2416) ۔ * حسین بن قیس الرحبی متروک و للحدیث شواھد ضعیفۃ ۔

وعن ابن مسعود عن النبي صلى الله عليه وسلم قال لا تزول قدما ابن ادم يوم القيامة حتى يسال عن خمس عن عمره فيما افناه وعن شبابه فيما ابلاه وعن ماله من اين اكتسبه وفيما انفقه وماذا عمل فيما علم رواه الترمذي وقال هذا حديث غريبسندہ ضعیف رواہ الترمذی 2416 ۔ حسین بن قیس الرحبی متروک و للحدیث شواھد ضعیفۃ ۔

ব্যাখ্যা : কিয়ামত দিবসে যে পাঁচটি বিষয় সম্পর্কে প্রশ্ন করা হবে তা হলো তার হায়াত বা জীবন, সম্পর্কে অর্থাৎ জীবনের মুদ্দাত বা পরিধি সম্পর্কে প্রশ্ন করা হবে। এ প্রশ্ন হলো তার এ দীর্ঘ জীবনের সময়টুকু সে কিভাবে কাটিয়েছে? হায়াতের এ সময়টি মূলত বালিগ হওয়ার পর থেকেই ধর্তব্য। কারণ বালিগ হওয়ার পূর্বকাল হিসাব প্রদানের অন্তর্ভুক্ত নয়। 

যৌবন হলো পূর্ণ মানব জীবনের মধ্যকাল এবং শ্রেষ্ঠ সময়। এটা পূর্ণ শক্তি ও সামর্থ্যের সময়, অতএব এ সময়ের ‘ইবাদাতও শক্তিশালী হয়ে থাকে। জীবন সম্পর্কে প্রথম প্রশ্নে ব্যাপকতার পর যৌবন সম্পর্কে বিশেষ প্রশ্ন এ ইঙ্গিত করে যে, যৌবনের উম্মাদনা নিয়ন্ত্রণ করা খুবই কঠিন, এ সময় সঠিকভাবে ব্যয় হলে যৌবনের দু’পার্শ্ব অর্থাৎ বাল্য ও বৃদ্ধকাল তেমন লক্ষণীয় নয়। 

‘আল্লামাহ্ ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, যৌবন সম্পর্কে বিশেষভাবে প্রশ্ন হলো - যৌবনের শক্তি এবং সামর্থ্যের সময়ের শক্তিমান ‘ইবাদাত সম্পর্কে প্রশ্ন করা। হতে পারে প্রবৃত্তির অদম্য ইচ্ছার বাস্তবায়ন সম্পর্কে প্রশ্ন। সম্পদ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হবে এজন্য যে, এটা কি সে হালাল পথে উপার্জন করেছে না হারাম পথে, আর কোন পথেই বা তা ব্যয় করেছে? অর্থাৎ এ অর্থ কি সে আল্লাহর ইবাদাত বা পুণ্যময় কাজে ব্যয় করেছে না তার নাফরমানী কাজে ব্যয় করেছে? 

পঞ্চম প্রশ্ন হলো - সে তার ইলম অনুপাতে ‘আমল করেছে কিনা? 

‘আল্লামাহ্ মুল্লা আলী ক্বারী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, এখানে অন্য চারটি প্রশ্নের বাক্যরীতি পরিবর্তন করে। ভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছে, এর দ্বারা সম্ভবত উদ্দেশিত বিষয়টি স্পষ্ট করা। 

‘আল্লামাহ্ ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, বাক্যরীতির এই পরিবর্তন বিষয়টির গুরুত্ব ও শ্রেষ্ঠত্বের কারণে হয়েছে। কেননা ‘ইলম হলো সকল ‘আমলের প্রাক-প্রতিষ্ঠান কারণ কোন ‘আমালই ‘ইলম নামক ফাউন্ডেশন ছাড়া দাঁড়াতে পারে না। অবশ্য আমলহীন ইলমও মূল্যহীন। 

সম্ভবত এখানে সাধারণ ‘ইলমের কথা বলা হয়েছে, অন্যথায় আল্লাহর জাত ও সিফাত সম্পর্কে জানা হলো ঈমানের মৌলতত্ত্বের ‘ইলম যা দীনের মূলভিত্তি। অতএব তা জানা সকলের জন্য ফরযে আইন।

(মিক্বাতুল মাফাতীহ, তুহফাতুল আহওয়াযী ৬ষ্ঠ খণ্ড, হা, ২৪১৬, সহীহ আল জামি হা. ৭২৯৯) 


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৬: মন-গলানো উপদেশমালা (كتاب الرقَاق)