৩৯৪৪

পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - যুদ্ধাভিযানে হত্যার বর্ণনা

৩৯৪৪-[৮] ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বানী নাযীর সম্প্রদায়ের খেজুর বাগান কেটে ফেলতে ও জ্বালিয়ে ফেলার নির্দেশ দেন। এতদসম্পর্কে (প্রখ্যাত ইসলামী কবি) হাসসান ইবনুস্ সাবিত কবিতা আবৃত্তি করেন যার দুই চরণ-

’’বানী লুয়াই সম্প্রদায়ের সম্মানিত নেতৃবর্গের পক্ষে বুওয়াইরাহ্-এর সর্বত্র প্রজ্জ্বলিত আগুন বরই সুখপ্রদ হয়েছে।’’ আর উক্ত ঘটনার প্রেক্ষাপটে কুরআনের এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়, ’’যে সমস্ত খেজুর গাছসমূহ তোমরা কেটে ফেলেছ বা যেগুলো তাদের কা--র উপর স্থির রেখে দিয়েছ, তা তো আল্লাহর সম্মতিক্রমেই করেছ’’- (সূরা আল হাশ্র ৫৯ : ৫)। (বুখারী, মুসলিম)[1]

بَابُ الْقِتَالِ فِى الْجِهَادِ

وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَطَعَ نَخْلَ بني النَّضيرِ وحرَّقَ وَلها يقولُ حسَّانٌ: وَهَانَ عَلَى سَرَاةِ بَنِي لُؤَيٍّ حَرِيقٌ بِالْبُوَيْرَةِ مُستَطيرُ وَفِي ذَلِكَ نَزَلَتْ (مَا قَطَعْتُمْ مِنْ لِينَةٍ أَوْ تَرَكْتُمُوهَا قَائِمَةً عَلَى أُصُولِهَا فَبِإِذْنِ اللَّهِ)

ব্যাখ্যা: مَا قَطَعْتُمْ مِنْ لِينَةٍ أَوْ تَرَكْتُمُوْهَا قَائِمَةً عَلٰى اُصُوْلِهَا فَبِإِذْنِ اللهِ এ ব্যাপারে বর্ণনা করা হয়েছে, নিশ্চয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তাদের খেজুর বাগান কাটতে নির্দেশ করলেন তখন তারা বললঃ হে মুহাম্মাদ! তুমি জমিনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে নিষেধ করতে এখন খেজুর বৃক্ষ কাটা ও তা জালিয়ে দেয়ার কারণ কি? তখন অত্র আয়াত অবতীর্ণ হয়, কাফিরদের ক্রোধ বৃদ্ধি করার উদ্দেশে। তাদের ঘর-বাড়ী ধ্বংস করা, তাদের বৃক্ষসমূহ কর্তন করা বৈধ হওয়ার ব্যাপারে দলীল গ্রহণ করা হয়েছে এ ঘটনা থেকেই। নববী বলেনঃ কুরআনে উল্লেখিত لِينَةٍ দ্বারা ‘আজ্ওয়া ছাড়া সকল প্রকার খেজুর বৃক্ষ উদ্দেশ্য।

অত্র হাদীসে কাফিরদের বৃক্ষ কাটা ও জ্বালিয়ে দেয়ার বৈধতা প্রমাণ করে। এটি জুমহূরের মত। একমতে বলা হয়েছে, বৈধ হবে না। ইবনুল হুমাম বলেনঃ এটা বৈধ হবে, কেননা উদ্দেশ্য হলো আল্লাহর শত্রুদের ধ্বংস করা এবং তাদের আগ্রহ ভেঙ্গে দেয়া, আর এ পন্থার মাধ্যমে তা অর্জন হয়। সুতরাং তারা তাদের সম্ভাব্যতা অনুযায়ী জ্বালিয়ে দিবে, বৃক্ষ কেটে দিবে, শস্য নষ্ট করবে। তবে এটা ঐ সময় করা হবে যখন এ পন্থা ছাড়া অন্য পন্থায় তাদের পাকড়াওয়ের ব্যাপারে প্রবল ধারণা না জাগবে। আর বাহ্যিক দিক যদি এমন হয় যে, তারা পরাজিত হবে এবং মুসলিমদের বিজয় সুনিশ্চিত তখন এ ধরনের কাজ করা মাকরূহ, কেননা তা অপ্রয়োজনীয় স্থানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির নামান্তর, আর প্রয়োজন ছাড়া তা বৈধ করা হয়নি। (মিরকাতুল মাফাতীহ)

আওযা‘ঈ এবং আবূ সাওর একে মাকরূহ মনে করেছেন, আর তারা উভয়ে প্রমাণ উপস্থাপন করেছেন যে, আবূ বাকর এমন কাজ না করতে তার সৈন্যবাহিনীকে উপদেশ দিয়েছেন। এর উত্তরে বলা হয়েছে : আবূ বাকর তা অবশিষ্ট রাখাকে কল্যাণজনক মনে করেছিলেন বিধায় তা অবশিষ্ট রাখতে উপদেশ দিয়েছিলেন, কেননা তিনি বুঝতে পেরেছিলেন নিশ্চয় তা মুসলিমদের হবে ফলে তিনি তা তাদের জন্য অবশিষ্ট রাখার ইচ্ছা করেছেন। (‘আওনুল মা‘বূদ ৫ম খন্ড, হাঃ ২৬১২)

ইমাম আহমাদ বলেনঃ যুদ্ধ যদি এমন স্থানে হয় যা থেকে যোদ্ধারা মুক্তি পেতে পারে না অর্থাৎ- সৈন্যবাহিনী কখনো আগুন জ্বালানো এবং বিনাশ সাধনের মুখাপেক্ষক্ষ হয়, এমতাবস্থায় তারা তা থেকে বাঁচতে পারে না তখন এটা বৈধ।। পক্ষান্তরে প্রয়োজনহীনভাবে আগুন জ্বালানো যাবে না, এভাবে যখন তা তাদের জন্য খুবই ক্ষতিকর হবে তখন তা ধ্বংস করা যাবে না। (তুহফাতুল আহওয়াযী ৪র্থ খন্ড, হাঃ ১৫৫২)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ