পরিচ্ছেদঃ ক্ষমাপ্রার্থনামূলক নির্দেশাবলী ক্ষমা প্রার্থনা করার আদেশ ও তার মাহাত্ম্য

আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَاسْتَغْفِرْ لِذَنْبِكَ وَلِلْمُؤْمِنِـيْـنَ وَالْمُؤْمِنَاتِ

অর্থাৎ, তুমি ক্ষমা-প্রার্থনা কর তোমার এবং মু’মিন নর-নারীদের ত্রুটির জন্য। (সূরা মুহাম্মাদ ১৯)

তিনি আরো বলেছেন,

وَاسْتَغْفِرُ اللهَ إِنَّ اللهَ كَانَ غَفُوْرًا رَّحِيْمًا

অর্থাৎ, আল্লাহর কাছে তুমি ক্ষমা প্রার্থনা কর, নিশ্চয় আল্লাহ চরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (সূরা নিসা ১০৬)

তিনি অন্য জায়গায় বলেছেন,

فَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ وَاسْتَغْفِرْهُ إِنَّهُ كَانَ تَوَّابًا

অর্থাৎ, সুতরাং তুমি তোমার প্রতিপালকের সপ্রশংস পবিত্রতা ঘোষণা কর এবং তাঁর সমীপে ক্ষমা প্রার্থনা কর। নিশ্চয় তিনি অধিক তাওবা গ্রহণকারী। (সূরা নাসর ৩)

তিনি অন্যত্র বলেছেন,

لِلَّذِيْنَ اتَّقَوْا عِنْدَ رَبِّهِمْ جَنَّات إلٰـى قَولِهِ عز وجل وَالْمُسْتَغْفِرِيْنَ بِالْأَسْحَارِ

অর্থাৎ, যারা সাবধান (পরহেযগার) হয়ে চলে তাদের জন্য রয়েছে উদ্যানসমূহ যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত, সেখানে তারা চিরস্থায়ী হবে, তাদের জন্য পবিত্র সঙ্গিনী এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি রয়েছে। বস্তুতঃ আল্লাহ তার দাসদের সম্বন্ধে সম্যক অবহিত। যারা বলে, ’হে আমাদের প্রতিপালক! নিশ্চয় আমরা বিশ্বাস করেছি; অতএব আমাদের অপরাধসমূহ ক্ষমা কর এবং দোযখের শাস্তি থেকে আমাদেরকে রক্ষা কর।’ যারা ধৈর্যশীল, সত্যবাদী, অনুগত, দানশীল এবং রাত্রির শেষাংশে ক্ষমাপ্রার্থী। (সূরা আলে ইমরান ১৫-১৭)

তিনি আরো বলেছেন,

وَمَنْ يَّعْمَلْ سُوءًا أَوْ يَظْلِمْ نَفْسَهُ ثُمَّ يَسْتَغْفِرِ اللهَ يَجِدِ اللهَ غَفُورًا رَحِيْمًا

অর্থাৎ, আর যে কেউ মন্দ কার্য করে অথবা নিজের প্রতি যুলুম করে, কিন্তু পরে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায়, সে আল্লাহকে অতীব ক্ষমাশীল, পরম দয়ালুরূপে পাবে। (সূরা নিসা ১১০)

আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَمَا كَانَ اللهُ لِيُعَذِّبَهُمْ وَأَنْتَ فِيْهِمْ وَمَا كَانَ اللهُ مُعَذِّبَهُمْ وَهُمْ يَسْتَغْفِرُوْنَ

অর্থাৎ, আল্লাহ এরূপ নন যে, তুমি তাদের মধ্যে থাকা অবস্থায় তিনি তাদেরকে শাস্তি দেবেন এবং তিনি এরূপ নন যে, তাদের ক্ষমা প্রার্থনা করা অবস্থায় তিনি তাদেরকে শাস্তি দেবেন। (সূরা আনফাল ৩৩)

তিনি আরো বলেছেন,

وَالَّذِيْنَ إِذَا فَعَلُوا فَاحِشَةً أَوْ ظَلَمُوا أَنْفُسَهُمْ ذَكَرُوا اللهَ فَاسْتَغْفَرُوا لِذُنُوْبِهِمْ وَمَنْ يَّغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا اللهُ وَلَمْ يُصِرُّوا عَلَى مَا فَعَلُوا وَهُمْ يَعْلَمُونَ

অর্থাৎ, যারা কোন অশ্লীল কাজ ক’রে ফেললে অথবা নিজেদের প্রতি যুলুম করলে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং নিজেদের পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। আর আল্লাহ ছাড়া আর কে পাপ ক্ষমা করতে পারে? এবং তারা যা (অপরাধ) করে ফেলে তাতে জেনে-শুনে অটল থাকে না। (সূরা আলে ইমরান ১৩৫)

এ প্রসঙ্গে আরো বিদিত বহু আয়াতসমূহ রয়েছে


(৩৬৬৮) আগার মুযানী (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমার অন্তর আল্লাহর স্মরণ থেকে নিমেষভর বাধাপ্রাপ্ত হয়। সেহেতু আমি দিনে একশত বার আল্লাহর নিকট ক্ষমা ভিক্ষা চাই।

وَعَنِ الْأَغَرِّ المُزَنِيِّ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ قَالَ إِنَّهُ لَيُغَانُ عَلَى قَلْبِي وَإِنِّي لأَسْتَغفِرُ اللهَ فِي اليَوْمِ مِئَةَ مَرَّةٍ

وعن الاغر المزني ان رسول الله ﷺ قال انه ليغان على قلبي واني لاستغفر الله في اليوم مىة مرة

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
২৯/ দু‘আ ও যিকর

পরিচ্ছেদঃ ক্ষমাপ্রার্থনামূলক নির্দেশাবলী ক্ষমা প্রার্থনা করার আদেশ ও তার মাহাত্ম্য

(৩৬৬৯) আবূ হুরাইরা (রাঃ) বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, আল্লাহর শপথ! আমি প্রত্যহ আল্লাহর কাছে সত্তর বারেরও বেশি ইস্তিগফার (ক্ষমাপ্রার্থনা) ও তওবা করে থাকি।

وَعَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ : سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ يَقُولُ وَاللهِ إِنِّي لأَسْتَغْفِرُ اللهَ وَأتُوبُ إِلَيْهِ فِي اليَومِ أَكْثَرَ مِنْ سَبْعِينَ مَرَّةً رواه البخاري

وعن ابي هريرة قال سمعت رسول الله ﷺ يقول والله اني لاستغفر الله واتوب اليه في اليوم اكثر من سبعين مرة رواه البخاري

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
২৯/ দু‘আ ও যিকর

পরিচ্ছেদঃ ক্ষমাপ্রার্থনামূলক নির্দেশাবলী ক্ষমা প্রার্থনা করার আদেশ ও তার মাহাত্ম্য

(৩৬৭০) উক্ত রাবী (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সেই মহান সত্তার কসম, যার হাতে আমার জীবন আছে! যদি তোমরা পাপ না কর, তাহলে আল্লাহ তাআলা তোমাদেরকে নিশ্চিহ্ন ক’রে দিয়ে (তোমাদের পরিবর্তে) এমন এক জাতি আনয়ন করবেন, যারা পাপ করবে এবং আল্লাহ তাআলার কাছে ক্ষমা প্রার্থনাও করবে। আর আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা করে দেবেন। (মুসলিম ৭১৪১)

وَعَنهُ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَوْ لَمْ تُذْنِبُوا لَذَهَبَ اللهُ تَعَالٰـى بِكُمْ وَلَجَاءَ بِقَومٍ يُذْنِبُونَ فَيَسْتَغْفِرُونَ اللهَ تَعَالٰـى فَيَغْفِرُ لَهُمْ رواه مسلم

وعنه قال قال رسول الله ﷺ والذي نفسي بيده لو لم تذنبوا لذهب الله تعالى بكم ولجاء بقوم يذنبون فيستغفرون الله تعالى فيغفر لهم رواه مسلم

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
২৯/ দু‘আ ও যিকর

পরিচ্ছেদঃ ক্ষমাপ্রার্থনামূলক নির্দেশাবলী ক্ষমা প্রার্থনা করার আদেশ ও তার মাহাত্ম্য

(৩৬৭১) ইবনে উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একই মজলিসে বসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর (এই ইস্তিগফারটি) পাঠ করা অবস্থায় একশো বার পর্যন্ত গুণতাম,

’রাব্বিগফির লী অতুব আলাইয়্যা, ইন্নাকা আন্‌তাত্ তাউওয়াবুর রাহীম।’

অর্থাৎ, হে আমার প্রতিপালক! আমাকে ক্ষমা কর, আমার তওবা কবুল কর, নিশ্চয় তুমি অতিশয় তওবাহ কবুলকারী দয়াবান।

وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ : كُنَّا نَعُدُّ لِرَسُولِ اللهِ ﷺ فِي المَجْلِسِ الْوَاحِدِ مِئَةَ مَرَّةٍ رَبِّ اغْفِرْ لِي وَتُبْ عَلَيَّ إِنَّكَ أَنْتَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ رواه أبو داود والترمذي وقال حديث حسن صحيح غريب

وعن ابن عمر رضي الله عنهما قال كنا نعد لرسول الله ﷺ في المجلس الواحد مىة مرة رب اغفر لي وتب علي انك انت التواب الرحيم رواه ابو داود والترمذي وقال حديث حسن صحيح غريب

হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
২৯/ দু‘আ ও যিকর

পরিচ্ছেদঃ ক্ষমাপ্রার্থনামূলক নির্দেশাবলী ক্ষমা প্রার্থনা করার আদেশ ও তার মাহাত্ম্য

(৩৬৭২) ইবনে মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি এ দু’আ পড়বে, ’আস্তাগফিরুল্লা-হাল্লাযী লা ইলা-হা ইল্লা হুওয়াল হাইয়্যুল ক্বাইয়্যূমু অ আতূবু ইলাইহ্।’

অর্থাৎ, আমি সেই আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি যিনি ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই। যিনি চিরঞ্জীব, অবিনশ্বর। এবং আমি তাঁর কাছে তওবা করছি।

সে ব্যক্তির পাপরাশি মার্জনা করা হবে; যদিও সে রণক্ষেত্র ছেড়ে পালিয়ে (যাওয়ার পাপ করে) থাকে।

وَعَنِ ابْنِ مَسعُودٍ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ مَنْ قَالَ : أَسْتَغْفِرُ اللهَ الَّـذِيْ لَا إِلٰـهَ إِلاَّ هُوَ الحَيُّ القَيُومُ وَأتُوبُ إِلَـيْهِ غُفِرَتْ ذُنُوبُهُ وَإِنْ كانَ قَدْ فَرَّ مِنَ الزَّحْفِ رواه أبو داود والترمذي والحاكم وقال حديث صحيح على شرط البخاري ومسلم

وعن ابن مسعود قال قال رسول الله ﷺ من قال استغفر الله الذي لا اله الا هو الحي القيوم واتوب اليه غفرت ذنوبه وان كان قد فر من الزحف رواه ابو داود والترمذي والحاكم وقال حديث صحيح على شرط البخاري ومسلم

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
২৯/ দু‘আ ও যিকর

পরিচ্ছেদঃ ক্ষমাপ্রার্থনামূলক নির্দেশাবলী ক্ষমা প্রার্থনা করার আদেশ ও তার মাহাত্ম্য

(৩৬৭৩) শাদ্দাদ ইবনে আউস (রাঃ)কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ’’সায়্যিদুল ইস্তিগফার (শ্রেষ্ঠতম ক্ষমা প্রার্থনার দু’আ) হল বান্দার এই বলা যে,

’আল্লা-হুম্মা আন্তা রাব্বী লা ইলা-হা ইল্লা আন্তা খালাক্বতানী, অ আনা আব্দুকা অ আনা আলা আহদিকা অ অ’দিকা মাসতাত্বা’তু, আঊযুবিকা মিন শাররি মা স্বনা’তু, আবূউ লাকা বিনি’মাতিকা আলাইয়্যা অ আবূউ বিযামবী ফাগফিরলী ফাইন্নাহু লা ইয়্যাগফিরুয যুনূবা ইল্লা আন্তা।’

অর্থ- হে আল্লাহ! তুমিই আমার প্রতিপালক। তুমি ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই। তুমিই আমাকে সৃষ্টি করেছ, আমি তোমার দাস। আমি তোমার প্রতিশ্রুতি ও অঙ্গীকারের উপর যথাসাধ্য প্রতিষ্ঠিত আছি। আমি যা করেছি তার মন্দ থেকে তোমার নিকট আশ্রয় চাচ্ছি। আমার উপর তোমার যে সম্পদ রয়েছে তা আমি স্বীকার করছি এবং আমার অপরাধও আমি স্বীকার করছি। সুতরাং তুমি আমাকে মার্জনা করে দাও, যেহেতু তুমি ছাড়া আর কেউ পাপ মার্জনা করতে পারে না।

যে ব্যক্তি দিনে (সকাল) বেলায় দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে এ দু’আটি পড়বে অতঃপর সে সেই দিনে সন্ধ্যা হওয়ার আগেই মারা যাবে, সে জান্নাতীদের অন্তর্ভুক্ত হবে। আর যে ব্যক্তি রাতে (সন্ধ্যায়) এ দু’আটি দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে পড়বে অতঃপর সে সেই রাতে ভোর হওয়ার পূর্বেই মারা যাবে, তাহলে সে জান্নাতীদের অন্তর্ভুক্ত হবে।

وَعَنْ شَدَّادِ بْنِ أَوسٍ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ سَيِّدُ الاِسْتِغْفَارِ أَنْ يَقُولَ الْعَبْدُ : اَللّٰهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لَاۤ إِلٰـهَ إلاَّ أَنْتَ خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ وَأنَا عَلٰى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ وَأبُوءُ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي فَإِنَّهُ لاَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلاَّ أَنْتَ مَنْ قَإِلٰهَا مِنَ النَّهَارِ مُوقِناً بِهَا فَمَاتَ مِنْ يَوْمِهِ قَبْلَ أَنْ يُمْسِي فَهُوَ مِنْ أَهْلِ الجَنَّةِ وَمَنْ قَإِلٰهَا مِنَ اللَّيْلِ وَهُوَ مُوقِنٌ بِهَا فَمَاتَ قَبْلَ أَنْ يُصْبِحَ فَهُوَ مِنْ أَهْلِ الجَنَّةِ رواه البخاري

وعن شداد بن اوس عن النبي ﷺ قال سيد الاستغفار ان يقول العبد اللهم انت ربي لا اله الا انت خلقتني وانا عبدك وانا على عهدك ووعدك ما استطعت اعوذ بك من شر ما صنعت ابوء لك بنعمتك علي وابوء بذنبي فاغفر لي فانه لا يغفر الذنوب الا انت من قالها من النهار موقنا بها فمات من يومه قبل ان يمسي فهو من اهل الجنة ومن قالها من الليل وهو موقن بها فمات قبل ان يصبح فهو من اهل الجنة رواه البخاري

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
২৯/ দু‘আ ও যিকর

পরিচ্ছেদঃ ক্ষমাপ্রার্থনামূলক নির্দেশাবলী ক্ষমা প্রার্থনা করার আদেশ ও তার মাহাত্ম্য

(৩৬৭৪) সাওবান (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাযান্তে সালাম ফিরে তিনবার ইস্তিগফার (আস্তাগফিরুল্লাহ) বলে এই দু’আ পড়তেন, ’আল্লা-হুম্মা আন্তাস সালা-মু অমিনকাস সালা-ম, তাবা-রাকতা ইয়া যাল জালা-লি অল ইকরা-ম।’

অর্থাৎ, হে আল্লাহ! তুমি শান্তি (সকল ত্রুটি থেকে পবিত্র) এবং তোমার নিকট থেকেই শান্তি। তুমি বরকতময় হে মহিমময়, মহানুভব!

এ হাদীসের অন্যতম বর্ণনাকারী ইমাম আওযায়ীকে প্রশ্ন করা হল, ইস্তিগফার কিভাবে হবে? তিনি বললেন, ’বলবে, আস্তাগফিরুল্লাহ, আস্তাগফিরুল্লাহ।’ (আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাচ্ছি।)

وَعَنْ ثَوبَانَ قَالَ : كَانَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ إِذَا انْصَرَفَ مِنْ صَلاَتِهِ، اسْتَغْفَرَ اللهَ ثَلاَثاً وَقَالَ اَللّٰهُمَّ أَنْتَ السَّلاَمُ وَمِنْكَ السَّلاَمُ تَبَارَكْتَ يَاذَا الجَلاَلِ وَالإِكْرَامِ قِيلَ لِلأَوْزَاعِيِّ ـ وَهُوَ أَحَدُ رُوَاتِهِ - : كَيفَ الاِسْتِغْفَارُ ؟ قَالَ : يَقُولُ : أَسْتَغْفِرُ اللهَ أَسْتَغْفِرُ اللهَ رواه مسلم

وعن ثوبان قال كان رسول الله ﷺ اذا انصرف من صلاته استغفر الله ثلاثا وقال اللهم انت السلام ومنك السلام تباركت ياذا الجلال والاكرام قيل للاوزاعي وهو احد رواته كيف الاستغفار قال يقول استغفر الله استغفر الله رواه مسلم

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ সাওবান (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
২৯/ দু‘আ ও যিকর

পরিচ্ছেদঃ ক্ষমাপ্রার্থনামূলক নির্দেশাবলী ক্ষমা প্রার্থনা করার আদেশ ও তার মাহাত্ম্য

(৩৬৭৫) আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মৃত্যুর আগে এই দু’আটি অধিকমাত্রায় পড়তেন, ’সুবহানাল্লাহি অবিহামদিহী, আস্তাগফিরুল্লাহা অআতূবু ইলাইহ্।’

অর্থাৎ, আল্লাহর প্রশংসাসহ তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করছি। আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি ও তাঁর নিকট তওবাহ করছি।

وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ : كَانَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ يُكْثِرُ أَنْ يَقُولَ قَبْلَ مَوْتِهِ سُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدِهِ أَسْتَغفِرُ اللهَ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ متفق عليه

وعن عاىشة رضي الله عنها قالت كان رسول الله ﷺ يكثر ان يقول قبل موته سبحان الله وبحمده استغفر الله واتوب اليه متفق عليه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
২৯/ দু‘আ ও যিকর

পরিচ্ছেদঃ ক্ষমাপ্রার্থনামূলক নির্দেশাবলী ক্ষমা প্রার্থনা করার আদেশ ও তার মাহাত্ম্য

(৩৬৭৬) আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, আল্লাহ তাআলা বলেন, হে আদম সন্তান! যখন তুমি আমাকে ডাকবে ও আমার ক্ষমার আশা রাখবে, আমি তোমাকে ক্ষমা করব, তোমার অবস্থা যাই হোক না কেন; আমি কোন পরোয়া করি না। হে আদম সন্তান! তোমার গোনাহ যদি আকাশ পর্যন্ত পৌঁছে যায়, অতঃপর তুমি আমার নিকট ক্ষমা চাও, তবুও আমি তোমাকে ক্ষমা করব; আমি কোন পরোয়া করি না। হে আদম সন্তান! তুমি যদি পৃথিবী পরিমাণ পাপ নিয়ে আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ কর; কিন্তু আমার সঙ্গে কাউকে শরীক না ক’রে থাক, তাহলে পৃথিবী পরিমাণ ক্ষমা নিয়ে আমি তোমার নিকট উপস্থিত হব।

وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ : سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ يَقُولُ قَالَ اللهُ تَعَالٰـى: يَا ابْنَ آدَمَ، إِنَّكَ مَا دَعَوْتَنِي وَرَجَوْتَنِي غَفَرْتُ لَكَ عَلَى مَا كَانَ مِنْكَ وَلاَ أُبَالِي يَا ابْنَ آدَمَ لَوْ بَلَغَتْ ذُنُوبُكَ عَنَانَ السَّمَاءِ، ثُمَّ اسْتَغْفَرْتَنِي غَفَرْتُ لَكَ وَلاَ أُبَالِي يَا ابْنَ آدَمَ إِنَّكَ لَوْ أَتَيْتَنِي بِقُرَابِ الأَرْضِ خَطَايَا، ثُمَّ لَقِيتَنِي لاَ تُشْرِكُ بِي شَيْئاً لأَتَيْتُكَ بِقُرابِهَا مَغْفِرَةً رواه الترمذي وقال حديث حسن

وعن انس قال سمعت رسول الله ﷺ يقول قال الله تعالى يا ابن ادم انك ما دعوتني ورجوتني غفرت لك على ما كان منك ولا ابالي يا ابن ادم لو بلغت ذنوبك عنان السماء ثم استغفرتني غفرت لك ولا ابالي يا ابن ادم انك لو اتيتني بقراب الارض خطايا ثم لقيتني لا تشرك بي شيىا لاتيتك بقرابها مغفرة رواه الترمذي وقال حديث حسن

হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
২৯/ দু‘আ ও যিকর

পরিচ্ছেদঃ ক্ষমাপ্রার্থনামূলক নির্দেশাবলী ক্ষমা প্রার্থনা করার আদেশ ও তার মাহাত্ম্য

(৩৬৭৭) আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ’’নিশ্চয় শয়তান বলেছে, ’আপনার ইয্যতের কসম হে রব! আমি তোমার বান্দাদিগকে অবিরামভাবে ভ্রষ্ট করতে থাকব, যতক্ষণ পর্যন্ত তাদের দেহের মধ্যে তাদের প্রাণ অবশিষ্ট থাকবে।’ রব বলেছেন, ’আর আমার ইযযত ও প্রতাপের কসম! আমি অবিরামভাবে তাদেরকে ক্ষমা করতে থাকব, যতক্ষণ তারা আমার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করবে।’

عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ قَالَ: قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ إِنَّ الشَّيْطَانَ قَالَ وَعِزَّتِكَ يَا رَبِّ لَا أَبْرَحُ أُغْوِي عِبَادَكَ مَا دَامَتْ أَرْوَاحُهُمْ فِي أَجْسَادِهِمْ، قَالَ الرَّبُّ وَعِزَّتِي وَجَلَالِي لَا أَزَالُ أَغْفِرُ لَهُمْ مَا اسْتَغْفَرُونِي

عن ابي سعيد الخدري قال قال رسول الله ﷺ ان الشيطان قال وعزتك يا رب لا ابرح اغوي عبادك ما دامت ارواحهم في اجسادهم قال الرب وعزتي وجلالي لا ازال اغفر لهم ما استغفروني

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
২৯/ দু‘আ ও যিকর

পরিচ্ছেদঃ ক্ষমাপ্রার্থনামূলক নির্দেশাবলী ক্ষমা প্রার্থনা করার আদেশ ও তার মাহাত্ম্য

(৩৬৭৮) ইবনে উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত, একদা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (মহিলাদেরকে সম্বোধন ক’রে) বললেন, হে মহিলা সকল! তোমরা সাদকাহ-খয়রাত করতে থাক ও অধিকমাত্রায় ইস্তিগফার কর। কারণ আমি তোমাদেরকে জাহান্নামের অধিকাংশ অধিবাসীরূপে দেখলাম।’’ একজন মহিলা নিবেদন করল, ’আমাদের অধিকাংশ জাহান্নামী হওয়ার কারণ কী? হে আল্লাহর রসূল!’ তিনি বললেন, তোমরা অভিশাপ বেশি কর এবং নিজ স্বামীর অকৃতজ্ঞতা কর। বুদ্ধি ও ধর্মে অপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও বিচক্ষণ ব্যক্তির উপর তোমাদের চাইতে আর কাউকে বেশি প্রভাব খাটাতে দেখিনি। মহিলাটি আবার নিবেদন করল, ’বুদ্ধি ও ধর্মের ক্ষেত্রে অপূর্ণতা কী?’ তিনি বললেন, দু’জন নারীর সাক্ষ্য একজন পুরুষের সাক্ষ্য সমতুল্য। আর (প্রসবোত্তর খুন ও মাসিক আসার) দিনগুলিতে মহিলা নামায পড়া বন্ধ রাখে।

وَعَنِ ابنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا : أَنَّ النَّبِيَّ ﷺ قَالَ يَا مَعْشَرَ النِّسَاءِ تَصَدَّقْنَ وَأَكْثِرْنَ مِنَ الاِسْتِغْفَارِ؛ فَإِنِّي رَأَيْتُكُنَّ أَكْثَرَ أَهْلِ النَّارِ قَالَتِ امْرَأَةٌ مِنْهُنَّ : مَا لَنَا أَكْثَرَ أَهْلِ النَّارِ ؟ قَالَ تُكْثِرْنَ اللَّعْنَ وَتَكْفُرْنَ العَشِيرَ، مَا رَأَيْتُ مِنْ نَاقِصَاتِ عَقْلٍ وَدِينٍ أَغْلَبَ لِذِيْ لُبٍّ مِنْكُنَّ قَالَتْ: مَا نُقْصَانُ العَقْلِ وَالدِّينِ ؟ قَالَ شَهَادَةُ امْرَأتَيْنِ بِشَهَادَةِ رَجُلٍ، وَتَمْكُثُ الأَيَّامَ لاَ تُصَلِّي رواه مسلم

وعن ابن عمر رضي الله عنهما ان النبي ﷺ قال يا معشر النساء تصدقن واكثرن من الاستغفار فاني رايتكن اكثر اهل النار قالت امراة منهن ما لنا اكثر اهل النار قال تكثرن اللعن وتكفرن العشير ما رايت من ناقصات عقل ودين اغلب لذي لب منكن قالت ما نقصان العقل والدين قال شهادة امراتين بشهادة رجل وتمكث الايام لا تصلي رواه مسلم

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
২৯/ দু‘আ ও যিকর

পরিচ্ছেদঃ ক্ষমাপ্রার্থনামূলক নির্দেশাবলী ক্ষমা প্রার্থনা করার আদেশ ও তার মাহাত্ম্য

(৩৬৭৯) আস্বেম আহওয়াল (রহঃ) হতে বর্ণিত, আব্দুল্লাহ ইবনে সার্জিস (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন, আমি একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্য দু’আ ক’রে বললাম, ’হে আল্লাহর রসূল! আল্লাহ আপনাকে ক্ষমা করুন।’ তিনি বললেন, আর তোমাকেও (আল্লাহ ক্ষমা করুন)। আস্বেম বলেন, আমি আব্দুল্লাহকে প্রশ্ন করলাম, ’আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি আপনার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন?’ তিনি উত্তর দিলেন, ’হ্যাঁ, আর তোমার জন্যও তো।’ অতঃপর তিনি এই আয়াত পাঠ করলেন, যার অর্থঃ (হে নবী!) তুমি নিজের জন্য ও মু’মিন নর-নারীর জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর।

وَعَنْ عَاصِمٍ الأَحْوَلِ عَنْ عَبدِ اللهِ بنِ سَرْجِسَ قَالَ : قُلْتُ لِرَسُولِ اللهِ ﷺ يَا رَسُوْلَ اللهِ غَفَرَ اللهُ لَكَ قَالَ وَلَكَ قَالَ عَاصِمٌ : فَقُلْتُ لَهُ : أَسْتَغْفَرَ لَكَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ ؟ قَالَ : نَعَمْ وَلَكَ ثُمَّ تَلاَ هَذِهِ الآيَةَ: وَاسْتَغْفِرْ لِذَنْبِكَ وَلِلمُؤْمِنِينَ وَالمُؤْمِنَاتِ رواه مسلم

وعن عاصم الاحول عن عبد الله بن سرجس قال قلت لرسول الله ﷺ يا رسول الله غفر الله لك قال ولك قال عاصم فقلت له استغفر لك رسول الله ﷺ قال نعم ولك ثم تلا هذه الاية واستغفر لذنبك وللمومنين والمومنات رواه مسلم

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আসিম আল আহওয়াল (রহঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
২৯/ দু‘আ ও যিকর
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ১২ পর্যন্ত, সর্বমোট ১২ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে