পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সমষ্টিগতভাবে মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য

৬২৬৫-[৭০] কায়স ইবনু আবূ হাযিম (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী প্রত্যেকের ভাতা পাঁচ হাজার দিরহাম (বায়তুল মাল হতে) নির্ধারণ ছিল। উমার (রাঃ) বলেন, আমি অবশ্যই তাঁদেরকে পরবর্তী সকলের ওপর মর্যাদা দেব। (বুখারী)

اَلْفصْلُ الثَّالِثُ (بَاب جَامع المناقب)

وَعَن قيس بن حَازِم قَالَ: كَانَ عَطَاءُ الْبَدْرِيِّينَ خَمْسَةُ آلَافٍ. وَقَالَ عُمَرُ: لَأُفَضِّلَنَّهُمْ على مَنْ بَعدَهم. رَوَاهُ البُخَارِيّ

رواہ البخاری (4022) * تسمیۃ من سمی من اھل البدر ، فی صحیح البخاری (کتاب المغازی باب : 13 بعد ح 4027) ۔ بخاری ، کتاب المغازی ، باب تسمیۃ من سمی من اھل بدر ۔
(صَحِيح)

وعن قيس بن حازم قال كان عطاء البدريين خمسة الاف وقال عمر لافضلنهم على من بعدهم رواه البخاريرواہ البخاری 4022 تسمیۃ من سمی من اھل البدر فی صحیح البخاری کتاب المغازی باب 13 بعد ح 4027 ۔ بخاری کتاب المغازی باب تسمیۃ من سمی من اھل بدر ۔صحيح

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সমষ্টিগতভাবে মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য

৬২৫৫-[৬০] ’আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: প্রত্যেক নবীর জন্য সাতজন বিশেষ মর্যাদাবান রক্ষণাবেক্ষণকারী ছিলেন। আর আমাকে দেয়া হয়েছে চৌদ্দজন। আমরা ’আলী (রাঃ)-কে প্রশ্ন করলাম, তারা কারা? তিনি বললেন, আমি স্বয়ং আমার পুত্রদ্বয় (হাসান ও হুসায়ন), জা’ফার, হামযাহ্, আবূ বকর, ’উমার, মুস’আব ইবনু উমায়র, বিলাল, সালমান, ’আম্মার, আবদুল্লাহ ইবনু মাস্’ঊদ, আবূ যার ও মিকদাদ । (তিরমিযী)

اَلْفصْلُ الثَّالِثُ (بَاب جَامع المناقب)

عَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ لِكُلِّ نَبِيٍّ سَبْعَةَ نُجَبَاءَ رُقَبَاءَ وَأُعْطِيْتُ أَنَا أَرْبَعَةَ عشرَة قُلْنَا: مَنْ هُمْ؟ قَالَ: أَنَا وَابْنَايَ وَجَعْفَرٌ وَحَمْزَةُ وَأَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ وَمُصْعَبُ بْنُ عُمَيْرٍ وَبِلَالٌ وَسَلْمَانُ وَعَمَّارٌ وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْعُودٍ وَأَبُو ذَر والمقداد. رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

اسنادہ ضعیف ، رواہ الترمذی (3785) [و صححہ الحاکم (3 / 199) فتعقبہ الذھبی بقولہ :’’ بل کثیر واہ ‘‘] * فیہ کثیر النواء : ضعیف ۔

عن علي رضي الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم ان لكل نبي سبعة نجباء رقباء واعطيت انا اربعة عشرة قلنا من هم قال انا وابناي وجعفر وحمزة وابو بكر وعمر ومصعب بن عمير وبلال وسلمان وعمار وعبد الله بن مسعود وابو ذر والمقداد رواه الترمذياسنادہ ضعیف رواہ الترمذی 3785 و صححہ الحاکم 3 199 فتعقبہ الذھبی بقولہ بل کثیر واہ فیہ کثیر النواء ضعیف ۔

ব্যাখ্যা: (حَمْزَةُ) হামযাহ্ ইবনু 'আবদুল মুত্ত্বালিব। তাঁর উপনাম আবূ ‘উমারাহ্ তথা রাসূলুল্লাহ (সা.) - এর চাচা এবং দুধ ভাই।
হাদীসে উল্লেখিত তাদের উভয়কে আবূ লাহাব-এর দাসী সুওয়াইবাহ্ দুধ পান করিয়েছেন। তিনি আসাদুল্লাহ নামে খ্যাত হয়েছেন। নুবুওয়্যাতের দ্বিতীয় বছরে আগের দিনে ইসলাম গ্রহণ করেন। আল্লাহ তাঁকে ইসলাম গ্রহণের মাধ্যমে মহা সম্মানিত করেছেন। তিনি বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন এবং উহুদ যুদ্ধে শাহাদাত বরণ করেন। তাঁকে নৃশংসভাবে হত্যা করে ওয়াহশী ইবনু হারব। তিনি রাসূল (সা.) থেকে চার বছরের বড় ছিলেন।
ইবনু ‘আবদুল বার (রহিমাহুল্লাহ) বলেন: এটা আমার মতে সঠিক নয়, কারণ তিনি রাসূল (সা.) -এর দুধ ভাই। আর সুওয়াইবাহ্ উভয়কে দু' সময়ে দুধ পান করিয়ে থাকতে পারেন। তবে কেউ বলেন, তিনি রাসূল (সা.) -এর চাইতে দুই বছরের বড়। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সমষ্টিগতভাবে মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য

৬২৫৬-[৬১] খালিদ ইবনু ওয়ালীদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার আমার ও ’আম্মার ইবনু ইয়াসির-এর মাঝে বাক-বিতণ্ডা হলো। এতে আমি তাকে শক্ত কথা বললাম। তখন ’আম্মার গিয়ে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগে করলেন। এমন সময় খালিদও নবী (সা.) -এর কাছে এসে আম্মারএর বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেন। বর্ণনাকারী বলেন, তখন খালিদ (রাঃ) তাঁকে শক্ত কথা বলতে লাগলেন এবং তাঁর কঠোরতা আরো বাড়তে লাগল। তখন নবী (সা.) চুপ করে ছিলেন। কোন কথা বলছিলেন না। তখন এ অবস্থায় দেখে ’আম্মার কেঁদে ফেললেন এবং বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি কি খালিদ-এর আচরণ দেখছেন না। এবার নবী (সা.) মস্তক উঠিয়ে বললেন, যে লোক ’আম্মার-এর সাথে শত্রুতা রাখবে, আল্লাহও তার সাথে শত্রুতা রাখবেন এবং যে ব্যক্তি ’আম্মার-এর সাথে বিদ্বেষভাব পোষণ করবে, আল্লাহও তার প্রতি অসন্তুষ্ট হবেন। খালিদ (রাঃ) বলেন, তখনই আমি সেখান হতে বের হয়ে পড়লাম এবং যে কোনভাবে ’আম্মার-কে সন্তুষ্ট করা অপেক্ষা কোন কিছুই আমার কাছে প্রিয়তর ছিল না। অতঃপর আমি এমনভাবে তার সাথে মিলিত হলাম যাতে তিনি আমার প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে যান। পরিশেষে তিনি আমার প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে গেলেন।

اَلْفصْلُ الثَّالِثُ (بَاب جَامع المناقب)

وَعَنْ خَالِدِ بْنِ الْوَلِيدِ قَالَ: كَانَ بَيْنِي وَبَيْنَ عَمَّارِ بْنِ يَاسِرٍ كَلَامٌ فَأَغْلَظْتُ لَهُ فِي الْقَوْلِ فَانْطَلَقَ عَمَّارٌ يَشْكُونِي إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَجَاءَ خَالِدٌ وَهُوَ يشكوه إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: فَجَعَلَ يُغْلِظُ لَهُ وَلَا يَزِيدُهُ إِلَّا غِلْظَةً وَالنَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سَاكِتٌ لَا يَتَكَلَّمُ فَبَكَى عَمَّارٌ وَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ أَلَا تَرَاهُ؟ فَرَفَعَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَأَسَهُ وَقَالَ: «مَنْ عَادَى عَمَّارًا عَادَاهُ اللَّهُ وَمَنْ أَبْغَضَ عَمَّارًا أَبْغَضَهُ اللَّهُ» . قَالَ خَالِدٌ: فَخَرَجْتُ فَمَا كَانَ شَيْءٌ أَحَبَّ إِلَيَّ من رضى عمار فَلَقِيته بِمَا رَضِي فَرضِي

اسنادہ حسن ، رواہ احمد (4 / 89 ح 16938) [و الحاکم (3 / 390 ۔ 391) و صححہ و للسند علۃ ذکرھا الذھبی و لکنھا غیر قادحۃ] ۔
(صَحِيح)

وعن خالد بن الوليد قال كان بيني وبين عمار بن ياسر كلام فاغلظت له في القول فانطلق عمار يشكوني الى رسول الله صلى الله عليه وسلم فجاء خالد وهو يشكوه الى النبي صلى الله عليه وسلم قال فجعل يغلظ له ولا يزيده الا غلظة والنبي صلى الله عليه وسلم ساكت لا يتكلم فبكى عمار وقال يا رسول الله الا تراه فرفع النبي صلى الله عليه وسلم راسه وقال من عادى عمارا عاداه الله ومن ابغض عمارا ابغضه الله قال خالد فخرجت فما كان شيء احب الي من رضى عمار فلقيته بما رضي فرضياسنادہ حسن رواہ احمد 4 89 ح 16938 و الحاکم 3 390 ۔ 391 و صححہ و للسند علۃ ذکرھا الذھبی و لکنھا غیر قادحۃ ۔صحيح

ব্যাখ্যা: মীরাক বলেন, (قَالَ خَالِدٌ: فَخَرَجْتُ) এ বাক্যটি আমাদের সরদার খালিদ (রাঃ)-এর তরফ থেকে হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তখন এটা (إلتفات) এর ভিত্তিতে। অতঃপর খালিদ-এর কঠোরতা স্বীয় ধৈর্যের কমতি, অধিক রাগ ও নবী (সা.)-এর চুপ থাকার কারণে আম্মার কেঁদে ফেলেন।
(مَنْ عَادَى عَمَّارً) যে ব্যক্তি ‘আম্মার-এর সাথে শত্রুতা করে অর্থাৎ তাঁর কথার সাথে। (وَمَنْ أَبْغَضَ عَمَّارً) যে ব্যক্তি ‘আম্মার-এর সাথে বিদ্বেষ রাখে অর্থাৎ অন্তর থেকে বিদ্বেষ পোষণ করে। (فَخَرَجْتُ) বাহিরে বের হলাম। অর্থাৎ ‘আম্মার-কে সম্পূর্ণভাবে রাজি-খুশি করার জন্য নবী (সা.) -এর নিকট থেকে বের হলাম।
(مَا كَانَ شَيْءٌ أَحَبَّ) অর্থাৎ আমার এটা ইচ্ছা ছিল যে, আমি এমন কাজ করব যাতে আম্মার আমার প্রতি খুশি হয়ে যায়। তাহলে আমার ও আম্মার-এ মাঝে ভালোবাসা সৃষ্টি হয়ে যাবে। (মিশকাতুল মাসাবীহ - মুম্বাই ছাপা, ৫ম খণ্ড, পৃ. ২৮৩)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সমষ্টিগতভাবে মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য

৬২৫৭-[৬২] আবূ উবায়দাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.) -কে খালিদ সম্পর্কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, খালিদ হলো মহাপরাক্রমশালী আল্লাহর তলোয়ারসমূহের একটি তলোয়ার এবং সে তার স্বীয় বংশের একজন উত্তম যুবক। [উক্ত হাদীস দুটি ইমাম আহমাদ (রহিমাহুল্লাহ) রিওয়ায়াত করেছেন।

اَلْفصْلُ الثَّالِثُ (بَاب جَامع المناقب)

وَعَن أبي عُبَيدةَ أَنَّهُ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «خَالِدٌ سَيْفٌ مِنْ سُيُوفِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ وَنِعْمَ فَتَى الْعَشِيرَةِ» . رَوَاهُمَا أَحْمد

سندہ ضعیف ، رواہ احمد (4 / 90 ح 16948) * فیہ عبد الملک بن عمیر : مدلس ولم اجد تصریح سماعہ فالسند ضعیف وقال رسول اللہ صلی اللہ علیہ و آلہ وسلم فی خالد بن الولید رضی اللہ عنہ :’’ حتی اخذ الرایۃ سیف من سیوف اللہ حتی فتح اللہ علیھم ‘‘ رواہ البخاری فی صححہ (4262) و ھذا الحدیث یغنی عنہ

وعن ابي عبيدة انه قال سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول خالد سيف من سيوف الله عز وجل ونعم فتى العشيرة رواهما احمدسندہ ضعیف رواہ احمد 4 90 ح 16948 فیہ عبد الملک بن عمیر مدلس ولم اجد تصریح سماعہ فالسند ضعیف وقال رسول اللہ صلی اللہ علیہ و الہ وسلم فی خالد بن الولید رضی اللہ عنہ حتی اخذ الرایۃ سیف من سیوف اللہ حتی فتح اللہ علیھم رواہ البخاری فی صححہ 4262 و ھذا الحدیث یغنی عنہ

সহীহ: মুসনাদে আহমাদ ১৬৮৬৯, সিলসিলাতুস্ সহীহাহ্ ১২৩৯, সহীহুল জামি' ৩২০৮।

ব্যাখ্যা: (سَيْفٌ مِنْ سُيُوفِ اللَّهِ) এক তলোয়ার যাকে আল্লাহ তা'আলা মুশরিকদের জন্য বের করেছেন ও কাফিরদের ওপর বিজয় করেছেন। উদ্দেশ্য যে, তিনি আল্লাহর পথে কাফিরদের সাথে তুমুলভাবে যুদ্ধ করবেন।
(نِعْمَ فَتَى الْعَشِيرَةِ) বংশের উত্তম যুবক। খালিদ বানী মাখযুম গোত্রের ও কুরায়শের জনক ছিলেন। (মিশকাতুল মাসাবীহ - মুম্বাই ছাপা, ৫ম খণ্ড, পৃ. ২৮৩-৮৪)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সমষ্টিগতভাবে মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য

৬২৫৮-[৬৩] বুরয়দাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: চার ব্যক্তির সাথে ভালোবাসার জন্য সুমহান বরকতময় আল্লাহ তা’আলা আমাকে নির্দেশ করেছেন। আমাকে এটাও জানিয়েছেন যে, তিনিও তাদেরকে ভালোবাসেন। প্রশ্ন করা হলো, হে আল্লাহর রাসূল! (অনুগ্রহপূর্বক) আমাদেরকে তাদের নামগুলো বলে দিন। তিনি বললেন, তাঁদের মধ্যে ’আলীও রয়েছেন। এ কথাটি তিনি (সা.) তিনবার বললেন এবং (বাকি তিনজন হলেন) আবূ যার, মিক্বদাদ ও সালমান। তাদেরকে ভালোবাসার জন্য আমাকে তিনি হুকুম করেছেন এবং আমাকে এ সংবাদও দিয়েছেন যে, তিনি তাঁদেরকে ভালোবাসেন। [ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং তিনি বলেছেন, হাদীসটি হাসান গরীব]

اَلْفصْلُ الثَّالِثُ (بَاب جَامع المناقب)

وَعَنْ بُرَيْدَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ اللَّهَ تَبَارَكَ وَتَعَالَى أَمرنِي بِحُبِّ أَرْبَعَةٍ وَأَخْبَرَنِي أَنَّهُ يُحِبُّهُمْ» . قِيلَ يَا رَسُولَ اللَّهِ سَمِّهِمْ لَنَا قَالَ: «عَلِيٌّ مِنْهُمْ» يَقُولُ ذَلِكَ ثَلَاثًا «وَأَبُو ذَرٍّ وَالْمِقْدَادُ وَسَلْمَانُ أَمرنِي بحبِّهم وَأَخْبرنِي أَنه يحبُّهم» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ

اسنادہ حسن ، رواہ الترمذی (3718) [و ابن ماجہ (149)] * شریک القاضی صرح بالسماع عند احمد (5 / 351 ح 22968) و حدیثہ حسن اذا صرح بالسماع و حدث قبل اختلاطہ

وعن بريدة قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم ان الله تبارك وتعالى امرني بحب اربعة واخبرني انه يحبهم قيل يا رسول الله سمهم لنا قال علي منهم يقول ذلك ثلاثا وابو ذر والمقداد وسلمان امرني بحبهم واخبرني انه يحبهم رواه الترمذي وقال هذا حديث حسن غريباسنادہ حسن رواہ الترمذی 3718 و ابن ماجہ 149 شریک القاضی صرح بالسماع عند احمد 5 351 ح 22968 و حدیثہ حسن اذا صرح بالسماع و حدث قبل اختلاطہ

ব্যাখ্যা: (بِحُبِّ أَرْبَعَةٍ) বিশেষভাবে ভালোবাসার জন্য। (يَا رَسُولَ اللَّهِ سَمِّهِمْ لَنَا) যাতে আল্লাহ ও তদীয় রাসূল (সা.) -এর ভালোবাসার কারণে আমরাও তাদেরকে ভালোবাসতে পারি। (يَقُولُ ذَلِكَ ثَلَاثًا) এ কথা স্মরণ করিয়ে দেয়ার জন্য যে, তিনি তাদের মধ্যে সর্বাধিক উত্তম। অথবা তিনি তাকে তাদের তিনজনের সমপরিমাণে ভালোবাসতেন। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)
সুবহা-নাল্লহ তাদের কী মর্যাদা যে, আল্লাহ নিজে তাদের ভালোবাসেন এবং তাঁর হাবীবকে ভালোবাসার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। (মিশকাতুল মাসাবীহ - মুম্বাই ছাপা, ৫ম খণ্ড, পৃ. ২৮৪)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সমষ্টিগতভাবে মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য

৬২৫৯-[৬৪] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ’উমার (রাঃ) বলতেন, আবূ বকর (রাঃ) আমাদের নেতা। তিনি আমাদের আরেকজন নেতাকে স্বাধীন করেছেন, অর্থাৎ বিলাল (রাঃ) -কে। (বুখারী)

اَلْفصْلُ الثَّالِثُ (بَاب جَامع المناقب)

وَعَن جَابر قا ل: كَانَ عُمَرُ يَقُولُ: أَبُو بَكْرٍ سَيِّدُنَا وَأَعْتَقَ سَيِّدَنَا يَعْنِي بِلَالًا. رَوَاهُ البُخَارِيّ

رواہ البخاری (3754) ۔
(صَحِيح)

وعن جابر قا ل كان عمر يقول ابو بكر سيدنا واعتق سيدنا يعني بلالا رواه البخاريرواہ البخاری 3754 ۔صحيح

ব্যাখ্যা: ইবনু তীন (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, অবশ্যই বিলাল (রাঃ) ছিলেন নেতাদের একজন। তবে এ কথা বর্ণিত হয়নি যে, তিনি ‘উমার (রাঃ) থেকে অধিক শ্রেষ্ঠ। অন্যান্যরা বলেন, প্রথম (السيد) বাস্তবে অর্থে ব্যবহার হয়েছে। দ্বিতীয় (السيد) তার উদ্দেশে রূপক অর্থে ব্যবহার করেছেন। অথবা নেতৃত্ব শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করে না। যেমন ইবনু উমার (রাঃ) বলেন, আমি মু'আবিয়াহ্ (রাঃ)-এর চাইতে বড় নেতা দেখিনি। অথচ তিনি আবূ বাকর (রাঃ) ‘উমার (রাঃ)-কে দেখেছেন। (ফাতহুল বারী হা. ৩৭৫৪)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সমষ্টিগতভাবে মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য

৬২৬০-[৬৫] কায়স ইবনু আবূ হাযিম (রাঃ) বলেন, বিলাল (রাঃ) আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ)-কে বললেন, আপনি যদি আমাকে নিজের জন্য ক্রয় করে থাকেন, তাহলে আমাকে আপনি নিজ সেবায় আটকিয়ে রাখুন। আর যদি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ক্রয় করে থাকেন, তবে আমাকে আল্লাহর কাজে স্বাধীন ছেড়ে দিন। (বুখারী)

اَلْفصْلُ الثَّالِثُ (بَاب جَامع المناقب)

وَعَنْ قَيْسِ بْنِ أَبِي حَازِمٍ أَنَّ بِلَالًا قَالَ لِأَبِي بَكْرٍ: إِنْ كُنْتَ إِنَّمَا اشْتَرَيْتَنِي لِنَفْسِكَ فَأَمْسِكْنِي وَإِنْ كُنْتَ إِنَّمَا اشْتَرَيْتَنِي لِلَّهِ فَدَعْنِي وَعمل الله. رَوَاهُ البُخَارِيّ

رواہ البخاری (3755) ۔
(صَحِيح)

وعن قيس بن ابي حازم ان بلالا قال لابي بكر ان كنت انما اشتريتني لنفسك فامسكني وان كنت انما اشتريتني لله فدعني وعمل الله رواه البخاريرواہ البخاری 3755 ۔صحيح

ব্যাখ্যা: (أَنَّ بِلَالًا قَالَ) যখন আমাদের সর্দার বিলাল (রাঃ) মসজিদে নাবাবী দেখাশোনায় অধৈর্য হওয়ার কারণে শাম দেশে যাত্রা করার ইচ্ছা পোষণ করলেন, তখন আবূ বাকর (রাঃ) তার নিকট আবেদন করলেন যে, নবী (সা.) -এর সময় যেমন তুমি আযান দিতে তেমনিভাবে আমার সাথে থাকো ও আযান দাও।
(فَدَعْنِي وَعمل الله) অর্থাৎ আমাকে ছেড়ে দিন আমি আল্লাহর ‘আমল করতে থাকব এবং মানুষের সাথে কোন সম্বন্ধ রাখব না।
কোন বর্ণনায় এসেছে, বিলাল (রাঃ) বলেন, আমার মধ্যে রসূলের স্থান দেখার ধৈর্য নেই, আর তিনি (সা.) ব্যতীত আমি এখানে অবস্থান করতে পারব না। তখন বিলাল (রাঃ) এক সৈন্যদলের সঙ্গ গ্রহণ করল যারা শাম দেশে যাচ্ছিল। তিনি তাদের সাথে গেলেন এবং দামিশকে মৃত্যুবরণ করেন। আবার সেই হাদীসে বিলাল (রাঃ)-এর মদীনায় ফিরে আসার কথা উল্লেখ হয়েছে এবং তার আযান দেয়া ও আযানে মদীনাহ্ কেঁপে উঠার কথা উল্লেখ হয়েছে সে হাদীসের কোন ভিত্তি নেই। সেটা জাল হাদীস হতে পারে। আল্লামাহ্ সুয়ূত্বী (রহিমাহুল্লাহ) সেটাকে পরবর্তীতে উল্লেখ করেছেন। (মিশকাতুল মাসাবীহ - মুম্বাই ছাপা, ৫ম খণ্ড, পৃ. ২৮৪)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সমষ্টিগতভাবে মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য

৬২৬১-[৬৬] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন এক লোক রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর কাছে এসে বলল, আমি অতিশয় ক্ষুধার্ত। তখন তিনি (সা.) কোন এক লোককে তার একজন স্ত্রীর কাছে আঠালেন। তিনি (বিবি) এই বলে উত্তর পাঠালেন যে, সে মহান সত্তার শপথ। যিনি আপনাকে সত্য সহকারে প্রেরণ করেছেন, আমার কাছে পানি ছাড়া আর কিছুই নেই। অতঃপর তিনি (সা.) আরেক স্ত্রীর কাছে পাঠালেন। তিনিও অনুরূপ উত্তর পাঠালেন। এভাবে সকল স্ত্রীগণ সেই একই কথা বলে পাঠালেন। তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, কে এই লোকটির মেহমানদারি করবে? আল্লাহর তা’আলা তার প্রতি অনুগ্রহ করবেন। তখন আনসারদের একজন- যাকে আবূ ত্বলহাহ্ ডাকা হত, তিনি বললেন, আমি, হে আল্লাহর বসল! এই বলে তিনি লোকটিকে সঙ্গে করে বাড়ি নিয়ে গেলেন এবং স্ত্রীকে প্রশ্ন করলেন, তোমার কাছে (খাওয়ার) কোন কিছু আছে কি? স্ত্রী বললেন, বাচ্চাদের খাবার ব্যতীত আর কিছুই নেই। তখন আবূ ত্বলহাহ্ (রাঃ) বিবিকে বললেন, বাচ্চাদেরকে কোন একটি জিনিস দ্বারা ভুলিয়ে ঘুম পাড়াও। আর মেহমান যখন ঘরে প্রবেশ করবে, তখন তাকে এমন ভাব দেখাবে যে, আমরাও তার সাথে খানা খাচ্ছি। অতঃপর মেহমান যখন খাওয়ার জন্য হাত বাড়াবে, তখন তুমি দাড়িয়ে প্রদীপটি ঠিক করছ ভান করে তা নিভিয়ে ফেলবে। অতএব (স্বামীর কথানুযায়ী) স্ত্রী তাই করলেন। অতঃপর যখন সকাল হলো। আবূ ত্বলহাহ্ সকাল বেলায় রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর কাছে গেলেন। তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, আল্লাহ তা’আলা অমুক পুরুষ ও অমুক মহিলার ক্রিয়াকলাপকে অতিশয় পছন্দ করেছেন অথবা বলেছেন, আল্লাহ তা’আলা তাতে সন্তুষ্ট হয়েছেন।
অপর একটি বর্ণনাতে অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে, তবে তাতে আবূ তলহাহ-এর নাম উল্লেখ করা হয়নি। এবং হাদীসটির শেষাংশে বর্ণিত হয়েছে, তখন আল্লাহ তা’আলা এ আয়াত অবতীর্ণ করলেন, অর্থাৎ ’আনসারদের অন্যতম গুণ এই যে, তারা নিজেদের ওপর অন্যদেরকে প্রাধান্য দেন, অভাবগ্রস্ততা এবং দারিদ্র্য তাঁদের সাথে হলেও।’ (বুখারী ও মুসলিম)

اَلْفصْلُ الثَّالِثُ (بَاب جَامع المناقب)

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم فَقَالَ إِنِّي مَجْهُودٌ فَأَرْسَلَ إِلَى بَعْضِ نِسَائِهِ فَقَالَتْ وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالْحَقِّ مَا عِنْدِي إِلَّا مَاءٌ ثُمَّ أَرْسَلَ إِلَى أُخْرَى فَقَالَتْ مِثْلَ ذَلِكَ وَقُلْنَ كُلُّهُنَّ مِثْلَ ذَلِكَ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «من يضيفه وي» فَقَامَ رَجُلٌ مِنَ الْأَنْصَارِ يُقَالُ لَهُ أَبُو طَلْحَةَ فَقَالَ أَنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ فَانْطَلَقَ بِهِ إِلَى رَحْلِهِ فَقَالَ لِامْرَأَتِهِ هَلْ عِنْدَكِ شَيْءٌ قَالَتْ لَا إِلَّا قُوتُ صِبْيَانِي قَالَ فَعَلِّلِيهِمْ بِشَيْءٍ وَنَوِّمِيهِمْ فَإِذَا دَخَلَ ضَيْفُنَا فَأَرِيهِ أَنا نَأْكُل فَإِذا أَهْوى لِيَأْكُلَ فَقُومِي إِلَى السِّرَاجِ كَيْ تُصْلِحِيهِ فَأَطْفِئِيهِ فَفعلت فقعدوا وَأكل الضَّيْف فَلَمَّا أَصْبَحَ غَدَا عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَقَدْ عَجِبَ اللَّهُ أَوْ ضَحِكَ اللَّهُ مِنْ فُلَانٍ وَفُلَانَةٍ» وَفِي رِوَايَةٍ مِثْلَهُ وَلَمْ يُسَمِّ أَبَا طَلْحَةَ وَفِي آخِرِهَا فَأَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَى [وَيُؤْثِرُونَ عَلَى أَنْفُسِهِمْ وَلَوْ كَانَ بِهِمْ خَصَاصَةٌ] مُتَّفق عَلَيْهِ

متفق علیہ ، رواہ البخاری (4889) و مسلم (172 / 2054)، (5359) ۔
(مُتَّفق عَلَيْهِ)

وعن ابي هريرة قال جاء رجل الى رسول الله صلى الله عليه وسلم فقال اني مجهود فارسل الى بعض نساىه فقالت والذي بعثك بالحق ما عندي الا ماء ثم ارسل الى اخرى فقالت مثل ذلك وقلن كلهن مثل ذلك فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم من يضيفه وي فقام رجل من الانصار يقال له ابو طلحة فقال انا يا رسول الله فانطلق به الى رحله فقال لامراته هل عندك شيء قالت لا الا قوت صبياني قال فعلليهم بشيء ونوميهم فاذا دخل ضيفنا فاريه انا ناكل فاذا اهوى لياكل فقومي الى السراج كي تصلحيه فاطفىيه ففعلت فقعدوا واكل الضيف فلما اصبح غدا على رسول الله صلى الله عليه وسلم فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم لقد عجب الله او ضحك الله من فلان وفلانة وفي رواية مثله ولم يسم ابا طلحة وفي اخرها فانزل الله تعالى ويوثرون على انفسهم ولو كان بهم خصاصة متفق عليهمتفق علیہ رواہ البخاری 4889 و مسلم 172 2054 5359 ۔متفق عليه

ব্যাখ্যা: (إِنِّي مَجْهُودٌ) অর্থাৎ ক্ষুধার কষ্ট আমাকে পেয়েছে। এ ঘটনা ইসলামের প্রথম যুগে খায়বার ও অন্যান্য যুদ্ধে বিজয় ও গনীমাত লাভ করার পূর্বের সময়ের। ইবনুত্ তীন (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, আনসারী ব্যক্তির নাম ছিল সাবিত ইবনু কায়স ইবনু শাম্মাস (রাঃ) ইসমাঈল কাযী আহকামুল কুরআনে ঘটনাটি বর্ণনা করেন। তবে তার বর্ণনা প্রসঙ্গ ইঙ্গিত করে যে, সেটা অন্য ঘটনা ছিল। সে বর্ণনা হলো -  (ان رجلامن الأنصار عبد عليه ثه أيام لا يجد ما يفطر عليه و يصبح صائما حتى فطن ر جل من الأ نصار يقال اله ثابت بن قيس) এক আনসারী ব্যক্তি তিনদিন যাবৎ ইফত্বার করার কিছু না পেয়ে সকাল করে সিয়াম অবস্থায় (অবশেষে অপর আনসারী ব্যক্তি বুঝতে পেরেছিলেন, যার নাম সাবিত ইবনু কায়স)। অতঃপর তিনি ঘটনা বর্ণনা করলেন। এ আয়াত নাযিল হওয়ার প্রেক্ষাপটও মেহমানের ওপর অনুগ্রহ করার একাধিক ঘটনাকে বাধা দেয় না।
ইবনু বাশকুয়াল বলেন, কেউ বলেন, তিনি হলেন আবদুল্লাহ ইবনু রওয়াহাহ্। তবে তিনি এ কথা আস্থার সাথে উল্লেখ করেননি। য'ঈফ মাতরূক রাবীদের অন্যতম কাযী আবূ বুখতারী তাঁর “কিতাবুয যু'আফাতুন্ নবী (সা.)” গ্রন্থে বলেন, তিনি হলেন হাদীস বর্ণনাকারী আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)। সঠিক হল যা মুসলিমে আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) -এর হাদীসে সম্পূর্ণ নিশ্চিতভাবে বলা হয়েছে। যেমন তাতে উল্লেখ হয়েছে (فقام ر جل من الأ نصار يقال له أبو طلحة) অর্থাৎ আনসারীদের মধ্যে হতে একব্যক্তি বলল; যাকে আবূ ত্বলহাহ্ বলা হয়। খত্বীব সাহেব নিশ্চিতভাবে এটাই বলেছেন। কিন্তু তিনি বলেন, আমার মনে হয় তিনি প্রসিদ্ধ আবূ ত্বলহাহ্ যায়দ ইবনু সাহল নন। এটা দুটো কারণে সুদূর পরাহত মনে করা হয়।
(এক) প্রসিদ্ধ আবূ ত্বলহাহু যায়দ ইবনু সাহল-এর ব্যাপারে এভাবে বলা ভালো মনে হয় না যে, (فقام ر جل من الأنصار يقال له أبوطلحت) অর্থাৎ এক ব্যক্তি দাঁড়ালেন, তার নাম আবূ ত্বলহাহ্।
(দুই) ঘটনার বর্ণনায় বুঝা যায় যে, তাঁর নিকটে কিছু ছিল না যে, তার দ্বারা তিনি এবং তার পরিবার রাতের আহার করবেন, ফলে বাতি নিভানোর প্রয়োজন হবে। অথচ মদীনায় আনসারদের মধ্যে আবূ ত্বলহাহ যায়দ ইবনু সাহল-এর সম্পদ সবচাইতে বেশি ছিল। অতএব তার ব্যাপারে কম সম্পদের কথা উল্লেখ করা দূরের ব্যাপারে। এ দু' অসম্ভব বিষয়ই তার উত্তরের জন্য সম্ভাবনা আছে, আল্লাহ অধিক জানেন। (إِلَّا قُوتُ صِبْيَانُىْ) “কিন্তু আমার সন্তানদের খাবার রয়েছে। সম্ভবত তিনি এবং তাঁর স্ত্রী রাতের আহার করছিলেন। আর তার সন্তানরা ব্যস্ত ছিল অথবা ঘুমন্ত ছিল। তাই তাদের প্রয়োজন মতো খাবার রাখলেন। অথবা রাতের খাবারকে তারা সন্তান বলে অভিহিত করেছেন। কারণ তাদের জন্য রাতের খাবারের খুবই দরকার এটা নির্ভরযোগ্য কথা। যেহেতু আবূ উসামার বর্ণনায় এসেছে, (ونطوبطوننا الليلة) “রাতে আমাদের পেটকে ক্ষুধার্ত রেখেছি”। অন্য রিওয়ায়াতে আছে, (فاصبحا طاويين) “তার নিকট শুধুমাত্র নিজের ও স্বীয় সন্তানদের খাবার রয়েছে”।
সহীহ মুসলিমে ওয়াক্বী’র বর্ণনায় রয়েছে, (فَلَمْ يَكُنْ عِنْدَهُ إِلَّاقُوتُهُ وَقُوتُ صِبْيَانِهِ) “তাঁর কাছে তাঁর ও সন্তানদের জন্য অল্প কিছু খাদ্য ব্যতীত আর কিছু ছিল না।”
(لَقَدْ عَجِبَ اللَّهُ أَوْ ضَحِكَ اللَّهُ مِنْ فُلَانٍ وَفُلَانَةٍ) এ হাদীস দ্বারা মহান আল্লাহর হাসির গুণ তাঁর অন্যান্য গুণের মতো প্রমাণিত হয় যা পূর্বে একাধিক জায়গায় উল্লেখ হয়েছে। (মিশকাতুল মাসাবীহ - মুম্বাই ছাপা, ৫ম খণ্ড, পৃ. ২৮৬)

(وَ یُؤۡثِرُوۡنَ عَلٰۤی اَنۡفُسِهِمۡ وَ لَوۡ کَانَ بِهِمۡ خَصَاصَۃٌ ؕ۟ وَ مَنۡ یُّوۡقَ شُحَّ نَفۡسِهٖ فَاُولٰٓئِکَ هُمُ الۡمُفۡلِحُوۡنَ) ...আর তাদেরকে (অর্থাৎ মুহাজিরদেরকে) নিজেদের ওপর অগ্রাধিকার দেয়- নিজেরা যতই অভাবগ্রস্ত হোক না কেন। বস্তুত যাদেরকে হৃদয়ের সংকীর্ণতা থেকে রক্ষা করা হয়েছে তারাই সফলকাম।” (সূরাহ্ আল হাশর ৫৯: ৯)
এ আয়াত নাযিল হওয়ার সর্বাধিক বিশুদ্ধ ঘটনা এটাই। ইবনু মারদুওয়াইহ-এর বর্ণনায় আছে, “এক ব্যক্তিকে একটি ছাগলের মাথা হাদিয়্যাহ্ দেয়া হলে তিনি বলেন, এটা আমাদের চাইতে আমার ভাই ও তার পরিবারে বেশি প্রয়োজন। অতঃপর তিনি তা পাঠিয়ে দেন। এভাবেই একজন অপরজনের নিকটে পাঠাতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত তা সাতজনের কাছে ঘুরার পর প্রথমজনের নিকটে ফিরে চলে আসে। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে আয়াত নাযিল হয়। সম্ভবত এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে এটা নাযিল হয়।
কেউ বলেন, অল্প ক্ষতি করে ছোট ছেলেদের অভুক্ত রেখে পিতার এমন আচরণ করার প্রমাণ এ হাদীসে রয়েছে। (ফাতহুল বারী হা. ৩৭৯৮)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সমষ্টিগতভাবে মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য

৬২৬২-[৬৭] উক্ত রাবী [আবূ হুরায়রাহ (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার আমরা রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর সাথে এক স্থানে, মানজিল করলাম। তখন লোকজন (সম্মুখ দিয়ে) যাতায়াত করছিল। এমতাবস্থায় রাসুলুল্লাহ (এক ব্যক্তি সম্পর্কে) প্রশ্ন করলেন, হে আবূ হুরায়রাহ! এ লোক কে? আমি বললাম, অমুক। তখন তিনি (সা.) বললেন, আল্লাহর এই বান্দা খুব ভালো লোক। আরেক লোক সম্পর্কে প্রশ্ন করলেন, এ লোকটি কে? বললাম, অমুক। তখন তিনি (সা.) বললেন, আল্লাহর এই বান্দা খুবই মন্দ। এমন সময় খালিদ ইবনু ওয়ালীদ (রাঃ) অতিক্রম করলেন। তিনি (সা.) প্রশ্ন করলেন, এ লোকটি কে? আমি বললাম, খালিদ ইবন ওয়ালীদ। তখন তিনি বললেন, আল্লাহর বান্দা খালিদ ইবনু ওয়ালীদ খুবই চমৎকার লোক। ইনি আল্লাহর তলোয়ারসমূহের মধ্য হতে একখানা তলোয়ার। (তিরমিযী)

اَلْفصْلُ الثَّالِثُ (بَاب جَامع المناقب)

وَعَنْهُ قَالَ: نَزَلْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْزِلًا فَجَعَلَ النَّاسُ يَمُرُّونَ فَيَقُولُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «مَنْ هَذَا يَا أَبَا هُرَيْرَةَ؟» فَأَقُولُ: فُلَانٌ. فَيَقُولُ: «نِعْمَ عَبْدُ اللَّهِ هَذَا» وَيَقُولُ: «مَنْ هَذَا؟» فَأَقُولُ: فُلَانٌ. فَيَقُولُ: «بِئْسَ عَبْدُ اللَّهِ هَذَا» حَتَّى مَرَّ خَالِدُ بْنُ الْوَلِيدِ فَقَالَ: «مَنْ هَذَا؟» فَقُلْتُ: خَالِدُ بْنُ الْوَلِيدِ. فَقَالَ: «نِعْمَ عَبْدُ اللَّهِ خَالِدُ بْنُ الْوَلِيدِ سَيْفٌ مِنْ سيوف الله» رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

حسن ، رواہ الترمذی (3846)

وعنه قال نزلنا مع رسول الله صلى الله عليه وسلم منزلا فجعل الناس يمرون فيقول رسول الله صلى الله عليه وسلم من هذا يا ابا هريرة فاقول فلان فيقول نعم عبد الله هذا ويقول من هذا فاقول فلان فيقول بىس عبد الله هذا حتى مر خالد بن الوليد فقال من هذا فقلت خالد بن الوليد فقال نعم عبد الله خالد بن الوليد سيف من سيوف الله رواه الترمذيحسن رواہ الترمذی 3846

ব্যাখ্যা: (فَاقوتُ:خَالِدُ بْنُ الْوَلِيدِ) এখানে এ ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, অবশ্যই রাসূল (সা.) ছিলেন এক তাঁবুতে এবং আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) ছিলেন তাঁবুর বাহিরে। এছাড়া খালিদ ইবনু ওয়ালীদ (রাঃ) রাসূল (সা.) -এর নিকট অস্পষ্ট থাকত না। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)।
(سَيْفٌ مِنْ سيوف الله) কারী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, তিনি একটি তলোয়ার যাকে আল্লাহ তা'আলা মুশরিকদের জন্য বের করে নিয়ে এসেছেন এবং তাকে কাফিরদের ওপর বিজয় দান করেছেন। অথবা তিনি আল্লাহ তা'আলার তলোয়ারসমূহের মধ্য থেকে এক তলোয়ার প্রাপ্ত। এভাবেই তিনি আল্লাহর পথে তার দীনের শত্রুদের সাথে তুমুল যুদ্ধ করেছেন। মানাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন: আল্লাহ তা'আলার নির্দেশ দ্রুত পালনের ক্ষেত্রে তিনি স্বয়ং এক তলোয়ার সদৃশ্য। এতে তিনি কোন নিন্দুকের নিন্দাকে ভয় করতেন না। (তুহফাতুল আহওয়াযী হা. ৩৮৪৬ - “জামিউল কিতাবুত তিস্'আহ্” এ্যাপ)
ফাতহুল বারীর ভাষ্যকার বলেন, আবূ কতাদাহ্’র হাদীসে রয়েছে, মূতার যুদ্ধে খালিদ ইবনু ওয়ালীদ (রাঃ) ঝাণ্ডা ধারণ করলেন। তিনি আমীরের মধ্যকার ছিলেন না। তিনি ছিলেন নিজেই আমীর। অতঃপর রাসূল (সা.) বলেন, হে আল্লাহ! নিশ্চয় সে আপনার তরবারিসমূহের একটি। অতএব আপনি তাকে সাহায্য করুন। তাই তিনি সেদিন থেকে (سيوف الله) (আল্লাহ তরবারি) নামে ভূষিত হন। (ফাতহুল বারী হা, ৪২৬২, ৩৮৪৬ - “জামিউল কিতাবুত তিস্'আহ” এ্যাপ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সমষ্টিগতভাবে মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য

৬২৬৩-[৬৮] যায়দ ইবনু আরকাম (রাঃ) হতে বর্ণিত। একবার আনসারগণ রাসূলুল্লাহ (সা.) -কে বললেন, হে আল্লাহর নবী! প্রত্যেক নবীরই একদল অনুসরণকারী থাকে। (অনুরূপভাবে) আমরাও আপনার অনুকরণ করে আসছি। অতএব, আপনি আল্লাহর কাছে দু’আ করুন, তিনি যেন আমাদের অনুসারীদেরকেও আমাদের দলভুক্ত করেন। তখন তিনি (সা.) সেই মতো দু’আ করলেন। (বুখারী)

اَلْفصْلُ الثَّالِثُ (بَاب جَامع المناقب)

وَعَنْ زَيْدِ بْنِ أَرْقَمَ قَالَ: قَالَتِ الْأَنْصَارُ: يَا نَبِيَّ اللَّهِ لِكُلِّ نَبِيٍّ أَتْبَاعٌ وَإِنَّا قَدِ اتَّبَعْنَاكَ فَادْعُ اللَّهَ أَنْ يَجْعَلَ أَتْبَاعَنَا منا فَدَعَا بِهِ رَوَاهُ البُخَارِيّ

رواہ البخاری (3787) ۔
(صَحِيح)

وعن زيد بن ارقم قال قالت الانصار يا نبي الله لكل نبي اتباع وانا قد اتبعناك فادع الله ان يجعل اتباعنا منا فدعا به رواه البخاريرواہ البخاری 3787 ۔صحيح

ব্যাখ্যা: (وَإِنَّا قَدِ اتَّبَعْنَاكَ) অর্থাৎ আমরা বেশি বেশি আপনার অনুসরণ করব। (فَادْعُ اللَّهَ أَنْ يَجْعَلَ أَتْبَاعَنَا منا) ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, প্রত্যেক নবীর অনুসারী থাকে। আমরা আপনার অনুসারী অবশ্যই আমরা আপনার অনুসরণ করব। অতএব আপনি আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করুন যাতে আমাদের মধ্য থেকেই আমাদের অনুসারী হয়। যারা আমাদের সাথে মিলিত থাকবে ও যথাযথভাবে আমাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করবে। যেমন আল্লাহ তা'আলা বলেন, (وَ الَّذِیۡنَ اتَّبَعُوۡهُمۡ بِاِحۡسَانٍ) ...আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট আর তারাও তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট...”- (সূরাহ আত্ তাওবাহ্ ৯: ১০০)। (মিশকাতুল মাসাবীহ - মুম্বাই ছাপা, ৫ম খণ্ড)
ফাতহুল বারী ভাষ্যকার বলেন, তাদেরকে বলা হয় আনসার। যাতে তারা তাদের প্রতি অনুগ্রহ করা ও অনুরূপ কিছু করার ওয়াসিয়্যাত গ্রহণ করে। (ফাতহুল বারী হা. ৩৭৮৭)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সমষ্টিগতভাবে মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য

৬২৬৪-[৬৯] কতাদাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ’আরবের গোত্ৰসমূহের কোন গোত্রের শহীদের সংখ্যা কিয়ামতের দিন আনসারদের তুলনায় অধিক এবং প্রিয়তর হবে বলে আমাদের জানা নেই। কতাদাহ্ (রাঃ) বলেন, আনাস (রাঃ) বলেছেন, তাঁদের মধ্য হতে সত্তরজন ’উহুদের দিন’, সত্তরজন “বী’রি মা’উনার দিন” এবং আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ)-এর খিলাফত ’আমলে, আর সত্তরজন ’ইয়ামামার দিন’ শহীদ হয়েছেন। (বুখারী)

اَلْفصْلُ الثَّالِثُ (بَاب جَامع المناقب)

وَعَنْ قَتَادَةَ قَالَ مَا نَعْلَمُ حَيًّا مِنْ أَحْيَاءِ الْعَرَبِ أَكْثَرَ شَهِيدًا أَعَزَّ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مِنَ الْأَنْصَارِ. قَالَ: وَقَالَ أَنَسٌ: قُتِلَ مِنْهُمْ يَوْمَ أُحُدٍ سَبْعُونَ وَيَوْمَ بِئْرِ مَعُونَةَ سَبْعُونَ وَيَوْمَ الْيَمَامَةِ عَلَى عَهْدِ أَبِي بَكْرٍ سَبْعُونَ. رَوَاهُ البُخَارِيّ

رواہ البخاری (4078) ۔
(صَحِيح)

وعن قتادة قال ما نعلم حيا من احياء العرب اكثر شهيدا اعز يوم القيامة من الانصار قال وقال انس قتل منهم يوم احد سبعون ويوم بىر معونة سبعون ويوم اليمامة على عهد ابي بكر سبعون رواه البخاريرواہ البخاری 4078 ۔صحيح

ব্যাখ্যা: (قُتِلَ مِنْهُمْ يَوْمَ أُحُدٍ سَبْعُونَ) তারা সবাই ছিলেন আনসার যেমনটি বলা যায়। মাত্র কিছু সংখ্যক ব্যতীত। উহুদের যুদ্ধে যেসব মুসলিম শহীদ হয়েছিলেন তাদের যে নাম ইবনু ইসহাক বর্ণনা করেছেন তাতে পঁয়ষট্টি জনে দাঁড়ায়। তন্মধ্যে চার জন হলেন মুহাজির। যারা হলেন- ১) হামযাহ্ ২) আবদুল্লাহ ইবনু জাহশ ৩) শাম্মাস ইবনু উসমান ৪) মু'আব ইবনু উমায়র। বেশি বাদ পড়েছেন হাত্বিব-এর দাস সা'দ। অবশ্য মূসা ইবনু উকবাহ্ তার নাম উল্লেখ করেছেন।
হাকিম (الاكليل) গ্রন্থে ও ইবনু মুনদিহ উবাই ইবনু কা'ব-এর হাদীসে বলেন, উহুদে নিহত আনসারদের সংখ্যা চৌষট্টি জন এবং মুহাজির ছয় জন। সম্ভবত ষষ্ঠ জন হবেন বানী ‘আবদ শামসের মিত্র সাকীফ ইবনু ‘আমর আল আসলামী। তাকে ওয়াকিদী তাদের মধ্যে গণ্য করেন। যারা উহুদে শহীদ হন তাদের মধ্যে আনসার নয় এমন ব্যক্তি হিসেবে হারিস ইবনু উবাহ্ ইবনু কুবস আল মুযানী, তাঁর চাচা ওয়াহব ইবনু কুবস, বান্ সা'দ ইবনু লায়স-এর ক্ষুদ্রতম শাখার আল হাবীব এর দুই একত্ববাদী সন্তান আবদুল্লাহ ও ‘আবদুর রহমান, খলফ ইবনু আওফ আল আসলামী-এর তনয়দ্বয় মালিক ও নু'মান-কে ইবনু সা'দ ধরেন। এ দু’জন ছিলেন রসূলের প্রথম সারির লোক। উভয়ে নিহত হন।
আমি বলি, সম্ভবত তারা আনসারদের মিত্র, তাদেরকেই গণ্য করা হয়েছে যদি তারা প্রথমেই গণনার বাহিরে থাকেন তবুও আনসারদের সংখ্যা সত্তর জনে পূর্ণ হবেন। আর নিহত মুসলিমদের মোট সংখ্যা সত্তরের চাইতে অধিক হবে। যে তাদের সত্তর জন শহীদ হয়েছেন বলে মত ব্যক্ত করেছেন, তিনি খুচরাদের সংখ্যাকে বাদ দিয়েছেন। আল্লাহই ভালো জানেন।
(يَوْمَ بِئْرِ مَعُونَةَ سَبْعُونَ) স্পষ্টতই বলা যায় তাদের সকলেই আনসারী ছিলেন না। বরং তাদের কেউ কেউ মুহাজির ছিলেন। যেমন আবূ বাকর (রাঃ)-এর মুক্ত দাস আমির ইবনু ফাহীরাহ, নাফি ইবনু ওরাকা আল খুযা'ঈ প্রমুখ ব্যক্তিরা মুহাজির ছিলেন।
(وَيَوْمَ الْيَمَامَةِ عَلَى عَهْدِ أَبِي بَكْرٍ سَبْعُونَ) যারা রিদ্দার যুদ্ধে তরবারির মতো তেজস্বী ও শক্তিশালীদের শ্রেণিভুক্ত হয়েছিলেন তাদের নাম বর্ণিত হয়েছে। (ফাতহুল বারী হা, ৪০৭৮)।
ইয়ামামার যুদ্ধের দিন বলতে যারা আবূ বাকর (রাঃ)-এর সময় মুসায়লামাহ্ কাযযাব-এর সাথে যুদ্ধ করার জন্য বের হয়েছিলেন। (মিশকাতুল মাসাবীহ - মুম্বাই ছাপা, ৫ম খণ্ড, পৃ. ২৮৭)।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ কাতাদাহ (রহঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সমষ্টিগতভাবে মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য

৬২৬৫-[৭০] কায়স ইবনু আবূ হাযিম (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী প্রত্যেকের ভাতা পাঁচ হাজার দিরহাম (বায়তুল মাল হতে) নির্ধারণ ছিল। উমার (রাঃ) বলেন, আমি অবশ্যই তাঁদেরকে পরবর্তী সকলের ওপর মর্যাদা দেব। (বুখারী)

اَلْفصْلُ الثَّالِثُ (بَاب جَامع المناقب)

وَعَن قيس بن حَازِم قَالَ: كَانَ عَطَاءُ الْبَدْرِيِّينَ خَمْسَةُ آلَافٍ. وَقَالَ عُمَرُ: لَأُفَضِّلَنَّهُمْ على مَنْ بَعدَهم. رَوَاهُ البُخَارِيّ

رواہ البخاری (4022) * تسمیۃ من سمی من اھل البدر ، فی صحیح البخاری (کتاب المغازی باب : 13 بعد ح 4027) ۔ بخاری ، کتاب المغازی ، باب تسمیۃ من سمی من اھل بدر ۔
(صَحِيح)

وعن قيس بن حازم قال كان عطاء البدريين خمسة الاف وقال عمر لافضلنهم على من بعدهم رواه البخاريرواہ البخاری 4022 تسمیۃ من سمی من اھل البدر فی صحیح البخاری کتاب المغازی باب 13 بعد ح 4027 ۔ بخاری کتاب المغازی باب تسمیۃ من سمی من اھل بدر ۔صحيح

ব্যাখ্যা: (كَانَ عَطَاءُ الْبَدْرِيِّينَ خَمْسَةُ) উমার ইবনুল খত্ত্বাব (রাঃ) ও তার পরবর্তী যুগ পর্যন্ত প্রত্যেক বদরী সাহাবীকে বায়তুল মাল থেকে যে সম্পদ দেয়া হত তার পরিমাণ বছরে পাঁচ হাজার দিরহাম।
(وَقَالَ عُمَرُ: لَأُفَضِّلَنَّهُمْ) তাদেরকে অন্যদের চাইতে বেশি প্রদান করব।
‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত, মালিক ইবনু আওস-এর হাদীসে রয়েছে, তিনি মুহাজিরদেরকে পাঁচ হাজার পাঁচ হাজার করে দান করতেন এবং আনসরাদেরকে চার চার হাজার করে প্রদান করতেন। আর নবী (সা.) এর সহধর্মিণীদেরকে আরো বেশি প্রদান করতেন। তাঁদের প্রত্যেককে বারো হাজার দিরহাম প্রদান করতেন। (ফাতহুল বারী হা, ৪০২২)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ১২ পর্যন্ত, সর্বমোট ১২ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে