পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - যুদ্ধবিগ্রহ সম্পৰ্কীয়

৫৪৩৫-[২৫] শাক্বীক (রহিমাহুল্লাহ) হুযায়ফাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, একদিন আমরা ’উমার (রাঃ)-এর নিকট বসা ছিলাম। তখন তিনি বললেন, তোমাদের মাঝে কোন ব্যক্তির রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর ফিতনাহ্ সম্পর্কীয় বাণী স্মরণ আছে কি? হুযায়ফাহ্ (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, আমার স্মরণ আছে তিনি (সা.) যেভাবে বলেছেন। উমার (রাঃ) বললেন, তা পেশ কর। এ ব্যাপারে তুমি সৎসাহসী। আচ্ছা বল দেখি, তিনি (সা.) ফিতনাহ্ সম্পর্কে কেমন বলেছেন? আমি বললাম, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.) -কে বলতে শুনেছি, মানুষ ফিতনায় পড়বে তার পরিবার-পরিজন, ধন-সম্পদ, তার নিজের সন্তান-সন্ততি ও পাড়া-প্রতিবেশীর ব্যাপারে। তার সালাত-সিয়াম, সদাক্বাহ্ এবং ভালো কাজের আদেশ ও মন্দ কাজের নিষেধ তা মিটিয়ে দেবে।
“উমার প্রশ্ন বললেন, আমি ঐ ফিতনাহ্ সম্পর্কে জানতে চাইনি, বরং যে ফিতনাহ্ সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো উত্থিত হবে এবং তোলপাড় করে ফেলবে, সেই ফিতনাহ্ সম্পর্কে জানতে চেয়েছি। হুযায়ফাহ (রা.) বলেন, তখন আমি বললাম, হে আমীরুল মু’মিনীন! উক্ত ফিতনার সাথে আপনার কি সম্পর্ক? তা ও আপনার মধ্যে একটি বন্ধ দরজা রয়েছে। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, আচ্ছা সেই দরজাটি কি ভেঙ্গে দেয়া হবে, না খোলা হবে? হুযায়ফাহ্ (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, খোলা হবে না, বরং ভেঙ্গে দেয়া হবে। তখন ’উমার প্রশ্ন বললেন, তাহলে সাধারণত এটাই প্রকাশ পায় যে, তা আর কখনো বন্ধ করা হবে না।
রাবী বলেন, তখন আমরা হুযায়ফাহ্ (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম- আচ্ছা! ’উমার (রাঃ) কি জানতেন দরজাটি কি? উত্তরে তিনি বললেন, হ্যাঁ, তিনি এমন নিশ্চিতভাবে জানতেন যেমন আগামীকালের পূর্বে রাত্রির আগমন সুনিশ্চিত। আমি তাকে (“উমারকে) এমন একটি হাদীস বর্ণনা করেছি, যা কোন গোলকধাধা নয়। রাবী বলেন, আমরা তো এ ব্যাপারে হুযায়ফাহ্ (রাঃ)-কে প্রশ্ন করতে ভয় পাচ্ছিলাম তাই মাসরূক-কে বললে তিনি হুযায়ফাহ্-কে প্রশ্ন। করলেন, দরজাটি কি? উত্তরে তিনি বললেন, দরজাটি হলেন, ’উমার’ নিজেই। (বুখারী ও মুসলিম)

اَلْفصْلُ الثَّالِثُ (بَاب الْمَلَاحِمِ)

عَن شَقِيق عَن حُذَيْفَة قَالَ: كُنَّا عِنْدَ عُمَرَ فَقَالَ: أَيُّكُمْ يَحْفَظُ حَدِيثِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الْفِتْنَةِ؟ فَقُلْتُ: أَنَا أَحْفَظُ كَمَا قَالَ: قَالَ: هَاتِ إِنَّكَ لِجَرِيءٌ وَكَيْفَ؟ قَالَ: قُلْتُ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ «فِتْنَةُ الرَّجُلِ فِي أَهْلِهِ وَمَالِهِ وَنَفْسِهِ وَوَلَدِهِ وَجَارِهِ يُكَفِّرُهَا الصِّيَامُ وَالصَّلَاةُ وَالصَّدَقَةُ وَالْأَمْرُ بِالْمَعْرُوفِ وَالنَّهْيُ عَنِ الْمُنْكَرِ» فَقَالَ عُمَرُ: لَيْسَ هَذَا أُرِيدُ إِنَّمَا أُرِيدُ الَّتِي تَمُوجُ كَمَوْجِ الْبَحْر. قَالَ: مَا لَكَ وَلَهَا يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ؟ إِنَّ بَيْنَكَ وَبَيْنَهَا بَابًا مُغْلَقًا. قَالَ: فَيُكْسَرُ الْبَابُ أويفتح؟ قَالَ: قُلْتُ: لَا بَلْ يُكْسَرُ. قَالَ: ذَاكَ أَحْرَى أَنْ لَا يُغْلَقَ أَبَدًا. قَالَ: فَقُلْنَا لحذيفةَ: هَل كَانَ عمر يعلم مَنِ البابُ؟ قَالَ: نَعَمْ كَمَا يَعْلَمُ أَنَّ دُونَ غَدٍ لَيْلَةٌ إِنِّي حَدَّثْتُهُ حَدِيثًا لَيْسَ بِالْأَغَالِيطِ قَالَ: فَهِبْنَا أَنْ نَسْأَلَ حُذَيْفَةَ مَنِ الْبَابُ؟ فَقُلْنَا لِمَسْرُوقٍ: سَلْهُ. فَسَأَلَهُ فَقَالَ: عُمَرُ. مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ

متفق علیہ ، رواہ البخاری (7096) و مسلم (26 / 144)، (7268) ۔
(مُتَّفق عَلَيْهِ)

عن شقيق عن حذيفة قال كنا عند عمر فقال ايكم يحفظ حديث رسول الله صلى الله عليه وسلم في الفتنة فقلت انا احفظ كما قال قال هات انك لجريء وكيف قال قلت سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول فتنة الرجل في اهله وماله ونفسه وولده وجاره يكفرها الصيام والصلاة والصدقة والامر بالمعروف والنهي عن المنكر فقال عمر ليس هذا اريد انما اريد التي تموج كموج البحر قال ما لك ولها يا امير المومنين ان بينك وبينها بابا مغلقا قال فيكسر الباب اويفتح قال قلت لا بل يكسر قال ذاك احرى ان لا يغلق ابدا قال فقلنا لحذيفة هل كان عمر يعلم من الباب قال نعم كما يعلم ان دون غد ليلة اني حدثته حديثا ليس بالاغاليط قال فهبنا ان نسال حذيفة من الباب فقلنا لمسروق سله فساله فقال عمر متفق عليهمتفق علیہ رواہ البخاری 7096 و مسلم 26 144 7268 ۔متفق عليه

ব্যাখ্যা: আয যায়ন ইবনু আল মুনীর (রহিমাহুল্লাহ) বলেন: পরিবারের ফিতনাহ্ হলো তাদের কারো প্রতি ভালোবাসার দুর্বলতাবশত ঝুকে যাওয়া অথবা সম্পদ কিংবা একাধিক স্ত্রী থাকলে তাদের ঘর বণ্টনের ক্ষেত্রে কারো দিকে ঝুকে যাওয়া বা কাউকে অগ্রাধিকার দেয়া এমনকি সন্তানদের ব্যাপারেও এমনটি করা এবং তাদের আবশ্যকীয় হক আদায়ের ব্যাপারে একপেশে নীতি গ্রহণ করা। আর সম্পদের ফিতনাহ্ হলো 'ইবাদত ছেড়ে শুধু সম্পদ নিয়েই ব্যস্ত থাকা অথবা আল্লাহ তা'আলার হক পরিত্যাগ করে সম্পদের মাঝেই নিজেকে ব্যস্ত রাখা। সন্তানের ফিতনাহ্ হলো স্বভাবতই এক সন্তানের ওপর অন্য সন্তানকে সুবিধা দেয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেয়া। প্রতিবেশীর ফিতনাহ্ হলো তাদের সাথে হিংসা-বিদ্বেষ ও অহংকারে লিপ্ত হওয়া।
এখানে অন্য সকল ‘ইবাদত ছাড়া শুধুমাত্র সালাতের সাথে উল্লেখিত ‘ইবাদতগুলোকে এ ফিতনার কাফফারাহ্ হিসেবে উল্লেখ করার মাধ্যমে সালাতের গুরুত্ব ও মর্যাদার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। কেননা অন্যান্য ইবাদতে কুফরী থেকে সংশোধনের উপায় নেই। ('আওনুল মা'বুদ ৬ষ্ঠ খণ্ড, ৪৪৭ পৃ., হা. ২২৫৮)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৭: ফিতনাহ (كتاب الْفِتَن)

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - যুদ্ধবিগ্রহ সম্পৰ্কীয়

৫৪৩৬-[২৬] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, কিয়ামতের নিকটবর্তী সময় কনস্টান্টিনোপল (মুসলিমদের হাতে) বিজয় হবে। [ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং তিনি বলেছেন হাদীসটি গরীব]

اَلْفصْلُ الثَّالِثُ (بَاب الْمَلَاحِمِ)

وَعَن أنسٍ قَالَ: فَتْحُ القسطنطينة مَعَ قِيَامِ السَّاعَةِ. رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ. وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ

اسنادہ صحیح ، رواہ الترمذی (2239) * وقال : محمود (بن غیلان) فیہ :’’ ھذا حدیث غریب ، و القسطنطینیۃ ھی مدینۃ الروم تفتح عند خروج الدجال ، و القسطنطینیۃ قد فتحت فی زمان بعض اصحاب النبی صلی اللہ علیہ و آلہ وسلم ‘‘ ۔
(صَحِيح)

وعن انس قال فتح القسطنطينة مع قيام الساعة رواه الترمذي وقال هذا حديث غريباسنادہ صحیح رواہ الترمذی 2239 وقال محمود بن غیلان فیہ ھذا حدیث غریب و القسطنطینیۃ ھی مدینۃ الروم تفتح عند خروج الدجال و القسطنطینیۃ قد فتحت فی زمان بعض اصحاب النبی صلی اللہ علیہ و الہ وسلم ۔صحيح

ব্যাখ্যা: কিয়ামত সংঘটিত হওয়ার কাছাকাছি সময়ে কুসতুনত্বায়নিয়্যাহ্ বা কনস্টান্টিনোপল-এর বিজয় হবে। অবশ্য এ বিষয়ের পর্যালোচনা ও এর সাথে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের আলোচনা পূর্বে অতিবাহিত হয়েছে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৭: ফিতনাহ (كتاب الْفِتَن)
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ২ পর্যন্ত, সর্বমোট ২ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে