পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - কিয়ামতের আলামত

৫৪৩৭-[১] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.) -কে বলতে শুনেছি, কিয়ামতের আলামত সমূহের মধ্যে রয়েছে- বিদ্যা উঠে যাবে, মূর্খতা বেড়ে যাবে, ব্যভিচার (যিনা) বেড়ে যাবে, মদ্যপান বৃদ্ধি পাবে, পুরুষের সংখ্যা কমে যাবে এবং নারীর সংখ্যা বেশি হবে এমনকি একজন পুরুষ পঞ্চাশজন নারীর তত্ত্বাবধায়ক হবে এবং মূর্খতা প্রকাশ পাবে। (বুখারী ও মুসলিম)।

الفصل الاول ( بَاب أَشْرَاط السَّاعَة)

عَنْ أَنَسٍ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «إِنَّ مِنْ أَشْرَاطِ السَّاعَةِ أَنْ يُرْفَعَ الْعِلْمُ وَيَكْثُرَ الْجَهْلُ وَيَكْثُرَ الزِّنا ويكثُرَ شُربُ الخمرِ ويقِلَّ الرِّجالُ وتكثُرَ النِّسَاءُ حَتَّى يَكُونَ لِخَمْسِينَ امْرَأَةً الْقَيِّمُ الْوَاحِدُ» . وَفِي رِوَايَةٍ: «يَقِلُّ الْعِلْمُ وَيَظْهَرُ الْجَهْلُ» . مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ

متفق علیہ ، رواہ البخاری (80) و مسلم (9 / 2671 و الروایۃ الثانیۃ : 8 / 2671)، (6785 و 6786) ۔
(مُتَّفق عَلَيْهِ)

عن أنس قال: سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول: «إن من أشراط الساعة أن يرفع العلم ويكثر الجهل ويكثر الزنا ويكثر شرب الخمر ويقل الرجال وتكثر النساء حتى يكون لخمسين امرأة القيم الواحد» . وفي رواية: «يقل العلم ويظهر الجهل» . متفق عليه

ব্যাখ্যা: এখানে ‘ইলম উঠে যাওয়া দ্বারা উদ্দেশ্য হলো ‘ইলমের বাহকের মৃত্যুবরণ করা। বুখারীর অপর বর্ণনায় রয়েছে যে, বিদ্যা কমে যাবে। এ ব্যাপারে হাফিয ‘আসক্বালানী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, বিদ্যা কমে যাওয়ার বিষয়টি প্রথম সংঘটিত হবে, এরপর বিদ্বানের মৃত্যুবরণের মাধ্যমে বিদ্যা উঠে যাবে (আল্লাহ সর্বাধিক জ্ঞাত)। (তুহফাতুল আহওয়াযী ৬ষ্ঠ খণ্ড, ৪৫৬ পৃ.)।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৭: ফিতনাহ (كتاب الْفِتَن)

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - কিয়ামতের আলামত

৫৪৩৮-[২] জাবির ইবনু সামুরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নবী (সা.) -কে বলতে শুনেছি, কিয়ামতের আগে বহু মিথ্যাবাদীর আগমন ঘটবে। অতএব তোমরা তাদের হতে সতর্ক থাক। (মুসলিম)

الفصل الاول ( بَاب أَشْرَاط السَّاعَة)

وَعَنْ جَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «إِنَّ بَيْنَ يَدَيِ السَّاعَةِ كَذَّابِينَ فَاحْذَرُوهُمْ» . رَوَاهُ مُسْلِمٌ

رواہ مسلم (10 / 1822)، (4711) ۔
(صَحِيح)

وعن جابر بن سمرة قال: سمعت رسول النبي صلى الله عليه وسلم يقول: «إن بين يدي الساعة كذابين فاحذروهم» . رواه مسلم

ব্যাখ্যা: আল মুজাহির (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, উল্লেখিত হাদীস দ্বারা উদ্দেশ্য হলো অজ্ঞতা বেড়ে যাওয়া, জ্ঞান কমে যাওয়া এবং হাদীস জালকারীদের আগমন ঘটা, আর সেগুলোকে রাসূলের নামে চালিয়ে দেয়া। এছাড়া এটাও উদ্দেশ্য হতে পারে যে, মিথ্যা নবী দাবিদারের আত্মপ্রকাশ ঘটবে যেমন নবী (সা.) -এর মৃত্যু পরবর্তী সময়ে হয়েছিল। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৭: ফিতনাহ (كتاب الْفِتَن)

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - কিয়ামতের আলামত

৫৪৩৯-[৩] আবু হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন নবী (সা.) লোকেদের সাথে কথা বলছিলেন। এমন সময় এক বেদুইন এসে প্রশ্ন করল, কিয়ামত কখন হবে? উত্তরে তিনি (সা.) বললেন, আমানত যখন নষ্ট করা হবে তখন কিয়ামতের প্রতীক্ষা কর। লোকটি প্রশ্ন করল, তা কিভাবে নষ্ট করা হবে? তিনি (সা.) বললেন, কাজের দায়িত্ব যখন অনুপযুক্ত লোককে দেয়া হবে তখন কিয়ামতের প্রতীক্ষা কর। (বুখারী)

الفصل الاول ( بَاب أَشْرَاط السَّاعَة)

وَعَن أبي هريرةَ قَالَ: بَيْنَمَا كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُحَدِّثُ إِذْ جَاءَ أَعْرَابِيٌّ فَقَالَ: مَتَى السَّاعَةُ؟ قَالَ: «إِذَا ضُيِّعَتِ الْأَمَانَةُ فَانْتَظِرِ السَّاعَةَ» . قَالَ: كَيْفَ إِضَاعَتُهَا؟ قَالَ: «إِذَا وُسِّدَ الْأَمْرُ إِلَى غَيْرِ أَهْلِهِ فَانْتَظِرِ السَّاعَةَ» . رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ

رواہ البخاری (59) ۔
(صَحِيح)

وعن أبي هريرة قال: بينما كان النبي صلى الله عليه وسلم يحدث إذ جاء أعرابي فقال: متى الساعة؟ قال: «إذا ضيعت الأمانة فانتظر الساعة» . قال: كيف إضاعتها؟ قال: «إذا وسد الأمر إلى غير أهله فانتظر الساعة» . رواه البخاري

ব্যাখ্যা: (إِذَا وُسِّدَ) অর্থাৎ এটা মূলত বালিশ কিংবা গদি অর্থে ব্যবহৃত হয়। তখনকার আমীরগণ যখন বসতেন তখন গদির উপর বসতেন। আলোচ্য হাদীসে ক্ষমতার মসনদ বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ যখন ক্ষমতার মসনদ বা সিংহাসনটি অযোগ্যদের জন্য নির্ধারিত হবে তখনই কিয়ামতের সময় ঘনিয়ে আসবে। (ফাতহুল বারী ১ম খণ্ড, পৃ. ৪৫৮, হা. ৫৯)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৭: ফিতনাহ (كتاب الْفِتَن)

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - কিয়ামতের আলামত

৫৪৪০-[8] উক্ত রাবী [আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: কিয়ামত ততক্ষণ পর্যন্ত সংঘটিত হবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না ধন-সম্পদের প্রাচুর্য হবে এবং (পানির মতো) তা প্রবাহিত হতে থাকবে। এমনকি লোকেরা নিজেদের সম্পদের যাকাত বের করবে বটে, কিন্তু তা গ্রহণ করার মতো কোন লোক পাবে না। তিনি (সা.) আরো বলেছেন, কিয়ামতের আগে ’আরব ভূমি সুজলা সুফলা উদ্যান ও প্রবাহিত নদ-নদীতে পরিবর্তিত হয়ে যাবে। (মুসলিম)

সহীহ মুসলিম-এর অপর এক বর্ণনায় আছে, মদীনার জনবসতি তথা দালান-কোঠা ’ইহাব’ অথবা (বলেছেন,) ইয়াহাব’ নামক জায়গা পর্যন্ত পৌঁছে যাবে।

الفصل الاول ( بَاب أَشْرَاط السَّاعَة)

وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم: «لَا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى يَكْثُرَ الْمَالُ وَيَفِيضَ حَتَّى يُخْرِجَ الرَّجُلُ زَكَاةَ مَالِهِ فَلَا يَجِدُ أَحَدًا يَقْبَلُهَا مِنْهُ وَحَتَّى تَعُودَ أَرْضُ الْعَرَبِ مُرُوجًا وَأَنْهَارًا» رَوَاهُ مُسْلِمٌ. وَفِي رِوَايَة: قَالَ: «تبلغ المساكن إهَاب أَو يهاب»

رواہ مسلم (60 / 157 و الروایۃ الثانیۃ 43 / 2903)، (2339 و 7290) ۔
(صَحِيح)

وعنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «لا تقوم الساعة حتى يكثر المال ويفيض حتى يخرج الرجل زكاة ماله فلا يجد أحدا يقبلها منه وحتى تعود أرض العرب مروجا وأنهارا» رواه مسلم. وفي رواية: قال: «تبلغ المساكن إهاب أو يهاب»

ব্যাখ্যা: এটা এমনও হতে পারে যেমনটা ‘উমার ইবনু আবদুল আযীয-এর যামানায় ঘটেছিল। অতএব এটা কিয়ামতের আলামত নয়।
‘আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদীসে রয়েছে, নবী (সা.) বলেছেন: যদি তুমি দীর্ঘ হায়াত লাভ কর তবে অবশ্যই দেখতে পাবে যে, মানুষ দু হাত ভর্তি করে স্বর্ণ নিয়ে এটা দান করার জন্য দান গ্রহীতাকে অনুসন্ধান করবে।
যায়দ ইবনুল খত্ত্বাব-এর বর্ণনায় উত্তম সনদে বর্ণিত রয়েছে যে, তিনি বলেন, ‘উমার ইবনু আবদুল ‘আযীয-এর সময়কালে মানুষ এমন অবস্থায় উন্নীত হয়েছিল যে, লোকজন আমাদের কাছে অনেক সম্পদ নিয়ে এসে বলত, এগুলো সব গরীবদেরকে দান করে দিন। কিন্তু লোকজন গরীব লোক না পাওয়ার কারণে সম্পদগুলো ফিরিয়ে নিয়ে যেতেন। উমার ইবনু 'আবদুল আযীয (রহ.) লোকজনকে ধনী করে দিয়েছিলেন। (ফাতহুল বারী ১৩শ খণ্ড, ৪৫৯ পৃ., হা. ৭১২০)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৭: ফিতনাহ (كتاب الْفِتَن)

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - কিয়ামতের আলামত

৫৪৪১-[৫] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: শেষ যুগে এমন এক খলীফাহ (ইমাম) হবেন যিনি ধন-সম্পদ বণ্টন করবেন আর তা গণনাও করবেন না।

অপর এক বর্ণনায় আছে, তিনি বলেছেন, আমার উম্মতের শেষ যুগে এমন এক খলীফাহ হবেন যিনি মুষ্টি ভরে ধন-সম্পদ বিতরণ করবেন এবং গুণে গুণে দান করবেন না। (মুসলিম)

الفصل الاول ( بَاب أَشْرَاط السَّاعَة)

وَعَنْ جَابِرٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يَكُونُ فِي آخِرِ الزَّمَانِ خَلِيفَةٌ يُقَسِّمُ الْمَالَ وَلَا يَعُدُّهُ» . وَفِي رِوَايَةٍ: قَالَ: «يَكُونُ فِي آخِرِ أُمَّتِي خَلِيفَةٌ يَحْثِي الْمَالَ حَثْيًا وَلَا يَعُدُّهُ عَدًّا» . رَوَاهُ مُسْلِمٌ

رواہ مسلم (69 / 2914 و الروایۃ الثانیۃ 61 / 2913)، (7318 و 7317) ۔
(صَحِيح)

وعن جابر قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «يكون في آخر الزمان خليفة يقسم المال ولا يعده» . وفي رواية: قال: «يكون في آخر أمتي خليفة يحثي المال حثيا ولا يعده عدا» . رواه مسلم

ব্যাখ্যা: হাদীসে উল্লেখিত খলীফাহ্ ব্যক্তিগতভাবে অত্যন্ত উদার ও দানশীল হওয়ার পাশাপাশি, দিকবিদিক বিভিন্ন অঞ্চল বিজয় করার মাধ্যমে প্রচুর গনীমতপ্রাপ্ত হবেন বিধায় বেহিসাব দান করতে থাকবেন। (শারহুন নাবাবী ১ম খণ্ড, ৪৬১ পৃ., হা. ২৯২৪)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৭: ফিতনাহ (كتاب الْفِتَن)

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - কিয়ামতের আলামত

৫৪৪২-[৬] আবু হুরায়রাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: অদূর ভবিষ্যতে ফুরাত (ইউফ্রেটিস) নদী উন্মুক্ত হয়ে যাবে (শুকিয়ে যাবে এবং তার তলদেশ হতে স্বর্ণের খনি বের হবে। তখন সেখানে যে কেউ উপস্থিত হয়, সে যেন তা হতে গ্রহণ না করে। (বুখারী ও মুসলিম)

الفصل الاول ( بَاب أَشْرَاط السَّاعَة)

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يُوشِكُ الْفُرَاتُ أَنْ يَحْسِرَ عَنْ كَنْزٍ مِنْ ذَهَبٍ فَمَنْ حَضَرَ فَلَا يَأْخُذْ مِنْهُ شَيْئًا» . مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ

متفق علیہ ، رواہ البخاری (7119) و مسلم (30 / 2894)، (7274) ۔
(مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

وعن أبي هريرة قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «يوشك الفرات أن يحسر عن كنز من ذهب فمن حضر فلا يأخذ منه شيئا» . متفق عليه

ব্যাখ্যা: আলোচ্য হাদীসের সমর্থনে সহীহ মুসলিমে অন্যভাবে আবু হুরায়রাহ্ (রাঃ) -এর সূত্রে বর্ণিত রয়েছে যে, নবী (সা.) বলেছেন, জমিন তার বক্ষস্থিত সোনা-রূপা স্তম্ভের ন্যায় কলিজার টুকরাসহ বমি করে দিবে। অতঃপর হত্যাকারী এসে বলবে, আমি এর জন্যই খুন করেছিলাম। আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্নকারী এসে বলবে, এর জন্যই তো আমি আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করেছিলাম এবং তাদের হক নষ্ট করেছিলাম। চোর এসে বলবে, এসবের জন্যই তো আমার হাত কাটা হয়েছে। অতঃপর সকলেই ছেড়ে দিবে এবং কেউই এর থেকে কিছুই নিবে না। ইবনু মাজাহতে সাওবান (রাঃ)-এর সূত্রে বর্ণিত রয়েছে যে, তোমাদের মূল্যবান খনিজ সম্পদের নিকটে তিনজনকে হত্যা করা হবে। যারা প্রত্যেকেই খলীফার সন্তান। এ হাদীসটি ইমাম মাহদী আলায়হিস সালাম-এর ক্ষেত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হবে ইমাম মাহদী আলায়হিস সালাম-এর আত্মপ্রকাশের কাছাকাছি সময়ে এবং এটা ‘ঈসা আলায়হিস সালাম-এর আগমন ও আগুন বের হওয়ার পূর্বে সংঘটিত হবে। (ফাতহুল বারী ১৩শ খণ্ড, ৪৬২-৬৩ পৃ., হা. ৭১১৯)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৭: ফিতনাহ (كتاب الْفِتَن)

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - কিয়ামতের আলামত

৫৪৪৩-[৭] উক্ত রাবী [আবু হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: ফুরাত নদী তার তলদেশে রক্ষিত স্বর্ণের পাহাড় উন্মুক্ত না করা পর্যন্ত কিয়ামত সংঘটিত হবে না। উক্ত সম্পদ নিয়ে মানুষের মধ্যে মারাত্মক খুনাখুনি হবে। সে ফিতনায় শতকরা নিরানব্বই জন লোক নিহত হবে এবং তাদের প্রত্যেকেই বলবে, হয়তো আমি বেঁচে যাব (একাই সম্পদ ভোগ করব)। (মুসলিম)

الفصل الاول ( بَاب أَشْرَاط السَّاعَة)

وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لَا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى يَحْسِرَ الْفُرَاتُ عَنْ جَبَلٍ مِنْ ذَهَبٍ يَقْتَتِلُ النَّاسُ عَلَيْهِ فَيُقْتَلُ مَنْ كُلِّ مِائَةٍ تِسْعَةٌ وَتِسْعُونَ وَيَقُولُ كُلُّ رَجُلٍ مِنْهُمْ: لَعَلِّي أَكُونُ أَنَا الَّذِي أنجُو . رَوَاهُ مُسلم

رواہ مسلم (29 / 2894)، (7272) ۔
(صَحِيح)

وعنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: لا تقوم الساعة حتى يحسر الفرات عن جبل من ذهب يقتتل الناس عليه فيقتل من كل مائة تسعة وتسعون ويقول كل رجل منهم: لعلي أكون أنا الذي أنجو . رواه مسلم

ব্যাখ্যা: অর্থাৎ বিরাট মহামূল্যবান সোনার পাহাড় সমপরিমাণ সম্পদ। হতে পারে এটা পূর্বে উল্লেখিত সম্পদ হতে ভিন্ন এবং পাহাড়টাই সোনার খনি হিসেবে আবিষ্কৃত হবে। এখানে তাদের প্রত্যেকেরই দাবি হলো আমি মুক্তি পাব, অর্থাৎ তারা সকলেই সম্পদ পাওয়ার আশায় যুদ্ধ করবে এবং অবশিষ্টরা সম্পদ হস্তগত করার আশায় যুদ্ধ করতে থাকবে। তবে এটা অত্যন্ত নিকৃষ্টতর আশা যা আমলগুলো বিনষ্ট করবে। (মিরকাতুল মাফাতীহ ৮ম খণ্ড, ৭৯ পৃ.)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৭: ফিতনাহ (كتاب الْفِتَن)

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - কিয়ামতের আলামত

৫৪৪৪-[৮] উক্ত রাবী [আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: (এমন এক সময় আসবে যে,) জমিন তার কলিজার টুকরা বের করবে যা স্বর্ণ ও রৌপ্যের থামের মতো হবে। উক্ত সম্পদের নিকট কোন হত্যাকারী এসে (ঘৃণার সাথে) বলবে, হায়রে! ধন-সম্পদের জন্যই আমি (অন্যায়ভাবে) হত্যা করেছিলাম? অতঃপর আত্মীয়তা ছিন্নকারী এসে বলবে, এই সম্পদের জন্যই কি আমি আপন আত্মীয়স্বজনদের থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করেছিলাম? তারপর চোর এসে বলবে, এই সম্পদের জন্যই কি আমার হাত কাটা হয়েছে? অতঃপর তারা সকলেই উক্ত ধন-সম্পদ ছেড়ে চলে যাবে, কেউই তা হতে কিছুই গ্রহণ করবে না। (মুসলিম)

الفصل الاول ( بَاب أَشْرَاط السَّاعَة)

وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: تَقِيءُ الْأَرْضُ أَفْلَاذَ كَبِدِهَا أَمْثَالَ الْأُسْطُوَانَةِ مِنَ الذَّهَبِ وَالْفِضَّةِ فَيَجِيءُ الْقَاتِلُ فَيَقُولُ: فِي هَذَا قَتَلْتُ وَيَجِيءُ الْقَاطِعُ فَيَقُولُ: فِي هَذَا قَطَعْتُ رَحِمِي. وَيَجِيءُ السَّارِقُ فَيَقُولُ: فِي هَذَا قُطِعت يَدي ثمَّ يَد عونه فَلَا يَأْخُذُونَ من شَيْئا . رَوَاهُ مُسلم

رواہ مسلم (62 / 1013)، (2341) ۔
(صَحِيح)

وعنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: تقيء الأرض أفلاذ كبدها أمثال الأسطوانة من الذهب والفضة فيجيء القاتل فيقول: في هذا قتلت ويجيء القاطع فيقول: في هذا قطعت رحمي. ويجيء السارق فيقول: في هذا قطعت يدي ثم يد عونه فلا يأخذون من شيئا . رواه مسلم

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৭: ফিতনাহ (كتاب الْفِتَن)

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - কিয়ামতের আলামত

৫৪৪৫-[৯] উক্ত রাবী [আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: সেই সত্তার শপথ, যার হাতে আমার প্রাণ! দুনিয়া সে সময় পর্যন্ত শেষ হবে না যে পর্যন্ত না কোন লোক কবরের পার্শ্ব দিয়ে অতিক্রম করার সময় উক্ত কবরের উপরে গড়াগড়ি দিতে থাকবে এবং আকাঙ্ক্ষা ও অনুতাপের সাথে বলবে, হায়রে, কতই না ভালো হত, এ কবরবাসীর স্থানে যদি আমিই এ কবরের অধিবাসী হতাম? তার এ আকাঙ্ক্ষা দীনের প্রতি আগ্রহ প্রকাশার্থে হবে না; বরং দুনিয়ার বিপদ ও মুসীবতের তাড়নায় অধৈর্য হয়ে প্রকাশ করবে। (মুসলিম)

الفصل الاول ( بَاب أَشْرَاط السَّاعَة)

وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَا تَذْهَبُ الدُّنْيَا حَتَّى يَمُرَّ الرَّجُلُ عَلَى الْقَبْرِ فَيَتَمَرَّغُ عَلَيْهِ ويقولُ: يَا لَيْتَني مَكَانَ صَاحِبِ هَذَا الْقَبْرِ وَلَيْسَ بِهِ الدِّينُ إِلَّا الْبلَاء . رَوَاهُ مُسلم

رواہ مسلم (54 / 157)، (7302) ۔
(صَحِيح)

وعنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: والذي نفسي بيده لا تذهب الدنيا حتى يمر الرجل على القبر فيتمرغ عليه ويقول: يا ليتني مكان صاحب هذا القبر وليس به الدين إلا البلاء . رواه مسلم

ব্যাখ্যা: অন্য বর্ণনায় রয়েছে, তিনটি বিষয় যখন আত্মপ্রকাশ করবে তখন পূর্ব হতে যারা ঈমান আনয়ন করেনি এবং ঈমান সে অনুযায়ী সৎকাজ করেনি তাদের ঈমান কোন কাজে আসবে না। উক্ত তিনটি বিষয় হলো: ১. পশ্চিমাকাশে সূর্য উদিত হওয়া, ২. দাজ্জালের আত্মপ্রকাশ হওয়া এবং ৩. জমিনে প্রাণীর আত্মপ্রকাশ হওয়া।
কাযী ‘ইয়ায (রহিমাহুল্লাহ) বলেন: এ হাদীস আহলুস্ সুন্নাহ অনুসারীদের জন্য শী'আ ইসমাঈলিয়্যাহ্ বাতিনিয়্যাহ্ কর্তৃক ব্যাখ্যা ভ্রান্তবিরোধী দলীল। (শারহুন নাবাবী ২য় খণ্ড, ১৬৫ পৃ.)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৭: ফিতনাহ (كتاب الْفِتَن)

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - কিয়ামতের আলামত

৫৪৪৬-[১০] উক্ত রাবী আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: ততক্ষণ পর্যন্ত কিয়ামত সংঘটিত হবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত হিজায ভূমি থেকে একটি অগ্নি প্রকাশিত না হবে, (যার দরুন) বাসরায় অবস্থানরত উটের গলা পর্যন্ত আলোকিত হয়ে যাবে। (বুখারী ও মুসলিম)

الفصل الاول ( بَاب أَشْرَاط السَّاعَة)

وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى تَخْرُجَ نَارٌ مِنْ أَرْضِ الْحِجَازِ تُضِيءُ أعناقَ الإِبلِ ببُصْرى» . مُتَّفق عَلَيْهِ

متفق علیہ ، رواہ البخاری (7118) و مسلم (42 / 2902)، (7289) ۔
(مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

وعنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «لا تقوم الساعة حتى تخرج نار من أرض الحجاز تضيء أعناق الإبل ببصرى» . متفق عليه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৭: ফিতনাহ (كتاب الْفِتَن)

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - কিয়ামতের আলামত

৫৪৪৭-[১১] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: কিয়ামত আসার প্রথম নিদর্শন হলো, এমন এক আগুন বের হবে, তা মানুষদেরকে পূর্বদিক থেকে তাড়িয়ে পশ্চিমদিকে নিয়ে একত্রিত করবে। (বুখারী)

الفصل الاول ( بَاب أَشْرَاط السَّاعَة)

وَعَنْ أَنَسٍ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَوَّلُ أَشْرَاطِ السَّاعَةِ نَارٌ تَحْشُرُ النَّاسَ مِنَ الْمَشْرِقِ إِلَى الْمَغْرِبِ» . رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ

رواہ البخاری (3329) ۔
(صَحِيح)

وعن أنس أن رسول الله صلى الله عليه وسلم: «أول أشراط الساعة نار تحشر الناس من المشرق إلى المغرب» . رواه البخاري

ব্যাখ্যা: কুরতুবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন: হাদীসে উল্লেখিত আগুন মদীনার হিজায হতে ৬৫৪ হিজরীর জুমাদিউল আখির মাসের তিন তারিখ বুধবার দিবাগত রাত্রে প্রকাশ হয়েছিল আর এটা চলমান ছিল জুমু’আহ বার ফজর পর্যন্ত, অতঃপর তা শান্ত হয়ে যায়।
আর যে আগুন মানুষদেরকে একত্রিত করবে সেটা এ আগুন নয়। তবে খালিদ ইবনু সিনান আল ‘আব্বাসীর সময়ে এ ধরনের আগুন হিজাযের কোন কোন অঞ্চলে আত্মপ্রকাশ করেছিল।
ইবনু হাজার আল আসক্বালানী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন: উল্লেখিত দু’টি আগুনের একটি কিয়ামতের পূর্বে প্রকাশ পাবে এবং অপরটি কিয়ামতের একেবারে সন্নিকটে প্রকাশ পাবে এবং এর পরপরই কিয়ামত সংঘটিত হবে (আল্লাহ সর্বাধিক জ্ঞাত)। (ফাতহুল বারী ১৩শ খণ্ড, ৪৭১-৪৭২ পৃ., হা. ৭১১৮)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৭: ফিতনাহ (كتاب الْفِتَن)
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ১১ পর্যন্ত, সর্বমোট ১১ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে