পরিচ্ছেদঃ ৬. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - নিরাপত্তা (আশ্রয়) প্রদান

৩৯৮৪-[৮] ইবনু মাস্’ঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন ইবনু নাও্ওয়াহাহ্ ও ইবনু উসাল নামক দুই ব্যক্তি মুসায়লিমাহ্ কায্যাব-এর দূত হয়ে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট আসলেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাদেরকে জিজ্ঞেস করলেন, আমি যে আল্লাহর রসূল, তোমরা কি তা সাক্ষ্য দাও? তারা উভয়ে বলল, আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুসায়লিমাহ্ আল্লাহর রসূল। অতঃপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, বরং আমি আল্লাহ ও তার রসূলের প্রতি ঈমান এনেছি। তারপর বললেন, যদি কোনো দূতকে হত্যা করা আমার বিধান থাকত, তাহলে অবশ্যই আমি তোমাদেরকে হত্যা করতাম। ’আবদুল্লাহ বলেন, তখন হতে এ বিধি-বিধানই প্রচলিত রয়েছে যে, কোনো দূতকে হত্যা করা যায় না। (আহমাদ)[1]

عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ قَالَ: جَاءَ ابْنُ النَّوَّاحَةِ وَابْنُ أُثَالٍ رَسُولَا مُسَيْلِمَةَ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ لَهُمَا: «أَتَشْهَدَانِ أَنِّي رَسُولُ اللَّهِ؟» فَقَالَا: نَشْهَدُ أَنَّ مُسَيْلِمَةَ رَسُولَ اللَّهِ فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «آمَنْتُ بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ وَلَوْ كُنْتُ قَاتِلًا رَسُولًا لَقَتَلْتُكُمَا» . قَالَ عَبْدُ اللَّهِ: فَمَضَتِ السُّنَّةُ أَنَّ الرَّسول لَا يُقتَلُ. رَوَاهُ أَحْمد

عن ابن مسعود قال جاء ابن النواحة وابن اثال رسولا مسيلمة الى النبي صلى الله عليه وسلم فقال لهما اتشهدان اني رسول الله فقالا نشهد ان مسيلمة رسول الله فقال النبي صلى الله عليه وسلم امنت بالله ورسوله ولو كنت قاتلا رسولا لقتلتكما قال عبد الله فمضت السنة ان الرسول لا يقتل رواه احمد

ব্যাখ্যা: (فَقَالَ لَهُمَا : أَتَشْهَدَانِ أَنِّىْ رَسُوْلُ اللّٰهِ؟) আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেন তাদের মুসলিম হওয়ার সম্ভাবনা সত্ত্বেও এর মাধ্যমে তাদেরকে ইসলামের দিকে দা‘ওয়াত দেয়ার ইচ্ছা করেছেন।

(نَشْهَدُ أَنَّ مُسَيْلِمَةَ رَسُوْلَ اللّٰهِ) এর দ্বারা তারা উভয়ে উদ্দেশ্য করেছে যে, তারা মুসায়লিমার অনুসারীদের অন্তর্ভুক্ত, অন্য কারো অনুসারী নয়। ত্বীবী বলেনঃ এটা এমন এক উত্তর যা প্রশ্নের অনুকূল নয়, প্রকৃত বিষয়ের অনুকূল নয়। কেননা আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর (أَتَشْهَدَانِ أَنِّىْ رَسُوْلُ اللّٰهِ؟) এ উক্তি দ্বারা উদ্দেশ্য করেছেন যে, আমি রিসালাতের দাবী করেছি এবং মু‘জিযাহ্ দ্বারা তা সত্যায়ন করেছি। সুতরাং এ ব্যাপারে তোমরা স্বীকৃতি দাও। অতঃপর তাদের উক্তি, «نَشْهَدُ إِلَخْ» এ অর্থকে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে, কেননা তারা মু‘জিযার মাধ্যমে রিসালাত প্রমাণিত হওয়াকে অস্বীকার করেছে, তাই তাদের উত্তর ছিল নির্বোধীয় নিয়ম-নীতির অন্তর্ভুক্ত।

(فَقَالَ النَّبِىُّ ﷺ : «اٰمَنْتُ بِاللّٰهِ وَرُسُلِه) বাহ্যিকভাবে বুঝা যাচ্ছে এ সম্বন্ধ দ্বারা জাত উদ্দেশ্য। অন্য কপিতে وَرَسُوْلِه উক্তি একে সমর্থন করছে। ত্বীবী বলেন, এতে পূর্বোক্ত অর্থের দিকে ইঙ্গিত রয়েছে। যেখানে তিনি বলেননি, آمَنْتُ بِاللّٰهِ وَبِي আমি আল্লাহ ও আমার প্রতি ঈমান এনেছি। বরং বলেছেন وَرَسُوْلِه অর্থাৎ- যে ব্যক্তি রিসালাতের দাবী করবে এবং মু‘জিযাহ্ দ্বারা তা প্রমাণিত করবে, সে যেই হোক না কেন। এটা লেখকের কথা, অর্থাৎ- অন্যথায় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে পরে যে রিসালাতের দাবী করবে তার পক্ষে তা বৈধ হবে না। এ কারণে আমাদের কতিপয় (আহনাফ) বিদ্বান বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি রিসালাতের দাবীকারীকে বলবে মু‘জিযাহ্ প্রকাশ করুন, নিঃসন্দেহে সে কুফরী করবে’’। অতঃপর ত্বীবী বলেনঃ তারা যেন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক মুসায়লিমাকে রিসালাতে শরীক করার প্রত্যাশা করেছে। অতঃপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বয়ং সকল রসূলদের প্রতি ঈমান আনার কথা বলে দূতদ্বয়ের আশাকে নাকচ করে দিয়েছেন। অর্থাৎ- কোনো মতেই তাদের দাবী রিসালাতের অর্থের অন্তর্ভুক্ত নয়। সুতরাং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কথা বিজ্ঞপূর্ণ নিয়ম-নীতির অন্তর্ভুক্ত। রিসালাতে মুসায়লিমার অংশ থাকার ব্যাপারে তাদের আশাবাদী হওয়া ভাবার স্থান রয়েছে, কেননা যদি তারা ওটা উদ্দেশ্য করত, তাহলে অবশ্যই তারা আমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর রিসালাতকেও স্বীকৃতি দিত। আর আল্লাহ সর্বজ্ঞাত। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৯: জিহাদ (كتاب الجهاد) 19. Jihad