পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ

৩০৮৯-[১০] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তিন ব্যক্তিকে আল্লাহ তা’আলা অবশ্যই সাহায্য করেন। (প্রথমত) ক্রীতদাস- যে তার মুক্তিপণ পরিশোধ করে স্বাধীন হতে চায়। (দ্বিতীয়ত) বিবাহ উদ্যমী ব্যক্তি- যে স্বীয় চারিত্রিক পবিত্রতা রক্ষার উদ্দেশে হয়। (তৃতীয়ত) মুজাহিদণ্ড যে আল্লাহর পথে জিহাদ করে। (তিরমিযী, নাসায়ী, ইবনু মাজাহ)[1]

اَلْفَصْلُ الثَّانِىْ

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ثَلَاثَةٌ حَقٌّ عَلَى اللَّهِ عَوْنُهُمْ: الْمُكَاتَبُ الَّذِي يُرِيدُ الْأَدَاءَ وَالنَّاكِحُ الَّذِي يُرِيدُ الْعَفَافَ وَالْمُجَاهِدُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ وَالنَّسَائِيّ وَابْن مَاجَه

عن ابي هريرة ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال ثلاثة حق على الله عونهم المكاتب الذي يريد الاداء والناكح الذي يريد العفاف والمجاهد في سبيل الله رواه الترمذي والنساىي وابن ماجه

ব্যাখ্যা: ‘আল্লামা ত্বীবী (রহঃ) বলেনঃ উল্লেখিত বিষয়গুলোতে সাহায্যের ঘোষণার কারণ হলো, উল্লেখিত কাজগুলো খুব কঠিন, যা মানুষকে জটিলতায় ফেলে দেয়, যদি আল্লাহ তা‘আলা এ কাজগুলোর জন্য সাহায্যের ঘোষণা না দিতেন তবে মানুষ এ কাজগুলোর জন্য দাঁড়াত না। আর এগুলোর মধ্যে সব চাইতে কঠিন হলো, যিনা থেকে দূরে থাকা। কেননা এটা বহুগামিতা থেকে মানুষকে স্থিতিশীল চারিত্রিক চাহিদায় প্রবেশ করায়। অর্থাৎ- الْعَفَافَ মানুষকে একাধিক নারীর কাছে গমন করা থেকে বিরত রাখে। আর বহুগামিতা হলো, নিম্নশ্রেণীর চতুস্পদ প্রাণীর চাহিদা। সুতরাং যখন কেউ নিজেকে যিনা থেকে বেঁচে রাখবে সে আল্লাহর সাহায্য পাবে। আর আল্লাহ তা‘আলার সাহায্য তাকে মালায়িকার (ফেরেশতাদের) অবস্থানে উঠাবে এবং উঁচু আসনে সমাসীন করে। (তুহফাতুল আহওয়াযী ৫ম খন্ড, হাঃ ১৬৫৫; মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৩: বিবাহ (كتاب النكاح) 13. Marriage

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ

৩০৯০-[১১] উক্ত রাবী [আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন তোমাদের নিকট কেউ বিবাহের প্রস্তাব পাঠায়, তখন দীনদারী ও সচ্চরিত্রের মূল্যায়ন করে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ কর। যদি তোমার তা না কর, তাহলে দুনিয়াতে বড় রকমের ফিতনা-বিশৃঙ্খলা জন্ম দেবে। (তিরমিযী)[1]

اَلْفَصْلُ الثَّانِىْ

وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا خَطَبَ إِلَيْكُمْ مَنْ تَرْضَوْنَ دِينَهُ وَخُلُقَهُ فَزَوِّجُوهُ إِنْ لَا تَفْعَلُوهُ تَكُنْ فِتَنَةٌ فِي الْأَرْضِ وَفَسَادٌ عَرِيضٌ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ

وعنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا خطب اليكم من ترضون دينه وخلقه فزوجوه ان لا تفعلوه تكن فتنة في الارض وفساد عريض رواه الترمذي

ব্যাখ্যা: এটা এ কারণে যে, যদি তোমরা সম্পদ কিংবা অন্য দিক বিবেচনায় বিবাহ না দাও তবে অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাবে যে, অধিকাংশ মহিলা স্বামী ছাড়া থাকবে। অন্য দিকে অনেক পুরুষ-ই স্ত্রী ছাড়া থেকে যাবে। এর ফলে যিনা-ব্যভিচারের মাধ্যমে ফিতনা-ফাসাদ সৃষ্টি হয়ে যাবে এবং কখনও কখনও এ বিষয় নিয়ে অভিভাবকগণ বিপাকে পড়বেন। আর বংশ বিস্তার বন্ধ হয়ে যাবে এবং মীমাংসার ও সৃষ্ট ফিতনা থেকে মুক্তির সম্ভাবনাক্রমেই ক্ষীণ হয়ে যাবে।

‘আল্লামা ত্বীবী (রহঃ) বলেনঃ আলোচ্য হাদীস ইমাম মালিক (রহঃ)-এর মতের স্বপক্ষে দলীল। তিনি বলেন, দীন ব্যতীত অন্য কোনো বিষয়ে কুফু (সমতা) প্রযোজ্য নয়। জুমহূর ‘উলামাগণের মতে চারটি বিষয়ে কুফু লক্ষ্যণীয়- যথা (১) দীনদারিত্ব (২) স্বাধীন হওয়া (৩) বংশ (৪) কর্ম অর্থাৎ কর্ম করে খেতে পারবে কিনা। তবে মহিলা কিংবা তার অভিভাবক যদি কুফু বা সমতা ছাড়াই বিবাহে রাজী হয় তবে বিবাহ সঠিক হবে। (তুহফাতুল আহওয়াযী ৩য় খন্ড, হাঃ ১০৮৪; মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৩: বিবাহ (كتاب النكاح) 13. Marriage

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ

৩০৯১-[১২] মা’ক্বিল ইবনু ইয়াসার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা বিবাহ কর স্বামীভক্তি ও অধিক সন্তান প্রসবকারিণীকে। কেননা, (কিয়ামত দিবসে) তোমাদের সংখ্যাধিক্যের গর্ব অন্যান্য উম্মাতের উপর বিজয় প্রকাশ করতে চাই। (আবূ দাঊদ ও নাসায়ী)[1]

اَلْفَصْلُ الثَّانِىْ

وَعَنْ مَعْقِلِ بْنِ يَسَارٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «تَزَوَّجُوا الْوَدُودَ الْوَلُودَ فَإِنِّي مُكَاثِرٌ بِكُمُ الْأُمَم» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَالنَّسَائِيّ

وعن معقل بن يسار قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم تزوجوا الودود الولود فاني مكاثر بكم الامم رواه ابو داود والنساىي

ব্যাখ্যা: আলোচ্য হাদীসে উল্লেখিত الْوَدُودَ (আল ওয়াদূদ) হলো, যে মহিলা তার স্বামীকে বেশী ভালোবাসে তাকে ওয়াদূদ বলা হয়। আর الْوَلُودَ (আল ওয়ালূদ) বলতে সে নারীকে বুঝায়, যে অধিক সন্তান জন্ম দেয়। বিবাহের জন্য পাত্রী যাচাইয়ের ক্ষেত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ দু’টো গুণ নির্দিষ্ট করে উল্লেখ করেছেন। এর কারণ হলো, অধিক সন্তান জন্মাদানে সামর্থ্যবান নারী যদি প্রেমবিনয়ী না হয়, তবে স্বামী তার দিকে আকৃষ্ট হবে না। আবার প্রেমময়ী নারী যদি সন্তান জন্ম না দিতে পারে তাহলে মূল উদ্দেশ্যই অর্জন হবে না। আর জন্মহার বৃদ্ধির মাধ্যমে একটি জাতি বৃহৎ জাতিকে পরিণত হতে পারে। উল্লেখিত দু’টো গুণই কুমারী নারীর মাঝে বিদ্যমান বলে জানা যায়। (‘আওনুল মা‘বূদ ৪র্থ খন্ড, হাঃ ২০৪৯)


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৩: বিবাহ (كتاب النكاح) 13. Marriage

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ

৩০৯২-[১৩] ’আব্দুর রহমান ইবনু সালিম ইবনু ’উতবাহ্ ইবনু ’উওয়াইম ইবনু সা’ইদাহ্ আল আনসারী তাঁর পিতা, তিনি তাঁর দাদা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা কুমারী রমণী বিয়ে কর, কেননা কুমারী রমণীর মুখের মধুময়তা বেশি, অধিক গর্ভধারণযোগ্য এবং অল্পতুষ্টের অধিকারী। (ইবনু মাজাহ মুরসালসূত্রে)[1]

اَلْفَصْلُ الثَّانِىْ

وَعَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ سَالِمِ بْنِ عُتْبَةَ بْنِ عُوَيْمِ بْنِ سَاعِدَةَ الْأَنْصَارِيِّ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «عَلَيْكُمْ بِالْأَبْكَارِ فَإِنَّهُنَّ أَعْذَبُ أَفْوَاهًا وَأَنْتَقُ أَرْحَامًا وَأَرْضَى بِالْيَسِيرِ» . رَوَاهُ ابْنُ مَاجَه مُرْسلا

وعن عبد الرحمن بن سالم بن عتبة بن عويم بن ساعدة الانصاري عن ابيه عن جده قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم عليكم بالابكار فانهن اعذب افواها وانتق ارحاما وارضى باليسير رواه ابن ماجه مرسلا

ব্যাখ্যাঃ এখানে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুমারী মেয়েকে বিবাহ করার প্রতি উৎসাহ দিয়েছেন। কেননা তারা অধিক মিষ্টভাষী হয়ে থাকে, যেমন- মহান আল্লাহ বলেনঃ هٰؤُلَاءِ بَنَاتِي هُنَّ أَطْهَرُ لَكُمْ ‘‘তারা আমার সৃষ্ট কন্যা, তারা তোমাদের জন্য অধিক পবিত্র।’’ (সূরা হূদ ১১ : ৭৮)

 


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৩: বিবাহ (كتاب النكاح) 13. Marriage
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৪ পর্যন্ত, সর্বমোট ৪ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে