পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - নিষিদ্ধ বস্তু ক্রয়-বিক্রয়

২৮৩৪-[১] ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ’মুযাবানাহ্’ জাতীয় ক্রয়-বিক্রয় হতে নিষেধ করেছেন। আর তা হলো বাগানের মধ্যে রেখে ফল বিক্রি করা। গাছ হতে পেড়ে তা শুকালে কি পরিমাণ খুরমা হবে ওই পরিমাণ খুরমা দিয়ে এর বিনিময়ে গাছের খেজুর গাছে রেখেই অনুমান করে ক্রয়-বিক্রয় করা। আর যদি আঙ্গুর হয়, কিসমিসের বিনিময়ে অনুমান করে ক্রয়-বিক্রয় করা। মুসলিম-এর বর্ণনায় ক্ষেতের শস্যদানার বেলায়ও এভাবে ক্রয়-বিক্রয় করা নিষেধ। (বুখারী, মুসলিম)

মুত্তাফাকুন ’আলায়হি-এর অন্য এক বর্ণনায় আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুযাবানাহ্ ধরনের ক্রয়-বিক্রয় করতে নিষেধ করেছেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আরো বলেছেন, (খেজুর) গাছের মাথায় যে খেজুর রয়েছে তা নির্দিষ্ট পরিমাপ করে খেজুরের বিনিময়ে বিক্রয় করা হলো ’মুযাবানাহ্’। যদি বেশি হয় তবে তা আমার (বিক্রেতার লাভে) হবে। যদি কম হয় তবে তা আমারই ক্ষতি হিসেবে পরিগণিত হবে (অর্থাৎ- এর লাভ-ক্ষতি আমারই হবে)। (বুখারী, মুসলিম)[1]

بَابُ الْمَنْهِىِّ عَنْهَا مِنَ الْبُيُوْعِ

عَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنِ الْمُزَابَنَةِ: أَنْ يَبِيع تمر حَائِطِهِ إِنْ كَانَ نَخْلًا بِتَمْرٍ كَيْلَا وَإِنْ كَانَ كرْماً أنْ يَبيعَه زبيبِ كَيْلَا أَوْ كَانَ وَعِنْدَ مُسْلِمٍ وَإِنْ كَانَ زَرْعًا أَنْ يَبِيعَهُ بِكَيْلِ طَعَامٍ نَهَى عَنْ ذلكَ كُله. مُتَّفق عَلَيْهِ. وَفِي رِوَايَةٍ لَهُمَا: نَهَى عَنِ الْمُزَابَنَةِ قَالَ: والمُزابنَة: أنْ يُباعَ مَا فِي رُؤوسِ النَّخلِ بتمْرٍ بكيلٍ مُسمَّىً إِنْ زادَ فعلي وَإِن نقص فعلي)

عن ابن عمر قال نهى رسول الله صلى الله عليه وسلم عن المزابنة ان يبيع تمر حاىطه ان كان نخلا بتمر كيلا وان كان كرما ان يبيعه زبيب كيلا او كان وعند مسلم وان كان زرعا ان يبيعه بكيل طعام نهى عن ذلك كله متفق عليه وفي رواية لهما نهى عن المزابنة قال والمزابنة ان يباع ما في رووس النخل بتمر بكيل مسمى ان زاد فعلي وان نقص فعلي

ব্যাখ্যা: (نَهٰى رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ عَنِ الْمُزَابَنَةِ) ‘‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুযাবানাহ্ ধরনের ক্রয়-বিক্রয় নিষেধ করেছেন।’’ গাছের তাজা খেজুর ঘরের শুকনা খেজুরের বিনিময়ে বেচা-কেনা করা। অনুরূপ গাছের তাজা আঙ্গুরের বিনিময়ে ঘরের শুকনা আঙ্গুর তথা কিসমিসের বিনিময়ে বিক্রয় করা অথবা ক্ষেতের ফসলের বিনিময়ে ঘরের ফসল বিক্রয় করা। এ ধরনের বেচা-কেনাকে মুযাবানাহ্ বলা হয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ ধরনের বেচা-কেনা করতে নিষেধ করেছেন। কারণ গাছের ফল ও ক্ষেতের ফসলের পরিমাণ অনির্দিষ্ট আর ঘরের ফল ও ফসলের পরিমাণ নির্দিষ্ট। নির্দিষ্টের বিনিময়ে অনির্দিষ্টের বেচা-কেনা হারাম। তাই মুযাবানাহ্ হারাম।
(ফাতহুল বারী ৪র্থ খন্ড, হা ২২০৫)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১২: ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা) (كتاب البيوع) 12. Business Transactions

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - নিষিদ্ধ বস্তু ক্রয়-বিক্রয়

২৮৩৫-[২] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুখাবারাহ্, মুহাকালাহ্ ও মুযাবানাহ্ করতে নিষেধ করেছেন। ’মুহাকালাহ্’ হলো ক্ষেতের শস্য একশ’ ফুরক্ব (প্রায় বিশ মণ প্রস্তুতকৃত) গমের বিনিময়ে বিক্রি করা। ’মুযাবানাহ্’ হলো খেজুর গাছের মাথায় যে খেজুর রয়েছে, তা কর্তিত বিশ মণ খুরমার বিনিময়ে বিক্রি করা। ’মুখাবারাহ্’ অর্থ হলো এক-তৃতীয়াংশ বা এক-চতুর্থাংশ শস্যের বিনিময়ে ক্ষেত ইজারা (বর্গা) দেয়া। (মুসলিম)[1]

بَابُ الْمَنْهِىِّ عَنْهَا مِنَ الْبُيُوْعِ

وَعَنْ جَابِرٍ قَالَ: نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنِ الْمُخَابَرَةِ وَالْمُحَاقَلَةِ وَالْمُزَابَنَةِ وَالْمُحَاقَلَةُ: أَنْ يَبِيعَ الرَّجُلُ الزَّرْعَ بِمِائَةِ فَرَقٍ حِنطةً والمزابنةُ: أنْ يبيعَ التمْرَ فِي رؤوسِ النَّخْلِ بِمِائَةِ فَرَقٍ وَالْمُخَابَرَةُ: كِرَاءُ الْأَرْضِ بِالثُّلُثِ والرُّبُعِ. رَوَاهُ مُسلم

وعن جابر قال نهى رسول الله صلى الله عليه وسلم عن المخابرة والمحاقلة والمزابنة والمحاقلة ان يبيع الرجل الزرع بماىة فرق حنطة والمزابنة ان يبيع التمر في رووس النخل بماىة فرق والمخابرة كراء الارض بالثلث والربع رواه مسلم

ব্যাখ্যা: (نَهٰى رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ عَنِ الْمُخَابَرَةِ وَالْمُحَاقَلَةِ) ‘‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুখাবারাহ্ ও মুহাকালাহ্ নিষেধ করেছেন।’’ মুখাবারাহ্ বলা হয় ঐ বর্গা চাষকে যাতে চাষী নিজ থেকে বীজ দিয়ে অন্যের জমি চাষ করে। বিনিময়ে সে চাষী জমিনের উৎপাদিত ফসলের এক-চতুর্থাংশ অথবা এক-তৃতীয়াংশ চাষীকে দিবে অথবা জমির এক অংশের ফসল চাষী নিবে এবং অন্য অংশের ফসল জমির মালিক নিবে। ইমাম আবূ হানীফাহ্ (রহঃ)-এর মতে বর্গাচাষ বৈধ নয়। পক্ষান্তরে জুমহূর ‘উলামাগণের মতে জমির নির্দিষ্ট অংশের ফসল চাষীকে না দিয়ে বরং পূর্ণ জমিতে উৎপাদিত ফসলের একটি নির্দিষ্ট চাষীকে দেয়া হলে এ ভাগ চাষ বৈধ। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খায়বারের জমি খায়বারবাসীদের ভাগে চাষ করিয়েছেন এবং উৎপাদিত অর্ধেকাংশ তিনি নিয়েছেন যা সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। তবে অত্র হাদীসে নিষিদ্ধ মুখাবারাহ্ দ্বারা উদ্দেশ্য চাষীকে জমির নির্দিষ্ট অংশের ফসল দেয়া। কেননা এতে এক অংশের ফসল কম হওয়া অথবা ফসল না হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। (শারহে মুসলিম ৯/১০ খন্ড, হাঃ ১৫৩৬)

মুহাকালাহ্ নিষিদ্ধ মুযাবানার একটি প্রকার আর তা হচ্ছে ক্ষেতের ফসল ঘরের ফসলের বিনিময়ে বেচা-কেনা করা। যার আলোচনা পূর্বের হাদীসে গত হয়েছে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১২: ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা) (كتاب البيوع) 12. Business Transactions

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - নিষিদ্ধ বস্তু ক্রয়-বিক্রয়

২৮৩৬-[৩] উক্ত রাবী [জাবির (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করেছেন মুহা-কলাহ্, মুযা-বানাহ্, মুখা-বারাহ্ ও মু’আ-ওয়ামাহ্ হতে এবং নিষেধ করেছেন (অনির্দিষ্টভাবে) কিছু অংশ বাদ দিতেও। আর ’আরা-ইয়া’-কে জায়িয করেছেন। (মুসলিম)[1]

بَابُ الْمَنْهِىِّ عَنْهَا مِنَ الْبُيُوْعِ

وَعَنْهُ قَالَ: نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنِ الْمُحَاقَلَةِ وَالْمُزَابَنَةِ وَالْمُخَابَرَةِ وَالْمُعَاوَمَةِ وَعَنِ الثُّنْيَا وَرَخَّصَ فِي الْعَرَايَا. رَوَاهُ مُسْلِمٌ

وعنه قال نهى رسول الله صلى الله عليه وسلم عن المحاقلة والمزابنة والمخابرة والمعاومة وعن الثنيا ورخص في العرايا رواه مسلم

ব্যাখ্যা: [ইমাম আহমাদ (রহঃ)-এর মতে عَرَايَا (‘আরা-ইয়া-) হলো দানকৃত খেজুর বৃক্ষ হতে আহরণকৃত খেজুর; অর্থাৎ- এক ব্যক্তি কোনো একটি বৃক্ষের খেজুর দান করার পর এ ব্যক্তি ফলগুলোকে দানকারী ব্যতীত অন্যের নিকট বিক্রয় করা। (সম্পাদক)]

এখানে (مُعَاوَمَةِ) মু‘আ-ওয়ামাহ্ (এটি জাহিলী যুগের এক ধরনের ক্রয়-বিক্রয়)। গাছের খেজুর বিক্রি করা অথবা ২-৩ কিংবা ততোধিক বয়সী গাছ বিক্রি করা তাতে ফল ধরার পূর্বেই, অর্থাৎ গাছে ফল আসার আগেই গাছের সাথে সম্ভাব্য ফলের দামসহ গাছ বিক্রি করাকে মু‘আওয়ামাহ্ বলা হয়। এ ধরনের লেনদেন হারাম। কারণ কোনো বস্তু সৃষ্টি হওয়ার আগেই তা বিক্রি করা পেটে সন্তান আসার পূর্বেই উক্ত সন্তানকে বিক্রি করার নামান্তর।

হাদীসে উল্লেখিত (اَلثُّنْيَا) আস্ সুন্ইয়া- এটি এক ধরনের ক্রয়-বিক্রয়। মুহিববুস্ (রহঃ) বলেনঃ অনির্ধারিত অংশকে আলাদা করে কোনো খেজুর বাগান বিক্রি করাকে আস্ সুন্ইয়া- বলা হয়। এ ধরনের ক্রয়-বিক্রয় বিক্রিত বস্তু অজ্ঞাত থাকার কারণে তা হারাম। তবে ‘আরা-ইয়া লেনদেন বৈধ। মালিক কর্তৃক কোনো খেজুর গাছ ফল খাওয়ার জন্য অন্যকে দান করাকে ‘আরা-ইয়া’ বলা হয়।

ইমাম নববী (রহঃ) বলেনঃ অনুমানের ভিত্তিতে কয়েকটি খেজুরগাছ এ বলে বিক্রি করা যে, গাছে যতগুলো পাকা খেজুর আছে তা শুকালে তিন সা‘ পরিমাণ খুরমা হবে। আর এ তিন সা‘ পরিমাণ খুরমার দাম ধরে মালিক অন্যের কাছে বাগানের কয়েকটি খেজুর গাছ বিক্রি করে, আর ক্রেতা ও বিক্রেতা একই বৈঠকে তা হস্তগত করে এবং এতে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েই সমত্মুষ্ট থাকে। তবে এ ধরনের ক্রয়-বিক্রয়ে দ্রব্য পাঁচ ওয়াসাকের কম হতে হবে। এর বেশি হলে তা অবৈধ হবে।

তবে পাঁচ ওয়াসাকের বৈধতার ব্যাপারে ইমাম শাফি‘ঈ (রহঃ)-এর দু’টি মত আছে। তার কিছু মত হলো পাঁচ ওয়াসাকের ‘আরিয়্যাহ্ লেন-দেন জায়িয (এক ওয়াসাক পরিমাণ ৬০ সা‘ = ১৫০ কেজি বা তিন মণ ৩০ কেজি) কারণ পাকা খেজুরের বিনিময়ে খুরমা বিক্রি হারাম। কিন্তু ‘আরিয়্যাহ্ পদ্ধতিতে এমনটি হয় না। আর ‘আরিয়্যার ব্যাপারে বৈধতাও রয়েছে এবং এটি ধনী-গরীব সবার ক্ষেত্রেই বৈধ, আর এটাই সর্বাধিক বিশুদ্ধ মত। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১২: ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা) (كتاب البيوع) 12. Business Transactions

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - নিষিদ্ধ বস্তু ক্রয়-বিক্রয়

২৮৩৭-[৪] সাহল ইবনু আবূ হাসমাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রস্তুতকৃত খুরমার বিনিময়ে (গাছে বিদ্যমান রেখে) খেজুর বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) অবশ্য ’আরা-ইয়া বিক্রির অনুমতি দিয়েছেন। ’আরা-ইয়া’র ফলকেই অনুমান করে বিক্রি করে সেই অনুমান অনুযায়ী খুরমা দিবে। ’আরা-ইয়া’র ফল ক্রেতা তা পাকা ও তাজা অবস্থায় খাবে। (বুখারী, মুসলিম)[1]

بَابُ الْمَنْهِىِّ عَنْهَا مِنَ الْبُيُوْعِ

وَعَنْ سَهْلِ بْنِ أَبِي حَثْمَةَ قَالَ: نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَن بيعِ التمْر بالتمْرِ إِلَّا أَنَّهُ رَخَّصَ فِي الْعَرِيَّةِ أَنْ تُبَاعَ بِخَرْصِهَا تَمْرًا يَأْكُلُهَا أَهْلُهَا رُطَبًا

وعن سهل بن ابي حثمة قال نهى رسول الله صلى الله عليه وسلم عن بيع التمر بالتمر الا انه رخص في العرية ان تباع بخرصها تمرا ياكلها اهلها رطبا

ব্যাখ্যা: জুমহূর ‘উলামাগণের মতে আল ‘আরিয়্যাহ্ হলো মালিক কর্তৃক খেজুর বাগানের মধ্য হতে কয়েকটি খেজুর গাছ অন্যকে ফল খাওয়ার জন্য দান করাকে ‘আরা-ইয়া বলা হয়। ‘আল্লামা ত্বীবী (রহঃ) বলেনঃ এটি শারী‘আতসম্মত। কারণ ‘আরা-ইয়া মুযাবানাহ্ হতে সম্পূর্ণ ভিন্ন। কারণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কথায় খুরমার বিনিময়ে ফল বিক্রি করাকে মুযাবানাহ্ বলা হয়। (মিরকাতুল মাফাতীহ- ৬/৭২ পৃঃ)

সহীহুল বুখারীর অন্য বর্ণনায় রয়েছে, (رخص لهم فى بيع العرايا) আর সেখানে ইয়াহ্ইয়া বিন সা‘ঈদ ও আহলে মক্কা (ইবনু ‘উয়াইনাহ্)-এর বর্ণনার মাঝে কিছু ভিন্নতা দেখা যায়। ইয়াহ্ইয়া বিন সা‘ঈদ-এর বর্ণনায় তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ‘আরা-ইয়া ধরনের কেনা-বেচাকে অনুমানের মাধ্যমে এবং মালিকের ভক্ষণ করার মাধ্যমে নির্দিষ্ট করেছেন। (যেমন পূর্বের হাদীসের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে) কিন্তু ইবনু ‘উয়াইনাহ্ -এর বর্ণনায় (নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ‘আরা-ইয়া কেনা-বেচায় মুত্বলাকভাবে (শর্তহীনভাবে) অনুমোদন দিয়েছেন। কোনো নির্দিষ্ট করেননি।

হাফিয ইবনু হাজার ‘আসকালানী (রহঃ) বলেনঃ ইবনু ‘উয়াইনাহ্-এর বর্ণনাটি উল্লেখিত হাদীসের অনুরূপ, যা তিনি ইবনু জুরায়জ থেকে বর্ণনা করেছেন, ইবনু জুরায়জ ‘আত্বা থেকে, আর ‘আত্বা বর্ণনা করেছেন জাবির (রাঃ) থেকে। (ফাতহুল বারী ৪র্থ খন্ড, পৃঃ ৪৪৮)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১২: ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা) (كتاب البيوع) 12. Business Transactions

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - নিষিদ্ধ বস্তু ক্রয়-বিক্রয়

২৮৩৮-[৫] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ’আরা-ইয়া’ জাতীয় ক্রয় বিক্রয়ে- ফলের অনুমানে খুরমার বিনিময়ে অনুমতি দিয়েছেন। যা সাধারণত পাঁচ আওসুক-এর কম হয়ে থাকে, অথবা পাঁচ আওসুক-এর মধ্যে হয়ে থাকে। দাঊদ ইবনু হুসায়ন তা সন্দেহে করেছেন। (বুখারী, মুসলিম)[1]

بَابُ الْمَنْهِىِّ عَنْهَا مِنَ الْبُيُوْعِ

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَرْخَصَ فِي بَيْعِ الْعَرَايَا بِخَرْصِهَا مِنَ التَّمْرِ فِيمَا دُونَ خَمْسَة أوسق أَو خَمْسَة أوسق شكّ دَاوُد ابْن الْحصين

وعن ابي هريرة ان رسول الله صلى الله عليه وسلم ارخص في بيع العرايا بخرصها من التمر فيما دون خمسة اوسق او خمسة اوسق شك داود ابن الحصين

ব্যাখ্যা: অপর নুসখাতে (অনুলিপিতে) (رَخَّصَ) তাশদীদ যোগে রয়েছে। ‘আল্লামা ত্বীবী (রহঃ) বলেন, হাদীসে উল্লেখিত بِخَرْصِهَا এর بِا বর্ণটি সাবাবিয়্যা বা কারণবাচক বুঝাতে এসেছে। অর্থাৎ- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাজা খেজুর খুরমার বিনিময়ে অনুমানের মাধ্যমে লেনদেন করার অনুমোদন দিয়েছেন। যদি তা পাঁচ ওয়াসাকের কম হয়। সুতরাং পাঁচ ওয়াসাকের বেশী হলে এরূপ কেনা-বেচা হারাম হবে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১২: ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা) (كتاب البيوع) 12. Business Transactions

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - নিষিদ্ধ বস্তু ক্রয়-বিক্রয়

২৮৩৯-[৬] ’আব্দুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিক্রয়কারী ও ক্রেতাকে ক্রয়-বিক্রয় করতে নিষেধ করেছেন যতদিন পর্যন্ত গাছের ফল (খাবার বা কাজে লাগানোর) উপযুক্ত না হবে। (বুখারী, মুসলিম)[1]

মুসলিম-এর অন্য এক বর্ণনায় রয়েছে, খেজুরে যতদিন পর্যন্ত লাল বা হলুদ বর্ণ না আসে এবং শীষ জাতীয় শস্য (গম ও যব প্রভৃতি) বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন (যতক্ষণ পর্যন্ত সম্পূর্ণরূপে পেকে শুকিয়ে সাদা না হয়ে যায়)। আর কোনো প্রকার মোড়কে নষ্ট হওয়া থেকে আশঙ্কামুক্ত না হয়ে যায়, অর্থাৎ- ব্যাধি হতে মুক্ত থাকতে হবে।

بَابُ الْمَنْهِىِّ عَنْهَا مِنَ الْبُيُوْعِ

وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ: نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ بَيْعِ الثِّمَارِ حَتَّى يَبْدُوَ صَلَاحُهَا نَهَى الْبَائِعَ وَالْمُشْتَرِي. مُتَّفِقٌ عَلَيْهِ
وَفِي رِوَايَةٍ لِمُسْلِمٍ: نَهَى عَنْ بَيْعِ النَّخْلِ حَتَّى تَزْهُوَ وَعَنِ السنبل حَتَّى يبيض ويأمن العاهة

وعن عبد الله بن عمر نهى رسول الله صلى الله عليه وسلم عن بيع الثمار حتى يبدو صلاحها نهى الباىع والمشتري متفق عليهوفي رواية لمسلم نهى عن بيع النخل حتى تزهو وعن السنبل حتى يبيض ويامن العاهة

ব্যাখ্যা: আলোচ্য হাদীস থেকে বুঝা যায় যে, গাছের ফল পরিপক্ক হওয়ার পূর্বেই গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় বিক্রয় করা জায়িয নেই। আর এ মর্মে ইবনু ‘আব্বাস, জাবির, আবূ হুরায়রাহ্, যায়দ বিন সাবিত, আবূ সা‘ঈদ আল খুদরী এবং ‘আয়িশাহ্ প্রমুখগণের বর্ণনা রয়েছে। কারণ গাছের অপরিপক্ক ফল বিনষ্ট হওয়া থেকে মুক্ত নয়। যখন গাছের ফল নষ্ট হয়ে যাবে তখন তো ক্রেতার জন্য কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না। (মিরকাতুল মাফাতীহ)

জুমহূর ‘উলামাগণ এ হাদীস থেকে দলীল গ্রহণ করেছেন যে, কাঁচা খেজুরের বিনিময় পাকা খেজুর কেনা-বেচা করা হারাম, যদি ওযনে সমান হয়। কারণ সমতা তখনই গণ্য হবে যখন ফল পরিপক্ক হবে। আর খেজুর শুকালে পাকা খেজুর কাঁচা খেজুরের তুলনায় কমই হ্রাস পায়। (ফাতহুল বারী ৪র্থ খন্ড, হাঃ ২১৮৩)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১২: ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা) (كتاب البيوع) 12. Business Transactions

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - নিষিদ্ধ বস্তু ক্রয়-বিক্রয়

২৮৪০-[৭] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খেজুর ফল পরিপক্ক হবার পূর্বে বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন। প্রশ্ন করা হলো, পরিপক্কতা কি? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, ফল লাল হওয়া। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আরো বলেছেন, আল্লাহর দেয়া কোনো বালা-মুসীবাতে যদি এ ফল নষ্ট হয়ে যায়, তবে মুসলিম ভাই (ক্রেতা) হতে কিসের বিনিময়ে মূল্যমান গ্রহণ করবে। (বুখারী, মুসলিম)[1]

بَابُ الْمَنْهِىِّ عَنْهَا مِنَ الْبُيُوْعِ

وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ: نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَن بيع الثِّمَارِ حَتَّى تَزْهَى قِيلَ: وَمَا تَزْهَى؟ قَالَ:
حَتَّى تخمر وَقَالَ: «أَرَأَيْتَ إِذَا مَنَعَ اللَّهُ الثَّمَرَةَ بِمَ يَأْخُذ أحدكُم مَال أَخِيه؟»

وعن انس قال نهى رسول الله صلى الله عليه وسلم عن بيع الثمار حتى تزهى قيل وما تزهى قالحتى تخمر وقال ارايت اذا منع الله الثمرة بم ياخذ احدكم مال اخيه

ব্যাখ্যা: (حَتّٰى تَزْهٰى) ‘আল্লামা খত্ত্বাবী (রহঃ) বলেনঃ زها শব্দের অর্থ হলো ফলের উপরে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়া বা দীর্ঘ সময় গাছে থাকা এবং ফল পূর্ণতা লাভ করা। আর أُزْهٰى হলো ফল লাল বর্ণ ধারণ করা বা পেকে যাওয়া। নাসায়ী’র বর্ণনায় মালিক হতে বর্ণিত রয়েছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করা হলো যে, ফলের পরিপক্ক হওয়া কি? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, লাল বর্ণ হওয়া। ইমাম ত্বহাবী (রহঃ) অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। ফল পরিপক্ক হওয়ার পর যদি ক্রয়-বিক্রয় হয় এবং বিক্রিত ফলে যদি ক্ষতি বা লোকসান পৌঁছে তবে ইমাম মালিক (রহঃ)-এর মতে সম্পদের এক-তৃতীয়াংশ বাদ যাবে, অর্থাৎ এক-তৃতীয়াংশ মূল্য ফেরত দিতে হবে। ইমাম আহমাদ ও আবূ ‘উবায়দ (রহঃ)-এর মতে সম্পূর্ণ মূল্য ফেরত দিতে হবে। তবে ইমাম শাফি‘ঈ-এর মতে, বিক্রেতার ওপর কোনো দায় বর্তাবে না। তারা বলেন যে, এক্ষেত্রে বিক্রেতার ওপর দায় তখনই বর্তাবে, যখন ফল পরিপক্ক হওয়ার পূর্বেই অকাট্য কোনো শর্ত ছাড়াই ক্রয়-বিক্রয় হবে। আল্লাহ তা‘আলাই ভালো জানেন। (ফাতহুল বারী ৪র্থ খন্ড, হাঃ ২১৯৮)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১২: ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা) (كتاب البيوع) 12. Business Transactions

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - নিষিদ্ধ বস্তু ক্রয়-বিক্রয়

২৮৪১-[৮] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (কোনো প্রকার গাছ বা বাগানের ফল) কয়েক বছরের জন্য অগ্রিম বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন এবং (বিক্রিত ফল ক্রেতা কর্তৃক) সংগ্রহের আগে যা নষ্ট হয়, তার মূল্য কর্তন করতে নির্দেশ দিয়েছেন। (মুসলিম)[1]

بَابُ الْمَنْهِىِّ عَنْهَا مِنَ الْبُيُوْعِ

وَعَنْ جَابِرٍ قَالَ: نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ بَيْعِ السِّنِينَ وَأَمَرَ بوضْعِ الجوائحِ. رَوَاهُ مُسلم

وعن جابر قال نهى رسول الله صلى الله عليه وسلم عن بيع السنين وامر بوضع الجواىح رواه مسلم

ব্যাখ্যা: (بَيْعِ السِّنِينَ) দ্বারা উদ্দেশ্য হলো কোনো ফলদার বৃক্ষ কয়েক বছরের জন্য ক্রয়-বিক্রয় করা। এরূপ বিক্রয়কৃত গাছের পাকা ফল যদি কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বা অন্য কোনো কারণে নষ্ট হয় তবে বিক্রেতার প্রাপ্ত মূল্য কর্তন করতে হবে। ইবনু মালিক (রহঃ) বলেন, এখানে (أَمَرَ) বা নির্দেশমূলক শব্দ দ্বারা মুস্তাহাব উদ্দেশ্য। আর এটা অধিকাংশ ‘উলামাগণের মত। কেননা বিক্রিত ফসল ক্রেতা কর্তৃক হস্তগত হওয়ার পর তাতে কোনো ক্ষতি হলে তা ক্রেতার জিম্মায় থাকবে- (মিরকাতুল মাফাতীহ)। তবে ফল পাকার পর যখন তা বিক্রি করা হবে এবং বিক্রেতা তা ক্রেতার কাছে অর্পণ করবে, অতঃপর কোনো দুর্যোগে ফল নষ্ট হলে এটি কি বিক্রেতার জিম্মায় বা নষ্টের দায়ভার ক্রেতার ওপর বর্তাবে? নাকি বিক্রেতার ওপর বর্তাবে। এ বিষয়ে ‘উলামাগণের মাঝে বৈপরীত্য রয়েছে।

ইমাম শাফি‘ঈ (রহঃ) তার দু’টি মতের মধ্যে বিশুদ্ধ মতে ও ইমাম আবূ হানীফাহ্, আল লায়স বিন সা‘দ (রহঃ) এবং অন্যান্যরা বলেন, এটা ক্রেতার দায়িত্ব থাকবে ফল নষ্টের দায়ভার ক্রেতার দিকে বর্তাবে এবং এর জন্য মূল্য কর্তন আবশ্যক নয়, তবে মুস্তাহাব হবে। আর শাফি‘ঈ (রহঃ)-এর পূর্ব মতে এবং এক দল ‘উলামার মতে, এটা বিক্রেতার দায়িত্ব থাকবে এবং এর জন্য মূল্য কর্তন ওয়াজিব। ইমাম মালিক (রহঃ) বলেনঃ ফলের ক্ষতি যদি এক-তৃতীয়াংশের কম হয়। তবে মূল্য কর্তন ওয়াজিব নয়। আর যদি এক-তৃতীয়াংশ বা তার বেশী ক্ষতি হয় তবে মূল্য কর্তন ওয়াজিব হবে এবং ক্ষতির দায়-দায়িত্ব বিক্রেতার দিকেই বর্তাবে। (শারহে মুসলিম ১০ম খন্ড, হাঃ ১৫৫৪)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১২: ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা) (كتاب البيوع) 12. Business Transactions

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - নিষিদ্ধ বস্তু ক্রয়-বিক্রয়

২৮৪২-[৯] উক্ত রাবী [জাবির (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তুমি যদি তোমার কোনো মুসলিম ভাইয়ের কাছে (তোমার বাগানের অথবা গাছের) ফল বিক্রি করো। অতঃপর যদি তা (গ্রহণের পূর্বেই) নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে তার কাছ থেকে কোনো প্রকার মূল্য গ্রহণ করা জায়িয হবে না। কেননা তার পাওনা তাকে বুঝিয়ে না দিয়ে কিরূপে তার কাছ থেকে তুমি কোনো মূল্য গ্রহণ করবে? (মুসলিম)[1]

بَابُ الْمَنْهِىِّ عَنْهَا مِنَ الْبُيُوْعِ

وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَوْ بِعْتَ مِنْ أَخِيكَ ثَمَرًا فَأَصَابَتْهُ جَائِحَةٌ فَلَا يَحِلُّ لَكَ أَنْ تَأْخُذَ مِنْهُ شَيْئًا بِمَ تَأْخُذُ مَالَ أَخِيكَ بِغَيْرِ حقٍ؟» . رَوَاهُ مُسلم

وعنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لو بعت من اخيك ثمرا فاصابته جاىحة فلا يحل لك ان تاخذ منه شيىا بم تاخذ مال اخيك بغير حق رواه مسلم

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১২: ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা) (كتاب البيوع) 12. Business Transactions

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - নিষিদ্ধ বস্তু ক্রয়-বিক্রয়

২৮৪৩-[১০] ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, অনেক মানুষ বাজারে আগত খাদ্যদ্রব্য বাজারের সম্মুখে গিয়েই ক্রয় করে ফেলতো। অতঃপর এখানে বসেই আবার এ মাল বিক্রি করতো। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ শ্রেণীর ক্রেতাদেরকে সেখান থেকে ঐ খাদ্যদ্রব্য (বিক্রয়ের সাধারণ জায়গায় সরিয়ে না) নিয়ে সেখানে বসেই বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন, (অর্থাৎ- যে স্থানে ক্রয় করেছে ঐ স্থানে বিক্রয় না করে অন্য স্থানে বিক্রয় করা)। (আবূ দাঊদ; আর আমি হাদীসটি বুখারী-মুসলিমে পাইনি)[1]

بَابُ الْمَنْهِىِّ عَنْهَا مِنَ الْبُيُوْعِ

وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: كَانُوا يَبْتَاعُونَ الطَّعَامَ فِي أَعلَى السُّوقِ فيبيعُونَه فِي مكانهِ فَنَهَاهُمْ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ بَيْعِهِ فِي مَكَانِهِ حَتَّى يَنْقِلُوهُ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَلم أَجِدهُ فِي الصَّحِيحَيْنِ

وعن ابن عمر قال كانوا يبتاعون الطعام في اعلى السوق فيبيعونه في مكانه فنهاهم رسول الله صلى الله عليه وسلم عن بيعه في مكانه حتى ينقلوه رواه ابو داود ولم اجده في الصحيحين

ব্যাখ্যা: আলোচ্য হাদীসটি এ মর্মে দলীল যে, যে ব্যক্তি খাদ্য ক্রয় করবে, অতঃপর ক্রয় করার স্থান ত্যাগ না করে উক্ত খাদ্য বিক্রি করা তার জন্য বৈধ নয়। আর এটাই জুমহূর ‘উলামাগণের বক্তব্য। (‘আওনুল মা‘বূদ ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ৩৪৯১)

কারণ এ ক্ষেত্রে স্থান ত্যাগ করার মাধ্যমে দ্রব্য হস্তগত হয়। এটা ‘আল্লামা ত্বীবী (রহঃ)-এর মত। ইবনুল মালিক (রহঃ) বলেনঃ এক্ষেত্রে দ্রব্যের স্থানান্তর, অর্থাৎ তা বিক্রেতার হাত থেকে ক্রেতার হাতে পৌঁছা। আর উক্ত স্থান হতে অন্য স্থান, অর্থাৎ- যে স্থানে দ্রব্য কেনা হলো তা পুনরায় বিক্রি করতে চাইলে উক্ত স্থান হতে অবশ্যই অন্য স্থানে যেতে হবে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১২: ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা) (كتاب البيوع) 12. Business Transactions

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - নিষিদ্ধ বস্তু ক্রয়-বিক্রয়

২৮৪৪-[১১] উক্ত রাবী [ইবনু ’উমার (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোনো ব্যক্তি কোনো খাদ্যদ্রব্য ক্রয় করে তা করায়ত্ব না করা পর্যন্ত যেন বিক্রি না করে। (বুখারী, মুসলিম)[1]

بَابُ الْمَنْهِىِّ عَنْهَا مِنَ الْبُيُوْعِ

وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنِ ابْتَاعَ طَعَامًا فَلَا يَبِيعهُ حَتَّى يَسْتَوْفِيه»

وعنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من ابتاع طعاما فلا يبيعه حتى يستوفيه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১২: ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা) (كتاب البيوع) 12. Business Transactions

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - নিষিদ্ধ বস্তু ক্রয়-বিক্রয়

২৮৪৫-[১২] ইবনু ’আব্বাস (রাঃ)-এর এক বর্ণনায় রয়েছে, ’যে পর্যন্ত না ওই খাদ্য-দ্রব্য পরিমাপ করে বুঝে নেয়।’ (বুখারী, মুসলিম)[1]

بَابُ الْمَنْهِىِّ عَنْهَا مِنَ الْبُيُوْعِ

وَفَى رِوَايَةِ ابْنِ عَبَّاسٍ: «حَتَّى يكْتالَه»

وفى رواية ابن عباس حتى يكتاله

ব্যাখ্যা: ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-এর অপর বর্ণনায় রয়েছে (حَتّٰى يَكْتَالَه), অর্থাৎ যতক্ষণ না তা পরিমাপ করে হস্তগত না করবে ততক্ষণ তা অন্যের কাছে বিক্রি করবে না। এখানে সম্পদের ওযন করা বা পরিমাপ করা ক্রয়ের সাথে নির্দিষ্ট করা হয়েছে। সুতরাং গচ্ছিত সম্পদ বিক্রি করার পূর্বে তা ওযন করা শর্ত নয় এবং ক্রয়কৃত সম্পদের সম্পদ ওযন বা পরিমাপ নির্ধারণ দ্বারা এটাই বুঝা যায় যে, কেউ যদি হিবা বা দান কিংবা অন্য কোনো উপায়ে সম্পদের মালিক হয় তবে তিনি তা পরিমাপ করার পূর্বেই বিক্রি করতে পারবে। আর যদি ক্রয়কৃত সম্পদ দান করতে চায় তবে পরিমাপ ছাড়াই তা জায়িয। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১২: ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা) (كتاب البيوع) 12. Business Transactions

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - নিষিদ্ধ বস্তু ক্রয়-বিক্রয়

২৮৪৬-[১৩] ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করেছেনঃ কোনো খাদ্যদ্রব্য ক্রয় করে তা হস্তগত হওয়ার আগে যেন বিক্রি না করে। ইবনু ’আব্বাস(রাঃ) বলেন, প্রত্যেক জিনিসের এরূপ হুকুম বলেই মনে করি। (বুখারী, মুসলিম)[1]

بَابُ الْمَنْهِىِّ عَنْهَا مِنَ الْبُيُوْعِ

وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: أَمَّا الَّذِي نَهَى عَنْهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَهُوَ الطَّعَامُ أَنْ يُبَاعَ حَتَّى يُقْبَضَ. قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ: وَلَا أَحْسِبُ كُلَّ شَيْءٍ إِلاَّ مثلَه

وعن ابن عباس قال اما الذي نهى عنه النبي صلى الله عليه وسلم فهو الطعام ان يباع حتى يقبض قال ابن عباس ولا احسب كل شيء الا مثله

ব্যাখ্যা: এখানে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খাদ্যের প্রতি, অর্থাৎ- দানা জাতীয় খাদ্যের উপরই নিষেধাজ্ঞা বর্তায়। কিন্তু ইবনু ‘আব্বাস -এর কথা, (لَا أَحْسِبُ كُلَّ شَيْءٍ إِلَّا مِثْلَه) অর্থাৎ খাদ্যের মতো অন্যান্য সকল বস্তু ক্রেতা তা পূর্ণ পরিমাপ করার পূর্বে বিক্রি করতে পারবে না। এ কথা প্রসঙ্গে ইবনুল মালিক (রহঃ) বলেনঃ এ কথাটি ইবনু ‘আব্বাস -এর পক্ষ হতে বলা হয়নি। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১২: ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা) (كتاب البيوع) 12. Business Transactions

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - নিষিদ্ধ বস্তু ক্রয়-বিক্রয়

২৮৪৭-[১৪] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ [১] যারা বাজারে বিক্রি করার জন্য বাহির হতে খাদ্য-দ্রব্য নিয়ে আসে, তাদের খাদ্য-দ্রব্য ক্রয়ের জন্য বাজারে পৌছার আগেই এগিয়ে গিয়ে তাদের সঙ্গে মিলিত হবে না। [২] আর ক্রয়-বিক্রয়ের কথা চলার সময় একজনের সাথে অন্য কেউ এ বিষয়ে কথা বলবে না। [৩] ক্রয়-বিক্রয়ের বিষয়ে দালালী করবে না। [৪] গ্রামের লোকের পণ্য-সামগ্রী শহরের লোকজন বিক্রি করে দেবার জন্য চাপ প্রয়োগ করবে না। [৫] উট, ছাগলের (বিক্রয় করার আগে তার) স্তনে দু’ তিন দিনের দুধ জমা রেখে স্তনকে ফুলিয়ে রাখবে না। যদি কেউ এরূপ করে তখন ক্রয়কারীর জন্য দুধ দোহনের পর সুযোগ থাকবে, ইচ্ছা করলে সে ক্রয়-বিক্রয় ঠিক রাখবে, আর ইচ্ছা করলে ক্রয়-বিক্রয় ভঙ্গ করে তা ফেরত দিবে। তবে যদি ভঙ্গ করে (দুধ পানের জন্য) তাকে এক সা’ খুরমা সাথে দিয়ে দিবে। (বুখারী, মুসলিম)[1]

মুসলিম-এর এক বর্ণনায় আছে, যে লোক স্তন ফুলানো বকরী ক্রয় করবে, তার জন্য তিনদিনের সুযোগ থাকবে। সে বকরী ফেরত দেয়, তবে এর সাথে এক সা’ খাদ্যদ্রব্য ফেরত দিবে, অর্থাৎ- উত্তম গম দিতে সে বাধ্য নয়।

بَابُ الْمَنْهِىِّ عَنْهَا مِنَ الْبُيُوْعِ

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: لَا تَلَقُّوُا الرُّكْبَانَ لِبَيْعٍ وَلَا يَبِعْ بَعْضُكُمْ عَلَى بَيْعِ بَعْضٍ وَلَا تَنَاجَشُوا وَلَا يَبِعْ حَاضِرٌ لِبَادٍ وَلَا تُصَرُّوا الْإِبِلَ وَالْغَنَمَ فَمِنِ ابْتَاعَهَا بَعْدَ ذَلِكَ فَهُوَ بِخَيْرِ النَّظِرَيْنِ بَعْدَ أَنْ يحلبَها: إِنْ رَضِيَهَا أَمْسَكَهَا وَإِنْ سَخِطَهَا رَدَّهَا وَصَاعًا مِنْ تمر
وَفِي رِوَايَةٍ لِمُسْلِمٍ: مَنِ اشْتَرَى شَاةً مُصَرَّاةً فَهُوَ بِالْخِيَارِ ثَلَاثَةَ أَيَّامٍ: فَإِنْ رَدَّهَا رَدَّ مَعهَا صَاعا من طَعَام لَا سمراء

وعن ابي هريرة ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال لا تلقوا الركبان لبيع ولا يبع بعضكم على بيع بعض ولا تناجشوا ولا يبع حاضر لباد ولا تصروا الابل والغنم فمن ابتاعها بعد ذلك فهو بخير النظرين بعد ان يحلبها ان رضيها امسكها وان سخطها ردها وصاعا من تمروفي رواية لمسلم من اشترى شاة مصراة فهو بالخيار ثلاثة ايام فان ردها رد معها صاعا من طعام لا سمراء

ব্যাখ্যা: ‘উলামাগণ এ মর্মে একমত হয়েছেন যে, কেউ কারো ক্রয়ের উপর ক্রয় এবং বিক্রয়ের উপর বিক্রয় এবং কারো দর করার উপর অন্য কারো দর করা নিষিদ্ধ। তবে যদি কেউ এমনটা করে এবং কেনা-বেচায় চুক্তিবদ্ধ হয় তাহলে সে নাফরমান বা সীমালঙ্ঘনকারী হিসেবে বিবেচিত হবে এবং সেই সাথে কেনা-বেচা সংঘটিত হয়ে যাবে। আর এটাই শাফি‘ঈ, হানাফীসহ অন্যান্যদের মত। কিন্তু দাঊদ (রহঃ)-এর মতে কেনা-বেচা সংঘটিত হবে না। মালিক (রহঃ) হতে দু’টি বর্ণনা রয়েছে, তাদের অধিকাংশই এ মত দিয়েছেন যে, একে অন্যের উপর কেনা-বেচা করা বৈধ তার ক্ষেত্রেই হবে, যে মূল্য বেশী দিবে। ইমাম শাফি‘ঈ (রহঃ) এটার ক্ষেত্রে কতিপয় সালাফগণ অনীহা প্রকাশ করেছেন।

আর (وَلَا تَنَاجَشُوْا) অর্থাৎ- (النجش) দ্বারা উদ্দেশ্য হলো কোনো দ্রব্যের মূল্য বেশী বলা, এটা দ্রব্য কেনার প্রতি আগ্রহী হয়ে নয়, বরং অন্যকে ধোঁকা দেয়ার জন্য করা হয়। যাতে উক্ত দ্রব্য বেশী মূল্যে ক্রেতা ক্রয় করে নেয়। এটা হারাম। দালালের ধোঁকার মধ্যে দিয়ে যদি ক্রয়-বিক্রয় হয় আর এটা সম্পর্কে যদি বিক্রেতা অবগত না থাকে, তবে এ ধরনের কেনা-বেচা বৈধ। পাপ সম্পূর্ণ কর্তার ওপর বর্তাবে। আর এটা যদি বিক্রেতার তরফ থেকে না হয়ে থাকে তবে ক্রেতার কোনো ঐচ্ছিকতা থাকবে না।

(وَلَا تُصَرُّوا الْإِبِلَ) অর্থাৎ- উটনীর স্তন থেকে ২/৩ দিন যাবৎ দুধ দোহন না করে স্তন বড় করা যাতে ক্রেতার মনে এ ধারণা জন্মে যে, অধিক পরিমাণে দুধ দেয়াই এ উটনীর স্বভাব। এমনটা করা হারাম। (শারহে মুসলিম ১০ম খন্ড, হাঃ ১৫১৫)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১২: ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা) (كتاب البيوع) 12. Business Transactions

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - নিষিদ্ধ বস্তু ক্রয়-বিক্রয়

২৮৪৮-[১৫] উক্ত রাবী [আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যারা বাজারে বিক্রি করার জন্য (বাহির হতে) খাদ্যদ্রব্য নিয়ে আসছে, তাদের দিকে এগিয়ে গিয়ে মিলিত হবে না। যদি কেউ এরূপ করে কোনো প্রকার পণ্যদ্রব্য ক্রয় করে, তবে ঐ বিক্রেতা বাজারে পৌছার পর (বিক্রয় ভঙ্গ করার) অবকাশ থাকবে। (মুসলিম)[1]

بَابُ الْمَنْهِىِّ عَنْهَا مِنَ الْبُيُوْعِ

وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا تَلَقَّوُا الْجَلَبَ فَمَنْ تَلَقَّاهُ فَاشْتَرَى مِنْهُ فَإِذَا أَتَى سَيِّدُهُ السُّوقَ فَهُوَ بالخَيارِ» . رَوَاهُ مُسلم

وعنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لا تلقوا الجلب فمن تلقاه فاشترى منه فاذا اتى سيده السوق فهو بالخيار رواه مسلم

ব্যাখ্যা : উল্লেখিত হাদীসগুলো থেকে এটাই প্রমাণিত হয় যে, পণ্য বাজারে আসার পূর্বেই ক্রেতা কর্তৃক আগে বাড়িয়ে পণ্য ক্রয় করা হারাম। আর এটাই শাফি‘ঈ, মালিকী ও জুমহূর ‘উলামাগণের মত। পক্ষান্তরে ইমাম আবূ হানীফাহ্ ও আওযা‘ঈ (রহঃ)-এর মতে যদি মানুষের ক্ষতি না হয় তবে এটি জায়িয। আর এর প্রভাবে মানুষের ক্ষতি (বাজারে পণ্য সংকট, চড়া মূল্য) হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তবে এটি মাকরূহ।

ইমামগণ বলেনঃ এমন কেনা-বেচা হারাম হওয়ার কারণ হলো পণ্য আমদানী বা রফতানীর ক্ষেত্রে মানুষের ক্ষতি দূর করা এবং ধোঁকাবাজদের ধোঁকা থেকে বেঁচে থাকা। (শারহে মুসলিম ৯ম খন্ড, হাঃ ১৫১৯)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১২: ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা) (كتاب البيوع) 12. Business Transactions

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - নিষিদ্ধ বস্তু ক্রয়-বিক্রয়

২৮৪৯-[১৬] ইবনু উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা পণ্য-সামগ্রী বাজারে পৌঁছার পূর্বে অগ্রগামী হয়ে বিক্রয় দ্রব্য ক্রয়ের জন্য যেও না, যে পর্যন্ত তা বিক্রয়ের স্থানে উপস্থিত না করা হয়। (বুখারী, মুসলিম)[1]

بَابُ الْمَنْهِىِّ عَنْهَا مِنَ الْبُيُوْعِ

وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا تَلَقَّوُا السِّلَعَ حَتَّى يُهْبَطَ بهَا إِلى السُّوق»

وعن ابن عمر رضي الله عنهما قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لا تلقوا السلع حتى يهبط بها الى السوق

ব্যাখ্যা: এখানে (السِّلَعَ) হলো পণ্য সামগ্রী, এগুলো বাজারে পৌঁছার পর বাহন থেকে না নামানো পর্যন্ত কেনা-বেচা জায়িয নেই। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১২: ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা) (كتاب البيوع) 12. Business Transactions

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - নিষিদ্ধ বস্তু ক্রয়-বিক্রয়

২৮৫০-[১৭] উক্ত রাবী [ইবনু ’উমার (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোনো লোক তার মুসলিম ভাইয়ের বেচাকেনার কথার বলার সময় নিজে বেচাকেনার কথা উত্থাপন করতে পারবে না। আর কোনো মুসলিম ভাইয়ের বিয়ের প্রস্তাবের উপর নিজে বিয়ের প্রস্তাব দিতে পারবে না। তবে হ্যাঁ, যদি ঐ ভাই তা অনুমতি দেয়, তাহলে পারবে। (মুসলিম)[1]

بَابُ الْمَنْهِىِّ عَنْهَا مِنَ الْبُيُوْعِ

وَعَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا يَبِعِ الرَّجُلُ عَلَى بَيْعِ أَخِيهِ وَلَا يَخْطِبْ عَلَى خِطْبَةِ أَخِيهِ إِلَّا أنْ يأذَنَ لَهُ» . رَوَاهُ مُسلم

وعنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لا يبع الرجل على بيع اخيه ولا يخطب على خطبة اخيه الا ان ياذن له رواه مسلم

ব্যাখ্যা: অপর বর্ণনায় রয়েছে যে, একজন মু’মিন অপর মু’মিনের ভাই, সুতরাং কোনো ঈমানদার ব্যক্তির জন্য বৈধ নয় কোনো ঈমানদারের কেনা-বেচা করার উপর কেনা-বেচা করা এবং তার প্রস্তাবের উপর প্রস্তাব দেয়া। এ হাদীসগুলো থেকে প্রমাণিত হয় যে, কারো প্রস্তাবের উপর (কেনা-বেচার) প্রস্তাব করা হারাম। এখানে (لَا يَبِعِ الرَّجُلُ عَلٰى بَيْعِ أَخِيهِ) এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলোঃ পণ্যের মূল্য নির্ধারণ হওয়ার পর ক্রেতা ও বিক্রেতার মাঝে তৃতীয় ব্যক্তি প্রবেশ করে বেশী দাম বলা। (শারহে মুসলিম ৯ম খন্ড, হাঃ ১৪১২)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১২: ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা) (كتاب البيوع) 12. Business Transactions

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - নিষিদ্ধ বস্তু ক্রয়-বিক্রয়

২৮৫১-[১৮] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোনো লোক তার কোনো মুসলিম ভাইয়ের ক্রয়-বিক্রয়ের কথা বলার উপর নিজে ক্রয়-বিক্রয়ের কথা বলবে না। (মুসলিম)[1]

بَابُ الْمَنْهِىِّ عَنْهَا مِنَ الْبُيُوْعِ

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَا يَسُمِ الرَّجُلُ على سَوْمِ أخيهِ الْمُسلم» . رَوَاهُ مُسلم

وعن ابي هريرة ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال لا يسم الرجل على سوم اخيه المسلم رواه مسلم

ব্যাখ্যা: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কথা (عَلٰى خِطْبَةِ أَخِيهِ) অর্থাৎ- অন্য ভাইয়ের প্রস্তাবের উপর। ‘আল্লামা খত্ত্বাবী (রহঃ) সহ অন্যান্য ‘উলামাগণ বলেন যে, প্রথম প্রস্তাবদাতা যদি কাফির হয়, তবে তার ওপর মুসলিম ব্যবসা কিংবা বিবাহের ক্ষেত্রে প্রস্তাব দিতে পারবে। আর যদি প্রথম প্রস্তাবদাতা মুসলিম হয় তবে তার ওপর প্রস্তাব দেয়া হারাম। আওযা‘ঈ (রহঃ) অনুরূপ কথা বলেছেন। জুমহূর ‘উলামাগণ বলেছেন, কাফিরের প্রস্তাবের উপর প্রস্তাব করাও হারাম। তবে বিশুদ্ধ কথা হলো প্রস্তাবের ক্ষেত্রে ফাসিক বা অন্য কারো মাঝে কোনো পার্থক্য নেই। (শারহে মুসলিম ৯ম খন্ড, হাঃ ১৪১৩)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১২: ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা) (كتاب البيوع) 12. Business Transactions

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - নিষিদ্ধ বস্তু ক্রয়-বিক্রয়

২৮৫২-[১৯] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ শহরের লোকেরা আগত গ্রাম্য লোকেদের পণ্য-সামগ্রী বিক্রি করে দেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করতে পারবে না। এভাবেই আল্লাহ তা’আলা লোকেদের একজনকে অপরজন দ্বারা লাভবান হওয়ার সুযোগ দিয়ে থাকেন। (মুসলিম)[1]

بَابُ الْمَنْهِىِّ عَنْهَا مِنَ الْبُيُوْعِ

وَعَنْ جَابِرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا يبِعْ حَاضِرٌ لِبَادٍ دَعُوا النَّاسَ يَرْزُقُ اللَّهُ بَعْضَهُمْ من بعض» . رَوَاهُ مُسلم

وعن جابر رضي الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لا يبع حاضر لباد دعوا الناس يرزق الله بعضهم من بعض رواه مسلم

ব্যাখ্যা: অপর বর্ণনায় আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত রয়েছে যে, শহরের লোক গ্রাম্য লোকের পণ্য সামগ্রী বিক্রয় করে দেয়ার চাপ প্রয়োগের ব্যাপারে আমাদের নিষেধ করা হয়েছে। যদিও সে তার বাবা কিংবা ভাই হোক না কেন। এ সকল হাদীস থেকে এটাই প্রমাণিত হয় যে, গ্রাম্য লোকের দ্রব্য বিক্রি করে দেয়ার ব্যাপারে শহরের লোকের চাপ প্রয়োগ করা সম্পূর্ণ হারাম। ইমাম শাফি‘ঈ ও অধিকাংশ বিদ্বানগণ এমন সিদ্ধান্তই দিয়েছেন। আল্লাহ তা‘আলাই ভালো জানেন। (শারহে মুসলিম ১০ম খন্ড, হাঃ ১৫২২, ১৫২৪)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১২: ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা) (كتاب البيوع) 12. Business Transactions

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - নিষিদ্ধ বস্তু ক্রয়-বিক্রয়

২৮৫৩-[২০] আবূ সা’ঈদ আল খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাপড় পরার দু’টি পদ্ধতিকে নিষেধ করেছেন এবং ক্রয়-বিক্রয়েরও দু’টি নিয়ম নিষেধ করেছেন। ক্রয়-বিক্রয়ের নিয়ম দু’টি হলো ’মুলামাসাহ্’ ও ’মুনাবাযাহ্’। ’মুলামাসাহ্’ হলো রাতে বা দিনে ক্রেতা-বিক্রেতার (বিক্রয়ের) কাপড়টিতে হাত দিয়ে স্পর্শ করলেই সে তা গ্রহণ করতে বাধ্য হবে। কিন্তু সেটা দেখে বিবেচনা করার কোনো সুযোগই তার থাকবে না। আর ’মুনাবাযাহ্’ হলো পরস্পর একজনের কোনো কাপড় অন্যজনের দিকে ছুঁড়ে মারলেই তাদের মধ্যে ক্রয়-বিক্রয় করা বাধ্যতামূলক হয়ে যাবে। ক্রয়ের বস্তু যাচাই-বাছাইয়ের কোনো সুযোগই তার থাকবে না এবং উভয়পক্ষের মতামতেরও অপেক্ষা করা হবে না। আর কাপড় পরার (নিষিদ্ধ) পদ্ধতি দু’টি হলো- [১] লুঙ্গি জাতীয় কাপড় পরা ছাড়া এক চাদরে শরীর ঢাকার জায়গায় চাদরের একদিক কাঁধে উঠিয়ে রাখা; যাতে করে অপর পাশ খোলা হয়ে যায়, যে কাঁধের উপর কোনো কাপড় থাকে না। [২] লুঙ্গি জাতীয় কাপড় পরে ইহতিবা পদ্ধতিতে বসা, অর্থাৎ দু’ হাঁটু খাড়া করে বসা। এতে করে সতরের মধ্যে কোনো কাপড় থাকে না। (বুখারী, মুসলিম)[1]

بَابُ الْمَنْهِىِّ عَنْهَا مِنَ الْبُيُوْعِ

وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ قَالَ: نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ لِبْسَتَيْنِ وَعَنْ بَيْعَتَيْنِ: نَهَى عَنِ الْمُلَامَسَةِ والمُنابذَةِ فِي البيعِ وَالْمُلَامَسَةُ: لَمْسُ الرَّجُلِ ثَوْبَ الْآخَرِ بِيَدِهِ بِاللَّيْلِ أَو بالنَّهارِ وَلَا يقْلِبُه إِلَّا بِذَلِكَ وَالْمُنَابَذَةُ: أَنْ يَنْبِذَ الرَّجُلُ إِلَى الرَّجُلِ بِثَوْبِهِ وَيَنْبِذَ الْآخَرُ ثَوْبَهُ وَيَكُونُ ذَلِكَ بَيْعَهُمَا عَنْ غَيْرِ نَظَرٍ وَلَا تَرَاضٍ وَاللِّبْسَتَيْنِ: اشْتِمَالُ الصَّمَّاءِ وَالصَّمَّاءُ: أَنْ يَجْعَلَ ثَوْبَهُ عَلَى أَحَدِ عَاتِقَيْهِ فَيَبْدُوَ أَحَدُ شِقَّيْهِ لَيْسَ عَلَيْهِ ثَوْبٌ وَاللِّبْسَةُ الْأُخْرَى: احْتِبَاؤُهُ بِثَوْبِهِ وَهُوَ جَالِسٌ ليسَ على فرجه مِنْهُ شَيْء

وعن ابي سعيد الخدري قال نهى رسول الله صلى الله عليه وسلم عن لبستين وعن بيعتين نهى عن الملامسة والمنابذة في البيع والملامسة لمس الرجل ثوب الاخر بيده بالليل او بالنهار ولا يقلبه الا بذلك والمنابذة ان ينبذ الرجل الى الرجل بثوبه وينبذ الاخر ثوبه ويكون ذلك بيعهما عن غير نظر ولا تراض واللبستين اشتمال الصماء والصماء ان يجعل ثوبه على احد عاتقيه فيبدو احد شقيه ليس عليه ثوب واللبسة الاخرى احتباوه بثوبه وهو جالس ليس على فرجه منه شيء

ব্যাখ্যা: আলোচ্য হাদীসে যে কয়টি কেনা-বেচার রূপ বলে দেয়া হয়েছে সব ক’টি বাতিল। আল মুনাবাযাহ্ (একে অন্যের প্রতি পণ্য ছুঁড়ে মারার মাধ্যমে যে কেনা-বেচা করা) এটি তিন পদ্ধতিতে হতে পারে। (১) ক্রেতা-বিক্রেতার যে কেউ নিজের পক্ষ হতে পণ্য ছুঁড়ে মারার মাধ্যমে লেন-দেন ঠিক করা- এটি ইমাম শাফি‘ঈ (রহঃ)-এর ব্যাখ্যা। (২) এমন কথা বলা যে, আমি এ পণ্য তোমার কাছে বিক্রি করলাম, যখন আমি এ পণ্য তোমার দিকে ছুঁড়ে মারবো, তখন কোনো ইখতিয়ার বা যাচাই করার সুযোগ থাকবে না এবং বিক্রি আবশ্যক হয়ে যাবে। (৩) কংকর বা পাথর ছুঁড়ে মারার মাধ্যমে লেনদেন করা। [এ তিন পদ্ধতিই জাহিলী জামানার পদ্ধতি, এ সবগুলো পদ্ধতি হরাম] (শারহে মুসলিম ১০ম খন্ড, হাঃ ১৫১২)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১২: ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা) (كتاب البيوع) 12. Business Transactions
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ২০ পর্যন্ত, সর্বমোট ২৭ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে পাতা নাম্বারঃ 1 2 পরের পাতা »