২৮৩৬

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - নিষিদ্ধ বস্তু ক্রয়-বিক্রয়

২৮৩৬-[৩] উক্ত রাবী [জাবির (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করেছেন মুহা-কলাহ্, মুযা-বানাহ্, মুখা-বারাহ্ ও মু’আ-ওয়ামাহ্ হতে এবং নিষেধ করেছেন (অনির্দিষ্টভাবে) কিছু অংশ বাদ দিতেও। আর ’আরা-ইয়া’-কে জায়িয করেছেন। (মুসলিম)[1]

بَابُ الْمَنْهِىِّ عَنْهَا مِنَ الْبُيُوْعِ

وَعَنْهُ قَالَ: نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنِ الْمُحَاقَلَةِ وَالْمُزَابَنَةِ وَالْمُخَابَرَةِ وَالْمُعَاوَمَةِ وَعَنِ الثُّنْيَا وَرَخَّصَ فِي الْعَرَايَا. رَوَاهُ مُسْلِمٌ

ব্যাখ্যা: [ইমাম আহমাদ (রহঃ)-এর মতে عَرَايَا (‘আরা-ইয়া-) হলো দানকৃত খেজুর বৃক্ষ হতে আহরণকৃত খেজুর; অর্থাৎ- এক ব্যক্তি কোনো একটি বৃক্ষের খেজুর দান করার পর এ ব্যক্তি ফলগুলোকে দানকারী ব্যতীত অন্যের নিকট বিক্রয় করা। (সম্পাদক)]

এখানে (مُعَاوَمَةِ) মু‘আ-ওয়ামাহ্ (এটি জাহিলী যুগের এক ধরনের ক্রয়-বিক্রয়)। গাছের খেজুর বিক্রি করা অথবা ২-৩ কিংবা ততোধিক বয়সী গাছ বিক্রি করা তাতে ফল ধরার পূর্বেই, অর্থাৎ গাছে ফল আসার আগেই গাছের সাথে সম্ভাব্য ফলের দামসহ গাছ বিক্রি করাকে মু‘আওয়ামাহ্ বলা হয়। এ ধরনের লেনদেন হারাম। কারণ কোনো বস্তু সৃষ্টি হওয়ার আগেই তা বিক্রি করা পেটে সন্তান আসার পূর্বেই উক্ত সন্তানকে বিক্রি করার নামান্তর।

হাদীসে উল্লেখিত (اَلثُّنْيَا) আস্ সুন্ইয়া- এটি এক ধরনের ক্রয়-বিক্রয়। মুহিববুস্ (রহঃ) বলেনঃ অনির্ধারিত অংশকে আলাদা করে কোনো খেজুর বাগান বিক্রি করাকে আস্ সুন্ইয়া- বলা হয়। এ ধরনের ক্রয়-বিক্রয় বিক্রিত বস্তু অজ্ঞাত থাকার কারণে তা হারাম। তবে ‘আরা-ইয়া লেনদেন বৈধ। মালিক কর্তৃক কোনো খেজুর গাছ ফল খাওয়ার জন্য অন্যকে দান করাকে ‘আরা-ইয়া’ বলা হয়।

ইমাম নববী (রহঃ) বলেনঃ অনুমানের ভিত্তিতে কয়েকটি খেজুরগাছ এ বলে বিক্রি করা যে, গাছে যতগুলো পাকা খেজুর আছে তা শুকালে তিন সা‘ পরিমাণ খুরমা হবে। আর এ তিন সা‘ পরিমাণ খুরমার দাম ধরে মালিক অন্যের কাছে বাগানের কয়েকটি খেজুর গাছ বিক্রি করে, আর ক্রেতা ও বিক্রেতা একই বৈঠকে তা হস্তগত করে এবং এতে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েই সমত্মুষ্ট থাকে। তবে এ ধরনের ক্রয়-বিক্রয়ে দ্রব্য পাঁচ ওয়াসাকের কম হতে হবে। এর বেশি হলে তা অবৈধ হবে।

তবে পাঁচ ওয়াসাকের বৈধতার ব্যাপারে ইমাম শাফি‘ঈ (রহঃ)-এর দু’টি মত আছে। তার কিছু মত হলো পাঁচ ওয়াসাকের ‘আরিয়্যাহ্ লেন-দেন জায়িয (এক ওয়াসাক পরিমাণ ৬০ সা‘ = ১৫০ কেজি বা তিন মণ ৩০ কেজি) কারণ পাকা খেজুরের বিনিময়ে খুরমা বিক্রি হারাম। কিন্তু ‘আরিয়্যাহ্ পদ্ধতিতে এমনটি হয় না। আর ‘আরিয়্যার ব্যাপারে বৈধতাও রয়েছে এবং এটি ধনী-গরীব সবার ক্ষেত্রেই বৈধ, আর এটাই সর্বাধিক বিশুদ্ধ মত। (মিরকাতুল মাফাতীহ)