পরিচ্ছেদঃ ১৩. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - বাধাগ্রস্ত হওয়া এবং হজ্জ ছুটে যাওয়া

২৭১২-[৬] ’আব্দুল্লাহ ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল­াহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাহাবীগণকে হুদায়বিয়ার বছরে তারা যে পশু কুরবানী করেছিলেন (পরের বছর) কাযা ’উমরার সময় তার বদলে অন্য পশু কুরবানীর হুকুম দিয়েছিলেন। (আবূ দাঊদ)[1]

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَمَرَ أَصْحَابَهُ أَنْ يُبَدِّلُوا الْهَدْيَ الَّذِي نَحَرُوا عَامَ الْحُدَيْبِيَةِ فِي عُمْرَةِ الْقَضَاءِ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَفِيهِ قِصَّةٌ وَفِي سَنَدِهِ مُحَمَّدُ بْنُ إِسْحَاقَ

عن ابن عباس رضي الله عنهما أن رسول الله صلى الله عليه وسلم أمر أصحابه أن يبدلوا الهدي الذي نحروا عام الحديبية في عمرة القضاء. رواه أبو داود وفيه قصة وفي سنده محمد بن إسحاق

ব্যাখ্যা: (أَمَرَ أَصْحَابَه أَنْ يُبَدِّلُوا الْهَدْىَ الَّذِىْ نَحَرُوْا عَامَ الْحُدَيْبِيَةِ) ‘‘নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীদের আদেশ করলেন যে, হুদায়বিয়াতে তারা যে পশু যাবাহ করেছে তার পরিবর্তে তারা যেন পুনরায় যাবাহ করে।’’

(فِىْ عُمْرَةِ الْقَضَاءِ) ‘‘কাযা ‘উমরাতে’’ অর্থাৎ- পরবর্তী বৎসর সাহাবীরা যখন ‘উমরা করলেন তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের আদেশ দিলেন তারা হুদায়বিয়াতে যে কুরবানীর পশু যাবাহ করেছে এর পরিবর্তে কাযা ‘উমরার সময় পুনরায় যেন কুরবানী করে। যারা মনে করেন যে, ‘উমরা করতে গিয়ে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে হালাল হলে তাদেরকে কাযা ‘উমরা করতে হবে তারা হাদীসের (فِىْ عُمْرَةِ الْقَضَاءِ) এ অংশটিকে দলীল হিসেবে গ্রহণ করেছে।

আর যারা মনে করে যে, বাধাপ্রাপ্ত হয়ে হালাল হলে সেজন্য কাযা করতে হবে না তারা বলেন এখানে الْقَضَاءِ শব্দটি المقاضاة থেকে নেয়া হয়েছে। কেননা মক্কাবাসীগণ হুদায়বিয়াতে এ বিষয়ের উপর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিল তথা ফায়সালা করেছিল যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার সঙ্গীগণ এবার ‘উমরা না করেই ফিরে যাবে এক বৎসর পর এ সময়ে তারা ‘উমরা করতে পারবে এবং এজন্য তারা তিনদিন সময় পাবে এজন্য এ ‘উমরার নাম হয়েছে (عُمْرَةُ الْقَضَاءِ)। আর এ শব্দটি قضى يقضي قضاء শব্দ থেকে নির্গত নয় যার অর্থ কাযা করা।

যারা মনে করেন বাধাপ্রাপ্ত ব্যক্তি হেরেম ব্যতীত তার কুরবানীর পশু যাবাহ করতে পারবে না তারা এ হাদীসটিকে দলীল হিসেবে উপস্থাপন করে থাকেন। কেননা হুদাযবিয়ার বৎসর সাহাবীগণ হেরেমের বাইরে কুরবানীর পশু যাবাহ করেছিলেন। তাই নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার পরিবর্তে পুনরায় কুরবানী করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। যারা বলেন, বাধাপ্রাপ্ত ব্যক্তি যেখানে বাধাপ্রাপ্ত হবে সেখানেই কুরবানীর পশু যাবাহ করবে তারা বলেন এখানে পুনরায় যাবাহ করার নির্দেশ এজন্য দেননি যে, তা হেরেমে যাবাহ করা হয়নি। কেননা হুদায়বিয়ার অধিকাংশ এলাকাই হেরেমের অন্তর্ভুক্ত। বরং এ নির্দেশ ছিল পুনরায় ফাযীলাত অর্জনের জন্য এবং এ আদেশ মুস্তাহাবের জন্য ওয়াজিবের জন্য নয়।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১১: হজ্জ (كتاب المناسك) 11. The Rites of Pilgrimage

পরিচ্ছেদঃ ১৩. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - বাধাগ্রস্ত হওয়া এবং হজ্জ ছুটে যাওয়া

২৭১৩-[৭] হাজ্জাজ ইবনু ’আমর আল আনসারী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল­াহসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যার হাড় ভেঙ্গে গেছে অথবা খোঁড়া হয়ে গেছে সে হালাল হয়ে গেছে। তবে পরের বছর তার ওপর হজ্জ/হজ করা অত্যাবশ্যক। [তিরমিযী, আবূ দাঊদ, নাসায়ী, ইবনু মাজাহ ও দারিমী; কিন্তু আবূ দাঊদ আরেক বর্ণনায় আরো বেশি বলেছেন, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ ’’অথবা রোগাক্রান্ত হয়েছে’’। তিরমিযী বলেন, হাদীসটি হাসান। ইমাম বাগাবী মাসাবীহ গ্রন্থে বলেন, হাদীসটি দুর্বল।][1]

وَعَنِ الْحَجَّاجِ بْنِ عَمْرٍو الْأَنْصَارِيِّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم: «من كُسِرَ أَوْ عَرِجَ فَقَدْ حَلَّ وَعَلَيْهِ الْحَجُّ من قَابل» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ وَأَبُو دواد وَالنَّسَائِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَالدَّارِمِيُّ وَزَادَ أَبُو دَاوُدَ فِي رِوَايَةٍ أُخْرَى: «أَوْ مَرِضَ» . وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ: هَذَا حَدِيث حسن. وَفِي المصابيح: ضَعِيف

وعن الحجاج بن عمرو الأنصاري قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «من كسر أو عرج فقد حل وعليه الحج من قابل» . رواه الترمذي وأبو دواد والنسائي وابن ماجه والدارمي وزاد أبو داود في رواية أخرى: «أو مرض» . وقال الترمذي: هذا حديث حسن. وفي المصابيح: ضعيف

ব্যাখ্যা: (مَنْ كُسِرَ أَوْ عَرِجَ فَقَدْ حَلَّ) ‘‘যে ব্যক্তির পা ভেঙ্গে যাবে অথবা লেংড়া হয়ে যাবে সে হালাল হয়ে যাবে।’’ অর্থাৎ- এমন ব্যক্তির জন্য ইহরাম পরিত্যাগ করে স্বদেশে ফিরে যাওয়া বৈধ।

‘আল্লামা সিন্দী (রহঃ) বলেনঃ ইহরাম বাঁধার পর যে ব্যক্তি শত্রু দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত ব্যতীত যে কোন কারণে যদি সফর অব্যাহত রাখতে অপারগ হয়ে যায়। যেমন- কারো পা ভেঙ্গে গেল অথবা এমনিতেই লেংড়া হয়ে গেল তার জন্য ইহরাম ছেড়ে দিয়ে হালাল হওয়া বৈধ যদিও ইহরাম বাঁধার সময় কোন শর্ত না করে থাকেন। তবে শাফি‘ঈ ও হাম্বালীদের মতে শর্তারোপ করলে তার জন্য হালাল হওয়া বৈধ নচেৎ নয়। আর হানাফীগণ এটা কেউ ইহসার মনে করে যেমন- শত্রু কর্তৃক বাধাপ্রাপ্ত হওয়াটাকে ইহসার বলা হয়।

এদের মতে এখানে حل শব্দের অর্থ হলো সে হালাল হওয়ার নিকটবর্তী হয়েছে। অর্থাৎ- সে কারো মাধ্যমে কুরবানীর পশু মক্কায় পাঠিয়ে দিবে এবং তা যাবাহ করার নির্দিষ্ট দিন ও সময় ধার্য করে দিবে। অতঃপর নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হওয়ার পর ইহরাম পরিত্যাগ করে হালাল হয়ে যাবে।

(عَلَيْهِ الْحَجُّ مِنْ قَابِلٍ) ‘‘সে পরবর্তী বৎসর হজ্জ/হজ করবে।’’ অর্থাৎ- যিনি ফরয হজ্জ/হজ সম্পাদন করতে গিয়ে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে হালাল হবে তাকে পরবর্তী বৎসর পুনরায় হজ্জ/হজ করতে হবে। আর নফল হজ্জ/হজ সম্পাদনকারীর জন্য হালাল হওয়ার নিমিত্তে কুরবানী করা ব্যতীত তাকে আর কিছুই করতে হবে না। এ অভিমত ইমাম মালিক ও ইমাম শাফি‘ঈর। আর আবূ হানীফার মতে তার হজ্জ/হজ ও ‘উমরা করা ওয়াজিব। ইব্রাহীম নাখ্‘ঈর অভিমতও এরূপ।

‘আল্লামা ইবনুল ক্বইয়্যিম বলেনঃ সহাবা এবং পরবর্তী ‘আলিমগণ এ বিষয়ে মতভেদে লিপ্ত হয়েছেন যে, শত্রু কর্তৃক বাধাপ্রাপ্ত হওয়া ব্যতীত অন্য কোন কারণে বাধাপ্রাপ্ত হলে তার জন্য বায়তুল্লাহ-তে পৌঁছার আগেই হালাল হওয়া বৈধ কি-না?

ইবনু ‘আব্বাস, ইবনু ‘উমার ও মারওয়ান-এর মতে বায়তুল্লাহর তাওয়াফ ব্যতীত তার জন্য হালাল হওয়া বৈধ নয়। ইমাম মালিক, শাফি‘ঈ, ইসহাক ও আহমাদ প্রমুখ ‘আলিমগণের অভিমতও এটাই।

ইবনু মাস্‘ঊদ (রাঃ)-এর মতে সে ব্যক্তি শত্রু কর্তৃক বাধাপ্রাপ্ত ব্যক্তির মতই। ‘আত্বা, সাওরী ও আবূ হানীফার মত এটাই।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১১: হজ্জ (كتاب المناسك) 11. The Rites of Pilgrimage

পরিচ্ছেদঃ ১৩. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - বাধাগ্রস্ত হওয়া এবং হজ্জ ছুটে যাওয়া

২৭১৪-[৮] ’আবদুর রহমান ইবনু ইয়া’মুর আদ্ দায়লী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি ’আরাফাই হচ্ছে হজ্জ/হজ। যে ব্যক্তি ’আরাফায় মুযদালিফার রাতে (৯ যিলহজ্জ শেষ রাতে) ভোর হবার আগে ’আরাফাতে পৌঁছতে পেরেছে সে হজ্জ/হজ পেয়ে গেছে। মিনায় অবস্থানের সময় হলো তিনদিন। যে দুই দিনে তাড়াতাড়ি মিনা হতে ফিরে আসলো তার গুনাহ হলো না। আর যে (তিনদিন পূর্ণ করে) দেরী করবে তারও গুনাহ হলো না। (তিরমিযী, আবূ দাঊদ, নাসায়ী, ইবনু মাজাহ ও দারিমী; তিরমিযী বলেছেন, হাদীসটি হাসান সহীহ)[1]

وَعَن عبدِ الرَّحمنِ بنِ يَعمُرَ الدَّيْلي قَالَ: سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «الْحَجُّ عَرَفَةُ مَنْ أَدْرَكَ عَرَفَةَ لَيْلَةَ جَمْعٍ قَبْلَ طُلُوعِ الْفَجْرِ فَقَدْ أَدْرَكَ الْحَجَّ أيَّامُ مِنىً ثلاثةَ أيَّامٍ فَمَنْ تَعَجَّلَ فِي يَوْمَيْنِ فَلَا إِثْمَ عَلَيْهِ وَمَنْ تَأَخَّرَ فَلَا إِثْمَ عَلَيْهِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ وَالنَّسَائِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَالدَّارِمِيُّ وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ: هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ
هَذَا الْبَابُ خَالٍ عَنِ الْفَصْلِ الثَّالِثِ

وعن عبد الرحمن بن يعمر الديلي قال: سمعت النبي صلى الله عليه وسلم يقول: «الحج عرفة من أدرك عرفة ليلة جمع قبل طلوع الفجر فقد أدرك الحج أيام منى ثلاثة أيام فمن تعجل في يومين فلا إثم عليه ومن تأخر فلا إثم عليه» . رواه الترمذي وأبو داود والنسائي وابن ماجه والدارمي وقال الترمذي: هذا حديث حسن صحيح هذا الباب خال عن الفصل الثالث

ব্যাখ্যা: (الْحَجُّ عَرَفَةُ) ‘‘আরাফাই হজ্জ/হজ’’। অর্থাৎ- যিলহজ্জ মাসের নবম তারিখে ‘আরাফাতে অবস্থান করা হজ্জের মূল বিষয়। কেননা যে ব্যক্তি ‘আরাফাতে অবস্থান করতে ব্যর্থ হলো তার হজ্জ ছুটে গেল। ‘আল্লামা শাওকানী বলেন, যিনি ‘আরাফার দিনে ‘আরাফাতে অবস্থান করতে সমর্থ হয়েছে তার হজ্জই সঠিক হজ্জ। এ হাদীসের একটি ঘটনা আছে তা এই যে, নাজদ এলাকার কিছু লোক নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট আগমন করলেন তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘আরাফাতে অবস্থানরত ছিলেন। তারা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট হজ্জ সম্পর্কে জানতে চাইলে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘোষককে ঘোষণা দিতে বললে তিনি ঘোষণা দিলেন ‘আরাফাই হজ্জ।

(مَنْ أَدْرَكَ عَرَفَةَ لَيْلَةَ جَمْعٍ قَبْلَ طُلُوْعِ الْفَجْرِ) যে ব্যক্তি মুযদালিফাতে রাত যাপনের রাতে ফজর উদয় হওয়ার পূর্বেই ‘আরাফাতে অবস্থান করতে সমর্থ হলো (فَقَدْ أَدْرَكَ الْحَجَّ) সে হজ্জ পেল। অর্থাৎ- তার হজ্জ সঠিক হয়েছে। তার হজ্জ ছুটে যায়নি। এতে তাদের দাবী প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে যারা বলেন, ‘আরাফার দিনে সূর্য ডুবে যাওয়ার পর ‘আরাফাতে অবস্থানের সময় শেষ হয়ে গেছে।

অথবা যারা বলেন মুযদালিফাতে রাত যাপনের রাতে ফজরের পর সূর্যোদয় পর্যন্ত ‘আরাফাতে অবস্থানের সুযোগ রয়েছে।

(أيَّامُ مِنىً ثَلَاثَةَ أَيَّامٍ) মিনাতে অবস্থানের দিন তিনটি। অর্থাৎ- আইয়্যামে তাশরীক। আর এ তিনদিন ইয়াওমুন্ নাহর তথা ঈদের পরের তিনদিন। ঈদের দিন এ তিন দিনের অন্তর্ভুক্ত নয়। কেননা এতে সবাই একমত তথা ইজমা প্রতিষ্ঠিত যে ঈদের পরের দিনই হজ্জের কাজ শেষ করে বাড়ীতে ফিরে যাওয়া বৈধ নয়। বরং ঈদের দিন বাদে ২য় দিনে ফিরে যাওয়া বৈধ। আর তৃতীয় দিনে ফিরে যাওয়া ইত্তম।

হাদীসের শিক্ষাঃ

১. ‘আরাফাতে অবস্থান করা হজ্জের প্রাধান্যতম রুকন। ‘আরাফাতে অবস্থান ব্যতীত হজ্জ বিশুদ্ধ হয় না।

২. ‘আরাফাতে অবস্থানের সময় মুযদালিফাতে অবস্থানের রাতে ফজর উদয় হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত বিস্তৃত।

৩. ‘আরাফাতে অবস্থানকারীর জন্য সূর্য ডুবে যাওয়ার পরও অপেক্ষা করা ওয়াজিব।

৪. যে ব্যক্তি সূর্যাস্তের পূর্বেই ‘আরাফাহ্ ত্যাগ করবে অধিকাংশ ‘আলিমদের মতে তার ওপর দম ওয়াজিব। তাদের মাঝে ‘আত্বা, সাওরী, শাফি‘ঈ, আবূ সাওর এবং আহলুর রায়।

তবে ইমাম শাফি‘ঈ ও ইমাম মালিক-এর মতে, সে যদি সূর্যাস্তের পূর্বেই ফিরে এসে সূর্যাস্ত পর্যন্ত অবস্থান করে তাহলে তাকে দম দিতে হবে না।

ইমাম আবূ হানীফার মতে সে ফিরে আসুক বা না আসুক তাকে অবশ্যই দম দিতে হবে।

‘আরাফাতে অবস্থানের সময়ের শুরু ও শেষ নিয়ে মতভেদ রয়েছে তবে তার নির্যাস নিম্নরূপ-

সকলের ঐকমত্যে ‘আরাফাতে অবস্থান একটি অন্যতম রুকন। ‘আরাফার দিন সূর্য ঢলে যাবার পর থেকে রাতের কিছু অংশ পর্যন্ত যিনি ‘আরাফাতে অবস্থান করবেন তার এ অবস্থান পূর্ণ এ বিষয়ে সকলেই ঐকমত্য পোষণ করেন।

* যিনি দিনে অবস্থান না করে শুধু রাতে অবস্থান করবেন জমহূরের মতে তার অবস্থান পূর্ণাঙ্গ। তাকে কোন দম দিতে হবে না। তবে মালিকীদের মতে তাকে দম দিতে হবে।

* যিনি শুধুমাত্র দিনে অবস্থান করবেন রাতে অবস্থান করবেন না মালিকীদের মতে তার অবস্থান বিশুদ্ধ নয়। অর্থাৎ- তাকে পুনরায় হজ্জ/হজ করতে হবে। আর জমহূর ‘আলিমদের মতে তার হজ্জ বিশুদ্ধ, ইমাম আবূ হানীফা, শাফি‘ঈ, ‘আত্বা, সাওরী, আবূ সাওর প্রমুখদের অভিমত এটাই। ইমাম আহমাদ-এর বিশুদ্ধ মতও এটিই। তবে তার ওপর দম ওয়াজিব কিনা, এ নিয়ে তাদের মধ্যে ভিন্ন মত রয়েছে।

ইমাম আবূ হানীফা ও আহমাদ-এর মতানুযায়ী তার ওপর দম ওয়াজিব।

ইমাম শাফি‘ঈর সঠিক মতানুযায়ী তার ওপর দম ওয়াজিব নয়। অন্য মতে দম ওয়াজিব।

জমহূর ‘আলিমদের মতে ‘আরাফার দিনে সূর্য ঢলে যাবার পূর্বে অবস্থানের সময় নয়। তবে ইমাম আহমাদ-এর মতে তা অবস্থানের সময়।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১১: হজ্জ (كتاب المناسك) 11. The Rites of Pilgrimage
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৩ পর্যন্ত, সর্বমোট ৩ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে