পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - যেসব জিনিসের যাকাত দিতে হয়

১৭৯৯-[৬] ’আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি ঘোড়া ও গোলামের যাকাত মাফ করে দিয়েছি। তোমরা চল্লিশ দিরহাম রূপায় এক দিরহাম রূপা যাকাত আদায় করো (যদি রূপার নিসাবের পরিমাণ দু’শ দিরহাম হয়)। কারণ একশ’ নব্বই দিরহাম পর্যন্ত বা দু’শ দিরহামের কম রূপার যাকাত ফরয হয় না। দু’শ দিরহাম রূপা হলে পাঁচ দিরহাম যাকাত দিতে হবে। তিরমিযী, আবূ দাঊদ; আবূ দাঊদ হারিসুল আ’ওয়ার হতে ’আলীর এ বর্ণনাটি নকল করেছেন যে, যুহায়র বলেছেন, ’আলী (রাঃ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বরাতে বলেছেন, চল্লিশ দিরহামে এক দিরহাম (চল্লিশ ভাগের এক ভাগ) আদায় করো। আর দু’শ দিরহাম পূর্ণ না হলে কোন কিছু আদায় করা ওয়াজিব নয়। দু’শ দিরহাম পুরা হলে তার মধ্যে পাঁচ দিরহাম যাকাত ওয়াজিব হবে। আর যখন দু’শত দিরহামের বেশী হবে, তখন এতে এ হিসেবে যাকাত ওয়াজিব হবে।

আর বকরীর নিসাব প্রত্যেক চল্লিশটিতে একটি বকরীর যাকাত ওয়াজিব। একশ’ বিশটি বকরী পর্যন্ত চলবে। সংখ্যায় এর চেয়ে একটি বেড়ে গেলে দু’শ পর্যন্ত দু’টি বকরী যাকাত হবে। আবার দু’শ হতে একটি বৃদ্ধি পেলে, তিনশ’ পর্যন্ত তিনটি বকরী যাকাত হবে। আর তিনশ’ হতে বেশী হলে (অর্থাৎ চারশ’ হলে) প্রত্যেক একশ’ বকরীতে একটি করে বকরী যাকাত দেয়া ওয়াজিব। যদি কারো নিকট নিসাব সংখ্যক বকরী না থাকে অর্থাৎ উনচল্লিশটি থাকে তাহলে যাকাত দিতে হবে না। আর গরুর যাকাতের নিসাব হলো, প্রত্যেক ত্রিশটি গরুতে এক বছরের একটি গরু, আর চল্লিশটি গরু হলে দু’বছর বয়সের একটি গরু যাকাত হিসেবে দেয়া ওয়াজিব। চাষাবাদ ও আরোহণের কাজে ব্যবহৃত গরুর কোন যাকাত নেই।[1]

عَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: قَدْ عَفَوْتُ عَنِ الْخَيْلِ وَالرَّقِيقِ فَهَاتُوا صَدَقَةً الرِّقَةِ: مِنْ كُلِّ أَرْبَعِينَ دِرْهَمًا دِرْهَمٌ وَلَيْسَ فِي تِسْعِينَ وَمِائَةٍ شَيْءٌ فَإِذَا بَلَغَتْ مِائَتَيْنِ فَفِيهَا خَمْسَةُ دَرَاهِمَ . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ
وَفِي رِوَايَةٍ لأبي دَاوُد عَن الْحَارِث عَنْ عَلِيٍّ قَالَ زُهَيْرٌ أَحْسَبُهُ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ قَالَ: هَاتُوا رُبْعَ الْعُشْرِ مِنْ كُلِّ أَرْبَعِينَ دِرْهَمًا دِرْهَمٌ وَلَيْسَ عَلَيْكُمْ شَيْءٌ حَتَّى تَتِمَّ مِائَتَيْ دِرْهَمٍ. فَإِذَا كَانَتْ مِائَتَيْ دِرْهَمٍ فَفِيهَا خَمْسَةُ دَرَاهِمَ. فَمَا زَادَ فَعَلَى حِسَابِ ذَلِكَ. وَفِي الْغَنَمِ فِي كُلِّ أَرْبَعِينَ شَاةً شَاةٌ إِلَى عِشْرِينَ وَمِائَة ز فَإِن زَادَت وَاحِدَة فشاتان إِلَى مِائَتَيْنِ. فَإِن زَادَتْ فَثَلَاثُ شِيَاهٍ إِلَى ثَلَاثِمِائَةٍ فَإِذَا زَادَتْ على ثَلَاث مائَة فَفِي كُلِّ مِائَةٍ شَاةٌ. فَإِنْ لَمْ تَكُنْ إِلَّا تِسْعٌ وَثَلَاثُونَ فَلَيْسَ عَلَيْكَ فِيهَا شَيْءٌ
وَفِي الْبَقَرِ: فِي كُلِّ ثَلَاثِينَ تَبِيعٌ وَفِي الْأَرْبَعين مُسِنَّة وَلَيْسَ على العوامل شَيْء

عن علي رضي الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم قد عفوت عن الخيل والرقيق فهاتوا صدقة الرقة من كل اربعين درهما درهم وليس في تسعين وماىة شيء فاذا بلغت ماىتين ففيها خمسة دراهم رواه الترمذي وابو داودوفي رواية لابي داود عن الحارث عن علي قال زهير احسبه عن النبي صلى الله عليه وسلم انه قال هاتوا ربع العشر من كل اربعين درهما درهم وليس عليكم شيء حتى تتم ماىتي درهم فاذا كانت ماىتي درهم ففيها خمسة دراهم فما زاد فعلى حساب ذلك وفي الغنم في كل اربعين شاة شاة الى عشرين وماىة ز فان زادت واحدة فشاتان الى ماىتين فان زادت فثلاث شياه الى ثلاثماىة فاذا زادت على ثلاث ماىة ففي كل ماىة شاة فان لم تكن الا تسع وثلاثون فليس عليك فيها شيءوفي البقر في كل ثلاثين تبيع وفي الاربعين مسنة وليس على العوامل شيء

ব্যাখ্যা: ঘোড়া ও গোলামে যাকাত নেই, যদি ব্যবসায়ের জন্য না হয়। আর প্রতি ৪০ দিরহামে এক দিরহাম যাকাত ধার্য হয় যদি ২০০ দিরহাম জমা হয়। আর দু’শত দিরহাম হলে পাঁচ দিরহাম ওয়াজিব হয়। তবে হানাফী মাযহাবে ঘোড়ায় যাকাত ফরয হবে। তারা এ হাদীসের উত্তর দেন যে, এখানে আরোহণের ও জিহাদের ঘোড়ার কথা বলা হয়েছে। বাকী ঘোড়াতে যাকাত ফরয হবে।

৩০টি গরুতে এক বৎসরের একটি বাচ্চা বাছুর যাকাত ফরয হয়। আর ৪০টি হলে ২ বৎসরের একটি বাচ্চা বাছুর ওয়াজিব হয়। ২ বৎসরের বাছুর নর হোক বা নারী হোক তাতে কোন অসুবিধা নেই।

রৌপ্যের নিসাব হল দুইশত দিরহাম। অর্থাৎ একশত নব্বই দিরহাম হলেও তাতে কোন যাকাত লাগবে না। তবে নিসাবের উপর যে পরিমাণই বেশি হোক সেই  বর্ধিত অংশে যাকাত ওয়াজিব হবে। অর্থাৎ যদি দুইশত দিরহামের উপর এক দিরহাম বেশি হয় তাহলে তাতেও চল্লিশ ভাগের একভাগ যাকাত দিতে হবে। ফসলাদি, শস্যাদি এবং ফলমূলের ক্ষেত্রেও একই বিধান প্রযোজ্য। অর্থাৎ পাচ ওয়াসাক্বের বেশি যতটুকুই বেশি হোক না কেন তাতে হিসাব করে যাকাত দিতে হবে। নগদ মুদ্রাও একই শ্রেণীভুক্ত। অর্থাৎ নগদ মুদ্রার ক্ষেত্রে নিসাবের অতিরিক্ত যে পরিমাণ হবে তাতে হিসাব করে যাকাত দিতে হবে। তবে চতুষ্পদ জন্তুর ক্ষেত্রে তা ভিন্ন। কেননা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ ক্ষেত্রে কতগুলো স্তর করে দিয়েছেন এবং সেই স্তরের মধ্যবর্তীগুলোর ক্ষেত্রে আবশ্যক করেননি যতক্ষণ না পরবর্তী স্তরে পৌঁছে। যদিও রৌপ্যের মাস্আলার ক্ষেত্রে ইমাম আবূ হানীফাহ্ (রহঃ) বিপরীত মত পেশ করেছেন।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৬: যাকাত (كتاب الزكاة) 6. Zakat

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - যেসব জিনিসের যাকাত দিতে হয়

১৮০০-[৭] মু’আয (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে প্রশাসক বানিয়ে ইয়ামানে পাঠাবার সময় এ হুকুম দিয়েছিলেন, প্রত্যেক ত্রিশটি গরুতে এক বছর বয়সী একটি গরু এবং প্রত্যেক চল্লিশটি গরুতে দু’ বছর বয়সী একটি গরু যাকাত হিসেবে উসূল করবে। (আবূ দাঊদ, তিরমিযী, নাসায়ী, দারিমী)[1]

وَعَنْ مُعَاذٍ: أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمَّا وَجَّهَهُ إِلَى الْيَمَنِ أَمْرَهُ أَنْ يَأْخُذَ مِنْ الْبَقَرَة: مِنْ كُلِّ ثَلَاثِينَ تَبِيعًا أَوْ تَبِيعَةً وَمِنْ كل أَرْبَعِينَ مُسِنَّةً. رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَالتِّرْمِذِيُّ وَالنَّسَائِيُّ والدارمي

وعن معاذ ان النبي صلى الله عليه وسلم لما وجهه الى اليمن امره ان ياخذ من البقرة من كل ثلاثين تبيعا او تبيعة ومن كل اربعين مسنة رواه ابو داود والترمذي والنساىي والدارمي

ব্যাখ্যা: চল্লিশটিতে মুসিন্নার (দুই বছরে পূর্ণ করে তৃতীয় বছরে পদার্পণ করেছে এমন বকনা গরু) বিষয়টি এ হাদীসে বর্ণিত হলেও এক্ষেত্রে কমবয়স্কা পুরুষ গরু দেয়া বৈধ যেমনটি পূর্ববর্তী ইবনু ‘আব্বাস-এর হাদীসে এসেছে। যদিও এ বিষয়ে ‘উলামাগণ মতবিরোধ করেছেন। আর ত্রিশের পর থেকে প্রতি দশকের মধ্যে কোন যাকাত আবশ্যক হবে না যতক্ষণ না তা পরবর্তী দশকে পৌঁছে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৬: যাকাত (كتاب الزكاة) 6. Zakat

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - যেসব জিনিসের যাকাত দিতে হয়

১৮০১-[৮] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (নিসাবের চেয়ে) বেশী যাকাত গ্রহণকারী যাকাত অস্বীকারকারীর সমান (অর্থাৎ যাকাত না দেয়া যেমন গুনাহ, তেমনি পরিমাণের চেয়ে বেশী যাকাত উসূল করাও গুনাহ)। (আবূ দাঊদ, তিরমিযী)[1]

وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْمُعْتَدِي فِي الصَّدَقَةِ كَمَانِعِهَا» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَالتِّرْمِذِيّ

وعن انس قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم المعتدي في الصدقة كمانعها رواه ابو داود والترمذي

ব্যাখ্যা: অত্র হাদীসে সীমালঙ্ঘনকারীর ক্ষেত্রটি যাকাত দাতার ক্ষেত্রে হতে পারে। আবার যাকাত আদায়কারীর ক্ষেত্রেও হতে পারে। যাকাত দাতার ক্ষেত্রে রূপটি হলঃ সে যাকাত ব্যয়ের খাত ভিন্ন অন্য খাতে তা ব্যয় করার মাধ্যমে সীমালঙ্ঘন করলে। অথবা সে তার পরিবারের জন্য কিছুই অবশিষ্ট রাখলে না বা যাকাত আদায়কারীর নিকট কিছু অংশ গোপন রাখল বা যাকাতের এমন বর্ণনা দিল যাতে আদায়কারী তার থেকে কম নিল, ফলে এর মাধ্যমে সীমালঙ্ঘন করে যাকাত প্রদানে বাধাদানকারীর যে পাপ হয় তদানুরূপ কিছু পাপে সে জড়িয়ে পড়ল। আর যাকাত গ্রহণকারীর ক্ষেত্রে এর রূপটি হল, সে মালিকের থেকে বেশি বা উত্তম যাকাত গ্রহণ করবে। কেননা যখন সে একবছর এরূপ করবে তখন পরবর্তী বছর মালিক যাকাত প্রদানে বিরত থাকবে। ফলে এরূপ করাটি যাকাত না দেয়ার একটি কারণ হয়ে যায়। যার ফলে যাকাত গ্রহণকারী/আদায়কারী যাকাত প্রদানে বাধা প্রদান করার পাপে অংশীদার হয়ে যাবে।

‘আবদুর রহমান মুবারকপূরী (রহঃ) বলেন, সদাক্বার ক্ষেত্রে সীমালঙ্ঘন করার দ্বারা উদ্দেশ্য হল যাকাত গ্রহণকারীর যাকাত গ্রহণে সীমালঙ্ঘন করা যাকাত প্রদানকারীর নয়।


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৬: যাকাত (كتاب الزكاة) 6. Zakat

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - যেসব জিনিসের যাকাত দিতে হয়

১৮০২-[৯] আবূ সা’ঈদ আল্ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ শস্য ও খেজুর পাঁচ ওয়াসাক পরিমাণ না হওয়া পর্যন্ত যাকাত ওয়াজিব হবে না। (নাসায়ী)[1]

وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَيْسَ فِي حَبٍّ وَلَا تَمْرٍ صَدَقَةٌ حَتَّى يَبْلُغَ خَمْسَةَ أَوْسُقٍ» . رَوَاهُ النَّسَائِيّ

وعن ابي سعيد الخدري ان النبي صلى الله عليه وسلم قال ليس في حب ولا تمر صدقة حتى يبلغ خمسة اوسق رواه النساىي

ব্যাখ্যা: পাঁচ ওয়াসাকের নিচে দানা জাতীয় ফসল বা খেজুর হলে তাতে যাকাত ফরয হয় না। এ হাদীস হতে দানা জাতীয় ফসল বলতে অনেকেই বলেন যে, জাফরান, তুলা, ফুল, খিরাই, কাঁকুড়, তরিতরকারী এরূপ জিনিসে যাকাত নেই। তবে কেউ কেউ অন্যরূপ এ হাদীস থেকে মত পোষণ করেছিল।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৬: যাকাত (كتاب الزكاة) 6. Zakat

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - যেসব জিনিসের যাকাত দিতে হয়

১৮০৩-[১০] মূসা ইবনু ত্বলহাহ্ (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাদের কাছে মু’আয-এর ওই চিঠি বিদ্যমান আছে, যা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর কাছে পাঠিয়েছিলেন। বস্তুত মু’আয (রাঃ) বর্ণনা করেছেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে ’গম’ ’যব’ ’আঙ্গুর’ ও ’খেজুরের’ যাকাত উসূল করতে আদেশ করেছেন। (এ হাদীসটি মুরসাল, শারহে সুন্নাতে বর্ণনা করা হয়েছে)[1]

وَعَنْ مُوسَى بْنِ طَلْحَةَ قَالَ: عِنْدَنَا كِتَابُ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ قَالَ: إِنَّمَا أَمَرَهُ أَنْ يَأْخُذَ الصَّدَقَةَ مِنَ الْحِنْطَةِ وَالشَّعِيرِ وَالزَّبِيبِ وَالتَّمْرِ. مُرْسل رَوَاهُ فِي شرح السّنة

وعن موسى بن طلحة قال عندنا كتاب معاذ بن جبل عن النبي صلى الله عليه وسلم انه قال انما امره ان ياخذ الصدقة من الحنطة والشعير والزبيب والتمر مرسل رواه في شرح السنة

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৬: যাকাত (كتاب الزكاة) 6. Zakat

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - যেসব জিনিসের যাকাত দিতে হয়

১৮০৪-[১১] ’আত্তাব ইবনু আসীদ (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আঙ্গুরের যাকাতের ব্যাপারে বলেছেন, আঙ্গুরের ব্যাপারে এভাবে আন্দাজ অনুমান করতে হবে যেভাবে খেজুরের ব্যাপারে শুকিয়ে গেলে করা হয়। তারপর আঙ্গুর শুকিয়ে গেলে তার যাকাত আদায় করা হবে। যেভাবে খেজুরের যাকাত আদায় করা হয়। (তিরমিযী, আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْ عَتَّابِ بْنِ أَسِيدٍ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ فِي زَكَاةِ الْكُرُومِ: «إِنَّهَا تُخْرَصُ كَمَا تُخْرَصُ النَّخْلُ ثُمَّ تُؤَدَّى زَكَاتُهُ زَبِيبًا كَمَا تُؤَدَّى زَكَاةُ النَّخْلِ تَمْرًا» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ وَأَبُو دَاوُد

وعن عتاب بن اسيد ان النبي صلى الله عليه وسلم قال في زكاة الكروم انها تخرص كما تخرص النخل ثم تودى زكاته زبيبا كما تودى زكاة النخل تمرا رواه الترمذي وابو داود

ব্যাখ্যা: গাছের আঙ্গুর অনুমান করে ঘরের কিসমিস দ্বারা যাকাত আদায় করা জায়িয আছে। যেমন- গাছের খেজুরকে অনুমান করে ঘরের শুকনা খেজুর দ্বারা যাকাত দেয়া জায়িয আছে।

اَلْخَرْصُ (আল খর্‌স) বলা হয় খেজুর গাছের তাজা খেজুর শুকানো খেজুরের উপর ভিত্তি করে অনুমান করা এবং গাছে থাকা আঙ্গুরকে কিসমিসের উপর ভিত্তি করে অনুমান করা। আল্লামা সিনদী (রহঃ) বলেছেন, اَلْخَرْصُ (আল খরস) হল গাছে বিদ্যমান তাজা খেজুরকে শুকনো খেজুরের ভিত্তিতে পরিমাণ নির্ধারণ করা এবং গাছে থাকা আঙ্গুরকে কিসমিসের ভিত্তিতে পরিমাণ নির্ধারণ করা যাতে তার উশরের পরিমাণ জানা যায়। অতঃপর পরিমাণকারী এবং মালিকের মাঝে ছেড়ে দিবে পরে ফল কর্তনের সময় মালিকের থেকে তা গ্রহণ করা হবে।

اَلْخَرْصُ (আল খর্‌স) বা অনুমান করে যাকাত আদায়ের উপকারিতা হল, ফলের মালিকের তা থেকে গ্রহণের প্রশস্ততা দান, তার পাকাগুলো বিক্রি করা, পরিবার, প্রতিবেশী এবং দারিদ্রের অগ্রাধিকার দেয়া। কেননা তাদের এ থেকে বিরত রাখলে তা তাদের জন্য সংকীর্ণ হয়ে যায়। আল আমির আল ইয়ামানী (রহঃ) বলে, খর্সের উপকারিতা হল, মালিকের খিয়ানাত হতে নিরাপদ হওয়া। খাত্ত্বাবী (রহঃ) বলেন, খর্‌স বা অনুমানটি হবে সেই সময় যখন ফলের পরিপক্কতা প্রকাশ পাবে খাওয়া এবং ধ্বংস হওয়ার পূর্বেই যাতে তার থেকে সদাক্বার পরিমাণ জানা যায়। ফলে শুকানোর পর সে পরিমাণ শুকনা খেজুর বা কিসমিস আদায় করা যায়।

এই হাদীসটি আঙ্গুর এবং খেজুরের যাকাতের ক্ষেত্রে অনুমানের বৈধতার সুস্পষ্ট দলীল। এর পক্ষে মত ব্যক্ত করেছেন ‘উমার ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ), সাহল বিন আবী হাসমাহ্, মারওয়ান আল ক্বাসিম বিন মুহাম্মাদ, যুহরী সহ আরো অনেক আহলে ‘ইলমগণ।

যদিও ইমাম আবূ হানীফাহ্ এবং তার দুই সাথি اَلْخَرْصُ (আল খর্‌স) এর বিষয়টি বাতিল বলে এর স্বপক্ষের হাদীসগুলো বিভিন্ন যুক্তিতে খন্ডন করার চেষ্টা করেছেন।

তবে অনুমান করে যাকাত আদায়ের পদ্ধতিটি ওয়াজিব, মুস্তাহাব, নাকি জায়িয বা বৈধ এ নিয়ে ‘উলামাদের মতভেদ রয়েছে। জমহূরের মতে তা মুস্তাহাব।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৬: যাকাত (كتاب الزكاة) 6. Zakat

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - যেসব জিনিসের যাকাত দিতে হয়

১৮০৫-[১২] সাহল ইবনু আবূ হাস্‌মাহ্ (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রায়ই বলতেন, তোমরা যখন (আঙ্গুর অথবা খেজুরের যাকাত আন্দাজ অনুমান করবে) তখন এর দুই-তৃতীয়াংশ নিয়ে নিবে, আর এক-তৃতীয়াংশ ছেড়ে দিবে। যদি এক-তৃতীয়াংশ দিতে না পার তাহলে অন্ততঃ এক-চতুর্থাংশ দিবে। (তিরমিযী, আবূ দাঊদ, নাসায়ী)[1]

وَعَنْ سَهْلِ بْنِ أَبِي حَثْمَةَ حَدَّثَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَقُولُ: «إِذَا خَرَصْتُمْ فَخُذُوا وَدَعُوا الثُّلُثَ فَإِنْ لَمْ تَدَعُوا الثُّلُثَ فَدَعُوا الرُّبُعَ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُد وَالنَّسَائِيّ

وعن سهل بن ابي حثمة حدث ان رسول الله صلى الله عليه وسلم كان يقول اذا خرصتم فخذوا ودعوا الثلث فان لم تدعوا الثلث فدعوا الربع رواه الترمذي وابو داود والنساىي

ব্যাখ্যা: গাছের ফল অনুমান করার সময় তিন ভাগের এক ভাগ অথবা ৪ ভাগের এক ভাগ ছেড়ে যাকাতের মাল নির্ধারণ করবে।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৬: যাকাত (كتاب الزكاة) 6. Zakat

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - যেসব জিনিসের যাকাত দিতে হয়

১৮০৬-[১৩] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ’আবদুল্লাহ ইবনু রওয়াহাকে (খায়বারের) ইয়াহূদীদের কাছে পাঠাতেন। তিনি সেখানে গিয়ে খেজুরের পরিমাণ অনুমান করতেন। তখন তা’ মিষ্টি হত, কিন্তু খাবার উপযুক্ত হত না। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يبْعَث عبد الله ابْن رَوَاحَةَ إِلَى يَهُودٍ فَيَخْرُصُ النَّخْلَ حِينَ يَطِيبُ قَبْلَ أَنْ يُؤْكَلَ مِنْهُ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ

وعن عاىشة قالت كان النبي صلى الله عليه وسلم يبعث عبد الله ابن رواحة الى يهود فيخرص النخل حين يطيب قبل ان يوكل منه رواه ابو داود

ব্যাখ্যা: ৭ম হিজরীতে খায়বার বিজয়ের পর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘আবদুল্লাহ ইবনু রওয়াহাকে খায়বারের ইয়াহূদীদের নিকট প্রেরণ করতেন। গাছের খেজুর অনুমান করার জন্য যখন গাছের খেজুর খাওয়ার উপযুক্ত হত। অতঃপর যখন ত্বায়িফ বিজয় হয় আর সেখানে প্রচুর আঙ্গুর হতো তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) খেজুর অনুমানের ন্যায় আঙ্গুর অনুমান করতে তাকে আদেশ করেন।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৬: যাকাত (كتاب الزكاة) 6. Zakat

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - যেসব জিনিসের যাকাত দিতে হয়

১৮০৭-[১৪] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মধুর যাকাত সম্পর্কে বলেছেন, প্রত্যেক দশ মশকে এক মশক মধু যাকাত দেয়া ওয়াজিব। (তিরমিযী; তিনি [ইমাম তিরমিযী] বলেন, এ হাদীসের সানাদের ব্যাপারে কথাবার্তা আছে। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে উদ্ধৃত এ সম্পর্কিত অধিকাংশ হাদীস সহীহ নয়।)[1]

وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم فِي الْعَمَل: «فِي كُلِّ عَشْرَةِ أَزُقٍّ زِقٌّ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: فِي إِسْنَادِهِ مَقَالٌ وَلَا يَصِحُّ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي هَذَا الْبَاب كثير شَيْء

وعن ابن عمر قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم في العمل في كل عشرة ازق زق رواه الترمذي وقال في اسناده مقال ولا يصح عن النبي صلى الله عليه وسلم في هذا الباب كثير شيء

ব্যাখ্যা: মধুর পরিমাপ দশ পাত্র হলে এক পাত্র যাকাত দিবে।

উক্ত হাদীস প্রমাণ করে যে, মধুতে যাকাত আছে। তবে এ বিষয়ে ইমামদের মধ্যে ইখতিলাফ আছে। ইমাম মালিক, ইমাম শাফি‘ঈ, ইবনু আবী লায়লা ও ইবনু হাযম (রহঃ)-এর নিকট মধুতে যাকাত নেই। আর এ বিষয়ে হাদীসগুলো দুর্বল। ইমাম আবূ হানীফাহ্, ইমাম আবূ ইউসুফ ও ইমাম মুহাম্মাদ (রহঃ)-এর নিকট মধুতে যাকাত ওয়াজিব হয়।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৬: যাকাত (كتاب الزكاة) 6. Zakat

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - যেসব জিনিসের যাকাত দিতে হয়

১৮০৮-[১৫] ’আবদুল্লাহ ইবনু মাস’ঊদ (রাঃ) এর স্ত্রী যায়নাব (রাঃ)বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের উদ্দেশে প্রদত্ত ভাষণে বললেন, হে মেয়েরা! তোমাদের মালের যাকাত আদায় করো, অলংকার হলেও। কেননা কিয়ামতের (কিয়ামতের) দিন তোমাদের বেশিরভাগই জাহান্নামী হবে। (তিরমিযী)[1]

وَعَنْ زَيْنَبَ امْرَأَةِ عَبْدِ اللَّهِ قَالَتْ: خَطَبَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: «يَا مَعْشَرَ النِّسَاءِ تَصَدَّقْنَ وَلَوْ مِنْ حُلِيِّكُنَّ فَإِنَّكُنَّ أَكْثَرُ أَهْلِ جَهَنَّمَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

وعن زينب امراة عبد الله قالت خطبنا رسول الله صلى الله عليه وسلم فقال يا معشر النساء تصدقن ولو من حليكن فانكن اكثر اهل جهنم يوم القيامة رواه الترمذي

ব্যাখ্যা: উক্ত হাদীসে মহিলাদের সদাক্বাহ্ (সাদাকা) করতে বলা হয়েছে, যদিও সোনা ও রূপার অলঙ্কার থেকে হয়। ইমাম আত্ তিরমিযীও উক্ত হাদীস থেকে তাই বুঝেছেন।

তিনি অধ্যায় রচনা করেছেনঃ (অলঙ্কারে যাকাত ওয়াজিবের অধ্যায়)

কারণ এখানে ‘আমর-এর সিগা ব্যবহার করা হয়েছে। আর ‘আমরের সিগা ওয়াজিবের জন্য ব্যবহার হয়। আর লেখকও তাই বুঝেছেন।

দ্বিতীয় মত যে, ‘আমরের সিগা নুদুবের বা মুস্তাহাবের অর্থে আসে ফল যাকাত দেয়ার ক্ষেত্রে। কারণ এ হাদীসে শুধুমাত্র মহিলাদেরকে খিতাব করা হয়েছে। সেখানে যাদের উপর যাকাত ফরয তারা সকলেই হাযির ছিল না। পক্ষান্তরে অনেকে এ মত ব্যক্ত করেছেন যে, এ হাদীসটি শুধুমাত্র অলঙ্কার বুঝায় না বরং অন্য সম্পদও বুঝায়। আবার অনেকের মতে এখানে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মহিলাদেরকে বিশেষ করে নফল যাকাতের কিষয়টি বুঝিয়েছেন। হানাফী মাযহাব মতে উক্ত হাদীস অলঙ্কারে যাকাত ওয়াজিব বুঝায়।

ইমাম নাবাবী (রহঃ) এটাকে নফল সদাক্বাহ্ (সাদাকা) বলে ব্যক্ত করেছেন।

মোটকথা ‘উলামাদের মধ্যে অলঙ্কারে যাকাত ওয়াজিব কি-না তা নিয়ে মতবিরোধ আছে। ইমাম আবূ হানীফার মতে ওয়াজিব হবে। আর এ মত হলো ‘উমার ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ), সা‘ঈদ ইবনু মুসাইয়্যিব, ‘আতবা ও অন্যান্যদের। আর এটা ইমাম আহমাদ ও ইমাম শাফি‘ঈর একটা মত। আর ইমাম মালিক, ইমাম আহমাদ, ইমাম শাফি‘ঈর প্রসিদ্ধ মত যে, অলঙ্কারের যাকাত ফরয নয়। আর এটা ‘আয়িশাহ্, আনাস, ইবনু ‘উমার ও ‘আম্মার-এর মত। আল্লামা ‘উবায়দুল্লাহ রহমানী বলেনঃ উত্তম মত হলো সোনা-রূপার অলঙ্কারে যাকাত ওয়াজিব। দলীল হলোঃ

وَالَّذِيْنَ يَكْنِزُوْنَ الذَّهَبَ وَالْفِضَّةَ وَلَا يُنْفِقُوْنَهَا

‘‘আর যারা স্বর্ণ ও রৌপ্য জমা করে রাখে এবং তা আল্লাহর পথে ব্যয় করে না, তুমি (হে মুহাম্মাদ!) তাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক এক শাস্তির সুসংবাদ শুনিয়ে দাও।’’ (সূরাহ্ আত্ তাওবাহ্ ৯ : ৩৪)

আর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হাদীসঃ পাঁচ উকিয়্যাহ্ রৌপ্যের নিচে যাকাত ওয়াজিব নয়। অতঃপর যখন দু’শত দিরহাম (পাঁচ উকিয়্যাহ্) হবে তখন তার মধ্যে যাকাত ফরয হবে। আর যে হাদীস বর্ণিত হয়েছে যে, ‘‘অলঙ্কারের যাকাত নেই’’। উক্ত হাদীস সহীহ নয়।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৬: যাকাত (كتاب الزكاة) 6. Zakat

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - যেসব জিনিসের যাকাত দিতে হয়

১৮০৯-[১৬] ’আমর ইবনু শু’আয়ব তার পিতা হতে, তার পিতা তার দাদা হতে বর্ণনা করেছেন। (একদিন) দু’জন মহিলা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট উপস্থিত হলেন। উভয়ের হাতে সোনার চুড়ি পরাছিল। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা কি এগুলোর যাকাত দিয়েছ? তারা বলল, ’জ্বি না’। তিনি বললেন, তোমরা কি চাও আল্লাহ তা’আলা (কিয়ামতের (কিয়ামতের) দিন) তোমাদেরকে দু’টি আগুনের বালা পরাবেন? তারা বলল, ’না’। তখন তিনি বললেন, তাহলে এ সোনার যাকাত দিয়ে দাও। (তিরমিযী; তিনি বলেছেন, এ হাদীসটি এভাবে মুসান্না ইবনু সব্বাহ (রহঃ) ’আমর ইবনু শু’আয়ব থেকে বর্ণনা করেছেন। আর মুসান্না ইবনু সব্বাহ এবং ইবনু লাহী’আহ্-কে [যিনি এ হাদীসের আর একজন বর্ণনাকারীর ব্যাপারে] দুর্বল মনে করা হয়। আর এ বিষয়ে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে কোন সহীহ হাদীস বর্ণিত হয়নি।)[1]

وَعَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ: أَنَّ امْرَأَتَيْنِ أَتَتَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَفِي أَيْدِيهِمَا سِوَارَانِ مِنْ ذَهَبٍ فَقَالَ لَهُمَا: «تُؤَدِّيَانِ زَكَاتَهُ؟» قَالَتَا: لَا. فَقَالَ لَهُمَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَتُحِبَّانِ أَنْ يُسَوِّرَكُمَا اللَّهُ بِسِوَارَيْنِ مِنْ نَارٍ؟» قَالَتَا: لَا. قَالَ: «فَأَدِّيَا زَكَاتَهُ» رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيث قد رَوَاهُ الْمُثَنَّى بْنُ الصَّبَّاحِ عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ نَحْوَ هَذَا وَالْمُثَنَّى بْنُ الصَّبَّاحِ وَابْنُ لَهِيعَةَ يُضَعَّفَانِ فِي الْحَدِيثِ وَلَا يَصِحُّ فِي هَذَا الْبَابِ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ شَيْء

وعن عمرو بن شعيب عن ابيه عن جده ان امراتين اتتا رسول الله صلى الله عليه وسلم وفي ايديهما سواران من ذهب فقال لهما توديان زكاته قالتا لا فقال لهما رسول الله صلى الله عليه وسلم اتحبان ان يسوركما الله بسوارين من نار قالتا لا قال فاديا زكاته رواه الترمذي وقال هذا حديث قد رواه المثنى بن الصباح عن عمرو بن شعيب نحو هذا والمثنى بن الصباح وابن لهيعة يضعفان في الحديث ولا يصح في هذا الباب عن النبي صلى الله عليه وسلم شيء

ব্যাখ্যা: এ হাদীস হতে অলঙ্কারের মধ্যে যাকাত ওয়াজিব প্রমাণ হয়।

তবে ইমাম আত্ তিরমিযী ইবনু লাহী‘আহ্-এর সানাদে নকল করেছেন কিন্তু সে সানাদ য‘ঈফ।

ইমাম আত্ তিরমিযী বলেনঃ মুসান্না ইবনু সব্বাহ-ও দুর্বল। এ অধ্যায়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে কোন সহীহ হাদীস বর্ণিত হয়নি। ইবনুল মুলকিন বলেনঃ ইমাম আবূ দাঊদ উক্ত হাদীস সহীহ সানাদে বর্ণনা করেছেন।


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৬: যাকাত (كتاب الزكاة) 6. Zakat

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - যেসব জিনিসের যাকাত দিতে হয়

১৮১০-[১৭] উম্মু সালামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি সোনার আওযাহ (এক রকম অলংকারের নাম) পরতাম। আমি একদিন বললাম, হে আল্লাহর রসূল! এ সোনার অলংকারও কি সঞ্চিত মাল গণ্য হবে (যে ব্যাপারে কুরআনে ভয় দেখানো হয়েছে)? তিনি বললেন, যে জিনিসে নিসাব পূর্ণ হয় এবং এর যাকাত দিয়ে দেয়া হয়, তা পবিত্র হয়ে যায়। তখন তা সঞ্চিত ধন-সম্পদের মধ্যে গণ্য নয়। (মালিক, আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْ أُمِّ سَلَمَةَ قَالَتْ: كُنْتُ أَلْبَسُ أَوْضَاحًا مِنْ ذَهَبٍ فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ أَكَنْزٌ هُوَ؟ فَقَالَ: «مَا بلغ أَن يُؤدى زَكَاتُهُ فَزُكِّيَ فَلَيْسَ بِكَنْزٍ» . رَوَاهُ مَالِكٌ وَأَبُو دَاوُد

وعن ام سلمة قالت كنت البس اوضاحا من ذهب فقلت يا رسول الله اكنز هو فقال ما بلغ ان يودى زكاته فزكي فليس بكنز رواه مالك وابو داود

ব্যাখ্যা: রূপার তৈরি একপ্রকার অলংকারকে আওযাহ বলা হয়। উক্ত হাদীস হতে বুঝা যায় যে, অলংকারে যাকাত আছে। তবে শর্ত হলো উক্ত অলংকার নিসাব সমপরিমাণ হওয়া। আর নিসাব হলো দু’শত দিরহাম। সুতরাং উক্ত মালে যাকাত দিলে কান্য-এর (শাস্তির) আওতায় যাবে না।

জ্ঞাতব্যঃ যে অলংকারে যাকাত ওয়াজিব হয় তার নিসাবের ক্ষেত্রে ওযন ধর্তব্য। অতএব যদি কেউ কিছু অলংকারের মালিক হয় যার মূল্য দুইশত দিরহাম কিন্তু পরিমাণ দুইশত দিরহামের কম তাহলে তার ওপর যাকাত আবশ্যক নয়। যদি তার ওযন দুইশত দিরহাম হয় তাহলে তাতে যাকাত আবশ্যক হবে যদিও তা মূল্যের ক্ষেত্রে দুইশত দিরহামের কম হয়। যেহেতু রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘পাঁচ উক্বিয়্যার কম রূপাতে যাকাত নেই।’’ তবে যদি অলংকারাদি ব্যবসার জন্য হয় তাহলে তার নিসাবের ক্ষেত্রে মূল্য ধর্তব্য। অর্থাৎ যখন স্বর্ণ, রৌপ্যের দ্বারা তার মূল্য দুইশত দিরহামের সমপরিমাণ হবে তখন তাতে যাকাত ওয়াজিব হবে। কারণ এর যাকাতটি মূল্যের সাথে সংশ্লিষ্ট। আর যে অলংকারাদি ব্যবসার উদ্দেশে ব্যবহার হয় না তার যাকাতটি স্বয়ং সে দ্রব্যের ক্ষেত্রে। ফলে তার মূল্যের ক্ষেত্রটি বিবেচিত হলেও তার ওযনটিই মূলত এ ক্ষেত্রে তার নিসাব।


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৬: যাকাত (كتاب الزكاة) 6. Zakat

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - যেসব জিনিসের যাকাত দিতে হয়

১৮১১-[১৮] সামুরাহ্ ইবনু জুনদুব (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে ব্যবসায়ের জন্য তৈরি করা মালপত্রের যাকাত আদায়ের হুকুম দিতেন। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْ سَمُرَةَ بْنِ جُنْدُبٍ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَأْمُرُنَا أَنْ نُخْرِجَ الصَّدَقَةَ مِنَ الَّذِي نُعِدُّ لِلْبَيْعِ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

وعن سمرة بن جندب ان رسول الله صلى الله عليه وسلم كان يامرنا ان نخرج الصدقة من الذي نعد للبيع رواه ابو داود

হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৬: যাকাত (كتاب الزكاة) 6. Zakat

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - যেসব জিনিসের যাকাত দিতে হয়

১৮১২-[১৯] রবী’আহ্ ইবনু আবূ ’আবদুর রহমান (রহঃ) একাধিক সাহাবী হতে বর্ণনা করেছেন যে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিলাল ইবনু হারিস আল মুযানীকে ’ফারা’-তে অবস্থিত ক্বাবালিয়াহ্ নামক স্থানের খনি জায়গীর দিয়েছিলেন। সেসব খনি হতে এখন পর্যন্ত কেবল যাকাতই উসূল করা হয়। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْ رَبِيعَةَ بْنِ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ غَيْرِ وَاحِدٍ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَقْطَعَ لِبِلَالِ بْنِ الْحَارِثِ الْمُزَنِيِّ معادن الْقبلية وَهِيَ مِنْ نَاحِيَةِ الْفُرْعِ فَتِلْكَ الْمَعَادِنُ لَا تُؤْخَذُ مِنْهَا إِلَّا الزَّكَاةُ إِلَى الْيَوْمِ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

وعن ربيعة بن ابي عبد الرحمن عن غير واحد ان رسول الله صلى الله عليه وسلم اقطع لبلال بن الحارث المزني معادن القبلية وهي من ناحية الفرع فتلك المعادن لا توخذ منها الا الزكاة الى اليوم رواه ابو داود

হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৬: যাকাত (كتاب الزكاة) 6. Zakat
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ১৪ পর্যন্ত, সর্বমোট ১৪ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে