পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - উযূর নিয়ম-কানুন

এখানে سُنَنٌ দ্বারা শুধুমাত্র উযূ (ওযু/ওজু/অজু)-র সুন্নাতগুলো উদ্দেশ্য নয় যা ফার্‌যের (ফরযের/ফরজের) বিপরীত বরং এর দ্বারা উদ্দেশ্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কর্ম এবং উক্তিসমূহ চাই তা সুন্নাত হোক বা ফরয হোক।


৩৯১-[১] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন ঘুম থেকে উঠে তখন সে যেন স্বীয় হাত (পানির) পাত্রে না ডুবায়, যে পর্যন্ত তা তিনবার ধুয়ে না নেয়। কারণ সে জানে না রাতে তার হাত কোথায় ছিল। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ سُنَنِ الْوُضُوْءِ

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا اسْتَيْقَظَ أَحَدُكُمْ مِنْ نَوْمِهِ فَلَا يَغْمِسْ يَدَهُ فِي الْإِنَاءِ حَتَّى يَغْسِلَهَا فَإِنَّهُ لَا يَدْرِي أَيْنَ بَاتَتْ يَدُهُ»

وعن ابي هريرة رضي الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا استيقظ احدكم من نومه فلا يغمس يده في الاناء حتى يغسلها فانه لا يدري اين باتت يده

ব্যাখ্যা: এ হাদীসে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মাতকে পরিচ্ছন্নতা ও পবিত্রতা শিক্ষা দিয়েছেন। হাদীসের মধ্যে বিষয়টি এভাবে এসেছে যে, ঘুম থেকে জাগ্রত হওয়ার পর পানির পাত্রে হাত প্রবেশ করানো যাবে না; কারণ জাগ্রত ব্যক্তি জানে না যে, রাতের বেলায় তার হাত কোথায় ছিল। এজন্য রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছেন। তাই ঘুম থেকে উঠে আগে হাত ধুয়ে নেয়া পরিচ্ছন্নতা ও রুচির পরিচায়ক। মূলকথা হলো এই যে, ঘুম থেকে জাগ্রত হওয়ার পর হাত ধোয়া ছাড়া পানির পাত্রে হাত প্রবেশ করানো মাকরূহ। হাতে নাপাকী থাকা নিশ্চিত হলে অবশ্যই হাত ধুয়ে নিতে হবে এবং নাপাক কিছু না থাকলেও পানির পাত্রে হাত প্রবেশের পূর্বে ধুয়ে নেয়া মুসতাহাব।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩: পাক-পবিত্রতা (كتاب الطهارة) 3. Purification

পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - উযূর নিয়ম-কানুন

৩৯২-[২] উক্ত রাবী [আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন ঘুম থেকে উঠবে ও উযূ (ওযু/ওজু/অজু) করবে, সে যেন তিনবার নাকে পানি দিয়ে (নাক) ঝেড়ে ফেলে। কেননা শায়ত্বন (শয়তান) তার নাকের বাঁশিতে রাত যাপন করে। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ سُنَنِ الْوُضُوْءِ

وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا اسْتَيْقَظَ أَحَدُكُمْ مِنْ مَنَامه فليستنثر ثَلَاثًا فَإِن الشَّيْطَان يبيت على خيشومه»

وعنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا استيقظ احدكم من منامه فليستنثر ثلاثا فان الشيطان يبيت على خيشومه

ব্যাখ্যা: হাদীসের মধ্যে ঘুম থেকে জাগ্রত হওয়ার পর তিনবার নাকে পানি দিয়ে নাক পরিষ্কার করার নির্দেশ এসেছে। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে যে, রাতের বেলায় শায়ত্বন (শয়তান) তার নাসারন্ধ্রে অবস্থান করে। হাদীসে استنثار শব্দটি এসেছে এর অর্থ হলো নাকে পানি দিয়ে শেষ পর্যন্ত টেনে নেয়া। নাকের মধ্যে শায়ত্বন (শয়তান) অবস্থান করার বিষয়টি প্রকৃত অর্থে এসেছে। শায়ত্বন (শয়তান) নাক দিয়েও মানুষের অন্তরে প্রবেশ করে ওয়াস্ওয়াসাহ্ (কুপ্রবঞ্চনা) দেয়। তাই নাকে পানি দিয়ে শায়ত্বন (শয়তান) প্রবেশের চিহ্ন ও প্রভাব দূর করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বুখারী ও মুসলিমে হাদীসে আছে, কেউ যদি আয়াতুল কুরসী পাঠ করে ঘুমায় তবে সে শায়ত্বনের (শয়তানের) কুমন্ত্রণা থেকে মুক্ত থাকবে।

আরো আদেশ এসেছে যে, হাই তোলার সময় মুখ বন্ধ রাখতে হবে কারণ ঐ সময় শায়ত্বন (শয়তান) মুখের মধ্যে প্রবেশ করে। অতঃপর উদ্দেশ্য হলো خيشوم অর্থাৎ- নাকের মধ্যে ময়লা-আবর্জনা জমা হওয়ার স্থান আর ঐ স্থানেই রাত্রি যাপন করাটা শায়ত্বনের (শয়তানের) জন্য উপযুক্ত স্থান। অতএব মানুষের জন্য উচিত নাসিকা পবিত্র ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩: পাক-পবিত্রতা (كتاب الطهارة) 3. Purification

পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - উযূর নিয়ম-কানুন

৩৯৩-[৩] ’আবদুল্লাহ ইবনু যায়দ ইবনু ’আসিম (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করা হলো, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিভাবে উযূ (ওযু/ওজু/অজু) করতেন? (এ কথা শুনে) তিনি উযূর জন্য পানি আনালেন, তারপর দুই হাতের উপর তা ঢাললেন এবং দুই হাত (কব্জি পর্যন্ত) দু’বার ধুয়ে নিলেন। এরপর তিনবার করে কুলি করলেন ও নাকে পানি দিলেন। তারপর তিনবার মুখ ধুলেন। তারপর হাত কনুই পর্যন্ত দু’বার করে ধুলেন। এরপর দুই হাত দিয়ে ’মাথা মাসাহ’ করলেন। (মাসাহ এভাবে করলেন) দুই হাতকে মাথার সম্মুখভাগ হতে পেছনের দিকে নিয়ে আবার পেছন হতে সম্মুখভাগে নিয়ে এলেন। তারপর আবার উল্টো দিকে যেখান থেকে শুরু করেছিলেন সেখানে দুই হাত নিয়ে এলেন। অতঃপর দুই পা ধুলেন।[1] মালিক ও নাসায়ী; আবূ দাঊদেও অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। জামিউল উসূল-এর গ্রন্থকার এ কথা বলেছেন।

بَابُ سُنَنِ الْوُضُوْءِ

وَقيل لعبد الله بن زيد: كَيْفَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَتَوَضَّأُ؟ فَدَعَا بِوَضُوءٍ فَأَفْرَغَ عَلَى يَدَيْهِ فَغَسَلَ يَدَيْهِ مَرَّتَيْنِ مَرَّتَيْنِ ثُمَّ مَضْمَضَ وَاسْتَنْثَرَ ثَلَاثًا ثُمَّ غَسَلَ وَجْهَهُ ثَلَاثًا ثُمَّ غَسَلَ يَدَيْهِ مَرَّتَيْنِ مَرَّتَيْنِ إِلَى الْمَرْفِقَيْنِ ثُمَّ مَسَحَ رَأْسَهَ بِيَدَيْهِ فَأَقْبَلَ بِهِمَا وَأَدْبَرَ بَدَأَ بِمُقَدَّمِ رَأْسِهِ ثُمَّ ذَهَبَ بِهِمَا إِلَى قَفَاهُ ثُمَّ ردهما حَتَّى يرجع إِلَى الْمَكَانِ الَّذِي بَدَأَ مِنْهُ ثُمَّ غَسَلَ رِجْلَيْهِ. رَوَاهُ مَالِكٌ وَالنَّسَائِيُّ وَلِأَبِي دَاوُدَ نَحْوُهُ ذكره صَاحب الْجَامِع

وقيل لعبد الله بن زيد كيف كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يتوضا فدعا بوضوء فافرغ على يديه فغسل يديه مرتين مرتين ثم مضمض واستنثر ثلاثا ثم غسل وجهه ثلاثا ثم غسل يديه مرتين مرتين الى المرفقين ثم مسح راسه بيديه فاقبل بهما وادبر بدا بمقدم راسه ثم ذهب بهما الى قفاه ثم ردهما حتى يرجع الى المكان الذي بدا منه ثم غسل رجليه رواه مالك والنساىي ولابي داود نحوه ذكره صاحب الجامع

ব্যাখ্যা: এ হাদীসে এসেছে ‘আবদুল্লাহ ইবনু যায়দ রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উযূ (ওযু/ওজু/অজু) নকল করার ক্ষেত্রে হাত দু’বার ধুয়েছেন, অন্যদেরকে শেখাবার উদ্দেশে তিনি এমন করে থাকবেন। কারণ সহীহ হাদীসে তিনবার ধোয়ার বর্ণনা এসেছে। এমনও হতে পারে যে, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো কখনো উযূর অঙ্গসমূহ দু’বার ধৌত করেছেন বৈধতা বুঝানোর জন্য।

হাদীসটির পরবর্তী অংশে এসেছে, তিনি এক কোষ পানি দিয়ে কুলি করেছেন এবং নাকে পানি দিয়েছেন। তিনি তিনবার এরূপ করেছেন। এ হাদীস থেকে স্পষ্টভাবে বুঝা যায় যে, তিনি এক কোষ থেকে কুলি করেছেন ও নাকেও পানি দিয়েছেন।

হাদীসে মুখমণ্ডল ধৌত করার উল্লেখ আছে। মুখমণ্ডল বলতে মাথার চুলের গোড়া থেকে নিয়ে চিবুকের শেষভাগ পর্যন্ত এবং এক কানের লতি থেকে অন্য কানের লতি পর্যন্ত বোঝায়। হাত ধৌত করার সময় দু’ হাতের কনুই সহ ধৌত করতে হবে।

ইমাম মালিক-এর মতটিই উত্তম। কারণ কুরআনে কারীমের আয়াতটিতে কোন পরিমাণের উল্লেখ আসেনি। তবে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেহেতু গোটা মাথা মাসাহ করেছেন, তাই পূর্ণ মাথা মাসাহ করাই ওয়াজিব। একমাত্র মুগীরাহ্ ইবনু শু‘বাহ্-এর হাদীসে এসেছে যে, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাথার অংশ বিশেষের উপর মাসাহ করেছেন। তবে মুগীরার হাদীসেও এসেছে যে, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কপাল ও পাগড়ির উপর মাসাহ করেছেন। এ বর্ণনা দ্বারা এটা প্রমাণিত হয় না যে, মাথার অংশ বিশেষের উপর মাসাহ করা ওয়াজিব যেহেতু মাথা মাসাহের ক্ষেত্রে কোন সংখ্যার উল্লেখ নেই। তাই মাথা একবারই মাসাহ করতে হবে। হাতকে প্রথমে সামনে থেকে পিছনে তারপর পিছন থেকে সামনে আনতে হবে।

এ হাদীসে উভয় পা ধোয়ার কথা এসেছে কিন্তু সংখ্যা উল্লেখ হয়নি। বাহ্যত এটাই বুঝা যায় যে, পা একবারই ধৌত করেছেন। তবে পূর্বে যেহেতু দু’বার ধোয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে, তাই এখানেও দু’বার ধোয়া বুঝা যেতে পারে। আবার তিনবার ধোয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে। কারণ রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাধারণত তিনবার করেই উযূর অঙ্গসমূহ ধৌত করতেন। পা ধৌত করার সময় পায়ের টাখনুসহ ধৌত করতে হবে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩: পাক-পবিত্রতা (كتاب الطهارة) 3. Purification

পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - উযূর নিয়ম-কানুন

৩৯৪-[৪] সহীহুল বুখারী ও সহীহ মুসলিমে এ হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে এভাবে, ’আবদুল্লাহ ইবনু যায়দ ইবনু ’আসিম (রাঃ)-কে বলা হলো, যেভাবে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উযূ (ওযু/ওজু/অজু) করতেন ঠিক সেভাবে আপনি আমাদের সামনে উযূ (ওযু/ওজু/অজু) করুন। তাই তিনি [’আবদুল্লাহ ইবনু যায়দ (রাঃ)] পানি আনালেন। পাত্র কাত করে পানি নিয়ে দুই হাতের উপর পানি ঢেলে তিনবার হাত ধুয়ে নিলেন। এরপর পাত্রের ভিতর হাত ঢুকিয়ে পানি এনে এক কোষ পানি দিয়ে কুলি করলেন ও নাকে পানি দিলেন। এভাবে তিনি তিনবার করলেন। তারপর আবার নিজের হাত পাত্রে ঢুকিয়ে পানি এনে তিনবার তার মুখমণ্ডল ধুইলেন। আবার পাত্রে হাত ঢুকিয়ে পানি এনে নিজের মাথা মাসাহ এভাবে করলেন, প্রথমে নিজ হাত দু’টি সামনে থেকে পেছনের দিকে নিয়ে গেলেন। আবার পেছন থেকে সামনের দিকে নিয়ে এলেন, তারপর নিজের দুই পা গিরা পর্যন্ত ধুইলেন। অতঃপর বললেন, এরূপই ছিল রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উযূ।[1]

সহীহুল বুখারী ও সহীহ মুসলিম-এর এক বর্ণনায় আছে, (মাসাহ করার জন্য) নিজের দুই হাতকে সামনের দিক থেকে পেছনের দিকে নিয়ে গেলেন। আবার পিছনের দিক থেকে সামনের দিকে নিয়ে এলেন। অর্থাৎ মাথার সামনের অংশ হতে ’মাসাহ’ শুরু করে দুই হাত পিছন পর্যন্ত নিয়ে গেলেন। তারপর আবার পিছন থেকে শুরু করে হাত সেখানে নিয়ে এলেন যেখান থেকে শুরু করেছিলেন। অতঃপর দুই পা ধুইলেন।[2]

সহীহুল বুখারী ও সহীহ মুসলিম-এর অপর বর্ণনায় এভাবে বলা হয়েছে, তিনি এক কোষ পানি দিয়ে কুলি করলেন, আর নাকে পানি দিলেন। এভাবে তিনবার করলেন।[3]

বুখারীর বর্ণনার শব্দ হলো, তারপর তিনি মাথা মাসাহ করলেন। নিজের দুই হাতকে সামনের দিক থেকে পেছনের দিকে নিয়ে গেলেন। আবার পেছন থেকে সামনের দিকে নিয়ে এলেন। আর এটা তিনি একবার করেছেন। অতঃপর টাখনু পর্যন্ত দুই পা ধুইলেন।[4]

বুখারীরই এক বর্ণনার শব্দ হলো, অতঃপর তিনি কুলি করলেন ও নাক ঝাড়লেন তিনবার এক কোষ পানি দিয়ে।[5]

بَابُ سُنَنِ الْوُضُوْءِ

وَفِي الْمُتَّفَقِ عَلَيْهِ: قِيلَ لِعَبْدِ اللَّهِ بْنِ زَيْدِ بْنِ عَاصِمٍ: تَوَضَّأْ لَنَا وُضُوءَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَدَعَا بِإِنَاءٍ فَأَكْفَأَ مِنْهُ عَلَى يَدَيْهِ فَغَسَلَهُمَا ثَلَاثًا ثُمَّ أَدْخَلَ يَدَهُ فَاسْتَخْرَجَهَا فَمَضْمَضَ وَاسْتَنْشَقَ مِنْ كَفٍّ وَاحِدَةٍ فَفَعَلَ ذَلِكَ ثَلَاثًا ثُمَّ أَدْخَلَ يَدَهُ فَاسْتَخْرَجَهَا فَغَسَلَ وَجْهَهُ ثَلَاثًا ثُمَّ أَدْخَلَ يَدَهُ فَاسْتَخْرَجَهَا فَغَسَلَ يَدَيْهِ إِلَى الْمِرْفَقَيْنِ مَرَّتَيْنِ مَرَّتَيْنِ ثُمَّ أَدْخَلَ يَدَهُ فَاسْتَخْرَجَهَا فَمَسَحَ بِرَأْسِهِ فَأَقْبَلَ بِيَدَيْهِ وَأَدْبَرَ ثُمَّ غَسَلَ رِجْلَيْهِ إِلَى الْكَعْبَيْنِ ثُمَّ قَالَ هَكَذَا كَانَ وُضُوءُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
وَفِي رِوَايَةٍ: فَأَقْبَلَ بِهِمَا وَأَدْبَرَ بَدَأَ بِمُقَدَّمِ رَأْسِهِ ثُمَّ ذَهَبَ بِهِمَا إِلَى قَفَاهُ ثُمَّ رَدَّهُمَا حَتَّى رَجَعَ إِلَى الْمَكَانِ الَّذِي بَدَأَ مِنْهُ ثُمَّ غَسَلَ رجلَيْهِ
وَفِي رِوَايَة: فَمَضْمض واستنشق واستنثر ثَلَاثًا بِثَلَاث غَرَفَاتٍ مِنْ مَاءٍ
وَفِي رِوَايَةٍ أُخْرَى: فَمَضْمَضَ وَاسْتَنْشَقَ مِنْ كَفَّةٍ وَاحِدَةٍ فَفَعَلَ ذَلِكَ ثَلَاثًا
وَفِي رِوَايَةٍ لِلْبُخَارِيِّ: فَمَسَحَ رَأْسَهُ فَأَقْبَلَ بِهِمَا وَأَدْبَرَ مَرَّةً وَاحِدَةً ثُمَّ غَسَلَ رِجْلَيْهِ إِلَى الْكَعْبَيْنِ
وَفِي أُخْرَى لَهُ: فَمَضْمَضَ وَاسْتَنْثَرَ ثَلَاثَ مَرَّات من غرفَة وَاحِدَة

وفي المتفق عليه قيل لعبد الله بن زيد بن عاصم توضا لنا وضوء رسول الله صلى الله عليه وسلم فدعا باناء فاكفا منه على يديه فغسلهما ثلاثا ثم ادخل يده فاستخرجها فمضمض واستنشق من كف واحدة ففعل ذلك ثلاثا ثم ادخل يده فاستخرجها فغسل وجهه ثلاثا ثم ادخل يده فاستخرجها فغسل يديه الى المرفقين مرتين مرتين ثم ادخل يده فاستخرجها فمسح براسه فاقبل بيديه وادبر ثم غسل رجليه الى الكعبين ثم قال هكذا كان وضوء رسول الله صلى الله عليه وسلموفي رواية فاقبل بهما وادبر بدا بمقدم راسه ثم ذهب بهما الى قفاه ثم ردهما حتى رجع الى المكان الذي بدا منه ثم غسل رجليهوفي رواية فمضمض واستنشق واستنثر ثلاثا بثلاث غرفات من ماءوفي رواية اخرى فمضمض واستنشق من كفة واحدة ففعل ذلك ثلاثاوفي رواية للبخاري فمسح راسه فاقبل بهما وادبر مرة واحدة ثم غسل رجليه الى الكعبينوفي اخرى له فمضمض واستنثر ثلاث مرات من غرفة واحدة

ব্যাখ্যা: আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, বুখারী ও মুসলিমে রয়েছে- ‘‘যখন তোমাদের মধ্য হতে কেউ উযূ (ওযু/ওজু/অজু) করবে সে যেন তার নাকের মধ্যে পানি দেয়, অতঃপর নাক ঝাড়ে।’’

সালামাহ্ ইবনু ক্বায়স হতে বর্ণিত তিরমিযী, নাসায়ীতে রয়েছে- إِذَ تَوَضَّأتِ فَانْتَثِرْ অর্থ- যখন তুমি উযূ (ওযু/ওজু/অজু) করবে নাক ঝাড়বে বা পরিষ্কার করবে।

لَقِيْطُ بْنُ صَبْرَةَ এর বর্ণিত হাদীসে রয়েছে- সায়িম বা রোযাদার না হলে নাকে পানি দেয়ার ব্যাপারে مُبَالَغَةُ করবে, অর্থাৎ- পরিপূর্ণভাবে পানি ব্যবহার করবে।

আবূ দাঊদে রয়েছে- (اِذَا تَوَضَّأَتْ فَمَضْمَضَ) যখন উযূ (ওযু/ওজু/অজু)  করবে অতঃপর কুলি করবে।

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে দারাকুত্বনীতে রয়েছে- (امرنا رسول الله صلي الله عليه وسلم بِالْمَضْمَضَةِ وَاِلْاٍسْتِنْشَاقَ) রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুলি করতে ও নাকে পানি দিতে আদেশ করেছেন। ইবনু কুদামা আল-মুগনীতে এবং ইবনুল কাইয়্যুম আল-হাদীতে (اَلْمُغْنِىْ لِابْنُ قُدَامَةَ وَالْهَدْىُ لِاِبْنُ الْقَيُّمِ) উল্লেখ করেছেন তিন চুল্লু কুলি ও নাকে পানি দিতে একই সঙ্গে ব্যবহার করবে, অর্থাৎ- একচুল্লু নিয়ে একই সঙ্গে কিছু পানি মুখে কিছু পানি নাকে দিতে হবে এভাবে তিনবার। এ ব্যাপারে বুখারী ও মুসলিমের হাদীস অধিক স্পষ্ট।

মির্‘আ-তুল মাফা-তীহ-এর লেখক বলেনঃ উল্লিখিত মতটি আমার নিকট বিশুদ্ধ ও পছন্দনীয় এবং একত্র বর্ণনাটা অধিক স্পষ্ট ও অধিক বিশুদ্ধ। আর চুল্লু পৃথক নেয়ার হাদীসটি জায়িযের দিক থেকে।

* এরপর আলোচনা মাথা মাসাহ প্রসঙ্গে। মাথা কতটুকু মাসাহ করা ফরয- এ ব্যাপারে মতভেদ রয়েছে।

* ইমাম মালিক-এর মত সম্পূর্ণ মাথা মাসাহ্ করা ওয়াজিব। আর এটাই অগ্রাধিকারযোগ্য বা প্রাপ্ত। কেননা আয়াতের শব্দ মুজমাল (সার-সংক্ষেপ) এর উদ্দেশ্য পূর্ণ মাথা। আর باء অক্ষর অতিরিক্ত অথবা কিছু অংশ মাসাহ করা, কিন্তু মৌলিক কথা পূর্ণ মাথা মাসাহ্ করা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘আমলের দ্বারা প্রতীয়মান হয়।

* ইমাম শাফি‘ঈ-এর মত মাথার এক তৃতীয়াংশ মাসাহ করা যা অধিকাংশের বিপরীত। মুগীরাহ্-এর হাদীসে মাথার কিছু অংশ মাসাহ করার কথা রয়েছে। (إِنَّه مَسَحَ عَلى نَاصِيَتِه عَمَامِتِه) তিনি মাথার সম্মুখ ভাগ এবং পাগড়ীর উপর মাসাহ করেছেন এ প্রসঙ্গে প্রমাণ নেই যে, মাথার কিছু অংশের উপর মাসাহ করলেই যথেষ্ট হবে।

* টাখনুসহ উভয় পাকে ধৌত করা উযূ (ওযু/ওজু/অজু)  করার সময় এ অভিমত উল্লেখ রয়েছে বুখারীতে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩: পাক-পবিত্রতা (كتاب الطهارة) 3. Purification

পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - উযূর নিয়ম-কানুন

৩৯৫-[৫] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (উযূর স্থানসমূহ) একবার করে উযূ (ওযু/ওজু/অজু) করলেন। একবারের অধিক ধুলেন না। (বুখারী)[1]

بَابُ سُنَنِ الْوُضُوْءِ

وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: تَوَضَّأَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَرَّةً مَرَّةً لَمْ يَزِدْ عَلَى هَذَا. رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ

وعن عبد الله بن عباس قال توضا رسول الله صلى الله عليه وسلم مرة مرة لم يزد على هذا رواه البخاري

ব্যাখ্যা: قوله (مَرَّةً مَرَّةً) উযূর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো কতবার করে ধৌত করতে হবে- এ প্রসঙ্গে আলোকপাত করা হয়েছে।

* উযূর অঙ্গগুলো একবার ধৌত করা ওয়াজিব যেমন বুখারীতে উল্লেখ রয়েছে। ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। (تَوَضَّأَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ مَرَّةً مَرَّةً لَمْ يَزِدْ عَلى هذَا) অর্থ- রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উযূর অঙ্গ প্রত্যঙ্গ একবার করে ধৌত করেন বেশী নয় আর মাথা মাসাহ করেন একবার।

আর এটাতে প্রমাণ পাওয়া গেল যে, উযূর কর্মগুলো একবার করলে এটার ওয়াজিব আদায় হয়ে যাবে। এজন্য সংক্ষিপ্ত করেছেন। সহীহ হাদীসসমূহ এসেছে দু’বার করে এবং তিনবার। তিনবারটা পরিপূর্ণতা আর একবার যথেষ্ট। বুখারীতে রয়েছে একচুল্লু দিয়ে হস্তদ্বয় দ্বারা মুখমণ্ডল ধৌত করা।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩: পাক-পবিত্রতা (كتاب الطهارة) 3. Purification

পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - উযূর নিয়ম-কানুন

৩৯৬-[৬] ’আবদুল্লাহ ইবনু যায়দ (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উযূ (ওযু/ওজু/অজু)-র অঙ্গগুলোকে দু’বার করে ধুইলেন। (বুখারী)[1]

بَابُ سُنَنِ الْوُضُوْءِ

وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ زَيْدٍ: أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَوَضَّأَ مَرَّتَيْنِ مَرَّتَيْنِ. رَوَاهُ البُخَارِيّ

وعن عبد الله بن زيد ان النبي صلى الله عليه وسلم توضا مرتين مرتين رواه البخاري

ব্যাখ্যা: قوله (تَوَضَّأَ مَرَّتَيْنِ مَرَّتَيْنِ) অর্থাৎ- উযূর প্রত্যেক অঙ্গসমূহ দু’বার করে ধৌত করা। বৈধতা বর্ণনা করার জন্য। বুখারীতে উযূর অধ্যায়ে বর্ণনা আছে দু’বার দু’বার করে। কেননা বুখারীতে দু’বার ধৌত করার কথা নেই শুধু দু’হাত কনুইসহ ধৌত করার কথা, নাসায়ী সুফ্ইয়ান ইবনু ‘উয়াইনাহ্-এর দিক থেকে। (أَنَّ النَّبِيَّ ﷺ تَوَضَّأَ مَرَّتَيْنِ مَرَّتَيْنِ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উযূ (ওযু/ওজু/অজু) করলেন দু’বার দু’বার।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩: পাক-পবিত্রতা (كتاب الطهارة) 3. Purification

পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - উযূর নিয়ম-কানুন

৩৯৭-[৭] ’উসমান (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, তিনি মাক্বা’ইদ নামক স্থানে উযূ করতে বসলেন এবং বললেন, আমি কি তোমাদেরকে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উযূ (ওযু/ওজু/অজু) করে দেখাবো না? অতঃপর তিনি তিন তিনবার করে ধুয়ে উযূ করলেন। (মুসলিম)[1]

بَابُ سُنَنِ الْوُضُوْءِ

وَعَنْ عُثْمَانَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أَنَّهُ تَوَضَّأَ بِالْمَقَاعِدِ فَقَالَ: أَلَا أُرِيكُمْ وُضُوءَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ فَتَوَضَّأَ ثَلَاثًا ثَلَاثًا. رَوَاهُ مُسلم

وعن عثمان رضي الله عنه انه توضا بالمقاعد فقال الا اريكم وضوء رسول الله صلى الله عليه وسلم فتوضا ثلاثا ثلاثا رواه مسلم

ব্যাখ্যা: ‘উসমান (রাঃ) দেখালেন রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উযূর যে অঙ্গগুলো ধৌত করতে হয় তা তিনবার করে ধৌত করেছেন। আর এটাই হলো পরিপূর্ণ উযূ (ওযু/ওজু/অজু)।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩: পাক-পবিত্রতা (كتاب الطهارة) 3. Purification

পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - উযূর নিয়ম-কানুন

৩৯৮-[৮] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’আমর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে মক্কা হতে মদীনায় ফিরে যাবার পথে একটি পানির কূপের কাছে পৌঁছলাম। আমাদের কেউ কেউ ’আসরের সালাতের সময় তাড়াতাড়ি উযূ (ওযু/ওজু/অজু) করতে গেলেন এবং তাড়াহুড়া করে উযূ করলেন।

অতঃপর আমরা তাদের কাছে পৌঁছলাম, দেখি, তাদের পায়ের গোড়ালি শুকনা, চকচক করছে। সেখানে পানি পৌঁছেনি। এটা দেখে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সর্বনাশ! (শুকনা) গোড়ালির লোকেরা জাহান্নামে যাবে, তোমরা পূর্ণরূপে উযূ কর। (মুসলিম)[1]

بَابُ سُنَنِ الْوُضُوْءِ

وَعَن عبد الله بن عَمْرو قَالَ: رَجَعْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ مَكَّةَ إِلَى الْمَدِينَةِ حَتَّى إِذا كُنَّا بِمَاء بِالطَّرِيقِ تعجل قوم عِنْد الْعَصْر فتوضؤوا وهم عِجَال فَانْتَهَيْنَا إِلَيْهِم وَأَعْقَابُهُمْ تَلُوحُ لَمْ يَمَسَّهَا الْمَاءُ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «وَيْلٌ لِلْأَعْقَابِ من النَّار أَسْبغُوا الْوضُوء» . رَوَاهُ مُسلم

وعن عبد الله بن عمرو قال رجعنا مع رسول الله صلى الله عليه وسلم من مكة الى المدينة حتى اذا كنا بماء بالطريق تعجل قوم عند العصر فتوضووا وهم عجال فانتهينا اليهم واعقابهم تلوح لم يمسها الماء فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم ويل للاعقاب من النار اسبغوا الوضوء رواه مسلم

ব্যাখ্যা: একটি রিওয়ায়াত উল্লেখ আছে, ‘‘রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দেখেন লোকেদেরকে তারা উযূ (ওযু/ওজু/অজু) করে এবং তারা যেন তাদের পায়ের কিছু অংশ ধৌত করা ছেড়ে দেয়’’।

সহীহ মুসলিমে রয়েছে, আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি দেখেন এক ব্যক্তি তার গোড়ালিকে ধৌত করেনি। অতঃপর বললেন, এটার জন্য শাস্তি হবে।

ত্ববারানীতে রয়েছে, ‘‘যে গোড়ালি ও পায়ের পাতার পেট ভালোভাবে ধৌত করা হয় না তা জাহান্নামের আগুনে জ্বলবে’’।

(أَسْبِغُوا الْوُضُوءَ) অর্থাৎ- উযূকে পরিপূর্ণভাবে সম্পাদন করো।

আর উযূ (ওযু/ওজু/অজু) হলো নির্ধারিত অঙ্গসমূহ ধৌত করা, অতঃপর উযূকে পরিপূর্ণ করার আদেশ এমন একটি নির্দেশ যার মাধ্যমে ধৌত কার্যকে পূর্ণ করতে বলা হয়েছে এবং পানি পৌঁছে দিতে হবে প্রত্যেক বাহ্যিক অঙ্গে।

এ হাদীস নির্দেশ করে উযূতে দু’ পা ধৌত করা অত্যাবশ্যক।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩: পাক-পবিত্রতা (كتاب الطهارة) 3. Purification

পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - উযূর নিয়ম-কানুন

৩৯৯-[৯] মুগীরাহ্ ইবনু শু’বাহ্ (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উযূ (ওযু/ওজু/অজু) করলেন। তিনি কপালের চুলের উপর, পাগড়ীর উপর এবং মোজার উপর মাসাহ করলেন। (মুসলিম)[1]

بَابُ سُنَنِ الْوُضُوْءِ

وَعَن الْمُغيرَة بن شُعْبَة قَالَ: إِنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَوَضَّأَ فَمَسَحَ بِنَاصِيَتِهِ وَعَلَى الْعِمَامَةِ وَعَلَى الْخُفَّيْنِ. رَوَاهُ مُسلم

وعن المغيرة بن شعبة قال ان النبي صلى الله عليه وسلم توضا فمسح بناصيته وعلى العمامة وعلى الخفين رواه مسلم

ব্যাখ্যা: সাধারণভাবে খোলা মাথা মাসাহ কর এবং পা ধৌত করা উযূর বিধান। তবে প্রয়োজনে কিংবা আবহাওয়ার কারণে মাথায় পাগড়ি রেখে এবং পায়ে মোজা রেখে মাসাহ করারও শারী‘আতে বৈধ। এ হাদীসে তারই প্রমাণ। (সম্পাদকীয়)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩: পাক-পবিত্রতা (كتاب الطهارة) 3. Purification

পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - উযূর নিয়ম-কানুন

৪০০-[১০] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সব কাজই যথাসম্ভব ডান দিক হতে শুরু করতে পছন্দ করতেন- পাক-পবিত্রতা অর্জনে, মাথা আঁচড়ানোয় ও জুতা পরনে। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ سُنَنِ الْوُضُوْءِ

وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْ: كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُحِبُّ التَّيَمُّنَ مَا اسْتَطَاعَ فِي شَأْنِهِ كُلِّهِ: فِي طهوره وَترَجله وتنعله

وعن عاىشة رضي الله عنها قالت كان النبي صلى الله عليه وسلم يحب التيمن ما استطاع في شانه كله في طهوره وترجله وتنعله

ব্যাখ্যা: কোন কর্ম ডান দিক থেকে শুরু করা অত্যাবশ্যক।

নাবাবী বলেনঃ শারী‘আতের বিধান-নীতি প্রত্যেক সম্মান প্রদর্শনের ও সজ্জিতকরণের অধ্যায়ে রয়েছে, ডান দিক হতে শুরু করা মুসতাহাব বা পছন্দনীয় মনে করা ও পছন্দ করা এবং এরূপ চলতে থাকা।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩: পাক-পবিত্রতা (كتاب الطهارة) 3. Purification
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ১০ পর্যন্ত, সর্বমোট ১০ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে