৩৯৩

পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - উযূর নিয়ম-কানুন

৩৯৩-[৩] ’আবদুল্লাহ ইবনু যায়দ ইবনু ’আসিম (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করা হলো, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিভাবে উযূ (ওযু/ওজু/অজু) করতেন? (এ কথা শুনে) তিনি উযূর জন্য পানি আনালেন, তারপর দুই হাতের উপর তা ঢাললেন এবং দুই হাত (কব্জি পর্যন্ত) দু’বার ধুয়ে নিলেন। এরপর তিনবার করে কুলি করলেন ও নাকে পানি দিলেন। তারপর তিনবার মুখ ধুলেন। তারপর হাত কনুই পর্যন্ত দু’বার করে ধুলেন। এরপর দুই হাত দিয়ে ’মাথা মাসাহ’ করলেন। (মাসাহ এভাবে করলেন) দুই হাতকে মাথার সম্মুখভাগ হতে পেছনের দিকে নিয়ে আবার পেছন হতে সম্মুখভাগে নিয়ে এলেন। তারপর আবার উল্টো দিকে যেখান থেকে শুরু করেছিলেন সেখানে দুই হাত নিয়ে এলেন। অতঃপর দুই পা ধুলেন।[1] মালিক ও নাসায়ী; আবূ দাঊদেও অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। জামিউল উসূল-এর গ্রন্থকার এ কথা বলেছেন।

بَابُ سُنَنِ الْوُضُوْءِ

وَقيل لعبد الله بن زيد: كَيْفَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَتَوَضَّأُ؟ فَدَعَا بِوَضُوءٍ فَأَفْرَغَ عَلَى يَدَيْهِ فَغَسَلَ يَدَيْهِ مَرَّتَيْنِ مَرَّتَيْنِ ثُمَّ مَضْمَضَ وَاسْتَنْثَرَ ثَلَاثًا ثُمَّ غَسَلَ وَجْهَهُ ثَلَاثًا ثُمَّ غَسَلَ يَدَيْهِ مَرَّتَيْنِ مَرَّتَيْنِ إِلَى الْمَرْفِقَيْنِ ثُمَّ مَسَحَ رَأْسَهَ بِيَدَيْهِ فَأَقْبَلَ بِهِمَا وَأَدْبَرَ بَدَأَ بِمُقَدَّمِ رَأْسِهِ ثُمَّ ذَهَبَ بِهِمَا إِلَى قَفَاهُ ثُمَّ ردهما حَتَّى يرجع إِلَى الْمَكَانِ الَّذِي بَدَأَ مِنْهُ ثُمَّ غَسَلَ رِجْلَيْهِ. رَوَاهُ مَالِكٌ وَالنَّسَائِيُّ وَلِأَبِي دَاوُدَ نَحْوُهُ ذكره صَاحب الْجَامِع

وقيل لعبد الله بن زيد كيف كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يتوضا فدعا بوضوء فافرغ على يديه فغسل يديه مرتين مرتين ثم مضمض واستنثر ثلاثا ثم غسل وجهه ثلاثا ثم غسل يديه مرتين مرتين الى المرفقين ثم مسح راسه بيديه فاقبل بهما وادبر بدا بمقدم راسه ثم ذهب بهما الى قفاه ثم ردهما حتى يرجع الى المكان الذي بدا منه ثم غسل رجليه رواه مالك والنساىي ولابي داود نحوه ذكره صاحب الجامع

ব্যাখ্যা: এ হাদীসে এসেছে ‘আবদুল্লাহ ইবনু যায়দ রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উযূ (ওযু/ওজু/অজু) নকল করার ক্ষেত্রে হাত দু’বার ধুয়েছেন, অন্যদেরকে শেখাবার উদ্দেশে তিনি এমন করে থাকবেন। কারণ সহীহ হাদীসে তিনবার ধোয়ার বর্ণনা এসেছে। এমনও হতে পারে যে, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো কখনো উযূর অঙ্গসমূহ দু’বার ধৌত করেছেন বৈধতা বুঝানোর জন্য।

হাদীসটির পরবর্তী অংশে এসেছে, তিনি এক কোষ পানি দিয়ে কুলি করেছেন এবং নাকে পানি দিয়েছেন। তিনি তিনবার এরূপ করেছেন। এ হাদীস থেকে স্পষ্টভাবে বুঝা যায় যে, তিনি এক কোষ থেকে কুলি করেছেন ও নাকেও পানি দিয়েছেন।

হাদীসে মুখমণ্ডল ধৌত করার উল্লেখ আছে। মুখমণ্ডল বলতে মাথার চুলের গোড়া থেকে নিয়ে চিবুকের শেষভাগ পর্যন্ত এবং এক কানের লতি থেকে অন্য কানের লতি পর্যন্ত বোঝায়। হাত ধৌত করার সময় দু’ হাতের কনুই সহ ধৌত করতে হবে।

ইমাম মালিক-এর মতটিই উত্তম। কারণ কুরআনে কারীমের আয়াতটিতে কোন পরিমাণের উল্লেখ আসেনি। তবে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেহেতু গোটা মাথা মাসাহ করেছেন, তাই পূর্ণ মাথা মাসাহ করাই ওয়াজিব। একমাত্র মুগীরাহ্ ইবনু শু‘বাহ্-এর হাদীসে এসেছে যে, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাথার অংশ বিশেষের উপর মাসাহ করেছেন। তবে মুগীরার হাদীসেও এসেছে যে, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কপাল ও পাগড়ির উপর মাসাহ করেছেন। এ বর্ণনা দ্বারা এটা প্রমাণিত হয় না যে, মাথার অংশ বিশেষের উপর মাসাহ করা ওয়াজিব যেহেতু মাথা মাসাহের ক্ষেত্রে কোন সংখ্যার উল্লেখ নেই। তাই মাথা একবারই মাসাহ করতে হবে। হাতকে প্রথমে সামনে থেকে পিছনে তারপর পিছন থেকে সামনে আনতে হবে।

এ হাদীসে উভয় পা ধোয়ার কথা এসেছে কিন্তু সংখ্যা উল্লেখ হয়নি। বাহ্যত এটাই বুঝা যায় যে, পা একবারই ধৌত করেছেন। তবে পূর্বে যেহেতু দু’বার ধোয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে, তাই এখানেও দু’বার ধোয়া বুঝা যেতে পারে। আবার তিনবার ধোয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে। কারণ রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাধারণত তিনবার করেই উযূর অঙ্গসমূহ ধৌত করতেন। পা ধৌত করার সময় পায়ের টাখনুসহ ধৌত করতে হবে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩: পাক-পবিত্রতা (كتاب الطهارة)