পরিচ্ছেদঃ ২. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - পায়খানা-প্রস্রাবের আদব

৩৬৫-[৩২] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি বলে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করতেন, তোমরা তার কথা বিশ্বাস করো না। তিনি সব সময়ই বসে প্রস্রাব করতেন। (আহমাদ, তিরমিযী ও নাসায়ী)[1]

عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْ: «مَنْ حَدَّثَكُمْ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَبُولُ قَائِمًا فَلَا تُصَدِّقُوهُ مَا كَانَ يَبُول إِلَّا قَاعِدا» . رَوَاهُ أَحْمد وَالتِّرْمِذِيّ وَالنَّسَائِيّ

عن عاىشة رضي الله عنها قالت من حدثكم ان النبي صلى الله عليه وسلم كان يبول قاىما فلا تصدقوه ما كان يبول الا قاعدا رواه احمد والترمذي والنساىي

ব্যাখ্যা: এ হাদীসটি ঐ দলের পক্ষের দলীল যারা বলেন ওযর বা সমস্যা ব্যতীত দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করা মাকরূহ। কারণ এ হাদীসটি প্রমাণ করে যে, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করতেন না বরং প্রস্রাবের ক্ষেত্রে তার নিয়ম ছিল বসে প্রস্রাব করা। এর জবাবে বলা হয়েছেঃ ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর এ হাদীসটি সহীহ নয়। তর্কের খাতিরে যদি তা সহীহ ধরেও নেয়া হয় (যদিও তা নয়) তারপরেও বিশুদ্ধতার বিচারে কোন সন্দেহ ছাড়াই হুযায়ফার হাদীসটি অধিক বিশুদ্ধ। দ্বিতীয়ত ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর হাদীসটি তার জ্ঞান অনুপাতে, ফলে তা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বাড়ীর আ‘মালের সাথে সম্পৃক্ত। কিন্তু বাইরের আ‘মালের বিষয়ে ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) অবগত ছিলেন না। যা প্রসিদ্ধ সাহাবী হুযায়ফাহ্ সংরক্ষণ বা মুখস্থ করেছিলেন।

বলা হয়েছে ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর এই হাদীসের অর্থ যে ‘‘তোমাদের সংবাদ দিবে যে, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করতে অভ্যস্ত ছিলেন তোমরা তার কথা বিশ্বাস করো না বরং তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বসে করতেই অভ্যস্ত ছিলেন।’’ ফলে ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর হাদীসটি হুযায়ফাহ্ (রাঃ)-এর হাদীসের বিপরীত নয়। অতএব রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বৈধতার বর্ণনা দেয়ার জন্য কখনো কখনো দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করেছেন তবে তিনি বসে প্রস্রাব করতেই অভ্যস্ত ছিলেন।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩: পাক-পবিত্রতা (كتاب الطهارة) 3. Purification

পরিচ্ছেদঃ ২. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - পায়খানা-প্রস্রাবের আদব

৩৬৬-[৩৩] যায়দ ইবনু হারিসাহ্ (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে জিবরীল আমীনের মাধ্যমে যখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট ওয়াহী নাযিল করা হচ্ছিল, তখনই তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে উযূ করা ও সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায়ের শিক্ষা দিলেন। আর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন উযূ (ওযু/ওজু/অজু) করা শেষ করে এককোষ পানি (হাতে উঠিয়ে) নিলেন এবং তখন নিজের পুরুষাঙ্গের উপর ছিটিয়ে দিলেন। (আহমাদ ও দারাকুত্বনী)[1]

وَعَن زيد بن حَارِثَة عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَنَّ جِبْرِيلَ أَتَاهُ فِي أَوَّلِ مَا أُوحِيَ إِلَيْهِ فَعَلَّمَهُ الْوُضُوءَ وَالصَّلَاةَ فَلَمَّا فَرَغَ مِنَ الْوُضُوءِ أَخَذَ غُرْفَةً مِنَ الْمَاءِ فَنَضَحَ بِهَا فَرْجَهُ» . رَوَاهُ أَحْمد وَالدَّارَقُطْنِيّ

وعن زيد بن حارثة عن النبي صلى الله عليه وسلم ان جبريل اتاه في اول ما اوحي اليه فعلمه الوضوء والصلاة فلما فرغ من الوضوء اخذ غرفة من الماء فنضح بها فرجه رواه احمد والدارقطني

ব্যাখ্যা: এ হাদীস হতে বুঝা যায়, পানির ছিটা উযূর পরে দিতে হবে। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এটা উম্মাতকে শিক্ষা দেয়ার জন্য করেছেন যাতে এর মাধ্যমে তা সন্দেহ দূরীভূত হয়। তাই উযূ (ওযু/ওজু/অজু) করার পর পরিধেয় পোশাকে লজ্জাস্থান বরাবর পানির ছিটা দিতে হবে সন্দেহ দূর করার জন্যে, যে লজ্জাস্থান থেকে আর্দ্রতা বের হয়েছিল কি না?


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩: পাক-পবিত্রতা (كتاب الطهارة) 3. Purification

পরিচ্ছেদঃ ২. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - পায়খানা-প্রস্রাবের আদব

৩৬৭-[৩৪] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার কাছে জিবরীল (আঃ) এসে বললেন, হে মুহাম্মাদ! যখন আপনি উযূ (ওযু/ওজু/অজু) করবেন, তখন পানি (সন্দেহ দূর করার জন্য আপনার গুপ্তাঙ্গে) ছিটিয়ে দিবেন। (তিরমিযী;[1]

ইমাম তিরমিযী [রহঃ] বলেন, হাদীসটি গরীব। আমি মুহাম্মাদ, অর্থাৎ ইমাম বুখারীকে বলতে শুনেছি যে, হাসান ইবনু ’আলী আল হাশিমী নামক বর্ণনাকারী হাদীসের ক্ষেত্রে মুনকার)

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: جَاءَنِي جِبْرِيلُ فَقَالَ: يَا مُحَمَّدُ إِذَا تَوَضَّأْتَ فَانْتَضِحْ . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ وَسَمِعْتُ مُحَمَّدًا يَعْنِي الْبُخَارِيَّ يَقُولُ: الْحَسَنُ بْنُ عَليّ الْهَاشِمِي الرَّاوِي مُنكر الحَدِيث

وعن ابي هريرة رضي الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم جاءني جبريل فقال يا محمد اذا توضات فانتضح رواه الترمذي وقال هذا حديث غريب وسمعت محمدا يعني البخاري يقول الحسن بن علي الهاشمي الراوي منكر الحديث

হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩: পাক-পবিত্রতা (كتاب الطهارة) 3. Purification

পরিচ্ছেদঃ ২. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - পায়খানা-প্রস্রাবের আদব

৩৬৮-[৩৫] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রস্রাব করলেন। ’উমার (রাঃ) তাঁর পেছনে পানির পাত্র নিয়ে দাঁড়ালেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, ’উমার! এটা কী? ’উমার (রাঃ) বললেন, পানি। আপনার উযূ (ওযু/ওজু/অজু) করার জন্য। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, আমি এজন্য আদিষ্ট হইনি যে, যখনই প্রস্রাব করবো তখনই উযূ করব। যদি আমি সর্বদা এমন করি তাহলে এটা ’সুন্নাত’ হয়ে যাবে। (আবূ দাঊদ ও ইবনু মাজাহ্)[1]

وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْ: بَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَامَ عُمَرُ خَلْفَهُ بِكُوزٍ مِنْ مَاءٍ فَقَالَ: مَا هَذَا يَا عمر؟ قَالَ: مَاءٌ تَتَوَضَّأُ بِهِ. قَالَ: مَا أُمِرْتُ كُلَّمَا بُلْتُ أَنْ أَتَوَضَّأَ وَلَوْ فَعَلْتُ لَكَانَتْ سُنَّةً «.» رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَابْن مَاجَه

وعن عاىشة رضي الله عنها قالت بال رسول الله صلى الله عليه وسلم فقام عمر خلفه بكوز من ماء فقال ما هذا يا عمر قال ماء تتوضا به قال ما امرت كلما بلت ان اتوضا ولو فعلت لكانت سنة رواه ابو داود وابن ماجه

ব্যাখ্যা: قوله (مَاءٌ تَتَوَضَّأُ بِه) ‘‘পাত্র নিয়ে এলে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জিজ্ঞেস করলেন, এটা কি? তিনি উত্তরে বললেন, এতে আপনার উযূর জন্য পানি রয়েছে’’। এখানে উযূ (ওযু/ওজু/অজু) দ্বারা উযূয়ি শার‘ঈ উদ্দেশ্য নয় বরং উযূয়ি লাগবী তথা প্রস্রাবের পর পানি ব্যবহার করা উদ্দেশ হতে পারে। প্রস্রাবের পরে উযূ করা এবং সর্বাবস্থায় উযূ থাকা উত্তম হলেও কখনো কখনো উম্মাতের জন্য সহজকরণার্থে তিনি তা পরিত্যাগ করতেন। এজন্য তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) প্রস্রাবের পর উযূ না করে বললেন আমি প্রস্রাবের পর সর্বদা উযূ করতে আদিষ্ট হয়নি।

 قوله (لَوْ فَعَلْتُ لَكَانَتْ سُنَّةً) অর্থাৎ- যদি আমি প্রস্রাবের পর সর্বদা পানি দ্বারা শৌচকার্য করতাম অথবা উযূ (ওযু/ওজু/অজু) করতাম তাহলে তা আমার উম্মাতের জন্য আবশ্যক হয়ে যেত এবং এ বিষয়ে যে অবকাশ রয়েছে তা বন্ধ হয়ে যেত। কেউ কেউ বলেছেনঃ এর অর্থ, যদি আমি এরূপ করতাম তবে তা সুন্নাতে মুয়াক্কাদায় পরিণত হতো।

‘আল্লামা মা'নাবী (রহঃ) বলেছেনঃ হাদীসে উযূ দ্বারা প্রস্রাবের পর প্রয়োজন ছাড়াই পানি দ্বারা ইসতিনজা (ইস্তিঞ্জা/ইস্তেঞ্জা/ইসতেনজা) অর্থ গ্রহণ কোন বাহ্যিকের বিপরীত। এর বাহ্যিক অর্থ শার‘ঈ উযূ  যা ‘উমার (রাঃ) উদ্দেশ্য নিয়েছেন যে, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রস্রাবের ফলে উযূ নষ্ট হওয়ায় তিনি এ পানি দ্বারা উযূ করবেন। কিন্তু রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বৈধতা এবং উম্মাতের প্রতি সহজকরণার্থে তা করেননি।


হাদিসের মানঃ সহিহ/যঈফ [মিশ্রিত]
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩: পাক-পবিত্রতা (كتاب الطهارة) 3. Purification

পরিচ্ছেদঃ ২. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - পায়খানা-প্রস্রাবের আদব

৩৬৯-[৩৬] আবূ আইয়ূব, জাবির ও আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। যখন এ আয়াত নাযিল হয়, অর্থাৎ- ’’সেখানে (মসজিদে কু’বায়) এমন কিছু লোক রয়েছে যারা পবিত্রতা অর্জন করাকে পছন্দ করে এবং আল্লাহ পবিত্রতা অর্জনকারীদের পছন্দ করেন’’- (সূরাহ্ আত্ তওবা্ ৯: ১০৮) তখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে আনসারগণ! এ আয়াতে আল্লাহ পবিত্রতার ব্যাপারে তোমাদের প্রশংসা করেছেন। তোমাদের পবিত্রতা কী? তাঁরা বললেন, আমরা সালাতের জন্য উযূ (ওযু/ওজু/অজু) করি, নাপাকী হতে পবিত্র হবার জন্য গোসল করি, পানি দিয়ে পবিত্রতা লাভ করে থাকি। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এটাই (পবিত্রতা), যার জন্য আল্লাহ তোমাদের প্রশংসা করেছেন। সুতরাং তোমরা সবসময় এটা করতে থাকবে। (ইবনু মাজাহ্)[1]

وَعَن أبي أَيُّوب وَجَابِر وَأنس: أَن هَذِه الْآيَة نَزَلَتْ (فِيهِ رِجَالٌ يُحِبُّونَ أَنْ يَتَطَهَّرُوا وَاللَّهُ يحب المطهرين)
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يَا مَعْشَرَ الْأَنْصَارِ إِنَّ اللَّهَ قَدْ أَثْنَى عَلَيْكُمْ فِي الطَّهُورِ فَمَا طَهُورُكُمْ قَالُوا نَتَوَضَّأُ لِلصَّلَاةِ وَنَغْتَسِلُ مِنَ الْجَنَابَةِ وَنَسْتَنْجِي بِالْمَاءِ قَالَ فَهُوَ ذَاك فعليكموه» . رَوَاهُ ابْن مَاجَه

وعن ابي ايوب وجابر وانس ان هذه الاية نزلت فيه رجال يحبون ان يتطهروا والله يحب المطهرينقال رسول الله صلى الله عليه وسلم يا معشر الانصار ان الله قد اثنى عليكم في الطهور فما طهوركم قالوا نتوضا للصلاة ونغتسل من الجنابة ونستنجي بالماء قال فهو ذاك فعليكموه رواه ابن ماجه

ব্যাখ্যা: قوله (فَهُوَ ذَاكَ) এখানে সালাতের জন্য উযূ, অপবিত্রতার গোসল ও পানি দ্বারা ইসতিনজা (ইস্তিঞ্জা/ইস্তেঞ্জা/ইসতেনজা)- তিনটি বৈশিষ্ট্যের উল্লেখ থাকলেও هو সর্বনাম দ্বারা উদ্দেশ্য পানি দ্বারা ইসতিনজা (ইস্তিঞ্জা/ইস্তেঞ্জা/ইসতেনজা) কর। কেননা তা সবচেয়ে নিকটবর্তী শব্দ এবং এজন্যেই আল্লাহ তা‘আলা তাদের প্রশংসা করেছেন। অন্যথায় উযূ (ওযু/ওজু/অজু)  গোসল মুহাজিরগণও করতেন কিন্তু তাদের প্রশংসা করেননি।

হাকিম-এর বর্ণনায় এটি আরও স্পষ্টভাবে এসেছে যথাঃ (فَقَالُوْا تَوَضَّأُ الصَّلَاةُ وَنَغْتَسِلُ لِلْجَنَابَةِ فَقَالَ هَلْ مَعَ ذلِكَ غَيْرُه؟ فَلَاواِلَّا إلا أَنْ اَحَدُنَا) রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রশ্নের উত্তরে তারা বললো- আমরা সালাতের জন্য উযূ (ওযু/ওজু/অজু)  করি এবাং জানাবাতের গোসল করি। তিনি বললেন, এর সাথে আর কিছু কি কর? তারা বললো, না, তবে আমাদের কেউ পায়খানা-প্রস্রাবের পর পানি দ্বারা ইসতিনজা (ইস্তিঞ্জা/ইস্তেঞ্জা/ইসতেনজা) করতে পছন্দ করে। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, এটিই সেই কাজ যার জন্য আল্লাহ তোমাদের প্রশংসা করেছেন। পরে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমাদের জন্য পানি দ্বারা ইসতিনজা (ইস্তিঞ্জা/ইস্তেঞ্জা/ইসতেনজা) করাই আবশ্যক। এ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত যে, তারা পানি দ্বারা ইসতিনজা (ইস্তিঞ্জা/ইস্তেঞ্জা/ইসতেনজা) করাই যথেষ্ট মনে করতেন, ঢিলা ব্যবহারের প্রয়োজন মনে করতেন না।

 কিন্তু ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বাযযার যে বর্ণনাটি এনেছেন যথাঃ (أَنَّ النَّبِىَّ ﷺ سَأَلَ أَهْلُ قُبَاءٍ فَقَالَ إِنَّ اللهَ يَثْنى عَلَيْكُمْ فَقَلُوْا إِنَّا نَتَّبِعُ الْحِجَارَةَ الْمَاءِ) অর্থাৎ- ‘‘নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুবাবাসীকে জিজ্ঞেস করলেন তোমরা এমন কি ‘আমল কর যার জন্য আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের প্রশংসা করেছেন? তারা উত্তরে বলল, আমরা পায়খানা-প্রস্রাবের পর ঢিলার সাথে সাথে পানি দ্বারা ইসতিনজা (ইস্তিঞ্জা/ইস্তেঞ্জা/ইসতেনজা) করি’’। তার (সে বর্ণনাটির) সূত্রে ইমাম বুখারী, নাসায়ীসহ আরো অনেকের মতে দুর্বল হিসেবে অভিহিত। রাবী মুহাম্মাদ বিন ‘আবদুল ‘আযীয থাকায় তা য‘ঈফ। এছাড়াও মুয়াত্ত্বা মালিক গ্রন্থে অন্য একটি দুর্বল সানাদে এই বর্ণনা এসেছে। অথচ ইমাম হাকিম ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে যে মূল হাদীস বর্ণনা করেছেন তাতে শুধুমাত্র পানি দ্বারা ইসতিনজার উল্লেখ রয়েছে।

আবূ আইয়ূব (রাঃ)-এর এ হাদীসের মাধ্যমে পানি দ্বারা ইসতিনজা এবং যারা এ ‘আমল করে তাদের প্রশংসার বিষয়টি প্রমাণিত। যেহেতু এর মাধ্যমে পরিপূর্ণ পবিত্রতা অর্জিত হয়। ‘উলামাহগণ বলেছেনঃ ঢিলা দ্বারা ইসতিনজা করার চেয়ে পানি দ্বারা করা অধিক উত্তম। আর উভয়টি ব্যবহার করা সর্বসাকুল্যে উত্তম। কিন্তু আমীর আল্ ইয়ামানী বলেছেন, একসঙ্গে উভয়টির ব্যবহার আমরা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে পাইনি।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩: পাক-পবিত্রতা (كتاب الطهارة) 3. Purification

পরিচ্ছেদঃ ২. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - পায়খানা-প্রস্রাবের আদব

৩৭০-[৩৭] সালমান (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, মুশরিকদের কেউ ঠাট্টা করে আমাকে বলল, তোমাদের বন্ধু (অর্থাৎ- রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তো দেখছি তোমাদেরকে পায়খানা-প্রস্রাবের নিয়ম-কানুনও শিখিয়ে দিচ্ছেন। আমি বললাম, হাঁ (এটা তো তাঁর অনুগ্রহ, দোষের তো কিছু নেই)। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদেরকে বলে দিয়েছেন, আমরা যেন পায়খানার সময় ক্বিবলা (কিবলা/কেবলা)র দিকে মুখ করে না বসি, ডান হাতে শৌচকর্ম না করি এবং পায়খানার পর তিনটি ঢিলার কম ব্যবহার না করি। আর এতে (ঢিলা) যেন গোবর ও হাড় না থাকে। (মুসলিম ও আহমাদ, তবে শব্দবিন্যাস আহমাদের)[1]

وَعَن سلمَان قَالَ قَالَ لَهُ بعض الْمُشْركين وَهُوَ يستهزئ بِهِ إِنِّي لأرى صَاحبكُم يعلمكم كل شَيْء حَتَّى الخراءة قَالَ أَجَلْ أَمَرَنَا أَنْ لَا نَسْتَقْبِلَ الْقِبْلَةَ وَلَا نَسْتَنْجِيَ بِأَيْمَانِنَا وَلَا نَكْتَفِيَ بِدُونِ ثَلَاثَةِ أَحْجَارٍ لَيْسَ فِيهَا رَجِيعٌ وَلَا عَظْمٌ. رَوَاهُ مُسْلِمٌ وَأحمد وَاللَّفْظ لَهُ

وعن سلمان قال قال له بعض المشركين وهو يستهزى به اني لارى صاحبكم يعلمكم كل شيء حتى الخراءة قال اجل امرنا ان لا نستقبل القبلة ولا نستنجي بايماننا ولا نكتفي بدون ثلاثة احجار ليس فيها رجيع ولا عظم رواه مسلم واحمد واللفظ له

ব্যাখ্যা: এ হাদীস থেকেও প্রমাণিত হয় যে, তিনটির কম ঢিলা ব্যবহার বৈধ নয় যদিও একটি বা দু’টিতে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অর্জিত হয়। ‘আল্লামা ত্বীবী (রহঃ) বলেছেন, সালমান (রাঃ) বিজ্ঞতার সাথে উত্তর দিয়েছেন। কারণ কোন মুশরিক যখন ইসলামের কোন বিষয়ে উপহাস করে তখন হয় তাকে হুমকি প্রদান করতে হবে অথবা তাকে উত্তর দেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে কিন্তু সাহাবী সালমান (রাঃ) তার উপহাসের প্রতি ভ্রূক্ষেপ না করে একজন সঠিক পথপ্রদর্শনকারীর ন্যায় উত্তর দিয়েছেন বলেছেন, ‘‘এটি উপহাসের কোন স্থান নয় বরং এটি সত্য ও সঠিক। অতএব তোমার কর্তব্য হলো হঠকারিতা পরিহার করে সত্যটি গ্রহণ করা’’।

‘আল্লামা সিন্দী বলেছেনঃ সঠিক হলো সাহাবী তার কথা প্রত্যাখ্যান করেছেন এভাবে যে, তুমি যাকে উপহাসের কারণ বলছ তা মুসলিমগণ শত্রুদের নিকট প্রকাশ করে বেড়ায় এমন কোন কারণ নয়। উপরন্তু তার বিশদ বর্ণনা জানার পর মন তাকে ভালো বিষয় হিসেবে মেনে নিবে। অতএব, উল্লেখ করতে খারাপ এমন বিষয়ের দিকে নিসবাত করায় তাকে উপহাস করার জন্য কোন দৃষ্টান্ত হতে পারে না।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩: পাক-পবিত্রতা (كتاب الطهارة) 3. Purification

পরিচ্ছেদঃ ২. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - পায়খানা-প্রস্রাবের আদব

৩৭১-[৩৮] ’আবদুর রহমান ইবনু হাসানাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (ঘর থেকে বের হয়ে) আমাদের কাছে এলেন, আর তাঁর হাতে ছিল একটি চামড়ার ঢাল (বর্ম)। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ঢালটি (পর্দাস্বরূপ স্থাপন করে) তার দিকে ফিরে মাটিতে বসে প্রস্রাব করলেন। তখন (মুশরিকদের) কয়েকজন বলে উঠলো, দেখ, মেয়েদের মতো (পর্দা করে) প্রস্রাব করছেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এটা শুনলেন এবং বললেন, তোমার জন্য আফসোস হয়, তুমি কি জানো না যে, বনী ইসরাঈলের এক ব্যক্তির কি ঘটেছিল? অর্থাৎ তাদের শরীরে (বা কাপড়ে) যখন প্রস্রাব লাগতো, তখন তারা কাঁচি দিয়ে তা কেটে ফেলতো। তাই সে (বনী ইসরাঈল-এর এক ব্যক্তি) তা হতে মানুষদেরকে নিষেধ করলো। ফলে (মৃত্যুর পর) তাকে কবরের ’আযাব দেয়া হলো। (আবূ দাঊদ ও ইবনু মাজাহ্)[1]

وَعَن عبد الرَّحْمَن بن حَسَنَةَ قَالَ: خَرَجَ عَلَيْنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَفِي يَده كَهَيئَةِ الدَّرَقَةُ فَوَضَعَهَا ثُمَّ جَلَسَ فَبَالَ إِلَيْهَا فَقَالَ بَعْضُهُمْ: انْظُرُوا إِلَيْهِ يَبُولُ كَمَا تَبُولُ الْمَرْأَةُ فَسَمعهُ فَقَالَ أَو مَا عَلِمْتَ مَا أَصَابَ صَاحِبَ بَنِي إِسْرَائِيلَ كَانُوا إِذا أَصَابَهُم شَيْء من الْبَوْلُ قَرَضُوهُ بِالْمَقَارِيضِ فَنَهَاهُمْ فَعُذِّبَ فِي قَبْرِهِ . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَابْنُ مَاجَهْ

وعن عبد الرحمن بن حسنة قال خرج علينا رسول الله صلى الله عليه وسلم وفي يده كهيىة الدرقة فوضعها ثم جلس فبال اليها فقال بعضهم انظروا اليه يبول كما تبول المراة فسمعه فقال او ما علمت ما اصاب صاحب بني اسراىيل كانوا اذا اصابهم شيء من البول قرضوه بالمقاريض فنهاهم فعذب في قبره رواه ابو داود وابن ماجه

ব্যাখ্যা: সাহাবী বলেন, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি ঢাল নিয়ে আমাদের নিকট এলেন এবং তা আমাদের এবং তাঁর মাঝে আড়াল বানিয়ে তার দিকে মুখ করে প্রস্রাব করলেন। মুসনাদে আহমাদ-এর বর্ণনায় রয়েছে, ‘‘সাহাবী ‘আবদুর রহমান বিন হাসানাহ্ বলেন আমি এবং ‘আমর ইবনুল ‘আস (রাঃ) উপবিষ্ট ছিলাম। ইত্যবসরে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঢাল বা ঢালজাতীয় কিছু নিয়ে আমাদের নিকট এনে তা পর্দা বানিয়ে পেশাব করলেন।’’ আর হাকিম-এর বর্ণনায় রয়েছে, সাহাবী বলেন, আমি আমার সাথীকে বললাম তুমি কি দেখ না রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিভাবে প্রস্রাব করছেন? এ হাদীস থেকে কয়েকটি বিষয় পাওয়া যায়ঃ

* প্রত্যেক মুসলিমকে বসে প্রস্রাব করতে হবে যেহেতু রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বসে প্রস্রাব করেছেন।

* বানী ঈসরাঈলের প্রস্রাবের ক্ষেত্রে অসতর্কতার শাস্তি নিয়ে মতভেদ রয়েছে। কেউ কেউ বলেছেন শরীরে প্রস্রাব লাগলে তা কেটে ফেলতে হতো। আবার কেউ কেউ বলেছেন, সর্বাস্থায় কাপড় কেটে ফেলতে হতো। তবে বুখারীর বর্ণনায় কাপড় কেটে ফেলার উল্লেখ এসেছে।

* সৎকাজে বাধা প্রদান না করে বরং প্রত্যেককে সৎ কাজের আদেশ এবং অসৎ কাজ থেকে বাধা প্রদান করতে হবে, না হলে বানী ঈসরাঈলের এ ব্যক্তির পরিণতি ভোগ করতে হবে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩: পাক-পবিত্রতা (كتاب الطهارة) 3. Purification

পরিচ্ছেদঃ ২. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - পায়খানা-প্রস্রাবের আদব

৩৭২-[৩৯] ইমাম নাসায়ী এ হাদীসটি ’আবদুর রহমান ও আবূ মূসা (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন।[1]

وَرَوَاهُ النَّسَائِيّ عَنهُ عَن أبي مُوسَى

ورواه النساىي عنه عن ابي موسى

হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩: পাক-পবিত্রতা (كتاب الطهارة) 3. Purification

পরিচ্ছেদঃ ২. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - পায়খানা-প্রস্রাবের আদব

৩৭৩-[৪০] মারওয়ান আল আসফার (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ইবনু ’উমার (রাঃ)-কে দেখলাম, তিনি ক্বিবলা (কিবলা/কেবলা)র দিকে তার উটকে বসালেন। তারপর উটের দিকে বসে প্রস্রাব করতে লাগলেন। আমি বললাম, হে আবূ ’আবদুর রহমান! এটা হতে কি নিষেধ করা হয়নি। তিনি বললেন, না, বরং উন্মুক্ত জায়গায় এরূপ করা নিষেধ করা হয়েছে। কিন্তু যখন তোমার আর ক্বিবলা (কিবলা/কেবলা)র মধ্যে এমন কোন জিনিস আড়াল হয়, তখন এরূপ করাতে কোন দোষ নেই। (আবূ দাঊদ)[1]

عَن مَرْوَان الْأَصْفَر قَالَ: «رَأَيْتُ ابْنَ عُمَرَ أَنَاخَ رَاحِلَتَهُ مُسْتَقْبِلَ الْقِبْلَةِ ثُمَّ جَلَسَ يَبُولُ إِلَيْهَا فَقُلْتُ يَا أَبَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَلَيْسَ قَدْ نُهِيَ عَنْ هَذَا قَالَ بلَى إِنَّمَا نُهِيَ عَنْ ذَلِكَ فِي الْفَضَاءِ فَإِذَا كَانَ بَيْنَكَ وَبَيْنَ الْقِبْلَةِ شَيْءٌ يَسْتُرُكَ فَلَا بَأْس» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

عن مروان الاصفر قال رايت ابن عمر اناخ راحلته مستقبل القبلة ثم جلس يبول اليها فقلت يا ابا عبد الرحمن اليس قد نهي عن هذا قال بلى انما نهي عن ذلك في الفضاء فاذا كان بينك وبين القبلة شيء يسترك فلا باس رواه ابو داود

ব্যাখ্যা: সাহাবী ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ)-এর উক্তি (بَلْ اِنَّمَا نُهِىَ عَنْ ذلِكَ فِي الْفَضَاءِ فَاِذَا كَانَ بَيْنَكَ وَبَيْنَ الْقِبْلَةِ) ‘‘রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফাঁকা ময়দানে প্রস্রাব-পায়খানার সময় ক্বিবলাকে সামনে পশ্চাতে করতে নিষেধ করেছেন।’’ ইবনু উমার (রাঃ)-এর উক্তিটি সেসব লোকেদের দলীল, যারা এই নিষেধের ক্ষেত্রে ফাঁকা ময়দান ও প্রাচীরবেষ্টিত টয়লেটের মাঝে পার্থক্য করেন। সর্বক্ষেত্রেই ক্বিবলাকে সামনে পিছনে করা নিষেধের মতাবলম্বীরা এর উত্তরে বলেনঃ ইবনু ‘উমার (রাঃ)-এর এ উক্তিটির দু’টিরই সম্ভাবনা রয়েছে। হয়ত তিনি এটি রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মুখ থেকে শ্রবণ করেছেন অথবা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কর্মের উপর নির্ভর করে বলেছেন যা তিনি প্রত্যক্ষ করেছেন যেন তিনি রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে হাফসার গৃহে ক্বিবলাকে পিছনে প্রয়োজন পূরণরত অবস্থায় দেখে এ নিষেধটি প্রাচীরবেষ্টিত টয়লেটের ক্ষেত্রেই নির্দিষ্ট বুঝেছেন। এই বুঝটা দলীল হতে পারে না এবং এই উক্তির দ্বারা দলীল দেয়াও সঠিক হবে না। (অতএব সর্বক্ষেত্রেই ক্বিবলাকে সামনে পশ্চাতে করে প্রস্রাব-পায়খানা করা নিষেধ)।

[ক্বিবলাকে সামনে বা পশ্চাতে রেখে প্রস্রাব-পায়খানা করা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য খাস ছিল। কারণ তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, আমার উক্তি আমার কর্মের উপর প্রাধান্য পাবে। এ নিয়ে অযথা বিতর্ক সৃষ্টির অবকাশ নেই।] (সম্পাদক)


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩: পাক-পবিত্রতা (كتاب الطهارة) 3. Purification

পরিচ্ছেদঃ ২. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - পায়খানা-প্রস্রাবের আদব

৩৭৪-[৪১] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন পায়খানা হতে বের হতেন, এ দু’আ পড়তেনঃ ’’আলহাম্‌দু লিল্লা-হিল্লাযী আযহাবা ’আন্নিল আযা- ওয়া’আ-ফানী’’- [অর্থাৎ- সকল প্রশংসা আল্লাহ তা’আলার, যিনি আমার থেকে কষ্টদায়ক জিনিস দূর করেছেন ও আমাকে নিরাপদ করেছেন]। (ইবনু মাজাহ্)[1]

وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ: كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِذَا خَرَجَ مِنَ الْخَلَاءِ قَالَ: «الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَذْهَبَ عَنِّي الْأَذَى وَعَافَانِي» . رَوَاهُ أبن مَاجَه

وعن انس قال كان النبي صلى الله عليه وسلم اذا خرج من الخلاء قال الحمد لله الذي اذهب عني الاذى وعافاني رواه ابن ماجه

ব্যাখ্যা: قوله (إِذَا خَرَجَ مِنَ الْخَلَاءِ) অর্থাৎ যখন তিনি প্রাচীরবেষ্টিত টয়লেট হতে বের হতেন বা জনমানবহীন ফাঁকা স্থানে প্রয়োজন পূরণ করার পর চলে যেতেন তখন তিনি এ দু‘আ পাঠ করতেন। কারণ সাধারণত সর্বক্ষেত্রেই এ দু‘আ পাঠ করা সুন্নাত। দু‘আটি হলো (الْحَمْدُ لِلّهِ الَّذِي أَذْهَبَ عَنِّىْ الْأَذى وَعَافَانِىْ) ‘‘সকল প্রশংসা আল্লাহ তা‘আলার জন্য যিনি আমার কষ্ট দূর করেছেন এবং মল পেটে আবদ্ধ হওয়া বা তার সাথে নাড়ি-ভুড়ি বের হওয়ার বিপদ থেকে রক্ষা করেছেন’’। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রশংসা থেকে বুঝা যায় যে পায়খানা-প্রস্রাব মানব জাতির প্রতি আল্লাহ তা‘আলার বিরাট ও শ্রেষ্ঠ অনুগ্রহ। কারণ পেটে মল, প্রস্রাব আবদ্ধ থাকাটা মৃত্যু বা ধ্বংসের একটি অন্যতম কারণ। আর তা বের হওয়া আল্লাহ তা‘আলার বিশাল অনুগ্রহ যা ব্যতীত কেউ পূর্ণ সুস্থ থাকতে পারবে না। অতএব, যারা ক্ষুধা নিবারণকল্পে সুস্থ থাকার জন্য হালাল খাবার গ্রহণ করে, অতঃপর খাবারের পুষ্টি গ্রহণ করে যখন অনুপকারী দুর্গন্ধযুক্ত মলগুলো পিছনের রাস্তা দিয়ে বের হয়ে যায় তখন তাদের সকলের দায়িত্ব হলো বেশি বেশি আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩: পাক-পবিত্রতা (كتاب الطهارة) 3. Purification

পরিচ্ছেদঃ ২. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - পায়খানা-প্রস্রাবের আদব

৩৭৫-[৪২] ইবনু মাস্’ঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, জিনের প্রতিনিধি দল যখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট পৌঁছলেন, তখন তাঁর নিকট বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আপনার উম্মাতকে গোবর, হাড় ও কয়লা দিয়ে ঢিলা ব্যবহার করতে নিষেধ করে দিন। আল্লাহ তা’আলা এগুলোকে আমাদের রিযক্ব (রিজিক/রিযিক) হিসেবে নির্ধারণ করেছেন। অতএব রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এগুলো দ্বারা ইসতিনজা (ইস্তিঞ্জা/ইস্তেঞ্জা/ইসতেনজা) করতে আমাদেরকে নিষেধ করে দেন। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ قَالَ: لَمَّا قَدِمَ وَفْدُ الْجِنِّ عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ انْهَ أُمَّتَكَ أَنْ يَسْتَنْجُوا بِعَظْمٍ أَوْ رَوْثَةٍ أَوْ حُمَمَةٍ فَإِنَّ اللَّهَ جَعَلَ لَنَا فِيهَا رِزْقًا فَنَهَانَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ ذَلِكَ . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

وعن ابن مسعود قال لما قدم وفد الجن على النبي صلى الله عليه وسلم قالوا يا رسول الله انه امتك ان يستنجوا بعظم او روثة او حممة فان الله جعل لنا فيها رزقا فنهانا رسول الله صلى الله عليه وسلم عن ذلك رواه ابو داود

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩: পাক-পবিত্রতা (كتاب الطهارة) 3. Purification
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ১১ পর্যন্ত, সর্বমোট ১১ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে