তৃতীয়ত: কোনো পীর-বুযুর্গের রূহের উদ্দেশ্যে প্রাণী জবাই করা এবং তাদের কবরের পাশে অবস্থান করা

বিভিন্ন পর্ব উপলক্ষে পীর-বুযুর্গদের মাযারে যবাই করা, ওরস আয়োজন করা, তাদের কবরের গম্বুজের কাছে অবস্থান করা এবং সে উপলক্ষে সেখানে অবস্থান করে শরী‘আত বিরোধী বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হওয়া, অসুস্থ ব্যক্তিকে সেখানে সুস্থতা লাভের আশায় নিয়ে যাওয়া, সেখানে অবস্থান করা, কবরবাসী বুযুর্গের নিকট আরোগ্য চাওয়া, বিভিন্ন মনোবাঞ্ছা পূরণের আবেদন করা, তাদের কাছে দো‘আ চাওয়া, তাদের দ্বারা উদ্ধার কামনা করা প্রভৃতি ক্রিয়াকর্ম সম্পূর্ণ শরী‘আত বিরোধী ও কঠিন ভ্রষ্টতা। আল্লাহর দীন ইসলামে এসব কর্মকাণ্ডের কোনো অনুমোদন নেই। আল্লাহ এগুলো প্রবের্তন করেন নি। এগুলো তো আদতে ইসলামপূর্ব জাহেলী যুগের কর্মকাণ্ড এবং ইবাদতে আল্লাহর সঙ্গে স্পষ্ট শরীক নির্বাচন করা। অথচ আল্লাহ এ ধরণের শির্ক থেকে বান্দাদেরকে কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন। আল্লাহ বলেন,

﴿وَٱعۡبُدُواْ ٱللَّهَ وَلَا تُشۡرِكُواْ بِهِۦ شَيۡ‍ٔٗا﴾ [النساء: ٣٦]

“তোমরা আল্লাহর ইবাদত করো এবং তাঁর সঙ্গে কাউকে শরীক করো না”। [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৩৬]

তিনি আরও বলেন,

﴿فَلَا تَجۡعَلُواْ لِلَّهِ أَندَادٗا وَأَنتُمۡ تَعۡلَمُونَ﴾ [البقرة: ٢٢]

“অতএব, তোমরা আল্লাহর কোনো সমকক্ষ সাব্যস্ত করো না, অধিকন্তু তোমরা জান”। [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ২২] এ বাতিলে বারবার আমলকারী এবং তার স্বীকৃতি প্রদানকারী উভয়েই বিধানের দিক থেকে সমান। আর তা হচ্ছে আল্লাহর সাথে শির্ক করা।

শরী‘আতের এতো নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও দেখে অবাক হতে হয় যে, অনেক মুর্খ, যারা মুসলিম বলেই নিজেদের পরিচয় দেয়, উসীলা গ্রহণের কিতাব, সুন্নাহ ও ইজমায়ে উম্মাহর প্রদর্শিত পথ পরিহার করে, নিজেদের মনগড়া পথ ও পন্থায় উসীলা গ্রহণ করছে। বরং তারা তাদের নিজেদের মনগড়া দো‘আ-অযীফার দিকে ধাবিত হচ্ছে, তারা এমনসব বিদ‘আতী উসীলা গ্রহণ করছে যা আল্লাহ তা‘আলা কখনো অনুমোদন করেন নি, তা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও কখনও ব্যবহার করেন নি আর উম্মতের সম্মানিত গ্রহণযোগ্য উত্তরসূরীদের থেকেও বর্ণিত হয় নি।

আমার প্রিয় ভায়েরা! এ বিদ‘আতী উসীলা অস্বীকার করার বিষয়টি শুধু আমাদের অভিমতই নয়, বরং এাই হচ্ছ দীনের মূল বিষয়, দীনের মধ্যে যে সব বিদ‘আত এসে পড়েছে সেসবই নিষিদ্ধ। বরং জেনে রাখুন, সাহাবী, তাবেঈন, চার ইমাম ও তাদের অনুসারীগণ এ অভিমতই পোষণ করতেন।