উমরার ফরয :

১। ইহরাম বাঁধার নিয়ত করা। যে ব্যক্তি উমরার নিয়ত করবে না তার উমরা হবে না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«إِنَّمَا الأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ، وَإِنَّمَا لِكُلِّ امْرِئٍ مَا نَوَى».

‘নিশ্চয় আমলসমূহ নিয়তের ওপর নির্ভরশীল। আর প্রত্যেকের জন্য তাই হবে, যা সে নিয়ত করে।’[1]

২। বাইতুল্লাহ্‌র তাওয়াফ করা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

وَلۡيَطَّوَّفُواْ بِٱلۡبَيۡتِ ٱلۡعَتِيقِ ٢٩ [الحج: ٢٩]

‘আর তারা যেন প্রাচীন ঘরের তাওয়াফ করে’।[2]

সাফা ও মারওয়ার মাঝে সাঈ করা। (অধিকাংশ সাহাবী, তাবিঈ ও ইমামের মতে)। ইমাম আবূ হানীফা রহ.-এর মতে এটি ওয়াজিব। সাফা ও মারওয়ায় সাঈ ফরয হওয়া সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«وَمَنْ لَمْ يَكُنْ مِنْكُمْ أَهْدَى فَلْيَطُفْ بِالْبَيْتِ وَبِالصَّفَا وَالْمَرْوَة»

‘আর তোমাদের মধ্যে যে হাদী নিয়ে আসেনি সে যেন বাইতুল্লাহর তাওয়াফ করে এবং সাফা ও মারওয়ার সাঈ করে।’[3] তাছাড়া তিনি সাঈ সম্পর্কে আরো বলেন,

اسْعَوْا فَإِنَّ اللَّهَ كَتَبَ عَلَيْكُمُ السَّعْي.

‘তোমরা সাঈ করো, কেননা আল্লাহ তোমাদের ওপর সাঈ ফরয করেছেন।’[4]

সুতরাং যদি কেউ ইহরাম বাঁধার নিয়ত না করে, তবে তার উমরা আদায় হবে না। যদিও সে তাওয়াফ, সাঈ সম্পাদন করে। তেমনি যদি কেউ তাওয়াফ বা সাঈ না করে, তাহলে তার উমরা আদায় হবে না। তাওয়াফ ও সাঈ আদায় না করা পর্যন্ত সে ইহরাম অবস্থায় থাকবে। এমতাবস্থায় তাকে চুল ছোট বা মাথা মুণ্ডন না করে ইহরাম অবস্থায় থাকতে হবে।

উমরার ওয়াজিব :

১। মীকাত থেকে ইহরাম বাঁধা।

ক. মীকাতের বাইরে অবস্থানকারিদের জন্য যে মীকাত দিয়ে তিনি প্রবেশ করবেন সেখান থেকেই ইহরাম বাঁধা। কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মীকাতগুলো নির্ধারণ করার সময় বলেন,

«هُنَّ لَهُنَّ وَلِمَنْ أَتَى عَلَيْهِنَّ مِنْ غَيْرِ أَهْلِهِنَّ لِمَنْ كَانَ يُرِيدُ الْحَجَّ وَالْعُمْرَة».

‘এগুলো তাদের জন্য এবং যারা অন্যত্র থেকে ঐ পথে আসে হজ ও উমরা আদায়ের ইচ্ছা নিয়ে তাদের জন্যও।’[5]

খ. মক্কায় অবস্থানকারিদের জন্য হিল্ল অর্থাৎ হারাম এলাকার বাইরে থেকে ইহরাম বাঁধা। কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আয়েশা রা. কে তানঈম থেকে ইহরাম বাঁধার আদেশ দিয়েছেন।[6] তানঈম হারামের সীমার বাইরে অবস্থিত। মক্কায় অবস্থানকারী উমরাকারিদের জন্য এটি সবচে’ কাছের মীকাত অর্থাৎ উমরার ইহরাম বাঁধার স্থান।

গ. যারা মীকাতের ভেতরে অথচ হারাম এলাকার বাইরে অবস্থান করেন তারা নিজ নিজ অবস্থানস্থল থেকেই উমরার ইহরাম বাঁধবেন। কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«وَمَنْ كَانَ دُونَ ذَلِكَ فَمِنْ حَيْثُ أَنْشَأَ»

‘আর যারা মীকাতের ভেতরে অবস্থানকারী তারা যেখান থেকে (হজ বা উমরার) ইচ্ছা করে সেখান থেকেই ইহরাম বাঁধবে।’[7]

২। মাথা মুণ্ডন করা অথবা চুল ছোট করা।

কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাথা মুণ্ডন অথবা চুল ছোট করার আদেশ দিয়ে বলেন, وَلْيُقْصِرْ ، وَلْيُحِلل অর্থাৎ সে যেন মাথার চুল ছোট করে এবং হালাল হয়ে যায়।[8]

সাফা ও মারওয়ার সাঈ করা। ইমাম আবূ হানীফা রহ.-এর মতে সাফা ও মারওয়ার সাঈ করা ওয়াজিব। তবে বিশুদ্ধ মত হল, এটি ফরয।

[1]. বুখারী : ১।

[2]. হজ : ২৯।

[3]. বুখারী : ১৬৯১; মুসলিম ১২২৭।

[4]. মুসনাদ আহমাদ : ৬/৪২১; মুস্তাদরাক হাকেম : ৪/৭০।

[5]. বুখারী : ১৫২৪; মুসলিম : ১১৮১।

[6]. বুখারী : ১৫৬১; মুসলিম : ১২১১।

[7]. বুখারী : ১৫২৪; মুসলিম : ১১৮১।

[8]. বুখারী : ১৬৯১; মুসলিম : ১২২৭।