ইসলামী জীবন-ধারা হাই ও হাঁচির আদব আবদুল হামীদ ফাইযী ১ টি

আলস্যজনিত কারণে মানুষের হাই ওঠে। আর বিশেষ করে ইবাদতের সময় শয়তান মুসলিমের মনে আলস্য সৃষ্টি করে। সেই জন্য মহান আল্লাহ বান্দার হাই তোলাকে পছন্দ করেন না। পক্ষান্তরে শয়তান তা পছনদ করে এবং তাতে খোশ হয়। আর সেই জন্য হাই তোলার আদব রয়েছে ইসলামে। রাসুল (ﷺ) বলেন,

إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْعُطَاسَ وَيَكْرَهُ التَّثَاؤُبَ فَإِذَا عَطَسَ فَحَمِدَ اللَّهَ فَحَقٌّ عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ سَمِعَهُ أَنْ يُشَمِّتَهُ وَأَمَّا التَّثَاؤُبُ فَإِنَّمَا هُوَ مِنْ الشَّيْطَانِ فَلْيَرُدَّهُ مَا اسْتَطَاعَ فَإِذَا قَالَ هَا ضَحِكَ مِنْهُ الشَّيْطَانُ

‘‘নিশ্চয় আল্লাহ হাঁচিকে পছন্দ এবং হাইকে অপছন্দ করেন। সুতরাং তোমাদের মধ্যে কেউ যখন হাঁচি মেরে ‘আলহামদু লিল্লাহ’ বলে, তখন প্রত্যেক সেই মুসলিমের উচিত - যে সেই হাম্দ শোনে সে যেন তার উদ্দেশ্যে ‘য়্যারহামুকাল্লাহ’ বলে। পক্ষান্তরে হাই হল শয়তানেরই পক্ষ থেকে। সুতরাং তোমাদের যে কেউ যখন হাই তোলে, তখন সে যেন তা যথাসাধ্য দমন করে। যেহেতু তোমাদের কেউ যখন হাই তোলে, তখন শয়তান হাসে।’’ অন্য এক বর্ণনায় আছে, ‘‘তোমাদের কেউ যখন ‘হা-’ বলে, তখন শয়তান হাসে।’’[1]

তিনি আরো বলেন, ‘‘তোমাদের কেউ যখন হাই তোলে, তখন সে যেন নিজ মুখের উপর হাত রেখে নেয়। কেননা শয়তান তাতে প্রবেশ করে থাকে।’’[2]

হাই আসে অলসতা ও জড়তার কারণে। আর এ সব আসে শয়তানের কাছ থেকে। সুতরাং শয়তানের এই চক্রান্তকে যথাসাধ্য রোধ করা উচিত। তাতে শয়তান রাগান্বিত হয়। আর কেউ যখন আলস্য প্রকাশ করে ‘হা-হা’ বা ‘হো-হো’ বলে হাই তোলে, তখন শয়তান নিজের কাজের সফলতা দেখে হাসে। সুতরাং সে সময় শব্দ করে শয়তান হাসানো উচিত নয়। তাছাড়া লোকের সামনে মুখ খুলে ‘হা-হা’ করে হাই তুললে মুখের দুর্গন্ধ তাদের নাকে লাগতে পারে এবং তাতে আপনার প্রতি তাদের মনে ঘৃণা সৃষ্টি হতে পারে। তাই সুন্দর ইসলামের এই সভ্যতা বিধান।

প্রকাশ থাকে যে, হাই তোলার সময় পঠনীয় কোন দু‘আ নেই। এই সময় ‘আঊযু বিল্লাহ---’ বা ‘লা হাওলা---’ পড়াও বিধেয় নয়।

[1]. বুখারী তাওহীদ পাবঃ হা/৬২২৩, ৬২২৬, মুসলিম আল-মাকতাবাতুশ-শামেলা হা/২৯৯৪

[2]. মুসলিম আল-মাকতাবাতুশ-শামেলা হা/২৯৯৫