নামাযের সময় নির্দিষ্টী করণের পশ্চাতে হিকমত

মহান আল্লাহ মানুষ সৃষ্টি করেছেন এবং তাকে এমন প্রকৃতি ও প্রবৃত্তি দান করেছেন, যাতে রুযী অনুসন্ধানের মাধ্যমে তাকে জীবনধারণ করতে হবে। আর তার জন্য প্রয়োজন পরিশ্রমের। পরিশ্রম দেহ্‌-মনে ক্লান্তি, ব্যস্ততা ও শৈথিল্য আনে। ফলে পরিশ্রমে ছিন্ন হয় আল্লাহ ও বান্দার মাঝে বিশেষ যোগসূত্র। তাই তো যথাসময়ে সেই যোগসূত্র -একটানা নয় বরং মাঝে মাঝে কায়েম করে বান্দাকে আল্লাহ-মুখো করে রাখার উদ্দেশ্যে নামাযের ওয়াক্তের এই বিশেষ সময়াবলী নির্দিষ্ট করা হয়েছে।

পক্ষান্তরে পরিশ্রম ও উপার্জনের জন্যও উদ্যম জরুরী। বিশেষ করে ফজরের সময়ে এমন কিছু অনুশীলনের দরকার, যার মাঝে নিদ্রার জড়তা ও আলস্য কেটে গিয়ে মনে স্ফূর্তি ফিরে আসে এবং যার ফলে এই বর্কতের সময়ে মানুষ নিজ নিজ কাজে মনোযোগী হতে পারে। তাই তো ফজরের নামাযের মাধ্যমে বান্দা তার নিদ্রা অবস্থায় নিরাপত্তা লাভের উপর আল্লাহর শুকরিয়া জ্ঞাপন করে এবং আল্লাহর নিকট তওফীক ও সাহায্য কামনার মধ্য দিয়ে শুরু করে তার প্রাত্যহিক কর্মজীবন।

পরিশ্রম ও ব্যস্ততার মাঝে ঠিক দিন দুপুরে মানুষ পরিশ্রান্ত হয়ে পড়ে একটু বিরতির সাথে বিশ্রাম নিয়ে থাকে। এই বিশ্রামের সময় সে তার নিজ কর্মের উপর তওফীক লাভের শুকরিয়া জ্ঞাপন করে আল্লাহর নিকট। অতঃপর আসরের সময় উপস্থিত হলে পুনরায় বান্দা তার বাকী দিনের কর্ম সম্পন্ন করার মানসে আল্লাহর সাহায্য কামনা করে। মাগরেবের সময় হলে বান্দা নিজ গৃহে ফিরে কর্ম সম্পাদন করার কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনপূর্বক মাগরেবের নামায পড়ে। অতঃপর সময় আসে বিশ্রাম ও আরামের। এই সময় বান্দা প্রাত্যহিক কর্ম সেরে সারা দিনে আল্লাহর তরফ থেকে অবতীর্ণ অনুগ্রহের উপর শুক্‌র জানিয়ে এশার নামায পড়ে। আর এইভাবে সে প্রত্যহ্‌ কর্ম ও ইবাদতের মধ্য দিয়ে নিজের কাল যাপন করে থাকে। কোন সময় আত্মবি স্মৃ ত হয়ে পাপের প্রতিঢলে পড়লে নামায তাকে বাধা দেয়। আল্লাহর আযাব ভীষণ কঠিন এবং তাঁর অনুগ্রহ অনন্ত-অসীম -এ কথা প্রত্যহ্‌ পাঁপ-পাঁচ বার বান্দাকে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়। (মাজমূউস স্বালাওয়াতি ফিল-ইসলাম, ড: শওকত উলাইয়ান ৯১-৯২পৃ:)