সিয়ামের কাযা ও কাফফারা কী জিনিস? এগুলো কীভাবে আদায় করতে হয়?

অনিচ্ছাকৃত বা উযরবশত ছুটে যাওয়া সাওমের বদলে কাযা, আর উযরছাড়া ইচ্ছাকৃতভাবে ছেড়ে দেয়া সাওমের বদলে দিতে হয় কাফফারা। কাযা হলে সম পরিমাণ সাওম আদায় করতে হয়। আর কাফ্ফারা হলে, সাওম না রাখার কারণে সুনির্দিষ্ট কিছু কর্তব্য পালন করতে হয়। কাফফারা তিন ধরনের।
(১) গোলাম আযাদ করা, আর তা সম্ভব না হলে
(২) একাধারে ৬০টি রোযা রাখা, আর সেটিও সম্ভব না হলে
(৩) ৬০ জন মিসকীনকে এক বেলা খানা খাওয়ানো।

যে ব্যক্তি বিনা উযরে বিনা করণে অতীতে সিয়াম ভঙ্গ করেছে সে কীভাবে কাযা ও কাফফারা আদায় করবে?

এক রমযানের সাওম তাকে পরবর্তী রমযানের আগে আদায় করতে হবে। যদি তা সম্ভব না হয় তবে সারা জীবনে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তা কাযা করে নিতে হবে। এবং প্রতি রোযার বদলে একটি রোযা পালন করতে হবে। আর তা রাখতে শারীরিকভাবে অক্ষম হলে একজন মিসকীনকে এক বেলা খানা খাওয়াতে হবে।

দিনের বেলায় সহবাসের কারণে সিয়াম ভঙ্গ হলে তার কি করতে হবে।

এজন্য তাকে কাযাও করতে হবে এবং কাফফারাও দিতে হবে। এ দু’টিই তার জন্য ফরয? সহবাসের কারণে যে রোযা ভঙ্গ হয় ঐ একটা রোযার বদলে একাধারে ষাট দিন রোযা রাখতে হবে। এবং এর মাঝখানে সঙ্গত কারণ ছাড়া কোন বিরতি দেয়া যাবে না।

যদি মাঝখানে বিরতি দেয়া হয় তাহলে এরপর থেকে আবার নতূন করে ষাট দিন বিরতীহীনভাবে সিয়াম পালন করতে হবে।

একটি রোযা ভাঙ্গার কারণে ষাটটি রোযা রাখা, তাও আবার বিরতীহীনভাবে এভাবে আদায় করতে যদি কেউ অক্ষম বা অপারগ হয় তাহলে কি করবে?

৬০ জন অভাবী মানুষকে একবেলা খানা খাওয়াবে। প্রতিজনের খাবারের পরিমাণ হবে কমপেক্ষ ৫১০ গ্রাম।

কাউকে চুমু দেয়ার কারণে বা স্ত্রী বা কোন মেয়ের গা স্পর্শ হওয়ার কারণে অনচ্ছিকৃতভাবে বীর্যপাত হয়ে গেলে ঐ দিনের সিয়াম কীভাবে কাযা করবে?

সাধারণ নিয়মেই এক সাওমের বিপরীতে এক সাওম হিসেবে কাযা করবে

কোন্ কারণে রোযা ভঙ্গ হলে কাযা ও কাফ্ফারা উভয়ই ওয়াজিব হয়?

রোযাবস্থায় ইচ্ছাকৃতভাবে সহবাস করলে কাযা ও কাফফারা উভয়ই ওয়াজিব হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে ১টি রোযা কাযা করবে, অতঃপর ৬০টি রোযা কাফফারা হিসেবে আদায় করবে। অর্থাৎ ১ রোযার বদলে বিরতিহীনভাবে মোট ৬১টি রোযা পালন করবে।

ইচ্ছাকৃতভাবে পানাহার করলে কী করবে, কাযা না কাফফারা?

অধিকাংশ আলেমদের মতে শুধু কাযা করবে। অর্থাৎ এক রোযার বদলে একটি রোযা পালন করবে। তবে কোন কোন আলেমের মতে কাযা ও কাফফারা উভয়ই ওয়াজিব হয়ে যাবে। অর্থাৎ ১ রোযার বদলে বিরতিহীনভাবে মোট ৬১টি রোযা পালন করবে।

কোন কোন কারণে রোযা ভঙ্গ হলে শুধু কাযা ওয়াজিব হয়?

১। স্ত্রীকে চুম্বন/স্পর্শ করার কারণে বীর্যপাত ঘটলে।
২। ইচ্ছাকৃতভাবে মুখ ভরে বমি করলে
৩। পাথর, লোহার, টুকরা, ফলের আঁটি ইত্যাদি গিলে ফেললে
৪। ভুলক্রমে কিছু খেতে আরম্ভ করে রোযা ভঙ্গ হয়েছে মনে করে পুনরায় আহার করলে।
৫। কুলি করার করার সময় পেটে পানি চলে গেলে
৬। মুখে বমি এলে পুনরায় তা পেটে প্রবেশ করালে
৭। দাঁতের ফাঁক থেকে খাদ্য কণা খেয়ে ফেললে
৮। রোযার নিয়ত না করে ভুল করে রোযা ভঙ্গ হয়ে গেছে মনে করে পানাহার করলে।

রমযানের রোযা কাযা করার হুকুম কি? কেউ যদি একাধিক রোযা ভঙ্গ করে তবে সে কি এগুলো একাধারে কাযা করবে?

ধারাবাহিকভাবে কাযা করা মুস্তাহাব। তবে পৃথক পৃথকভাবে কাযা করা জায়েয আছে। কাযাকারী পরবর্তী রমজান আসার পূর্বে করা উত্তম। তবে যে কোন সময়ে তা করতে পারবে।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿ فَعِدَّةٞ مِّنۡ أَيَّامٍ أُخَرَۚ ﴾ [البقرة: ١٨٤]

‘‘অন্য সময় এ সংখ্যা পূরণ করে নেবে। (বাকারা : ১৮৪)

এক রমযানের কাযা আদায়ের পূর্বে অন্য রমযান আগমন করলে কী করবে?

এমতাবস্থায় চলতি রমযানের রোযা আদায় করার পর পূর্বের রোযাগুলোর কাযা পালন করবে।

দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ১০ পর্যন্ত, সর্বমোট ১০ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে