সাধারণভাবে বিশ্বাস মানুষকে ভয়মুক্ত করে। সকল ধর্মের প্রকৃত বিশ্বাসীরা ভয়মুক্ত ও শঙ্কামুক্ত জীবন যাপন করেছেন এবং মৃত্যুসহ সকল কষ্ট হাসিমুখে মেনে নিয়েছেন। কিন্তু পবিত্র বাইবেলের বর্ণনায় যীশু ছিলেন এর ব্যতিক্রম। যীশুকে বাইবেলে ভীত হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে। খ্রিষ্টান প্রচারকরা দাবি করেন যে, যীশুকে বিশ্বাস করলে সকল ভয় থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। অথচ স্বয়ং যীশুকেই ইঞ্জিলে অত্যন্ত ভীতরূপে চিত্রিত করা হয়েছে।

ইঞ্জিলগুলো বলছে যে, যীশু তাঁর মৃত্যুর আগেই বারবার তাঁর কষ্ট ও মৃত্যু সম্পর্কে শিষ্যদের বলেছিলেন। কি হবে তা সবই তিনি জানতেন। খ্রিষ্টীয় ধর্ম বিশ্বাস অনুসারে তিনিই যেহেতু ঈশ্বর সেহেতু পৃথিবীতে আগমনের পূর্ব থেকেই, অনাদিকাল থেকেই তিনি জানতেন যে, ক্রুশে মৃত্যুর মাধ্যমে আদমের পাপ থেকে মানুষদেরকে মুক্ত করতেই তিনি আগমন করেছেন। আনন্দিত চিত্তে মানুষের মুক্তির জন্য করুণাপরবশ হয়েই তিনি এসেছেন। স্বাভাবিক প্রত্যাশা এই যে,  ক্রুশের দিন যত এগিয়ে আসবে ততই তাঁর আনন্দ ও উল্লাস বাড়তে থাকবে! কারণ তাঁর এ ঝামেলাময় ক্ষণস্থায়ী জাগতিক দায়িত্ব শেষ করে তিনি তাঁর চিরন্তন মর্যাদা ও শান্তির আবাসে ফিরে যাবেন।

কিন্তু বাইবেল আমাদের সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র দেখাচ্ছে। ইঞ্জিলে বলা হয়েছে যে, তিনি যখন জানতে পারলেন যে, ইহুদিরা তাঁকে ধরে বিচার করার  ষড়যন্ত্র করছে তখন মাটিতে উবুড় হয়ে কাঁদতে থাকেন এবং রক্তক্ষরণের মত ঘামতে থাকেন।

মথি লেখেছেন: ‘‘তখন ঈসা তাঁদের সঙ্গে গেৎশিমানী নামক একটি স্থানে গেলেন, আর তাঁর সাহাবীদেরকে বললেন, আমি যতক্ষণ ওখানে গিয়ে মুনাজাত করি, ততক্ষণ তোমরা বসে থাক। পরে তিনি পিতরকে এবং সিবদিয়ের দুই পুত্রকে সঙ্গে নিয়ে গেলেন, আর দুঃখার্ত ও ব্যাকুল হতে লাগলেন। তখন তিনি তাদেরকে বললেন, আমার প্রাণ মরন পর্যন্ত দুঃখার্ত হয়েছে (My soul is exceeding sorrowful, even unto death); তোমরা এখানে থাক, আমার সঙ্গে জেগে থাক। পরে তিনি কিঞ্চিত আগে গিয়ে উবুড় হয়ে পড়ে মুনাজাত করে বললেন, হে আমার পিতা, যদি হতে পারে, তবে এই পানপাত্র আমার কাছ থেকে দূরে যাক (if it be possible, let this cup pass from me); তবুও আমার ইচ্ছামত না হোক, তোমার ইচ্ছামত হোক। পরে তিনি সেই সাহাবীদের কাছে এসে দেখলেন, তাঁরা ঘুমিয়ে পড়েছেন ... পুনরায় তিনি দ্বিতীয়বার গিয়ে এই মুনাজাত করলেন, হে আমার পিতা, আমি পান না করলে যদি তা দূর না হয়, তবে তোমার ইচ্ছা সিদ্ধ হোক। ... আর তিনি পুনরায় তাদেরকে ছেড়ে গিয়ে তৃতীয় বার আগের মত কথা বলে মুনাজাত করলেন। (মথি ২৬/৩৬-৪৪, মো.-১৩। আরো দেখুন: মার্ক ১৪/৩২-৪১)।

লূকের বর্ণনা নিম্নরূপ: ‘‘পিতা, যদি তোমার অভিমত হয়, আমার কাছ থেকে এই পানপাত্র দূর কর (if thou be willing, remove this cup from me)...  তখন বেহেশত থেকে এক জন ফেরেশতা দেখা দিয়ে তাঁকে সবল করলেন। পরে তিনি মর্মভেদী দুঃখে মগ্ন হয়ে আরও একগ্র ভাবে মুনাজাত করলেন; আর তাঁর শরীরের ঘাম যেন রক্তের ঘনীভূত বড় বড় ফোঁটা হয়ে ভূমিতে পড়তে লাগল (being in an agony he prayed more earnestly: and his sweat was as it were great drops of blood falling down to the ground)।’’ (লূক ২২/৪২-৪৪, মো.-১৩)

ইঞ্জিলগুলো আরো লেখেছে যে, মৃত্যুর পূর্বে যীশু চিৎকার করে ঈশ্বরের কাছে অভিযোগ ও আক্ষেপ করেন। ‘‘আর নবম ঘটিকার সময়ে ঈসা জোরে চিৎকার করে ডেকে বললেন, ‘‘এলী এলী লামা শবক্তানী,’’ অর্থাৎ ‘‘আল্লাহ্ আমার, আল্লাহ্ আমার, তুমি কেন আমায় পরিত্যাগ করেছ? ... পরে ঈসা আবার জোরে চিৎকার করে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলেন।’’ (মথি ২৭/৪৬, ৫০, মো.-১৩; মার্ক ১৫/৩৪, ৩৭)

সম্মানিত পাঠক, ইঞ্জিলের এ বর্ণনা আমাদেরকে দারুন সমস্যার মধ্যে  ফেলেছে। নিম্নের বিষয়গুলো লক্ষ্য করুন:

(ক) খ্রিষ্টধর্মীয় সাধু, প্রচারক ও অন্যান্য বিভিন্ন ধর্মের ও ধর্মহীন আদর্শের হাজার হাজার মানুষের কথা আমরা জানি মৃত্যুদণ্ড-র আগে ও সময়ে তাঁরা নির্বিকার ও সহাস্যবদন ছিলেন। যীশু কী তাঁদের সকলের চেয়ে অধিক ভীত ও দুর্বল চিত্ত ছিলেন?

(খ) সাধারণ মানুষ পৃথিবী ছাড়তে কষ্ট পায়, কারণ সে জীবনকে ভালবাসে ও উপভোগ করে। এর বিপরীতে মৃত্যু পরবর্তী জীবন নিয়ে তার অজানা আতঙ্ক ও দুশ্চিন্তা থাকে। কিন্তু যীশুর ক্ষেত্রে বিষয়টা সম্পূর্ণ ভিন্ন। তিনি জানেন যে, তিনি ঈশ্বর। পৃথিবীতে তাঁর কিছুই পাওয়ার বা উপভোগের নেই। তাঁর সকল মর্যাদা, মহিমা ও শান্তির স্থানে যাওয়ার জন্য মৃত্যু শুধু দরজা মাত্র। কয়েক ঘণ্টার কষ্টের মাধ্যমে তিনি পৃথিবীর ঝামেলাপূর্ণ দায়িত্ব থেকে মুক্ত হয়ে নিজের মহিমা, মর্যাদা ও শান্তির নিলয়ে গমন করবেন। তিনি কেন কাঁদবেন? তাও এভাবে কাঁদবেন? ইঞ্জিলের এ সকল অশোভন বর্ণনার কারণে কেউ যদি বলেন, ক্রুশে মরতেই যাঁর আগমন, সেই যীশুই মৃত্যুর ভয়ে এত ভীত, কাজেই তাঁকে বিশ্বাস করলে তো ভয় শতগুণ বাড়বে বৈ কমবে না! তাহলে কি তাকে দোষ দেওয়া যায়?

(গ) জীবনকে প্রেম করতে নিষেধ করলেন যীশু। তিনি বললেন জীবনকে যে ভালবাসবে সে তা হারাবে। তাহলে তিনি কাঁদছেন কিসের জন্য? জীবনের মায়া ও ভালবাসা কি এতই বেশি ছিল তাঁর যে, সব জানার পরেও এ ক্ষণস্থায়ী জীবনের জন্য এত কাতর হলেন এবং এভাবে রক্ত ঝরিয়ে কাঁদলেন। বিশ্বাসীদের জন্য নয়, মানুষদেরকে কষ্টমুক্ত করতে নয় বা বিশ্বের শান্তির জন্য নয়, শুধু নিজেকে মৃত্যু থেকে রক্ষা করতে বা মৃত্যুর কষ্টের কথা স্মরণ করে এরূপ কাঁদলেন? কোনো ধার্মিক মানুষ তো দূরের কথা নাস্তিক আত্মবিশ্বাসী মানুষও কারাগার, মৃত্যুদণ্ডাদেশ, মৃত্যুদণ্ড-র জন্য ফাঁসি-মঞ্চে বা ফায়ারিং রেঞ্জে নিয়ে যাওয়া, গলায় রশি দেওয়া বা গুলি করার সময় কি এরূপ কাঁদবেন? সকলের চেয়ে জীবনের মায়া ও যন্ত্রণার ভয় কি যীশুর বেশি ছিল?

(ঘ) ইঞ্জিলগুলো উল্লেখ করেছে যে, তাঁর সাথে আরো দুজন চোরকে একইভাবে ক্রুশবিদ্ধ করে হত্যা করা হয়। চোর দুজন সাহসিকতার সাথে তাদের এ মৃত্যু মেনে নেন। কোনো ক্রন্দন, চিৎকার বা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে অনুযোগ কিছুই নয়। উপরন্তু ক্রুশের যন্ত্রণা ও মৃত্যুর অপেক্ষায় থেকেও যীশুকে উপহাস করেছেন তারা। (মথি ২৭/৩৮-৫১; মার্ক ১৫/২৭-৩৮) চোর দুজনের মধ্যে মৃত্যুর মুহূর্তে উপহাস করার মত মনের জোর ছিল, অথচ যীশু এভাবে কাঁদলেন?

কোনো নিরপরাধ ধার্মিক মানুষকে জুলুম করে মৃত্যুদন্ড দিলে তিনি মৃত্যুর সময় কাঁদেন না, বরং সাহসিকতার সাথে মেনে নেন। এমনকি কোনো চোর ডাকাত থেকেও এরূপ কথা শোনা যায় না যে, পুলিশের ভয়ে মাটিতে উপুড় হয়ে কেঁদেছে অথবা ফাঁসির কাঠে ঝুলে চিৎকার করে কাঁদতে কাঁদতে মরে গিয়েছে। কেউ যদি এরূপ করে তবে মানুষেরা তাকে কাপুরুষ বলে নিন্দা করে। অথচ মহান ঈসা মাসীহকে প্রচলিত ইঞ্জিল এভাবেই চিত্রিত করেছে!

(ঙ) যীশু মৃত্যু যন্ত্রণায় মহা-চিৎকার করে বলছেন: ‘‘ঈশ্বর আমার, ঈশ্বর আমার, তুমি কেন আমায় পরিত্যাগ করেছ?’’! এ কথার অর্থ কী? যিনি নিজেই ঈশ্বর এবং নিজেই জ্ঞাতসারে স্বেচ্ছায় আনন্দিত চিত্তে মানুষের মুক্তির জন্য যন্ত্রণা ভোগ করতে এসেছেন একি তাঁর মুখের চিৎকার? একজন সাধারণ ধার্মিক মানুষ পরকাল দেখেননি এবং জানেনও না। শুধু বিশ্বাসের কারণে মৃত্যুর মুহূর্ত যত কাছে আসে তত বেশি তিনি আনন্দিত ও উল্লসিত হন এজন্য যে, পরকালের অনন্ত জীবনের দ্বারপ্রান্তে তিনি পৌঁছে গিয়েছেন। সুযোগ থাকলে তিনি চিৎকার করে বলেন ‘‘ঈশ্বর আমার, ঈশ্বর আমার, প্রশংসা তোমার, তুমি শেষ পর্যন্ত বিশ্বাস ও আস্থার উপর রেখেছ!’’ যীশু স্বয়ং ঈশ্বর! তিনি সুনিশ্চিত জানেন যে, কয়েক মুহূর্ত পরেই তিনি তাঁর ঝামেলা থেকে মুক্ত হয়ে মহিমা ও মর্যাদার স্থানে পৌঁছে যাবেন। এ মূহূর্তে তো তিনি চিৎকার করে তাঁর বিজয় ও মহিমার কথা বলবেন! তিনি কেন এরূপ হতাশা ও বেদনার কথা বললেন?

(চ) ঈশ্বরের বিরুদ্ধে অভিযোগ মূলত ঈশ্বর-প্রেম ও ঈশ্বর-নির্ভরতার ঘাটতি প্রমাণ করে। পূর্ণ ঈমানদার কখনোই চিন্তা করেন না যে, ঈশ্বর তাকে পরিত্যাগ করেন। এরপরও একজন মানুষ হয়ত আবেগে এরূপ বলেও ফেলতে পারে। গীতসংহিতা বা জবুরের পাঠ অনুসারে ২২ গীতে দাউদ নিজের অসহায়ত্ব, ঈশ্বরের পবিত্রতা ও  ঈশ্বরের উপর নির্ভরতা ব্যক্ত করে তাঁর সাহায্য প্রার্থনা করেছেন। এ গীতের শুরুতে তিনি বলেন: ‘‘আল্লাহ্ আমার, আল্লাহ্ আমার, তুমি কেন আমাকে পরিত্যাগ করেছ? আমাকে রক্ষা না করে ও আমার আর্তনাদের উক্তি না শুনে কেন দূরে থাক? হে আমার আল্লাহ্, আমি দিনে আহবান করি, কিন্তু তুমি উত্তর দাও না; রাতেও (ডাকি), আমার বিশ্রাম হয় না। কিমত্মু তুমিই পবিত্র, ... কিন্তু আমি কীট, মানুষ নই, মানুষের নিন্দাস্পদ, লোকদের অবজ্ঞাত।’’ (জবুর ২২/১-৬, মো.-১৩)

বাইবেলের বর্ণনায় দাউদ ঈশ্বরের দাস, পুত্র, প্রথম পুত্র, জাত পুত্র এবং খ্রিষ্ট ছিলেন (গীতসংহিতা ২/৭, ৮৯/২০-২৭)। এরপরও ইহুদি ও খ্রিষ্টান সকলেই একমত যে, দাউদ ঈশ্বরের দাস ও মানুষ ছিলেন। কাজেই মানুষ হিসেবে তিনি নিজের অসহায়ত্ব প্রকাশ করে এরূপ বলতেই পারেন। গীতটার সামগ্রিক প্রসঙ্গে কথাটা একজন ধার্মিক মানুষের জন্য প্রার্থনার শুরুতে নিজের অসহায়ত্ব প্রকাশের জন্য অস্বাভাবিক নয়। যীশুও বাইবেলের বর্ণনায় ঈশ্বরের দাস, পুত্র, একমাত্র পুত্র ও খ্রিষ্ট ছিলেন। দাউদের চেয়ে দু’টা উপাধি তাঁর কম ছিল: দাউদ ঈশ্বরের প্রথম পুত্র ও জাত পুত্র উপাধি পেয়েছিলেন, কিন্তু যীশু তা পাননি। এরপরও খ্রিষ্টধর্মীয় বিশ্বাসে যীশু ঈশ্বর ছিলেন। আর ঈশ্বর কিভাবে ঈশ্বরের বিরুদ্ধে অভিযোগ বা অনুযোগ করতে পারেন?

দুনিয়ায় একজন মানুষ বিপদ থেকে মুক্তির জন্য ঈশ্বরের সাহায্যের আশায় অস্থির হয়ে এরূপ বলতে পারেন। কিন্তু যীশু তো কোনো বিপদে নিপতিত নন, বিপদ থেকে মুক্তির আশা করছেন না এবং কারো সাহায্যের প্রত্যাশাতেও অস্থির নন। তিনি সবকিছু জেনে, আনন্দিত চিত্তে মানবতার মুক্তির জন্য তাঁর অনাদি-অনন্ত জীবনের কয়েকটা মুহূর্ত কষ্ট করার দায়িত্ব পালনের জন্য এসেছেন। তিনি সে দায়িত্ব পালন করে এখন তাঁর মহিমায় চলে যাবেন। এখন তিনি এ কথা কেন বলবেন?

(ছ) একজন ফেরেশতা এসে যীশুকে সবল করার অর্থই বা কী? ঈশ্বরের ফেরেশতা এসে স্বয়ং ঈশ্বরকে সবল করছে? বড়ই জটিল বিষয়!

(জ) যীশু প্রার্থনা করছেন যে, যদি সম্ভব হয় তবে আমার মৃত্যুর সিদ্ধান্তটা পরিবর্তন কর! এর অর্থ কী? ইঞ্জিলগুলোর সকল বর্ণনার সমন্বয় করলে এর অর্থ দাঁড়ায়: যীশু মানুষদের মুক্তির জন্য নিজের মৃত্যুর ঐশ্বরিক সিদ্ধান্ত সবই জানতেন। তবে শেষ মুহূর্তে মৃত্যুর যন্ত্রণার কথা ভেবে তিনি বিচলিত হয়ে ঈশ্বরের কাছে এ সিদ্ধান্ত পালনে তাঁর অনিচ্ছা জানিয়ে আবেদন করলেন যে, সম্ভব হলে এ সিদ্ধান্তটা বাতিল করুন। এটা বাস্তবায়নে আমার অনিচ্ছা। তবে তোমার ইচ্ছাই চূড়ান্ত। যদি সম্ভব হয় তবে আমার অনিচ্ছার দিকে তাকিয়ে সিদ্ধান্তটা বাতিল কর। আর যদি তা না হয় তবে তোমার সিদ্ধান্তই বাস্তবায়িত হোক!

সুপ্রিয় পাঠক, ঈশ্বর বা ঈশ্বরের পুত্র তো দূরের কথা! কোনো সাধারণ ধার্মিক বা বিশ্বাসী মানুষ কি ঈশ্বরের আনুগত্য ও ইচ্ছাপালনের জন্য মৃত্যুদণ্ড বা আত্মত্যাগ মেনে নিয়ে মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্তে মৃত্যুর ভয়ে ঈশ্বরকে এরূপ বলবেন?

(ঝ) ঈশ্বর হিসেবে যীশু কি আগে থেকেই জানতেন না যে, তাঁর প্রার্থনা কবুল হবে না? তাহলে কেন দীর্ঘ সময় ধরে বারবার উপুড় হয়ে এত আবেগময় প্রার্থনা?

(ঙ) ইঞ্জিলগুলোর বর্ণনা থেকে প্রতীয়মান হয় যে, এ প্রার্থনা যীশুর জীবনের সবচেয়ে আবেগময় ও দীর্ঘ প্রার্থনা। এত ক্রন্দন, উপুড় হওয়া, আবেগ প্রকাশ করা ও বারবার একই বিষয় চাওয়ার আর কোনো ঘটনা ইঞ্জিলে দেখা যায় না। প্রেমময় করুণাময় ঈশ্বর তাঁর প্রিয় পুত্রের এ প্রার্থনা কবুল করলেন না? ঈশ্বর তো সর্বশক্তিমান! তিনি কি তাঁর প্রিয় পুত্রের জীবনের এ একটামাত্র প্রার্থনা কবুল করে অনিচ্ছুক পুত্রকে হত্যা না করে মানবতাকে মুক্তি দিতে পারতেন না? ইবরাহীমের ক্ষেত্রে তো কুরবানি ছাড়াই ত্যাগের ইচ্ছাকে মূল্যায়ন করলেন। যীশুর ক্ষেত্রে কি তা পারতেন না? একেবারেই দুর্বোধ্য বিষয়!